![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সকলে মিলিয়া সাজাব সুন্দর পৃথিবীকে।
১৮ বছর বয়সেই প্রবাস জীবন শুরু করেছেন। প্রথমে মধ্যপ্রাচ্যের ভিসা নিয়েই মধ্যপ্রাচ্যে দীর্ঘদিন কাজ করেছেন। স্বাভাবিকভাবেই অন্যসব প্রবাসীদের মত তিনিও নিয়মতই নিজের খরচ বাদে সব টাকাই দেশে পরিবারের জন্য পাঠাতেন। এভাবে বেশ ক'বছর চলার পর ইউরোপে আসার চিন্তা মাথায় ঢুকল। দালালের মাধ্যমে বিভিন্নভাবে ইউরোপে আসার চেষ্টা করতে লাগলেন।
অবশেষে তার স্বপ্ন পূরণ হল। তিনি দালালের মাধ্যমে পালিয়ে গ্রীসে পৌঁছালেন। গ্রীসে পৌঁছালেও বৈধ কাগজপত্র না থাকায় অবৈধ ভাবেই পালিয়ে কঠিন সংগ্রামের মধ্য দিয়ে অর্থ উপার্জন করে দেশে পাঠাতে লাগলেন। সাথে সাথে বৈধ হওয়ার জন্য চেষ্টা করতে লাগলেন।
যারা ইউরোপে এসেছে তারাই ভাল জানে ইউরোপে অবৈধদের কাজ কর্ম কতটা কষ্টকর আর কতটা টেনশনের মধ্য দিয়ে কাটাতে হয়। একারণেই অল্প বয়সেই অনেকেরই বৃদ্ধদের মত বয়সের ছাপ পড়ে যায়। তবে যারা প্রথম থেকেই বৈধ, তাদের বিষয় ভিন্ন।
যাইহোক অনেক চেষ্টার পর ঐপ্রবাসী ভাই ২০০৯ গ্রীসে বৈধতা পায়। ততদিনে বয়স ৪০ হয়ে গেছে। এদিকে অবৈধ থাকার কারণে দেশে যাওয়ারও কোন সুযোগ ছিল না। বৈধ হয়ে সেই সুযোগ আসার সাথে সাথে সংসার জীবন শুরু করার চিন্তা করে এবং যথারীতি দেশে গিয়ে বিয়ে করে আবার গ্রীসে ফিরে আসে। গ্রীসে এসে স্ত্রীকে তার কাছে নিয়ে আসার চেষ্টা করতে থাকে।
গ্রীসে তখন অর্থনৈতিক মন্দা প্রকট হতে শুরু করেছে। অনেক কষ্ট করে হলেও কিছু সঞ্চয় করতে থাকে। স্ত্রী তাকে জানায় দেশে তার পরিচিত একটি ভাল বাড়ি বিক্রি হবে যা তুলনামূলক কম দামে পাওয়া যাচ্ছে। বাড়িটি কিনে নিতে পারলে খুবই ভাল হত। স্ত্রীর আবদারে তার সঞ্চয়ের সমস্ত অর্থসহ প্রবাসী বাংলাদেশীদের দিয়ে গঠিত একটি সমিতি থেকে আরও ১০ লক্ষ টাকা ঋণ নিয়ে স্ত্রীর নামে পাঠিয়ে দেয়।
কয়েকদিন পরে জানতে পারে স্ত্রী তাকে ডিভোর্স দিয়ে তার খালাত ভাইকে বিয়ে করেছে। আর তার পাঠানো টাকা দিয়ে কোন বাড়ি তো দূরের কথা কিছুই কেনা হয়নি।
যাইহোক, সেখানেই সংসার জীবনের টেনে ঋণের অর্থ পরিশোধের চেষ্টা করতে থাকে। কিন্তু গ্রীসের অর্থনৈতিক অবস্থা ক্রমেই খারাপের দিকে যাওয়ায় তার জন্য ঐ অর্থ পরিশোধও কঠিন হয়ে দাড়ায়।
এক পর্যায়ে সে গ্রীস ত্যাগ করে ইতালিতে কিছুদিন থাকার চেষ্টা করে টিকতে না পেরে ফ্রান্সে চলে আসে। কিন্তু গ্রীস বাদে যেখানেই সে যাক না কেন সবখানেই অবৈধ থাকায় তার কাজকর্ম পাওয়া আর সম্ভব হয়ে ওঠে না। এদিকে বয়সের ভারে ন্যুজ হয়ে পড়ার কারণে চাইলেও কোন কঠিন কাজ করতে পারে না। তারপরও জীবন থেমে থাকে না। সংসার না থাকলেও পেটের দায়ে কাজ ঠিকই করতে হয়।
ইউরোপে বসবাসকারী অবৈধ অনেক বাংলাদেশী রাস্তাঘাটে বিভিন্ন ধরনের অবৈধ ব্যবসা করে থাকে। এসব ব্যবসার ক্ষেত্রে সবসময় খেয়াল রাখতে হয় পুলিশ যেন না দেখে। পুলিশকে দূর থেকে দেখার সাথে সাথে মালপত্র নিয়ে দৌড়ে পালিয়ে যেতে হয়।
আবার সেই প্রবাসী ভাইয়ের কথায় আসি। তিনি এখন এরকম অবৈধ ব্যবসা করে এমন একজনের পাহারাদার হিসেবে কাজ করেন। পুলিশ আসার আগেই তিনি পুলিশকে দূর থেকে দেখে সঙ্কেত দিলে যাতে পালিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়। এই ব্যবসা আবার প্রতিদিন করা সম্ভব হয় না। তাই যেদিন ব্যবসা করা সম্ভব হয় সেদিন তাকে ১০ ইউরো বেতন দেওয়া হয়। আর এই অর্থ দিয়ে থাকা খাওয়া চলাও কঠিন।
এখানে আমার গল্পের সমাপ্তি।
এরকম হাজার হাজার বাংলাদেশীকে পাওয়া যাবে যারা প্রবাসে তাদের জীবনটা নিঃশেষ করে দিয়েছেন কিন্তু নিজের জীবনে বিনোদন বলে কিছু পাননি।
বিঃ দ্রঃ এটা সকল অবৈধ এবং বেশিরভাগ হতভাগ্য প্রবাসীর জীবনের গল্প। তবে কিছু বৈধ অভিবাসী বাংলাদেশীর জীবন স্বপ্নের মতও আছে। সেই সংখ্যা একেবারেই হাতেগোনা।
০৯ ই মে, ২০১৪ রাত ৮:১৫
প্রবাসী ভাবুক বলেছেন: আসলে অধিকাংশ প্রবাসীর জীবনই এরকম৷
২| ০৯ ই জুন, ২০১৪ বিকাল ৪:১৫
দেশ প্রেমিক বাঙালী বলেছেন: বরই কষ্ট হয় ওদের জন্য!!!!
১৮ ই জুন, ২০১৪ রাত ১০:৫৬
প্রবাসী ভাবুক বলেছেন: সব দুর্ভাগ্য!
৩| ০৯ ই জুন, ২০১৪ বিকাল ৫:০৩
নীল জোসনা বলেছেন: সমবেদনা জানাই ।
৪| ০৯ ই জুন, ২০১৪ বিকাল ৫:১৯
আহমেদ আলিফ বলেছেন:
অবৈধ ভাবে বিদেশে যাবার চাইতে দেশে ছোট কিছু করলেও শান্তি!
©somewhere in net ltd.
১|
০৯ ই মে, ২০১৪ রাত ১২:৫৬
প্রবাসী পাঠক বলেছেন: অনেক সমবেদনা রইল ঐ প্রবাসী ভাইটার জন্য।