নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মহাকালের কন্ঠস্বর

ইরফান আহম্মদ অপু

আমি পালিয়ে গিয়ে হবো শঙ্খচীল।

ইরফান আহম্মদ অপু › বিস্তারিত পোস্টঃ

গলপ

০৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ৯:২৬

মোবাইলটা ক্রমাগত বেজেই যাচ্ছে। ফোনটা দিচ্ছে তার স্ত্রী। তার ফোনটা ধরা উচিৎ। খুব জরুরি না হলে এ মহিলা এত বার ফোন দিয়ে বিরক্ত করতো না। কিন্তু তিনি ফোনটা ধরছেন না। তার স্ত্রীর সাথে কথা বলার চাইতে তার সামনে যে আহম্মক তিনজন দাঁড়িয়ে আছে তাদের সাথে কথা বলা অনেক জরুরি। এ তিনজনের দুজনের উপর তিনি প্রচন্ড রেগে আছেন। তার ইচ্চে করছে হারামজাদা গুলোকে ল্যাংটা করে পেটান। কিন্তু তিনি সেটাও করতে পারছেন না। এরা এক্সপার্ট লোক। নতুন এক্সপার্ট না বানানো পর্যন্ত এদের কিছু বলে হাতছাড়া করা যাবেনা। ইদানিং এক্সপার্ট লোকের অনেক কদর। এটা তিনি ভালই বোঝেন।



তিনি একটা সিগারেট ধরান। দু একবার কেশে তিনি হ্যাংলা পাতলা ছেলেটাকে বলেন, " তোর স্পট আজ কই ছিল?

- বস, মগবাজার মোড়।

" তোর সাথে কতজন ছিল?

- চাইর জন।

" কামডা হইলো না কেন?

- বস সুযোগটাই পাইনাই।

" সুযোগ না পাওয়ার কি আছে ?

- আইজ ওই স্পটে অনেক ভির আসিলো বস।

" তো!

- হেই লাইগাই সুযোগ পাইনাই?



তিনি এবার পাশের ছেলেটার দিকে তাকান। তিনি তাকানোর সাথে সাথে ছেলেটা এক গাল হেসে বলে, "ভাই আমার অপারেশান সাকসেস ফুল। পুরা মাঝ রাস্তায় কামডা সারছি"

- হুম। তিনি এবার কাল ছেলেটার দিকে তাকান। " তোর স্পট কই ছিল?

- উত্তরা।

" তোর কামডা হইল না কেন?

- ভাই তখন গার্মেন্টস ছুটি হইছিল। অনেক মেয়ে ছেলে আসিল।

" আর মেয়ে ছেলে দেইখা তোর পিরিতি উতলাইয়া উঠলো?

- এতগুলা মেয়ে ছেলে।

" তাইলে তোর বাপের কি?



ছেলেটা কোন কথা বলে না। মাথা নিচু করে থাকে। তিনি দ্বিতীয় ছেলেটার দিকে তাকান। ছেলেটা এখনও হাসছে।

" তোর স্পট কই আছিল?

- ভাই আগারগাও।

" তোর কাজের ডিটেইল বল।

- ভাই, পুরাই পাংখা কাম হইছে। একটা লোকও নামুনের সুযোগ দেই নাই। পুরা চলন্ত অবস্থায় ছুইড়া মারছি। একটুও এইদিক ওইদিক হয়নায়। শুনছি দুইটা উইকেট নাই। আরও দুই একটা নাকি পরবো খবরে কইছে।

ছেলেটা আবার হাসছে। তিনি কিছুটা নিশ্চিন্ত হন। সেই প্রাইভেট লিখা নম্বর থেকে ফোন এলে তিনি কিছুটা হলেও জবাব দিতে পারবেন। তিনি আর একটা সিগারেট ধরান।



তিনি তার মোবাইলের দিকে তাকান। একটা ম্যাসেজ এসেছে। তার একমাত্র শালা ম্যাসেজ করেছে। তিনি স্ত্রীর ফোন ধরছেন না দেখে হয়তো সে ম্যাসেজ করেছে। তিনি মোবাইলটা হাতে নিয়ে ম্যাসেজ খোলেন।



" দুলাভাই, তারাতারি ঢাকা মেডিকেল চইলা আসেন। বিল্লু হাসপাতালে "

ম্যাসেজটা পড়েই তিনি তার শালাকে ফোন দেন।

" ওই বিল্লুর কি হইছে?

- দুলাভাই ওর পুরা গা পুইড়া গেছে। বাচব কিনা সন্দেহ।

" ওই, কি হইছে ওর? পুড়লো কেমনে?

- বাসে ও মিরপুর যাইতেছিল। বাসে কারা যেন পেট্রল বোমা মারছে। দুলাভাই আপনে তারাতারি চইলা আসেন।

" কোন জায়গায় হইছে এইডা ?

- আগারগাও। দুলাভাই আপনে দেরি কইরেন না, আমি ফোন রাখি।



তিনি মাঝের ছেলেটার দিকে তাকান। ছেলেটা এখনও হাসছে। ছেলেটা এত হাসে কেন?



বিল্লুও খুব হাসতে জানে। বিল্লু, তার একমাত্র ছেলে।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.