![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আসসালামু আলাইকুম, সবাইকে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়ে আজ একটি গুরুত্বপুর্ণ টিউটোরিয়াল শেয়ার করবো।
ফ্রিল্যান্সিং কি সত্যিই খুব সহজ?
বর্তমানে সবচেয়ে স্মার্ট এবং জনপ্রিয় পেশা হলো ফ্রিল্যান্সিং। যার মাধ্যমে আমাদের অনেক স্বল্পশিক্ষিত তরুণও ঘুরে দাড়িয়েছে। বাংলাদেশ থেকে প্রচুর তরুণ বর্তমানে ফ্রিল্যান্সিং এর সাথে নিযুক্ত হচ্ছেন। নতুন যারা এ পেশায় আসতে চান, কিংবা যারা নতুন, তারা অনেকেই ভাবেন, কম্পিউটারের মাউজ ঘোরাতে পারলে কিংবা টাইপিং জানলেই আপনিও করতে পারবেন। তাদের প্রতি আমার প্রশ্ন: বাংলা রিডিং পড়া জানলে আর লিখতে জানলেই কি আপনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পাবেন?? আর রিডিং পড়া আর লেখাজানাটা তো, আমরা ক্লাস-টু কিংবা থ্রিতেই শিখে যাই। কিন্তু ভাসির্টি চান্সের জন্য কি করতে হয় সেটা কেবল এইচ.এস.সি দেওয়ার পর একটা শিক্ষার্থীই জানে, যে চান্স পেয়েছে। ফ্রিল্যান্সিংটাও সে রকম। সত্যিকার ফ্রিল্যান্সিং (ডোল্যান্সার, মোল্যান্সার/ক্লিক ফ্লিক নয়) করতে এখন ফ্রিল্যান্সারই জানেন, কত শত রাত তাকে জাগতে হয়েছে। দৈনিক কত ঘন্টা কম্পিউটারের সামনে বসে থাকতে হয়। এই তো, আমাদের জাহেদুল ইসলাম ভাই, যিনি ঢাকা বিভাগ থেকে ফ্রিল্যান্সিং এ বেসিস এওয়ার্ড পেয়েছেন, সেই প্রতিবন্ধি জাহেদ ভাই, আজ আরো কঠিন রোগে আক্রান্ত। কম্পিউটারের সামনে বসে থাকতে থাকতে তার মেরুদন্ড বাকা হয়ে গেছে, এখন সোজা হয় না, নড়াছড়া করলে প্রচুর ব্যাথা হয়। ,
প্রকৃত ফ্রিল্যান্সারের করণীয়:
মুল কথা হলো, সত্যিকারের ফ্রিল্যান্সার হতে চাইলে আপনার দরকার যেকোন একটি কাজের আগা-গোড়া খেয়ে ফেলা অর্থাৎ কাজটি এমনভাবে শিখতে হবে যাতে করে আপনি সারাবিশ্বের সকল ফ্রিল্যান্সারদের প্রতিযোগীতায় টিকে থাকতে পারেন। আর তা না হলে দু-একটা কাজ পেলেও যেকোন সময় ছিটকে পড়বেন। ভার্সিটি পরীক্ষায় যেমন যেকোন বিষয়ের খুটিনাটিসহ ভালোভাবে বুঝতে হয় ফ্রিল্যান্সিংটা তাই, কারণ ভার্সিটির মতই এখানে প্রতিযোগীতা দিয়ে কাজ অর্জন করে নিতে হয়। ভার্সিটির মতই এখানে প্রতিটি কাজের দক্ষতা/মান যাচাই করে আপনার ক্লায়েন্ট আপনাকে মার্কস দেয়।সেটাও জিপি-এ সিস্টেমের মতই-৫, যাকে বলে রেটিং। এই রেটিং ৪ হলেও অনেক সময়কাজ পাওয়াটা মুশকিল হয়ে যায়। তাইমুল কথা হলো কাজ শিখতে হবে। আর পরিশ্রমিহতে হবে। আর কাজ জানলে আপনি মার্কেটপ্লেসে কাজ না করলেও দেশীয় বিভিন্ন আইটি ফার্মে স্মার্ট স্যালারীতে কাজ করতে পারবেন। তাছাড়া অনেক খুচরা কাজও পার্সোনালী পাবেন।
কোনটা শিখব?
কাজ শেখার কথা বল্লেই প্রথমেই আসে আপনি কোন কাজটা শিখবেন?? এবং এটা নিয়ে অনেকেই আমাকে মেইল/এফবি এবং টিউনে টিউমেন্ট করেন। কাজের ক্ষেত্রে আমি প্রথমেই রিটিউমেন্ট করবো, আপনি যদি আগে কোন কাজ জেনে থাকেন সেই কাজটাই নতুন করে শিখুন। আর নতুনরা আপনাদের যেটার প্রতি আগ্রহ অনুভব করবেন, যেমন আপনার ছোটকাল থেকে আঁকাআঁকির অভ্যাস সেক্ষেত্রে আপনি গ্রাফিক্স ডিজাইন শুরু করুন। আর যাদের অঙ্ক/ম্যাচ এ ভালোকরেছেন, তারা ওয়েব ডিজাইন শুরু করতে পারেন। তাছাড়া যাদের এই দুটিতেই দুর্বল তারা এসইও করতে পারেন। আর যাই শিখবেন এডভান্স শিখুন। কারণ আমি আগেই বলেছি, ফ্রিল্যান্সিং এ বেসিক লেভেলের কোন কাজ দিয়ে আপনি কিছু করতে পারবেন না। তাই যে কাজটা আগে শিখেছেন সেটাই নতুন করে আবার শুরু করুন এবং বার বার প্রাকটিজ করুন। আপনার কাজের সাথে রিলেটেড বিভিন্ন আর্টিকেল পড়ুন। যারা প্রফেশনালী ঔই কাজগুলো করেন, তাদের কাজের স্যাম্পল দেখুন। আপনি সে রকম আরেকটি তৈরী করার চেষ্টা করুন। এভাবে ভালোভাবে কাজ শেখার পর অন্তত দুমাস সময় নিন, সব ধরনের জটিল জটিল কাজগুলো প্রাকটিজ করে আয়ত্ত করার।
কোথায়, কিভাবে?
তারপর যখন নিজের প্রতি আত্নবিশ্বাস পাবেন তখন আপনি ফ্রিল্যান্সিংমার্কেটেপ্লেসগুলোতে একাউন্ট করুন। মনে রাখবেন, ক্লায়েন্ট আপনাকে দেখছেনা, আপনারবংশ পরিচয়/ফ্যামিলি স্ট্যাটাস অথবা দেশে আপনার প্রভাব/ক্ষমতাকতটুকু সেটা দেখছে না, দেখবে প্রথমে আপনার প্রোফাইল, আমরা যেমন কোন শপিংমলেগেলে তথা কোন শো-রুমে গেলে প্রথমত উক্ত শো-রুমের সাজসজ্জা, আয়তন এবংপণ্যগুলোরউপস্থাপন এবং সার্ভিসারদের আচরণ দেখে প্রথমত পছন্দ করি, তারপর তারপণ্যগুলোভালো হলে বার বার ঔই শো-রুমে যাই, তথা সবাইকে রিটিউমেন্টকরি।মাকের্টপ্লেসেও সে রকম, প্রথমে আপনার প্রোফাইলের সাজানো গোছানো, পোর্টফোলিও এবং অন্যান্য তথ্য, টেস্ট ইত্যাদি প্রথমত পছন্দ করেন। তারপর আপনার কভারলেটার এবং সর্বশেষ আপনাকে হায়ার করার পর কাজের কোয়ালিটি দেখা হয়।তার উপর নির্ভর করে আপনাকে ফিডব্যাক দেয়। বেশিরভাগ ক্লায়েন্ট আপনার কাজভালো লাগলেপরবর্তী কাজগুলোর জন্য আপনাকেই রিকুয়েস্ট করবে।
কাজ শেখার জন্য বর্তমানে অনলাইনে অনেক টিউটোরিয়াল পাওয়া যায়, তবে সেক্ষেত্রে দেখা যায়, টিউটোরিয়ালগুলো ধারাবাহিক নয়, আবার অনেক ক্ষেত্রে টিউটোরিয়ালগুলো বেসিক লেভেলের, কিংবা একটি ছোট সমস্যাকে বিশালভাবে পেছিয়ে উপস্থাপন করা।এভাবে শিখলে যেমন প্রচুর সময় লস হবে, তেমনি আপনি কতটুকু শিখলেন কিংবা আর কতটুকু শেখা দরকার কিছু ধারণা করতে পারবেন না। তাছাড়া এই ভিডিওগুলোর অনেকক্ষেত্রে সোর্সফাইলও থাকে না। তবে কিছু সাইট আছে যেগুলো থেকে ভালোভাবেইশিখতে পারেন। যেমন: w3schools.com, (english), webcoachbd.com(bangla)। আর যারা পড়ে শিখতে ঝামেলা মনে করেন, তাদের জন্য ইউটিউবে বাংলায় হিউজ রিসোর্স আছে। এক্ষেত্রে ওয়েব ডিজাইন, গ্রাফিক্স ডিজাইন কিংবা এসইও এর জন্য আলাদা কিছু অপুর্নাঙ্গ টিউটোরিয়াল পাওয়া যায়। আবার অনেক ক্ষেত্রে পুর্নাঙ্গ টিউটোরিয়াল পাওয়া গেলেও সবগুলো পাওয়া যায় না। তবে সবগুলো কোর্সের ধারাবাহিক টিউটোরিয়ালের জন্য আমি এই চ্যানেলটিকে রিকমেন্ড করবো।
আর যারা ইবুক থেকে শিখতে আগ্রহী তাদের জন্য ওয়েব ডিজাইন, ওয়ার্ডপ্রেস, গ্রাফিক্স ডিজাইন এবং এসইও এর উপর রয়েছে অনেক বাংলা ইবুক এবং বিভিন্ন প্রকার লেকচারশীট। তাছাড়া রয়েছে কিছু ভালো প্রতিষ্ঠানও রয়েছে যেমন: ডেভ্সটিম। আর যারা ঢাকায় এসে এই প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হওয়া সম্ভব নয় তাদের জন্য রয়েছে অনলাইন ভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ইনফোনেট।
উপরোক্ত যেকোনভাবে আপনি একটি কাজ ভালোভাবে শেখার পর যখন নিজের প্রতি আত্নবিশ্বাস বাড়বে যে আপনি কাজ করতে পারবেন, তখন মার্কেটপ্লেসগুলোতে কাজের জন্য রেজিস্ট্রেশন করুন। পরিচিত কিছু মার্কেটপ্লেস যেমন: ওডেস্ক, ফ্রিল্যান্সার, ইল্যান্স, ফাইভর, মাইক্রোওয়ার্কার, এছাড়া আপনার করা টেমপ্লেট জমা দিয়েও বিভিন্ন মার্কেটে বিক্রয় করতে পারেন। এ রকম কিছু মার্কেটপ্লেস হলো থিমফরেস্ট, গ্রাফিক্স রিভার।
বি:দ্র: আপনি কোন কাজ না জেনেও পিটিসি সাইটগুলো থেকে রেফারেল লিংক এর মাধ্যমে ইন্টারনেট থেকে আয় করতে পারেন। তবে সেটা অনেক পরিশ্রমের এবং অত্যন্ত সামান্য আয়। তাছাড়া এগুলো অনেক ক্ষেত্রে নীতি বর্হিভুত এবং আপনাকে একটি অন্ধকার ভবিষ্যতের দিকে ঠেলে দিবে। তাই ফ্রিল্যান্সিং করতে কাজ জানতে হয় আর কাজের জন্য গাইডলাইনগুলোও বলে দিয়েছি। তাছাড়া সবার প্রতি অনুরোধ অনেস্টলি কাজ করুন। তাতে করে অন্য ফ্রিল্যান্সাররা তথা নতুন যারা প্রবেশ করে তারাও সহজে কাজ পাবেন। কারণ আপনার একটি দুনার্ম পুরো দেশের ফ্রিল্যান্সারদের বয়ে বেড়াতে হয়।
©somewhere in net ltd.