নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

.................

আদম আদোনিস

নিজের সম্পর্কে কথা বলতে ভালো লাগে না। আমার ব্লগ ই আমার হয়ে কথা বলবে।

আদম আদোনিস › বিস্তারিত পোস্টঃ

টেস্ট, ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে তিনটি ভিন্ন জাতীয় দল এখন সময়ের দাবি

১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ১১:০৫

বিশ্ব ক্রিকেটে বাংলাদেশ ক্রমশই একটি সমীহ জাগানো শক্তি হিসেবে আবির্ভূত হচ্ছে। বেশিদিন আগের কথা নয়, বাংলাদেশ ক্রিকেট দলকে "মিনোজ" হিসেবে আখ্যায়িত করা হত। বড় বড় ক্রিকেট খেলুড়ে দেশগুলো বাংলাদেশের সাথে ম্যাচ থাকলে সেই ম্যাচে অনিয়মিত খেলোয়াড়দের খেলাতো, টেস্ট ম্যাচে "রিটায়ার্ড আউট" হয়ে পরবর্তী ব্যাটসম্যানকে ব্যাটিং করার সুযোগ দিতেন ব্যাটসম্যানেরা। কিন্তু দিন সবসময় সমান যায় না। বেশ কয়েক বছর ধরেই বিশেষ করে ওয়ানডে ক্রিকেটে উজ্জীবিত পারফরম্যান্স প্রদর্শন করে বাংলাদেশ দল দর্শক, সমালোচকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সক্ষম হয়েছে। এখন আর কেউ আমাদের 'মিনোজ' বলে তাচ্ছিল্য করেনা(শেবাগের মত কয়েকটা মানসিক রোগী ছাড়া)। সেইসাথে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটেও উন্নতির ধারা পরিলক্ষিত হচ্ছে "বিপিএল" শুরু হওয়ার পর থেকে। যদিও নিয়মিত টেস্ট খেলার সুযোগ না পাওয়ায় টেস্টে এখনো পারফরম্যান্স আশানুরূপ ধারায় পৌঁছাতে পারেনি।



এবার মূল প্রসঙ্গে আসা যাক।



এবারের বিপিএল এ স্থানীয় খেলোয়াড়দের দাপট সবাইকে মুগ্ধ করেছে। টুর্নামেন্ট শুরু হবার আগে নাজমুল হোসেন মিলন, শামসুর রহমান, সাব্বির রহমান কে নিয়ে কারো মধ্যে কোন উচ্চাশা লক্ষ্য করা যায় নি। তাঁদের হয়তো অনেকে সেভাবে চিনতেনই না। কিন্তু বিপিএল মাঠে গড়ানোর পর থেকে বদলে গেলো দৃশ্যপট। তাঁদের খেলার মাধ্যমেই তাঁরা সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সক্ষম হয়েছেন। শামসুর রহমান এখন পর্যন্ত টুর্নামেন্ট এর সর্বোচ্চ স্কোরার। ৬ টি অর্ধশত রানের ইনিংস তিনি খেলেছেন। নাজমুল প্রতি ম্যাচেই ঝড় তুলছেন শেষ ৫ ওভারে। দলকে জিতিয়ে ফিরছেন একেকটি ঝড়ো ইনিংস খেলে। আর সাব্বির রহমান প্রথম ১০ ওভারে ঝড় তুলে ইনিংস এর গতিপথ ঠিক করে দিচ্ছেন। তাঁরা তিনজনই বয়সে তরুণ। খুব বেশি ফার্স্টক্লাস ম্যাচ তারা খেলেননি। যেগুলো খেলেছেন, সেগুলোতেও পারফরম্যান্স মাঝারি মানের।



এই টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে এসে তাঁরা নিজেদের নতুন করে চেনাচ্ছেন। প্রায় প্রতি ম্যাচেই ভালো খেলে নির্বাচকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সক্ষম হয়েছেন ইতোমধ্যেই। সামনের শ্রীলংকা সফরে তাঁদের কাউকে না কাউকে জাতীয় দলে দেখা যাওয়ার সম্ভাবনাও প্রবল। হয়তো দেখা যাবে, তাঁদেরকে ওয়ানডে দলে আগে নেওয়া হবে।



সমস্যার শুরু কিন্তু এখানেই।



একটা সহজ শর্ত কিংবা ঐতিহ্যের চর্চা আমাদের দেশে এখনো শুরু হয়নি। সেটা হলো তিন ধরণের ক্রিকেটে ভিন্ন দল খেলানো। আমরা যদি ভালো করে খেয়াল করি, দেখা যাবে অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড, এমনকি ভারতও এখন ভিন্ন ভিন্ন ঘরানার ক্রিকেটে ভিন্ন দল খেলাচ্ছে। অস্ট্রেলিয়া আর ইংল্যান্ডে তো টি-টোয়েন্টি দলের অধিনায়কও আলাদা। এর পিছনে কারণটা আসলে কি? কেন এক দল সব জাগায় খেলায় না তারা?



এর কারণ, তিন ধরণের ক্রিকেটই সমান দাপটে খেলতে পারেন, এমন ক্রিকেটার সব দেশেই বিরল। হয়তো সাকুল্যে ৭/৮ জন পাওয়া যাবে এমন। অন্যদিকে দেখা যায়, কিছু ব্যাটসম্যান থাকেন যারা লংগার ভার্সনে রানের বন্যা বইয়ে দিচ্ছেন প্রতি মৌসুমেই। কিন্তু তাঁদেরকে ওয়ানডে/টি-টোয়েন্টি দলে বিবেচনাই করা হচ্ছে না। অনেকে টি-টোয়েন্টিতে ছক্কার ফুলঝুড়ি ছুটাচ্ছেন। তাকে টেস্ট দলে নেওয়া হচ্ছে না। আবার অনেক বোলার আছেন, যারা টেস্টে ভালো বল করলেও তাকে ওয়ানডে/ টি-টোয়েন্টি দলে নেওয়া হচ্ছে না। উল্টোটাও এখানে প্রযোজ্য। এর কারণটা আসলে কি, বাংলাদেশের ক্রিকেটের নীতিনির্ধারকেরা কি ভেবে দেখেছেন?



কিছু '"স্পেশাল ট্যালেন্ট" ছাড়া সব খেলোয়াড় সব ধরণের ক্রিকেটে মানিয়ে নিতে পারেন না। এটা দোষের কিছু নয়। সবাইকে সব পারতে হবে, এমন তো কোন কথা নেই। যেটুকু পারেন, সেটাই যদি শতভাগ কেউ দেখাতে পারেন, তাহলে আর কিছু লাগে না। শচীন টেন্ডুলকার, ব্রায়ান লারা ক্রিকেট বিশ্বে নক্ষত্রস্বরূপ। তাঁদের ব্যাটিং ছিল অপূর্ব বিনোদনদায়ী। তাই বলে কি রাহুল দ্রাবিড়, মারভান আতাপাত্তু ছোট হয়ে গিয়েছেন? মোটেও তা নয়। অধুনা আজহার মেহমুদ এর খেলা নিয়ে আলোচনা হয়। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট তাঁকে পুনর্জীবন দান করেছে। অথচ তাঁর ওয়ানডে, টেস্ট ক্যারিয়ার ছিল হতাশায় ভরা। কখনোই নিজের নামের প্রতি সুবিচার তিনি করতে পারেননি। যেটা টি-টুয়েন্টি ক্রিকেটে তিনি প্রতিনিয়তই করে দেখাচ্ছেন।



মোহাম্মদ আশরাফুল.....বাংলাদেশের এক আজন্ম হতাশার নাম। আশার ফুল তিনি ফোঁটাতে পারেননি। অসামান্য ভঙ্গিমায় ক্যারিয়ার শুরু করেও সেটা তিনি ধরে রাখতে পারেননি। দল থেকে বাদই পড়ে গেছেন। কিন্তু এবারের বিপিএলে তিনি চমক দেখিয়েছেন। দুর্দান্ত এক সেঞ্চুরি তিনি করেছেন খুলনার বিপক্ষে। ব্যাটেও সেই পুরোন ছন্দ দেখা যাচ্ছে। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটটা তিনি বরাবরই ভালো খেলেন। কিন্তু গত টি-টোয়েন্টি বিশ্বাকাপে আশানুরূপ পারফরম্যান্স না করায় তাঁকে দল থেকে বাদ দেন নির্বাচকেরা। মজার ব্যাপার হল, তাঁকে বাদ দেওয়া হয় ওয়ানডে ও টেস্ট দল থেকে! টি-টোয়েন্টির পারফরম্যান্স খারাপ করায় টেস্ট দল থেকে বাদ অথবা টেস্টে খারাপ করায় ওয়ানডে দল থেকে বাদ দেওয়ার মত হঠকারী সিদ্ধান্ত বোধহয় কেবল বাংলাদেশেই সম্ভব।



এসব সনাতন চিন্তা ভাবনা থেকে সরে আসার সময় হয়ে গেছে আমাদের। দেশে এখন ক্রিকেটারের সংখ্যা কম নয়। আগের মত খেলোয়াড় সংকট আমাদের নেই। সাকিব, তামিম, নাসির, মুশফিকের মত কিছু এক্সট্রা ট্যালেন্টেড খেলোয়াড়কে সব দলে রেখে বাকিদের কে তাঁদের সামর্থ্য ও পারফরম্যান্স অনুযায়ী ভিন্ন দলে খেলানো এখন যুগের দাবি। সব ধরণের ক্রিকেটে শক্তিশালী দল হিসেবে আত্মপ্রকাশ করার জন্য এই নীতির কোন বিকল্প নেই। এতে যেমন আমরা অনেক নতুন আনকোরা ভালো খেলোয়াড় পাবো, সেইসাথে নিজেকে হারিয়ে খুঁজতে থাকা অনেক ক্রিকেটারও তাঁদের আসল জায়গাটা খুঁজে পাবেন, যেখানে তারা তাঁদের নামের প্রতি সুবিচার করে ভালো খেলতে পারবেন। এতে খেলোয়াড়দের লাভ, বাংলাদেশের ক্রিকেটের লাভ, সর্বোপরি দেশেরই লাভ।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ১১:০৯

রাসেল৪৮ বলেছেন: সহমত।

২| ১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ১১:২৪

ঘুমন্ত আমি বলেছেন: তিনটা দল করা যেতেই পারে ।তবে আমার মনে হয় টেস্ট খেলার মতো এগারোটা প্লেয়ার কিন্তু বাংলাদেশে নেই ।

৩| ১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ১১:২৮

ইয়ার শরীফ বলেছেন: রাসেল৪৮ বলেছেন: সহমত।

৪| ১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ১১:৪৭

আদম আদোনিস বলেছেন: @ঘুমন্ত ভাইঃ এর একটা বড় কারণ বাংলাদেশ টেস্ট খেলে অনেক কম। বেশি পরিমাণে টেস্ট ও লংগার ভার্সন ক্রিকেট খেললেই টেস্ট খেলার মত খেলোয়াড় পাওয়া যাবে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.