নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

জীবন যদি মানুষের উপকারে না আসে, সেই জীবনের মূল্য নেই। সবার মাঝে বিলিন হতে পারাই জীবনের স্বার্থকতা। কান্না নিজের জন্য আর হাসি সবার জন্য।

ইসমাঈল আযহার

মেইল[email protected], স্বপ্ন দেখি শুদ্ধ মানুষ হওয়ার, সোনার বাংলা গড়ার। শখ, লেখালেখি, ঘুরে বেড়ানো। সঙ্গি বই। ভালবাসি মাকে, নিজেকে, আমার বাবাকে।

ইসমাঈল আযহার › বিস্তারিত পোস্টঃ

রক্তপান, দূর্ভেদ্য রহস্য

২০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৫:৩২


আদিম যুগের বড়সড় দু’রুমঅলা মাটির একটি দোতলা বাড়ি। বাড়িটির জানালা আছে , পাল্লা নেই। দরজা আছে, কপাট নেই। পথ হারিয়ে কীভাবে যেন ঘন জঙ্গলের এ বাড়িটিতে এসে পড়েছি। সূর্য ডুবতেই মনে হল, বেশ গভীর রাত। এক রুম ফাঁকা পড়ে থাকে। আর এক রুমে থাকে খুনখুনে এক বুড়ি। তার আত্বীয়-স্বজন, নাতি-পুতি সব মারা গেছে, শুধু সে একা বেঁচে আছে। আমার মনে হল, এই বুড়িকে ঘিরে লুকিয়ে আছে ভয়ংকর কোন রহস্য। মন চাইল ফিরে যাই। কিন্তু বুড়ির পিড়াপীড়িতে থাকতে বাধ্য হলাম। জায়গাটা নাকি ভাল না। সন্ধ্যার পরপরই ডাকাতদল বেরিয়ে পড়ে।
যাকে সামনে পায় তাকেই খুন করে। মানুষ খুন একরকম এদের অভ্যাস বনে গেছে। টাকা-পয়সা হাতিয়ে নেওয়া মেইন বিষয় না। ঘরের এক কোণে ভাঙ্গা খাট পড়ে আছে। ছেঁড়া একটা কাঁথা বিছানো। আজকের রাত আমাকে গুহার মতো এ ঘরটিতেই কাটাতে হবে। শুতে হবে ময়লাযুক্ত ভাঙ্গা চৌকিটাতে। মাত্র একটি রাতই তো। কী আর হবে? সবকিছু মেনে নিলাম। ঘরে কোন বাতি নেই। সন্ধ্যার সঙ্গে সঙ্গে চারদিক থেকে কেমন একটা সনসন শব্দ ভেসে আসছে। একটু ভয় ভয় করতে লাগল আমার। বুড়ি দেয়ালের ওপাশ থেকেই বলল‘ ভয় পেওনা বাবা’।
আমি কেঁপে উঠলাম। শিউড়ে উঠল আমার পুরো শরীর। নিশ্চয় বুড়ি কথা বলছে। কী জঘন্য কন্ঠস্বর, জীবনেও এতো বাজে গলা শুনিনি। আর সবচে’ অদ্ভুত ব্যাপার হল, মাটির ভারি দেয়াল ভেদ করে ওপাশের কথা এপাশে চলে আসছে। মূলত তা আসার কথা না। বুড়িটা আসলে মানুষ না অন্যকিছু সে বিষয়ে আমার সন্দেহ খানিক বেড়ে গেল। রাত যত গভীর হয়, পরিবেশ যেন ততই থমথমে, ভয়ংকর রুপ ধারণ করছে। চারিদিকে সুনসান নীরবতা।
কোন সাড়া-শব্দ নেই কোথাও। ওপাশ থেকে বুড়ি কী যেন বলছে আমাকে। বুড়ির সব কথা আমার কানে দেয়াল টপকে স্পষ্ট আসে। সে নিঃশ্বাসের সঙ্গে জড়িয়ে নিজের সঙ্গে যে কথাগুলো বলে তাও আমি শুনতে পেয়েছি। এই প্রথম একটি কথা আমি অস্পষ্ট শুনতে পেলাম। ভয় পেলে না কি মানুষ সবকিছু এলোমেলো শোনে। অনেকে আবার এলোমেলো দেখেও। আমি হয়ত ভয়ের চোটে এলোমেলো শুনছি। ভয় ভীতির সময় পানি খেলে স্বাভাবিক হওয়া যায়, তাই আমি আবছা আঁধারে ঘরের এপাশ ওপাশ দেখছি – পানি আছে কি না।
বুড়ি ওপাশ থেকে বলল ওঘরে পানি নেই। পানির লোটা আমার এখানে। আমার ভয় দ্বিগুণ বেড়ে গেলে। ভয়ে আমি কুকড়ে যেতে লাগলাম। কী করব কিছুই বুঝতে পারছি না। ঘাম ছুটে আমি নেয়ে ফেলার জোগার। হটাৎ আমার পিপাসা লাগে। এতো তীব্র পিপাসা যে মনে হচ্ছে এখনই পিলে ফেটে যাবে । আমি মারা যাব।
মানসিকভাবে আমি মৃত্যুর প্রস্তুতি নিতে শুরু করি। বুড়ির গলা আবার শুনতে পেলাম‘ ভয় নেই আমার এখানে এসে পানি খেয়ে যা’। তার মানে বুড়িটা বুঝে ফেলছে আমি ভয় পাচ্ছি। না ভয়টা চেহারায় লুকিয়ে রাখতে হবে। কিছুতেই বুঝতে দেয়া যাবে না। চুপচাপ বসে আছি ভাঙ্গা খাটের এক কোণে। হটাত একটা আচা ভর্তি পানি নিয়ে বুড়ি আমার ঘরে প্রবেশ করে। ভয়ে আমার চোখ মুখ দিয়ে ঘাম ছুটতে যায়। গায়ের কাপড় যা ছিল ভিজে চপচপ।
বুড়ি এসে স্বাভাবিক গলায় বলল ‘এই নে ধর পানিটুকুন খেয়ে নে’। এ যেন মৃত্যুর আগে আসামির শেষ আশা পূরণ। কাঁপাকাঁপা হাত বাড়িয়ে আমি পানির পাত্রটা নিই। পানির রং তো সাদা। কিন্তু বুড়ি যে পানি আমাকে দিয়েছে তার রং লাল। রক্তের মতো লাল। বুড়ি আমাকে পানি দেয়নি, দিয়েছে রক্ত। প্রবল তৃষ্ণার চোটে আমি সে রক্ত পান করে ফেলি। এক চুমুকে পুরো আচা শেষ করে ফেলেছি অমনি আমার নজর আটকে যায় বুড়ির বাঁ হাতে। তার হাতের তিনটি আঙুলের অর্ধেকটা নেই। বেয়ে যাচ্ছে রক্তের স্রোত। মাথা উঠিয়ে তার চোখের দিকে তাকালাম আর অমনি...।

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ১১:০১

শায়মা বলেছেন: #:-S


এটা কি স্বপ্ন? নাকি বুড়ির তিন আঙ্গুল নাই দেখার পরেই তুমি ভয়ে মরেই গেছো তাই আর বাকীটা লিখতে পারোনি! :(

B:-) B:-) B:-)

২| ২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ১১:১০

ইসমাঈল আযহার বলেছেন: হতে পারে, অনেক কিছুই হতে পারে। যেমন ধরেন,হটাৎ ঘুমটা ভেঙে গেল, আঙ্গুল নেই দেখার পর আর কিছু জানি না, যখন হুশ ফেরে দেখি হাসপাতে, আমি মরে গেলাম। পাঠক এখানে যা কল্পনা করবে আমার সঙ্গে সেটাই.........। :D :D

৩| ০৩ রা আগস্ট, ২০১৯ সন্ধ্যা ৬:০৪

রাজীব নুর বলেছেন: উফফ !!!!!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.