![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সকলে মিলিয়া সাজাব সুন্দর পৃথিবীকে।
লক্ষ্মীপুরের পৌর মেয়র আবু তাহেরের বড় ছেলে ও একাধিক খুনের মামলার সাজাপ্রাপ্ত আসামি বিপ্লব কারাগারে বসেও অনেকের সালিস-দরবার করেন। করতেই পারেন দেশে বর্তমানে যেভাবে অন্যায় অনাচার চলছে তার কোন বিচার হচ্ছে না। তো তিনি যদি জেলখানায় বসে বিচারের কাজ সম্পন্ন করেন তাতে ক্ষতি কি! দেশ পেল একজন নিবেদিত প্রাণ বিচারক, যে কিনা জেলখানায় বসেও বিচারকার্যের মত একটি মহৎ কাজ করে যাচ্ছেন।
এই নিবেদিত প্রাণ বিচারকের অনেক কৃতকর্মের মধ্য থেকে বর্তমান জেলনিবাসের কারণ নিয়ে কিছু কথা না উল্লেখ করলেই নয়। ১৯৯৮ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর রাতে জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও আইনজীবী নুরুল ইসলামকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে হত্যা করা হয়। পরে তাঁর লাশ কয়েক টুকরা করে মেঘনা নদীতে ফেলে দেওয়া হয়। এ ঘটনায় জড়িত থাকায় আদালত তাহেরপুত্র বিপ্লবকে ফাঁসির দণ্ড দেন। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর এই সাজা মওকুফের জন্য রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেন বিপ্লব। ২০১১ সালে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি মো. জিল্লুর রহমান মৃত্যুদণ্ড মাফ করে দেন। পরের বছর রাষ্ট্রপতি আরও দুটি হত্যা মামলায় (মহসিন ও কামাল হত্যা) বিপ্লবের যাবজ্জীবন সাজা কমিয়ে ১০ বছর করেন।
এর আগে ২০০৯ সালে স্কুলছাত্র জাহিদ হত্যা মামলা ও এতিমখানায় অগ্নিসংযোগের মামলা থেকে বিপ্লবকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। ‘রাজনৈতিক হয়রানিমূলক মামলা’ হিসেবে বিবেচনায় নিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুপারিশে মামলা দুটি প্রত্যাহার করা হয়।
প্রসঙ্গত, একটি কথা না বললেই নয়। আমাদের প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান তার স্ত্রী আইভি রহমানের হত্যার বিচারের জন্য তিনি বা রাষ্ট্রপক্ষ যে মামলা চালিয়ে যাচ্ছিল বা চলছে সেই মামলার বিচারের দাবী তিনি নৈতিকভাবেই হারিয়েছেন। ওইমামলায় আসামীর ফাঁসির রায় হলেও যদি রাষ্ট্রপতি আসামীর সাজা মওকুফ করে দেন তাহলে এর প্রতিবাদ করার নৈতিক অধিকার তার থাকার কথা নয়।
আসলে এইসব বিষয় নিয়ে এর আগেও অনেক লেখালেখি হয়েছে। বিপ্লব আলোচনায় আসার সাম্প্রতিক কারণ অন্যটি! আর সেটি হল কারাগারে বসেই তিনি বিয়ের কার্য সম্পন্ন করেছেন। তিনি বিয়ে করেছেন তার থেকে ২২ বছরের কনিষ্ঠ এক কনেকে। ব্যাখ্যা করার প্রয়োজন নেই এই বিয়ে তিনি ও তার প্রভাবশালী পিতার ক্ষমতার দাপটেই করতে সক্ষম হয়েছেন।
ওহ! আরেকটি কথা। তিনি জেলখানায় থাকলেও জেলখানার যেকোন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার চেয়ে অনেক বেশি সুযোগসুবিধা নিয়েই থাকেন। তার গায়েহলুদও হয়েছে জেলখানার ভিতরে মহাধুমধামে।
ওহ! হো! পাত্রী পছন্দ হল কিভাবে তা তো বলা হল না। মৃত আবুল খায়েরের কন্যা সানজিদা খায়ের কয়েকমাস আগে মায়ের সাথে কারাগারের ভিতরে গিয়েছিলেন জমিজমা সংক্রান্ত বিচার নিয়ে কারাবাসী তাহেরপুত্র বিপ্লবের কাছে। কারণ তিনি কারাগারে বসেই লক্ষ্মীপুরবাসীর বিচারকার্য সম্পন্ন করে থাকেন এবং সবাই তা মেনে নিতে বাধ্য থাকে। যাইহোক সেখানেই সানজিদাকে দেখে বিপ্লবের ভাল লেগে যায়। আর বিপ্লবের ভাল লাগা মন্দ লাগার বাইরে অন্য কিছু করা পিতৃহীন সানজিদা তো দূরের কথা এলাকার কারোরই নাই। আর তাতে অপরিহার্য্য পরিণতি এই বিয়ে!
যে সাজায় এখন তিনি জেলে আছেন তা নস্যি। যে কোন সময় তিনি বের হয়ে আসতে পারেন। একটু গুছিয়ে নিতে যেটুকু সময়। মৃত্যুদণ্ড নেই।যাবজ্জীবন কমে দশ বৎসর মাত্র তা হলে বের হতে আর দেরি হবে কেন? দেশটা চলছে তো এসব দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী দিয়েই। যেমনঃ নারায়নগঞ্জের মতো আরও অনেক যায়গায়ই তা আছে এবং যথেষ্ট রাষ্ট্রীয় সম্মান জনপ্রতিনিধিত্ব নিয়ে। তিনি বাসর রাতও সেরে নিতে পারবেন জেলখানায় বসে তা না বললেও চলে। সেটা আইন বিরুদ্ধ হবে বলে মনে হয়না, পৃথিবীর অনেক দেশেই তো সে ব্যবস্থা আছে তাহের পুত্রের হলে ক্ষতি কী?
রঙ্গভরা বঙ্গ রে তুই! আর কত রঙ্গ দেখাইবি মোদের!
বিপ্লব দেশের গর্বিত সন্তান। সরকারের উচিত বিপ্লবের প্রতি আরও একটু বেশি বেশি সহানুভুতি দেখানো। আসুন সবাই মিলে আমরা এব্যাপারে সরকারের প্রতি আহবান জানাই। প্রতিটি জেলা শহরে যদি এরকম একটি করে বিপ্লব থাকে, সরকারকে তাহলে আর বিরোধীদলীয় নেতাকর্মী বা আন্দোলন নিয়ে দুশ্চিন্তা করতে হবেনা।
©somewhere in net ltd.