নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার ব্লগবাড়িতে আপনাকে স্বাগতম...

হেজাজের কাফেলা

বিশ্বজোড়া পাঠশালা মোর, সবার আমি ছাত্র..

হেজাজের কাফেলা › বিস্তারিত পোস্টঃ

এক হাজার বছরের ভালোবাসা!

২৩ শে জুলাই, ২০১৫ সকাল ১০:১১

এক হাজার বছরের ভালোবাসা!


সে ই অ নে ক আ গে র কথা!
পৃথিবীতে একজন প্রতাপশালী বাদশাহ ছিলেন।
'তুব্বা' নামে যিনি প্রসিদ্ধ।
তুব্বা বড় বাহাদুর এবং ভয়ংকর ছিলেন।

তুব্বা পৃথিবীর পশ্চিমাঞ্চল বিজয় করার পর পূর্বাঞ্চল বিজয়ের নেশায় হেজাজভূমি তে পা রাখেন।
ইয়াছরিব(মদিনা)অতিক্রম করার সময় তুব্বা তার ছেলেকে ইয়াছরিবের(মদিবা)শাসক হিসেবে নিযুক্ত করে যান।
আর তিনি নিজেই শাম(সিরিয়া) এবং ইরাকের দিকে গেলেন।

কিন্তু ইয়াছরিববাসী চুক্তিভঙ্গ করে কিছুদিন পর তুব্বা'র ছেলেকে হত্যা করে ফেলে।
পুত্র হত্যা এবং চুক্তিভঙ্গের সংবাদ তুব্বা'র কাছে পৌঁছতেই তুব্বা রাগে-ক্ষোভে কেঁপে উঠলেন।

পুত্র হত্যার প্রতিশোধ নিতে তুব্বা দেরি করেনি।সাথে সাথেই ইয়াছরিবে(মদিনায়)ব্যাপক গণহত্যা চালানোর নির্দেশ দেন।
এই লড়াই এতই ভয়ংকর এবং ব্যাপক ছিল যে,এ যুদ্ধে তুব্বার বক্তিগত ঘোড়াও মারা যায়।

তুব্বা কসম খেলেন,যতক্ষণ পর্যন্ত এই শহরের(ইয়াছরিবের)প্রতিটি ইট ধুলোর সাথে মিশিয়ে দেয়া হবে না,ততক্ষ্ণণ পর্যন্ত সে সামনে কদম ফেলবে না।

রক্তের এমন হোলিখেলা দেখে কিছু ইহুদি ওলামায়ে কেরাম তুব্বার কাছে এলেন।
এবং বললেন,"আমাদের কাছে আসমানি কিতাব আছে।সেখানে আল্লাহ তা'আলার দেয়া সংবাদ লেখা আছে।এই পবিত্র শহরের নাম 'তায়্যিবা'।এই পবিত্র জায়গা শেষ নবির ঠিকানা হবে।এটা মদিনাতু-র-রাসূল(রাসূলের শহর)।
এই শহরের রক্ষার দায়িত্ব খোদ আল্লাহর নিজের।
আপনি যতই এই শহরকে ধংস করতে চান না কেন,কক্ষণই সম্ভব হবেন।
সুতরাং আপনি আপনার এমন ভয়ংকর পরিকল্পনা থেকে সরে আসুন।খোদার সৃষ্টিকুলের উপর রহম করুন!!!



তুব্বা এই আসমানি সুসংবাদ শুনে মাথা নিচু করে নিলেন।রক্তপাত বন্ধ করে কিছু ইহুদি ওলামাকে সাথে নিয়ে ইয়েমেনের দিকে রওয়ানা হন।

(বর্ণিত আছে) ইহুদি আলেমগুলো তুব্বাকে সময়ে সময়ে আখেরি যামানার পায়গাম্বারের বিভিন্ন গূনাবালী শুনাতেন।

এক সময় শেষ নবি রাসুলুল্লাহ সাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রতি তুব্বার অদৃশ্য মুহাব্বাত-ভালোবাসা তৈরি হয়ে যায়।

শেষে তুব্বা চারশত ইহুদি আলেমের জন্য(যারা রাসূলুল্লাহর জিয়ারতের আশায় তুব্বার সঙ্গ ছেড়ে মদিনাতেই অবস্থান গ্রহণ করেছিলেন।)খুব গুরুত্ব সহকারে মদিনায় বাড়ি নির্মাণ করে দেন।
প্রত্যেক কে একটা একটা বাঁদি এবং প্রয়োজনীয় ধন-সম্পদ দেন।

তুব্বা বিশেষ গুরুত্ব সহকারে একটি ঘর এই উদ্দেশ্যে তৈরি করেন যে,শেষ নবি যখন এখানে হিজরত করবেন,এই ঘরেই অবস্থান করবেন।

রাসূলের নামে একটি চিঠিও লিখলেন।যেখানে নিজের ইসলাম গ্রহণের আগ্রহ এবং রাসূলের প্রতি ভালোবাসা প্রকাশ করলেন।
চিঠির দুইটি পংক্তির তরজমা,
" আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি আহমদ সাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহ তা'আলার রাসূল।যদি আমার হায়াত তাঁর যামানা পর্যন্ত লম্বা হতো,তাহলে আমি তার ওযীর এবনং চাচাতো ভাই হতাম"।

তুব্বা চিঠিতে মহর লাগিয়ে মদিনায় অবস্থানকারীদের মধ্যে যিনি সবচেয়ে বড় আলেম তার কাছে হস্তান্তর করেন।
এবং এও ওসিয়ত করলেন যে,শেষ নবির সাথে যদি তোমার সাক্ষাত হয়,তাহলে এই চিঠি তুমি তাঁর কাছে পৌঁছে দিবে।আর যদি তোমার সাক্ষাত না হয়,তাহলে তোমার বংশ পরিক্রমায় যার সাথে সাক্ষাত হয় তাকে এই চিঠি আমানতের সাথে শেষ নবির খেদমতে পৌঁছে দেয়ার অনুরোধ করবে।

তুব্বা এক বড় মুত্তাকি আলেমকে ঐ ঘরের মুতাওয়াল্লী বানিয়ে দিলেন,যা তিনি সাইয়েদুল বাশার শেষ নবির জন্য নির্মাণ করেছিলেন।
অতঃপর এই বংশ থেকে এসেছেন হযর আবু আইয়ুব আনসারী রাদি.
যার ঘরের সামনে রাসুলের উটনী বসেছিল।
রাসূলকে মেহনানদারী করার সৌভাগ্য যার অর্জণ হয়েছিল।

বাদশাহ তুব্বার সেই চিঠি নাকি তখন পর্যন্ত হযরত আবু আইয়ুব আনসারীর কাছে ছিল।এবং তিনি সেটা রাসূলুল্লাহ সাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের খেদমতে পৌঁছে দিয়েছিলেন.......


আল্লাহু আ'লামু বিস সাওয়াব।

(তারিখে ইসলামঃ২/১৪৫)

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২৩ শে জুলাই, ২০১৫ সকাল ১১:২৪

রুদ্রপথিক বলেছেন: চমৎকার লিখেছেন মাশা আল্লাহ।
এ ধরণের আরো ঐতিহাসিক ঘটনা চাই.......

ভাই হেজাজের কাফেলা!!! :-D :-P

২৩ শে জুলাই, ২০১৫ সকাল ১১:৫০

হেজাজের কাফেলা বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই।
জাযাকুমুল্লাহ!

২| ২৩ শে জুলাই, ২০১৫ দুপুর ১২:০৭

বুরহানউদ্দীন শামস বলেছেন: অনেক ভাল লেগেছে।
শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।
আপনার জন্য শুভ কামনা রইলো।

২৫ শে জুলাই, ২০১৫ রাত ১১:৩৪

হেজাজের কাফেলা বলেছেন: জাযাকাল্লাহ!!!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.