নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

লিখালিখি পেশা নয়, নেশা! আর আমি লেখায় আসক্ত!

ডাকনাম ইমু ইমরান

লিখালিখি পেশা নয়, নেশা! আর আমি লেখায় আসক্ত

ডাকনাম ইমু ইমরান › বিস্তারিত পোস্টঃ

গল্পঃ \'অবন্তীর মুখোমুখি\'

১৯ শে জানুয়ারি, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:০৯

-- কেমন আছো তুমি?
-- যেমনটা দেখছো! কোলের বাবুটা নিশ্চয় তোমার?
-- হ্যা,
-- খুব সুন্দর হয়েছে। কি নাম রেখেছো ওর?
-- অদিতি,
-- নামটাও বেশ সুন্দর!
-- নামটা ওর বাবা রেখেছে। কি করছো আজকাল?
-- বলার মতো তেমন কিছুই করিনা। ছোট্ট একটা ফার্ম আছে সেটাও লোকেরা দেখাশোনা করে। আর আমি নিজেকে নিয়েই ব্যস্ত।
-- জানতে চাইলেনা আমি কেমন আছি?
-- যেমনটা দেখছি,
-- নিজের চোখদুটোও যে মাঝেমাঝে ভুল দেখে সেটা নিশ্চয় জানো?
-- হ্যা সেটাও ঠিক। তবে স্বামী, সংসার, সন্তান এই 'স' নিয়ে বেশ ভালোই আছো দেখে মনে হলো তাই বললাম।
-- বিয়ে করেছো?
-- নাহ্!
-- কেন?
-- তেমন কাউকে আর পাইনি।
-- না পেলে কি সারাজীবন এভাবেই থাকবে?
-- না পেলে হয়তো থাকতেই হবে। মনের বিরুদ্ধে গিয়ে জোর করেতো আর সম্পর্ক টেকানো যায় না।
-- এখানে কেন এসেছিলে?
-- কাজিনের ফ্লাইট ছিলো আজ। তাই ওকে পৌঁছে দিতে এসেছিলাম।
-- আমি আজ দেশের বাহিরে চলে যাচ্ছি। কবে দেশে ফিরবো জানা নেই। বাবুর বাবা বলেছে ওখানেই সেটেল হবে।
-- ভালো তো!
-- তোমার সাথে আবার এভাবে এরকম একটা সময়ে দেখা হয়ে যাবে কখনো কল্পনাও করিনি।
-- সে কল্পনা কার মাঝেই বা ছিলো! যে মরীচিকা রৌদ্রের আলোয় ধীরেধীরে বিলীন হয়ে যায়, তার আশা কেইবা করে।
.
দূর থেকে মাঝবয়সীর একজন ভদ্রলোক অবন্তীকে ডাকলো। অবন্তী আমাকে বললো---
-- উনার নাম তৌহীদ আহম্মেদ আমার হাসবেন্ট।
.
দেখে কিছুটা চমকে উঠালাম। এমন একটি স্বামী অবন্তীর মতো একটি মেয়ের পাশে বড়ই বেমানান। অবন্তীকে বললাম---
-- বয়সের অনেক ব্যবধান,
-- হ্যা, ১৫ বছর। যাচ্ছি আমি ১২ টায় ফ্লাইট। ভালো থেকো।
.
অবন্তীর ভালো থেকো বললাটা শুনে একটু মুচকি হাসি হাসলাম। সেটা লক্ষ্য করেও অবন্তী বলে উঠলো---
-- হাসলে কেন?
-- নাহ্! কিছুনা এমনিই, তুমিও ভালো থেকো।
.
অবন্তী চাপা আঙুলে চোখের কোণের জল মুছে লোকটির ডাকে সাড়া দিয়ে চলে গেল। আমারও যে চোখেজল আসেনি তা কিন্তু নয়। কথাগুলো বলতে বলতে দুচোখের মাঝে অশ্রুকণা থৈথৈ করছিলো। অনেক কষ্ট করে সে জল বাঁধ দিয়ে রেখেছিলাম। যখন সে জল বাঁধ ভাঙ্গলো, অবন্তীর চোকের পলক পড়ার সাথে সাথে মুছে নিয়েছিলাম। অবেলায় অশ্রুজল বড়ই বেমানান। প্রকৃতির বড় অদ্ভুত নিয়ম! যে চোখেরজল প্রিয়জনের জন্যে ঝড়ে, সে চোখেরজল প্রিয়জনের জন্যেই মুছে ফেলতে হয়। অবন্তীর চলে যাওয়া আমাকে সেদিনিও খুব কাঁদিয়েছিলো। সম্পর্কের একবার বিদায় হয়ে গেলে তারপর থেকে শুধু বিদায়ই জানাতে হয়। স্বাগতম জানানো আর কোনো উপক্রম থাকেনা।
.
অবন্তীর দিকে তাকিয়ে ভাবছি মানুষগুলো কতটা অদ্ভুত। কেউ ভালো নেই জেনেও জিজ্ঞাসা করে "কেমন আছো?" কেউ ভালো থাকবেনা জেনেও কখনো বলে যায় "ভালো থেকো!"
পিচ্চি বাবুটাকে কোলে থেকে নামিয়ে হাত ধরে হাটতে হাটতে অদৃশ্য হয়ে গেল অবন্তী। আর আমি অবন্তীর অদৃশ্য হয়ে যাওয়ার দৃশ্য ঝাপ্সা চোখে দাঁড়িয়ে দেখতে লাগলাম। এয়ারপোর্ট থেকে বেড়িয়ে গাড়ির মাঝে বসে ভাবতে লাগলাম ফেলে আসা সেই দিনগুলোর কথা।
.
ক্লাসের মাঝে সবচেয়ে লাজুক মেয়েটি ছিলো অবন্তী। ভার্সিটিতে ভর্তি হওয়ার প্রথম বর্ষ থেকে আমাদের সম্পর্ক শুরু হয়। ক্লাসে, ক্যাম্পাসে থাকাকালীন অবন্তীর নীরবতা আর লাজুকতা বারবারই আমাকে মুগ্ধ করতো। সেসময় বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে সঙ্গ পেয়েছিলাম অবন্তীর। সেও অনেক কঠিন চ্যালেঞ্জের ছিলো। ধীরেধীরে সেই বন্ধুত্বের সম্পর্ক কখন যে গড়িয়ে ভালবাসায় রূপান্তরিত হয়েছিলো তা আমি অবন্তী কেউই টের পাইনি। অবন্তী অনুপস্থিতি কখনো কখনো আমাকে ভীষণ একাকীত্বে ভোগাতো। যখন ধীরেধীরে বুঝতে পারলাম অবন্তীকে ভালবেসে ফেলেছি। তখন থেকেই হারানোর ভয় শুরু হলো। খুব কাছের বন্ধু উদয়ের সাথে যখন ব্যাপারটা শেয়ার করলাম। উদয় পরামর্শ দিলে ভালবাসি সেটা অবন্তীকে জানিয়ে দিতে। কিন্তু আমার ভেতরে প্রচণ্ড ভয় হচ্ছিলো যদি আমাদের এই বন্ধুত্বটা নষ্ট হয়ে যায় সেকথা ভেবে। উদয় বললো---
-- অবন্তীও তোকে ভালবাসে। প্রপোজ কর আমি বলছি কোনো সমস্যা হবেনা।
.
উদয়ের কথামতোই ফেব্রুয়ারির একদিনে অবন্তীর হাতে একগুচ্ছ ফুল দিয়ে ভালবাসার কথাটা বলেদিলাম। অবন্তী ফুল না নিয়ে কিছু না বলে ক্যাম্পাস থেকে সাথে সাথে চলে গেল। তারপর অনেকবার কল করেছিলাম অবন্তীকে। শেষপর্যন্ত একটা সময় দেখলাম অবন্তীর নাম্বার বন্ধ। রাতে রুমের মাঝে বেশকিছুক্ষণ নির্ঘুম চোখে বসে থেকে হোস্টেলের ছাদে গিয়ে বসলাম। রাত তখন প্রায় ৩টা বাজে। আকাশের দিকে তাকিয়ে ভাবছিলাম বন্ধুত্বটা এভাবে না ভাঙ্গলেও পারতাম। অনন্ত পাশেপাশে তো হাটতে পারতাম। উদয়কে ফোন করে মুখে যা আসে তাই বলেই গালাগালি করলাম। উদয়কে অনেক বকাবকি করার পর কলটা কেটে দিয়ে যখন ছাদের রেলিং ধরে দাঁড়ালাম, ফোনে একটা ম্যাসেজ আসলো। ভাবলাম এতরাতে নিশ্চয় অবন্তী ম্যাসেজ করেছে। ফোনটা হাতে নিয়ে দেখলাম সিম কোম্পানির অফারের একটা ম্যাসেজ। রাগে মেজাজটা বিগড়ে গেল। ম্যাসেজ ডিলিট দিয়ে ফোনটা পকেটে রাখতেই আরেকটা ম্যাসেজ আসলো। বিরক্তি বোধ করে ফোনটা হাতে নিয়ে ম্যাসেজটা দেখেই চমকে উঠলাম। অবন্তীর একলাইন ম্যাসেজ ছিলো, "সবার সামনে এভাবে প্রপোজ না করলে কি হতো না!"
.
প্রতিউত্তরে লিখলাম---
-- কিইবা ক্ষতি হয়েছে তাতে তোর। ফোন বন্ধ রেখেছিলি কেন?
-- ইচ্ছে হয়েছে তাই।
-- ভালো তো!
-- হুম ভালোই, আগামীকাল একগুচ্ছ ফুল লাগবে আমার।
-- গেইটের সামনে গেলেই পাবি। অনেক বিক্রেতা আছে।
-- তুমি এনে দিবে।
.
আমার আর বুঝতে বাকি রইলোনা আমাদের সম্পর্কটা তুইয়ে থেকে তুমিতে মোড় নিয়েছে। পরদিন লেকের পাড়ে ডেকে এনে অবন্তীকে একগুচ্ছ ফুল দিয়ে ভালবাসি বলেছিলাম আর শুনেওছিলাম। খুব ভালোই কেটে যাচ্ছিলো আমাদের সময়। ফাইনাল ইয়ারের এক্সাম শেষ হওয়ার পর অবন্তী বিয়ে করবে বলে উঠেপড়ে লাগলো। অবন্তীর কথামতোই দুজনে কোর্টম্যারিজ করে একবিকেলে ক্যাম্পাসে ফিরলাম। সাথে তখন উদয়, শান্তা, সজনী, দিপ্ত আরও অনেকেই ছিলো। সবকিছু ঠিকঠাক মতো চলছিল। কিছুদিন যেতেই হঠাৎ অবন্তীর বাসা থেকে অবন্তীর বাবার ফোন আসলো। অবন্তীদের গ্রামের বাড়ি ছিলো রাজশাহীর কোনোএক প্রত্যন্ত অঞ্চলে। যেখানে কোনদিন যাওয়া হয়নি আমার। ভেবেছিলাম মাস্টার্স শেষ করে দুজনেই বিয়ের কথা বাসায় জানিয়ে দিবো। ততদিন কেউ জানবেনা আমরা কজন ছাড়া আমাদের এই বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার কথা। নিজেই গিয়ে অবন্তীকে বাসে তুলে দিলাম একসকালে। অবন্তী গ্রামের বাড়ি চলে গেল। এরমধ্য আমার ছোট একটা চাকরীও হয়ে গেল একটা প্রাইভেট কোম্পানিতে। ভেবেছিলাম অবন্তী এইবার গ্রামের বাড়ি থেকে ফিরলে দুজনে সংসার পাতবো। কিন্তু ভাগ্য তাতে সায় দিলোনা। গ্রামে যাওয়ার দুদিন পর অবন্তীর ফোন আসলো। প্রচণ্ড কান্না জড়িত কণ্ঠে অবন্তী বললো, "আমি আগামীকাল বা পরশুদিনের মধ্যে ঢাকা আসছি। যোগাযোগ করতে না পারলে তুমি কোনো চিন্তা করোনা।"
দুদিন অপেক্ষা করার পর অবন্তী বদলে অবন্তীর পাঠানো ডিভোর্স পেপারটা আমার হাতে এসে পৌঁছালে। হাতে পাওয়ার সাথে সাথে অবন্তীকে ফোন দিলাম। অবন্তীর ফোনটা তখন খোলায় ছিলো। কিছু স্তব্দ হয়ে ফোন ধরে রইলাম। ফোনের ওপাশ থেকে অবন্তী বলতে লাগলো---
-- পেপারটা আমিই তোমাকে পাঠিয়েছি। কেন পাঠিয়েছি, কি কারণে পাঠিয়েছি বেঁচে থাকলে কোনোএক দিন বলবো। পারলে আমাকে ক্ষমা করো।
.
এই একটা কথা বলেই অবন্তী কল কেটে দিয়ে ফোন বন্ধ করে রেখেদিলো। প্রচণ্ড কষ্টে তখন হেসে উঠলাম আমি। দৌড়ে উদয়ের রুমে গিয়ে উদয়কে বললাম---
-- দোস্ত দেখ! দেখ! অবন্তী আমার জন্যে গিফট পাঠিয়েছে।
.
হয়তো চোখেরজল গাল বেয়ে নামছিল বলেই উদয় তাড়াতাড়ি পেপারটা হাতে নিলো। হাতে নিয়ে আমার দিকে বেশ কিছুক্ষণ বিস্ময় চোখে তাকিয়ে রইলো। খানিকক্ষণ স্তব্দ থেকে জানতে চাইলো---
-- অবন্তীকে ফোন দিয়েছিলি,
-- হ্যা,
-- কি বলেছে?
-- পেপারটা ও নিজেই পাঠিয়েছে। কেন পাঠিয়েছে, কি কারণে পাঠিয়েছে সেটা কোনোএক দিন বলবে বলেছে।
.
উদয় ফোনটা নিয়ে অবন্তীর নাম্বারে কল দিয়ে দেখলো অবন্তীর নাম্বার বন্ধ। উদয় বললো---
-- অবন্তী ঠিকানা জানিস তুই?
-- হুম,
.
উদয় সরণ আর দিপ্তিকে ফোন দিয়ে বললো রাতে আমরা ৪ জন অবন্তীদের বাড়িতে যাচ্ছি রেডি হয়ে নিতে। উদয়ের কথা অনুযায়ী ৪ জন মিলে ছুটে গিয়েছিলাম অবন্তীর ঠিকানায়। লোকজনদের কাছে জিজ্ঞেস করতে করতে অবন্তীদের বাড়ি পৌঁছে দেখলাম খুব আলোকসজ্জায় সাজানো অবন্তীদের বাড়ি। দেখে আর কারো বুঝবার বাকি রইলোনা বাড়িতে কারো বিয়ের আয়োজন করা হয়েছে। উঠানে দাঁড়িয়ে এক ভদ্রলোককে উদয় জিজ্ঞেস করলো---
-- অবন্তী কোথায়?
.
তার উত্তরে সবাই সেদিন থমকে দাঁড়িয়ে ছিলাম। তিনি বললেন---
-- অবন্তী ঐ বাড়িতে, কিন্তু আপনারা কারা?
-- আমরা অবন্তীর বন্ধু ঢাকা থেকে এসেছি। অবন্তী ঐ বাড়িতে মানেটা ঠিক বুঝলাম না।
-- আজব! কাল রাতেই তো অবন্তীকে ওর স্বামীর বাড়িতে তুলে দেওয়া হয়েছে। আর আপনাদের তো গলকাল আসার কথা আজ এসেছেন কেন?
-- না মানে আমাদের একটা এক্সিভিশন ছিলো তাই আগামীকাল আসতে পারিনি। তাই ভাবলাম আজই চলে আসি।
-- ঠিকাছে এসেছেন যখন ভালোই হয়েছে। ভেতরে এসে বসুন।
.
উনার কথাশুনে সাথে সাথে আমি বাড়ির বাইরে বেড়িয়ে আসলাম। খেয়াল করলাম আমার পিছুপিছু সবাই চলে আসলো। রাস্তার মাঝে এসে চুপচাপ হয়ে দাঁড়িয়ে আছি। এমনটা কেন হলো? কেন করলো? নানান প্রশ্নরা এসে ভির জমালো মনে। সামনের দিক থেকে একটি মেয়ে এসে বললো---
-- আপনাদের মাঝে কি কেউ ইমু নামের আছেন?
.
মেয়েটির দিকে তাকিয়ে চোখেরজল মুছে বললাম---
-- আমিই ইমু,
-- অবন্তী আপনাকে এই চিঠিটা দিতে বলেছে। আর যাকিছু হয়েছে সবকিছু ওর বাবা ওকে জোর করে করিয়েছে। অবন্তী আপনাদের বিয়ের কথা বলাতে ওর বাবা ওকে ডিভোর্স পেপারে সাইন করাতে বাধ্য করেছে। আপনি ওকে ভুল বুঝবেন না। আপনারা সবাই আমাদের বাড়িতে চলুন।
.
-- অবন্তী আসলে ওকে একটা কথা বলতে পারবেন?
-- কি কথা বলবো বলেন?
-- বলবেন ইমু এসেছিলো, অবন্তীকে মন থেকে অনেক দোয়া করে চলে গেছে।
.
কথাটা বলেই হাটতে শুরু করলাম। দেওয়া চিঠিটা নিয়ে সেদিন সেপথ ধরেই আবার ঢাকা ফিরে আসলাম। রেখে আসলাম সরণ, দিপ্তির, উদয় আর ইমুর চোখেরজল রাজশাহীর মাটিতে।
-- স্যার বাসায় চলে এসেছি। আপনি নামবেন না?
.
ড্রাইভারের কথাতে আমার ভবনার ঘোর কেটে গেল। এয়ারপোর্ট থেকে বাসায় আসতে আজকের সময়টা মনে হলো কয়েকটা মিনিট লাগলো মাত্র। চোখে হাত দিয়ে দেখলাম আজও নিজের অজান্তে কখন যেন দুচোখ ভিজে এসেছে বুঝতেই পারিনি। বুঝলাম আমার ভালবাসা আজও কমেনি, কারণ তোমায় ভাবলে আজও আমার চোখ ভিজে।
.
লেখকঃ ডাকনাম ইমু-ইমরান।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.