![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি সমাজ ব্যবস্থাকে ঘৃণা করি না। আমি তাদেরকে ঘৃণা করি, যারা ভালোটা জেনেও মানুষকে সেটা গ্রহণ করতে দেয় না। সমাজকে লুটে-পুটে খাওয়া যাদের চিন্তা ভাবনা।
আচ্ছা একটা মানুষ কতটা বিষয়ে দক্ষ হতে পারে?
একজন মানুষের একটা বিষয় গভীর জ্ঞান রাখা ভালো, নাকি অধিক বিষয় হালকা হালকা জ্ঞান রাখা ভালো?
উত্তর দিতে আজকে আমি আসি নি। আমার জীবনের চরম কিছু বাস্তবতা উঠানোর জন্য।
আমি এসএসসি পরীক্ষার আগে নাকি উন্মাদ হয়ে গেছিলাম। কারণটা আর কেউ না জানলেও আমি জানি।
আমার সব থেকে বড় দোষ, আমার কোন বিষয় হালকা হালকা জানতে ভালো লাগতো না। একটা বিষয়ে পরিষ্কার ধারণা পেতে ভালো লাগতো।
আমি অনেক পড়তাম, কিন্তু বেশির ভাগই ছিল আমার পাঠ্যপুস্তক বহির্ভূত।
কেন জানি আধুনিক প্রযুক্তি আমাকে খুব টানতো। কেন এটা হয়, কেন এটা হয় না, এটা কীভাবে হয়!?
এগুলো আমার জানতে ইচ্ছা করতো।
মানুষের মন একেক জনের একেক রকম, এটা বুঝতে ইচ্ছা করতো।
পৃথিবীর সবাই যে ভিন্ন কিছু জিনিস পছন্দ করে, ভিন্ন কিছু জিনিস জানতে চায়, হতে চায় এটা আমার ভালো লাগতো।
কিন্তু অবাক হতাম, যখন দেখি এইচ,এস,সি সাইন্সে ভর্তি হয়ে পাঠ্য বইয়ের চাপে, কেউ অন্য কিছু ভাবার সময় পেত না, অন্য কিছু করার সময় পেত না।
আমি অবশ্য মাঝে মাঝে ভাবতাম, এরা যারা ভালো ফলাফল করবে, সবাই হয়তো একদিন বৈজ্ঞানিক হবে। কারণ আমার বন্ধুরা বিজ্ঞান অনুষদ ছাড়া কল্পনা করতো না।
কেন জানি আমার কাছে মনে হতো, পড়াশোনার চাপ যদি একটু কম হতো তাহলে হয়তো এই অবুঝ বাচ্চাগুলো, তার ভবিষ্যৎে কি হওয়া উচিৎ, কোনটা তার পছন্দ, কোনটা তার ভালো লাগে, এগুলো নিয়ে সে ভাবতে পারতো।
আমার আসলে এতো পড়াশোনা ভালো লাগতো না। চারপাশের মানুষের সাথে মিশে, জানতে ইচ্ছা করতো, যে আসলে আমি কি চাই? আমার জন্য পৃথিবীতে আমার জন্য আসলে কোন জিনিস!
আমাকে নিয়ে অন্যরা কেন ভাববে, আমি কি হবো। আমি যে জিনিসটা করবো সেটাতো আমার মন থেকে চাইতে হবে। সাথে সাথে আরেকটা জিনিস ভাবতাম, সেটা যেন আমাকে, আমার থেকে দূরে না নিয়ে যায়।
আমি সবথেকে বেশি অবাক হয়েছিলাম, ঢাকাতে যখন কোচিং করতে আসছিলাম। বেশির ভাগ সাইন্সের ছেলে দেখতাম মেডিকেল ভর্তির জন্য কোচিং করতো আবার ইঞ্জিনিইয়ারিং ভর্তির জন্যও কোচিং করতো।
একদিন একটা ছেলেকে খুব জিজ্ঞাসা করতে ইচ্ছা করলো, কেন এটা?
আমি বললাম, তুমি কি হতে চাও?
সে বললো, মেডিকেল বা ইঞ্জিনিইয়ারিং যেটাতে চান্স পাবো, সেটা হবো আমি। ঐ দিন রাতে আমার ঘুম হয় নি। যে আসলে আমরা কি চাই? আমাদের কি করা উচিৎ?
আচ্ছা যে ছেলে ইঞ্জিনিয়ার হবে, সে আবার মেডিকেল কোচিং করবে কেন। নাকি তাকে জোর করে করানো হয়!!
আচ্ছা ইঞ্জিনিয়ার হতে কি বুয়েট, কুয়েট, রুয়েট বা চুয়েট ই সব। ডোম-ইন্নো বিল্ডারস এর মালিক বুয়েট এর কতো তম ব্যাচ আমার জানা নেই। স্টিভ জবস কোন ইউনিভার্সিটিতে পড়ছিল তাও আমি জানি না।
আমার কাছে মনে হয় ইঞ্জিনিয়ার হতে তো প্রাক্টিকাল নলেজ লাগে, তাহলে শুধু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বড় ফ্যাক্ট হয় কেন?
একজন কি প্রাতিষ্ঠানিক পড়াশোনা ছাড়া কারিগরি দক্ষ হতে পারে না, অর্থাৎ ইঞ্জিনিয়ার হতে পারে না।
আচ্ছা ইঞ্জিনিয়ার বা কারিগরি দক্ষতাটা আসলে কি,
ইঞ্জিনিয়ারের আবিধানিক অর্থ হল প্রকৈাশলী বা সুদক্ষ ও প্রশিক্ষিত ইঞ্জিন চালক। অর্থাৎ যে তার কাজ কোনটা কীভাবে করতে হয় বা একটা কাজ কোন জায়গা থেকে শুরু করে কোন জায়গায় শেষ করা উচিৎ সেটার উপর বিস্তর জ্ঞান রাখা।
এখন কেউ যদি এই জ্ঞান প্রাতিষ্ঠানিক ভাবে না পেয়ে, নিজে নিজে অনেক শ্রম দিয়ে বাংলা বা ইংলিশ ব্লগ বা কমিউনিটি থেকে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার চেয়েও অনেক ভালো মানের অর্জন করে নিজের ক্যারিয়ার গড়তে পারে, তাহলে আমাদের সমস্যা কোথায়?
এদিকে আমাদের দেশের সম্মানিত ফ্রিল্যাঞ্চারদের কথা বলা যায়। এরা বেশির ভাগই প্রাতিষ্ঠানিকভাবে কম্পিউটার সাইন্স না পড়লেও, কম্পিউটার প্রোগ্রামিং এ অনেক গভীর এবং স্বচ্ছ ধারণা রাখে এবং তাদের পার্সোনাল ক্যারিয়ার অন্য অনেক জবের চেয়ে অনেক গুন ভালো। আমি পার্সোনালি অনেককেই চিনি, তাই বললাম।
তাঁরা কেউ কারও মুখাপেক্ষী না বা চাকরীর জন্য কাউকে ৫ লাখ টাকা ঘুষও দেয় না।
তাহলে সারমর্ম কি বলবেন?
বাস্তব জীবনে কে সফল, কে ব্যর্থ!?
যাইহোক সময়ের বিবর্তনে একটি কবিতা দিয়ে লেখাটা শেষ করলাম-
সাধনা
ছুঁড়ে ফেলো সেই জিনিস
যা তোমার না-
কখনো ছিল না,
হবে কিনা অপ্রত্যাশিত।
গ্রহণ করো সেই সব
যার স্রষ্টা তোমার সত্তা।
যদিও অপূর্ণতাময় জীবনে
আশায় মানুষকে বেঁচে থাকার-
বীজ বপন করে।
যেটার জন্য তুমি যোগ্য,
হয়তোবা তা হবে তোমার সাধনার ফল।
আর সেটার ভেতরই আবদ্ধ
তোমার জাগতিক তৃপ্তি।
-------
©somewhere in net ltd.