নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি এক সুপ্ত গোয়েন্দা, মানুষের ভীতরে মনুষ্যত্ব খুঁজে বেড়াই।

ইসমাম মাহমুদ

ইসমাম মাহমুদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

আশারফুল ফিরবে সে পুরনো ফর্মে।

৩০ শে অক্টোবর, ২০১৮ বিকাল ৩:১৯

ক্রিকেট ইতিহাসে স্পট ফিক্সিং এর সূত্রপাত ঘটিয়েছিলো পাকিস্তানের অলরাউন্ডার সেলিম মালিক। ১৯৯৪ সালে অস্ট্রেলিয়ার শেন ওয়ার্ন, টিম মে ও মার্ক ওয়াহকে ঘুষ নেয়ার বিনিময়ে বাজে খেলার প্রস্তাব দিয়ে দোষী সাব্যস্ত হন ২০০০ সালে, এরপর পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড সব ধরনের খেলা থেকে তাকে আজীবন নিষিদ্ধ করে। পরে অবশ্য ২০০৮ সালে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হয়। একই সালে জুয়াডির সাথে লেনদেনের দায়ে আজীবন নিষিদ্ধ হয় পাকিস্তানের আরেক অলরাউন্ডার আতা-উর রহমান। পরে অবশ্য ২০০৭ সালে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়।


এরপর যুগে যুগে ম্যাচ ফিক্সিং কিংবা স্পট ফিক্সিং এর সাথে জড়িত হয়েছিলো বিভিন্ন দেশের অনেক নামীদামী ক্রিকেটার। ভারতের মোহাম্মদ আজহার উদ্দিন, অজয় শর্মা, মনোজ প্রভাকর, অজয় জাদেজা, শ্রীশান্ত। এদের কেউ আর জাতীয় দলে ফিরতে পারেনি।


দক্ষিণ আফ্রিকার হানসি ক্রনিয়ে, হার্শেল গিবস ও হেনরি উইলিয়ামস। হানসি ক্রনিয়ে আজীবন নিষিদ্ধ হলেও ছয় মাসের নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে জাতীয় দলের হয়ে হার্শেল গিবস ও হেনরি উইলিয়ামস কিন্তু অনেক ম্যাচ খেলেছেন সেটা আমরা ভালো করেই জানি।


কেনিয়ার মরিস ওদুম্বে জুয়াড়িদের কাছ থেকে অর্থ নেওয়ার জন্য নিষিদ্ধ ছিলো পাঁচ বছর। দলের তথ্য জুয়াড়িদের কাছে দেয়ার জন্য ওয়েস্ট ইন্ডিজের মারলন স্যামুয়েলস নিষিদ্ধ ছিলো প্রায় দুই বছর।


প্রথমে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগের একটি খেলায় ফিক্সয়ের একটি পদক্ষেপের রিপোর্ট করতে ব্যর্থ হওয়ায় জন্য ৩ বছর নিষিদ্ধ হলেও পরে ইংরেজ ঘরোয়া ক্রিকেটে ম্যাচ ফিক্সয়ের জন্য আজীবন নিষিদ্ধ হন নিউজিল্যান্ডের লু-ভিনসেন্ট।
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগের একটি খেলায় ফিক্সয়ের একটি পদক্ষেপের রিপোর্ট করতে ব্যর্থ হওয়ায় জন্য আটারো মাস নিষিদ্ধ ছিলো শ্রীলঙ্কান ক্রিকেটার কৌশল লুকরচ্চি।


২০১০ সালের আগস্টে লর্ডস টেস্টে অর্থের বিনিময়ে ইচ্ছাকৃতভাবে নো বল করার অপরাধে, পাতানো খেলার দায়ে ও ম্যাচ ফিক্সিং এর দায়ে বিভিন্ন মেয়াদের সাজায় নিষিদ্ধ হয়েছিলো পাকিস্তানের সালমান বাট, দানিশ কানেরিয়া এবং সর্বশেষ মোহাম্মদ আমির। মোহাম্মদ আসিফ নিষিদ্ধ হয়েছিলো আজীবন।


২০১৫ সালে মোহাম্মদ আমিরের সাজা শেষ হয়ে গেলে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলার সুযোগ করে দেন চিটাগাং ভাইকিংস ফ্র্যাঞ্চাইজির মালিক আবদুল ওয়াহাব। তখন ভাইকিংসের হয়ে খেলে ১৪ উইকেট নিয়ে তাক লাগিয়ে দিয়ে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের নজর কাটে সে। এরপর ক্রিকেট বোর্ডের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা পূর্বক আবার জাতীয় দলের হয়ে খেলতে শুরু করে মোহাম্মদ আমির। তারপর থেকে তার বোলিং এর মাধ্যমে ক্রিকেট বিশ্বকে চমকে দিচ্ছেন সেটা আর আমাদের অজানা নয়।


বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগের ২০১৩ মৌসুমে ম্যাচ ফিক্সিংয়ে সম্পৃক্ততার অভিযোগে নিষিদ্ধ হন মোহাম্মদ আশরাফুল, যেটা ছিলো ক্রিকেট বিশ্বের কাছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের জন্য কলঙ্কিত অধ্যায়। এর আগে এই দুঃসাহস কেউ দেখিয়েছে বলে মনে হয় না।


লিটল মাস্টার খ্যাত এই ব্যাটসম্যান নিষদ্ধ হওয়ার আগ পর্যন্ত বাংলাদেশে হয়ে টেস্ট খেলেছেন ৬১টি, একদিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছেন ১৭৭টি, ও টি-২০ ম্যাচ খেলেছেন ২৩টি। টেস্টে যথাক্রমে ৬টা শতক ও ৮টা অর্ধশতক নিয়ে তার মোট সংগ্রহ ২৭৩৭ রান। একদিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচে ৩টা শতক ও ২০টা অর্ধশতক নিয়ে তার সংগ্রহ ছিলো ৩৪৬৮ রান। আর টি-২০তে ২টা অর্ধশত সহ ৪৫০ ছিলো তার।


২০০৫ সালের ১৮ই জুন, কার্ডিফে বাংলাদেশ বনাম অস্ট্রেলিয়া ম্যাচের কথা মনে আছে নিশ্চয়! ২১ ওভারে ৭২ নিয়ে ৩ উইকেট হারিয়ে আরেকটা বড় হারের ফাঁদে আটকে ছিলো বাংলাদেশ। সেই ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার সহজ জয়ের অনেক বড় দেয়াল হয়ে দাঁড়িয়েছিলো মোহাম্মদ আশরাফুল। বিশ্বের সেরা বোলিং লাইনআপকে উড়িয়ে দিয়ে ১০১ বলে ১১টি চারে শত রানের ইনিংসটি সেদিন বাংলাদেশকে নিয়ে গিয়েছিল অন্য উচ্চতায়। সেদিন আশরাফুল হয়ে উঠেছিলো বাংলাদেশ ক্রিকেটের রূপকথায় নায়ক।


ক্রিকেট ইতিহাসে এমন অনেক ম্যাচের জয়ের নায়ক কিন্তু এই মোহাম্মদ আশরাফুলই। বলতে গেলে অনেকের কাছে আইকন প্লেয়ারও বটে।


বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড তার বীরত্বের কথা কখনো ভুলতে পারবে না এটা সত্য। তবে ম্যাচ ফিক্সিং করে নিজের ক্যারিয়ারকে যে তিনি হুমকির মুখে ফেলছেন এটার জন্য তাকে শাস্তি ভোগ করতে হয়েছে দীর্ঘ পাঁচ বছর। তার সাজা ভোগ করে আবার ক্রিকেটাঙনে ফিরেছেন তিনি।


আমিরের মতোই মোহাম্মদ আশরাফুলকে দলে নিয়ে আবার আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরার সুযোগ করে দিয়েছেন চিটাগাং ভাইকিংস ফ্র্যাঞ্চাইজির মালিক আবদুল ওয়াহাব। আশা করি তিনি তার ক্যারিয়ারটা আবার নতুন করে গড়ে তুলতে সক্ষম হবেন সেই কামনা করি। চিটাগাং ভাইকিংস ফ্র্যাঞ্চাইজির মালিক আবদুল ওয়াহাব সাহেবকে ধন্যবাদ তিনি প্রতিভা চিনতে পেরছেন।


বাকীটা খেলার উপর নির্ভর করবে।

ধৈর্য সহকারে পড়ার জন্য ধন্যবাদ।

#আশরাফুল_নামা।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.