নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

যে ব্যক্তি আল্লাহর প্রতি মানুষকে আহবান করে, সৎকাজ করে এবং বলে, ‘আমি তো আত্মসমর্পণকারী (মুসলিম)’ তার অপেক্ষা কথায় উত্তম আর কোন্ ব্যক্তি (৪১ : ৩৩)

ইসলাম হাউস

তিনিই আল্লাহ, এক-অদ্বিতীয়।আল্লাহ কারও মুখাপেক্ষী নন।তিনি কাউকে জন্ম দেন না, আর তাঁকেও জন্ম দেয়া হয়নি।তাঁর সমকক্ষ কেউ নয়।

ইসলাম হাউস › বিস্তারিত পোস্টঃ

নবীজির সালাত আদায়ের পদ্ধতি

১২ ই অক্টোবর, ২০২৫ বিকাল ৫:৪১



নবীজির সালাত আদায়ের পদ্ধতি
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
মাননীয় শাইখ
আব্দুল আযীয বিন আব্দুল্লাহ বিন বায
পরম করুণাময় অতি দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু করছি
সকল প্রশংসা এক আল্লাহর জন্য, দরুদ ও সালাম বর্ষিত হোক তাঁর বান্দা ও রাসূল আমাদের নবী মোহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম, তার পরিবার-পরিজন এবং সাহাবীদের প্রতি। অতঃপর:
আমি প্রত্যেক মুসলিম নর-নারীর উদ্দেশ্যে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সালাত আদায়ের পদ্ধতি সম্পর্কে সংক্ষিপ্তভাবে বর্ণনা করতে ইচ্ছে করছি; যাতে করে যারাই এটা পাঠ করবেন তারাই সালাত আদায়ের ক্ষেত্রে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে অনুসরণ করতে পারেন; কেননা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: "তোমরা সেভাবে সালাত আদায় কর, যেভাবে আমাকে সালাত আদায় করতে দেখেছ।" (সহীহ বুখারী) পাঠকের উদ্দেশ্যে তা তুলে ধরা হলো:

Index
পরিপূর্ণভাবে অযু করা: 3
কিবলামুখী হওয়া: 4
তাকবীরে তাহরিমা, তাকবীর দেয়ার সময় হাত উঠানো এবং বুকের উপর হাত বাঁধা: 4
সালাত শুরু করার দু‘আ (সানা পাঠ): 4
রুকু, তা থেকে মাথা উঠানো এবং তাতে আরও যা রয়েছে: 6
সিজদা, তা থেকে মাথা উঠানো এবং তাতে আরও যা রয়েছে 7
দু' সিজদার মাঝখানে বসা ও তার পদ্ধতি 9
দুই রাকাতবিশিষ্ট সালাতে তাশাহ্হুদের 9
জন্য বসা ও তার পদ্ধতি 9
তিন বা চার রাকাতবিশিষ্ট সালাতে তাশাহ্হুদের জন্য বসা ও এর পদ্ধতি: 12
পরিপূর্ণভাবে অযু করা:
১- সুন্দর ও পরিপূর্ণভাবে অযু করবে, তথা মহান আল্লাহ যেভাবে অযু করতে নির্দেশ প্রদান করেছেন সেভাবে অযু করবে। আল্লাহ তা'আলা বলেন:
{يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا إِذَا قُمْتُمْ إِلَى الصَّلَاةِ فَاغْسِلُوا وُجُوهَكُمْ وَأَيْدِيَكُمْ إِلَى الْمَرَافِقِ وَامْسَحُوا بِرُءُوسِكُمْ وَأَرْجُلَكُمْ إِلَى الْكَعْبَيْنِ} ([2])
{ হে মুমিনগণ! যখন তোমরা সালাতের উদ্দেশ্যে দণ্ডায়মান হবে তখন তোমাদের মুখমন্ডল এবং হাতগুলোকে কনুই পর্যন্ত ধৌত কর, আর মাথা মাসেহ কর এবং টাখনু-সহ পা ধৌত কর।} .
তাছাড়া নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: “পবিত্রতা ব্যতীত সালাত কবুল হয় না।”
কিবলামুখী হওয়া:
২- সালাত আদায়কারী যেখানেই থাকুক না কেন পুরো শরীরকে কিবলা তথা কা'বা মুখী করবে। ফরয কিংবা নফল যে সালাত আদায়ের ইচ্ছা পোষণ করছে, মনে মনে তার নিয়ত করবে। মুখে নিয়ত উচ্চারণ করবে না; কেননা মুখে উচ্চারণ করা বৈধ নয়, বরং বিদয়াত; কেননা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কিংবা সাহাবীগণ মুখে নিয়ত উচ্চারণ করেননি। ইমাম অথবা একাকী সালাত আদায়কারী সামনে সুতরা (বেড়াদণ্ড) রাখবে।
আর কিবলামুখী হওয়া সালাতের জন্য শর্ত। তবে কতিপয় মাসয়ালা এর ব্যতিক্রম, যেগুলোর বিশদ বর্ণনা আলেমগণের কিতাবে রয়েছে।
তাকবীরে তাহরিমা, তাকবীর দেয়ার সময় হাত উঠানো এবং বুকের উপর হাত বাঁধা:
৩- সিজদার দিকে দৃষ্টি নিবদ্ধ রেখে "আল্লাহু আকবার" বলে তাকবীরে তাহরিমা দিবে।
৪- তাকবীর দেয়ার সময় উভয় হাত কাঁধ অথবা কানের লতি বরাবর উঠাবে।
৫- এরপর তার দু'হাতকে বুকের উপর রাখবে। ডান হাতকে বাম হাতের তালু, কব্জি ও বাহুর উপর রাখবে; কেননা এভাবেই নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে সাব্যস্ত।
সালাত শুরু করার দু‘আ (সানা পাঠ):
৬- প্রারম্ভিক দু'আ বা সানা পাঠ করা সুন্নত, আর তা হলো: «اللَّهُمَّ بَاعِدْ بَيْنِي وَبَيْنَ خَطَايَايَ كَمَا بَاعَدتَّ بَيْنَ الْمَشْرِقِ وَالْمَغْرِبِ اللَّهُمَّ نَقْنِي مِنْ خَطَايَايَ كَمَا يُنَقَّى الثَّوْبُ الْأَبْيَضُ مِنَ الدَّنَسِ اللَّهُمَّ اغْسِلْنِي مِنْ خَطَايَايَ بِالْمَاءِ وَالثَّلْجِ وَالْبَرْدِ»
অর্থ: “হে আল্লাহ! তুমি আমাকে আমার পাপগুলো থেকে এত দূরে রাখ যেমন, পূর্ব ও পশ্চিমের পরস্পরকে একে অপরের থেকে দূরে রেখেছ। হে আল্লাহ! তুমি আমাকে আমার পাপ থেকে এমনভাবে পরিষ্কার করে দাও, যেমন সাদা কাপড়কে ময়লা থেকে পরিষ্কার করা হয়। হে আল্লাহ! তুমি আমাকে আমার পাপ থেকে পানি, বরফ ও শিশির দ্বারা ধুয়ে পরিষ্কার করে দাও।"
আর যদি কেউ চায় তাহলে পূর্বের দু'আর পরিবর্তে নিম্নের দু'আটিও পাঠ করতে পারে।
سُبْحَانَكَ اللَّهُمَّ وَبِحَمْدِكَ وَتَبَارَكَ اسْمُكَ وَتَعَالَى جَدُّكَ وَلَا إِلَهَ غَيْرُكَ
অর্থ: "হে আল্লাহ! আমি তোমার পবিত্রতা বর্ণনা করছি। তুমি প্রশংসাময়, তোমার নাম বরকতময়, তোমার মর্যাদা অতি উচ্চে, আর তুমি ব্যতীত সত্যিকার কোনো মা'বুদ নেই।" পূর্বের দু'আ দু'টি ছাড়াও যদি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে অন্যান্য যে সকল দু'আয়ে ইস্তেফতাহ বা সানা বলা প্রমাণিত তা পাঠ করে তবে কোনো বাধা নেই। কিন্তু উত্তম হলো কখনও এটি আবার কখনও অন্যটি পড়া। কেননা, এর মাধ্যমে সুন্নতের পরিপূর্ণ অনুসরণ করা হবে। অতঃপর বলবে: আউযু বিল্লাহি মিনাশ শায়তানির রাজীম, বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম। তারপর সূরা ফাতিহা পাঠ করবে। কেননা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: "যে ব্যক্তি (সালাতে) সূরা ফতিহা পাঠ করে না, তার সালাত হয় না।” সূরা ফাতিহা পাঠ শেষে জাহরী সালাতে (মাগরিব, এশা ও ফজর) উচ্চস্বরে আমীন বলবে, আর সিররি সালাতে (জোহর ও আসর) মনে মনে আমীন বলবে। এরপর পবিত্র কুরআন থেকে যে পরিমাণ সহজসাধ্য হয় তা পাঠ করবে। উত্তম হলো এ ব্যাপারে বর্ণিত হাদীস অনুযায়ী আমলস্বরুপ সূরা ফাতিহার পরে জোহর, আসর এবং এশার সালাতে কুরআন মাজীদের আওসাতে মুফাস্সাল (মধ্যম ধরনের সূরা) এবং ফজরে তিওয়াল (লম্বা সূরা) আর মাগরিবের সালাতে কখনও তিওয়াল (লম্বা সূরা) আবার কখনও কিসার (ছোট সূরা) পাঠ করবে।
রুকু, তা থেকে মাথা উঠানো এবং তাতে আরও যা রয়েছে:
৭- উভয় হাত দু'কাঁধ অথবা কান বরাবর উঠিয়ে আল্লাহু আকবার বলে রুকুতে যাবে। মাথাকে পিঠ বরাবর রাখবে এবং উভয় হাতের আঙ্গুলগুলোকে খোলাবস্থায় উভয় হাটুর উপরে রাখবে। রুকুতে স্থিরতা অবলম্বন করবে। এরপর বলবে:
سبحان ربي العظيم. "আমি আমার মহান রবের মহিমা প্রকাশ করছি।" উত্তম হলো দু'আটি তিন বা ততোধিক বার পড়া। এ ছাড়াও এর সাথে নিম্নের দু'আটি পাঠ করা মুস্তাহাব: سُبْحَانَكَ اللهُم رَبَّنَا وَبِحمدك، اللهم اغفر لي. "হে আমাদের রব আল্লাহ! তুমি ত্রুটিমুক্ত; প্রশংসা সবই তোমার। হে আল্লাহ! আমাকে ক্ষমা করে দাও।"
৮- রুকু থেকে মাথা উঠাবে, উভয় হাত কাঁধ অথবা কান বরাবর উঠিয়ে এই বলে: "سمع الله لمن حمده"
উচ্চারণ: সামিয়াল্লাহু লিমান হামিদাহ্ ইমাম হিসেবে বা একাকী সালাত আদায়কারী উভয়ই দু'আটি পাঠ করবে। রুকু থেকে দাঁড়িয়ে বলবে: رَبَّنَا وَلَكَ الْحَمْدُ ، حَمْدًا كَثِيرًا طَيِّبًا مُبَارَكًا فِيْهِ مِلْءَ السَّمَاوَاتِ وَمِلْءَ الْأَرْضِ؛ وَمِلَءَ مَا بَيْنَهُمَا ، وَمِلْءَ مَا شِئْتَ مِنْ شَيْءٍ بَعْدُ "হে আমাদের রব! সমস্ত প্রশংসা তোমার জন্যই। তোমার প্রশংসা অসংখ্য, উত্তম ও বরকতময়, যা আকাশ ভর্তি করে দেয়, যা পৃথিবী পূর্ণ করে দেয়, উভয়ের মধ্যবর্তী স্থান পূর্ণ করে এবং এগুলো ছাড়া তুমি অন্য যা কিছু চাও তাও পূর্ণ করে দেয়।” আর যদি মুক্তাদি হয়, তবে তিনি মাথা উঠানোর সময় বলবেন: রাব্বানা ওয়ালাকাল হামদু... থেকে বাকী অংশ। যদি পূর্বের দু'আটির পরে (ইমাম হিসেবে সালাত আদায়কারী, একাকী সালাত আদায়কারী কিংবা মুক্তাদি হিসেবে সালাত আদায়কারী) সবাই যদি নিম্নের দু'আটিও পাঠ করে তবে তাও ভালো: أَهْلُ الثَّنَاءِ وَالْمَجْدِ؛ أَحَقُّ مَا قالَ الْعَبْدُ؛ وَكُلُّنَا لَكَ عَبْدُ، اللَّهُمَّ لأَمَانِعَ لِمَا أَعْطَيْتَ وَلَا مُعْطِيَ لِمَا مَنَعْتَ وَلَا يَنْفَعُ ذَا الْجَدَّ مِنْكَ الْجِدُّ
উচ্চারণ: আহলুস সানায়ি ওয়াল মাজদি, আহাক্কু মা ক্বালাল 'আবদু ওয়া কুল্লুনা লাকা 'আবদুন। আল্লাহুম্মা! লা- মানি'আ লিমা আ'তাইতা, ওয়ালা মু'তিয়া লিমা মানা'তা, ওয়ালা ইয়ানফা'উ যালজাদ্দি মিনকালজাদ্দু।
"হে আল্লাহ! তুমিই প্রশংসা ও মর্যাদার হক্কদার, বান্দা যা বলে তার চেয়েও তুমি অধিকতর হকদার এবং আমরা সকলে তোমারই বান্দা। হে আল্লাহ! তুমি যা দান করেছো, তার প্রতিরোধকারী কেউ নেই। আর তুমি যা নিষিদ্ধ করেছো তা প্রদানকারীও কেউ নেই এবং কোনো সম্মানী ব্যক্তি তার উচ্চ মর্যাদা দ্বারা তোমার দরবারে উপকৃত হতে পারবে না।" কারণ এটা হাসান (সনদে) নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে সাব্যস্ত হয়েছে।
রুকু থেকে মাথা উঠানোর পর ইমাম ও মুক্তাদী সকলের জন্য দাঁড়ানো অবস্থায় যেভাবে উভয় হাত বুকের উপর ছিল সেভাবে বুকের উপর উভয় হাত রাখা মুস্তাহাব। কারণ; নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে ওয়ায়েল ইবন হুজর এবং সাহল ইবন সা'দ রাদিয়াল্লাহু আনহুমার বর্ণিত হাদীস থেকে এর প্রমাণ রয়েছে।
সিজদা, তা থেকে মাথা উঠানো এবং তাতে আরও যা রয়েছে
৯- আল্লাহু আকবার বলে, যদি কষ্ট না হয় তাহলে উভয় হাতের আগে দুই হাটু মাটিতে রেখে সিজদায় যাবে। আর যদি কষ্ট হয় তাহলে উভয় হাত হাটুর পূর্বে মাটিতে রাখবে। আর তখন হাত ও পায়ের আঙ্গুলগুলো কিবলামুখী থাকবে এবং হাতের আঙ্গুলগুলো মিলিত ও প্রসারিত হয়ে থাকবে। আর সিজদা হবে সাতটি অঙ্গের উপর। অঙ্গগুলো হলো: নাকসহ কপাল, দুই হাত, উভয় হাঁটু এবং উভয় পায়ের আঙ্গুলের ভিতরের অংশ। সিজদায় গিয়ে বলবে: "سبحان ربي الأعلى" "আমার সমুন্নত রবের মহিমা প্রকাশ করছি।" সুন্নাহ হচ্ছে তিন বা ততোধিকবার তা পুনরাবৃত্তি করা। আর এর সাথে নিম্নের দু'আটি পড়া মুস্তাহাব: سُبْحَانَكَ اللهُم رَبَّنَا وَبِحمدك، اللهم اغفر لي.
উচ্চারণ: সুবহানাকা আল্লাহুম্মা ওয়া বিহামদিকা আল্লাহুম্মাগ ফিরলী। "হে আমাদের রব আল্লাহ! তুমি ত্রুটিমুক্ত; প্রশংসা সবই তোমার। হে আল্লাহ! আমাকে ক্ষমা করে দাও।" সিজদায় বেশি বেশি দু'আ করবে; কেননা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: "তোমরা রুকু অবস্থায় মহান রবের শ্রেষ্ঠত্ব ও মহত্ব বর্ণনা কর এবং সিজদারত অবস্থায় অধিক দু’আ করতে চেষ্টা কর, কেননা তা তোমাদের দু’আ কবুল হওয়ার অধিক উপযোগী অবস্থা।" ফরয কিংবা নফল উভয় সালাতেই রবের কাছে দুনিয়া ও আখেরাতের কল্যাণের জন্য দু'আ করবে। আর সিজদার সময় উভয় বাহুকে পার্শ্বদেশ থেকে, পেটকে উরু থেকে এবং উভয় উরু পদনালী থেকে আলাদা রাখবে এবং উভয় বাহু মাটি থেকে উপরে রাখবে; কেননা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: "তোমরা সিজদায় বরাবর সোজা থাকবে। তোমাদের কেউ যেন তার উভয় হাতকে কুকুরের ন্যায় বিছিয়ে প্রসারিত না রাখে।"
দু' সিজদার মাঝখানে বসা ও তার পদ্ধতি
১০- আল্লাহু আকবার বলে (সিজদা থেকে) মাথা উঠাবে। বাম পা বিছিয়ে দিয়ে তার উপর বসবে এবং ডান পা খাড়া করে রাখবে। দু'হাত তার উভয় রান ও হাঁটুর উপর রাখবে এবং নিম্নের দু'আটি বলবে: رَبِّ اغْفِرْلِي، وَارْحَمْنِي وَاهْدِنِي وَارْزُقْنِي وَعَافِنِي وَاجْبُرْنِي
উচ্চারণ: রাব্বিগফিরলী, ওয়ারহামনী ওয়াহদিনী ওয়ারযুকনী ওয়া আ'ফিনী ওয়াজবুরনী। "হে রব্ব, আমাকে ক্ষমা কর, আমাকে রহম কর, আমাকে হিদায়েত দান কর, আমাকে রিযিক দান কর, আমাকে সুস্থ্যতা দান কর এবং আমার ক্ষয়ক্ষতি পূরণ কর।" এই বৈঠকে স্থিরতা অবলম্বন করবে।
১১- আল্লাহু আকবার বলে দ্বিতীয় সিজদা করবে এবং দ্বিতীয় সিজদাতে তাই করবে, প্রথম সেজদায় যা করেছিল।
১২- সিজদা থেকে আল্লাহু আকবার বলে মাথা উঠাবে। ক্ষণিকের জন্য বসবে, যেভাবে উভয় সিজদার মধ্যবর্তী সময়ে বসেছিল। এ ধরনের পদ্ধতিতে বসাকে "জালসায়ে ইসতেরাহা" বা আরামের বৈঠক বলা হয়। এটা মুস্তাহাব এবং তা ছেড়ে দিলেও কোনো দোষ নেই। এখানে পড়ার জন্য কোনো যিকির বা দু'আ নেই। অতঃপর দ্বিতীয় রাকাতের জন্য যদি কষ্ট না হয় তাহলে হাঁটুতে ভর করে উঠে দাঁড়াবে, আর কষ্ট হলে মাটিতে ভর করে দাঁড়াবে। এরপর সূরা ফাতিহা পড়বে। সূরা ফাতিহার পর কুরআন হতে যতটুকু তার পক্ষে সহজ ততটুকু পড়বে। অতঃপর প্রথম রাকাতে যেভাবে করেছে ঠিক সেভাবেই দ্বিতীয় রাকাতেও করবে।
দুই রাকাতবিশিষ্ট সালাতে তাশাহ্হুদের
জন্য বসা ও তার পদ্ধতি
১৩- সালাত যদি দুই রাকাত বিশিষ্ট হয় যেমন: ফজর, জুমু'আ ও ঈদের সালাত, তাহলে দ্বিতীয় সিজদা থেকে মাথা উঠিয়ে ডান পা খাড়া করে বাম পায়ের উপর বসবে। ডান হাত ডান উরুর উপর রেখে শাহাদাত আঙ্গুলি ছাড়া সমস্ত আঙ্গুল মুষ্টিবদ্ধ করে তা দ্বারা তাওহীদের ইশারা করবে। যদি ডান হাতের কনিষ্ঠা ও অনামিকা বন্ধ রেখে এবং বৃদ্ধাঙ্গুলি মধ্যমাঙ্গুলির সাথে মিলিয়ে গোলাকার করে শাহাদাত বা তর্জনী দ্বারা ইশারা করে তবে তাও ভালো। কারণ, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে দু'ধরনের বর্ণনাই প্রমাণিত। উত্তম হলো যে, কখনও এভাবে এবং কখনও ওভাবে করা। আর বাম হাত বাম উরু ও হাঁটুর উপর রাখবে। অতঃপর এই বৈঠকে তাশাহহুদ (আত্তাহিয়্যাতু..) পড়বে। তাশাহহুদ বা আত্তাহিয়্যাতু হলো: «التَّحِيَّاتُ لِلَّهِ وَالصَّلَوَاتُ وَالطَّيِّبَاتُ السَّلَامُ عَلَيْكَ أَيُّهَا النَّبِيُّ وَرَحْمَةُ اللهِ وَبَرَكَاتُهُ، السَّلَامُ عَلَيْنَا وَعَلَى عِبَادِ اللَّهِ الصَّالِحِينَ، أَشْهَدُ أَن لَّا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَأَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ وَرَسُولُهُ)
উচ্চারণ: "আত্তাহিয়্যাতু লিল্লাহি ওয়াস-সালাওয়াতু ওয়াত্ তাইয়্যিবাতু আস্সালামু আলাইকা আইয়্যুহান্নাবিয়্যু ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু, আস্সালামু আলাইনা ওয়া আলা ইবাদিল্লাহিছ ছালিহীন। আশহাদু আল লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়া আশহাদু আন্না মুহাম্মাদান আবদুহু ওয়া রাসূলুহু।
"মর্যাদাজ্ঞাপন-অভিবাদন আল্লাহর জন্য এবং ইবাদত-প্রার্থনা, পবিত্র কর্ম ও দানসমূহ (সবই আল্লাহর জন্য)। হে নবী, আপনার উপর সালাম এবং আল্লাহর রহমত ও তাঁর বরকতসমূহ। সালাম আমাদের উপর এবং আল্লাহর নেককার বান্দার উপর। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ছাড়া (সত্য) কোনো মা'বুদ নেই এবং আরো সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর বান্দা ও তাঁর রাসূল।"
অতঃপর বলবে:
«اللَّهُمَّ صَلَّ عَلَى مُحَمَّدٍ وَعَلَى آلِ مُحَمَّدٍ كَمَا صَلَّيْتَ عَلَى إِبْرَاهِيمَ وَعَلَى آلِ إِبْرَاهِيمَ إِنَّكَ حَمِيدٌ مَجِيدٌ، وَبَارِكْ عَلَى مُحَمَّدٍ وَعَلَى آلِ مُحَمَّدٍ كَمَا بَارَكْتَ عَلَى إِبْرَاهِيمَ وَعَلَى آلِ إِبْرَاهِيمَ إِنَّكَ حَمِيدٌ مَجِيدٌ
উচ্চারণ: "আল্লাহুম্মা সাল্লি আলা মুহাম্মাদিও ওয়া আলা আ-লি মুহাম্মাদিন কামা সাল্লাইতা আলা ইবরাহীমা ওয়া আলা আ-লি ইবরাহীমা ইন্নাকা হামীদুম মাজীদ। ওয়া বা-রিক আলা মুহাম্মাদিউ ওয়া আলা আ-লি মুহাম্মাদিন কামা বা-রাকতা আলা ইবরাহীমা ওয়া আলা আলি ইবরাহীমা ইন্নাকা হামীদুম মাজীদ।"
“হে আল্লাহ! শান্তি বর্ষণ করুন, মুহাম্মাদ ও তাঁর পরিবারবর্গের ওপর, যেভাবে আপনি ইবরাহীম ও তার পরিবারবর্গের ওপর শান্তি বর্ষণ করেছেন। নিশ্চয় আপনি প্রশংসিত ও গৌরবান্বিত। আর আপনি বরকত নাযিল করুন মুহাম্মাদ ও তাঁর পরিবারবর্গের ওপর, যেভাবে আপনি ইবরাহীম ও তার পরিবারবর্গের ওপর বরকত নাযিল করেছেন। নিশ্চয় আপনি প্রশংসিত ও গৌরাবান্বিত।” এরপর আল্লাহর কাছে চারটি জিনিস থেকে
আশ্রয় প্রার্থনা করবে। বলবে: «اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوْذُ بِكَ مِنْ عَذَابِ جَهَنَّمَ وَمِنْ عَذَابِ الْقَبْرِ وَمِنْ فِتْنَةِ الْمَحْيَا وَالْمَمَاتِ وَمِنْ فِتْنَةِ الْمَسِيحِ الدَّجَّالِ»
উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা ইন্নী আঊযুবিকা মিন 'আযাবি জাহান্নাম, ওয়া মিন 'আযাবিল ক্বাবরি, ওয়া মিন ফিতনাতিল্ মাহইয়া ওয়ালমামাতি, ওয়া মিন ফিতনাতিল মাসীহিদ দাজ্জাল।
"আমি আল্লাহর আশ্রয় কামনা করি জাহান্নামের আযাব থেকে, কবরের শাস্তি থেকে, জীবন ও মৃত্যুর ফিতনা থেকে এবং মাসীহ দাজ্জালের ফিতনা থেকে।" এরপর দুনিয়া ও আখেরাতের কল্যাণ কামনা করে নিজের পছন্দমত যে কোনো দু'আ করবে। যদি তার পিতা-মাতা ও অন্যান্য মুসলিমদের জন্য দু'আ করে তাতে কোনো দোষ নেই, - হোক তা ফরজ সালাতে কিংবা নফল সালাতে -; কেননা ইবন মাসউদ রাদিআল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত হাদীসে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কথায় ব্যাপকতা রয়েছে। যখন তিনি তাকে তাশাহহুদ শিক্ষা দিচ্ছিলেন তখন বলেছিলেন: "অতঃপর তার কাছে যে দু'আ পছন্দনীয়, তাই নির্বাচন করে দু'আ করবে।” অপর বর্ণনায় আছে: "অতঃপর যা ইচ্ছা চেয়ে দু'আ করতে পারে।" রাসূলের এ বাণী বান্দার দুনিয়া ও আখেরাতের সমস্ত উপকারী বিষয়ের দু'আকে শামিল করে। অতঃপর (সালাত আদায়কারী) তার ডান দিকে (তাকিয়ে) "আস্সালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ” এবং বাম দিকে (তাকিয়ে) “আস্সালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ” বলে সালাম ফিরাবে।
তিন বা চার রাকাতবিশিষ্ট সালাতে তাশাহ্হুদের জন্য বসা ও এর পদ্ধতি:
১৪- সালাত যদি তিন রাকাতবিশিষ্ট হয়, যেমন মাগরিবের সালাত, অথবা চার রাকাতবিশিষ্ট হয় যেমন জোহর, আসর ও এশার সালাত, তাহলে পূর্বোল্লিখিত "তাশাহহুদ” পাঠ করবে এবং নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রতি দুরূদও পাঠ করবে।
অতঃপর আল্লাহু আকবার বলে হাটুতে ভর করে (সোজা হয়ে) দাঁড়িয়ে উভয় হাত কাঁধ অথবা কান বরাবর উঠিয়ে পূর্বের ন্যায় বুকের উপর রাখবে এবং শুধু সূরা ফাতিহা পড়বে। যদি কেউ জোহরের তৃতীয় ও চতুর্থ রাকআতে মাঝে মধ্যে
সূরা ফাতিহা সহ অতিরিক্ত অন্য কোনো সূরা পড়ে তাতে কোনো অসুবিধা নেই। কেননা আবু সা'ঈদ খুদরী রাদিয়াল্লাহু আনহু কর্তৃক নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত হাদীসে এমনটি প্রমাণিত। অতঃপর মাগরিবের সালাতের তৃতীয় রাকাত এবং জোহর, আসর ও এশার সালাতের চতুর্থ রাকআতের পর তাশাহহুদ পড়বে, যেমনটি দু'রাকা'আত বিশিষ্ট সালাতের ক্ষেত্রে ইতিপূর্বে উল্লেখ করা হয়েছে। অতঃপর ডানদিকে ও বামদিকে সালাম ফিরাবে। (সালামের পর) তিনবার "আস্তাগফিরুল্লাহ্" (আমি আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করছি) পড়বে। অতঃপর বলবে: (اللهم أنت السلام ومنك السلام تباركت يا ذا الجلال والإكرام) উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা আনতাছ ছালামু, ওয়া মিনকাছ ছালামু, তাবারাকতা ইয়া যাল জালালি ওয়াল ইকরাম।
"হে আল্লাহ! তুমি শান্তি দাতা, আর তোমার কাছেই শান্তি, তুমি বরকতময়, হে মর্যাদাবান এবং কল্যাণময়।" ইমাম হলে মুসল্লিদের দিকে মুখ ফিরানোর পূর্বেই এই দোয়া পড়বে। অতঃপর পাঠ করবে: « لا إلهَ إِلَّا اللهُ وَحْدَهُ لا شَرِيكَ لَهُ : لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ -
اللَّهُمَّ لَأَمَانِعَ لِمَا أَعْطَيْتَ وَلَا مُعْطِيَ لِمَا مَنَعْتَ وَلَا يَنْفَعُ ذَا الْجَدَّ مِنْكَ الْجَدُّ لَاحَوْلَ وَلَا قُوَّةَ إِلَّا
بِاللَّهِ ؛ لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَلَا نَعْبُدُ إِلَّا إِيَّاهُ؛ لَهُ النَّعْمَةُ ولَهُ الْفَضْلُ وَلَهُ الثَّنَاءُ الْحَسَنُ ؛ لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ مُخْلِصِينَ لَهُ الدِّينَ وَلَوْ كَرِهَ الْكَافِرُوْنَ»

উচ্চারণ: লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা-শারীকালাহু, লাহুল মুল্ক ওয়ালাহুল হামদু ওয়াহুয়া আলা কুল্লি শাইইন ক্বাদীর। আল্লাহুম্মা! লা- মানি'আ লিমা 'আতাইতা ওয়ালা মু'তিয়া লিমা মানা'তা ওয়ালা ইয়ানফা'উ যালজাদ্দি মিনকাজ্জাদ্দু। লা- হাওলা ওয়ালা কুওওয়াতা ইল্লা বিল্লাহি, লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু, ওয়ালা না'বুদু ইল্লা ইয়্যাহু, লাহুননি'মাতু ওয়ালাহুল ফাদলু, ওয়ালাহুস সানাউল হাসানু, লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুখলিসীনা লাহুদদীনা ওয়ালাউ কারিহাল কাফিরূন।
"আল্লাহ ছাড়া (সত্য) কোনো মা'বুদ নেই, তিনি একক, তাঁর কোনো অংশীদার নেই, সকল বাদশাহী ও সকল প্রশংসা তাঁরই এবং তিনি সব কিছুর উপরেই ক্ষমতাশালী।
হে আল্লাহ! তুমি যা দান করেছো, তার প্রতিরোধকারী কেউ নেই। আর তুমি যা নিষিদ্ধ করেছো তা প্রদানকারীও কেউ নেই এবং কোনো সম্মানী ব্যক্তি তার উচ্চ মর্যাদা দ্বারা তোমার দরবারে উপকৃত হতে পারবে না। "একমাত্র আল্লাহ ছাড়া আর কারো (দুঃখ কষ্ট দূরিকরণ এবং সম্পদ প্রদানের) শক্তি-সামর্থ্য নেই।"
"আল্লাহ ছাড়া (সত্য) কোনো মা'বুদ নেই। আমরা একমাত্র তাঁরই ইবাদত করি, নিয়ামতসমূহ তাঁরই, অনুগ্রহও তাঁর এবং উত্তম প্রশংসা তাঁরই। আল্লাহ ছাড়া কোনো (সত্য) মা'বুদ নেই। আমরা তাঁর দেওয়া জীবন বিধান একমাত্র তাঁর জন্য একনিষ্ঠভাবে পালন করি। যদিও কাফিরদের নিকট তা অপছন্দনীয়। এবং "সুবহানাল্লাহ” ৩৩ বার, "আলহামদুলিল্লাহ্” ৩৩ বার, "আল্লাহু আকবার” ৩৩ বার পড়বে। আর একশত পূর্ণ করতে নিম্নের দো'আটি পড়বে:
لا إِلَهَ إِلَّا اللهُ وَحْدَهُ لاَ شَرِيكَ لَهُ ؛ لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ وَهُوَ عَلَى كُلَّ شَيْءٍ قَدِيرًا
উচ্চারণ: লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা-শারীকালাহু, লাহুল মুল্কু, ওয়ালাহুল হামদু, ওয়াহুয়া আলা কুল্লি শাইইন ক্বাদীর।
"আল্লাহ ছাড়া (সত্য) কোনো মা'বুদ নেই, তিনি একক, তাঁর কোনো শরীক নেই। সকল বাদশাহী ও সকল প্রশংসা তাঁরই জন্য। তিনিই সবকিছুর ওপর ক্ষমতাশালী।

প্রত্যেক সালাতের পর আয়াতুল কুরসী, সূরা ইখলাস, সূরা ফালাক এবং সূরা নাস পড়বে। মাগরিব ও ফজর সালাতের পরে এই সূরা তিনটি (ইখলাস, ফালাক এবং নাস) তিনবার করে পুনরাবৃত্তি করা মুস্তাহাব; কেননা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে এ সম্পর্কে সহীহ হাদীস বর্ণিত হয়েছে।

এই সমস্ত যিকির বা দু'আ পাঠ করা সুন্নাহ, ফরজ নয়।
প্রত্যেক মুসলিম নারী ও পুরুষের জন্য জোহর সালাতের পূর্বে ৪ রাকাত এবং পরে ২ রাকাত, মাগরিবের সালাতের পর ২ রাকাত, এশার সালাতের পর ২ রাকাত এবং ফজরের সালাতের পূর্বে ২ রাকাত- মোট ১২ রাকাত সালাত পড়া মুস্তাহাব। এই ১২ (বার) রাকাত সালাতকে সুন্নতে রাতেবা বলা হয়; কারণ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উক্ত রাকাতগুলো মুকীম অবস্থায় নিয়মিত যত্ন সহকারে আদায় করতেন। আর সফরের অবস্থায় ফজরের সুন্নাত ও (এশা পরবর্তী) বিতর ব্যতীত অন্যান্য রাকাতগুলো ছেড়ে দিতেন। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সফর এবং মুকীম উভয় অবস্থায় উক্ত ফজরের সুন্নাত ও বিতর নিয়মিত আদায় করতেন।
উত্তম হলো এই সকল সুন্নতে রাতেবা এবং বিতরের সালাত ঘরে পড়া। যদি কেউ তা মসজিদে পড়ে তাতে কোনো দোষ নেই। এ সম্পর্কে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন: "ফরজ সালাত ব্যতীত মানুষের অন্যান্য সালাত নিজ ঘরে পড়া উত্তম।" এই সমস্ত রাকাতগুলো (১২ রাকাত সালাত) নিয়মিত যত্ন সহকারে আদায় করা জান্নাতে প্রবেশের একটি মাধ্যম; কারণ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: "যে ব্যক্তি দিবা-রাতে ১২ রাকাত সালাত (সুনানে রাওয়াতিব) আদায় করবে, আল্লাহ্‌ তা‘আলা তার জন্য জান্নাতে একটি ঘর বানাবেন।" ইমাম মুসলিম তার সহীহ মুসলিম গ্রন্থে হাদীসটি বর্ণনা করেছেন।
যদি কেউ আসরের সালাতের পূর্বে ৪ (চার) রাকাত এবং মাগরিবের সালাতের পূর্বে ২ (দুই) রাকাত এবং এশার সালাতের পূর্বে ২ (দুই) রাকাত পড়ে, তাহলে তা উত্তম; কেননা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে এর স্বপক্ষে বিশুদ্ধ দলীল আছে।
আল্লাহই তাওফীকদাতা। দরূদ ও সালাম বর্ষিত হোক, আমাদের প্রিয় নবী মুহাম্মাদ ইবন আব্দুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম, তাঁর পরিবার-পরিজন ও সাহাবীগণের প্রতি এবং কিয়ামত পর্যন্ত যারা তার অনুসারী তাদের প্রতিও।।।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১২ ই অক্টোবর, ২০২৫ রাত ৮:৩১

নজসু বলেছেন:


আস সালামু আলাইকুম।

১৩ ই অক্টোবর, ২০২৫ ভোর ৫:২০

ইসলাম হাউস বলেছেন: ওয়া আলাইকুমুস সালাম।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.