![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
রতন, এক আশাবাদী তরুনের নাম। শৈশব কেটেছে গ্রামের ধুলিমিশ্রিত সবুজ গ্রামে। কৈশরে সে আসে ঢাকায়। ভর্তিহয় এক নামকরা স্কুলে তাও আবার অন্যের সহায়তায়। ছোটকাল থেকেই সে খুবই ভীরু প্রকৃতির। তাই সবকাজে কেমন যেন ভীতু ভীতু ভাব থাকেই। ঢাকায় আসার পর মা বাবা কে গ্রামে রেখে আসে, উঠে ভাইয়ের বাসায়। ভাইয়ের বউ তাকে যা মনে চায় তাই করিয়ে নেয়। কারণ সে হাবাগোবা টাইপের পোলা। সে সবার হুকুম পালন করে। মানে জী, জী, ভাই, ভাবী টাইপের কথা তার মুখে লেগেই থাকে। যত কাজ করুক না কেন তার মাঝে কোন না শব্দ নাই। সব সময় সবার হুকুম পালন করতে ব্যাস্ত। নিজের পড়ালেখার কোন খরব নাই।
মানে নিজের জীবন নিয়ে কোন টেনশন নাই। এভাবে দিন যায়, মাস যায়, কাটে বছর। রতন এবার এস এস সি পরীক্ষা দিবে। কোনমত থ্রি পয়েন্ট সামথিং পাইছে আর কি! অংকে ডাব্বা মেরেছে, মানে সি গ্রেড। ততেই খুশি ভাই ভাবি। তো পাশ করার পর তার জীবনে একটা ঘটনা ঘটে গেল, রতন ধর্মীয় কাজ কাম করে, আর সদা সত্য কথা বলে, মানে ধর্মীয় সব কিছু মেনে চলতে চায়, আর অন্যায় ও অসত্য দেখলে কাউকে ছাড় দেয় না। রতনের এ পরিবর্তন দেখে ভাই ভাবি তো টেনশনে পড়ে গেল। যখন দেখে যে অবস্থা বেগতিক তারা রতন কে মানসিক হাসপাতালে ভর্তি করে। রতন হাসপাতালে ২৫ দিন থাকার পর স্বাভাবিক হয়। ( বিঃদ্রঃ ভাই ভাবি সারাদিন দাম্পত্য কলহে লিপ্ত থাকত, রতন মনে করে যে এসব দাম্পত কলহ দেখতে দেখতেই তার মাথা খারাপ হয়ে গেছে!) হাসপাতাল থেকে বাসায় যায়, সে রেষ্ট এ থাকে কিছুদিন, এরপর সে ঢাকার একটি সেকন্ড ক্লাস টাইপের কলেজ ভর্তি হল। মাঝে হল কি রতন তার ভাবির কাছে কি যেন আবদার করে বসল। কিন্তু ভাবী আর কোন মতেই রাজী হল না। উপায়ন্ত না পেয়ে রতন কান্নায় চোখ ভাসিয়ে বালিস ভিজিয়ে ফেলল। রতনের কলেজ জীবন কাটছে...। সাহস নাই তাই ভাই ভাবীর কাছে প্রয়োজনীয় জিনিস টাও চাইতে পারে না । বেচার আর কি করবে, মনের কষ্ট চেপে রাখে।
মনের যে এত কষ্ট, ভাই ভাবীর মানষিক নির্যাতন কিন্তু সে এসব কখনো তার বাবা মা কে বলতো না। যাই হোক আস্তে আস্তে রতন ইন্টারমেডিয়েট পাস করল। এবং একই কলেজে অনার্স ভর্তি হয়। অনার্স তৃতীয় বর্ষে এসে রতনের আবার মানষিক রোগ দেখা দেয়, সে আবার ভর্তি হয় সাইক্রিয়াটিক হাসপাতালে, এবার সে পয়তাল্লিশ দিন থাকে । স্বাভাবিক হবার পর সে কোন মতে অনার্স দ্বিতীয় শ্রেনীতে পাশ করে। অনার্স পাশ করার পর, তার এক বড় ভাই বিদেশ থাকার সুবাদে সে বিদেশ চলে যায়, দেশে তার ছোটবোন তাকে একই কলেজে মাষ্টার্স এ ভর্তি করিয়ে দেয়। তারপর সে বিদেশ থেকে এসে মার্ষ্টাস পরিক্ষা দিয়ে দ্বিতীয় শ্রেনীতে পাশ করে। এখানে তার একাডেমিক সেশন শেষ হয়। পরে সে ভাইয়ের ব্যবসা দেখাশুনা করে, মাগার ভাই রতন কে বোকা পেয়ে ইচ্ছামত খাটায় নেয়, রতন কিচ্ছু কয় না, কিন্তু ভাই রতনের বেতন যথাসময়ে দেয় না। এভাবে রতনের বিদেশ জীবন কাটছে, দু বছর পার হবার পর, তার ভাই ব্যবসা গুটিয়ে রতন কে ফাসিয়ে অন্যদেশে চলে যায়, বেচারা রতন পড়ল বিপদে, পরে কোনরকম ভাবে সে বিদেশ থেকে চলে আসে। এভাবে রতনের সেই দেশ এর কাহিনি সমাপ্ত হয়।
এবার আসা যাক রতনের বিয়ের প্রসঙ্গে, সে বিদেশ থেকে ওভাবে এসে কিছু টাকা পায়সা হাতে ছিল, তা দিয়ে সে বিয়ে করে ফেলে, বেচারা বিয়ে করে পড়ে যায় মহাবিপদে, কাজ কি করবে , টাকা কিভাবে কামাবে সে চিন্তায় রতন এর ঘুম হারাম। পরে রতনের আর এক ভাই তারে অন্য আর এক দেশে নিয়ে যায়, সে দেশ ও তার ভাই রতনের সাথে চিটারী করে। এভাবে রাতনের বিদেশ জীবন কাটছে। অন্য দিকে রতনের বউ বেচারা ভার্সিটির পড়ালেখা শেষ হয় নাই, রতন থাকে বিদেশ, সে থাকে দেশে। এভাবেই চলছে রাতনের সংসার।
রতন এখন হতাশ আনমনে হয়ে নীল আকাশের দিকে তাকায় থাকে আর কয় , আমার জীবন না যে ভাবে চলে চলতো, কিন্ত বিয়ে যে কেন করল। সে চিন্তায় বেভুর হয়ে কখন যে ঘুমিয়ে পড়ে সে নিজেও জানে না।
তার ভাগ্যে কি আছে???, কে জানে...............................................!
(রতন) ছদ্ম নাম
©somewhere in net ltd.