![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
তোমরা মুসলিম হয়ে আমাকে ধন্য করেছ, তা মনে করো না। বরং আল্লাহ ঈমানের পথে পরিচালিত করে তোমাদের ধন্য করেছেন। (হুজুরাত:১৭)
স্বল্প কথায় পরিচিতি:
পশ্চিমে তিনি "দ্য প্রিন্স অব ফিজিশিয়ানস" নামে পরিচিত। তার গ্রন্থ "আল কানুন ফিল থিব" (কানুন অব মেডিসিন) চিকিৎসা শাস্ত্রের মূল অপ্রতিদ্বন্দ্বী পাঠ্য পুস্তক হিসেবে গন্য হত প্রায় পাচ শতক ধরে । যদিও তিনি ফার্মাকোলজি ও ক্লিনিক্যাল প্র্যাকটিসের প্রভূত উন্নয়ন করেন, তার মূল অবদান ছিল মেডিসিন শাস্ত্রে। তিনি হলিস্টিক মেডিসিনের প্রনেতা - যেখানে একই সংগে শারীরীক, মানসিক, সামাজিক ও আত্মিক যোগসূত্রকে বিবেচনায় রেখে রুগীর চিকিৎসা করা হয়। তিনিই প্রথম মানব চক্ষুর সঠিক এনাটমি করেন। যক্ষা রোগ নিয়ে তিনি অভিমত দেন যে যক্ষা একটি ছোয়াচে রোগ। যা তার পরের পশ্চিমা চিকিৎসকবৃন্দ প্রত্যাখ্যান করেন এবং যা আরো পরে সঠিক বলে প্রমানিত হয়। তিনিই প্রথম মেনিনজাইটিসকে ব্যাখা করেন। প্রকৃত পক্ষে তিনিই আধুনিক চিকিৎসা শাস্ত্রের জনক।
এই "তিনি" আর কেউ নন, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ চিকিৎসক ও বিজ্ঞানী ইবনে সিনা। যার অসংখ্য অবদানের গুটি কয়েক অবদানের কথা উপরের প্যারাতে আমি উল্লেখ করেছি। যার জীবন কিংবা কর্মের কোন শেষ নেই, তার সমস্ত অবদান উল্লেখ করার অসম্ভব কোন ইচ্ছেও আমার নেই। তার শুভাকাংখীরা তাকে জ্ঞানার্জন ও গবেষনার প্রানান্ত পরিশ্রম ত্যাগ করে জীবনকে সহজ ভাবে নেবার উপদেশ দিতেন, যা তিনি হেলায় প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। বলা হয়, তার মাইল স্টোন পুস্তক "কানুন" লিওনার্ডো দ্য ভিনসিকেও প্রভাবিত করেছিল। কানুন বারশ শতকে ল্যাটিন ভাষায় অনুদিত হয়ে প্রায় সতেরশ শতক পর্যন্ত পৃথিবীতে চিকিৎসা শাস্ত্রের টেক্স্ট বুক হিসেবে গন্য হত। একজন প্রথিতযশা পশ্চিমা ডক্টর "কানুন"কে "মেডিকেল বাইবেল" বলে ঘোষনা করেন। বুখারায় তার জন্ম স্থানে যে মিউজিয়াম রয়েছে তাতে তার নিবন্ধ, সার্জিক্যাল ইনস্ট্রুমেন্ট এবং রুগীদের চিকিৎসারত অবস্থায় ছবি - এই সবই স্থান পেয়েছে। তিনি যে শুধু চিকিৎসা শাস্ত্রেই অবদান রেখেছেন তা নয়, বরং এস্ট্রোনমি সহ আরো অনেক শাখায় তার গুরুত্ব বহ অবদান রয়েছে। তিনি মোমেন্টামকে ওজন ও বেগের গুনফলের সমানুপাতিক বলে অভিমত দেন। তিনি আরো অভিমত দেন যে, হাজারো চেষ্টা করলেও সীসা বা তামা থেকে সোনা বানানো যাবে না, যা তার সময়ের অনেক বিজ্ঞানী নিরন্তর চেষ্টা করেছিলেন। তিনি শুক্র গ্রহকে পৃথিবীর চেয়ে সূর্যের অধিকতর নিকটে অবস্থিত বলে নির্নয় করেন। তার অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ চাদের একটি ফাটলের নাম তার নামে করা হয়েছে।
জীবদ্দশাতেই একজন সফল চিকিৎসক হিসেবে পরিচিত ছিলেন। ইবনে সিনা জার্জানের রাজপুত্রের চিকিৎসা করে সুনাম কুড়িয়েছিলেন। এই জার্জানেই তিনি তার বিখ্যাত বই "কানুন" রচনা করেন। জার্জানের রাজপুত্র অনেক দিন ধরে অসুস্থতায় ছিলেন শয্যাশায়ী। স্থানীয় চিকিৎসকরা কিছুতেই তার অসুস্থতা ধরতে পারছিলেন না, তারা রীতিমত হতবুদ্ধি হয়ে পড়েন। অবশেষে ইবনে সিনার সাহায্য নেন। ইবনে সিনা খেয়াল করলেন রাজপুত্রের সামনে তার প্রেমিকার নাম উচ্চারন করতে পালসের গতি বেড়ে যায়। ইবনে সিনা সহজ ছোট্ট সমাধান দিলেন, "যুগলদের মিলিয়ে দাও।"
মেটাফিজিক্সের প্রতি তার দুর্বলতা যেভাবে এল:
প্রথমে ইবনে সিনা মেটাফিজিক্সকে স্পর্শের বাইরে বলে গুরুত্ব দেন নি। এর অধ্যয়নকে সময় নষ্ট বলে মনে করতেন। কিন্তু একটি বিকেল তাকে বদলে দিল। সে বিকেলে বইয়ের বাজারে এক বিক্রেতা তাকে অনেক কষ্টে তিন দিরহামের বিনিময়ে আরেকজন বিতর্কিত মুসলিম দার্শনিক ফারাবীর "অন দ্য অবজেক্টস অব মেটা ফিজিক্স" বইটিকে কিনতে প্ররোচিত করেন। বিক্রেতা খুব অর্থের দরকার হয়ে পড়েছিল। অনিচ্ছা সত্ত্বেও তিনি বইটি কেনেন। বইটি পড়ার পরে সবকিছু বদলে যায়। ফেলে আসা এরিস্টটলের মেটা ফিজিক্স দর্শনকে আবার গুরুত্ববহ মনে করেন এবং পরদিন এই কৃতজ্ঞতায় গরীবদের অর্থদান করেন। তিনি বলেন, আমি এরিস্টটলের মেটা ফিজিক্স মোট চল্লিশ বার অধ্যয়ন করে তাকে হৃদয়ে আয়ত্ত্ব করি। তা সত্ত্বেও আমার বোঝায় ঘাটতি থেকে যায়। শেষে ফারাবীর এই বই পড়েই আমি এরিস্টটলের মেটা ফিজিক্স বুঝতে পারি। তার দর্শনে মেটা ফিজিক্স একটি গুরুত্বপূর্ন স্থান দখল করে রয়েছে। তার অন্যতম মাইলস্টোন পুস্তক শিফাকে চারটি ভাগে ভাগ করা যায়: লজিক, ফিজিক্স, মেটা ফিজিক্স, ম্যাথমেটিক্স। এই মেটা ফিজিক্সের উপরে গবেষনা পরবর্তীতে তার বিরোধীদের প্রধান অস্ত্রে পরিনত হয়।
যেভাবে এল কাফের ফতোয়া:
ইবনে সিনাকে নিয়ে এর আগে একটি ছোট লেখায় আমি বলেছিলাম তার প্রতি অর্থোডোক্স মুসলিম স্কলারদের বিরোধিতার কথা (Click This Link)। ইবনে সিনার প্রতি তাদের এই বিরোধীতার মূলে রয়েছে মেটা ফিজিক্সে ইবনে সিনার নিজস্ব দর্শন।
তার বিরুদ্ধে কাফের ফতোয়া দেয়া হয় নিম্নোক্ত তিনটি বিষয়কে কেন্দ্র করে। প্রথমত: ইবনে সিনা তার দর্শনে বিশ্বকে চিরজীবী দাবী করেন যার কোন শুরু নেই। যেখানে মুসলিমরা বিশ্বাস করেন আল্লাহ শূন্য থেকে এই পৃথিবীকে সৃষ্টি করেছেন। দ্বিতীয়ত: তিনি বলেন, আল্লাহ সৃষ্টি এবং ধ্বংস সম্পর্কে সাধারন ভাবে জানেন, কিন্তু পুংখানুপুঙ্খ ভাবে নয়। যেখানে মুসলিমরা বিশ্বাস করে থাকেন, আল্লাহ আক্ষরিক অর্থেই প্রতিটি বিষয় অবগত। তৃতীয়ত, তিনি শারীরীক পুনরুথ্থান নয়, বরং আত্মিক পুনরুথ্থানের উপর জোড় দেন। মূলত এই তিনটি কারনে ইমাম গাজালী ইবনে সিনাকে কাফের সাব্যস্ত করা বাধ্যতামূলক বলে দাবী করেন।
এখন দেখা যাক, এই আপাত বিতর্কিত্ ইস্যু গুলো নিয়ে ইবনে সিনা আসলে কি বলেছিলেন।
ইবনে সিনা এটা বিশ্বাস করতেন যে, এই বিশ্ব চিরজীবী বা আদি অন্ত বিহীন। তবে এটাও বিশ্বাস করতেন যে, বিশ্ব একটি সৃষ্ট বস্তু। তিনি ব্যাখা দেন, সৃষ্ট হবার অর্থ এই নয় যে সময়ের প্রেক্ষিতে তার কোন শুরু আছে। তিনি আরো বলেন, বিশ্বের অস্তিত্বের পেছনে কার্যকরন ও প্রয়োজন বিদ্যমান। আল্লাহ এই বিশ্বকে হতে দিয়েছেন, যার শুরু থাকতেও পারে কিংবা নাও থাকতে পারে। তবে শেষ নেই। ইমাম গাজালী চ্যালেন্জ্ঞ দিয়ে বলেন, আল্লাহ যদি একমাত্র স্বাধীন অমূখাপেক্ষী সত্ত্বা হন তবে বিশ্বকে তার পরেই সৃষ্ট হতে হবে, তা অস্তিত্ব ও সময় - দুটোরই মানদন্ডে। সুতরাং তা অনাদি অনন্ত হতে পারে না। এই দর্শনকে কুফরী বলে আখ্যায়িত করেছেন ইমাম গাজালী।
এবারে আসা যাক আল্লাহর জ্ঞানের পরিধি নিয়ে ইবনে সিনা কি বলেছেন। তিনি বলেন, আল্লাহ সমস্ত খুটিনাটি বিষয় সম্পর্কে অবহিত, তবে এই জানাটা সামগ্রিক। সময়ের ভিত্তিতে তার জ্ঞানের কোন পরিবর্তন হয় না। ফলে যখন কোন ইভেন্ট সত্যি সত্যি সংঘটিত হয়, তখন তা তিনি নূতন করে জানতে পারেন না, কারন তার জ্ঞান সময়ের সাথে পরিবর্তিত হয় না। ইবনে সিনা আল্লাহর "একচ্ছত্র (এবসোলিউট) জ্ঞান"কে "সময়ের সাথে অপরিবর্তনশীল" বলে ব্যাখা করেন।
("When this particular event actually occurs in time, God, not being subject to temporal change, cannot know it. But He also need not know it in this manner for He knows it already".) এই সাইটে ইবনে সিনার স্রষ্টা সম্পর্কিত দর্শনকে ব্যাখা করা হয়েছে (Click This Link)। সাদামাটা ভাষায় (আমি যা বুঝলাম) যার অর্থ হচ্ছে প্রকৃতির প্রতিটি নিয়ম স্রষ্টার অবগত এবং প্রকৃতির প্রতিটি বস্তু কার্যকরন, ফলাফল ও তাদের সম্পর্কের দ্বারা পরিচালিত। যেহেতু এসব বস্তু নিয়মের বাইরে নয়, এবং সেই নিয়মের খুটিনাটি স্রষ্টার অবগত, তাই এসব বস্তুর খুটিনাটি সম্পর্কে স্রষ্টার ধারনা সামগ্রিক।
সত্যি বলতে কি তার এই ডকট্রিনে আমি কোন কুফরি খুজে পাই নি। যদিও এই ডকট্রিনকেও কুফরী লেবেল সাটা হয়েছে। ইবনে সিনা "স্রষ্টার খুটিনাটি জ্ঞান" কে ব্যাখা করেছেন তার নিজের দর্শন দিয়ে। এই খুটিনাটি জ্ঞানকে তিনি অস্বীকার করেন নি মোটেও। তিনি যুক্তি এবং কার্যকরনকে অতিরিক্ত গুরুত্ব দিয়ে বলেছেন, সমস্ত ঘটনা প্রবাহ নিয়মের ছকে বাধা বলেই ঘটছে। এই নিয়ম স্রষ্টার তৈরী যার ফলে কোন ঘটনা ঘটলে তা আলাদা ভাবে স্রষ্টার জানার কিছু নেই কারন তা তো নিয়মের প্রেক্ষিতেই ঘটেছে। সেন্স-পারসেপশন, যা ঘটনাপ্রবাহের উপর নির্ভর করে, তা স্রষ্টার ক্ষেত্রে খাটেনা কারন তার জ্ঞান সময়ের উর্ধ্বে এবং সময়ের সাথে অপরিবর্তনশীল। আমি যা বুঝলাম তা হল পুরো বিশ্ব এবং তার ঘটনাপ্রবাহকে একটি if-else সমৃদ্ধ প্রোগ্রাম দিয়ে প্রকাশ করা যায়, যার ইনপুট আউটপুট সহ পুরো প্রোগ্রাম স্রষ্টার জ্ঞানের সীমায়। তাই খুটিনাটি ভাবে কখন কোন পথ ধরে প্রোগ্রাম এগুচ্ছে তা তো স্রষ্টার জানার কোন প্রয়োজন নেই। যা হোক, এই ডকট্রিন তার বিরুদ্ধে ফতোয়ার ঢাল হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
তাকে সবচাইতে বেশী সমালোচনা সহ্য করতে হয় যে কারনে তা হল শারীরীক পুনরুথ্থান বিষয়ে তার অবস্থান। দাবী করা হয় মৃত্যু পরবর্তী শারীরীক পুনরুথ্থানকে ইবনে সিনা অস্বীকার করেছেন। উল্লেখ্য শারীরীক পুনরুথ্থানে বিশ্বাস পোষন ইসলামের মৌলিক বিশ্বাসের একটি। নীচের আয়াতগুলোতে সমর্থন পাওয়া যাবে:
"মানুষ কি মনে করে যে আমরা কখনো তার হাড়গোড় একত্রিত করব না। হ্যা, আমরা তার আংগুলগুলো পর্যন্ত পুনর্বিন্যস্ত করতে সক্ষম।" (ক্কিয়ামাহ: ৩-৪)।
"তারা বলেঃ যখন আমরা অস্থিতে পরিণত ও চূর্ণ বিচূর্ণ হয়ে যাব, তখনও কি নতুন করে সৃজিত হয়ে উত্থিত হব? বলুনঃ তোমরা পাথর হয়ে যাও কিংবা লোহা। অথবা এমন কোন বস্তু, যা তোমাদের ধারণায় খুবই কঠিন; তথাপি তারা বলবেঃ আমাদের কে পুর্নবার কে সৃষ্টি করবে। বলুনঃ যিনি তোমাদেরকে প্রথমবার সৃজন করেছেন। অতঃপর তারা আপনার সামনে মাথা নাড়বে এবং বলবেঃ এটা কবে হবে? বলুনঃ হবে, সম্ভবতঃ শ্রীঘ্রই।" [বনী ইসরাঈল/ইসরাঃ ৪৯-৫১]
শারীরীক পুনরুথ্থানকে অস্বীকার করার জন্য ইমাম গাজ্জালী ও আরো অনেক স্কলার ইবনে সিনাকে কাফের সাব্যস্ত করা বাধ্যতামূলক বলে দাবী করেছিলেন। মূলত এই মতবাদের ভিত্তিতে ইবনে সিনার উপর কুফরী আরোপ করা হয়। এখন প্রশ্ন ইবনে সিনা কি সত্যিই শারীরীক পুনরুথ্থানকে অস্বীকার করেছিলেন? উল্লেখ্য ইবনে সিনা নিজেও বলেছেন মৃত্যু পরবর্তী জীবনকে ইসলামের আলোতেই ব্যাখা করতে হবে, এছাড়া আর কোন যুক্তি গ্রাহ্য ব্যাখা নেই। ইবনে সিনা আত্মিক পুনরুথ্থানের পক্ষে নীচের আয়াতগুলো দেন:
"হে প্রশান্ত মন।
তুমি তোমার পালন কর্তার দিকে ফিরে যাও সন্তুষ্ট ও সন্তোষভাজন হয়ে।"
(ফজর : ২৭-২৮)
ফেরেশতা ও রূহ আল্লাহর দিকে ঊর্ধ্বগামী হয় (মাআরিজ : ৪)
পরবর্তী কালে যখন ইবনে সিনার দর্শনকে আরো বিশ্লেষন করা হয়, তখন দেখা যায় তিনি প্রকৃত পক্ষে শারীরীক পুনরুথ্থানকে পুরো অস্বীকার করেন নি। তিনি সুরা ওয়াকিয়াতে যে তিনটি দলের কথা বলা হয়েছে (আর তোমরা হয়ে পড়বে তিনটি শ্রেনীতে (ওয়াক্কিয়াহ : ৭)), তার তৃতীয় দলটিকে শুধু মাত্র শারীরীক পুনরুথ্থান করা হবে বলে দাবী করেছেন। বাকী দুই দল আত্মিক ভাবেই স্বর্গ লাভ করবে। তৃতীয় দলের শারীরীক পুনরুথ্থান হবে শাস্তির জন্য। সুতরাং ইবনে সিনা শারীরীক পুনরুথ্থানকে একটি বিশেষ দলের জন্য নির্ধারন করেছেন। যার ফলে ইবনে সিনা শারীরীক পুনরুথ্থানকে সম্পূর্ন অস্বীকার করেছেন - বিরোধীদের এই দাবী দুর্বল হয়ে যায়।
এখানে উল্লেখ্য ইসলামের ইতিহাসে যুক্তি এবং লজিককে অতিরিক্ত গুরুত্ব দেয়ার সিলসিলা ইবনে সিনাই যে প্রথম শুরু করেন - তা নয়। তার আগে মুতাজিলা গোষ্ঠীও যুক্তিকে আশ্রয় করে ইসলামের অনেক বিভ্রান্তিকর ব্যাখা দেয়। অথচ তাদের প্রতি কেউ কাফের ফতোয়া ইস্যু করে নি। আমার স্মৃতি বিশ্বাসঘাতকতা না করে থাকলে হাদীসকে শরিয়ার উৎস হিসেবে প্রথম অস্বীকার করে এই মুতাজিলা গোষ্ঠী। কারন তারা যুক্তি দিয়ে ইসলামের অনেক মৌলিক আকিদা ব্যাখা করতে চাইত, যা অনেক সময় হাদীসের সাথে সাংঘর্ষিক হত। ইবনে সিনার দর্শনেও এই মুতাজিলা গোষ্ঠীর প্রভাব কিছুটা দেখা যায়।
ইবনে সিনা আত্মবিশ্বাসী একজন মানুষ ছিলেন। তিনি নিজেকে জ্ঞানী, বুদ্ধিমান ও একনিষ্ঠ মুসলিম বলে দাবী করতেন। তার প্রথম দুইটি দাবীর সাথে বিশ্ব একমত, যদিও তৃতীয় দাবীটি সর্বজন স্বীকৃত হয় নি। তবে পরবর্তীতে অনেকেই দাবী করেছেন কাফের ফতোয়াটা ইবনে সিনার জন্য ছিল অতিরিক্ত কঠোর একটি ফতোয়া।
কাফের ফতোয়াকে অস্বীকার করে ইবনে সিনার কবিতাটা তুলে দিলাম:
"আমার মত কাউকে ব্লাসফেমীর দায়ে অভিযুক্ত করা সহজ কিংবা সহজলভ্য নয়
আমার চেয়ে দৃঢ় বিশ্বাস আর নেই
আমার মত কেউ যদি অধার্মিক হয়ে থাকে
তবে পৃথিবীতে আর কোন মুসলিম নেই।"
===========================================
লেখাটির জন্য যেসব সাইটের সাহায্য নেয়া হয়েছে তার কয়েকটি:
Click This Link sina bodily resurrection&f=false
Click This Link sina&f=false
Click This Link
Click This Link
http://www.lightofquran.info/10word.htm
Click This Link
Click This Link sina bodily resurrection&f=false
Click This Link
[পুনশ্চ: ইবনে সিনাকে নিয়ে আমার আরেকটি ছোট লেখা রয়েছে, এই লিংকে Click This Link যা আগ্রহী পাঠকেরা চাইলে পড়তে পারেন। ]
২| ০৭ ই আগস্ট, ২০০৯ রাত ১০:১৮
অমি রহমান পিয়াল বলেছেন: আরে নাহ, কাফের হইলে জামাতে ইসলামী ইবনে সিনার নামে কেনো হসপিটালের নাম রাখব?
লেখা খুবই ভালো লাগছে। প্লাস দিছি
০৭ ই আগস্ট, ২০০৯ রাত ১০:১৯
উম্মু আবদুল্লাহ বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে।
৩| ০৭ ই আগস্ট, ২০০৯ রাত ১০:২৭
ধইঞ্চা বলেছেন: ভাল লিখেছেন ।
৪| ০৭ ই আগস্ট, ২০০৯ রাত ১০:৩১
পারভেজ বলেছেন: চমৎকার বিশ্লেষণমুলক লেখা। ব্যক্তিগত ভাবে আমি ককোন ইমামকেই অন্ধভাবে অনুসরণের পক্ষপাতি নই। সবচেয়ে সহজ কারণ, তারা নিজেরদেরকে বিভেদের উর্ধে রাখতে পারেননি। একমত হতে পারেননি। তাছাড়া, শিয়া বা সুন্নী বলে কিছুর অবস্থানকেও সঠিক ভাবিনা।
ধন্যবাদ
০৮ ই আগস্ট, ২০০৯ দুপুর ১২:০৮
উম্মু আবদুল্লাহ বলেছেন: আমিও অনেকটা সেরকম। আপনাকেও ধন্যবাদ।
৫| ০৭ ই আগস্ট, ২০০৯ রাত ১০:৩৩
শেরজা তপন বলেছেন: দারুন বিশ্লষনধর্মী বর্নণা। ধন্যবাদ আপনাকে। ভাল লেগেছে
৬| ০৭ ই আগস্ট, ২০০৯ রাত ১০:৩৭
রাফা বলেছেন: ভালো লেখা ; এই প্রচেষ্টা বর্তমানেও অব্যাহত আছে ,কারো কোন মন্তব্য কিংবা অভিমত অপছন্দ হলেই মুর্তাদ এবং নাস্তিক ঘোষণা দিয়ে দেওয়া হয়।যা সম্পূর্ণ অনভিপ্রেত।ধন্যবাদ
০৯ ই আগস্ট, ২০০৯ ভোর ৫:১৮
উম্মু আবদুল্লাহ বলেছেন: এখনকার হিসেব বরং আরো জটিল। ইবনে সিনাকে দর্শনের জন্য কাফের ফতোয়া দেয়া হলেও মৃত্যুদন্ডের হুমকি দেয়া হয়েছিল তা আমার জানা নেই। তিনি মৃত্যু ঝুকিতে ছিলেন, তবে আমার মনে হয় না সেটা তার কথিত কুফরী দর্শনের কারনে। কিন্তু এখনকার পৃথিবীতে অনেক সময় আরো চরম পন্থা দেখা যায়।
৭| ০৭ ই আগস্ট, ২০০৯ রাত ১০:৩৯
হোরাস্ বলেছেন: অনেক কস্ট করছেন নিজে বোঝার এবং নিজে যা বুঝছেন সেইটা অন্যদের বোঝানোর। এইজন্যে +
গাজ্জালীর আগে আব্বাসীয় খলিফা আল-মুস্তানজীদও ইবনে সিনাকে কাফির ঘোষনা করছেন। তার ব্যাপারে কিছু জানতে চাই।
Like al-kindi before him and ibn-rushd after him, ibn-sina was was simply declared an atheist (kafir). At the instigation of the an Abbasaid caliph (al mustanjid, d 1170)ordered his books burned. It was ibn Sina’s philosophy rather than his science that condemned him in the eyes of his coreligionists.” সূত্রঃ Islam, a way of life By Philip Khuri Hitti
৮| ০৭ ই আগস্ট, ২০০৯ রাত ১০:৪৫
লড়াকু বলেছেন: ইন্টারেস্টিং।
৯| ০৭ ই আগস্ট, ২০০৯ রাত ১০:৫৫
সিদ্ধার্থ আনন্দ বলেছেন: দারুন লাগল। প্রিয়েতে।
১০| ০৭ ই আগস্ট, ২০০৯ রাত ১০:৫৭
ত্রিভুজ বলেছেন: প্রিয় পোস্টে রাখলাম। ইবনে সিনা নিয়ে আরো কিছু পোস্ট আশা করছি...
০৭ ই আগস্ট, ২০০৯ রাত ১১:০৭
উম্মু আবদুল্লাহ বলেছেন: আমি এরপরে "অ্যালজাব্রার জনক" আল খাওয়ারিজমীকে নিয়ে একটি লেখা লেখার ইচ্ছে রাখছি। আপাতত ইবনে সিনাকে নিয়ে আর লিখছি না।
মন্তব্যের জন্য সবাইকে ধন্যবাদ।
১১| ০৭ ই আগস্ট, ২০০৯ রাত ১০:৫৮
স্বপ্ন-বয়ান বলেছেন: ভালো লিখেছেন।
১২| ০৭ ই আগস্ট, ২০০৯ রাত ১১:০৬
আনোয়ারুল আলম বলেছেন: ইবনে সিনার আরেকটা ব্যাপার আছে যেটা আপনি উল্লেখ করেন নি ।
তিনি কবরস্থান থেকে লাশ চুরি করে সেগুলো ব্যবচ্ছেদ করে শরীরবিদ্যা সম্পর্কে অনেক কিছু আবিস্কার করেছিলেন ।
তার লাশ চুরি করার এই ঘটনা টা আবিস্কার হওয়ার পর থেকেই তাঁর উপর বিভিন্ন ধরনের চাপ তৈরি করা শুরু করে তথাকথিত সমাজপতিরা।
যে বইএ এই বিষয়টি নিয়ে পড়েছি, সেটির নাম এখন মনে পড়ছে না । তাই রেফারেন্সটা দিতে পারলাম না বলে দুঃখিত ।
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ এই লেখাটির জন্য ।
০৭ ই আগস্ট, ২০০৯ রাত ১১:১০
উম্মু আবদুল্লাহ বলেছেন: আমার লেখাটি সংক্ষিপ্ত। তাতে অনেক কিছুই আসেনি।
তবে যেসব রেফারেন্স ঘেটেছি তাতে কোনটাতেই লাশ চুরির বিষয়টি নেই। সেজন্যে এ বিষয়ে আমার কোন ধারনা নেই। তবে তিনি ব্যবচ্ছেদ সমর্থন করতেন - এরকমটা পড়েছি। এটা চিকিৎসকদের জন্য স্বাভাবিক বলে মনে হয়েছিল।
১৩| ০৭ ই আগস্ট, ২০০৯ রাত ১১:৩৬
লেখাজোকা শামীম বলেছেন: বিজ্ঞান নিয়া যারাই মেতেছে, তারাই ধর্মের রোষানলে পড়েছে। এটা নতুন কিছু না।
২৪ শে এপ্রিল, ২০১০ ভোর ৬:১৬
উম্মু আবদুল্লাহ বলেছেন: মূলত দর্শনের ক্ষেত্রে এটি সত্য।
১৪| ০৭ ই আগস্ট, ২০০৯ রাত ১১:৪৯
সততার আলো বলেছেন: আমি যদ্দুর জানি, ইবনে সিনা শহীদ হয়েছেন। তাঁর শাহাদাতের প্রেক্ষাপট জানলে, একথা কারোই অস্বীকার করার কথা নয় যে, তিনি জান্নাতী একজন মানুষ।
তিনি একই সাথে ছিলেন মানবপ্রেমী, ধর্মীয় বিদ্বেষহীন, ধার্মিক, বিশ্বাসী ইত্যাদি। তাঁকে তাঁর অসংখ্য (প্রায় শখানেক) বইসহ পুড়িয়ে মারা হয়েছে। এ কাজটি সংঘটিত হয়েছিল এক পাদ্রির দ্বারা, যে কিনা নিজেই তার দ্বারা উপকৃত হয়েছিলেন।
আমার চোখে ইবনে সিনা হলেন জ্ঞানপিপাসু মুসলিমদের জন্য অনুসরনীয় একজন মানুষ।
০৯ ই আগস্ট, ২০০৯ ভোর ৫:২০
উম্মু আবদুল্লাহ বলেছেন: ইবনে সিনাকে কি পুড়িয়ে মারা হয়েছে?
তার বই পুড়ানো হয়েছে। কিন্তু তাকে কি পোড়ানো হয়েছে?
১৫| ০৭ ই আগস্ট, ২০০৯ রাত ১১:৫২
তরু বলেছেন: দারুণ হয়েছে লেখা।
১৬| ০৮ ই আগস্ট, ২০০৯ রাত ১২:০৪
মুহাম্মদ মোহেব্বুর রহমান বলেছেন: ধন্যবাদ।
১৭| ০৮ ই আগস্ট, ২০০৯ রাত ১২:০৮
এস. এম. রায়হান বলেছেন: একেবারে সহমত।
@অমি রহমান পিয়াল
১৮| ০৮ ই আগস্ট, ২০০৯ রাত ১২:১৮
এস. এম. রায়হান বলেছেন: ভেগ ফতুয়ার উপর ভিত্তি করে ইবনে সিনা সহ মধ্য যুগের কিছু মুসলিম মনীষীকে কাফের/মুরতাদ/নাস্তিক বানিয়ে দিয়ে তাঁদেরকে ইসলামের বিরুদ্ধে ব্যবহার করা হচ্ছে। এরা আসলে ফতুয়াবাজদের সমর্থক। এদের থেকে সাবধান থাকতে হবে।
কাউকে কাফের/মুরতাদ/নাস্তিক ঘোষণা দিলেই তিনি এমনি এমনি কাফের/মুরতাদ/নাস্তিক হয়ে যান না, যদি না তিনি নিজেকে নাস্তিক ঘোষণা দেন।
আমার কোন শত্রু আমাকে কাফের/মুরতাদ বললেই তো আর আমি কাফের/মুরতাদ হয়ে গেলাম না!
১৯| ০৮ ই আগস্ট, ২০০৯ রাত ১২:২২
বিডি আইডল বলেছেন: দারুণ তথ্যবহুল লেখা.....++
২০| ০৮ ই আগস্ট, ২০০৯ রাত ১২:২৬
স্বপ্ন ব্যাকরণ বলেছেন:
অসাধারন লেখা।
অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
প্রিয়তে...
২১| ০৮ ই আগস্ট, ২০০৯ রাত ১২:৩২
কোলাহল বলেছেন: ইবনে সিনাকে সরাসরি কাফের আখ্যায়িত করে থাকলে সেটা ঠিক হয়নি।
জ্ঞান এমন একটা জিনিষ যেটা বারংবার চর্চায় বিকশিত হয়, অন্তর্নিহিত রহস্য আরো প্রকটভাবে উম্মোচিত হয়। ইবনে সিনার কিছু তত্বে দ্বিমত থাকতে পারে।
ইমাম গাজ্জালী র. কি তাকে কাফের বলেছিলেন!! ইমাম গাজ্জালী র. কিভাবে বা কোন ভাষায় দ্বিমত করেছিলেন তা জানা থাকলে হয়তো ভাবতে সুবিধে হতো।
প্রথম পয়েন্টে ইমাম গাজ্জালী যেটা বলেছেন সেটা আমার কাছে ঠিকই তো মনে হচ্ছে। র্বতমান সময়ের বিজ্ঞান কি মহাবিশ্বের সৃস্টি এবং বিনাশ সমর্থন করেনা ?
দ্বিতীয় পয়েন্টে অবশ্য ইবনে সিনার ব্যাখ্যাটা চমৎকার। বিষয়টা এভাবে চিন্তা করা যায় বলে আমার কাছেও মনে হয়েছে। শারিরীক পুনরুথ্থান সম্ভব এর প্রমান আল্লাহ তায়ালা দিয়েছেন আবার তিনি চাইলে শারীরিক পুনরুথ্থান ছাড়াই কাউকে শাস্তি বা পুরস্কার দিতে পারেন। সুতরাং স্রস্টার ক্ষমতাকে স্মীকার করেই যুক্তির নীরিখে কেউ যদি ব্যাখ্যা করতে পারে যে সবার শারীরিক পুনরুথ্থানের ব্যাপার ঘটবেনা সেটা ভিন্নমত হিসেবে মেনে নেয়া যায়।
আল্লাহর সাধারনভাবে জানা আর পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে জানা নিয়ে ভাবছি, আরো সময় লাগবে বুঝতে।
০৮ ই আগস্ট, ২০০৯ রাত ১২:৩৮
উম্মু আবদুল্লাহ বলেছেন: কোলাহল, মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
ইমাম গাজালী তিনটি বিষয়কে কুফরীর সমতুল্য এবং আরো কিছু বিষয়কে প্রশ্নবোধক বলে দাবী করেছেন। আর ইমাম গাজালী এই বিষয়গুলোর যা ব্যাখা বলেছেন তাই সঠিক। কিন্তু তা সত্ত্বেও ইবনে সিনাকে কাফের ফতোয়া দেয়াটা সমর্থন করতে পারছি না।
ইমাম গাজালী ফতোয়া দিয়েছিলেন। অন্যান্য কেউ কেউ দিতে পারেন। আমার আগের লেখাটিতে এ নিয়ে কিছু কথা লিখেছিলাম।
Click This Link
০৮ ই আগস্ট, ২০০৯ রাত ১২:৪৬
উম্মু আবদুল্লাহ বলেছেন: আরেকটি বিষয়। ইমাম গাজালী ইবনে সিনার বইয়ের লেখা পড়ে ফতোয়া দিয়েছিলেন। ইমাম গাজালীর পরে ইবনে সিনার লেখা নিয়ে আরো গবেষনা হয়। ইমাম গাজালীর ইবনে সিনার সব বই পড়া নাও থাকতে পারে (আমার অনুমান)।
২২| ০৮ ই আগস্ট, ২০০৯ রাত ১২:৪৯
শ।মসীর বলেছেন: বিবর্তনবাদী বলেছেন: দুঃখের বিষয় বর্তমান মুসলিম সমাজে ইমাম গাজ্জালির প্রভাবই বেশি। তাই আমরা সৃষ্টিকর্তাকে বুঝবার চাইতে নামাজের সিজদায় কত জোরে নাক ঠেঁসে ধরতে হবে সেই আলোচনায় বেশি আগ্রহী।
২৩| ০৮ ই আগস্ট, ২০০৯ রাত ১২:৫১
কোলাহল বলেছেন: সাধারনভাবে জানা আর পুঙ্খানুপুঙ্খজানার ব্যবধানটা খুব চমকপ্রদ।
প্রশ্ন হচ্ছে স্রস্টা আর সৃস্টি কি একই মাত্রায় বিবেচনা করা সম্ভব।
সৃস্টির কাছে সব জানাই চাঁদের এক পিঠের মতো। একটা অংশ প্রকাশ্য তো আরেকটা অংশ রহস্যময়। গবেষনা, অনুমান, পরীক্ষা নিরীক্ষা করে জানার চেস্টা করা যায় কিন্তু তার রেজাল্টও নির্ভুল কিনা সেটা বোঝার জন্য আবার পরীক্ষার দরকার হয়। স্রস্টা এই সীমাবদ্ধতা থেকে মুক্ত।
সুতরাং সাধারনভাবে জানা আর পুঙ্থানুপুঙ্খ জানার ব্যবধান তার কাছে কেন থাকবে। তার জন্য সবই প্রকাশ্য।
০৮ ই আগস্ট, ২০০৯ রাত ১২:৫৭
উম্মু আবদুল্লাহ বলেছেন: "সুতরাং সাধারনভাবে জানা আর পুঙ্থানুপুঙ্খ জানার ব্যবধান তার কাছে কেন থাকবে। তার জন্য সবই প্রকাশ্য।"
ঠিক। তবে তিনি এটা এরিস্টটলের cause-effect থিওরি দিয়ে ব্যাখা দিতে গিয়ে বিতর্কিত হয়ে পড়েন। লিংকে কিছুটা ডিটেইল আলোচনা রয়েছে।
২৪| ০৮ ই আগস্ট, ২০০৯ রাত ১২:৫৭
কোলাহল বলেছেন: আপনার লেখার কারনে ইবনে সিনা এবং ইমাম গাজালী র. দুজনের ব্যাপারেই আগ্রহ জেগেছে।
একটা বিষয়কে বিভিন্ন জন বিভিন্ন দৃস্টিকোন থেকে বিবেচনা করতেন। এ দুয়ের সমন্বয় খুব কঠিন একটা ব্যাপার।
২৫| ০৮ ই আগস্ট, ২০০৯ রাত ১:০৪
এস. এম. রায়হান বলেছেন: স্রেফ বিজ্ঞান নিয়ে মাতার জন্য কাউকে ইসলামের রোষানলে পড়তে হয়নি। তবে কেউ কেউ মুসলিম ইমাম বা পলিটিশিয়ানদের রোষানলে পড়েছেন অন্য কারণে।
@লেখাজোকা শামীম বলেছেন
০৮ ই আগস্ট, ২০০৯ রাত ১:১০
উম্মু আবদুল্লাহ বলেছেন: ইবনে সিনা রাজনীতির সাথেও কিছুটা জড়িত ছিলেন (যা আমি এই লেখায় আনিনি)। সেখান থেকেও সম্ভবত বিরোধিতা পেতে পারেন।
২৬| ০৮ ই আগস্ট, ২০০৯ রাত ৩:২০
মুয়ীয মাহফুজ বলেছেন: মুতাযিলা দর্শন ইসলামী দর্শনে সবচাইতে ঋদ্ধ বলে আমার মনে হয়।
ইবনে সীনাকে ৩ টি কারণে কাফের ও ২০ টি কারণে নাছারা বলে গাজ্জালী একপ্রকার অন্যায় করেছেন বলেই আমার মনে হয়েছে। কেননা শেষমেশ কিন্তু গাজ্জালী সুফীবাদ প্রচার করে জ্ঞানে অভিজ্ঞতাবাদী পথটি বন্ধ করে দিয়ে শুধুমাত্র সাধনাকে চূড়ান্ত ধরে মারেফতী ধারা প্রচার করেছেন,যেটি দার্শনিক ভাবে দেখলে চূড়ান্ত ভাববাদে উন্মূল হওয়া। আসলে দোষ কারোও না হয়তো-হয়তো দোষটি শুধুই ভাববাদ হতে সৃস্ট সকল ধর্মতত্বের এবং অভিজ্ঞতাবাদের মধ্যেই।
তিনি কবিও ছিলেন-তাঁর কবিতায় যৌক্তিক বিশ্লেষণ আছে-যৌক্তিক অবতারণা আছে-আবার তার কবিতায় ওমর খৈয়ামের মিস্টিক ভাবধারার সংমিশ্রণে একপ্রকার দিশেহারা ভাবও আছে-
মুসলিম মনীষা বই থেকে চারটি ইবনে সীনার লাইন
"এই দুনিয়ার আধার জঠর হতে শয়তানের সিংহাসন পর্যন্ত
সব রহস্যের সন্ধান পেলুম আমার স্বপ্ন আয়ুর মধ্যেই:
সবাকার ফাঁদ,সকল জাদুকরের অমোঘ মায়াজাল
আমি ছিড়েছি ,আমি খুলেছি-কেবল মৃত্যুর হাত এড়ানো গেলনা"
-সূত্র
মুসলিম দর্শনের ভূমিকা
ড: রশীদুল আলম
০৮ ই আগস্ট, ২০০৯ সকাল ৯:০৬
উম্মু আবদুল্লাহ বলেছেন: মুতাযিলা দর্শনকে সফল ভাবে মোকাবেলা করেন ইমাম আবু হানিফা সহ আমাদের অন্যান্য ইমামগন। ফলে হাদীস ভিত্তিক ব্যাখা আবার প্রতিষ্ঠিত হয় এবং মুতাজিলা গোষ্ঠীর দর্শন পরাভূত হয়। তবে জ্ঞান বিজ্ঞানে মুতাজিলা ভাবধারার মানুষদের অবদান প্রশংসনীয়। গনতন্ত্র, যুক্তি সহ অনেক মুক্ততার ছাপ তাদের মধ্যে রয়েছে। তবে ইসলামে আচার বিষয়টিও তো গুরুত্ববহ।
ইমাম গাজালী নিজেও তো বিতর্কের বাইরে নন। সেও তো ঠিক। তবে তিনি ছাড়া আরো অনেকেই ইবনে সিনার মতবাদকে কঠোরভাবে সমালোচনা করেছিলেন। আর সামগ্রিক ভাবে মুতাজিলা গোষ্ঠীর সমালোচনাও তো কেবল কম নয়।
ইবনে সিনার কাব্য প্রতিভা অতুলনীয়। কবিতাটির জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। ভালো থাকুন।
২৭| ০৮ ই আগস্ট, ২০০৯ সকাল ৯:২০
সুবিদ্ বলেছেন: প্রিয়তে......সময় নিয়ে পড়ব আশা করি......
২৮| ০৮ ই আগস্ট, ২০০৯ দুপুর ১২:৪৩
তায়েফ আহমাদ বলেছেন: ভাল লেখা, নিঃসন্দেহে।
আবার পড়তে হবে........
২৯| ০৮ ই আগস্ট, ২০০৯ দুপুর ২:১৬
অন্যরকম বলেছেন: +
বাহ.....! অনেক কিছুই জানতে পারলাম!
৩০| ০৯ ই আগস্ট, ২০০৯ রাত ১২:১০
ডেলফ বলেছেন: আরেকটু বিস্তারিত জানতে পারলে ভালো লাগতো , এখন লিঙ্কে ক্লিক করে জানতে হবে , কি আর করা
০৯ ই আগস্ট, ২০০৯ রাত ১২:২০
উম্মু আবদুল্লাহ বলেছেন: জানার ইচ্ছে আমারও। সেজন্য বেশ কয়েক দিন ধরে ইন্টারনেট ব্রাউজ করেছিলাম। তবে মেটা ফিজিক্স খুব জটিল। ইবনে সিনাকে চল্লিশ বার পড়ে বুঝতে হয়েছিল। সেজন্য কি লিখতে গিয়ে কি লিখব তার ঠিক নেই ভেবে আর মেটা ফিজিক্স দর্শন নিয়ে খুব একটা লেখলাম না।
৩১| ০৯ ই আগস্ট, ২০০৯ ভোর ৬:১২
জাতি জানতে চায় বলেছেন: ঝোঁকহীন চমৎকার বিশ্লেষণ। এরকম আরও চাই!
০৯ ই আগস্ট, ২০০৯ সকাল ৭:৩৫
উম্মু আবদুল্লাহ বলেছেন: আপনার পছন্দমত হবে কিনা জানি না, তবে বিজ্ঞানে মুসলিমদের অবদান নিয়ে আরো লিখতে চাই। নবম শতক থেকে দর্শন বিজ্ঞানে অনেকটা একচ্ছত্র রাজত্ব করেছে মুসলিমরা। তাদের অবদানকে মনে করার ইচ্ছে আমার রয়েছে।
৩২| ০৯ ই আগস্ট, ২০০৯ দুপুর ১২:১৭
মুনিয়া বলেছেন: দারুণ অ্যানালিটিক্যাল পোস্ট। ভাল লাগল।
৩৩| ০৯ ই আগস্ট, ২০০৯ বিকাল ৩:৪৫
দি ফ্লাইং ডাচম্যান বলেছেন: অনেক কিছু জানতে পারলাম, ধন্যবাদ।
৩৪| ০৯ ই আগস্ট, ২০০৯ রাত ১০:১০
রাজর্ষী বলেছেন: ভালো লাগালো।
০৯ ই আগস্ট, ২০০৯ রাত ১০:২৩
উম্মু আবদুল্লাহ বলেছেন: আপনাদের সবার প্রতি ধন্যবাদ রইল পোস্ট টি পড়ার জন্যে।
৩৫| ০৯ ই আগস্ট, ২০০৯ রাত ১০:২৫
*পাগলা জগাই* বলেছেন: কেবল ইবনে সিনা নন, আবু রুশদও সমসাময়ীক ধর্মীয় নেতাদের কাছে কাফের বলে বিবেচিত হতেন।
৩৬| ১০ ই আগস্ট, ২০০৯ দুপুর ১:১২
মাতব্বর বলেছেন: আমার মনে হয় ঐসব ইমামদের এখন আর কোন দরকার নাই।
এখন শরিয়তের সব উপাদনই আমার আপনার কাছে সহজলভ্য, আমরা নিজেরা একটু মুক্তবুদ্ধির হইলেই হয়ে যায়
৩৭| ১০ ই আগস্ট, ২০০৯ রাত ৮:১০
মাহবুবা আখতার বলেছেন: বিষয়টা জানা ছিল না। জানতে পারলাম। এসব যুক্তিতর্কের উর্ধ্বে উঠেও আমার মনে হয় সহজেই বলা যায়, ইবনে সিনা জ্ঞানী ছিলেন, তার অবদানটাকে তো অস্বীকার করা যাবে না। আমার কেন যেন মনে হয়, মৃত মনীষীদেরকে তাদের কাজ-কর্ম ধর্ম-দর্শন দিয়ে বিচার করার চেয়ে এই বিষয়গুলো পাশে সরিয়ে রেখে তাদের কাজ থেকে বিশ্বকে উপকৃত করার চেষ্টাটাই বেশি ভালো।
[অনেস্টলি বলতে গেলে, এরকম একটা বিতর্কের অস্তিত্ব আছে তা-ই আমার জানা ছিল না। জানার পরও কেমন যেন মনে হচ্ছে এটা কোন বিষয় না। যেসব দার্শনিকদের নাম এবং কীর্তির সাথে ছোটবেলা থেকে পরিচয় তাদের বিষয়ে এরকম তর্কে খালি বিব্রত বোধ হয়। আর সত্যি বলতে কি, ইবনে সিনাকে কাফের বলে বিশ্বাস করা বেশ শক্ত কাজ (আমার পক্ষে)। আমার এই কথাগুলোর কোন দরকার ছিল কিনা জানি না, তবে যা মনে হয়, সরাসরি বলে ফেললাম।]
১৩ ই আগস্ট, ২০০৯ রাত ১:৩৪
উম্মু আবদুল্লাহ বলেছেন: ইবনে সিনার বিষয়টি একটু অন্য রকম। তিনি বিজ্ঞানে অবদান রাখার পাশাপাশি ইসলামের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে নিজস্ব ব্যাখা দিয়েছেন। যার ফলে বিরোধী পক্ষরা চেপে ধরেছে। ইবনে সিনা যখন একটি মত দেন, অন্যরা সে মতকে সমালোচনা করেছে।
ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য। অনেক দিন পরে তোমাকে আমার ব্লগে দেখলাম। অবশ্য আমিও যে খুব নিয়মিত - তা নয়।
৩৮| ১০ ই আগস্ট, ২০০৯ রাত ৮:২৮
*পাগলা জগাই* বলেছেন: @মাহবুবা আখতার
ইবনে সীনাকে কাফের বলে বিশ্বাস করতে আপনার আপত্তি কেন? আপনার বিশ্বাসের গোঁড়া কি?
১২ ই আগস্ট, ২০০৯ সকাল ১০:০৪
উম্মু আবদুল্লাহ বলেছেন: এইটা নিয়েই তো পোস্ট।
সাত খন্ড রামায়ন পড়ে সীতা কার বাপ।
৩৯| ১২ ই আগস্ট, ২০০৯ সকাল ৯:৫২
বিবেক সত্যি বলেছেন: দারুন.... অনেক নতুন কিছু জানলাম...
১২ ই আগস্ট, ২০০৯ সকাল ১০:০৪
উম্মু আবদুল্লাহ বলেছেন: অনেক দিন প্লাস পেয়ে ভাল লাগল। মন্তব্য তো বোনাস।
৪০| ১২ ই আগস্ট, ২০০৯ দুপুর ১২:২৭
নুরুজ্জামান মানিক বলেছেন: Click This Link
২৩ শে এপ্রিল, ২০১০ রাত ১০:১১
উম্মু আবদুল্লাহ বলেছেন: আপনার এই লেখাটি আগেই পড়েছিলাম। রেফারেন্স হিসেবে মাঝে মাঝে এখনও দেখি। ধন্যবাদ।
৪১| ১৩ ই আগস্ট, ২০০৯ রাত ১২:৪৮
জনৈক আরাফাত বলেছেন: লেখায় প্লাস
১৩ ই আগস্ট, ২০০৯ রাত ১:৩১
উম্মু আবদুল্লাহ বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে।
৪২| ১৩ ই আগস্ট, ২০০৯ সকাল ৯:৫৪
মিতামারিয়া বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে । সুন্দর হয়েছে
৪৩| ১৪ ই আগস্ট, ২০০৯ সন্ধ্যা ৬:৪৯
পেন্সিল বলেছেন: ভালো। বেশ ভালো।
৪৪| ১৪ ই আগস্ট, ২০০৯ সন্ধ্যা ৭:০৮
আমিই রূপক বলেছেন: আলোচ্য বিষয়ে ইবনে সিনার নিজের লেখা বই না পড়ে কোন মতামত দিতে পারছি না।
১৪ ই আগস্ট, ২০০৯ রাত ৮:১৪
উম্মু আবদুল্লাহ বলেছেন: বই পড়ে আমাদেরকে আপনার মতামত জানাবেন।
৪৫| ১৫ ই আগস্ট, ২০০৯ সন্ধ্যা ৬:৫৭
ফারহান দাউদ বলেছেন: চমৎকার একটা আলোচনা।
১৫ ই আগস্ট, ২০০৯ রাত ৯:৪০
উম্মু আবদুল্লাহ বলেছেন: ধন্যবাদ।
৪৬| ১৫ ই আগস্ট, ২০০৯ সন্ধ্যা ৭:০১
উদাসী স্বপ্ন বলেছেন: চমৎকার লেখা। তবে যেহেতু সে মৃত্যুর পর কি হইবো সেইটা বিশ্বাস করেন নাই তাইলে তারে নিয়া আমার একটু ক্ষোভ আছে।
তবে কোরান শরীফে যেহেতু এইটা বলা আছে কাউকে কাফির বলে ঘোষনা দেওন যাইবো না, সেহেতু ইমাম গাজ্জালী এতো বিদ্বান হইয়াও ঠিক করেন নাই!
৪৭| ১৬ ই আগস্ট, ২০০৯ রাত ৮:৩৩
কাদা মাটি জল বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই... ভালো লাগসে...
৪৮| ২৮ শে আগস্ট, ২০০৯ রাত ১:২৬
রাফাত সাদাত বলেছেন: অপূর্ব! প্লাস।
৪৯| ১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৯ সন্ধ্যা ৭:০৬
যুগান্তকারী বলেছেন: গাজ্জালীই ঠিক ছিলেন যা পরে প্রমানিত হয়।
১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৯ সকাল ৯:০৯
উম্মু আবদুল্লাহ বলেছেন: অন্তত পক্ষে দর্শনের ক্ষেত্রে। ইসলামের মূল বিষয়ে ইবনে সিনার দেয়া দর্শন কারো সমর্থন পায় নি।
তবে ফতোয়ার ক্ষেত্রে গাজালী সঠিক কিনা সে বিবেচনার ভার আল্লাহর উপরই বরং ছেড়ে দেই। বিশেষত ইবনে সিনা নিজেই যখন কাফের হতে চান নি।
৫০| ০৫ ই অক্টোবর, ২০০৯ দুপুর ২:৪৯
এ.টি.এম.মোস্তফা কামাল বলেছেন: ইবনে সিনাকে নিয়ে একটি রুশ মুভি আছে ''Youth of a Genius'' সেখানে আপনি কিছু তথ্য পেতে পারেন।
তবে মেধাবীদের দর্শনের সাথে সমাজ,সমাজপতি আর ধর্মগুরুদের বিবাদ প্রাচীনকাল থেকেই বিদ্যমান।এমন বহু ঘটনা আছে। সক্রেটিস, এরিস্টোটল, গ্যালিলিও, ব্রুনো, ইবনে সিনা, হাফিজ এর কয়েকটি উদাহরণ।
লেখাটি ভালো লাগলো।
০৬ ই অক্টোবর, ২০০৯ দুপুর ১:১৫
উম্মু আবদুল্লাহ বলেছেন: এরকম বিবাদ এখনও দেখা যায়, যেমন, দালাইলামা।
আপনাকে ধন্যবাদ।
৫১| ০২ রা ডিসেম্বর, ২০০৯ রাত ৮:৫৮
শেখ মিঠুন বলেছেন: উম্মু আবদুল্লাহকে ধন্যবাদ প্রসঙ্গ উপস্থপনার জন্য। আমাদের কিছু কিছু বিষয় স্মরণ রাখা দরকার বলে আমি মনে করি। প্রথমত: বিশ্বে মুসলমানরাই প্রথম ইতিহাস লেখার সূচনা করেন। শুধু ইতিহাস নয় আধুনিক সভ্যতার প্রায় সকল কিছুরই আবিষ্কার অথবা আবিষ্কারের সূচনা মুসলমানদের দ্বারা বা হাতে হয়েছে। ভূগোল, মানচিত্র থেকে শুরু করে উড়োজাহাজ এমনকি মোজাইক, ব্যাংকের চেকবই, চিনি পর্যন্ত।
আমেরিকা ইরাক দখল করেই প্রথমে যা লুট করে তা হচ্ছে লাইব্রেরী, ঠিক তেমনি ক্রুসেড যুদ্ধ বা পরবর্তীকালে ১৮শ শতকের প্রথম থেকে বৃটেন, পর্তুগাল এবং ফ্রান্সের খৃষ্টান সম্প্রদায় মুসলিম দেশে আধিপত্য বিস্তার করেই লাইব্রেরীগুলো লুন্ঠন করে। সেইসব মূল আরবী পান্ডুলিপির বহু কপি আজও ঐসব দেশের যাদুঘরে পাওয়া যায়। তারাই ঐসব গ্রন্থ থেকে ইংরেজি ভাষায় অনুবাদ করে, পরবর্তীতে বিভিন্ন ভাষায় অনুবাদ হয়। বাংলায় যা অনুবাদ হয় তার অনুবাদকারীরা প্রায় সবাই ব্রাক্ষ্ণ্যণ্যবাদী হিন্দু সম্প্রদায়। এ ব্যাপারে কতকগুলি বিষয় লক্ষণীয়: ১. ইংরেজ অনুবাদকারীরা মূল বিষয়ের মধ্যে পরহেজগার ব্যক্তিত্বকে কলন্কিত করেছে এবং মুসলমানদের মধ্যে থাকা ইসলাম বিদ্বেষীদেরকে নায়ক করে তুলেছে। এবং মুসলিম মনস্তাত্বিকতা বুঝে অনেক বিষয়কে বিকৃত করেছে। ২. হিন্দু অনুবাদকারীরা সেই বিকৃতিকে আরো বাড়িয়ে দিয়েছে। ৩. মুসলমানদের প্রাণতুল্য নেতৃত্বকে ডাকাত বা লুটেরা হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেছে।
যেমন হান্টার তার ইন্ডিয়ান মুসলিম গ্রন্থে সাইদ আহমেদ বেরলভীকে ডাকাত সর্দার হিসেবে বর্ণনা করেছে। হিট্টি তার আরব জাতির ইতিহাস গ্রন্থে মুসলমান সৈনিক যারা প্রায় সমস্ত বিশ্ব জয় করেছিল তাদেরকে লুটেরা হিসেবে বর্ণনা করেছে। খুনী যেমন তার নিশানা রেখে যায় এইসব ঐতিহাসিক তেমনি কোন না কোন ভাবে তাদের লেখার মধ্যে সত্য ফেলে রেখেছে। যেমন হিট্টি ডাকাত লুটেরা লিখতে লিখতে ১৫৪ পৃষ্টায় (ভারতীয় সংস্করণ) লিখেছেন সাইরাসের দূতকে মুসলিম অধিকৃত ব্যাবিলনের মানুষজন বলেছে.'আমরা এমন এক জনতাকে দেখেছি যাদের প্রত্যেকে জীবনের চেয়ে মৃত্যুকেই বেশি পছন্দ করেন। এঁদের নম্রতার কাছাকাছি বিশ্বের কোন প্রান্তের মানুষ রয়েছেন বলে আমার মনে হয় না। এঁরা মাটিতে ছাড়া বসেন না, হাঁটুতে থালা নিয়ে খেতে অবজ্ঞা করেন না। এদের আমির যেন এঁদেরই একজন। এঁদের মধ্যে উঁচু নিচু ভেদ নেই। প্রভু-ক্রীতদাস ভেদ নেই। নামাজের সময় কেউ ফাঁকি দেন না। সবাই মুখ হাত-পা ধুয়ে বিনীতভাবে নামাজে মনোযোগ দেন।"
যাই হোক মিথ্যে বিকৃত ইতিহাস রচনা করে তারা প্রতিষ্ঠা করেছে মুসলিম শাসক ও মুসলিম জাতির বিপরীতে খৃষ্টান শাসক খৃষ্টান জাতি বা হিন্দু শাসক হিন্দু জাতি নয়, মুসলিম জাতির বিপরীতে বৃটিশ শাসক বৃটিশ জাতি বা ভারতীয় শাসক ভারতীয় জাতি। যাতে সাম্প্রদায়িক মৌলবাদী ধর্মান্ধ শব্দগুলো ব্যবহার করে মুসলমানদেরকে দাবিয়ে রাখা যায় এবং তাদের ভিতর থেকেই ইসলাম বিরোধী একটা শ্রেণী তৈরি করা যায়।
এখন তরুণশ্রেণীর মধ্যে যারা বীর সত্যান্বেষী তাদের উচিৎ ইসলামকে আত্মার চিন্তার ভিত তৈরি করে সেই দৃষ্টিভঙ্গিতে সকল কিছু দেখে বিচার করা। যেমন 'আমেরিকা ইরাক দখল করেছে বাক্যটার পরিবর্তে আমেরিকা ও বৃটেনের খৃষ্টানরা মুসলমানদের ইরাক দখল করেছে, এই বাক্য ব্যবহার করা। তাহলে ধর্মান্ধ কারা তা প্রতিষ্ঠিত হবে । আর সঙ্গে সঙ্গে ইতিহাস থেকে সত্য খুজে তা প্রতিষ্ঠা করাও মহৎ দায়িত্ব। তারপর বদর যুদ্ধ, ইবনে সিনা (আ্যভিসেন্না) প্রসঙ্গ।
০৩ রা ডিসেম্বর, ২০০৯ রাত ৩:০৩
উম্মু আবদুল্লাহ বলেছেন: আপনাকেও ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্যে।
ইতিহাস রচনাকারীরা মাঝে মাঝে অসততার আশ্রয় নেয় সত্য, তবে খুব বেশী ক্ষেত্রে সফল হতে পারে না। আর আজকের এই তথ্য বহুলতার যুগে ইতিহাস বিকৃত করে কেউ খুব বেশী দিন লুকিয়ে থাকতে পারবে না।
নেহায়েৎ ঈর্ষাকাতর না হলে ইতিহাসে মুসলিমদের উদারতার দৃষ্টান্ত কারো চোখ এড়িয়ে যাবার কথা নয়। মুসলিমদের এই গুনটিই তাদের সাম্রাজ্যকে নানাভাবে উন্নতির শিখরে নিয়ে গিয়েছিলো।
ভালো থাকুন।
৫২| ১১ ই জানুয়ারি, ২০১০ বিকাল ৫:০৫
আবু সাঈদ ওবায়দুল্লাহ বলেছেন: কৃতজ্ঞ।
১২ ই জানুয়ারি, ২০১০ সকাল ৭:০১
উম্মু আবদুল্লাহ বলেছেন: আমিও।
৫৩| ২৭ শে জানুয়ারি, ২০১০ বিকাল ৪:৪৭
মোরশেদুল আজাদ পলাশ বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে অত্যন্ত সুন্দর লেখার জন্য।এ বিষয়ে আমি কোন কিছু জানতাম না।প্রিয়তে++++
২৭ শে জানুয়ারি, ২০১০ রাত ৯:০৯
উম্মু আবদুল্লাহ বলেছেন: আপনাকেও ধন্যবাদ।
৫৪| ১১ ই মে, ২০১০ সকাল ৯:১৭
আল জাহান বলেছেন: আমি ইবনে সিনা এবং গাজ্জালি দুজনেরই ভক্ত । আর এই ব্যাপারটা আগে জানা ছিল না । ভুল তো দুজনেরই থাকতে পারে । আমরা জানি আল্লার নবী রাসুলগণ ছাড়া কেউই পাপের উর্ধ্বে নন ।
১২ ই মে, ২০১০ রাত ২:৫৪
উম্মু আবদুল্লাহ বলেছেন: ইবনে সিনার দর্শন তো গ্রহন করা যায় না, তবে তিনি মৃত্যুর আগে অনেক বেশী অনুতাপ করে গিয়েছেন। তাই তার ব্যক্তিত্ব আমার শ্রদ্ধাভাজন।
৫৫| ১২ ই মে, ২০১০ রাত ৩:১৯
নষ্ট ছেলে বলেছেন: আমিও এই ব্যাপারটা জানতাম না।
পোস্টের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
১২ ই মে, ২০১০ রাত ৩:৩৪
উম্মু আবদুল্লাহ বলেছেন: আপনাকেও ধন্যবাদ।
৫৬| ২৯ শে আগস্ট, ২০১০ সকাল ৯:৪৬
নিউট্রন বলেছেন: মুসলিম দার্শ্নিক হিসেবে আমি ইমাম গাজ্জালী ও ইবনে সিনা দুই জন কেই সম্মান করি ।তবে আমার মনে হয় ইমাম গাজ্জালি , ইবনে সিনা কে বুঝতে ভুল করেছিলেন। আপনার লেখার শেষ অংশটা পরে বুঝলাম ইবনে সিনা তার নিজের বিশ্বাসের ব্যাপারে বেশ আত্মবিশ্বাসি ছিলেন। আবার ইমাম গাজ্জালী অত্যন্ত বড় মাপের দার্শনিক, তার সব গুলো ব্যাখ্যা, লজিক আমার বেশ ভাল লাগে।
২৯ শে আগস্ট, ২০১০ বিকাল ৫:৪২
উম্মু আবদুল্লাহ বলেছেন: ইবনে সিনাকে আত্মবিশ্বাসী বলাটা কম হয়ে যায়, উনি আসলে তীব্র অহমবোধ সম্পন্ন মানুষ ছিলেন। সাথে যোগ হয়েছিল সাহস। এই বেপরোয়া চালচলনের কারনে উনাকে জীবনে অনেক প্রতিকূলতার মুখোমুখি হতে হয়েছে। হয়ত এই ঝড় ঝঞ্ঝার জীবনই উনার কাছে ছিল কাম্য।
গাজালি ছাড়াও আরো অনেকে উনাকে কাফের ফতোয়া দিয়েছেন। বিস্তারিত আমি এই লেখাটিতে উল্লেখ করিনি। তবে আমার কাছে যা ভাল লেগেছে তা হল, তার শেষ জীবনের অনুতাপ।
৫৭| ২৮ শে সেপ্টেম্বর, ২০১০ বিকাল ৫:৪২
ছোট মামা বলেছেন:
দারুন লেখা প্লাসিতো এবং সোকেজে সাজানো ।
২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১০ রাত ১২:৪৬
উম্মু আবদুল্লাহ বলেছেন: ধন্যবাদ পড়া, রেটিং এর এবং মন্তব্যের। ছোট হলেও মন্তব্য সব সময়েই অনুপ্রেরনাদায়ক।
৫৮| ৩১ শে জানুয়ারি, ২০১২ রাত ১০:৩১
যাযাবরমন বলেছেন: এই লেখাটা দেখতে পারেন
Click This Link
৫৯| ১৫ ই মে, ২০১২ সকাল ১১:২০
মাহফুজশান্ত বলেছেন: খুব ভাল লাগলো ভাই- প্রিয়তে রাখলাম।
কাফের ফতোয়াটা ইবনে সিনার জন্য ছিল অতিরিক্ত কঠোর একটি ফতোয়া।- সহমত
৬০| ২০ শে জুন, ২০১২ রাত ১০:৫৮
কাজী রাসেল বলেছেন: আমি বিশ্বাস করি ইবনে সিনা আসলেই কাফের ছিল
৬১| ২৫ শে জুন, ২০১২ দুপুর ১:৩৭
জাহিদ ২০১০ বলেছেন: ভাল লাগলো। তবে আমার কথা হল এখানে আমরা যারা আছি সবাই কি ইমাম গাজ্জালী (রঃ) এর সমসাময়িক কিংবা তার মত এলেম এর অধিকারী? ইসলামের অনেক কথাই আছে যা একমাত্র আলেম ছাড়া কেউ তার ব্যাখ্যা দিতে পারেন না। সুতরাং আমাদের সাবধান হয়ে যে কোন মন্তব্য করা উচিত। তাই নয় কি-----
৬২| ৩১ শে জুলাই, ২০১২ রাত ১২:২১
নজিবুল্লাহ বলেছেন: ইবনে সিনাকে যারা কাফের বলতেছেন তাদের কাছে আমার প্রশ্ন হল দুনিয়ায় মনে হয় এমন কোন মুসলিম পাওয়া যাবে না, যে আল্লামা ইকবাল কে কাফের বলার সাহস রখে। অথচ আল্লামা ইকবালও পরকালীন শারীরীক শাস্তি বা পুরুষ্কারকে খুব সুক্ষ্ণভাবে অস্বিকার করেছেন। এছাড়া তিনি আদম হাওয়ার বাহ্যিক অস্তিত্বকেও অস্কিকার করেছেন। তিনি আদম হাওয়াকে যাষ্ট একটা প্রতিকি চরিত্র হিসেবে তার বইতে প্রকাশ করেছেন। অথচ এই আল্লামা ইকবাল (র কে কাফের বলার হিম্মত আমার মনে হয় না কোন মুসলিমের আছে। সব হল যার যার ব্যাক্তিগত অন্তর্দৃষ্টির গভীরতা। যার যতটুকু দূরদৃষ্টিসম্পন্ন প্রজ্ঞা ছিল সে অনেক প্রচলিত বিশ্বাসকে সুক্ষ্যভাবে একটু ভিন্ন আঙ্গিকে চিন্ত করেন।
৬৩| ১২ ই অক্টোবর, ২০১২ রাত ১১:৪২
গগণজয় বলেছেন: হুমমম... ও নেক কিছু জানলাম।
৬৪| ৩০ শে মার্চ, ২০১৩ রাত ১২:৫৭
ত্রিভুবন বলেছেন: হ্যা ইবনে সীনা মতবাদ দিয়েছিলেন যে কেয়ামতে তিনটি বিভক্ত দলের মধ্যে একটি মাত্র দলের শারীরিক পুনরুত্থান হবে।আর জান্নাতিদের শুধুমাত্র আত্মিক পুনরুত্থান হবে।এর চেয়ে খুব বেশি ইনফরমেটিভ কিছু পাওয়া যায়নি।কারণ ঐ জান্নাতি দুটি দল কিসের ভিত্তিতে আলাদা দুটি দল হবে?
আমি ইদানিং একটু মাথা ঘামানো শুরু করছি,যেহেতু বরাবরই মধ্যপন্থী মানুষ আনি,তাই চেষ্টা করবো কোনরকম ব্যত্যয় না ঘটিয়ে ব্যাখ্যার প্রয়াস পেতেএকটা ধারণা দিতে।এরপরও এটা অনলি ধারণা হিসেবেই থাকবে থাকবে।
শর্টকাট একটু লিখে যাই,জান্নাতি দুটি দলের মধ্যে
১)একদল সম্ভবত শহীদদের দল হবে।আরেকটা সকল মুসলিম ইমানদার ব্যাক্তি।
অথবা
২)একদল উম্মতে মোহাম্মদী আর অন্য দল হবে বাকি সকল মুসলিম ইমানদার।
তবে ধারণা রাখি ১নং টাই হতে পারে সম্ভবত।
ইবনে সীনার লেখার মধ্যে মুতাজিলা গোষ্ঠীর প্রভাব কিছুটা লক্ষ্য করা যায়,উনারাই সম্ভবত হাদীসকে শরীয়তের উৎস হিসেবে প্রথম অস্বীকার করে।তবে ইবনে সীনা মুতাজিলা গোষ্ঠির ছিলেন না।তাই আমি কোরআন-সুন্নাহ থেকে যতটুকু সম্ভব বেছে বেছে আমার ধারণাটা লিখবার চেষ্টা করবো ইনশাল্লাহ।
হেহে জানিনা!ইমাম গাজ্জালী-ইবনে সীনা-এরপর হয়তো ইমাম মাহতাবই লেখা হয়ে যেতে পারে ইতিহাসের পাতায় (with out অহংকার
৬৫| ১১ ই এপ্রিল, ২০১৩ দুপুর ১:৩৮
আশফাক সুমন বলেছেন: ইমাম গাজ্জালী (র ভূল বলেননি ।
লেখক বলেছেন: ইবনে সিনার দর্শন তো গ্রহন করা যায় না, তবে তিনি মৃত্যুর আগে অনেক বেশী অনুতাপ করে গিয়েছেন। তাই তার ব্যক্তিত্ব আমার শ্রদ্ধাভাজন। ---- আমি আপনার শাঠে একমত
©somewhere in net ltd.
১|
০৭ ই আগস্ট, ২০০৯ রাত ১০:১৭
বিবর্তনবাদী বলেছেন: দুঃখের বিষয় বর্তমান মুসলিম সমাজে ইমাম গাজ্জালির প্রভাবই বেশি। তাই আমরা সৃষ্টিকর্তাকে বুঝবার চাইতে নামাজের সিজদায় কত জোরে নাক ঠেঁসে ধরতে হবে সেই আলোচনায় বেশি আগ্রহী।