নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

জীবন যদি মানুষের উপকারে না আসে, সেই জীবনের মূল্য নেই। সবার মাঝে বিলিন হতে পারাই জীবনের স্বার্থকতা। কান্না নিজের জন্য আর হাসি সবার জন্য।

ইসমাঈল আযহার

মেইল[email protected], স্বপ্ন দেখি শুদ্ধ মানুষ হওয়ার, সোনার বাংলা গড়ার। শখ, লেখালেখি, ঘুরে বেড়ানো। সঙ্গি বই। ভালবাসি মাকে, নিজেকে, আমার বাবাকে।

ইসমাঈল আযহার › বিস্তারিত পোস্টঃ

করোনা আতঙ্ক, কিভাবে মরব আমরা!

১৯ শে মার্চ, ২০২০ বিকাল ৩:৫৮


দিনের বেলা বাসে চড়া বন্ধ করেছি। রাত দশটার দিকে রাইদার (বাস) জন্য দাঁড়িয়ে ছিলাম। ব্যস্ততার কারণে ৫২ সিটের অনাবিলে চেপে বসি। অর্ধেক মানুষ মাস্ক পরেনি। আমিও তাদের অন্তর্ভূক্ত। মাস্ক ছাড়া একজন যাত্রীর পাশে দূরত্ব বজায় রেখে বসলাম। লোকটি এমনভাবে আমার দিকে তাকাচ্ছে যেন আমি করোনা আক্রান্ত। তিনিও আমার থেকে বেশ চেপে গেলেন। আমাদের দুজনের মধ্যে আরেকজন যাত্রী বসতে পারবে। লোকালবাসের সিট যে এতোটা বড় সেটা এই প্রথম বুঝতে পারলাম। অবশ্য আমার বসতে খুব কষ্ট হচ্ছিল। কিন্তু করোনার আতঙ্ক সেটা বুঝতে দেয়নি।

দু’মিনিটের মাথায় পাশের লোকটা গুণে গুণে দুটো হেক্সি দিল। সঙ্গে সঙ্গে সব যাত্রী বড় বড় চোখ করে তাকালো। অনেকে বুঝতে পারল না কে দিয়েছে। কেউ কেউ আমার দিকে এমনভাবে তাকালো যেন খেয়ে ফেলবে লবণ মরিছ ছাড়া। মন চাইলো ওদের কান ধরে বলে আসি কামটা আমি করিনি।
কোনও একটা বাহানায় লোকটির পাশ থেকে উঠে গেলাম। হেক্সি দেয়ার পর যতক্ষণ লোকটির পাশে বসে ছিলাম দম যেন বন্ধ হয়ে আসছিল। কেন জানি মনে হচ্ছিল করোনা আমার শরীরে ঢুকবে। ঘুমন্ত যাত্রীরাও তার হেক্সির আওয়াজে জেগে গিয়েছিল এবং চোখ কপালে তুলে তাকিয়েছিল।

উঠে গিয়ে যে লোকটির পাশে বসেছি তিনি মাস্ক পরা। মাস্ক না থাকায় লোকটি আমার দিকে এমন ভাবে তাকাচ্ছে মনে হল, আমি ভীষণ বড় কোনও অপরাধ করেছি। আমার থেকে লোকটির নির্ঘাত করোনা হবে এমন একটা ভাব।
তিনি পেটের ভেতর কথাটা আর লুকিয়ে রাখতে পারলেন না। জিজ্ঞেস করলেন, মাস্ক কেনার টাকা নেই আপনার? না থাকলে বলেন। অচেনা কেউ এমন প্রশ্ন করলে কেমন লাগে বলুন তো।
লোকটিকে বেয়াদপ জ্ঞান করে আমি কোনও কথা বললাম না। কিছুক্ষণ পর কি মনে করে যেন পকেটে হাত দিয়ে দেখলাম মানিব্যাগ নেই। মনে পড়ল ওটা বের করে টেবিলে রেখেছিলাম। দ্রুত বাস থেকে নেমে পড়লাম। মনে হলো, করোনার হাত থেকে রক্ষা রক্ষা পেয়েছি। সবখানে এতো আতঙ্ক কেন?
এদিকে বাসায় ফোন করে জানতে পারলাম, গ্রামের দোকানগুলোতে নাকি কিছু পাওয়া যাচ্ছে না। গরীবরা দোকানের আশপাশেই যেতে পারছেন না। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বেড়েছে কয়েক গুণ। একজন বলল, চালের দাম কেজি প্রতি বেড়েছে ১৫ টাকা। মাস্ক হ্যান্ড স্যানিটাইজার হেক্সিসল পাওয়া যাচ্ছে না এগুলো তো পুরানো খবর। চাল ডাল আটা ময়দার দামও এবার চড়া হল। এদিকে সরকারের লোকজন ডাকঢোল পিটিয়ে ঘোষণা দিচ্ছে তারা করোনা প্রতিরোধ করে ফেলতে সক্ষম। পুলিশকে দুটো টাকা আর বিড়ি দিলে নাকি তারা আড়ালে গিয়ে পাহাড়ায় মগ্ন হয়- সেও অনেক পুরনো কথা। একজন বলল, সরকার ইচ্ছে করলে নিত্যপণ্যের অতিমূল্যে বিক্রি রোধ করতে পারে। সবকিছু করার জন্য সদিচ্ছা থাকতে হয়।
আমরা বাঙালিরা করোনায় নয়, না খেয়ে মরে যাবো। করোনায় কতটুকু ক্ষতি হবে সেটা এখন দ্বিতীয় সাবজেক্ট। করোনাভাইরাসের প্রেরিপেক্ষিতে সৃষ্ট পরিস্থিতে কতো মানুষ মারা যাবে ঘুরে ঘুরে আসছে সেটি।
আমাদের দেশ হলো গুজবের দেশ, দুই নাম্বারি না আমরা করি তিননম্বারি। বহির্বিশ্বেরও কিছু দেশে দেখলাম এটা নিয়ে মারামারি লেগেছে। দোকান-পাটে পণ্য নিয়ে মানুষেরা কাড়াকাড়ি করছে। যেভাবে করোনা ছড়িয়েছে তাতে কি করবে বেচারারা। সচেতন হলে করোনাভাইরাস প্রতিরোধ করা যাবে। আমাদের দেশে সচেতন হলে করোনা প্রতিরোধ করা যাবে কিনা প্রশ্ন সাপেক্ষ। তবে নিত্যপ্রয়োজীয় পণ্য মজুদ এবং অতিমূল্যের কারণে মানুষ মরবে এটা শিওর বলা যায়।

মন্তব্য ৫ টি রেটিং +৫/-০

মন্তব্য (৫) মন্তব্য লিখুন

১| ১৯ শে মার্চ, ২০২০ বিকাল ৫:০৭

রাজীব নুর বলেছেন: থাকলাম ঘরে। কিন্তু শ্রমজীবী মানুষগুলোর কী হবে,
যারা দিন আনে দিন খায়!
তাদের দায়িত্ব রাষ্ট্র না নিলে কিন্তু সব প্রচেষ্টা ব্যর্থ ।

২| ১৯ শে মার্চ, ২০২০ বিকাল ৫:১১

নেওয়াজ আলি বলেছেন: নিজে বাঁচুন। পরিবার,সমাজ ও রাষ্টকে বাঁচান। মনে রাখবেন আপনিই আপনার পরিবারের প্রিয় লোকটির হত্যাকারী বনে যাচ্ছেন । তবুও কেন আপনারা চেক আপ করে করোনা পজিটিভ শুনলে হাসপাতাল হতে পালিয়ে যাচ্ছেন। সচেতন হউন। সাবধান হউন।

৩| ১৯ শে মার্চ, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:১২

জুনায়েদ বি রাহমান বলেছেন: দেশের বাস্তব চিত্র।

৪| ২০ শে মার্চ, ২০২০ বিকাল ৩:৫৮

রাজীব নুর বলেছেন: একদিন আমরা সবাই মারা পড়বো এরকম কঠিন ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে।

৫| ২০ শে মার্চ, ২০২০ বিকাল ৫:৫৯

একনিষ্ঠ অনুগত বলেছেন: আতঙ্ক থেকে ফিতনা ফাসাদ বাঁধা এখন কেবল সময়ের ব্যাপার, অথচ সকল ক্ষমতার মালিক আল্লাহ্‌ (রোগ দান ও রোগ সারানোর মালিকও তিনিই, এই বিশ্বাসের উপর আমরা কতটা নিষ্ঠ সময় এসেছে তার পরীক্ষা দেবার।)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.