নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি এক সুপ্ত গোয়েন্দা, মানুষের ভীতরে মনুষ্যত্ব খুঁজে বেড়াই।

ইসমাম মাহমুদ

ইসমাম মাহমুদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

রোহিঙ্গাদের উৎপত্তি, বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ ও দেশের সার্বভোমত্ত্ব ধ্বংসের নমুনা চিত্র । ( দ্বিতীয় অংশ)

২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৫:১৮

চলমান সহিংসতায় বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে প্রায় ৩ লাখ ৭০ হাজার রোহিঙ্গা । যা কাগজে কলমে হিসাব। কিন্তু ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা সব রোহিঙ্গাদের হিসেবে সংখ্যা দাঁড়ায় প্রায় ৪ লাখেরও বেশি। কক্সবাজারের উখিয়া থেকে শুরু করে টেকনাফের শাহ পরীর দ্বীপ পর্যন্ত যদি আপনি ঘুরে দেখেন চারদিকে শুধু রোহিঙ্গা শরনার্থী ক্যাম্প চোখে পড়বে।


কক্সবাজারে উখিয়া উপজেলায় কুতুপালং এ যে বাজারটি আছে সেটাকে এখন রিফিউজি বাজার কিংবা রোহিঙ্গা বাজার বলে। পুরো বাজারে অর্ধেক জুড়ে বেশির ভাগ রোহিঙ্গাদের দোকান। কুতুপালং এর আশেপাশে বিস্তৃত পাহাড় কেটে অবৈধ ভাবে গড়ে উঠেছে আরো অনেক শরনার্থী ক্যাম্প। এই ছাড়া রামু, বান্দরবান , চট্টগ্রাম সহ আরো দেশের আনাছে কানাছে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে আরো লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা। রোহিঙ্গাদের জনসংখ্যার বৃদ্ধির হার এতটাই বেশি যে আগামী পাঁচ বছরে এই সংখ্যা স্থানীয় জনগোষ্ঠীর দ্বিগুণ হয়ে যাওয়ার আসংখ্যা আছে। কারণ তাদের প্রত্যেকরি একাদিক বউ আর গড়ে ৯-১০ জন করে সন্তান আছে।

১৯৪৭ সাল থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত হিসেব করলে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গার সংখ্যা প্রায় ১০ লাখেরও বেশি। আপনি হয়তো প্রশ্ন তুলতে পারেন এত বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে যদি এসে থাকে তাহলে বাকীরা কোথায়?

স্থানীয় লোকজন নিজেদের স্বার্থ সিদ্ধির জন্যই রোহিঙ্গাদেরকে বাংলাদেশে বৈধতার নানান কাগজ পত্র তৈরিতে সহায়তা করে। রাজনৈতিক নেতাদের পকেট একটু গরম করে দিতে পারলেই জন্ম সনদ, নাগরিক সনদ এই সব বৈধতার কাগজ তারা সহজেই পেইয়ে যাচ্ছে। এই সব জনপ্রতিনিধিদের কাছ থেকে বৈধতার সনদ নিতে নিতেই তারাই একসময় সেখানকার স্থানীয় জনপ্রতিনিধি হয়ে যায়। ভোটার তালিকায় রোহিঙ্গা চিহ্নিত করতে গিয়ে এমনি একজনের নাম উঠে আসে যিনি টেকনাফ ইউনিয়ন পরিষদের সম্মানিত সদস্য। যার মাধ্যমে অনেক রোহিঙ্গা শরনার্থী আজ বাংলাদেশের নাগরিক। ২০০৮ সালে টেকনাফ উপজেলায় ভোটার হন ১ লাখ ১১ হাজার ৯শত ৮৪ জন। ২০০৯ সালে ভোটার তালিকা হালনাগাদে নতুন ভোটার আবেদন করেন ৭ হাজার ৮শত ৯৭ জন। কিন্তু তার মধ্যে ৪ হাজার ৪শত ৫৮ জনের আবেদন বাতিল করে দেওয়া হয়। কারণ যাচাই বাছাই করে দেখা যায় তারা সবাই রোহিঙ্গা, অথচ বাংলাদেশের নাগরিক। ২০১৪ সালে পুনঃ ভোটার তালিকা হাল নাগাদ হলে আরো ৬২ হাজার ৫শত নয়টি আবেদন জমা পড়ে। যার মধ্যে ৪৮ হাজারেও বেশি আবেদন নাকচ করে দেওয়া হয়। কারন তারা সবাই মায়ানমারের নাগরিক।

বাংলাদেশ থেকে বিদেশে পাড়ি দেওয়ার জন্য ট্রানজিট হিসেবে রোহিঙ্গাদের জন্য এই দেশ ছিলো একটা লোভনীয় স্থান। শরনার্থী ক্যাম্পে থেকে বিভিন্ন এনজিও এর মাধ্যমে মধ্যপ্রাচ্য সহ ইউরোপের আরো অনেক দেশে তারা যেতে পারতো। কিন্তু সেটা ছিলো খুবই কম। সেই লোভে দেশে আরো এমন অনেক রোহিঙ্গা প্রবেশ করেছে যার জন্য দেশের জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার আরো বেড়েছে। বাংলাদেশে যেখানে জনসংখ্যা বৃদ্ধির সমস্যাটা প্রকট সেখানে রোহিঙ্গারা সেটাকে দ্বিগুণ করে তুলেছে। বাংলাদেশের মানুষ যেখানে প্রবাসে গিয়ে হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রম করে অর্থ উপার্জন করতে হিমশিম খেয়ে যাচ্ছে সেখানে রোহিঙ্গারা বাংলাদেশ থেকে পাসপোর্ট নিয়ে তাদের উপর কাজের ভাগ বসিয়ে যাচ্ছে।

রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে কমন অভিযোগ তারা এদেশে এসে অপরাধমূলক কর্মকান্ডে জড়িয়ে পড়ছে।কক্সবাজারে প্রায়ই এরা নানা অপকর্ম করে বলে পত্রিকা টিভিতে দেখতে পাই।এদের বিরুদ্ধে খুব কমন অভিযোগ হচ্ছে ইয়াবা ব্যবসা।বাংলাদেশে ইয়াবার প্রবেশ ও বিস্তার কিন্তু এসব রোহিঙ্গাদের হাত ধরেই। শুধু মাদক ব্যবসাই নয়,চোরাচালানেও এরা সিদ্ধহস্ত বলে শুনতে পাই।

শুধুমাত্র বাংলাদেশেই নয়, মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতেও এরা নানা রকম অপরাধমূলক কর্মকান্ডে জড়িয়ে পড়ছে।রোহিঙ্গা বা মধ্যপ্রাচ্য- কোনটাই আমাদের বিবেচ্য বিষয় হওয়া উচিত নয়। কিন্তু আমাদের এসব নিয়ে ভাবতে হচ্ছে। কেননা এই রোহিঙ্গারা মধ্যপ্রাচ্য যাচ্ছে বাংলাদেশী পাসপোর্ট ব্যবহার করে।ফলে তাদের এসব অপকর্মের জন্য আন্তর্জাতিক বিশ্বে নাম খারাপ হচ্ছে বাংলাদেশ আর বাংলাদেশী শ্রমিকদের।ফলশ্রুতিতে বাংলাদেশ হারাচ্ছে তার শ্রমবাজার।যার প্রভাব পড়ছে আমাদের অর্থনীতিতে।
সুতরাং নতুন শরনার্থীকে আশ্রয় দেয়ার পুর্বে মানবিকতার সাথে সাথে বাস্তবতার এইসব দিকও খেয়াল রাখতে হবে।কেননা এদের পূর্বসুরীরা যা করে গেছে-এরাও সেই পথে হাটবে-এই সম্ভাবনাই বেশী।

এ প্রসংগে একটা বিখ্যাত বানী মনে পড়ে গেল।কোন এক বিখ্যাত মনিষী বলেছিলেন, অন্যের উপকার কর, তবে নিজের ক্ষতি করে নয়। আমাদেরও এই কথাটা কোনভাবেই ভুলা উচিত নয়।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.