নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি এক সুপ্ত গোয়েন্দা, মানুষের ভীতরে মনুষ্যত্ব খুঁজে বেড়াই।

ইসমাম মাহমুদ

ইসমাম মাহমুদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

ব্যাচেলর জীবনের দৈনন্দিন কাজ!!

০৫ ই অক্টোবর, ২০১৭ বিকাল ৪:৫৫

ভোর আট’টা। মোবাইলের এলার্ম বেজে চলেছে অনায়েসেই। ক্রিং ক্রিং ক্রিং.........
এলার্ম টোনে বিরক্ত হয়ে কানে বালিশ চেপে পুনরায় ঘুমানোর ব্যর্থ প্রচেষ্টা। কিন্তু এলার্ম বেজে চলছেই অনর্গল, অবশেষে এলার্ম বন্ধ করেছি। বন্ধ করে আবার ঘুম। ঘুম কাতুরে ভাব নিয়ে উঠে দেখি নয়টা বেজে গেছে। কিন্তু চোখ জোড়া যেন অনেক দিনের উপোষ, টানা হয়তো এক বছর ঘুমালেইও এই চোখের ঘুম ক্ষুধা মিঠবে না।
ইশ, অফিসে আজকে আবার লেইট। আবার সেই ম্যানেজার স্যারের বখুনি। আর ভাল্লাগেনা।

ব্রাশ কই? গতকাল ব্রাশ করে কোথায় ফেলে রেখেছি ঠিক মনে নেই। আরে দূর, ব্রাশ করা লাগবে না। অপশনাল হিসেবে দাঁতের মাজন আছে তো! দাঁত মাজতে মাজতে বাথরুমে গিয়ে দেখি ব্রাশ সাবানের কেইসে পড়ে আছে। কিছুই মনে থাকে না আমার। কোন রকম এক বালতি পানি গায়ে ঢেলে গোসল সেরে নিয়েছি , সাবান নেই আজ দুই দিন। আনবো আনবো করে আনায় হয় না, আসলে সত্যি কথা বলতে মনেই থাকে না। গত দুই দিন ধরে পড়া জিন্স প্যান্টটাতে বডি স্প্রে মেরে কোন রকম সুগন্ধ যুক্ত করে পড়ে নিলাম, শার্টটা আবার ধুয়ে আয়রন করিয়ে রেখেছিলাম স্প্রে করার পর আরো সুগন্ধময় লাগতেছে। শুঁকে দেখলাম,আহ! কি সুঘ্রাণ।
কি করবো বলুন, জিন্স প্যান্ট ওয়াশ করতে আমার এত যে কষ্ট লাগে বলে বুঝাতে পারবো না। আর কাপড় ওয়াশ করতে গেলে আমি রিয়ালাইজ করি, আমার একটা বিয়ে করা দরকার। এত কষ্ট আর সহ্য হয় না।

অনেক দেরি হয়ে গেছে, নাস্তা করার মত সময় হাতে নেই। অফিসে গিয়েই নাস্তা করতে হবে। অফিসে এসেই দেড়িতে আসার জন্য একবার কথা শুনতে হবে। আমার আবার অভ্যাস হয়ে গেছে।
অফিস! অফিস মানেই জ্বি স্যার, জ্বি স্যার। ৯টা-৫টা কাগজ-কলম, ফাইল-পত্র, কম্পিউটার-ইমেল কত কি। এই অফিস জীবনে ঘর সংসার বলে কিছু নেই। অফিস মানে অফিস, শুধুই নিয়ম আর নিয়ম। এখানে স্থান নেই আবেগ অনুভূতির। আবেগ অনুভূতি সব সকাল ৯টার আগে আর বিকাল ৭টার পর। ব্যক্তিগত কোনো কিছু অফিস টাইমে নয়— এটাই রীতিনীতি। সারাদিন যত কিছুই করি না কেন, একটা কিছু ভুল হলেই সব ভালোর উপরে দাগ লেগে যাবে। দিন শেষে ক্রেডিটের খাতা শূন্য।

অফিস থেকে বেড়িয়ে সোজা বাজারে যেতে হয়। দুই দিন এক তরকারি বিরক্ত লাগে। যেদিন বাজার করি না সেদিন ডিম ভাজি আর ডাল কপালে জুটে। বাজার শেষে রান্নাবান্নার জন্য গতকালের পাতিল গুলো ভালো করে পরিষ্কার করতে হবে। হুম, আমার বাসায় বুয়া নেই। কারণ নিজে রান্না করে খেতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করি। পিঁয়াজ কাটতে কাটতে চোখ দিয়ে পানি গড়িয়ে গেঞ্জি ভিজে যায়, কেউ দেখলে মনে করবে বাড়ির কথা খুব মনে পড়তেছে তাই কান্না করতেছি। সব কিছু শেষ করতে করতে রাত এগারোটা পার হয়ে যায়। বারোটার দিকে খাইতে বসি। কত কষ্ট করে রান্না করি, তারপর ১৫-২০ মিনিটে খাওয়া শেষ।

বিছানাপত্র ঝাঁড়ু দিতে হয় প্রতিদিনই। কোথা থেকে যে এত বালি আসে জানিনা। ঘুমানোর আগে আবার ফেসবুকে না আসলে ঘুমই আসে না। টাইমলাইনের শোভা পাওয়ার সবার লিখা পড়তে পড়তে কবে যে রাত দুইটা বাজে তার ইয়াত্তা থাকে না। যতো তাড়াতাড়িই ঘুমায় না কেন, ঘুম আসতে আসতে সেই দুইটা বাজবেই। তাই সময় কাটানোর জন্য ফেসবুকের চাইতে ভালো কোন কিছু চোখে পড়ে না। মাঝে মধ্যে মুভিও দেখি। রাত শেষে আবার ভোর, ভোরের সুর্য উদয়ের সাথে সাথে আবার সেই দৈনন্দিন জীবনের কাজ শুরু।

এই হলো আবার ব্যাচেলর জীবন।










মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.