আমাদের দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা আরো উন্নত হওয়া দরকার।

০৩ রা অক্টোবর, ২০১৭ দুপুর ১২:৫৮

বিশ্বের সব কটি দেশের মধ্যে ফিনল্যান্ডের শিক্ষা ব্যবস্থা অন্যতম। আর সেই দেশের শিক্ষার হার শতভাগ। সাত বছর বয়স পর্যন্ত ফিনল্যান্ডে শিশুদের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা বা ফর্মাল এড্যুকেশান দেয়া হয়না।ততদিন পর্যন্ত ছেলেমেয়েদের অনেকেই Day-Care এ থেকে খেলাধূলা, গান, কথোপকথনের মাধ্যমে শেখে। অথচ আমাদের দেশে একটু ভালো করে মুখ ফুটে আব্বু আম্মু বলতে শিখে গেলেই বাবা বাজারের লাইব্রেরী থেকে অ-তে অজগর আর ক-তে কাক ওয়ালা আদর্শলিপি এনে শব্দ সম্ভার মুখস্ত করাতে থাকে।

আমাদের দেশে কেজি স্কুল গুলোতে বাবা কিংবা মা-কেও সন্তানের সাথে স্কুলে এসে ক্লাস করতে হয়। আর ফিনল্যান্ডের বেশিরভাগ শিক্ষার্থীই এমনকি সবচেয়ে ছোটরাও সাইকেলে চালিয়ে স্কুলে আসে।স্কুলে ছেলেমেয়েদের তুলনামূলক কম সময় থাকা লাগে আর হোমওয়ার্কও কম দেয়া হয়। কিন্তু আমাদের দেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় ক্লাসের চাইতে হোম ওয়ার্ক বেশি।

আপনি জানলে অবাক হবেন, যেখানে আমাদের দেশে প্রতি ঘণ্টা ক্লাস শেষে বেল পড়তেই অন্য সাব্জেক্টের স্যার এসে হাজির হয় সেখানে ফিনল্যান্ডে প্রতি একঘণ্টা ক্লাসের পর ১৫ মিনিট ক্লাসের বাইরে গিয়ে খেলাধূলা করা বাধ্যতামূলক। মুক্ত বাতাস,প্রকৃতি আর শারীরিক কসরতকে শেখানে শিক্ষার্জনের মূল চালিকা হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

যেখানে আমাদের মুখস্ত বিদ্যা শিক্ষার প্রভাবে ব্রেইন এফেক্টড হয় ছাত্র-ছাত্রীদের সেখানে তাদের দেওয়া হয় প্র‍্যাকটিলি শিক্ষা। এই ধরুন কোন এক বিকেলে একটি মানচিত্র আর কম্পাস দিয়ে স্টুডেন্টদের জঙ্গলে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। তাদের কাজ হচ্ছে ওগুলো ব্যবহার করে নিজ দায়িত্বে সেখান থেকে ফিরে আসা!"

আমাদের দেশে স্কুল কলেজের ক্লাস হয় ৫-৬ ঘন্টা।একজন শিক্ষার্থীর যেতে-আস্তে সময় লাগে ১ ঘন্টা। তারপর প্রতিদিন ২টা করে কোচিং ক্লাস বা টিচার/প্রাইভেট ক্লাস এর জন্য ১.৩০ঘন্টা+১.৩০ঘন্টা=৩ঘন্টা।যেতে-আস্তে সময় লাগে ১-১.৩০ ঘন্টা।তাহলে মোট ঘন্টা দাড়াল ১১-১২ ঘন্টা।একটা মানুষের ঘুম দরকার ৬-৮ঘন্টা।তাহলে মত গেল ১৮-২০ ঘন্টা মত।বাকি থাকে ৪ ঘন্টা।বাড়িতে থাকতে,খাওয়া-দাওায়া,পড়াশোনা,গোসল,পরিবার এর সাথে গল্প,টিভি দেখা।আর আনুসঙ্গিক কাজ করতে লাগে আরো বেশি সময়।কিন্তু ২৪ ঘন্টায় একদিন......!!৩৪ ঘন্টায় নয়......!!

আমরা সবাই জানি সব মানুষের ভিতর আলাদা আলাদা প্রতিভা লুকিয়ে রয়েছে।এবং তা নিয়মিত চর্চা করা অবশ্যই দরকার। ফিনল্যান্ডে প্রতিটা শিক্ষার্থীর চাহিদা অনুযায়ী তাদের প্রতিভা বিকাশের জন্য এক্সট্রা সময় দেওয়া হয়। যাতে তারা পড়া লেখার পাশাপাশি নিজের সুপ্তোত্থিত প্রতিভাকে বিকশিত করতে পারে। ''স্টিভ জবসন'' একটা ইউনিভার্সিটিতে তার বক্তব্যে বলেছিলেন সবাই যেন নিজের প্রতিভা কে খুজে বের করে।এবং সেই কাজই তিনি করতে বলছেন যে কাজের জন্য তারা উপযুক্ত।

তাহলে আপনার-ই বলুন ১ম-১২ম শ্রেনী পর্যন্ত আমরা এতগুলা বই মুখস্ত করে আসছি।কোন কিছু আধা বুঝি তা আরেকটা আধা বুঝে আসছি।ক্লাসের স্যারদের ফালতু বক বক লেকচার শুনে আসছি,যা আমাদের বাস্তব জীবনে কোন প্রয়োগ নেই,কাজে লাগে না, টিচারদের বাসায়/কোচিং-এ দৌড়া-দৌড়ি করি তাহলে আমাদের সেই সমায়টা কোথায় যখন আমরা আমাদের প্রতিভার চর্চা করব?

ঘুম থেকে উঠেই কিছু খাওয়া হোক আর না হোক সকাল সকাল স্কুলের জন্য দৌড়াদৌড়ি। যার জন্য ছেলে মেয়েরা মক্তবে গিয়ে কোরআন শিক্ষা পর্যন্ত নিতে পারছে না।

০ টি +০/-০