নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি রক্ত বন্যা দেখিনি কোথাও,\nদেখেছি চোখের কান্না।\nসে অশ্রু ফোটায় ম্লান হয়েছে\nহীরা, মতি, মণি, পান্না।

মোঃ জাবেদ ভুঁইয়া

আমি রক্ত বন্যা দেখিনি কোথাও, দেখেছি চোখের কান্না। সে অশ্রু ফোটায় ম্লান হয়েছে হীরা, মতি, মণি, পান্না।

মোঃ জাবেদ ভুঁইয়া › বিস্তারিত পোস্টঃ

রুপকথার গল্পঃ টম টিট টট

০৬ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ৮:৫২

Tom Tit Tot



অনুবাদঃ জাবেদ ভুঁইয়া



(ইউরোপিয়ান রুপকথা)



প্রথম প্রকাশ এখানে

কোন এক সময় এখানে এক মহিলা বাস করত । একদিন সে পাঁচটি মাংস শেকছিল ।কিন্তু ওভেন থেকে বের করার পর দেখা গেল এগুলো এতটাই শেকা হয়েছে যে খাওয়া দুষ্কর ।তাই সে তার মেয়েকে ডেকে বললঃ



‘ডার্টার,এগুলো একটু আলমারীতে রেখে দিয়ে যাও তো ।কিছুখন পর নিশ্চয় ফিরে আসবে”



তিনি মূলত এটা বুঝাতে চাচ্ছিলেন যে এগুলো ঠান্ডা হয়ে নিশ্চয় খাওয়ার উপযোগী হবে ।



কিন্তু মহিলার মেয়েটি মনে মনে ভাবল,: ‘ঠিক আছে, যদি এগুলো ফিরেই আসে,তবেই এদের খেতে হবে.’



কিছুখন পর মহিলাটি আবার তার মেয়েকে ডেকে বললেন:যাও তো,ওখান থেকে এক টুকরা মাংস নিয়ে আস.আমি যে বলেছিলাম তার ফিরে আসবে.’



মেয়েটি গেল এবং দেখল সেগুলো আলমারীতে নেই.তাই সে ফিরে এসে বল:না তারা এখনও ফিরে আসেনি.’



‘একটাও না?’ তার মা বলল.



‘তাদের একটাও না,’ উত্তরে সে বলল ।.



‘ঠিক আছে, আসুক আর না আসুক ,’তার মা বলল,”আমাদের এখন খেতে হবে.’



‘কিন্তু মা, তার না আসলেও খাবে কিভাবে?,’মেয়েটি অবাক হয়ে বলল.



‘আমি খেতে পারব,’ সে বলল. যাও, বেছে ভাল দেখে একটা নিয়ে এসো.’



‘ভাল আর খারাপ,’ মেয়েটি বলল, “আমি সবগুলোই খাব ।তবে তারা ফিরে আসার পর’



এ সময় মহিলাটি এক অবাক অবাক কান্ড করে বসল,দৌড়ে দরজার কাছে গিয়ে শুরু করলেন গান:



‘আমার মেয়ে আজকে পাঁচটি মাংসটুকরো খাবে.

আমার মেয়ে আজকে পাঁচটি মাংসটুকরো খাবে..’



এ সময় বাড়ির পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন রাজা ।তিনি গানটি শুনতে পেলেও গানের কথা বুঝতে পারছিলেন না, তাই মহিলা থেমে যেতেই রাজা জিজ্ঞেস করলেন:



‘জনাবা ,তুমি কি গান গাইছিলে?’



মহিলাটি খুবই লজ্জিত হলেন ।তাই তিনি কথা পরিবর্তন করে বললেনঃ:



‘খুলে ফেলেছে,আমার মেয়ে একদিনে পাঁচটি জট কেটে ফেলেছে.

খুলে ফেলেছে,আমার মেয়ে একদিনে পাঁচটি জট কেটে ফেলেছে..’



‘অবাক কান্ড!’ রাজা বললেন,”এরকম কেউ করতে পারে আগে কোথাও শুনিনি তো !.’



রাজা কিছুখন গালে হাত দিয়ে কি যেন ভাবলে ন ।তারপর বললেন: ‘শোন, আমি একজন স্ত্রী খোঁজছি,এবং আমি তাই তোমার মেয়েকে বিয়ে করতে চাই.তবে…..,’ রাজা বলতে লাগলেন, ‘বছরের এগারো মাস ধরে তোমার মেয়ে যা ইচ্ছা খাবে, যা চাবে তাই ই পাবে, রানীর যোগ্য সন্মানই পাবে সে; কিন্তু বছরের শেষ মাসে প্রত্যেকদিন তাকে পাঁচটা করে জট কাটতে হবে আর তা যদি সে না পারে তবে তাকে মৃত্যুদন্ড দেয়া হবে.’



‘ঠিক আছে মহারাজ,’মহিলা বলল



এর পর মহা ধুমধাম করে রাজার সাথে মহিলাটির মেয়ের বিয়ে হয়ে গেল ।



বিয়ের পর মেয়েটি যা ইচ্ছা তাই খায় ,যা চায় তাই পায় ।







কিন্তু সময় যত যাচ্ছে মেয়েটির চিন্তাও বাড়তে লাগল ।কিভাবে সে জট খোলবে ।আসলে সেতো এ সম্পর্কে কিছুই জানেনা ।







যাহোক,একে একে দিন কেটে চলে বছরের শেষ মাসের শেষ দিন ।



রাতে বিছানায় শোয়ে কিছুতেই ঘুম আসছিল না মেয়েটে চোখে ।



সে কিভাবে জট খোলবে



একসময় সে দরজার পাশে বসে মৃদু স্বরে কাঁদতে শুরু করে দিল ।



কিছুখন পর মেয়েটির মনে হল কে যেন আস্তে আস্তে দরজায় আঘাত করছে ।সে ভয় পেয়ে গেল।কিছুখন পর মৃদু পায়ে মেয়েটি দরজার দিকে এগিয়ে গেল ।



দরজা খোলেই সে অবাক হয়ে গেল,কালো বিড়ালের মতো লেজঝুলিয়ে কি যেন একটা দাড়িয়ে আছে:



‘তুমি কাঁদছ কেন?’



হতভম্ব কাটতেই না কাটতেই অদ্ভুত জন্তুটি বলে উঠল ।



‘কি আর বল তুমায়?’ মেয়েটি দীর্ঘশ্বাস ফেলল.



‘যদি কিছু মনে না কর,’অদ্ভুত প্রাণীটি আবার বলতে শুরু করল ।



, তুমি কেন কাঁদছ তা আমাকে খুলে বলতে পার’



‘কি আর হবে বললে !,’মেয়েটি কাঁদতে কাঁদতে বলল ।.



‘তুমি কি তা জাননা,’প্রাণীটি বলল লেজ নেড়ে নেড়ে ।



‘ঠিক আছে,’মেয়েটি ভাবল, কোন ভাল না হোক বললে তো আর ক্ষতি কিছু হবেনা,’। মেয়েটি একে একে মাংসের টুকরো থেকে নিয়ে জট সহ সবকিছু খোলে বলল ।







‘ওকে এই ব্যাপার ।তাহলে দেখ আমি কি করি,’কালোমত জন্তুটি বলল. ‘আমি রোজ সকালে জানালা দিয়ে এসে জট কেটে দিয়ে যাব’



‘তোমাকে এর কি দিতে হবে?’মেয়েটি বলল.



অদ্ভুত প্রাণীটি বাকা করে তাকিয়ে বলল:



‘আমি তোমাকে প্রতি রাতে একটা করে তথ্য বা ক্লু দেব ।আর তার উপর নির্ভর করে তোমাকে আমার নাম বলতে হবে ।,আর যদি না পার তবে তুমি আমাতে পরিণত হবে.’







মেয়েটি ভাবল মাস শেষ হওয়ার আগেই সে অবশ্যই এই অদ্ভুত জন্তুটির নাম বের করে ফেলতে পারবে ।



‘ঠিক আছে ,’ মেয়েটি বলল,



‘আমি রাজি.’









‘ঠিক আছে বন্ধু,’ জন্তুটি বলল, দেখ!আমার লেজটি কিভাবে পাকিয়ে গেছে.



পরের দিন, রাজা মেয়েটিকে একটি কামরায় নিয়ে গেলেন,সেখানে কিছু শুকনো খাদ্য ও কিছু শন এলোমেলভাবে জড়ানো ছিল ।



‘দেখ, এগুলো হল শন’ রাজা বললেন, “এগুলোর জট যদি আজকে রাতের মধ্যে না খোলতে পার তবে মনে রেখ,তোমার মাথা যাবে.’



কথা শেষ করে রাজা দরজা বন্ধ করে চলে গেলেন ।



রাজা যেতে না যেতেই, জানালার কপাটে করাঘাত পড়ল।



মেয়েটি দ্রুত জানালা খোলে বাইরে তাকাতেই সেই অদ্ভুত প্রাণীটাকে দেখতে পেল ।



‘শনগুলো কোথায়?’ সে বলল.



‘এখানেই আছে,’ মেয়েটি শনগুলো জন্তুটির হাতে তুলে দিল ।



: ওকে ,



জন্তুটি শনগুলো হাতে নিয়ে দাড়াল ।একটু নাড়ল ।এবং মূহূর্তেই পাঁচটি জট খোলে ফেলল ।



.



‘এইযে নাও,’ মেয়েটির দিকে এগিয়ে দিল সে ।



‘এবার বলো আমার নাম কি?’ জন্তুটি বলল ।.



‘ তোমার নাম….’ মেয়েটি একটু ভাবল.



“Bill…তোমার নাম কি Bill?” মেয়েটি বলল ।



‘না না, এটা না আমার নাম,’জন্তুটি তার লেজকে পুঞ্জিভূত করে বলল ।



. ‘তবে মনে হয় তোমার না Ned ।হয়েছে?’ মেয়েটি আবার বলল ।



‘না না, এটাও না,’জন্তুটি আবার লেজকে পুঞ্জিভুত করে বলল ।



‘ঠিক আছে, আমার মনে হয় তোমার নাম Mark । আমি কি ঠিক বলেছ?’ মেয়েটি বলল ।



‘না না, এটা না ।এবারও হয়নি,’জন্তুটি আবারও শক্ত করে লেজে কুন্ডলি পাকিয়ে তাকে হতাশ করল ।,







সকাল হতেই রাজা এলেন জট খোলেছে কিনা খোঁজ নিতে ।



সেখানে সুবিনস্তভাবে পাঁচটি জট রাজার জন্য খোলাই ছিল ।



. ‘ওহ হো !তুমি আজকে জন বেচে গেলে, প্রিয়তমা,’







এভাবে, প্রতিদিন সকাল-বিকাল রাজা শন আর খাদ্য দিতে লাগলেন আর প্রতিদিনই এই অদ্ভুত জন্তুটি এসে মেয়েটিকে বাচিয়ে দিতে লাগল ।



আর প্রতি রাতে মেয়েটি জন্তুটির নাম খোঁজে পেতে চেষ্টা করতে লাগল ।কিন্তু সে একবারও সঠিক নামটি বের করতে পারছিল না ।.এভাবে ধীরে ধীরে মাসের শেষ প্রায় চলে এলো ।এদিকে ধীরে ধীরে অদ্ভুত জন্তুটির আচরন হিংস্র হতে শুরু করল ।এসময় কথা বলার সময় তার লেজও দ্রুত কুন্ডলী পাকিয়ে যেত ।



অবশেষে মেয়েটির সামনে এলো এক ভয়ঙ্কর রাতট ।এটি ছিল মাসে শেষ দিনের আগের দিন ।



অদ্ভুত জন্তুটি সেদিন রাতে এসে জটটি খোলল এবং জিজ্ঞাসা করল, :



‘কি মেয়ে, তুমি কি আমার নাম খোঁজে পেয়েছ?’



মেয়েটির হৃদয় ধক করে উঠল ।



বললঃ



‘মনে হয় তোমার নাম Nicodemus ?’



‘না না, এটাও না,’জন্তুটি মাথা নেড়ে বলল ।.



‘তবে মনে হয় Sammle?’মেয়েটি বলল ।.



‘নাহ1, হয়নি ‘



‘ও, তবে কি Methusalem ?’ মেয়েটি বলল ।



‘না, এগুলোর একটাও না,” জন্তুটি রাগী ভঙ্গিতে বলল ।



জন্তুটি অগ্নিদৃষ্টিতে তাকিয়ে বলল: ‘মেয়ে, তোমার শুধুমাত্র আর একটা রাত সুযোগ রয়েছে,তারপর তুমি আমার মত হয়ে যাবে!’ বলে উড়ে দূরে মিলিয়ে গেল।







মেয়েটি অত্যন্ত চিন্তিত হয়ে পড়ল ।



এ সময় সে রাজার পায়ের আওয়াজ শুনতে পেল ।



রাজা এসে জটগুলো খোলা দেখে হৃষ্টচিত্যে বলল:



‘চমৎকার, প্রিয়তমা,’ রাজা বললেন ।



. ‘তুমি যদি আর একটি রাত এরকম কাজ করে দেখাতে পার, তবে তুমি বেচে যাবে ।আমি আগামীকাল রাতে তোমার কাছ থেকেই আশা করি.’



রাজা টেবিলের উপর জটপাকানো শনগুলো রাখলেন যেগুলো আজ রাতের মধ্যে মেয়েটিকে খোলতে হবে ।



তারপর তিনি একটা চেয়ারে পা ছড়িয়ে বসলেন ।



তারপর হু হু করে পেট চাপরে হাসতে লাগলেন ।



‘কি হচ্ছে এসব?’ অবাক হয়ে বলল মেয়েটি ।



‘ওহ হো তোমাকে তো বলাই হয়নি,’ রাজা কোন মতে হাসি আটকে বললেন ।



‘আজকে আমি শিকারী গিয়ে একটা আজব প্রাণী দেখেছি, এটা একটা গাছের ডালের উপর বসেছিল ।এরকম প্রাণী আমি জীবনেও দেখিনি ।এমন হাসি পেলনা দেখে ।আমি ভাল করে তাকালাম ।দেখলাম কালচে বিড়ালের মত ।পিটপিটে চোখ ।লেজ কুন্ডলী পাকিয়ে গাছে বসে বেসুরো গলায় গান গাইছে ।.



কি যেন গানটা…. ওহ্যা মনে পড়েছেঃ







‘নিম্মি টিম্মি কিছু যে না

আমার নাম Tom Tit Tot



এটা কেউ জানেনা….’



মেয়েটি কথাগুলো শুনে মনে মনে বেশ খুশী হয়ে উঠল, কিন্তু মুখে টু শব্দটিও করল না ।



‘What’s my name?’ that says, as that gave her the skeins.



পরের দিন অদ্ভুত জন্তুটি যথারীতি এসে হাজির ।



জট খোলেই সে তার নাম জানতে চাইল ।



‘তোমার নাম সোলেমন?’ মেয়েটি খেয়ালি করে বলল । .



‘না, হয়নি’জন্তুটির চোখ চকচক করে উঠল ।খুশির বশে সে লাফিয়ে ঘরের ভেতরেই চলে এলো ।



‘ওকে, তবে মনে হয় Zebedee?’ মেয়েটি আরেকটু ঘাটাতে চাইল ওটাকে ।



‘না ,কখনই না ।হয়নি’ জন্তুটি বলল ।



সে এবার খুশিতে লেজ নাচিয়ে মৃদু মৃদু হাসতে লাগল ।



‘ভেবে বলো, মেয়ে,’ বলল সে



: ‘শেষ ধারনা,তারপর তুমি আমার মত হয়ে যাবে.’



দাঁত কেলিয়ে বলল ওটা ।







মেয়েটি এবার বসা থেকে দাড়ি গেল ।তারপর শিশুদের মত করে বলে উঠল:





‘নিম্মি টিম্মি কিছু না

তোমার Tom Tit Tot.ঠিকনা ?’



শুনেতো অদ্ভুত জন্তুটি সেকি দশা ।চমকে দাড়াতে গিয়ে খেল দেয়ালে ধাক্কা ।মাথা ফুলে পুরো আলু ।তারপর জানালায় আরেক দফা ধাক্কা খেয়ে ছুটে সে দেশ ছেড়ে পালাল দূর বহুদুরে ।



মেয়েটি হাত নেড়ে তার মতলবী বন্ধুটাকে বিদায় জানাল ।



মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ০৬ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ৯:০১

কালোপরী বলেছেন: এ গল্পটা অনেক আগে পড়েছি কিন্তু কোন মোরাল পাইনি

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.