![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সম্প্রতি আফগানিস্থানে তালেবান গোষ্ঠি আমেরিকান দখলদারদের সরিয়ে নিজেরা ক্ষমতায় এসেছে। তাদের এই ক্ষমতায় আসাকে অনেকেই ইসলামিক বিজয় হিসাবে দেখছেন এবং আনন্দিত হচ্ছেন। এই বিষয়ে কিছু বলার নেই কারন এটা যার যার ব্যক্তিগত মানসিক চিন্তা, পড়াশোনা এবং দর্শনের সাথে সম্পর্কযুক্ত। আফগানিস্থানের জনগন যদি সুষ্ঠ পন্থায় তালেবান বা তাদের চাইতেও ভালো বা বর্বর কাউকে রাষ্ট্রক্ষমতায় বসাতো তাহলে তা নিয়ে কারো মাথা ব্যাথা থাকত না। কিন্তু তালেবানদের ভয়াবহ বর্বর অতীত এবং ইসলাম কায়েমের নামে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড তালেবানকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। যদিও একটি বিশেষ শ্রেনীর মানুষ এই সমস্ত দাবিকে পশ্চিমা মিডিয়ার হলুদ সাংবাদিকতা ও পশ্চিমাদের ষড়যন্ত্র হিসাবেই দেখেন। পশ্চিমারা তাদের স্বার্থের জন্য মিডিয়াকে ব্যবহার করেনি এটা যেমন অস্বীকার করা যাবে না তেমনি এই ধরনের কর্মকান্ডকে গণহারে অস্বীকার করলে সেটা হবে অন্যায়।
ব্লগ এবং বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেকেই শরিয়া আইন প্রয়োগ নিয়ে ভীষন উচ্ছসিত। একজন মুসলিম হিসাবে এটাকে সমর্থন করা নিজেদের নৈতিক ও ধর্মীয় পবিত্র দায়িত্ব বলেই তারা ভাবছেন। ফলে তালেবানদের ইসলামি শক্তির ধারক ও বাহক ভেবে বা তাদের কার্যক্রমকে শতভাগ ইসলামি অনুশাসন বা আল্লাহর আইনকে কার্যকর করার শক্তি হিসাবে ভেবে নিয়ে তারা তালেবানের উত্থানে খুশি এবং সমর্থন দিয়ে আসছেন। বলা যায় এই শরিয়া আইন প্রয়োগ করার চেষ্টাই তালেবানদের জনপ্রিয়তার মূল কারন। যুদ্ধাপরাধের মত ঘৃণিত অপরাধ করা স্বত্তেও যদি ধর্মের দোহাই দিয়ে মানুষ জামাতে ইসলামিকে সমর্থন করতে পারে বা পছন্দ করতে, সেই ধর্মের দোহাই দিয়ে তালেবানকে যদি কেউ সমর্থন করেন এতে আদতে অবাক হবার কিছু নেই।
এবার আসা যাক, শরিয়া আইন কি? শরিয়া আইন কি আল্লাহর আইন? নাকি শরিয়া আইন মানুষের বানানো আইন?
শরিয়া আইন বলতে মূলত বুঝানো হয় কোরান ও সুন্নাহর আলোকে একটি সুন্দর জীবন ধারনের পদ্ধতি কোন নির্দিষ্ট আইন নয়। বিভিন্ন সময়ে যখন কোন বিচারযোগ্য কোন ঘটনা ঘটেছে তৎকালীন কাজী বা বিচারকরা চেষ্টা করেছেন নবীর জীবন আদর্শ ও কোরানের সাথে মিল রেখে একটি সমাধান করতে। এই ধারাই পরবর্তীতে যা এক সময় শরিয়া আইন হিসাবে পরিচিতি পায়। সহজ করে বললে এটাই শরিয়া আইন।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে শরিয়া আইন কি আল্লাহর আইন বা আল্লাহর বিধান নাকি?
শরিয়া আইনের পক্ষে বিপক্ষে বেশ কিছু প্রবন্ধ ও বই পড়ার পর আমার ব্যক্তিগত মুল্যায়নে এটাকে আল্লাহর আইন বলার সুযোগ নেই। কারন শরিয়া আইনের অনেকগুলো ধারা কোরানের সাথে সাংঘর্ষিক। আর এই সাংঘর্ষিক অবস্থান সৃষ্টির পেছনে মূল কারন জাল হাদিস।হযরত মোহাম্মদ সাঃ এর মৃত্যুর পর ইসলাম বহুভাবে বিভক্ত হয়েছে। যে মহানুভবতা, সাম্য ও মানবিক সৌন্দর্যের গুনে ইসলাম দ্রুত প্রসারিত হয়েছে, সেই সকল আদর্শ, নীতি, নৈতিকতা বিরোধী অনেক কিছু পরবর্তীতে ব্যক্তিস্বার্থ, রাজনীতি এবং ইসলাম বিরোধী চক্রের ষড়যন্ত্রে ইসলামের অংশ হিসাবে যুক্ত হয়েছে। পাশাপাশি পড়াশোনা, গবেষনা ইত্যাদির মত গুরুত্বপূর্ন বিষয়কে অপব্যাখ্যা দিয়ে সাধারন মুসলমান থেকে দূরে রাখা হয়েছে। ফলে বিভিন্ন জাল হাদিসের ভিত্তিতে অনেক কুপ্রথা ইসলামে অংশ হিসাবে প্রচলিত হয়ে যায়। শরিয়া আইনও ঠিক এমন একটি ব্যাপার।
শরিয়ার উৎস সম্পর্কে ইমাম শাফি ও ইমাম আবু হানিফা উভয়ই পৃথকভাবে দুটো বই লিখেছিলেন। দুটো বইতেই প্রায় ছয় হাজার আইন আছে। আর বাংলাদেশের ইসলামি ফাউন্ডেশনে যে ইসলামিক আইনের বই পাওয়া যায় সেখানে মোট আইনের সংখ্যা দেড় হাজার। অথচ কোরানে আইন বা এই সম্পর্কিত আয়াত আছে মাত্র কয়েকটি এবং হাদিসে আছে আরো অল্প কিছু।
তাহলে বাকি আইনগুলো কোথা থেকে এলো? যদি সেগুলো অন্য কোন উৎস থেকে সংগ্রহ করা হয় বা মানুষের বানানো কোন উৎস থেকে যুক্ত করা হয় তাহলে দাঁড়ায় একটা পুকুরে কয়েক ফোঁটা দুধ ফেলে পুরো পুকুরকে দুধের পুকুর হিসাবে দাবি করার মত। যদি এই লজিক আপনার কাছে গ্রহনযোগ্য মনে হয়, তাহল আপনি শরিয়া আইন বিশ্বাস করুন। আমি এই লজিক বিশ্বাস করি না, তাই শরীয়া আইন নিয়েও আমার অবিশ্বাস আছে।
আমি এই লেখার এই অংশটা প্রখ্যাত লেখক, গবেষক এবং আলেম হাসান মাহমুদের শরিয়ত কি বলে নামক আর্টিকেল থেকে সংগ্রহ করেছি। তিনি ঐ লেখায় আরো লিখেছেন, বিধিবদ্ধ ইসলামি আইনের ৩য় খণ্ডের ৫১ অধ্যায়ের আইনে আছে ১৮৬টা। কিন্তু তার ৩৪৪টা সূত্রের মধ্যে কোরাণ মাত্র ১টা আর সহি হাদিস ১৮১টা। বাকি ১৬২টা সূত্রই কোনো না কোনো মানুষের মতামত মাত্র।
শরিয়া আইনের মূল উৎস হচ্ছে ১১টি ফ্যাক্ট। এগুলো হচ্ছেঃ
১) কোরান -
২) হাদীস বা সুন্নাহ
৩) ইজমা
৪) কিয়াস
৫)প্রাচীন কেতাব
৬) স্থানীয় প্রথা
৭) সামাজিক রীতি-ভিত্তিক আইন, যেটা দেশে-বিদেশে ভিন্ন হতে বাধ্য।
(৮) মওলানাদের স্বাধীন মতামত, এটা কিয়াস-এর কাছাকাছি এবং কিয়াস- এর মতই অবাস্তব,
(৯) জনকল্যাণ, যাতে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন মওলানার বিভিন্ন মতামত হবেই,
(১০) সাম্য, যা সম্বন্ধেও বিভিন্ন মওলানার বিভিন্ন মতামত হতে বাধ্য,
(১১) আগে থেকে যা চলে এসেছে যেমন “ইসলামের আগের যে-সব প্রথাকে ইসলাম উচ্ছেদ করে নাই তাহা শারিয়ায় যোগ করা হইয়াছে”
একটা মজার বিষয় বলি। শরিয়ার ৬ নাম্বার উৎস হিসাবে বিবেচিত স্থানীয় প্রথায় উরফি বিবাহ নামে একটি বিবাহ প্রথা আছে। উরফি বিবাহ মানে হলো কোন রকম দলিল ছাড়া গোপন বিয়ে। অর্থাৎ শরিয়া আইন অনুসারে এই ধরনের বিবাহ বৈধ। আমাদের হেফাজত নেতা মুমিনুল ইসলাম এই উসিলা দিয়েই বিবাহ করেছেন। আশা করি বুঝতে পারছেন, কেন তারা অন্যায় করেও দৃঢ় চিত্তে ব্যাপারটা অস্বীকার করেছেন। অবশ্য উনি স্বীকার করলেও আমাদের এক শ্রেনীর আমজনতা ও এমনকি কিছু ব্লগারাও উনাকে নির্দোষ মানেন। কি লজ্জা!
বিবাহ সম্পর্কে কোরানে বলা আছেঃ
তোমরা তাদের অভিবাবকদের অনুমতিক্রমে তাদের বিয়ে করো, যথাযথভাবে তাদের মোহর প্রদান করো, যেন তারা বিয়ের দুর্গে সুরক্ষিত হয়ে থাকতে পারে এবং অবাধ যৌনচর্চা ও গোপন বন্ধুত্বে লিপ্ত হয়ে না পড়ে।
— সূরা নিসা, আয়াত ২৫
যা প্রমান করে শরিয়া আইন কোরানের সাথে সাংঘর্ষিক। অর্থাৎ গোপন বিবাহের কোন মুল্য নাই। আমাদের রাসুল সাঃ পর্যন্ত বলেছেন, ‘তোমরা বিয়ের বিষয়টি ঘোষণা কর।’
বিয়ের প্রসঙ্গ বাদ দিন। অন্য প্রসঙ্গে আসি। ইসলামের প্রধান চারটি মাযহাবের একটি হলো শাফি'ঈ মাহজাব। যার মতবাদের ভিত্তিতে এই মাহজাব প্রতিষ্ঠিত হয় তাঁর নাম ইমাম শাফি। তিনি আল রিসালা নামে বিখ্যাত একটি বই লিখেছেন। বিভিন্ন শরিয়া আইন নিয়ে তাঁর সাথে মালিকি মাহযাবের প্রতিষ্ঠাতা ইসলামের চার ইমামের অন্যতম মালিক ইবনে আনাসের অনেক ভিন্নমত ছিলো। যেমনঃ ইমাম শাফির আইন অনুসারে অমুসলিমদের কাছে কোরান বিক্রি করা যাবে না। কিন্তু এটা কোরানের সাথে সাংঘর্ষিক। অমুসলিমরা যদি কোরান না পড়তে পারে, তাহলে তাদের জন্য মুসলিম হবার পথটি বেশ কঠিন হয়ে যায়। এই আইন অনুসরন করলে অন্য ধর্মের কেউ তো মুসলিম ধর্মের সৌন্দর্য, নবীগণ এবং আল্লাহ সম্পর্কে জানতে পারবে না। এছাড়া পুরুষ সাক্ষী ও নারী সাক্ষী বিষয়ক অধিকাংশ শরিয়া আইন মিথ্যে, বর্বর, পুরুষতান্ত্রিক এবং অবশ্যই কোরানের সাথে সাংঘর্ষিক।
এখন যৌক্তিক প্রশ্ন হচ্ছে - শরিয়া যদি আল্লাহর আইন হয়, তাহলে কিভাবে তা কোরান ও সুন্নাহর সাথে সাংঘর্ষিক হয়?
এর সহজ উত্তর - শরিয়া আইন ইসলামকে বিতর্কিত করার একটি অন্যতম উপায়। লেখক হাসান মাহমুদের মতে শরিয়া আইন হচ্ছে এক পুকুরে কয়েক ফোটা দুধ ফেলে তাঁকে দুধের পুকুর হিসাবে দাবি করা। আমিও তার সাথে সহমত।
গত কয়েক মাস তথা খুব সাম্প্রতিক সময়ে লক্ষ্য করেছি, আমাদের মধ্যে কয়েকজন আছেন, আছে যারা ইসলামের নামে প্রচলিত বিভিন্ন ভুল জিনিস বা বিতর্কিত জিনিসকে বৈধ করতে দারুন সব যুক্তি তর্ক নিয়ে হাজির হন। ধরেন গেলমান নামক একটি টার্মকে অপব্যাখ্যা করে অনেক হুজুর মাদ্রাসায় পায়ুকাম করেন। আমি বিশ্বাস করি, এর স্বপক্ষে বলার মত যুক্তিও তিনি বা তারা হাজির করতে পারবেন। এটা অবশ্য দারুন একটি প্রতিভা। আমি বিশ্বাস করি, শরিয়া আইনের যে সকল অসংগতি আছে, সেই সব ব্যাপারেও নিশ্চয় কোন না কোন ব্যাখ্যা বা বিবৃতি নিয়ে তিনি বা তারা নাজিল হবেন। একটা সময় আগে এই ব্যাপারটা আমি উপভোগ করতাম, সঠিক যুক্তিতর্ককে সমর্থন দিতাম, কিন্তু সম্প্রতি রুচিটাই নষ্ট হয়েছে।
যাইহোক, শরিয়া আইনের এমন হাজারো ত্রুটি বিচ্যুতি আছে। খোলা মনে জানার আগ্রহ নিয়ে পড়লে যে কেউ এর অসারতা টের পাবে। তাই শরিয়া আইন মানে আল্লাহ আইন বা ইসলামিক আইন এটা এখনও বলা মানে আপনি আপনার ধর্ম, সৃষ্টিকর্তার সাথে প্রতারনা করলেন। আল্লাহ আমাদেরকে সবাইকে বুঝার তৌফিক দান করুন।
০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০২১ রাত ১২:৩৩
জাদিদ বলেছেন: আপনাকে ধন্যবাদ পড়ার জন্য।
২| ০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০২১ রাত ১২:৫২
মোঃমোস্তাফিজুর রহমান তমাল বলেছেন: আপনার পোস্টের পয়েন্টগুলোর সাথে সহমত জ্ঞাপন করছি। কিয়াস নামে আইন প্রণয়নের যে প্রক্রিয়াটি আছে সেখানে মূলত যিনি আইন প্রণেতা তার ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত প্রাধান্য পায়, মানে তার জ্ঞান ,বুদ্ধি, বিচার-বিবেচনা অনুসারে যে সিদ্ধান্ত তার ভালো মনে হয় তিনি সেটাই নিয়ে থাকেন। এই কিয়াসের দোহাই দিয়ে বহু ফতোয়া এই শরীয়াহ আইনে ঢুকে গেছে, যেগুলো আসলেই কুরআন ও সুন্নাহ এর সাথে সাংঘর্ষিক। এখন এখানে একটা প্রশ্ন উঠতে পারে, যারা এসব ফতোয়া দেয় তারা সবাই কি সমাজ,রাষ্ট্র ,রাজনীতি , অর্থনীতি, মানবাধিকার, শিক্ষা ব্যবস্থা এসব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে পর্যাপ্ত জ্ঞান রাখেন? তাদের প্রণয়ন করা আইন এসব বিষয়ে কী প্রভাব রাখবে এগুলো কি তারা বিবেচনায় রাখেন আদৌ?
০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০২১ রাত ১:০০
জাদিদ বলেছেন: কিয়াসের অপব্যবহার নিঃসন্দেহে অনেক ফেতনা ও ইসলাম বর্হিভুত বিষয়কে ইসলামের অন্তর্ভুক্ত করেছে। এই বিষয়গুলো স্বীকার করলে নিজেদের আত্মশুদ্ধি ঘটবে এবং ইসলাম অনেক দায় থেকে মুক্তি পাবে।
দেখেন, একটা কথার কথা বলি - মিডিয়ায় বলা হলো - তালেবানদের শিক্ষামন্ত্রী বলেছেন পিএইচডি, মাস্টার্সের কোন মুল্য নেই। মূলত এই কথাটা তারা বলেছেন নিজেদের সম্পর্কে বলতে। সামগ্রিক শিক্ষা ব্যবস্থা সম্পর্কে নয়। এখন সমস্যা হচ্ছে, যে দেশের শিক্ষামন্ত্রী শিক্ষা নিয়ে এমন ধারনা পোষন করে, তার কাছ থেকে জাতি কি শিক্ষা নিবে সেটা সহজেই অনুমেয়। আর এরা যখন আইন প্রনোয়ন করবেন ইসলামের অপব্যাখ্যা দিয়ে, তখন সেটা শুধু আফগানকে রিপ্রেজেন্ট করবে না, সেটা করবে ইসলামকে।
৩| ০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০২১ রাত ১২:৫২
শূন্য সারমর্ম বলেছেন:
শরীয়া আল্লাহর আইন হলে পৃথিবী এক বাক্যেই মেনে নিতো।
০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০২১ রাত ১:০১
জাদিদ বলেছেন: কে মানত বা কেন মানত না সেই বিতর্কে যেতে চাইছি না, তবে মূল কথা হলো - শরিয়া আল্লাহর আইন হলে সেটা কখনই কোরান, সুন্নাহ ও ইসলামের মূলনীতির সাথে সাংঘর্ষিক হতো না।
৪| ০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০২১ রাত ১:০৩
হাবিব বলেছেন: যথার্থ বলেছেন। সাধারণ আইনের ফাঁক ফোকরের মতো শরীয়া আইনেও অনেক ফাঁক ফোকর আছে। বরং এর চেয়ে বলা ভালো ইসলামী/ শরীয়া আইনের ধারক বাহক বলে যারা নিজেদের দাবী করেন উনারা নিজেরাই নিজেদের সুবিধার জন্য বিভিন্ন দলীলাদি পেশ করেন। ইসলামের বেসিক জিনিসের ঠিক নাই, নিজের ব্যক্তি জীবনে ইসলামী অনুশাসনের বালাই নাই দেখবেন ওরাই শরীয়া আইন শরীয়া আইন বলে মুখে ফেনা তুলে।
কিন্তু এখানে একটা প্রশ্ন থেকেই যায়, আমরা তো জানি যে হাদীসের জাল হয়। তেমনি কোরআনেরও কি জাল হয়(!)? আমরা কোরআনকে বিশ্বাস করি এই বলে যে এর সংরক্ষনের দায়িত্ব আল্লাহর, এর মধ্যে কোন জাল নেই।
কোরআনে বলা আছে যে, আল্লাহপাক বলেন, 'আল ইয়াওমা আকমালতু লাকুম দ্বিনাকুম ওয়া আতমামতু আলাইকুম নি'মাতি ওযারাদিতু লাকুমুল ইসলামা দ্বিনা' অর্থাৎ, 'আজ আমি তোমাদের জন্য তোমাদের দ্বীনকে পূর্ণাঙ্গ করে দিলাম, তোমাদের প্রতি আমার অবদান সম্পূর্ণ করে দিলাম এবং ইসলামকে তোমাদের জন্য দ্বীন হিসেবে পছন্দ করলাম। তার মানে বুঝা যাচ্ছে আমাদের নবী (স.) এর প্রতি যা নাজিল করা হয়েছে সেটুকুতে আমাদের জন্য পরিপূর্ণ বিধান রয়েছে । অর্থাৎ শরীয়া আইন বলে অবশ্যই কিছু একটা আছে। কিন্তু একেক মানুষ একেক ভাবে ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বিষয়টি গুলিয়ে ফেলেছেন।
জাদিদ ভাইয়ের কাছে আমার প্রশ্ন হলো, আজ আমি তোমাদের জন্য তোমাদের দ্বীনকে পূর্ণাঙ্গ করে দিলাম, তোমাদের প্রতি আমার অবদান সম্পূর্ণ করে দিলাম এবং ইসলামকে তোমাদের জন্য দ্বীন হিসেবে পছন্দ করলাম । এই লাইনের ব্যাখ্যায় আপনি কি বলবেন?
০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০২১ রাত ১:৫০
জাদিদ বলেছেন: হাবিব ভাই, আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আমার মত একজন সামান্য মানুষের কাছ থেকে আপনি কোরানের আয়াতের ব্যাখ্যা জানতে চেয়েছেন দেখে আমি খুবই বিব্রত ও লজ্জিত বোধ করছি। আল্লাহ আমাকে তৌফিক দান করুন, সঠিক ব্যাখ্যা করার জন্য। আমিন।
প্রথমত, আল্লাহর আইন বলে কিছু নেই এটা সম্পূর্ন ভুল কথা। অবশ্যই আল্লাহ কিছু বিষয়ে নির্দিষ্ট আইন করে দিয়েছেন। এইগুলো ঘটেছে নির্দিষ্ট ঘটনার প্রেক্ষিতে সুনির্দিষ্ট আয়াত নাজিলের মাধ্যমে। হযরত আয়শা রাঃ কে যে অপবাদ দেয়া হয়েছিলো, সেই সম্পর্কে যে আয়াত নাজিল হয়েছে তা দিয়ে ব্যাভিচার ও জেনা সক্রান্ত বিষয়ে আইন বর্ণনা করা হয়েছে। সেখান থেকে তিনটা আইন পাওয়া যায়। যেহেতু কোরানে আছে, সেহেতু আপনি এই তো এই আইনকে অস্বীকার করতে পারবেন না। এটাই প্রকৃত ইসলামিক আইন।
আজ আমি তোমাদের জন্য তোমাদের দ্বীনকে পূর্ণাঙ্গ করে দিলাম, তোমাদের প্রতি আমার অবদান সম্পূর্ণ করে দিলাম এবং ইসলামকে তোমাদের জন্য দ্বীন হিসেবে পছন্দ করলাম - এটা সুরা আল মায়দার একটি আয়াত। হোদাইবিয়ার সন্ধির পর ৬ হিজরীর শেষের দিকে অথবা ৭ হিজরীর প্রথম দিকের ঘটনা হচ্ছে এই আয়াত বা এই সুরাটি। এই সুরাটির বৈশিষ্ট্য কিছুটা ভাষনের মত। এখানে প্রকাশ্যে বলা হয়েছে কি কি বৈধ এবং কি কি অবৈধ।এই সুরার মাধ্যমে আল্লাহ স্বয়ং মুসলিমদের বিভিন্ন বিষয়ের নিয়ম সম্পর্কে বলেছেন, কিছু আইন সম্পর্কে জানিয়েছেন। এই সুরা পাঠের মাধ্যমে আপনি ইসলামের সৌন্দর্য এবং আল্লাহ কর্তৃক প্রনীত আইন সম্পর্কে জানানো হয়েছে। কোরান শরীফের অন্যতম গুরুত্বপূর্ন সুরা। অর্থ সহ না পড়লে এই সুরা পড়া অর্থহীন।
৫| ০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০২১ রাত ২:৫৬
কামাল১৮ বলেছেন: আল্লাহ নিজেই তার অনেক নিয়মকে পরবর্তিতে বাতিল করেছেন।আগেরটাও আল্লাহর বানী পরের টাও আল্লাহর ।এখানে অনেক জটিলতা আছে ।কোরান সংকলের সময় নাজিলকৃত সময়কে মানা হয় নাই।এই জন্য কোনটা বাতিল আর কোনটা গ্রহনীয় এটা একটা সমস্যা সাধারনের জন্য।একবার বলা হয়েছে এক বছর ইদ্দত পালন করতে হবে,আবার বলা হয়েছে চার মাস সর্ব শেষ বলা তিন মাস।
০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০২১ রাত ১১:৩৪
জাদিদ বলেছেন: এইগুলো আসলে খুবই প্রাথমিক পর্যায়ের অভিযোগ। কোরান সঠিক ভাবে না পড়লে এই সকল বিষয়ে উপযুক্ত ব্যাখ্যা খুঁজে পাওয়া যাবে না। আপনাকে ধন্যবাদ।
১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০২১ রাত ১২:০৪
জাদিদ বলেছেন: আপনার উপকার হবে এই ভিডিওটা দেখা!! এখানে আপনি যা ইংগিত করেছেন, সেই সম্পর্কে বলা আছে।
আশা করি আপনার অর্থ বুঝতে সমস্যা হবার কথা নয়।
৬| ০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০২১ ভোর ৪:৩৯
হাসান কালবৈশাখী বলেছেন:
হাবিব বলেছেন:
হাদীস জাল হয়। তেমনি কোরআনেরও কি জাল হয়?
না। কোরান জাল হওয়ার সম্ভাবনা নেই।
কারন কোরানের প্রতিটি সুরা প্রতিটি আয়াত আরবি ভাষায় কাব্যিক ছন্দে রচিত হয়ে নাজেল হয়েছে। যে কারনে হাফেজগন সহযেই বংশপরমপরায় মোগস্ত করে রাখতে পারতেন।
কোরান ভিত্তিক ইসলাম মুলত ব্যক্তিগত ইসলাম, ৩০০ বছর পর হাদিস তৈরি হয়েছে রাজনৈতিক ইসলাম তথা যুদ্ধবাজ লুটেরা গ্রুপদের জন্য। শরিয়া আইনও হয়েছে এই বানোয়াট হাদিসের উপর ভিত্তি করে।
কোরান ভিত্তিক ইসলাম সবই পার্সন টু পার্সন উপদেশ, আদেশ। কোন নেতাকে উদ্দেস্য করে আদেশ নেই।
ইসলামের মূল ভিত্তি কলেমা, নামাজ রোজা হজ্ব জাকাত সবই ব্যক্তিগত। নামাজ মসজিদে বা বাসায় একই ফজিলত, একই ১০০ভাগ ফরজ আদায়। (মসজিদে ৭২ গুন সোয়াব, এটা হাদিসে। কোরানে নেই)
হাসরের ময়দানে, পুলসেরাতে ও শেষ বিচারও ব্যাক্তিকেন্দ্রিক। একাই থাকবে, ইসলামী নেতারা থাকবে না দলও থাকবে না, ইভেন পরিবারের কেউই থাকবে না। বেহেস্তে গেলেও একক ভাবে যাবে। একাই।
ইসলাম পলিটিক্যাল নয়। সবটাই ব্যক্তিগত।
এরপরও লুটেরা দখলবাজদের জন্য তৈরি হল হাদিস।
হজরত মুহম্মদের (স) হাদিস লিখতে কঠিন ভাবে নিষেধ করেছিলেন, কিন্ত অনেক পরে তৈরি হয় হাদিস। কিছু অনারব ব্যক্তিদ্বারা ৩০০ বছর পরে তৈরি হল হাদিস।
মুলত দখলবাজ দের রাজনৈতিক ইসলাম কায়েমের লক্ষ্যে, বিভিন্ন অঞ্চলের বিভিন্ন পক্ষ যার যার সুবিধা মত হাদিস ও শরিয়া আইন তৈরি করে নিয়েছে বা করতে বাধ্য হয়েছে।
তথা ধর্মের নামে ডাকাতি, নির্বিচার লুন্ঠন নগর দখল, ক্ষমতা দখল, গনিমতের মাল ভাগাভাগি ও দখল রাজত্ব টিকিয়ে রাখতে শুধু কোরানের আয়াতে কাজ হচ্ছিল না। তাই কিছু পাপিষ্ঠ লুটেরা দখলদারদের প্রয়জনে 'ব্যাক্তিগত ইসলাম' হয়ে যায় পলিটিক্যাল ইসলাম। আর হজরত মুহম্মদের (স) স্পষ্ট নিষেধের পরও তৈরি হয় হাদিস। হাদিসের ভিত্তিতে শরিয়া আইন।
১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০২১ রাত ১২:০৯
জাদিদ বলেছেন: আমার একটা প্রশ্ন আছে ভাই। যে ৩০০ বছর হাদিস ছিলো না। সেই ৩০০ বছর ইসলাম কিভাবে চলছে?
এই ৩০০ বছর ইসলামের ইতিহাসের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ন।
৭| ০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০২১ ভোর ৪:৪৩
স্বামী বিশুদ্ধানন্দ বলেছেন: অসাধারণ বিশ্লেষণ করেছেন!
"যে মহানুভবতা, সাম্য ও মানবিক সৌন্দর্য্যের গুনে ইসলাম দ্রুত প্রসারিত হয়েছে সেই সকল আদর্শ, নীতি ও নৈতিকতাবিরোধী অনেক কিছু পরবর্তীতে ব্যক্তিস্বার্থ, রাজনীতি ও ইসলাম বিরোধী চক্রের ষড়যন্ত্রে ইসলামের অংশ হিসাবে যুক্ত হয়েছে। "
শতভাগ সহমত।
যুগযুগ ধরে বিভিন্ন রাজনৈতিক ও ধর্মীয় নেতৃত্ব ধর্মের অনেক বিষয়কেই নিজের সুবিধার জন্য কাস্টমাইজ করে ফেলেছে যা মূল ধর্মের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।
৮| ০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০২১ ভোর ৪:৫৭
চাঁদগাজী বলেছেন:
আজকের বিশ্বে আইনের সংজ্ঞাও বদলে গেছে; আইন হলো পারলামেন্টে পাশ করা নিয়ম-কানুন।
৯| ০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০২১ সকাল ৭:৪৯
সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: রসূল (সা) এবং প্রথম ৪ জন খলিফা পূর্ণ আল্লাহর নির্দেশিত বিধানে দেশ শাসন করতেন। ইসলামের সকল বিধান মিলেই শরিয়া, শুধু আইন না। আল্লাহ যা নির্দেশ করেছেন শাসকদের জন্য তার বাইরে বিচার করা হারাম, যদি না সে বাধ্য হয়। ইসলামের অনেক ব্যাপারেই হাদিস, ইজমা ও কিয়াসের সাহায্য নেয়া হয়। এটা বৈধ। ইজমা ও কিয়াসে অনিচ্ছাকৃত ভুল হতে পারে। আপনি এই লিংকটা দেখতে পারেন। The kufr of one who rules according to other than what Allaah revealed । জাল হাদিসের ব্যাপারটা ভিন্ন। জাল হাদিস যে গ্রহণযোগ্য নয় এটা সবাই জানে। সৌদি আরবে মোটামুটি সঠিকভাবে আল্লাহর নির্দেশিত পথে দেশ চালানো হত। তবে বর্তমান জমানায় সেই রকম কোন আদর্শ দেশ পাবেন না। ইসলামী শরিয়ার অস্তিত্ব আছে। এটা হাওয়ার উপর নাই। ইসলামের শুধু আইন না অনেক কিছুতেই ইজমা ও কিয়াসের প্রয়োজন হয়। এটা প্রতিষ্ঠিত জিনিস। আলেমদের সততা ও যোগ্যতা সম্পর্কে আপনি প্রশ্ন করতে পারেন। সেটা ঠিক আছে। ভালো ও সৎ আলেম ও ফকিহকে এই সব ব্যাপারে নিয়োগ করতে হবে।
১০| ০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০২১ সকাল ৮:৪৩
সাদীদ তনয় বলেছেন: আল্লাহর আইন হলে তো পরিবর্তন হতো না কখনো। শরীয়া আইন পরিবর্তনশীল। সময়ের প্রয়োজনে পরিবর্তন হবে।
ইসলামে সুদ হারাম কিন্তু সুদ ছাড়া বর্তমানে রাষ্ট্র অচল। আমাদের আলেমরা ব্যাংকের বিভিন্ন শরীয়া বোর্ডের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন।
১১| ০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০২১ সকাল ৮:৫৩
এ আর ১৫ বলেছেন: কিছু শরিয়া আইণের উদাহরন -------
খাবার, বাসস্থান ও পোশাক দিতে স্বামী বাধ্য থাকবে শুধুমাত্র বাধ্য স্ত্রীকে, অবাধ্য স্ত্রীকে নয়। এর বাইরের সব খরচ এমনকি ডাক্তারের, ওষুধের বা সৌন্দর্য্য-চর্চার খরচ ইত্যাদি হবে স্বামীর করুণা ও দয়া। (বলাই বাহুল্য, স্ত্রী অবাধ্য কি না সেটা ঠিক করবে স্বামী নিজেই)। হানাফি আইন পৃঃ ১৪০ ; শাফি’ই আইন পৃঃ ৫৪৪ − Law #m.11.4 ; মুহিউদ্দীন খানের অনুদিত বাংলা কোরাণ পৃঃ ৮৬৭ − তফসীর ঃ “স্ত্রীর যে প্রয়োজনীয় ব্যয়ভার বহন করা স্বামীর যিম্মায় ওয়াজিব (বাধ্য), তা চারটি বস্তুর মধ্যে সীমাবদ্ধ − আহার, পানীয়, বস্ত্র ও বাসস্থান। স্বামী এর বেশি কিছু স্ত্রীকে দিলে অথবা ব্যয় করলে তা হবে অনুগ্রহ, অপরিহার্য নয়।”
“(স্বামীর) বৌ-তালাকে সাক্ষ্য শর্ত নহে” (বি-ই-আ ১ম খণ্ড, ধারা ৩৪৪)। এবারে খুলুন কোরাণ, সুরা ত্বালাক, আয়াত ২ − “তোমরা যখন স্ত্রীদিগকে তালাক দিতে চাও তখন দুইজন সাক্ষী রাখিবে।”
শারিয়ায় চুরি, ডাকাতি, পরকীয়া, মদ্যপান, রাষ্ট্রদ্রোহিতা ইত্যাদির শাস্তি হল হাত-পা কাটা, জনসমক্ষে চাবুকের আঘাত, জনসমক্ষে পাথর মেরে মৃত্যুদণ্ড, ইত্যাদি। কিন্তু ওই শারিয়া আইনেই আছে “রাষ্ট্রপ্রধানের বিরুদ্ধে হুদুদ মামলা করা যাবে না” (বি-ই-আ ৩য় খণ্ড নং ৯১৪গ এবং হানাফি আইন পৃঃ ১৮৮)।
বি-ই-আ ১ম খণ্ড, পৃঃ ৩০১ ঃ “যদি রাষ্ট্রপ্রধান বা তাঁর প্রতিনিধি কাউকে বাধ্য করে কোন নারীকে ধর্ষণ করতে, তবে ধর্ষণকারী শাস্তি পাবে না।”এ-আইনে “রাষ্ট্রপ্রধান বা তাঁর প্রতিনিধি”র কোন শাস্তির উলেখ নেই। কেউ বলতে পারেন, অন্যত্র শাস্তির কথা আছে। কিন্তু এখানেও সেটা নেই বলে কোন বাকপটু দুর্ধর্ষ উকিল তার অপরাধী মক্কেলকে খালাস করে নেবেই, কেউ ঠেকাতে পারবে না।
বি-ই-আ ১ম খণ্ড, পৃঃ ৩১১, ধারা ১৪৯ ঃ “বোবা’র সাক্ষ্য গ্রহণযোগ্য নয়।” কিন্তু বোবা’র তো চোখ আছে, সে তো দেখতে পারে। তার সাক্ষ্য ছাড়া চোর-ডাকাতখুনীরা পার পেয়ে যাবেই কখনো কখনো। এটা আলাহ’র আইন হতে পারে না।
দাস-দাসী, গায়িকা এবং সমাজের নীচু ব্যক্তির (উদ্ধৃতি ঃ রাস্তা পরিষ্কারকারী বা শৌচাগারের প্রহরী, ইত্যাদি) সাক্ষ্য গ্রহণযোগ্য নয়। হানাফি আইন পৃঃ ৩৬১ ; শাফি’ই আইন পৃঃ ৬৩৬ − Law #o.24.3.3 ; পেনাল ল’ অব্ ইসলাম পৃঃ ৪৬ ; বিধিবন্ধ ২য় খণ্ড, পৃঃ ২৬৩)। কিন্তু ওদেরও তো চোখ-কান-বিবেক আছে। ওরা তো চুরি-ডাকাতি দেখতে পারে ঠিক আমার-আপনার মতই। ওদের সাক্ষ্য ছাড়া চোর- ডাকাত-খুনীরা পার পেয়ে যাবেই কখনো কখনো। এটা আলাহ’র আইন হতে পারে না। তাছাড়া, আইনটায় গায়কের কোন কথা নেই, এটাও তো অন্যায় হয়ে গেল।
হুদুদ মামলায়, বিশেষত ব্যভিচারে ও খুনের মামলায়, নারী-সাক্ষ্য গ্রহণযোগ্য নয়। (হানাফি আইন পৃঃ ৩৫৩ ; শাফি’ই আইন পৃঃ ৬৩৮ − Law #o.24.9। ক্রিমিন্যাল ল’ ইন্ ইসলাম অ্যাণ্ড দ্য মুসলিম ওয়ার্লড পৃঃ ২৫১। মুহিউদ্দীন খানের অনুদিত বাংলা কোরাণ পৃঃ ২৩৯। পেনাল ল’ অব্ ইসলাম পৃঃ ৪৪ ; বিধিবদ্ধ ১ম খণ্ড, ধারা ১৩৩ ও ২য় খণ্ড, ধারা ৫৭৬)।
নারীদের সাক্ষ্য গ্রহণযোগ্য নহে, তাহাদের (১) স্মৃতিশক্তির দুর্বলতা, (২) পরিচালন- ক্ষমতার দুর্বলতা ও (৩) বুঝিবার অক্ষমতার জন্য। (পেনাল ল’ অব্ ইসলাম পৃঃ ৪৫)।
স্বামীর তরফ থেকে দেন-মোহর হতে পারে কোরাণ থেকে কিছু তেলাওয়াত বা লোহার আংটি বা একজোড়া জুতো। (শারিয়া দি ইসলামিক ল’ পৃঃ ১৬৩, ১৬৪ ; বিধিবদ্ধ ৩য় খণ্ড, পৃঃ ৯৭৬ ; সহি হাদিস তিরমিজি, হাদিস নং ৯৫১)।
বাবা-মা, দাদা-দাদি, বা নানা-নানিকে খুন করলে খুনীর মৃত্যুদণ্ড হবে। কিন্তু বাবা মা, দাদা-দাদি বা নানা-নানি যদি ছেলে-মেয়ে বা নাতি-নাতনিকে খুন করে তবে খুনীর মৃত্যুদণ্ড হবে না। (বি-ই-আ ১ম খণ্ড, ধারা ৬৫ ক ও খ ; শাফি’ই আইন পৃঃ ৫৮৪ − Law #o.1.2.4 এবং সহি তিরমিজি হাদিস ৯৯৪ ও ৯৯৫)।
বি-ই-আ ১ম খণ্ড পৃঃ ৭৯, ধারা ১৫৬ ও ১৫৭ ঃ আত্মীয়ের বাসা থেকে চুরি করলে বা মেজবানের বাসা থেকে মেহমান চুরি করলে তার হুদুদ শাস্তি হবে না।
তওবা করলে গণহত্যাকারীর শাস্তি হবে না। (বিধিবদ্ধ ১ম খণ্ড, পৃষ্ঠা ২১৮, ধারা ১৩)। ক্স বি-ই-আ ১ম খণ্ড পৃঃ ১৯৫, ধারা ৫১৪ ঃ মুতওয়ালী যদি ওয়াক্ফ্ সম্পত্তি হজম করে ফেলে তবে তার কাছ থেকে এ-সম্পত্তি আদায় করতে হবে, কোন শাস্তির উলেখ নেই।
স্ত্রী যদি বলে তার মাসিক হয়েছে আর স্বামী যদি তা বিশ্বাস না করে, তাহলে স্ত্রীর সাথে সহবাস করা স্বামীর জন্য আইনতঃ সিদ্ধ (শাফি’ই আইন নং ই-১৩-৫)।
“কোনো কারণে ধর্ষকের শাস্তি মওকুফ হইলে ধর্ষক ধর্ষিতাকে মোহরের সমান টাকা দিবে” (বি-ই-আ ১ম খণ্ড পৃঃ ৩০১ ; শাফি’ই আইন #m.8.10)। যেহেতু এখানে অন্য কোনো শাস্তির উলেখ নেই তাই ধর্ষক-পক্ষের চালাক বাকপটু উকিল ধর্ষককে টাকা দিয়ে খালাস করে নিতে পারবে। ধর্ষিতার শাস্তির বহু দলিল আমাদের কাছে আছে। ইসলামের নামে এই নির্মম নিষ্ঠুরতার ব্যাপারে কোন ইসলামি দল কোনদিন টুঁ শব্দটি উচ্চারণ করেননি।
মুসলিম পুরুষের রক্তমূল্য অপেক্ষা, (১) মুসলিম নারীর রক্তমূল্য অর্ধেক, (২) ইহুদী- খ্রীষ্টানের রক্তমূল্য তিনভাগের একভাগ, ও (৩) অগিড়ব-উপাসকের (সম্ভবতঃ হিন্দুদেরও − লেখক) রক্তমূল্য পনেরো ভাগের একভাগ। (শাফি’ই আইন পৃঃ ৫৯০, Law #o.4.9)।
রক্তমূল্যের দাবি বা খুনীকে মাফ করতে শুধু নিহতের পুত্ররাই পারে, কন্যারা নয়। (শারিয়া দি ইসলামিক ল’, ডঃ আবদুর রহমান ডোই, পৃঃ ২৩৫)।
বিবাহিতা যুদ্ধ-বন্দিনীদের বিয়ে তৎক্ষণাৎ বাতিল হয়ে যাবে (শাফি’ই আইন #o.9.13 )। এ-আইনের উদ্দেশ্য অতি পরিষ্কার। সেটা হল যুদ্ধ-বন্দিনীদের ধর্ষণ। সেটাকে সহি হাদিসে বৈধ করা হয়েছে (সহি বুখারি ৫ম খণ্ড হাদিস নং ৬৩৭, ও ৭ম খণ্ড হাদিস নং ১৩৭)। এমনকি কেউ কেউ বন্দিনীদেরকে তাদের বন্দী স্বামীদের সামনেই ধর্ষণ করত এবং “কেহ কেহ তাহা পছন্দ করিত না” − সহি আবু দাউদ হাদিস নং ২১০৫। স্পষ্টই বোঝা যায় নবীজীর অনেক পরে এ-সব ভয়ঙ্কর হাদিস বানানো হয়েছে বন্দিনী-ধর্ষণ হালাল করার জন্য। আমাদের ‘আহলে হাদিস’ ইত্যাদি সংগঠনগুলোর উচিত অনতিবিলম্বে এ-সব হাদিস বাতিল করা। এ-সব হাদিসের ভিত্তিতেই আমাদের ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে শর্ষিণার পীর ঘোষণা করেছিল পাকিস্তানী হানাদার সৈন্যদের জন্য বাঙালী হিন্দু-নারী ধর্ষণ করা বৈধ। এটা সবাই জানে, দৈনিক পূর্বদেশ-এও ছাপা হয়েছিল একাত্তরের ১৯শে ডিসেম্বর তারিখে। অনেকে তাকে দোষ দিয়েছিলেন কিন্তু সে তো শুধু শারিয়া আইনের কথাই বলেছিল।
বি-ই-আ ১ম খণ্ড পৃঃ ২১০, ধারা ২ − রোজার সময় কেউ কিছু খেলে, এমনকি গোপনে খেলেও, তার শাস্তি হবে। ১১ই নভেম্বর ২০০৫ বৃহস্পতিবারে ইরাণের সানান্দাদজ শহরের এক ১৪ বছরের বাচ্চা ছেলে রোজা রেখেছিল। বেচারা সামলাতে পারেনি, দুপুরে কিছু খেয়ে রোজা ভেঙে ফেলেছিল। শারিয়া আদালত তাকে ৮৫ চাবুক মেরে মেরেই ফেলেছে। অনিন্দ্যসুন্দর ফুলের মত সদ্য ফুটেছিল যে, যার সামনে ছিল বিস্তীর্ণ জীবন, সে মাটির নীচে পোকামাকড়ের খাদ্য হয়েছে। এ-রকম শত শত ভয়াবহ ঘটনা ঘটেছে ইরানের শারিয়া রাষ্ট্রে।
১২| ০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০২১ সকাল ৯:৩৫
ঈশ্বরকণা বলেছেন: আফগানিস্তানে তালেবানের উত্থান তার সাথে ইসলামের খুবই মৌলিক বিষয় জড়িয়ে একটা ভুল প্রশ্নকে সামেন রেখে আপনি এই লেখাটা লিখেছেন দেখে খুবই অবাক হলাম । এখন যৌক্তিক প্রশ্ন হচ্ছে - শরিয়া যদি আল্লাহর আইন হয়, তাহলে কিভাবে তা কোরান ও সুন্নাহর সাথে সাংঘর্ষিক হয়?এর সহজ উত্তর - শরিয়া আইন ইসলামকে বিতর্কিত করার একটি অন্যতম উপায়।আপনার প্রশ্নটাতো দেখি আপনার লেখার সাথেই সাংঘর্ষিক ! আপনি নিজেই বলেছেন শরিয়াহ আইনের সোর্স হলো ১১ টা। এর মধ্যে একমাত্র কুরআন হলো আল্লাহর প্রেরিত। তাহলে বাকি দশটা সোর্স নিশ্চই আল্লাহর লিখিত কিছু নয়। তাহলে শরিয়াহ আইন পুরোই আল্লাহর আইন সেই প্রশ্নটা করার কি দরকার ছিলো ? আপনিতো দেখছি অতিপ্রগতিশীলতার ট্রাপে পরে গেছেন একজন প্র্যাকটিসিং মুসলিম হয়েও । শরিয়া আইনের কোন বিষয়গুলো পুরো মানতে হবে বা শরিয়া আইন ছাড়া কি ইসলাম সঠিক ভাবে অনুশীলন করা যাবে সে নিয়ে আপনি ইনকুইজিটিভ কোনো প্রশ্ন করলে লেখাটি আরো যৌক্তিক হতো বলে আমার মনে হয়েছে।
ব্লগের মডারেটর হিসেবে আপনার এই ধরণের লেখাগুলো পোস্ট করার আগে আরো একটু সাবধানী হওয়া উচিত বলে আমার মনে হয়। মাঝে মাঝেই আপনি ইসলামের আইনগুলো জেনারেলাইজড করে ফেলেন। সে নিয়ে তোলা প্রশ্নগুলোও খুব অর্থবোধক হয় না ।সেখানে বিষয়টা যেমন ভুল ভাবে ইন্টারপ্রেট করা হয় তেমন আপনি না চাইলেও ইসলামের আইনকানুনগুলোও প্রশ্নের মুখোমুখি করা হয়ে যায়। কিছু কিছু ক্ষেত্রে আপনার মন্তব্য (ইচ্ছাকৃত তা বলছি না কিন্ত) থেকে কুরআন আর ইসলামিক আইনগুলো সাংঘর্ষিক হিসেবেও দেখতে অনেককে উৎসাহিত করতে পারে। এই লেখাতেও তেমন হলো মনে হয়।আপনি ইসলামিক শরিয়া আইনের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে বলতে যেয়ে ১১টি সোর্সের কথা বলেছেন যার প্রথমটা হলো কুরআন আর ছয় নাম্বার হলো উরফ (urf) বা স্থানীয় প্রথা। এখানে আপনি অযথাই মামুনুল নামের একজন বিতর্কিত মুসলিম ব্যক্তির উদাহরণ আনলেন শরিয়া আইন কুরআনের সাথে সাংঘর্ষিক সেটা বলতে ! এই উদাহরণটা কিন্তু শরিয়া আইনের সোর্স হিসেবে উরফ বা স্থানীয় প্রথার প্রয়োগযোগ্য কোনো ভালো উদাহরণ হলো না বরং ইসলামিক আইনগুলোর দিকে তোলা অতিপ্রগতিশীল অপপ্রচারের মতোই লাগলো।
আপনি ইসলামিক জুরিসপ্রুডেন্সের খুবই ফান্ডামেন্টাল একটা বিষয় জানেন আমি নিশ্চিত । সেটা হলো কুরআনের সাথে সাংঘর্ষিক কোনো হাদিস পাওয়া গেলেও সেটা বাতিল হবে (এই ধরণের হাদিস কেন বা কিভাবে এলো সেটা অন্য প্রশ্ন । সে নিয়ে এখানে কিছু বলার দরকার আছে বলে মনে হয় না )। এ নিয়ে ইসলামিক স্কলারদের মধ্যে ঐক্য আছে। এর বিরুদ্ধ কোনো মতবাদ আছে কিনা আমি জানিনা। আপনি যেমন সূরা নিসার উদাহরণ দিয়েছেন বিয়ে প্রসঙ্গে । এটা কোরানের পরিষ্কার একটা আইনগত রুলিং ইসলামিক বিয়ের ব্যাপারে। রাসূল (সাঃ) নিজের মেয়েদের বিয়ে দিয়েছেন । সাহাবীদের বিয়েতে উপস্থিত থেকেছেন । নিজে তাদের বিয়ের আলোচনায় অংশ নিয়েছেন । বিয়ে প্রসঙ্গে কুরআনের আইনের সাথে সাংঘর্ষিক কিছু করেননিI তাই ইসলামিক বিয়ের নিয়ম কানুন নিয়ে কোনো অস্পষ্টতা নেই ।তাহলে কুরআন বিয়ের বিষয়ে যে আইনের কথা বলেছে আর হাদিস যেগুলো সমর্থন করছে সেটা অগ্রাহ্য করে উরফ বা স্থানীয় প্রথার (যেটা হাদিসও নয়) কথা বলে কি বিয়ে প্রসঙ্গে কেউ কুরআনের নিয়মেও পরিপন্থী কোনো কাজকে হালাল বা আইনসিদ্ধ করতে পারবে? কখনোই পারবে না।তাই বিয়ে নিয়ে কেউ (যত বড় উরফি মাওলানাই হোক সে) যেই কথাই বলুক না কেন সেটা কুরআনের আইনানুযায়ী না হলে বাতিল। এখানে সাংঘর্ষিক কোনো ব্যাপারের প্রশ্নইতো আসে না (মামুনুলের ক্ষেত্রেও হেফাজত কিন্তু পরে আর কোনো কথা বলেনি মানে, আমার ধারণা, তারা এটা মেনে নিয়েছে যে তার বিয়ে ইসলামী আইনানুগ ছিল না)। তাই এই বিতর্কিত উদাহরণ দিয়ে শরিয়া আইন আর কুরআনকে সাংঘর্ষিক হিসেবে বলার দরকার ছিল না বলেই আমার মনে হয়েছে ।
উরফ বা স্থানীয় প্রথা শরিয়া আইনের সোর্স হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হবার অনেক কারণ আছে I এর মাধ্যমে শরিয়া আইন ব্যাখ্যা করা হাস্যকর বিষয় আপনি বলেছেন। কিন্তু উরফ বা স্থানীয় প্রথা দিয়ে শরিয়া আইন ব্যাখ্যা করার বিষয়টা 'মজার' বা হাস্যকর কিনা আপনার কথাটার বাইরেও এ’ দিয়ে কি ইসলামের ফান্ডামেন্টাল পাঁচটি বিষয়ের কিছুকে ব্যাখ্যা করার সুযোগ আছে সেই প্রশ্ন সিরিয়াসলিই করা যেতে পারে? উত্তর হলো, না নেই । একদমই নেই । আপনি যেই দেশেই থাকুন যেই প্রথাই পালন করুন নামাজ, রোজা, হজ্ব,জাকাত একই ভাবে প্রাকটিস করতে হবে যেটা কুরআন আর হাদিসে পরিষ্কার করেই বলে দেয়া আছে। শাহাদার বিষয়গুলো বিশ্বাস করতে হবে সুনির্দিষ্ট নিয়মের ভেতর থেকেই সেটা প্রথা দিয়ে প্রভাবিত করার সুযোগ নেই। এর কোনো ব্যতিক্রম করা যাবে না উরফ বা প্রথার কথা বলে। কিন্তু কেন উরফ বা স্থানীয় প্রথা শরিয়া আইনে বিবেচনা করা দরকার ? একটা উদাহরণ দেই । কুরআনে মানুষের ড্রেস সম্পর্কে বলা হচ্ছে --" হে বনী-আদম আমি তোমাদের জন্যে পোশাক অবর্তীণ করেছি, যা তোমাদের লজ্জাস্থান আবৃত করে এবং অবর্তীণ করেছি সাজ সজ্জার বস্ত্র এবং পরহেযগারীর পোশাক, এটি সর্বোত্তম। এটি আল্লাহর কুদরতের অন্যতম নিদর্শন, যাতে তারা চিন্তা-ভাবনা করে (সূরা আরাফ ৭:২৬)"। এখন এই বিষয়টাকে আরো ব্যাখ্যা করে হাদিসে বলা হয়েছে নামাজে কি ধরণের ড্রেস পড়তে হবে আর কতটুকু শরীর ঢাকতে হবে কতটুকু খালি থাকলেও চলবে । এখন রাসূল (সাঃ) ছিলেন আরব । শরীর ঢাকার জন্য তার পোশাকতো আর বাংলাদেশের পোশাকের মতো ছিলোনা । রাসূল (সাঃ)আলখেল্লা আর পাগড়ি পড়তেন ।সেটা তাঁর টপোগ্রাফি আর আবহাওয়া অনুযায়ী খুবই উপযুক্ত আর বিজ্ঞানসম্মত পোশাকই ছিল।আর এখানেই উরফ বিবেচনা করাটা জরুরি। আমরা কি তাহলে সুন্নত পালন করতে শুধু আরবদের মতো ঢোলা আলখেল্লা পরব ? না নিজেদের প্রথা অনুযায়ী ড্রেস পরবো ? তাতে ইবাদত হবে ? ঠিকমতো হবে তো ? সেগুলো কি কুরআনের "পরহেযগারীর পোশাক " (৭:২৬)হবে ? এই প্রশ্নগুলোর উত্তর দিতেই উরফকে শরিয়ার অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। ইসলামের কোনো ফান্ডামেন্টাল বিশ্বাস ব্যাখ্যা করতে না । সামাজিক বিষয়গুলোতে অঞ্চল ভিত্তিক পার্থক্য থাকবেই, সেগুলো সময় সময় পরিবর্তিত হবেই। ইসলামেই শুধু কেন খুব সাধাৰণ ভাবেই সামাজিক ধারণাগুলোর পরিবর্তিত হবারই কথা I আপনার দাদা বা তার বাবা লুঙ্গি গেঞ্জি পরে জীবন যাপন করেছেন, ইসলাম পালন করেছেন আপনি সেগুলো না করেও স্যুট টাই পরে নামাজ পরে ভালোভাবেই ইসলাম পালন করতে পারবেন । উরফ এই নির্দেশনাগুলোই শুধু দেয় শরিয়ার অনুমোদনের মধ্যে থেকে আর কিছু নয় । সময়ের সাথে সাথে সব সামাজিক প্রতিষ্ঠানেই নিয়ম কানুনতো পরিবর্তন হয়ই । যেমন সব দেশের সংবিধানে এমেন্ডমেন্ট হয় । ফান্ডামেন্টালসগুলো অপরিবর্তিত রেখে কমপ্লিমেন্টারি আইনগুলো পরিবর্তন সব যায়গাতেই হয় । সেগুলো করতে যেয়ে নানা মত আর মতভেদও দেখা যায়। উরফ মেনে ভিন্ন ভিন্ন অঞ্চলের মানুষ ভিন্ন ভিন্ন পোশাক আশাকে ইসলাম পালন করবে তাতে কিছু কিছু ক্ষেত্রে মতভেদও দেখা দিতে পারে কিন্তু সেটা ঠিক আছে । এর জন্য ইসলামিক শরিয়া আইনকে তীক্ষ সমালোচনার কিছু নেই। কিন্তু আপনার লেখা পরে মনে হয়েছে যেই ব্যাপারটা ইসলামের উদার একটা পরিচয় হতে পারতো আপনি সেগুলোকেই তির্যক মনোভাবের সাথে খুব বড় করে দেখাতে চাইছেন শরিয়া আইন মানুষের তৈরী বলে একটি নেতিবাচক ধারণা দিয়ে ।
আপনি মায্হাবগত পার্থক্যের কথা বলতে যেয়ে ইমাম শাফি (রঃ)আর ইমাম মালেকের (রঃ) অমুসলিমদের কাছে কুরআন বিক্রি করা নিয়ে একটি ব্যাপারও শরিয়া আইনের আলোচনায় বলেছেন দেখে বিস্মিত হলাম । আল্লাহ কুরআন কিভাবে আমল করতে হবে সেটা বলতে গিয়ে বলেছেন, " নিশ্চয় এটা সম্মানিত কোরআন--যারা পাক-পবিত্র, তারা ব্যতীত অন্য কেউ একে স্পর্শ করবে না (৫৬:৭৭,৭৯) । আবার সূরা বাকারায় আল্লাক কুরআন সম্পর্কে এটাও বলেছেন ""-- and do not sell My messages for a small price: I am the One of whom you should be mindful---(২:৪১)" (আব্দুল হালিমের ইংরেজি ট্রান্সলিটারেশন)। আপনি নিশ্চই জানেন ইমাম মালেকের (রঃ) ছাত্র ছিলেন ইমাম শাফি (রঃ) । নয় বছর ইমাম শাফি (রঃ) ইমাম মালেকের (রঃ)কাছে ইসলামিক বিষয়ের পড়াশোনা করেন। ইমাম মালেকের (রঃ) মৃত্যুর পর ইমাম মদিনা ছেড়ে যান । জন্মগত ভাবেও ইমাম শাফি(রঃ)ছিলেন এখনকার প্যালেস্টাইনের মানুষ । এই দুই ইসলামিক স্কলার থাকতেন দুটো ভিন্ন অঞ্চলে। ইমাম মালেক (রঃ) সারা জীবনই প্রায় কাটিয়েছেন মদিনায় । তার পারিপার্শ্বিকতায় মানে মদিনায় অমুসলিম যারা তখন ছিল তাদের দিয়ে কুরআনের অবমাননা হবার সম্ভাবনা কমই ছিল খুব সহজবোধ্য কারণেই । সে কারণেই ইমাম মালেকের (রঃ) অমুসলিমদের কাছে কুরআন বিক্রি করা নিয়ে মনোভাব কঠিন নাই হতে পারে আবার ইমাম শাফি (রঃ) জীবনের বেশিরভাগ সময় কাটিয়েছেন এখনকার ইরাক, জর্ডান, সিরিয়া, লেবানন, প্যালেস্টিন আর ইসরাইললে ( সেই সময় শাম বলা হতো )। শেষ জীবনে ইমাম শাফি (রঃ) কাটিয়েছেন মিশরে ।সেখানেই উনি তার বিখ্যাত বই 'আল রিসালা' লেখেন । এখন ইমাম মালেকের (রঃ)মৃত্যু থেকে রিসালা লেখার সময় পারিপার্শ্বিকতা কিন্তু অনেক ভিন্ন ।তাছাড়া অঞ্চল ভিত্তিক ইসলাম বিরোধী প্রচার প্রচারণাও ছিল ভিন্ন রকম । আপনি নিশ্চই জানেন ইসলাম আর রাসূল সম্পর্কে সবচেয়ে নোংরা প্রচারণার শুরু হয়েছিল সাত শতকের শেষ দিকে এক সিরিয়ান যাজকের থেকেই। এই ভিন্ন পরিবেশে অমুসলিমদের কাছে কুরআন বিক্রি করা ঠিক হবে কি হবে না সেটা নিয়ে স্কলারদের মধ্যে দ্বিমত থাকতেই পারে। এটা আলোচনার একটা বড় ইস্যু হলো আপনার কাছে সেটাই আশ্চর্যের । তাছাড়া কুরআন অমুসলিমদের কাছে না বিক্রি করেও প্রচার করা সে সময়ে খুবই সম্ভব ছিল। আর তখনতো হাজার হাজার কপিও বিক্রি হতো না কারণ মানুষ অতো শিক্ষিতও ছিল না । তাছাড়া স্থানীয়ভাবে অনুবাদ করা কুরআন নিখুঁত থাকবে কিনা সেই প্রশ্নও নিশ্চই একটা বিবেচ্য বিষয় ছিল । তাই সে সময়ের পরিপ্রেক্ষিতে কুরআন অমুসলিমদের কাছে বিক্রি না করার কথা যদি কোনো ইসলামিক স্কলার ভাবেনই সেটা খুব অযৌক্তিক হলো কেমন করে (কুরআনের আগের দুটো আয়াতের ভিতিত্তে )সেটা কিন্তু সেটা কিন্তু আমার একটা প্রশ্ন আপনার কাছে। আপনি নিশ্চই বলবেন না ইমাম শাফি(রঃ) সেটা করা হারাম বলেছেন।উনি উনার মতবাদটুকু বলেছেন সে সময়ের পরিপ্রেক্ষিতেই অন্য মতবাদের পথ বন্ধ করেন নি । কুরআনের প্রচার নিয়ে যখন বললেন তখন একটা ঘটনা বলি । সাহাবীরাও কুরআনের প্রচার নিয়ে রাসূলের (সাঃ)সাথে দ্বিমত করেছেন। গোপনে ইসলাম গ্রহণ করার পরে রাসূল হজরত আবু জর গিফারীকে (রাঃ) বলেছেন উচ্চ্চস্বরে কুরআন তেলাওয়াত না করতে । সে সময়ের অল্প কিছু মুসলিম সেটা মেনে নিয়ে লুকিয়ে অনুচ্চস্বরে কুরআন তেলাওয়াত করেছেন । আবুজর (রাঃ) কাবার সামনে উচ্চস্বরে সবাইকে শুনিয়ে কুরআন তেলোয়াত করেছেন । মক্কার বিধর্মীরা তাকে মেরে রক্তাক্ত করে মসজিদুল হারামে ফেলে রেখেছে । পরের দিন একটু সুস্থ্য হয়ে তিনি আবার একই কাজ করেছেন । আবার তাকে বেধড়ক মারের স্বীকার হতে হয়েছে । রাসূল (সাঃ) প্রিয় সাহাবীর কষ্টে অধীর হয়ে যখন বলেছেন এ' রকম করে উঁচুস্বরে কুরআন তেলাওয়াতের দরকার নেই,উত্তরে অবুজর গিফারী (রাঃ) বলেছেন আল্লাহর বাণী লুকিয়ে রাখতে পারবো না আমি। আমি সবার সামনে এই বাণী উচ্চাৰণ করবোই । তাতে তারা আমাকে যদি মেরেও ফেলে তাহলে তাই হবে। ভিন্নমত তা কুরআন বা ইসলাম প্রচার বিষয়েও সব সময়ই সমাদৃতই ছিল ইসলামে ।আপনি আমাদের দেশের বা পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের সুপ্রিম কোর্টের রায়গুলো যদি দেখেন দেখবেন অনেক ল্যান্ডমার্ক রায়ের ক্ষেত্রেই সুপ্রিম কোর্টের সব বিচারপতি একই রায় দেন নি ।কেউ মামলার বাদী পক্ষে রায় দিয়েছেন ।কেউ মামলার বাদীর বিপক্ষে রায় দিয়েছেন । সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে বিচারের ফলাফল নির্ধারিত হয়েছে অথচ সব বিচারপতিই কিন্তু একটাই সংবিধানের আইনকানুন ফলো করেছেন।কিন্তু তবুও তারা দ্বিমত করেছেন তাদের আন্ডারস্টেন্ডিংয়ের ভিত্তিতে। ইসলামিক জুরিসপ্রুডেন্সও এটাই হয় । সৎ নিয়তে আপনি আপনার মতামত দিলেন সেটার জন্য আপনাকে দোষী করার কোনো সুযোগ নেই । আপনার লেখায় ইমাম শাফির (রঃ) বিরুদ্ধে তেমন অভিযোগ আছে মনে হলো । স্বামী রামকৃষ্ণ বলেছেন যত মত ততো পথ।আধুনিক সময়ে মতভেদ হলে গনতন্ত্র বলে প্রশংসা করা হয় আর ইসলামিক দুইজন স্কলারের মধ্যে মতভেদ হলে সেটা নেগেটিভ হয়ে যাবে ! এভাবে ভাবলেতো মুশকিল !
আরেকটা কথা আপনি কিয়াসকে (যা আসলে একটা এনালজিকাল রিজনিং প্রসেস হিসেবে )মনে হয় খানিকটা তাচ্ছিল্যই করলেন লেখায় । কিন্তু এনালজিকাল রিজনিং ছাড়াতো আপনি আধুনিক পৃথিবীতেও চলতে পারবেন না ।বিজ্ঞান চালাতে গেলেও আপনাকে এনালজিকাল রিজনিংয়ের সাহায্য নিতে হবে প্রতি পদে পদে ।অক্সিজেনের আবিস্কারক বিখ্যাত কেমিস্ট জোসেফ প্রিস্টলির একটা কথা দিয়ে বলি কিয়াসের ব্যাপারটা " analogy is our best guide in all philosophical investigations; and all discoveries, which were not made by mere accident, have been made by the help of it". রাসূল (সাঃ) এখন বেঁচে নেই । সাহাবীদের যুগও শেষ । কিন্তু তাদের গড়া ইসলাম রয়ে গেছে । এখন ইসলামকে তাদের মতো করে আপনি প্রাকটিস করবেন কিভাবে কিয়াসের পথ বা এনালজিকাল রিজনিং ছেড়ে দিলে ? সেটা কি সম্ভব হবে ? আর আট নাম্বার সোর্স হিসেবে বলা "মওলানাদের স্বাধীন মতামত, এটা কিয়াস-এর কাছাকাছি এবং কিয়াস- এর মতই অবাস্তব" মন্তব্যটা আপনি সাধাৰণ ভাবে বললে কিন্তু ভুল হবে বড় ধরণের । আপনি মাওলানা বলতে যদি আপনার বিয়ে প্রঙ্গে বলা হুজুরের মূর্তি ভাবেন তাহলে মন্তব্যটাতে ভুল নেই । নইলে ভুল আছে বড় ধরণের । আপনি বাংলাদেশের ক্রিকেট নিয়ে পরামর্শ চান যদি সেটা কার কাছে চাইবেন ? ক্রিকেট মাওলানা রকিবুল হাসান বা ফারুক আহমেদ, আকরাম, নান্নু বা আতাহার আলী এদের থেকেইতো চাইবেন তাই না ? এরাই আমাদের ক্রিকেটের শীর্ষ বিশেযজ্ঞ । তাহলে ইসলামের কোনো ক্রিটিকাল ইস্যুতে ইসলামিক স্কলারদের বা বিশেষজ্ঞদের মতবাদ মানবেন না ? আমাদের আদালত যে দেশের উল্লেখযোগ্য অনেকগুলো মামলায় গত পনেরো বিশ বছরে আইন ব্যাখ্যা করার জন্য এমিকাস কিউরী নিযুক্ত করেছে কয়েকবার সেটা জানেন তো ? এইতো এই বছরেরই ফেব্রুয়ারি মাসে সরকারের আল জাজিরার সম্প্রচার বাংলাদেশে নিষিদ্ধ করা নিয়ে আপিল বিভাগ ছয়জন এমিকাস কিউরির নিয়োগ দিয়েছিলো দেশের জ্যেষ্ঠতম আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী, ফিদা এম কামাল, কামাল উল আলম, আব্দুল মতিন খসরু, প্রবীর নিয়োগী, শাহদীন মালিক এই ছয়জনকে । এই ছয় এমিকাস কিউরি প্রাসঙ্গিক আইন আদালতে ব্যাখ্যা করেছেন। 'মওলানাদের স্বাধীন মতামত'ও এরকম এমিকাস কিউরির মতোই বিশেষজ্ঞ মতামত ইসলামিক বিষয়ে I এই পদ্ধতিতে অবাস্তব কিছু নেই। এদের মতো ইসলামিক স্কলারদের দিয়েই দিয়েই ইসলামিক শরিয়া আইনগুলো হয়েছে ।আপনার বিয়ে পাগল হুজুরদের দিয়ে নয় ।তাই এই বিষয়গুলো গুলিয়ে না ফেললেই ভালো ।
আপনার লেখার শেষ অংশ সম্পর্কে কিছু বলতে ইচ্ছে করছে না । এইসব কারণেই হজরত লুত (আঃ) জাতিকে ধ্বংস করে দেয়া হয়েছিল । ইসলামিক শরিয়ায় এটাকে বৈধতা দেয়া হয়নি নিশ্চই । এখন কিছু ব্লগার সমর্থন করলেই কি সেটা কে ইসলামের নিয়ম নীতি বা শরিয়া আইনের ত্রুটি হিসেবে দেখতে হবে আপনার ? পাশ্চাত্যে ইসলামের বিরুদ্ধে একটা বড় অভিযোগই হলো সমকামীতার বিরুদ্ধে একটা আয়রনক্লাড প্রথার ধারক হিসেবে । দেশে দেখি এটার সমর্থন করাকেও কিছু মানুষ সমালোচনা করছে --- হাহাহা । ইসলাম আর শরিয়া আইন খুবই পরিষ্কার ভাবেই এর বিরোধিতা করে এটাকে অশ্লীল আর নিকৃষ্ট কাজ বলেছে প্রায় পনেরোশো বছর আগেই । সেই নিয়মের কোনো পরিবর্তন হয়নি এখনো ।
বাংলাদেশের মতো ছোট একটা দেশ চালাতেও হাজার আইন দরকার হয় । সেগুলো যুগোপযোগী রাখতে এমেনমেন্ডের দরকার হয় । আর ইসলামতো নির্দিষ্ট রাজনৈতিক সীমানা ছাড়ানো আরো বড় একটা বিষয়।ইসলাম অনুশীলনের জন্য কুরআনের ঘোষিত আইনের সাথে সাথে রাসূলের করা ফায়সালা ছাড়াও আরো অনেক আইনই লাগবে । ইসলামিক শরিয়া আইনের সৃষ্টিও সে জন্যই। ইসলামিক ফান্ডামেন্টাল রুলসগুলো শরিয়া আইনে একই থাকবে কিন্তু কম্প্লিমেন্টাল আইনগুলো সময়ে সময়ে পরিবর্তিত বা যোগ বিয়োগ হবে ।এটাতে আশ্চর্যের কিছু নেই । আইনগুলো আল্লাহর মূল নির্দেশনাগুলো আর রাসূলের দেখানো পথ অনুসরণে হচ্ছে কিনা সেটাই প্রধান বিষয় এখানে। কুরআনওতো মানুষের মুখ দিয়েই আল্লাহ মানব জাতির জন্য পাঠিয়েছেন ।মানুষের ভাষাতেই সেগুলো রেকর্ড করা হয়েছে । সে নিয়ে যদি প্রশ্ন না থাকে তাহলে কুরআনের বলা আইনগুলো প্রয়োগ করতে যেয়ে যেই কম্প্লিমেন্টারি আইনগুলোর দরকার সেগুলো নিয়ে অনর্থক যারা প্রশ্ন তুলে তারা সৎ উদ্দেশ্য থেকে সেই প্রশ্নগুলো করে কি না সেটা বোঝা সমস্যা হয়ে গেলো আপনার লেখা থেকে । এখানে ত্রুটি বিচ্যুতির ব্যাপার না খোঁজাই ভালো। কিছু দুর্জন মানুষ নিজের স্বার্থে আইন টুইস্ট করলো সেজন্য শরিয়া আইনের"--- হাজারো ত্রুটি বিচ্যুতি আছে। খোলা মনে জানার আগ্রহ নিয়ে পড়লে যে কেউ এর অসারতা টের পাবে" এই ধরণের মন্তব্য না করাই সমিচীন বলে আমার ধারণা।
ইদানিং আফগানিস্তানে তালেবানের বিজয় আর সে নিয়ে ব্লগে ইসলাম বিরোধীদের (ইসলাম সম্পর্কে গন্ডমুর্খও হতে পারে) অবাক করা কথাবার্তা ভরা লেখাজোখা পরে ত্যাক্ত বিরক্ত হয়েই এই বিরাট কমেন্ট করলাম । আপনার দেওয়া রেফারেন্সের হাসান মাহমুদ সম্পর্কে আরো কিছু জানালে খুশি হই। আমি এই লেখকের ব্যাপারে খুব বেশি জানি না । আপনি বললে জানা হতো । আপনার এক ব্লগার এই মন্তব্যকে গরু রচনা বলে পানি ঘোলা করতে চাইলে তাকে দমন করার সাংবিধানিক ক্ষমতা আপনি কঠোর ভাবে প্রয়োগ করবেন বলেই আমি বিশ্বাস করতে চাই ।যাক ভালো থাকুন ।
০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০২১ সকাল ১০:১০
জাদিদ বলেছেন: আপনাকে বিনয়ের সাথে বলছি, মডারেটর হিসাবে আমার কি করা উচিত বা উচিত নয়- এই সম্পর্কে আমার মোটামুটি ধারনা আছে। কখনও সহযোগিতার প্রয়োজন হলে আমি অবশ্যই আপনি সহ অন্যান্য সম্মানিত ব্লগারদের সাহায্য চাইতে দ্বিধা করব না। তাছাড়া মডারেটর হিসাবে এখন পর্যন্ত আমি এমন কিছু করি নি যা ব্লগের ভাবমুর্তিকে ক্ষুন্ন করবে। তাই আমি আশা করি বিভিন্ন পোস্টে অপ্রাসঙ্গিকভাবে আমার মডারেটর পরিচয়টি সামনে নিয়ে আসবেন না। আমার মনে হয় আমরা যে বিষয়ে কথা বলছি, সেখানে এই পরিচয়টি অপ্রয়োজনীয়। তাছাড়া বিষয়টি এমনও নয় যে, মডারেটর হিসাবে যদি আমি কখনও ক্ষমতার অপব্যাবহার করেছি বা আমার বিরুদ্ধে যৌক্তিক যে কোন সমালোচনাকে আমি দমন করেছি। তাছাড়া এটা আমার ব্যক্তিগত ব্লগ আইডি। এখানে আমি আমার নিজস্ব আদর্শ ও চিন্তাভাবনা থেকে লেখালেখি করি। আমার নিজস্ব চিন্তা ভাবনায় ভুল থাকতে পারে। এটা সমালোচনা করার সময় কাউকে মনে রাখার প্রয়োজন নেই আমি মডারেটর। আশা করি আমি বুঝাতে পেরেছি।
আপনার মন্তব্যের জবাব হিসাবে এটা লেখা নয়। আপনার মন্তব্যের জবাব আমি পরবর্তীতে দেয়ার চেষ্টা করছি। আপনাকে আন্তরিক ধন্যবাদ আলোচনায় অংশ নেয়ার জন্য।
০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:০৮
জাদিদ বলেছেন: আপনাকে আবারো ধন্যবাদ জানাই আলোচনায় অংশ নেয়ার জন্য। আপনার সাথে আলোচনায় অংশ নিতে পেরে আমি আনন্দিত। অবশ্য আমার জ্ঞানের পরিমান খুব সামান্য, কংকর সমতুল্য। যদি ভুল কিছু বলে থাকি তাহলে নিজ গুনে আমাকে ক্ষমা করবেন। আর আমার কথা আপনার খুব ঝাঁঝালো মনে হলো কেন ঠিক জানি না। আমি তো নিজেকে কার্বোনেটিং করেছি বলে মনে হয় না। পানিকে কার্বোনেট করে ঝাঁঝালো বানানো হয়। হাহাহা। এই প্রসঙ্গে একটি গল্প বলি। আমার এক পরিচিত কোনভাবেই গরমে বা রোদে বা সামান্য উত্তাপ সহ্য করতে পারত না, ওর গায়ে জ্বালা করত। এটা নিয়ে আমরা ওকে অনেক খ্যাপাতাম। পরে ডাক্তারের কাছে গিয়ে দেখা গেল আসলেই ওর স্ক্রীনে কি একটা ভিটামিনের ঘাটতি জনিত সমস্যা রয়েছে। রয়েছে। তবে আমার কথায় যদি আপনি কোন ঝাঁজ খুঁজে পান তাহলে ভদ্রতার কারনে আমার অবশ্যই দুঃখ প্রকাশ করা উচিত। ফলে আমার মন্তব্যের কথা অনাবশ্যক ঝাঁঝালো হবার কারনে আপনার কাছে দুঃখ প্রকাশ করছি। আর ব্লগ নিক সম্পর্কে আমি একটি জবাব দিয়েছি, সেটাই আমার চুড়ান্ত কথা বা মনোভাব। ফলে এই নিয়ে মনে হয় না আলোচনার কোন সুযোগ আছে। তবে নিচের একটি মন্তব্যে হয়ত প্রসঙ্গক্রমে এই নিয়ে কিছুটা বাড়তি কথা বলতে হবে। সেই ক্ষেত্রে তা দেখার অনুরোধ রইল। আমি আমার আগের মন্তব্যটিকে আপনার মন্তব্যের জবাব হিসেবে যুক্ত করতে চেয়েছি। তাতে পড়ার সুবিধা হবে। সেই কারনে তা মুছে এখানে যুক্ত করা হলো। এছাড়া অন কোন কারন নেই। আমার পক্ষে বা বিপক্ষে যে কোন আলোচনা ও সমালোচনা গ্রহন করার মানসিকতা বা পরিপক্কতা আমার রয়েছে।
খাওয়া দাওয়া শেষ, এবার চলুন আলোচনায় ফিরে যাওয়া যাক।
এই দেশের অধিকাংশ মানুষ মনে করেন, ইসলামি শরিয়া আইন মানে আল্লাহর আইন। আপনি আমি কি বুঝি বা না বুঝি সেটা এখানে আলোচ্য বিষয় নয়। ইসলামি শরিয়া আইন যে একটি গায়েবী ব্যাপার, ঐশ্বরিক ব্যাপার এটা নিয়ে সাধারন মানুষের মধ্যে যে ভুল ধারনা আছে সেটা আরো স্পষ্ট হয়েছে তালেবানরা ক্ষমতায় আসার পর। তালেবানদের মনে করা হচ্ছে ইসলামের ধারক ও বাহক। এখন যদি কখনও প্রমানিত হয় – তালেবানরা সত্যি ইসলামের ধারক ও বাহক বা তারা যা করছে সেটাই প্রকৃত ইসলাম। তাহলে তখন দুই টাকা দিয়ে লেবেঞ্চুষ কিনে চুষব আর ক্ষমা চাইব তাদের উত্থানের বিরুদ্ধে লিখে বেশরিয়তি কাজ করার জন্য। তার আগ পর্যন্ত তালেবান নামক ধর্মান্ধ গোষ্টির বিরুদ্ধে আমার অবস্থান দৃঢ় থাকবে।
আপনি বলেছেন, আমি কেন শরিয়া আইনকে পুরো আল্লাহর আইন বললাম। কারন এই দেশের অধিকাংশ মানুষের ধারনা এটাই যে, ইসলামি শরিয়া আইন মানেই আল্লাহর আইন। অথচ সোর্স অনুসারে মাত্র ১১টি সোর্সের মধ্যে মাত্র একটি সোর্স হলো সরাসরি আল্লাহই বানী। বাকি অল্প কিছু সুন্নাহ বা সহি হাদীস ব্যতীত সবগুলোই মানুষের চিন্তাভাবনার ফসল। এই বাকি চিন্তাভাবনা ও অন্যান্য বিষয়গুলোকে জেনারালাইসড করে দেখার সুযোগ নেই। কারন মানুষের সৃষ্ট আইন, স্থানীয় প্রথা বা কথিত ইজমা ও কিয়াস দিয়ে যদি মানব সমাজে ভেদাভেদ ও জটিলতার সৃষ্টি হয়, তাহলে সেটা গ্রহন না করাই শ্রেয়। আল্লাহর প্রদত্ত আইন নিয়ে কোন ঝামেলা সৃষ্টি হয়েছে বা সেটা নিয়ে কেউ প্রশ্ন তুলেছে বলে আমার জানা নেই।
দেখুন উপরে ব্লগার হাবিব একটি আয়াত সম্পর্কে বলেছেন। কোরানের এই ৫ নাম্বার সুরা মায়েদা খুবই গুরুত্বপূর্ন একটি সুরা। প্রতিটি সচেতন মুসলিমের উচিত এই সুরাটি অর্থ সহ ভালো করে অধ্যায়ণ করা। এই সুরায় আল্লাহ বলেছেন, আজ আমি তোমাদের দ্বীনকে সম্পূর্ন করে দিলাম। দ্বীনকে সম্পূর্ন বা পরিপুর্ন করে দেয়ার অর্থই হচ্ছে জীবনের সমস্ত প্রশ্নের নীতিগত জবাব এখানে আছে। হেদায়াত ও সঠিক পথের নির্দেশের জন্য আর অন্য কোথাও যাওয়ার প্রয়োজন নেই। এই নবীর পরে কোন নবী নেই। এ শরীআতের পরে কোন শরীআত নেই। এ শরীআতে যা যা নির্দেশ দেয়া হয়েছে, তা সম্পূর্ণরূপে সত্য ও ইনসাফপূর্ণ। এই সম্পর্কে আল্লাহ সুরা আল আন'আমের ১১৫ নাম্বার আয়াতে বলেন - আল্লাহ বলেন, “সত্য ও ন্যায়ের দিক দিয়ে আপনার রব-এর বাণী পরিপূর্ণ। তার বাক্য পরিবর্তন করার কেউ নেই।
আরো সহজ ভাষায়, আল্লাহ হচ্ছেন একমাত্র বিধান প্রণয়নকারী, তিনি মানুষের জন্য বিভিন্ন বিধি বিধান তৈরী করেছেন এবং সরাসরি রাসুল সাঃ তা মানুষকে জানিয়েছেন এবং বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ঘটনার মাধ্যমে তিনি কি করনীয় তা প্রয়োগ করে দেখিয়েছেন। যাতে মানুষ তা থেকে বিষয়টি বুঝতে পারে এবং পরবর্তীতে নিজেদের মধ্যে তা এপ্লাই করতে পারে। এর বাইরে অন্য কোন ব্যক্তি তিনি যত বড় সাহাবী, ঈমাম বা আলেম বা অন্য কেউ যাই হোক না কেন, তার কি কোন রাইট আছে মানুষের জন্য ইসলামের নাম দিয়ে কোন আইন সৃষ্টি করার? মানুষ অবশ্যই সমাজে শৃংখলা বজায় রাখার জন্য কিছু নিয়ম বানাতে পারে, কিছু আইন করতে পারে। কিন্তু সেই আইনকে ধর্মীয় আইন বলার কি সুযোগ আছে? যদি থাকে তাহলে আমি সেটার রেফারেন্স জানতে চাই।
আপনি দাবি করেছেন, আমি একজন বিতর্কিত মুসলিম মামুনুল এর উদহারন টেনে অতিপ্রগতিশীল অপপ্রচারের মত কাজ করলাম। ভালো কথা। তবে প্রশ্ন হচ্ছে, অতি প্রতিগশীলতার সংঙ্গা কে নির্ধারন করবে? আজকে যিনি বিতর্কিত মুসলিম বলা হচ্ছে, তাঁকে যখন গ্রেফতার করা হয় তখন হাজার হাজার মানুষ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, এমনকি ব্লগেও তাঁর পক্ষে ইনিয়ে বিনিয়ে সাফাই গেছে। সবাই ধরে নিয়েছে এটা সরকারের কোন কূটচাল এবং দেশের আলেমদের প্রতি বিদ্বেষ!
অথচ দেখুন ঘটনা চক্রে আজকে সেই মামুনুল হয়ে গেলো বিতর্কিত একজন মুসলিম। যারা কিনা দীর্ঘদিন ধরে ইসলামকে হেজাফত করে আসছে মানে হেফাজতে ইসলামের অন্যতম নেতা। যারা নিজেদেরকেই মন্দ কাজ থেকে রক্ষা করতে পারে না, তারাই এই দেশে ইসলামের পতাকা উড়ানো দায়িত্বে ছিলো। হো হো হো। সরি, যদি আমার এই অট্রহাসি আপনার কাছে অতিরিক্ত তীর্যক বা অতি প্রগতিশীল মনে হয়, তাহলে আবারও দুঃখ প্রকাশ করছি।
আমি জানি না, আপনি আমাদের এই সব ধর্মীয় দলগুলোর এজেন্ডা সম্পর্কে ওয়াকিবহাল কিনা। আমাদের প্রতিটি ধর্মীয় রাজনৈতিক দল ইসলামি শরিয়া আইন তথা আল্লাহর আইন দেশে প্রতিষ্ঠা করতে চান। এই দলে জনাব মামুনুর রহমানের মত মাওলানা আছেন। শরিয়া আইন স্থাপন করলে উনারা কি করতে পারেন, সেটার উদহারন উরফা নামক বিবাহের মাধ্যমে তিনি প্রমান করে দেখিয়েছেন। আর আপনি আমার এই তুলনাকে আপনি অযৌক্তিক বললেন।
উরফা পদ্ধতি তো শরিয়া সম্মত, অর্থাৎ ইসলামি শরিয়াতে এটা আছে। এখন যিনি শরিয়া আইন মানেন, তিনি যদি এটাকে গ্রহন করেন, তাহলে আপনি কিভাবে মানা করবেন? এটাকে মানা তখনই করা যাবে যখন বলা যাবে - শরিয়ার এই আইনটি বাতিল বা এটা ভুয়া বা এটা অগ্রহনযোগ্য কারন এটা কোরানের সাথে সাংঘর্ষিক।
উরফ বা স্থানীয় প্রথা বিষয়ক শরিয়া আইন নিয়ে আপনি যা বললেন সেটা তো বাস্তবেও প্রয়োগ হচ্ছে না। স্থানীয় প্রথার নামে অনেক বর্বর আইন শরিয়া আইনে ঢুকানো হয়েছে। যেমন মেয়েদের মুসলমানি সংক্রান্ত নিয়ম। এইগুলো প্রাচীন বিভিন্ন বর্বর জাতির নিয়ম কানুনের মধ্যে অন্তভুর্ক্ত। এই সম্পর্কে কোরানে সুনির্দিষ্টভাবে বিধি নিষেধ আছে। এছাড়াও স্থানীয় প্রথা অনুসারে বাংলাদেশের টপোগ্রাফির আরবের টপোগ্রাফির মিল না থাক স্বত্তেও এই দেশের মহিলাদেরকে পর্দার জন্য ইসলাম শরিয়ার নীতি অনুসারে চোখ মুখ হাত পা সবই ঢাকতে হয়। হুজুররা সুর করে কেঁদে কেঁদে বলেন - পৃথিবীর সুর্যের আগুন সহ্য করতে পারেন না, তো কিভাবে দোজগের আগুন সহ্য করবেন? তাই ঢাকেন, সব ঢেকে রাখেন। এতেই কল্যান।
যদি উরফ সত্যিকারভাবে স্থানীয় প্রথাকে বিবেচনা করে করা হতো, তাহলে তো আমেরিকান মহিলাদের ঢোলা লং স্কার্ট, ঢোলা শার্ট ব্যা প্যান্ট ইত্যাদিকেও পর্দার অংশ হিসাবে বিবেচিত হতো। আর বাংলাদেশের জন্য শুধু শাড়ি, সেলওয়ার কামিজ এবং বড় ওড়না! কিন্তু তাহলে এই দেশের অনেক নারী শুরু পর্দাই করেন না, ইসলামি শরিয়া মেনে চলার দোহাই দিয়ে নিজেকে বস্তার ভেতর বন্দী করে রাখে। ( কেউ যদি নিজের শখে এমন পোষাক পড়ে আমার কোন আপত্তি নাই, এটা যার যার ব্যক্তিগত বিষয়, কিন্তু কেউ যদি ধর্মের দোহাই দিয়ে এমনটা করে বলে ধর্ম এমন বলছে তাহলে সেখানে আমার আপত্তি আছে।)
পর্দার বিষয়ে একটা ছোট হাইপোথিসিস আছে। যা বিভিন্ন বই, ইতিহাস ও বিভিন্ন হুজুদের দেখে গ্রহন করা। আমরা যে সময়ের কথা বলছি, সেই সময়ে নারীদের তেমন মুল্য ছিলো না, এটা প্রতিষ্ঠিত হবার পথে ছিলো। আর সেই সময়ে আরবের অধিকাংশ পুরুষরা ছিলো ভয়াবহ যৌনকাতর। এদের কাছে নারীরা নিরাপদ ছিলো না। ফলে নারীদের নিরাপদ রাখার জন্যই এক ধরনের আড়াল প্রয়োজন ছিলো। এটাই ঐ অঞ্চলের পর্দা প্রথা চালু হবার অন্যতম কারন। এখন এই হাইপোথিসিকে আপনি যদি অতি প্রগতিশীল ক্যাটাগরি চিহ্নিত করে বাতিল বা খারিজ করে দেন, তাহলে তা নিয়ে আমার কিছু বলার নাই।
যাইহোক, আল্লাহ পাক সুরা মায়িদার ৬ নাম্বার আয়াতে বলেছেন - আল্লাহ তোমাদের উপর সংকীর্ণতা চাপিয়ে দিতে চান না, তিনি তোমাদেরকে পবিত্র করতে চান আর তোমাদের প্রতি তাঁর নি‘আমাত পূর্ণ করতে চান, যাতে তোমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর। এই আয়াতের মাধ্যমে আল্লাহ বুঝিয়েছেন তিনি অযথা জটিলতা পছন্দ করেন না। তিনি মুসলিমদের জন্য বিভিন নিয়মকে সহজ করেছেন।
আমি আমার জানা মতে ইমাম শাফি (রঃ)আর ইমাম মালেকের (রঃ) বিরুদ্ধে কিছু বলি নি। আমি যা বলেছি, সেটা ইমাম শাফিরই ভাষ্য। শুধু তাই নয় একেক মাহজাব একেক ধরনের শরিয়া আইন প্রণয়ন করেছিলো। যেমন ঠাট্টায়, নেশার ঘোরে বা চাপের মুখে স্বামী তালাক দিলে হানাফি আইনে বৈধ কিন্তু শাফি’ আইনে অবৈধ − ইসলামিক ল’ − পৃঃ ১৭৪। (বাংলাদেশ ইসলামিক ফাউন্ডেশন থেকে যেটা প্রকাশিত হয়েছে)
"সাহাবীরাও কুরআনের প্রচার নিয়ে রাসূলের (সাঃ)সাথে দ্বিমত করেছেন। গোপনে ইসলাম গ্রহণ করার পরে রাসূল হজরত আবু জর গিফারীকে (রাঃ) বলেছেন উচ্চ্চস্বরে কুরআন তেলাওয়াত না করতে........।"
এই ঘটনা দিয়ে যদি কোরান বিক্রি না করাকে জাস্টিফাই করতে চান তাহলে আমার হাসি ছাড়া আর কিছুই দেয়ার নাই। আমার জানার যদি ভুল না থাকে, তাহলে চার ইমামের সময় ইসলাম মোটামুটি স্বর্ণযুগের কাছাকাছি ছিলো। ফলে নিরাপত্তা বা অন্য যে কোন কারন দেখিয়ে কোরান অন্য ধর্মের কারো কাছে বিক্রি করা যাবে না - এটা গ্রহনযোগ্য না অগ্রহনযোগ্য সেটা বুঝার জন্য কাউকে পিএইচডি করতে হবে না নিশ্চয়!
এটা বাস্তবায়িত হলে তো আমাদের দেশের বিভিন্ন হুজুরা যে গর্ব করে বলেন - অমুক হিন্দু, অমুক খ্রিস্টান, অমুক ইহুদি রাসুল (সাঃ ) এর প্রশংসা করেছেন, সেরা বলেছেন, সেটা কিভাবে সম্ভব হতো?
আরেকটা কথা আপনি কিয়াসকে (যা আসলে একটা এনালজিকাল রিজনিং প্রসেস হিসেবে )মনে হয় খানিকটা তাচ্ছিল্যই করলেন লেখায় । কিন্তু এনালজিকাল রিজনিং ছাড়াতো আপনি আধুনিক পৃথিবীতেও চলতে পারবেন না ।
না আমি এনালজিক্যাল রিজনিংকে ক্রিটিসাইজ করি নাই। তবে গত ১৪০০ বছরেও আমাদের বিশিষ্ট এনালজিক্যাল এনালিস্টরা কখনও এক হতে পারেন নাই। তাদেরকে ক্রিটিসাইজ করছি, তাদের অযোগ্যতা ও মুর্খতার জন্য। শুধু কোরান হাদীস মুখস্ত করে একজন মানুষ আলেম হতে পারে না। আলেম হতে গেলে অনেক প্রজ্ঞা, দর্শন ও সমসাময়িক জ্ঞানেরও প্রয়োজন হয়। পৃথিবীতে হাজার হাজার ইসলামিক স্কলার আছেন। তারা কখনও কোন বিষয়ে এক হতে পেরেছেন বলে মনে হয় না। সেই কারনেই দেখবেন আমাদের দেশের হুজুরা কয়েকদিন পর পর একে অন্যকে কাফের, মুনাফেক ফতোয়া দেয়। ডাঃ জাকির নায়েক থেকে শুরু করে আরো অনেকেই আমাদের হুজুরদের কাছ থেকে কাফের ও মুনাফেক ট্যাগ খেয়েছেন। ভিন দেশী বিভিন্ন স্কলার যারা ইংরেজীতে হুংকার ছাড়া লেকচার দেয় তারা বেচে গেছে শুধু মাত্র ইংরেজীতে লেকচার দেয়ার কারনে। কোন কারনে বাংলায় বা হিন্দিতে ভাষন দিলে উনারাও কাফের বা মুনাফেক বা আহলে হাদীস বা অমুক তমুক ট্যাগ খেয়ে যেতেন। অথচ আপনি আমি গল্প করছি কিয়াস নিয়ে। হা হা হা।
কঠিন বাস্তবতা হচ্ছে কিয়াসে অংশগ্রহন করার মত জ্ঞানী ও বিদ্যান আলেম খুঁজে পাওয়া এখন খুবই কঠিন কাজ। এটা অস্বীকার করা মানে হচ্ছে কিয়াসকে অসম্মান করা। ইন্টারেস্টিং ফ্যাক্ট হচ্ছে অনেক ইসলামিক স্কলারই এই কিয়াসকে সমর্থন করতেন না। যেমন যেমন ইমাম শাফি রাঃ। তিনি সব কিছুর উর্দ্ধে কুরআন ও সুন্নাহকে প্রাধান্য দিতেন।
তালেবান নিয়ে সমালোচনা করলেই কি কেউ ইসলাম বিরোধী হয়ে যাবে? এই সমীকরন আপনি ভাবে আবিষ্কার করলেন?
হাসান মাহমুদ একজন প্রখ্যাত লেখক, গবেষক এবং স্কলার। ইসলাম সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন আন্তর্জাতি প্রতিষ্ঠানে সদস্য ও উপদেষ্টা হিসাবে কাজ করেছেন। আমার এই লেখাটি তার বিভিন্ন লেখা থেকে অনুপ্রানিত।
১৩| ০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০২১ সকাল ১১:৩৯
সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: খোলাফায়ে রাশেদিনের সময় ইজমা এবং কিয়াস হত। কিন্তু তার জন্য কেউ বলতো না যে এটা আল্লাহর আইন না। ইসলামে যোগ্য আলেমদের মানার কথা বলা আছে। এটা ইসলামের একটা বেসিক জিনিস। তাই এগুলি ওনাদের খেয়াল খুশির রায় না। কোরআন, হাদিসের আলোকেই দিয়ে থাকেন। কোন আলেম খেয়াল, খুশির রায় দিলে তাকে আলেম বলা যাবে না। যোগ্য আলেমদেরকে রসুলের ওয়ারিস পর্যন্ত বলা হয়েছে। ইসলামিক রাষ্ট্রে এই রকম বিজ্ঞ আলেমদের সমন্বয়ে গঠিত কমিটির রায়কে মানা বাধ্যতামুলক। কারণ এই অনুমতি আল্লাহ এবং আল্লাহর রসুল (সা) দিয়েছেন। এরকম অনুমতি দেয়া না থাকলে পরবর্তী জমানা এবং বর্তমান জমানার অনেক নতুন বিষয়ে রায় দেয়া যেত না। মামুনুলকে আপনারা কেন উদাহরণ হিসাবে টানেন এটা আমি বুঝি না। আপনারা কি দেশে বিদেশে কোন ভালো আলেম দেখেন না। অধিকাংশ ফতোয়া বা বিচারের রায় কোরআন আর হাদিস থেকে দেয়া হয়। সামান্য কিছু জিনিস যেগুলি নবীর যুগে ছিল না সেগুলির ক্ষেত্রে ইজমা ও কিয়াসের প্রয়োজন হয়। ইজমা ও কিয়াসকে ছোট করে দেখার বা অস্বীকার করার কোন সুযোগ নেই। কেউ যদি এটার বিপরীত ভেবে থাকে তাহলে তাকে সেটা যুক্তি দিয়ে প্রমাণ করতে হবে। আর ইজমা ও কিয়াসের প্রশ্ন তখনই আসে যখন হাদিস ও কোরআনে সরাসরি ব্যাখ্যা না থাকে। আল্লাহ যেহেতু প্রয়োজনে বিজ্ঞ আলেমদের মতামত বা রায় মানতে বলেছেন তাই এটা আমাদের মানতে হবে। তবে অবশ্যই এই আলেম মামুনুলদের মত হবে না। আপনাকে অনুরোধ করবো মামুনুল বাদ দিয়ে ভালো আলেমদের লেখা পড়েন। ভালো আলেম কারা তা জানার চেষ্টা করেন। আলেমের নামে ভুয়া আলেমদের কথায় বিভ্রান্ত না হওয়ার জন্য অনুরোধ করছি। ইজমা, কিয়াস ইসলামের প্রতিষ্ঠিত বিষয়। ইসলামে একই বিষয়ের উপর একাধিক সিদ্ধান্ত আসতে পারে। এটা ইসলামের প্রশস্ততা, সঙ্কীর্ণতা নয়। বিভিন্ন মাজহাবের উৎপত্তির এটাও একটা কারণ। অযোগ্য আলেমদের কারণে ভালো ও যোগ্য আলেমরা যেন সমালোচিত না হন সেটার ব্যাপারে আমাদের চিন্তা করা উচিত।
০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:১২
জাদিদ বলেছেন: ইসলামিক রাষ্ট্রে এই রকম বিজ্ঞ আলেমদের সমন্বয়ে গঠিত কমিটির রায়কে মানা বাধ্যতামুলক। কারণ এই অনুমতি আল্লাহ এবং আল্লাহর রসুল (সা) দিয়েছেন। যদি কোন গ্রহনযোগ্য রেফারেন্স দেখাতেন তাহলে আমার শেখার জন্য সুবিধা হতো।
আমার জানা মতে, অনেক সময় কোন নির্দিষ্ট বিষয়ে কোরানের অনেকগুলো নিয়মের কথা উল্লেখ্য করা হয়েছে। সেই ক্ষেত্রে ঐ রাষ্ট্রের প্রধান যে নিয়মটি গ্রহন করবেন, সেটাই রাষ্ট্রিয় আইন হিসাবে বিবেচিত হবে।
আমি বলছি না, আলেমদের অসম্মান করতে হবে। আমি বলছি আলেমদের সম্মান করতে গিয়ে অদ্ভুত মনগড়া কাজ করা যাবে না, যা কোরান সুন্নাহ বিরোধি। এই ক্ষেত্রে আলেমরা যদি সম্মিলিত ভুল করেও সেটা ধরিয়ে দিতে হবে।
১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০২১ বিকাল ৪:০৭
জাদিদ বলেছেন: এখানে অনেকেই এমন কমেন্ট করছেন যে আমি শরিয়া আইনের বিরুদ্ধে তথা ইসলামের বিরুদ্ধে কথা বলছি। কি হাস্যকর।
ইজমা ও কিয়াস নিয়ে কোন সমস্যার কথা আমি বলি নি। আমি বলেছি, যেহেতু এটা মানুষের সিদ্ধান্তগত একটি বিষয়, এখানে ভুল ভ্রান্তি থাকতেই পারে। ফলে যদি কেউ শরিয়া আইনে আল্লাহর আইনের সাথে তুলনা করে, সেটা কি সঠিক হবে কি না?
সম্ভব হলে আমাকে এই ব্যাপারে হ্যাঁ বা না তে জবাব দিবেন।
সবচেয়ে বড় কথা এই বিখ্যাত ইমাম আবু হানিফা রাঃ বলেছেন, ইজমার জন্য দুইটি জিনিস গুরুত্বপূর্ন। এক আপনাকে ইসলামিক স্কলার হওয়া এবং একই যুগের হওয়া। যদি আমি এই কথা মানি, তাহলে দেখা যাবে, অন্য যুগে যে সকল সিদ্ধান্ত ছিলো, সেটা চাইলে বর্তমানের যুগের আলেমরা পরিবর্তন করতে পারবে। ধরুন কোন একটা বিষয়ে ইমাম হানাফি, ইমাম মালেকি ইজমার মাধ্যমে কোন একটা সিদ্ধান্ত দিলো। বর্তমান যুগের প্রেক্ষিতে তা যদি অচল হয়, তাহলে সেই বিষয়টি কি আমাদের আলেমরা পরিবর্তন করার সাহস রাখেন? নাকি সেটাকেই অনুসরন করবেন? যুগের সাথে তো অনেক কিছুই পরিবর্তিত হয়।
আপনার কাছে আমার প্রশ্ন, ইসলামিক স্কলাররা কি কখনও ভুল করতে পারেন কি না?
দুই, যদি কোন ভুলের ভিত্তিতে কোন বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেন আর যেটা প্রকৃতপক্ষে কোরান ও সুন্নাহ বিরোধী তাহলে সেই ক্ষেত্রে কি হবে? যেমন ধরুন, নারী শিক্ষার ব্যাপারে বাংলাদেশের সমাজে আলেম বলে স্বীকৃত অনেক হুজুরের মতবাদ তালেবানদের মত অর্থাৎ নারীরা পর্দা করবে, ঘর সংসার সামলাবেন এবং বাচ্চা কাচ্চাকে শিক্ষিত করতে যতটুকু শিক্ষা পাওয়া প্রয়োজন ততটুকুই শিক্ষিত হলেই যথেষ্ট। আবার অন্য কিছু আলেম আছেন, যারা এই ব্যাপারে বলবেন ইসলামি বিধি বিধান মেনে নারী শিক্ষা ও কাজের ক্ষেত্রে কোন সমস্যা নাই।
যেমন ধরুন হাট হাজারীর মাদ্রাসার প্রয়াত আহমেদ শফী সাহেব। তিনি বাংলাদেশের কওমী মাদ্রাসার ছাত্রদের নয়নের মনির পাশাপাশি, দেশের অনেক আলেমই তাঁকে ওস্তাদ মানে এবং তাঁকে অন্যতম সেরা আলেম হিসাবে স্বীকৃতি দেয়। তাঁর জীবিত কালে যদি দেশে শরিয়া আইন প্রতিষ্ঠিত হতো, তাহলে তিনি শরিয়া বোর্ডে থাকতেন। যেখানে দেশের একজন স্বীকৃত আলেমের অবস্থান নারী শিক্ষার বিরুদ্ধে সেখানে তিনি এই সংক্রান্ত নেতিবাচক সিদ্ধান্তই জানাতেন বলে ধরে নেয়া যায়। তিনি এমনটা করতেন, কারন তিনি বিভিন্ন ওয়াজ মাহফিলে এই বিষয়ে স্পষ্ট বক্তব্য রেখেছেন। ফলে তাঁর এই মতামত অনেক আলেমকেই প্রভাবিত করত। কারন তিনি অনেকের শিক্ষক হিসাবেও পরিচিত।
এখন সেই সকল মতবাদের ভিত্তিতে যদি দেশে নারীদের পড়াশোনার ব্যাপারে আমরা তেমন সিদ্ধান্ত নিতাম, তাহলে সেটা কি কোরান ও সুন্নাহ অনুসারে সঠিক হতো কি না?
আমার দাবি হচ্ছে শরিয়া আইনকে ইসলামিক আইন বলার কোন সুযোগ নেই। আমি এখন পর্যন্ত সেই নীতিতেই অটল আছি।
১৪| ০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০২১ সকাল ১১:৫৪
শাহ আজিজ বলেছেন: এই লেখায় বের হয়ে এসেছে প্রত্যেকের আসল পরিচয় । আমরা সতর্ক হব ভবিষ্যতের জন্য ।
ধন্যবাদ জাদিদ , তোমার উত্তরগুলো খুব ঝাঁজালো হয়েছে ।
১৫| ০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০২১ দুপুর ১২:০৩
এ আর ১৫ বলেছেন: আমার ১১ নং কমেন্টে কতগুলো শরিয়া আইণের উদাহরন দিয়েছি ।
আমি মমিনদের আহবান করছি ---- এগুলো আল্লাহর আইণ এবং কোরান হাদিস থেকে নিয়ে বানান হয়েছে , সেটা প্রমাণ করার জন্য।
সব গুলো যদি না পারেন তবে অনন্ত একটার পক্ষে প্রমাণ নিয়ে আসার জন্য আহবান করছি ।
১৬| ০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০২১ দুপুর ১২:১৭
নতুন বলেছেন: শরিয়া আইনের পক্ষে বিপক্ষে বেশ কিছু প্রবন্ধ ও বই পড়ার পর আমার ব্যক্তিগত মুল্যায়নে এটাকে আল্লাহর আইন বলার সুযোগ নেই। কারন শরিয়া আইনের অনেকগুলো ধারা কোরানের সাথে সাংঘর্ষিক। আর এই সাংঘর্ষিক অবস্থান সৃষ্টির পেছনে মূল কারন জাল হাদিস।হযরত মোহাম্মদ সাঃ এর মৃত্যুর পর ইসলাম বহুভাবে বিভক্ত হয়েছে। যে মহানুভবতা, সাম্য ও মানবিক সৌন্দর্যের গুনে ইসলাম দ্রুত প্রসারিত হয়েছে, সেই সকল আদর্শ, নীতি, নৈতিকতা বিরোধী অনেক কিছু পরবর্তীতে ব্যক্তিস্বার্থ, রাজনীতি এবং ইসলাম বিরোধী চক্রের ষড়যন্ত্রে ইসলামের অংশ হিসাবে যুক্ত হয়েছে। পাশাপাশি পড়াশোনা, গবেষনা ইত্যাদির মত গুরুত্বপূর্ন বিষয়কে অপব্যাখ্যা দিয়ে সাধারন মুসলমান থেকে দূরে রাখা হয়েছে। ফলে বিভিন্ন জাল হাদিসের ভিত্তিতে অনেক কুপ্রথা ইসলামে অংশ হিসাবে প্রচলিত হয়ে যায়। শরিয়া আইনও ঠিক এমন একটি ব্যাপার।
ভাই সমস্যা হইলো যারা ব্রেন ওয়াস্ড তারা কোন কিছু নিয়ে প্রশ্ন করেনা। বড় হুজুর বলেছেন বলেই মেনে নেবে। এরা চিন্তা করেনা শুধুই অন্ধ অনুসরন করে।
১৭| ০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০২১ দুপুর ১২:৫৮
ঈশ্বরকণা বলেছেন: আমার মন্তব্যের উত্তরে আপনার মন্তব্য দু'টা দেখলাম। দুটো মন্তব্যের কঠিন ঝাঁঝালো ভাষা ও ভাব দেখে খানিকটা অবাক হয়েছি বলাই বাহুল্য। ইসলাম আমার বা আপনার ব্যক্তিগত ধারণা দিয়ে সার্বজনীন ভাবে অনুশীলন করা সম্ভব নয়। সেটা অনুশীলনের জন্য কিছু নিয়ম নীতি থাকাই উচিত বলে আমার মনে হয় ।ইসলাম সম্পর্কে আপনার একটা ধারণা আছে। আমারও আছে। আমাদের ব্যক্তিগত ধারণা তর্কের বিষয় হতে পারে না । যাক, আপনার পোস্টের মূল বক্তব্য নিয়ে বা আমার মন্তব্যের উত্তরে আপনার মতামতের বিষয়েও আমার কিছু বলার নেই। শুধু আমার মন্তব্যের একটা লাইন নিয়ে আপনার প্রথম মন্তব্যের ব্যাপারে কয়েকটা কথা ।
আসলে আমার সব সময়ই মনে হয় আপনি যেই নিকেই লিখুন এই ব্লগে তাতে আপনার পরিচয়ের খুব তারতম্য হয় না। যেমন আপনি যদিও বলেছেন এটা আপনার ব্যক্তিগত ব্লগ কিন্তু দেখেন ব্লগের ব্যাঘ্রসম এক ব্লগার ভালো ভালো ব্লগ পোস্টগুলোতেও আপত্তিকর ভাষায় নানা মন্তব্য করলেও আপনার এই লেখায় কোনো রকমে এক লাইনে যেন ভাজা মাছটি উল্টে খেতে জানে না ধরণের মন্তব্য করেই খালাস ! আপনি বুঝতেই পারছেন এই লেখা অন্যরা লিখলে সে কি বলতো । আপনার গতকালের এই নিকের লেখাটাতেই এক ব্লগার তার নিক সেইফ হয়নি বলে জানিয়েছেন আপনাকে সমাধান পাবার আশায় । আপনিও তাকে কি করতে হবে সেফ করতে হলে সেটা এই নিকেই জানিয়েছেন । তাই আপনি ব্যাক্তিগত ব্লগ আইডি বললেও সেটা আর আসলে ব্যক্তিগত থাকে না কখনোই । আপনার আরেকটা পরিচয়ই আপনার ব্যক্তিগত নিকটার পরিচয়কে ছাপিয়ে সামনে চলে আসে। আমার সেটা মনে হয় সব সময়ই আপনার পোস্টে (আপনি একজন চৌকষ ব্লগার । কিন্তু সবার অজানা একটা মাল্টি না খুললে আপনার লেখা আর পরিচয়ের মধ্যকার দ্বান্দ্বিক সমস্যা কেমন করে সমাধান হবে সেটা নিয়ে আর কিছু ভাবতে পারছি না, স্যরি )। তাই আমি আপনার এই নিকটা খেয়াল করেও কথাটা বলেছিলাম অন্য কোনো উদ্দেশ্য ছিল না। যাক তারপরেও আপনার খুব খারাপ লেগে থাকলে (যেটা মনে হয় লেগেছে) আপনি আমার কমেন্ট মুছে দিতে পারেন কোনো অসুবিধে নেই । আপনার পোস্ট নিয়ে আমার ওপিনিয়নটাও দেখেছেন এখন এটা মুছে দিলেও কোনো সমস্যা নেই আমার পক্ষ থেকে সেটা জানিয়ে রাখলাম । আমার মন্তব্যের জবাব দেয়াটা খুব বেশি বড় বা জরুরি কিছু নয় । ভালো থাকুন ।
০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০২১ রাত ১১:৩৩
জাদিদ বলেছেন: ভাইয়া আমি কিন্তু আপনার কমেন্টে রিপ্লাই করেছি। কেন মুছে দিয়েছিলাম, সেটা উল্লেখ্য করেছি।
আপনার মন্তব্য এবং মতামতের জন্য ধন্যবাদ। সময় করে আলোচনায় অংশ নিয়ে আমার জানার পথকে সুগম করেছেন দেখে আপনার প্রতি কৃতজ্ঞতা।
১৮| ০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০২১ দুপুর ১:১৩
সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: ঈশ্বরকণার সাথে একমত। আপনি যে নামেই লেখেন। সবাই জানে আপনি ব্লগের মডু। মডুকে সবাই সমিহ করে, সঙ্গত কারণে। এতো বড় বুকের পাটা ব্লগে কারো নাই। আপনি যতই বলেন আমি একজন অতি সাধারণ ব্লগার হিসাবে ব্লগিং করছি। এটা আসলে হয় না।
আমার মতামত হোল মডুর উচিত একদম বেনামে ব্লগিং করা। তা না হলে ব্লগিং করে আপনিও মজা পাবেন না। কারণ আপনার যে কোন নিকেই কেউ কড়া কোন কথা বলবে না। কড়া মন্তব্য অনেক সময় ব্লগিং এ দরকার হয় উভয় পক্ষের জন্য। যাই হোক এটা একান্তই আমার ব্যক্তিগত মতামত। আপনার খারাপ লাগলে আপনি এই মন্তব্য অগ্রাহ্য করতে পারেন।
০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:১৮
জাদিদ বলেছেন: ধন্যবাদ। তবে আমি আমি একমত নই। আপনি যা বলছেন সেটার মধ্য একটি অসততা এবং অনৈতিক কাজকে বৈধ বলার ইংগিত আছে। এখন পর্যন্ত এমন কোন রেকর্ড নাই আমাকে যৌক্তিক সমালোচনা করার কারনে বা কেউ যদি আমাকে গালিও দেয় সেটা আমি মুছে দিয়েছি। ব্লগ টিমে অন্য সদস্যও আছেন। তারাও ব্যাপারটা পর্যবেক্ষন করেন। ফলে কেউ যদি আমাকে কড়া কথা বলেন, বা আমাকে তীর্যক ভাষায় সমালোচনা করেন- সেটাকে আমি তার বিরুদ্ধে ব্যবহার করার কোন নজির বা উদহারন নেই।
আমি এখন মন্তব্য কম করি। কারন আমার মন্তব্যের ধরন ও রেকর্ড ভালো না। মডারেটর হবার আগে আমি ব্লগার ছিলাম। আমি জানি কিভাবে অশালীন শব্দ ব্যবহার না করেও তীব্র সমালোচনা করা যায়।
আপনাকে ধন্যবাদ।
১৯| ০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০২১ দুপুর ১:৩৩
এ আর ১৫ বলেছেন: ব্লগের মমিনরা দেখছি এক কাট্টা হয়েছে -- এর কারন স্পষ্ঠ--- এটা ওনাদের স্কেপ রুপ । এডমিন কি ভাবে ব্লগ লিখবে বা কি করবে ওনারা সেটা নিয়ে খুব ব্যস্ত হয়েছেন --- আসল কথার কোন উত্তর নাই ।
এনাদের দাবি যে ভূয়া সেটা প্রমাণ হয়ে যাচ্ছে তাই এনারা ঐ পন্থা অবলম্বন করেছেন ।
ওনাদের দাবি শরিয়া আইণ নাকি আল্লাহর আইণ --- কিন্তু বাস্তবে দেখা যাচ্ছে ওগুলো মানব রচিত এবং অনেক গুলো কোরান হাদিস বিরুধী ( আমার ১১ নং কমেন্টে পাবেন এবং এই রকম আরো হাজার হাজার শরিয়া আইণ আছে )
একটা দেখুন -----
“(স্বামীর) বৌ-তালাকে সাক্ষ্য শর্ত নহে” (বি-ই-আ ১ম খণ্ড, ধারা ৩৪৪)।
তার মানে কোন সাক্ষী না রেখে যদি স্বামী তালাক দেয় , তাহোলে তালাক হয়ে যাবে ।
এবারে খুলুন কোরাণ, সুরা ত্বালাক, আয়াত ২ − “তোমরা যখন স্ত্রীদিগকে তালাক দিতে চাও তখন দুইজন সাক্ষী রাখিবে।”
এই ধরনে আরো বহু আইণ আছে , তার সামান্য কিছু ১১ নং কমেন্টে পাবেন , ধন্যবাদ
২০| ০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০২১ দুপুর ১:৩৭
এ আর ১৫ বলেছেন: বলদে আকবরকে অন্য একটা ব্লগে আরেক এডমিন ধর্ম অপপ্রচারের জন্য নিন্দা করলে উনি ক্ষেপে যান ( চন্দ্রনাথ পাহাড়ে আজান, ইসলামের দেওয়া শিক্ষা?) এবং এখানে ও এডমিনকে টার্গেট করেছেন ।
০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:১২
জাদিদ বলেছেন: অনুগ্রহ করে ব্যক্তি আক্রমন করার প্রয়োজন নেই। আমার ভালো লাগ না। কাল্পনিক ভালোবাসা আমার ব্লগের আরেকটি নিক।
২১| ০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:১৮
জাদিদ বলেছেন: আমি আস্তে ধীরে সকলের মন্তব্যের জবাব দিচ্ছি।
২২| ০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:৩১
আখেনাটেন বলেছেন: ঈশ্বরকণা বলেছেন:
ইদানিং আফগানিস্তানে তালেবানের বিজয় আর সে নিয়ে ব্লগে ইসলাম বিরোধীদের (ইসলাম সম্পর্কে গন্ডমুর্খও হতে পারে) অবাক করা কথাবার্তা ভরা লেখাজোখা পরে ত্যাক্ত বিরক্ত হয়েই এই বিরাট কমেন্ট করলাম । --- ব্লগার ঈশ্বরকণার কাছে প্রশ্ন, 'আপনি কি তালেবানের বিজয়কে ইসলামের বিজয়/শরিয়া আইনের বিজয় ভাবছেন?' যদি 'হ্যাঁ' হয় তাহলে কোন এঙ্গেলে তাদের এই বিজয় ইসলামের বিজয় জানালে উপকৃ্ত হতাম। আর যদি 'না' হয় তাহলে কেউ তাদের তথাকথিত শরিয়া আইনের বাড়াবাড়ি (আক্ষরিক অর্থেই) নিয়ে সমালোচনা করলে আপনার 'বিরক্ত' হওয়ার কী কারণ থাকতে পারে? জাস্ট কিউরিয়াস মাইন্ড...অন্যভাবে নিবেন না আমার এ বক্তব্য?
ছাত্রভাইদের বিজয়ে দেশি ছাত্রভাইদের চাপা উল্লাস (দেখিস আমরাও একদিন?) নিয়ে শংকিত এক নাদান বাংলাদেশি।
আরেকটি বিষয়: আপনি এক জায়গায় লিখেছেন, '" ইসলামিক ফান্ডামেন্টাল রুলসগুলো শরিয়া আইনে একই থাকবে কিন্তু কম্প্লিমেন্টাল আইনগুলো সময়ে সময়ে পরিবর্তিত বা যোগ বিয়োগ হবে।" --- অর্থfৎ কিছু শরিয়া আইনও সময়ে সময়ে পরিবর্তিত হতে পারে তাদের মেরিট ও যুগের হাওয়ার সাথে।
আবার লিখেছেন: কুরআনের বলা আইনগুলো প্রয়োগ করতে যেয়ে যেই কম্প্লিমেন্টারি আইনগুলোর দরকার সেগুলো নিয়ে অনর্থক যারা প্রশ্ন তুলে তারা সৎ উদ্দেশ্য থেকে সেই প্রশ্নগুলো করে কি না সেটা বোঝা সমস্যা হয়ে গেলো আপনার লেখা থেকে । এখানে ত্রুটি বিচ্যুতির ব্যাপার না খোঁজাই ভালো। কিছু দুর্জন মানুষ নিজের স্বার্থে আইন টুইস্ট করলো সেজন্য শরিয়া আইনের"--- হাজারো ত্রুটি বিচ্যুতি আছে। খোলা মনে জানার আগ্রহ নিয়ে পড়লে যে কেউ এর অসারতা টের পাবে" এই ধরণের মন্তব্য না করাই সমিচীন বলে আমার ধারণা। --- উপরে একবার বললেন কমপ্লিমেন্টারি আইন সময়ে সময়ে পরিবর্তন হতে পারে। এখানে আবার বলছেন, 'ত্রুটি বিচ্যুতির ব্যাপার না খোঁজাই ভালো', 'এই ধরণের মন্তব্য না করাই সমিচীন' বলছেন। কেমন যে গোলমেলে ঠেকছে?
২৩| ০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:৫৬
শেরজা তপন বলেছেন: ওরেব্বাস!!!
ব্লগে বহুদিন পরে মনে হচ্ছে দুর্দান্ত কিছু ব্লগীয় আলোচনা হচ্ছে।
দুটো পষ্ট আজকে ব্লগকে নাড়া দিয়েছে বেশ।
প্রিয় জাদিদ ভাই, আমার এখানে মন্তব্য করার যোগ্যতা নেই- আমি শুধু জানতে এসেছি।
০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০২১ রাত ১১:৩১
জাদিদ বলেছেন: প্রিয় শেরজা তপন ভাই, আপনার বিনয়ের জন্য ধন্যবাদ। এই সকল বিষয়ে আমি নিতান্তই কম জানি। যতটুকু পড়ার চেষ্টা করছি, আল্লাহ যেন আমাকে সঠিক পথ দেখায়! আশা করি বিভিন্ন গুনি ব্যক্তিদের মন্তব্যে আমরা অনেক কিছু জানতে পারব।
২৪| ০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০২১ রাত ৮:১৫
সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: বর্তমান পৃথিবীতে কোন আদর্শ ইসলামী রাষ্ট্র নাই যেখানে সঠিকভাবে শরিয়া আইন অনুসরণ করা হচ্ছে। সৌদি আরবে শরিয়া আইন আছে। তবে সেটাকেও পুরোপুরি সঠিক ও ন্যায়সঙ্গত এমন বলা যাবে না। তারপরও উদাহরণ হিসাবে বলছি যে ওখানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় কর্তৃপক্ষের নাম কাউন্সিল অব সিনিয়র স্কলারস ( মজলিস হায়াত কিবার আল উলামা)। আলেমদের সমন্বয়ে গঠিত এই কউন্সিল বাদশাহকে ধর্মীয় ব্যাপারে পরামর্শ দেয় এবং শুধু এই কমিটি বা এর দ্বারা অনুমতি প্রাপ্ত আলেমরা ফতওয়া দিতে পারে। ইসলামের বিধি বিধান মেনেই এই কমিটি গঠন করা হয়েছে। নির্দিষ্টভাবে সূত্র চাইলে আমাকে আরও সময় দিতে হবে। কারণ আমাকে খুঁজে বের করতে হবে। তবে ইসলামী নিয়ম মেনেই এই কাউন্সিল গঠন করা হয়েছে। এরা কোরআন হাদিসের আলোকেই ফতওয়া দিয়ে থাকেন। প্রথম চার খলিফাও গুরুতর কোন বিষয়ের ক্ষেত্রে বিশিষ্ট সাহাবীদের মতামত নিতেন এবং সেই অনুযায়ী সিদ্ধান্ত দিতেন। মানুষ মাত্রেই ভুল হতে পারে তাই যে কোন ভুল সংশোধনের সুযোগ অবশই আছে যদি অভিযোগ ওঠে এবং তা সঠিক বলে প্রমাণিত হয়।
সৌদি বাদশাহ চাইলেই কোরআনের যে কোন একটা ব্যাখ্যাকে গ্রহণ করতে পারেন না। বরং এই কাউন্সিল যেটাকে সঠিক বলবে সেটাই নিতে হবে। বাদশাহর কোন ক্ষমতা নাই। নিজের মতো ব্যাখ্যা করার, কারণ সে আলেম না। তবে আগেই বলেছি যে আদর্শ কোন ইসলামী রাষ্ট্র কোন দেশে নাই। তাই কোনটাই ত্রুটি মুক্ত না।
আলেমদের দ্বারা সম্মিলিতভাবে ভুল করার সম্ভবনা কম থাকে কারণ একটা দেশের শ্রেষ্ঠ আলেমদের নিয়েই এই ধরণের কাউন্সিল গঠন করা হয়ে থাকে। আর কাউন্সিল মানেই একজনের মতামত না। কয়েকজন শ্রেষ্ঠ আলেমের মতামত। ভুল যদি কোন কারণে করেই থাকে এবং সেটা যদি প্রমাণ করা যায় অবশ্যই সংশোধনের সুযোগ আছে। হজরত আবু বকর রা: খলিফা নির্বাচিত হওয়ার পর জাতির উদ্দেশে যে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভাষণ দেন তাতে তিনি বলেন, "হে মানবমণ্ডলী! আমি আপনাদের খলিফা নির্বাচিত হয়েছি, অথচ আমি আপনাদের কারো অপেক্ষা উত্তম ব্যক্তি নই। আমি ভালো কাজ করলে আপনারা আমার সহযোগিতা করবেন এবং বিচ্যুত হলে সহজ সরল পথে দাঁড় করিয়ে দেবেন।"
২৫| ০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০২১ রাত ৯:৩৪
আমারে স্যার ডাকবা বলেছেন: যারা মাদক উৎপাদন করে এবং মাদক ব্যবসা করে, নির্বিচারে নিরীহ মানুষ হত্যা করে, জুলুম করে, অত্যাচার করে, সাধারন জনগন ও গোত্রীয় প্রধানদের সমর্থন না নিয়ে অস্ত্রের বলে ক্ষমতা দখল করে তারা ইসলামী শাসন বজায় রাখবে এইটা ভাবাই তো বোকামি।
তারপরেও এই তালেবান বাংলার ঈমানী জোশে ভর্তি নব্য মুজাহিদদের চোখে ইসলামের ধারক ও বাহক।
আপনার এই লেখার কোন প্রভাবই পড়বে না। কারন যাদের এই লেখা পড়া উচিৎ, তারা কখনো লেখা-পড়া করে নিজ বুদ্ধিতে কোন আদর্শ অনুসরন করে না। বড় হুজুর-ছোট হুজুরের বয়ান, ওয়াজ মাহফিলে হুজুরের জোশ ভর্তি ওয়াজ ও ইউটিউবের ইসলামী(?) বক্তাদের বক্তব্যকেই ১১০% সহীহ হিসেবে মেনে চলে।
অবশ্য ব্লগেও কিছু শিক্ষিত নির্বোধ আছে, যারা তালেবান প্রেমে অন্ধ। তারা যদি এই লেখা পড়ে।
২৬| ০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০২১ রাত ১০:৫০
তানভির জুমার বলেছেন: বুঝলাম কার বই পড়ে আপনি শরীয়া আইন কে কিছু অবাস্তব যুক্তি দিয়ে অস্বীকার করতেছেন। আমার কমেন্ট রিপ্লাই দিবেন আপনাকে শরীয়া আইনের বেপারে একটু ক্লিয়ার ধারনা দেওয়ার চেষ্টা করবো। আমি বিশাল বিজ্ঞ ব্যক্তি নই তারপরও চেষ্টা করবো। ১) মহান আল্লাহ্ ইসলাম কে একমাত্র তার মনোনীত ধর্ম হিসেবে কিয়ামত পর্যন্ত রাখবেন এটা আপনি বিশ্বাস করেন? ২) যে সমস্যার সমাধান কোরআন হাদিসে সরাসরি নেই তা যদি কোরআন-হাদিসের আলোকে বের করা হয় তা যে শরীয়া আইন এটা কি আপনি মানেন? ৩) কোন হাদিস জাল আর কোন হাদিস সহি এটা বের করার মাপকাঠি কি সেটা কি আপনি জানেন?
০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০২১ রাত ১১:৩৯
জাদিদ বলেছেন: ক্লাস ফাইভ পাসের সার্টিফিকেট আগে আপলোড করেন। তারপর আমার পোস্টে কমেন্ট করতে আসবেন। এর বাইরে অন্য কোন কমেন্ট করলে সেটা জুতা সহকারে মুছে দেয়া হবে। যার এবং যাদের লেখা ও বই পড়ে এই সংক্রান্ত বিষয়ে আমি জেনেছি, প্রতিদিন চুল আঁচড়াবার সময় তাদের যে কয়টি চুল ও পশম এমনি ঝরে পড়ে, আপনি সেটাও সমতুল্য নয়।
অথবা, প্রথমে আন্তরিকভাবে ক্ষমা চাইবেন আপনার তৃতীয় শ্রেণী টাইপের হামবড়া ভাবের জন্য। তারপর এই পোস্টে আপনার যে সকল বিষয়ে আপত্তি আছে, সে সকল বিষয়ে যৌক্তিকভাবে লিখুন। আমি যতটুকু জানি, তার ভিত্তিতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করব জবাব দিতে। যদি আমার কোন তথ্য ভুল হয় বা আমি ভুল বলে থাকি, তাহলে সেটা স্বীকার করে নিবো। তবে আপনার ভুল ধরা পড়লেও আপনি শিখবেন না এটা আমি জানি।
২৭| ১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০২১ রাত ১২:৩০
নীল আকাশ বলেছেন: খুব জটিল একটা বিষয় নিয়ে পোস্ট করেছেন। আমি ঠিক এই বিষয় নিয়ে একটা লেখা শুরু করেছিলাম। সেখান থেকেই কিছুটা অংশ তুলে দিচ্ছি।
ইসলামে মত পার্থক্য কিভাবে, কোন জায়গায় তৈরি হলো সেটা বুঝার জন্য আমাদের ফিরে যেতে হবে সে সুদূর সাহাবীদের আমলে, যেখানে ইসলামের ইতিহাসে প্রথম মত পার্থক্য সৃষ্টি হলো। শারঈ কোন হুকুম জানার জন্য চেষ্টায় নিয়োজিত থাকাকে ইজতেহাদ বলে। যিনি এ ধরণের চেষ্টায় নিয়োজিত থাকেন, তাকে মুজতাহিদ বলে। শরীয়তের বিধি-বিধান আহরণ করার জন্য মুজতাহিদের প্রচেষ্টাকে ইজতিহাদ বলে। রাসুলুল্লাহ সাল্লালাহু আলাহিস ওয়াসাল্লাম এর সময়কালেই সম্মানিত সাহাবীদের মাঝে মত পার্থক্য নিয়ে বেশ কিছু ঘটনা বর্ননা করা আছে। শুরুতেই সেই ঘটনাগুলি দেখে আসা যাকঃ
১) আবূ দাউদ, তিরমিযী, বায়হাকী ও মুসনাদে আহমদে বর্ণিত হয়েছে-
রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন হযরত মু‘আয রাদিয়াল্লাহু আনহু’কে ইয়েমেনের আমীর বানিয়ে পাঠানোর মনস্থির করলেন, তখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে জিজ্ঞাসা করলেনঃ হে মু‘আয, তোমার নিকট যদি কোন শরঈ সমস্যা আসে কিভাবে ফয়সালা করবে? উত্তরে তিনি বললেনঃ কিতাবুল্লাহ দ্বারা ফয়সালা দেবো। অতপর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ কিতাবুল্লায় না পেলে? তখন তিনি বললেনঃ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সুন্নাহ অনুযায়ী ফয়সালা দিবো। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ যদি সুন্নাহতেও না পাও, কিতাবুল্লাতেও না পাও তখন? তিনি বললেন, আমার যোগ্যতা দিয়ে ইজতিহাদ করে তার ফয়সালা দেবো। কোন ত্রুটি করবো না। অতপর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার বুকে হাত মোবারক রেখে বললেনঃ ঐ আল্লাহর জন্য প্রশংসা যিনি রাসুলের প্রতিনিধি’কে এমন কাজের তাওফীক দিয়েছেন যা দ্বারা তার রাসূল সন্তুষ্ট। (সুনানে আবু দাউদঃ হা-৩৫৯২, সুনানে তিরমিযীঃ হা-১৩২৭ সূত্রঃ লাগবে এখানে)
এই হাদীস দ্বারা ইজতিহাদ করা যে জরুরী সেটা সাব্যস্ত হলো। উক্ত হাদীস দ্বারা প্রমানীত যে হযরত মু‘আয রাদিয়াল্লাহু আনহু’র ইজতিহাদের প্রশংসা করেছেন স্বয়ং রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম।
২) বুখারী শরীফের কিতাবুল মাগাযিতে বর্নিত আছে যে-
বনু-কুরায়যার যাত্রাকালে আসরের নামায পথে পড়বে কি পড়বে না এ নিয়ে সাহাবাদের ইজতিহাদ দু’রকম হয়েছিল। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছিলেনঃ তোমরা তাড়াতাড়ি করো যেন গন্তব্যস্থল বনু-কুরায়যায় গিয়ে আসর নামায পড়তে পারো। কিন্তু ঘটনাক্রমে রাস্তায়ই আসরের সালাতের ওয়াক্ত হয়ে গেলো। তাই সালাত আদায় করা নিয়েও মতভিন্নতা দেখা দেয়। কারণ তখন সাহাবীদের কাছে দু’টি ‘নস’ তথা অকাট্য প্রমাণ আছে, অথচ এরা পরস্পর বিরোধী। পবিত্র কুরআন শরীফে সুস্পষ্টভাবে দেয়া আছেঃ “নিশ্চয় নামায মুসলমানদের উপর ফরয নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে।” (সূত্রঃ ১০-৩)
কিন্তু রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেনঃ “বনু কুরায়যায় গিয়েই আসরের সালাত পড়বে।”
এক্ষেত্রে হাদীসের উপর আমল করলে কুরআনের উপর আমল করা যায় না। আর কুরআনের উপর আমল করলে হাদীসের উপর আমল হয় না। সাহাবীদের মধ্যে যারা মুজতাহিদ ছিলেন, তারা এখানে ইজতিহাদ করে কুরআনের উপর আমল করে হাদীসের বিভিন্ন ব্যাখ্যা দিলেন এবং পথিমধ্যেই সালাত আদায় করে নিলেন। কিন্তু আরেকদল হাদীসের উপর আমল করে রাস্তায় নামায পড়লেন না; বরং নামায কাযা করলেন এবং কুরআনের আয়াতের ভিন্ন ব্যাখ্যা দিলেন। অতঃপর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট উভয় দল নিজেদের ইজতিহাদের বিবরণ তুলে ধরলেন। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কাউকে খারাপ বললেন না, বরং উভয়ের মতভিন্নতা সমর্থন করলেন।
এখান থেকেও প্রতীয়মান হয় যে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সামনে সাহাবীদের আমলী বিষয়ে মতভিন্নতা দেখা দিয়েছিল এবং রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজেই সেটাতে সমর্থন করেছেন।
৩) ঐতিহাসিক বদর যুদ্ধ শেষ যুদ্ধবন্দীদের’কে হত্যা করা হবে, না মুক্তিপণ নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হবে এই বিষয়ে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাহাবীদের সাথে পরামর্শ করার জন্য আলোচনায় বসলেন। সাহাবীদের মধ্যে তখন এটা নিয়ে মত ভিন্নতা দেখা দেয়। হযরত আবূ বকর রাদিয়াল্লাহু আনহু’র মতামত ছিল এদের মুক্তিপণ নিয়ে ছেড়ে দেয়া। কারণ তারা হয়তো পরে ইসলাম গ্রহণ করে নিবে। এদিকে মুসলমানদের আর্থিক অবস্থাও দূর্বল। এটা হযরত আবূ বকর রাদিয়াল্লাহু আনহু’র ইজতিহাদ। অন্যদিকে হযরত উমর রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেনঃ তাদের প্রত্যেককে নিজ নিজ মুসলমান আত্মীয়দের দ্বারা হত্যা করা হোক। এটা হযরত উমর রাদিয়াল্লাহু আনহু এর ইজতিহাদ। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হযরত আবূ বকর রাদিয়াল্লাহু আনহু’র পক্ষে ফয়সালা দিলেন।
এখানেও প্রমাণিত হলো, রাসূলের সামনেই ইজতিহাদ এবং ইজতিহাদের মধ্যে মত ভিন্নতা সুস্পষ্ট। ইজতিহাদগত মত ভিন্নতা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সামনেই বহুবার ঘটেছে। শরঈ আমলী ফিকহী বিষয়েও ইজাতিহাদ ও মতভিন্নতা সাহাবীদের মধ্যেই স্বয়ং রাসূলের সামনেই ঘটেছে। ইজতিহাদের মত ভিন্নতার প্রতি সন্তুষ্ট হওয়ার প্রমাণ সাহাবীদের সময়কাল থেকেই আছে।
সুতরাং না জেনে, না বুঝেই শুধু কুরআন মেনেই চলতে হবে এটা অমূলক ধারনা। আল্লাহ রাব্বুল আলামীণ আমাদেরকে সরাসরি মহানবী সাল্লালাহু আলাহিস ওয়াসাল্লামকে অনুসরন করতে বলেছেন। অথচ উনি নিজেই সাহাবীদের মাঝে ইজতিহাদ সমর্থন করেছেন। যেহেতু মহানবী সাল্লালাহু আলাহিস ওয়াসাল্লাম আল্লাহর নির্দেশ ছাড়া কোন কিছুই করতেন না, ইজতিহাদ তাহলে আল্লাহর নির্দেশেই হয়েছিল। মহানবী সাল্লালাহু আলাহিস ওয়াসাল্লাম স্বয়ং আল-কুরআন থেকে ইজতিহাদ করে অনেক বিষয়ে সমাধান প্রদান করতেন তা সহজেই অনুমেয়। কেননা অসংখ্য হাদীস কুরআনেরই কাছাকাছি অর্থই বহন করে (হাদিসে কূদসী)। তবে অবশ্যই স্মরণ রাখতে হবে যে, নবী সাল্লালাহু আলাহিস ওয়াসাল্লাম হতে যদি কখনও ইজতেহাদে ভুল হয়ে থাকে, তৎক্ষণাৎ মহান আল্লাহ ওয়াহীর মাধ্যমে তাঁকে সংশোধন করে দিয়েছেন। নবী সাল্লালাহু আলাহিস ওয়াসাল্লাম যে অনেক সময় ইজতিহাদ করে সমাধান প্রদান করতেন। তার সবচেয়ে বিশুদ্ধ ও অকাট্য প্রমাণ সহীহাইন তথা বুখারী মুসলিমে বর্ণিত ঐ হাদীস, যেখানে তিনি বলেছেন যে, "আমি তো কেবল একজন মানুষ। আমি শোনার ভিত্তিতেই ফায়সালা দিয়ে থাকি"।
সুনানে আবু দাউদে এই হাদীসটিই আরো স্পষ্ট ভাবে বর্ণিত হয়েছে যে,
إِنِّي إِنَّمَا أَقْضِي بَيْنَكُمْ بِرَأْيِي فِيمَا لَمْ يُنْزَلْ عَلَيَّ فِيهِ
অর্থাৎ “আমার নিকট যে, বিষয়ে কুরআনের কিছু নাযিল হয়নি আমি তো সে ক্ষেত্রে কেবল আমার ইজতিহাদ দ্বারা তোমাদের উভয়ের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত প্রদান করব।” (সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং ৩৫৮৫)
ইসলামী চিন্তাবিদের সিদ্ধান্ত এই যেঃ
পার্থিব বিষয়গুলি, সে সমস্ত বিষয়াদিতে ইজতিহাদ বা রায়ের আশ্রয় নেয়া যায়। কিন্তু যে বিষয়গুলো ইসলামী শরীয়তের অংশ, সেগুলো পুরোটাই ওয়াহীভিত্তিক সিদ্ধান্ত থেকে নিতে হবে। এবং এটা সবচেয়ে সঠিক অভিমত।
কেননা নবী সাল্লালাহু আলাহিস ওয়াসাল্লাম স্পষ্টভাবেই বলেছেন, "যে বিষয়ে কুরআনের কিছু নাযিল হয়নি আমি তো সে ক্ষেত্রে কেবল আমার ইজতিহাদ দ্বারা তোমাদের উভয়ের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত প্রদান করবো"। সুতরাং কুরআন ও সুন্নাহ না পাওয়া পর্যন্ত রায় কিয়াস বা ইজতিহাদের উপর ভিত্তি করে আমল করা যাবে। কিন্তু দলীল পাওয়া মাত্রই সেগুলোর কার্যকারিতা বাতিল বলে গণ্য হবে। যেমন ইমাম শাফেঈ রহিমাহুল্লাহ তার বিখ্যাত গ্রন্থ রিসালাহতে বলেনঃ
"যতক্ষণ দলীল অবর্তমান শুধু ততক্ষণই কিয়াস আমলযোগ্য, যেমনভাবে পানির অবর্তমানে মাটি দ্বারা তায়াম্মুম বৈধ"।
সুতরাং মত পার্থক্য থাকবেই। কিন্তু মূল বিষয় হলো যারা ইজতিহাদ করছেন তাদের জ্ঞানের সীমা কতটুকু? ইজতিহাদ যেহেতু ইসলামী শরীয়তের সর্বোচ্চ স্তরের একটি পর্যায়, সুতরাং সকলের জন্য ইজতিহাদ প্রযোজ্য নয়। যে যোগ্যতাগুলি অর্জন করতে হবে ইজতিহাদ করার জন্য সেইগুলি হচ্ছেঃ
১। ইলমুত তাফসীর ও তার উসূল তথা নীতিমালা
২। ইলমুল হাদীস ও তার উসূল তথা নীতিমালা
৩। ইলমুল ফিক্হ ও তার নীতিমালা
৪। ইলমুর রিজাল তথা আসমায়ে রিজাল শাস্ত্রের ইলম
৫। ইলমুদ দিরায়াহ তথা পূর্ণমাত্রায় হাদীস বুঝে সেখান হতে কি কি মাসায়েল ও আহকাম উদ্ভাবন করা যায় এ সংক্রান্ত জ্ঞান,
৬। আরবী ভাষা ও সাহিত্যের জ্ঞান
৭। আদালত তথা নির্ভরযোগ্য, মুত্তাকী ও আমানতদার হওয়া।
৮। মাকাসিদুশ শারীয়াহ তথা ইসলামী শরীয়তের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য সংক্রান্ত জ্ঞান থাকা।
* উপরোক্ত ৮টি মৌলিক গুণাবলী যা একজন মুজতাহিদের মাঝে থাকতেই হবে। যে কেউ ইচ্ছে করলেই সিদ্ধান্ত দিতে পারবে না এবং দিলেও গ্রহনযোগ্য হবে না।
ইজতিহাদ মূলত একটি শুরাভিত্তিক অত্যন্ত সূক্ষ্ম ও স্পর্শকাতর বিষয়। এককভাবে তা করার চেয়ে যৌথভাবে করলে নিঃসন্দেহে তা নির্ভুল ও বেশি সঠিক হবার সম্ভাবনা থাকে। কারন এ ব্যাপারে নবী সাল্লালাহু আলাহিস ওয়াসাল্লাম হতে একটি চমৎকার হাদীস বর্ণিত হয়েছে যা আলী রাদিয়াল্লাউ আনহু বর্ণনা করেছেনঃ
"তিনি বলেন, আমাদের সামনে যদি এমন বিষয় উপস্থিত হয়, যে ব্যাপারে কুরআনের কোন নির্দেশনা নেই। এমনকি আপনার সুন্নাহও আমাদের সামনে নেই। সে মুহূর্তে আমরা কী করতে পারি? জবাবে নবী সাল্লালাহু আলাহিস ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, সে বিষয়ে তোমরা আলেম-ওলামাগণকে অথবা মুমিনগণের মধ্যে হতে আবেদগণকে একত্রিত করো। অতঃপর সকলে সে বিষয়ে পরামর্শ সাপেক্ষে সিদ্ধান্ত গ্রহণ কর। আর কারো একক মত গ্রহণ করে তোমরা সিদ্ধান্ত দিও না।"
এবং সবশেষে-
আমি যতটুকু জানি রাসুলুল্লাহ সাল্লালাহু আলাহিস ওয়াসাল্লাম আমাদের ধর্মীয় বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে নিচের তথ্য সূত্রগুলি মানতে বলেছেন এর বাইরে কিছু না।
১) কোরান
২) হাদীস বা সুন্নাহ
৩) ইজমা
৪) কিয়াস
ধন্যবাদ আপ্নাকে।
১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০২১ রাত ১২:৪৫
জাদিদ বলেছেন: নীল আকাশ ভাই আপনাকে আন্তরিক ধন্যবাদ আলোচনায় অংশ নেয়ার মত। ব্লগিং এর আনন্দ হচ্ছে মন্তব্য ও প্রতি মন্তব্য থেকে অনেক কিছুই শেখা যায়। আশা করি আমার জানার চেষ্টাটি আল্লাহ সহজ করবেন। আমিন।
আপনার কাছে আমার দুইটি প্রশ্ন - যেখানে আমাদের প্রিয় নবী হযরত মোহাম্মদ সাঃ জীবিত থাকা কালেই সাহাবীদের মধ্যে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে দন্দ্ব হতো সেখানে নবী যখন ওফাত গ্রহন করলেন, তখন সেই দন্দ্বের অবস্থা কি হয়েছিলো।
এখন শরিয়ার সুত্র হিসাবে হাদীসের কথা বলা হচ্ছে, নবীজীর মৃত্যূর পর যখন ৩০০ বছর হাদিস সংকলিত ছিলো না, তখনকার ইসলাম কেমন ছিলো? তখনকার বিভিন্ন সিদ্ধান্ত উপসিদ্ধান্ত কিভাবে চলেছে?
আপনার মন্তব্যটি পেয়েই আপনাকে এই প্রশ্ন করার লোভ সামলাতে পারলাম না, এখন আপনার মন্তব্যটি পড়ি। পরে এই বিষয়ে উত্তর দিচ্ছি।
২৮| ১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০২১ রাত ১২:৪১
নীল আকাশ বলেছেন: একটা বিষয় নিয়ে মনে হচ্ছে সবাই তালগোল পাকিয়ে ফেলছে। মধু সবসময় ভেজালবিহীণ হয়, কারন মৌমাছি ভেজাল দিয়ে মধু বানায় না। ভেজাল দেয় যারা মৌ সংগ্রহ করে। মধুতে ভেজাল থাকলে সেটা মৌমাছির দোষ না? সংগ্রহকারির?
শরঈ আইন পরিশুদ্ধ এবং পরিপূর্ণ ইসলামিক। কিন্তু এটার প্রয়োগে ভুল হলে সেটা মানুষের দোষ। শরঈ আইন এর না।
ভারতে বাবরি মসজিদ অন্যায় ভাবে ভেঙ্গে হাজার হাজার মুসলিম হত্যা করে শিবসেনার দল ক্ষমতা দখল করলেও ভারত গনতান্ত্রিক দেশ! অথচ সবাই এতা চিন্তা করে না, জনসমর্থন না থাকলে ২০ বছর আমেরিকা চালানোর পরেও চারদিনে তালেবানরা এভাবে পুরোদেশ দখল করতে পারতো না। আফগানিস্থানের বেশিরভাগ লোকজন যদি তালেবানদের চায় তাহলে সমস্যা কোথায়? গনতন্ত্রের সংগা তো স্থান ভেদে পরিবর্তন হতে পারে না।
পারে?
শুভ রাত্রী।
১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০২১ বিকাল ৪:১৬
জাদিদ বলেছেন: আফগানিস্থানের জনগন তালেবানদের চাচ্ছে কি না সেটার জন্য একটু সুষ্ঠ ভোট প্রয়োজন। তালেবানরা সাধারন আফগানদের সেই সুযোগ দিয়েছে বলে কি আপনি মনে করেন?
সুষ্ঠ ভোটের মাধ্যমে যদি বাংলাদেশে আবারও আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় আসে বা আফগানে তালেবানের চাইতে ভয়ংকর অন্য কেউ ক্ষমতায় আসে তাহলে কার বাবার কি??
২৯| ১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০২১ রাত ১:২২
নীল আকাশ বলেছেন: যদিও মহানবী রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম), সাহাবায়ে কেরাম, তাবেয়ী, তাবেয়ীনদের কথা কাজ এবং সমর্থন একই বিষয় কেন্দ্র করেই পরিচালিত ছিল, কিন্তু শরীয়তের ভাষায় মর্যাদার কারনে এই বিষয়কে কয়েকটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে-
১) মহানবী রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর কথা, কাজ এবং সমর্থনকে বলা হয় হাদীস।
২) সাহাবায়ে কেরামদের কাজ এবং সমর্থনকে বলা হয় আছর।
৩) তাবেয়ী, তাবেয়ীনদের কাজ এবং সমর্থনকে বলা হয় ফতোয়া।
ফকীহগণের পরিভাষায় নবী করীম (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আল্লাহর রাসূল হিসাবে যা কিছু বলেছেন, যা কিছু করেছেন এবং যা কিছু বলার বা করার অনুমুতি দিয়েছেন অথবা সমর্থন জানিয়েছেন তাকেই হাদীস বলা হয়। কিন্তু মুহাদ্দিসগণ এর সঙ্গে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) সম্পর্কিত বর্ণনা ও তাঁর গুণাবলী সম্পর্কিত বিবরণকেও হাদীসের অন্তর্ভুক্ত করেন।
আমরা না জানার কারনে সবগুলিকে হাদিস বা সুন্নাহ বলে দেই। এটা কোনভাবেই ঠিক না। হাদীস কাকে বলে এটা আগে আমাদের জানতে হবে।
এবার আসুন আপনার দ্বিতীয় প্রশ্ন নবীজীর মৃত্যূর পর যখন ৩০০ বছর হাদিস সংকলিত ছিলো না। এটা ডাহা মিথ্যা কথা। এবং ইসলামের নামে প্রচার কৃত সবচেয়ে বড় বড় মিথ্যাগুলির একটা।
এটা পরিষ্কার ভাবে প্রমানিত যে, মহানবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর সময় থেকেই হাদীস লেখার কাজ শুরু হয়। তাঁর দরবারে বহুসংখ্যক লেখক সাহাবী সবসময় উপস্থিত থাকতেন এবং তাঁর মুখে যে কথাই শুনতেন, তা উপস্থিত অনেকেই সাথে সাথে লিখে নিতেন। রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর আমলেও অনেক সাহাবীর নিকট স্বহস্তে লিখিত সংকলন বর্তমান ছিল। উদাহরণ স্বরূপ, আবদুল্লাহ ইবন উমর (রাদীয়াল্লাহু আনহু) এর সাহীফায়ে সাদিকা, আবূ হুরায়রা (রাদীয়াল্লাহু আনহু) এর সংকলিত হাদীস গ্রন্থ। মহানবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর ওফাতের পর বিভিন্ন কারনে হাদীস সংকলনের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। কুরআন মাজীদের সাথে হাদীস সংমিশ্রণ হওয়ার আশংকায় কুরআন পুর্ণ গ্রন্থাকারে লিপিবদ্ধ না হওয়া পর্যন্ত হাদীস পূর্ণাঙ্গরূপে লিপিবদ্ধ করতে কেউ সাহস পায়নি। হযরত আবূ বকর (রাদীয়াল্লাহু আনহু) এর আমলে কুরআন মজীদ গ্রন্থাকারে লিপিবদ্ধ হলে সাহাবীগণ হাদীস লিপিবদ্ধ করার ব্যপারে আর কোন বাধা আছে বলে অনুভব করেননি। হিজরী প্রথম শতাব্দীর শেষভাগে সাহাবি ও তাবেয়ীগণ প্রয়োজন অনুসারে কিছু হাদীস লিপিবদ্ধ করেন।
মহানবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)এর ইন্তিকালের পর হযরত আয়েশা (রাদীয়াল্লাহু আনহা) ও তার অন্য স্ত্রীগণ ছিলেন হাদীসের সংগ্রহের সবচেয়ে এবং গুরুত্বপূর্ণ উৎস। মহানবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)এর ইন্তিকালের হযরত আয়েশা (রাদীয়াল্লাহু আনহা) আরও প্রায় ৪৮ বছর বেঁচে ছিলেন। তিনি ৫৭ হিজরীতে ৬৬ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন। হযরত আবুবকর (রাদীয়াল্লাহু আনহু), হযরত উমর (রাদীয়াল্লাহু আনহু) এবং হযরত উসমান (রাদীয়াল্লাহু আনহু) এর শাসনামলে তিনি ফতোয়া দিতেন। তিনি প্রায় ২৪১০টি হাদিস বর্ণনা করে গেছেন। প্রায় আহকামে শরীয়তের এক-চতুর্থাংশ হাদীস হযরত আয়েশা (রাদীয়াল্লাহু আনহা) এর নিকট হতেই বর্ণিত হয়েছে। (সূত্রঃ মাওলানা আবদুল জলিল, বিশ্বনবীর (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) জীবনী, তৃপ্তি প্রকাশকুঠি, বাংলাবাজার, ঢাকা, পৃঃ১৭০-১৭১)। আবু হুরায়রা (রাদীয়াল্লাহু আনহু) ও আবদুল্লাহ ইবন উমর (রাদীয়াল্লাহু আনহু) ছাড়া আর কোন পুরুষ সাহাবী হযরত আয়েশা (রাদীয়াল্লাহু আনহা) এর চেয়ে বেশি হাদীস বর্ণনা করতে পারেন নি। হযরত আবি মুসা আল-আশয়ারী (রাদীয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত আছে, ‘আমরা আছহাবে রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর কোন হাদীস সম্পর্কে অসুবিধার সম্মুখীন হলে তা সাইয়্যেদা আয়েশা (রাদীয়াল্লাহু আনহা) কে জিজ্ঞাসা করতাম এবং তাঁর নিকট থেকেই জ্ঞানলাভে সমর্থ হতাম।’(জামি’ আত-তিরমিযী শরীফ)
অতঃপর উমাইয়া খলিফা উমর ইবনে আব্দুল আযীয (রাহমাতুল্লাহ আলাইহি) হাদীস সংগ্রহের জন্য মদীনার শাসনকর্তা আবু বকর বিন হাজম সহ মুসলিম বিশ্বের বিভিন্ন এলাকার শাসনকর্তা ও আলিমগণের কাছে একটি ফরমান জারী করেন, “আপনারা মহানবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) হাদীসসমূহ সংগ্রহ করুন। কিন্তু সাবধান! মহানবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর হাদীস ব্যতীত অন্য কিছু গ্রহন করবেন না। আর আপনার নিজ নিজ এলাকায় মজলিস প্রতিষ্ঠা করে আনুষ্ঠানিকভাবে হাদীস শিক্ষা দিতে থাকুন। কেননা, জ্ঞান গোপন থাকলে তা একদিন বিলুপ্ত হয়ে যায়।”
এই আদেশ জারীর পর মক্কা, মদীনা, সিরিয়া, ইরাক এবং অন্যান্য অন্ঞ্চলে হাদীস সংকলনের কাজ শুরু হয়। কথিত আছে যে, প্রখ্যাত মুহাদ্দিস ইমাম ইবনে শিহাব যুহরী (রহিমাহুল্লাহ) সর্বপ্রথম হাদীস সংগ্রহ এবং সংকলনে হাত দেন। কিন্তু তাঁর সংকলিত হাদীসগ্রন্থের বর্তমানে কোন সন্ধান পাওয়া যায়না। এরপর ইমাম ইবনে জুরাইজ (র) মক্কায়, ইমাম মালিক (র) মদীনায়, আবদুল্লাহ ইবনে ওয়াহাব (র) মিসরে, আব্দুর রাজ্জাক ইয়েমেনে, আবদুল্লাহ ইবনে মুবারক খুরাসানে, এবং সূফিয়ান সাওরী ও হাম্মাদ ইবনে সালমা বসরায় হাদীস সংকলনে আত্ননিয়োগ করেন। এ যুগের ইমামগণ কেবল দৈনন্দিন জীবনে প্রয়োজনীয় হাদীসগুলো ও স্থানীয় হাদীস শিক্ষাকেন্দ্রে প্রাপ্ত হাদীসসমূহ লিপিবদ্ধ করেছিলেন। তাঁদের কেউই বিষয়বস্তু হিসেবে বিন্যাশ করে হাদীসসমূহ লিপিবদ্ধ করেননি।
প্রখ্যাত মুহাদ্দিস ইমাম ইবনে শিহাব যুহরী সর্বপ্রথম হাদীস সংগ্রহ এবং সংকলনে হাত দেন বলে জানা যায় যদিও তাঁর সংকলিত হাদীসগ্রন্থের বর্তমানে কোন সন্ধান আর পাওয়া যায় না। ইমাম ইবনে জুরাইজ মক্কায়, ইমাম মালিক (র) মদীনায়, আবদুল্লাহ ইবনে ওয়াহাব (র) মিসরে, আব্দুর রাজ্জাক ইয়েমেনে (র), আবদুল্লাহ ইবনে মুবারক (র) খুরাসানে এবং সূফিয়ান সাওরী (র) ও হাম্মাদ ইবনে সালমা (র) বসরায় হাদীস সংকলনে আত্ননিয়োগ করেন। সবচেয়ে বেশী হাদীস বর্ননা করেছেন আবু হুরায়রা (রাদীয়াল্লাহু আনহু) তার স্মৃতিশক্তি এবং সততা দুটোই অসাধারন ছিল। এরপরই হযরত আয়েশা (রাদীয়াল্লাহু আনহা) এর নাম উল্লেখযোগ্য। এইসময়ে লিখিত হাদীসগ্রন্থ সমূহের মধ্যে ইমাম মালিকের (রহমাতুল্লাহ আলাইহি) এর “মুয়াত্তা” সর্বপ্রথম ও সর্বপ্রধান প্রমান্য হাদীসগ্রন্থ। ইমাম মালিকের (রহমাতুল্লাহ আলাইহি) “মুয়াত্তা” গ্রন্থটি হাদীস সংকলনের ব্যাপারে বিপূল উৎসাহ উদ্দিপনার সৃষ্টি করেছিল। ইমাম শাফঈ (রহমাতুল্লাহ আলাইহি)এর “কিতাবুল উম্ম” এবং ইমাম আহমাদ বিন হাম্বল (রহমাতুল্লাহ আলাইহি) এর “মাসনাদ” গ্রন্থদ্বয় হাদীসের উপর গুরুত্বপুর্ণ গ্রন্থ হিসেবে বিবেচিত।
হিজরী তৃতীয় শতাব্দীতে বিভিন্ন মণিষীগন মুসলিম বিশ্বের বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রচুর হাদীস সংগ্রহ করেন। এদের মধ্যে যে বিখ্যাত হলেন ইমাম বুখারী (রহমাতুল্লাহ আলাইহি), ইমাম মুসলিম (রহমাতুল্লাহ আলাইহি), ইমাম আবূ দাউদ (রহমাতুল্লাহ আলাইহি), ইমাম তিরমিজী (রহমাতুল্লাহ আলাইহি), ইমাম নাসাঈ (রহমাতুল্লাহ আলাইহি) এবং ইমাম ইবনে মাজাহ (রহমাতুল্লাহ আলাইহি)।
এদের সংকলিত হাদীসগ্রন্থগুলোই হলো সহীহ বুখারী, সহীহ মুসলিম, সুনানে আবূ দাউদ, জামি’ তিরমিযী, সূনানে নাসাঈ এবং সূনানে ইবনে মাজাহ্। এই ছয়টি হাদীসগ্রন্থকে সন্মিলিত ভাবে সিহাহ সিত্তাহ বা ছয়টি বিশুদ্ধ হাদীসগ্রন্থ বলা হয়। এই সহী হাদীস গ্রন্থগুলি সংকলনের সময় যথেষ্ঠ যাচাই বাছাই করেই সংকলন করা হয়েছে।
কিতাবুস সিহাহ সিত্তাহ গ্রন্থগুলি এবং এর মহান সংকলকদের নাম
ক্রমিক নং গ্রন্থের নাম সংকলকের নাম জন্ম ওফাত জীবন কাল হাদিস সংখ্যা
১ সহীহ বুখারী
মুহাম্মদ ইবনে ইসমাঈল ইবনে ইবরাহিম ইবনে মুগিরা
১৯৪ হিজরি ২৫৬ হিজরি ৬২ বছর ৭৩৯৭ টি
২ সহীহ মুসলিম
মুসলিম ইবনে হাজ্জাজ আল কুশায়রি আল নিশাপুরী
২০৪ হিজরিতে নিশাপুরে ২৬১ হিজরি ৫৭ বছর ৪০০০ টি
৩ জামি' আত-তিরমিযী
আবু ঈসা মুহাম্মদ ইবনে ঈসা আত-তিরমিযী
২০৯ হিজরিতে খোরাসানের তিরমিয শহরে ২৭৯ হিজরি ৭০ বছর ৩৮১২ টি
৪ সুনানে আবু দাউদ
আবু দাউদ সুলায়মান ইবনে আশ আশ ইবনে ইসহাক
২০২ হিজরিতে সিস্তান নামক স্থানে ২৭৫ হিজরি ৭৩ বছর ৪৮০০ টি
৫ সুনানে নাসাঈ
ইমাম আবু আবদুর রহমান আহমদ ইবনে শুআইব ইবনে আলি আল খোরাসানি আন-নাসাঈ
২১৫ হিজরি নাসা শহরে ৩০৩ হিজরি ৮৮ বছর ৫৭৬১ টি
৬ সুনানে ইবনে মাজাহ
আবু আবদুল্লাহ মুহাম্মদ ইবনে ইয়াজিদ ইবনে আবদুল্লাহ ইবনে মাযাহ আল-কাজবিনি
২১৭ হিজরিতে কাসবিন শহরে ২৭৩ হিজরি ৬৪ বছর ৪৩৪৯ টি
আপনার সহ অনেকের এই তিনশত বছর হাদীস সংগ্রহ করা ছিল না তথ্য কতটা আজগুবী ভেবে দেখুন।
আমি বুঝার জন্য যারা লিখেছেন তাদের সময়কালও পাশে লিখে দিয়েছি।
সাহাবীর দ্বন্দ আদৌ হয়েছিল কিনা এতা নিয়ে আমি আরেকটা মন্তব্য করবো।
শুভ রাত্রী।
১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০২১ রাত ১:২৭
জাদিদ বলেছেন: আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ জবাব দেয়ার জন্য। আমি এই বিষয়ে জানি না, ফলে এই মুহুর্তে এই সংক্রান্ত কোন মতামত দিতে পারছি না। আপনি সময় করে এত বিস্তারিত লিখেছেন বলে আপনাকে ধন্যবাদ এবং কৃতজ্ঞতা। আমি এই বিষয়ে অবশ্যই চেষ্টা করব পড়াশোনা করার জন্য।
৩০| ১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০২১ সকাল ৭:০৬
তানভির জুমার বলেছেন: ধরেন আমি ক্লাস ফাইভ পাসও না, এবং আপনি যাদের বই পড়েন আমি তাদের এমনি ঝরে পড়া পশমের সমানও না। আমি আপনার কাছে যে তিনটি বিযয় জানার জন্য প্রশ্ন করেছি সেটার উত্তর কি দিবেন দয়া করে? উক্ত বিষয়গুলো যেনে আমি চাই আমার তৃতীয় শ্রেণী টাইপের হামবড়া ভাব থেকে সরে এসে আপনার মত বিজ্ঞ মানুষদের কাছ থেকে জ্ঞান নিতে।
১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০২১ দুপুর ১২:৪২
জাদিদ বলেছেন: আপনার প্রশ্নগুলোর ধরন এবং মান দেখেই আপনাকে ক্লাস ফাইভ পাসের সার্টিফিকেট দেখাতে বলেছি।
এখানে যারা আলোচনা করছে, তাদের কমেন্টগুলো পড়ুন, শিখুন।
ধন্যবাদ এবং বিদায়।
৩১| ১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০২১ সকাল ৮:৪৭
এ আর ১৫ বলেছেন: এখানে যারা শরিয়া আইণের পক্ষে কথা বলছে --- তারা মনে হয় জীবনেও শরিয়া আইণের একটা বই ও পড়ে দেখেনি , গতে বাধা দাবি করে যাচ্ছে । তারা কোন আইণের রেফারেন্স দিচ্ছে না গতে বাধা দাবি ছাড়া ।
শরিয়া আইণ গুলো পড়লেই যে কোন বিবেকবান মানুষ ই বুঝতে পারবে এগুলো আল্লাহর আইণ হতেই পারে না , বরং মানুষের বানানো আইণ।
আমি উদাহরন দিয়ে দেখিয়েছি , দরকার হোলে আরো দেখাবো । ধন্যবাদ
১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০২১ দুপুর ১২:৪৭
জাদিদ বলেছেন: শরিয়া আইন বলে তো কিছু নাই। শরিয়া মানে হচ্ছে একটা ন্যায় নীতির প্রিন্সিপাল বা আদর্শ।
শরিয়া ভিত্তিক আইন মানে ন্যায় নীতির আইন। খুব সহজভাবে বললে এটাই শরিয়া আইন।
শরিয়া আইন নিয়ে সন্দেহ আছে কারন আমার বিবেক বুদ্ধিকে আমি বিসর্জন দিতে পারি না। আল্লাহ যে সকল নিয়ম ও রীতি কোরানে উল্লেখ্য করে দিয়েছেন সেইগুলোর মূল ইসলামিক আইন বা শরিয়া আইন। এর বাইরে মানুষের বানানো যে কোন আইনে সমস্যা ও ঝামেলা থাকতেই পারে। কিন্তু সেই মানুষের বানানো আইনকে আল্লাহর আইনের সাথে মেলানো অন্যায়।
এই সাধারন জিনিসটা বুঝানো সম্ভব হচ্ছে না।
৩২| ১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০২১ সকাল ৮:৫৪
এ আর ১৫ বলেছেন: আইনে আইনে বিরোধ
শারিয়া আল্লাহর আইন হলে আইন একটাই হতো, চার-পাঁচ রকম হতো না। বিভিন্ন শারিয়ার মধ্যে পার্থক্য, বিরোধ বা উল্টো আইনও থাকত না। কিন্তু শারিয়ার আইনগুলোতে শত শত মারাত্মক স্ববিরোধীতা আছে। এই পরস্পর-বিরোধীতা মাঝে মাঝেই করুণ ও হাস্যকর অবস্থার সৃষ্টি করে। খুনের অপরাধে মির্জা তাহিরকে পাকিস্তানের শারিয়া কোর্ট (১) মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে ১৯৮৯ সালে, (২) সেটা বদলে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে ১৯৯৪ সালে, (৩) সেটা বদলে নিরপরাধ হিসেবে ছেড়ে দিয়েছে ১৯৯৬ সালে, (৪) আবার ওই একই অপরাধে দ্বিতীয়বার গ্রেপ্তার করে দ্বিতীয়বার মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে ১৯৯৮ সালে, (৫) তার প্রাণভিক্ষার আবেদন বাতিল করেছে ২০০৩ সালে, এবং (৬) অবশেষে তাকে সম্পূর্ণ মুক্তি দিয়েছে ২০০৬ সালে। বেচারা মির্জা তাহির শারিয়ার এই জগাখিচুড়ির শিকার হয়েছে ১৭ বছর জেলখানায় বন্দী থেকে (খবর বি-বি-সি’র)।
ইমাম শাফি’র বিখ্যাত কেতাব ‘রিসালা’-তে আছে ঃ “ইমাম শাফি ইমাম মালিকের মতামতের সাথে অপ্রত্যাশিতভাবে ভিন্নমত পোষণ করিতেন” (পৃঃ ১৩)। কিছু উদাহরণ দিচ্ছি ঃ
১। অমুসলিমদের কাছে কোরাণ বিক্রয় নিষিদ্ধ (শাফি’ই আইন নং k.1.2.e)। -আইন লঙ্ঘন করে সুরা ওয়াক্বেয়া, আয়াত ৭৯ − “পাক-পবিত্র ছাড়া আর কেউ একে স্পর্শ করবে না।” এতে মুসলিম-অমুসলিম কিছু বলা হয়নি কারণ কোরাণ তো এসেছেই অমুসলিমদেরকে মুসলিম বানানোর জন্য। ও-আইন প্রয়োগ হলে ভাই গিরিশচন্দ্র কোরাণের প্রথম বাংলা অনুবাদ করতে পারতেন না, নবীজীর প্রশংসা করতে পারতেন না ডঃ রাধাকৃষ্ণ, গান্ধিজী, গুরু নানক থেকে শুরু করে ডঃ মরিস বুকাইলি, ডঃ কেনেথ মূর, বার্ট্রাণ্ড রাসেল, মাইকেল হার্ট্জ প্রমুখ অসংখ্য পশ্চিমা দার্শনিক বিশেষজ্ঞগণ। হানাফি আইনে অমুসলিমদের কাছে কোরাণ বিক্রয় বৈধ।
২। যদি দৈহিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে চারজন বয়স্ক মুসলমানের চাক্ষুষ প্রমাণ না থাকে তাহলে সন্তানধারণ করলে মালিকি আইনে কুমারীকে চাবুক ও বিধবাকে পরকীয়ার অপরাধে প্রস্ত রাঘাতে মৃত্যুদণ্ড হয়। কিন্তু হানাফি আইনে তারা বেকসুর খালাস পায় − (বি-ই-আ ১ম খণ্ড, পৃঃ ২৯৯ এবং পেনাল ল’ অব্ ইসলাম পৃঃ ৭১)। আলার আইনে এমন হয় না।
৩। অবিবাহিতদের পরকীয়ার জন্য চাবুকের শাস্তি। সেই পরকীয়াতে কন্যা জন্মালে তাকে সেই পিতা হানাফি আইনে বিয়ে করতে পারবে না কিন্তু শাফি’ আইনে পারবে (প্রিন্সিপল্স্ অব্ ইসলামিক জুরি¯প্র“ডেন্স − ডঃ হাশিম কামালি, পৃঃ ২৯।
৪। বিবাহিতা নারী পরকীয়া করলে হানাফি আইনে আজীবন কারাবাস, কিন্তু হাম্বলি, শাফি’ ও মালিকি আইনে মৃত্যুদণ্ড।
৫। হানাফি আইনে নারী-মুরতাদের আজীবন কারাবাস কিন্তু হাম্বলি, শাফি’ ও মালিকি আইনে মৃত্যুদণ্ড।
৬। সাক্ষী থাকুক বা না থাকুক গোপন বিবাহ মালিকি শারিয়ায় অবৈধ, কিন্তু সাক্ষী থাকলে অন্য মজহাবে বৈধ। সূত্র ঃ বিশ্ব-শারিয়াদলের বর্তমান প্রধান নেতা ডঃ ইউসুফ কারজাভি − Click This Link
(Inquiry and Analyses Series – No. 291)
৭। কোনো অবিবাহিত বা অবিবাহিতা পরকীয়ার শাস্তির পর তওবা করলে অন্যান্য মামলায় শাফি’ আইনে তার সাক্ষ্য নেয়া যাবে, কিন্তু হানাফি আইনে নেয়া যাবে না” (“মুসলিম জুরি¯প্র“ডেন্স অ্যাণ্ড কুরাণিক ল’ অফ ক্রাইম্স্” পৃঃ ১৪৬)।
৮। কেউ অন্যায় অপবাদ দিয়ে শাস্তি পাবার পর তওবার পরে তার সাক্ষ্য গ্রহণযোগ্য (শাফি’-মালিকি-হাম্বলি আইন)। কিন্তু হানাফি আইনে নয় − (বি-ই-আ ৩য় খণ্ড, পৃঃ ৮২৫)।
৯। বোবার সাক্ষ্য স্পষ্ট হলেও হানাফি, শাফি’ ও হাম্বলি আইনে গ্রহণযোগ্য নয়, তবে মালিকি আইনে গ্রহণযোগ্য − (বিধিবদ্ধ ২য় খণ্ড, পৃঃ ২৬৩)।
১০। হানাফি আইনের সাথে অন্যান্য আইনের বহু বিরোধের অন্যতম কারণ হলো ঃ “হানাফি মতে মুহসান হওয়ার জন্য মুসলমান হওয়া অন্যতম শর্ত, কিন্তু অন্যান্য আইনে তা নয়” (বিধিবদ্ধ ৩য় খণ্ড পৃঃ ৩৭০)।
১১। রাষ্ট্রদ্রোহীতার শাস্তি বাকি সব আইনে মৃত্যুদণ্ড কিন্তু হানাফি আইনে আজীবন কারাগার − ডঃ হাশিম কামালি, পৃঃ ৩০।
১২। ইমাম আবু হানিফা প্রস্তাব করেছিলেন মানুষ মাতৃভাষায় নামাজ পড়–ক। পরে শারিয়াপন্থীদের চাপে তিনি এ প্রস্তাব প্রত্যাহার করেন − ডঃ হাশিম কামালি, পৃঃ ১৯।
১৩। কোনো অমুসলিমকে খুনের অপরাধে কোন মুসলিমের প্রাণদণ্ড হবে না − পেনাল ল’ অব্ ইসলাম, পৃঃ ১৪৯। মওলানা আজিজুল হকের অনুদিত বোখারি ৫ম খণ্ড ৫৩৮ পৃষ্ঠায় আছে হাদিস নং ১০২১ − জিম্মিকে খুন করলে বেহেশ্তের গন্ধও পাবে না। (এ বইটা আপাততঃ হাতের কাছে নেই বলে নিঃসন্দেহ হওয়া গেল না)।
১৪। মৃতের সৎ মা সম্পত্তির অংশ পাবে না, কিন্তু সৎ ভাই-বোন অংশ পাবে −বিধিবদ্ধ ১ম খণ্ড ধারা ৪১৮ ও ৪২৩।
১৫। ঠাট্টায়, নেশার ঘোরে বা চাপের মুখে স্বামী তালাক দিলে হানাফি আইনে বৈধ কিন্তু শাফি’ আইনে অবৈধ − ইসলামিক ল’ − পৃঃ ১৭৪।
১৬। পরস্পরের ব্যাপারে অমুসলিম জিম্মিদের সাক্ষ্য হানাফি আইনে গ্রহণযোগ্য কিন্তু শাফি ও মালিকি আইনে নয় − হানাফি আইন হেদায়া পৃষ্ঠা ৩৬৩, বিধিবদ্ধ ইসলামি আইন ২য় খণ্ড আইন নং ৫৭৬।
১৭। স্বামীকে কেউ জোর করে বা ভয় দেখিয়ে স্ত্রী-তালাকে বাধ্য করলে সে তালাক হানাফি আইনে বৈধ কিন্তু মালিকি, শাফি’ ও হাম্বলি আইনে অবৈধ − (বি-আ-ই ১ম খণ্ড ধারা ৩৪৯ − বিশেষণ)।
১৮। স্বামীর মাথা খারাপের রোগ হলে শারিয়া কোর্টে স্ত্রী’র বিবাহ-বিচ্ছেদের আবেদন করার অধিকার হানাফি আইনে নাই কিন্তু মালিকি, শাফি’ ও হাম্বলি আইনে আছে − (বি-আ-ই ১ম খণ্ড ধারা ৩৬৫ − বিশেষণ)।
১৯। ইশতিহশান নিয়ে হানাফি ও শাফিদের দ্বন্দ্ব সুবিদিত − প্রিন্সিপল্স্ অফ্ ইসলামিক জুরিসপ্র“ডেন্স − ডঃ হাশিম কামালী, পৃঃ ৩৩৯
২০। একই বিষয়ে শারিয়া-ইমামদের প্রবল মতভেদের বহু উদাহরণ দেখুন বিধিবদ্ধ ইসলামী আইন ৩য় খণ্ড, পৃঃ ৩৬৬-৩৭২।
এই যে বিরোধ ও বিভ্রান্তি, এটা কেন হচ্ছে ? নারী-বিরোধী পুরুষতন্ত্র ও ক্ষমতার লড়াইয়ের রক্তাক্ত ষড়যন্ত্র ছাড়াও এর আরেক কারণ হল কোরাণের কোন্ আয়াত কখন কিজন্য এসেছিল তা আমরা হয় জানছি না অথবা মানছি না। এ-ব্যাপারে আদি যুগে দু’টো কেতাব লেখা হয়েছিল নবীজীর প্রায় দেড়শ’ বছর পরে, ইবনে হিশাম ইবনে ইশাক ও তারিখ আল্ তাবারি। অন্য এক গুরুত্বপূর্ণ দলিল আমরা হারিয়েছি বলে সমস্যাটা আরো বেড়েছে। উদ্ধৃতি দিচ্ছি হাদিস আল্ কাফি থেকে ঃ “পয়গম্বর (সাঃ)-এর মৃত্যুর পরে হজরত আলী প্রতিজ্ঞা করিলেন কোরাণের সঙ্কলন না করা পর্যন্ত তিনি ঘরের বাহিরে যাইবেন না। তাঁহার সঙ্কলিত কোরাণে বিভিনড়ব আয়াত সম্বন্ধে স্বয়ং নবীজীর মতামত ছিল। ইহাতে কোন্ আয়াতের পর কোন্ আয়াত আসিয়াছে, কোন্ ঘটনায় কখন কাহার উপর আসিয়াছে ইত্যাদির বিবরণ ছিল। এইগুলি ব্যতীত তাঁহার সঙ্কলনটি আয়াতের দিক দিয়া মুসলিম বিশ্বে প্রচারিত কোরাণের মতই। সঙ্কলনের পরে তিনি শাসকদের সামনে তাহা পেশ করেন। কিন্তু শাসকেরা তাহা গ্রহণ করেন নাই” (হাদিস আল্ কাফি ১ম খণ্ড, আল্ উসুল ২য় পর্ব, অধ্যায় ৪-এর ২, পৃষ্ঠা ১৭৫-১৭৭)।
যেখানে এত স্ববিরোধীতা, যেখানে কোন কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ নেই, যেখানে কেউ কারো কথা শোনে না, যেখানে বিভিনড়ব দলের মওলানারা পরস্পরকে কাফের-মুনাফেক বলে ঘোষণা করেন, যেখানে কোরাণের আয়াতগুলোর বিভিনড়ব অর্থ সম্ভব, যেখানে কোরাণের নির্দেশের প্রত্যেকটিতে মুসলমান দার্শনিকদের ভেতরেই মতভেদ আছে তা দিয়ে “সর্বসম্মত” আইন বানানো যায় না। আর সর্বসম্মত না হলে কোন আইনই আলা- রসুলের নামে জাতির ঘাড়ে চাপানো যায় না। মানুষের জীবন ও বিশ্বাস কারো খেলার পুতুল নয় ॥
৩৩| ১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০২১ সকাল ৯:৩৮
নীল আকাশ বলেছেন: @ এ আর ১৫: আপনাকে বলছি-
আপনার ইসলাম নিয়ে পড়াশুনা অনেক কম। গতবাঁধা কিছু লাইন বাদ দিয়ে আপ্নে আমি কখনোই ইসলামিক বিষয়গুলি নিয়ে গভীরে ঢুকতে দেখিনি। নীচে একটা লাইন দিলাম। এটা পড়ে আগে বুঝুন এটার অর্থ কী?
ইসলামী চিন্তাবিদের সিদ্ধান্ত এই যেঃ পার্থিব বিষয়গুলি, সে সমস্ত বিষয়াদিতে ইজতিহাদ বা রায়ের আশ্রয় নেয়া যায়। কিন্তু যে বিষয়গুলো ইসলামী শরীয়তের অংশ, সেগুলো পুরোটাই ওয়াহীভিত্তিক সিদ্ধান্ত থেকে নিতে হবে। এবং এটা সবচেয়ে সঠিক অভিমত।
সব বিষয়ে ফতোয়া ইস্যু করা যায় না। ইচ্ছে হলেই যে কেউ ফতোয়া দিতেও পারবে না। ব্যক্তি ভুলের জন্য সিসটেম'কে দায়ী করা হচ্ছে আহাম্মকীর বড় নমুনা। যা বুঝেন না সেটা নিয়ে কাট কপি পেসট মন্তব্য করবেন না।
@জাদিদ ভাইঃ
পবিত্র কুরআন শরীফে সুস্পষ্টভাবে লিখে দেয়া আছেঃ
১) অতঃপর কোন বিষয়ে যদি তোমরা মতবিরোধ করো তাহলে তা আল্লাহ্ ও রাসূলের দিকে প্রত্যাবর্তন কর, যদি তোমরা আল্লাহ্ ও শেষ দিনের প্রতি ঈমান রাখ। (সূরা আন-নিসা, আয়াত ৫৯)
ইজতিহাদ করতেই হবে কারন এটা ব্যাপারে সরাসরি নির্দেশ আছে। মুজতাহিদের জন্য আবশ্যক হলো, হক্ব জানার ক্ষেত্রে তার সর্বাত্মক চেষ্টায় নিয়োজিত থাকা। তার কাছে যা সত্যরূপে প্রতীয়মান হবে, তদনুযায়ী তিনি হুকুম দিবেন। এতে যদি তিনি সঠিকতায় পৌঁছেন, তাহলে তার জন্য দু’টি ছওয়াব রয়েছে। একটি ছওয়াব চেষ্টা করার কারণে, আরেকটি ছওয়াব হক্ব পাওয়ার কারণে। কেননা, হক্ব প্রাপ্তির মাঝে রয়েছে হক্বকে প্রকাশ করা ও তদনুযায়ী আমল করা। আর যদি তিনি ভুল করেন, তবুও তার জন্য একটি ছওয়াব রয়েছে এবং ভুলটি ক্ষমার যোগ্য বিবেচিত হবে। রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলে গেছেনঃ
‘‘যখন কোন বিচারক ইজতেহাদ করে ফায়ছালা দেয়। অতঃপর তিনি ফায়ছালায় সঠিক সিদ্ধান্তে পৌঁছলে তার জন্য দু’টি ছওয়াব রয়েছে। আর ইজতেহাদ করার পরও ভুল করলে তবুও তার জন্য একটি ছওয়াব রয়েছে।’’[1]
যদি তার নিকট সত্য স্পষ্ট না হয়, তাহলে তার জন্য আবশ্যক হলো এ ব্যাপারে ইজতেহাদ স্থগিত রাখা। এ ক্ষেত্রে প্রয়োজনে অন্যের তাক্বলীদ করাও তার জন্য বিধেয় হবে।
সূত্রঃ [1]. ছ্বহীহ বুখারী হা/৭৩৫২, ছ্বহীহ মুসলিম হা/১৭১৬
মহান আল্লাহ বলেছেনঃ 'এবং দীনের ব্যাপারে বিভিন্ন পরামর্শে তাদেরকে (ইমানদারদের) অন্তরভুক্ত করো৷ তারপর যখন কোন মতের ভিত্তিতে তোমরা স্থির সংকল্প হবে তখন আল্লাহর ওপর ভরসা করো৷ আল্লাহ তাদেরকে পছন্দ করেন যারা তাঁর ওপর ভরসা করে কাজ করে৷ (ইমরান ৩:১৫৯)'।
'যারা তাদের রবের নির্দেশ মেনে চলে, নামায কায়েম করে এবং নিজেদের সব কাজ পরস্পর পরামর্শের ভিত্তিতে চালায়, আমি তাদের যা রিযিক দিয়েছি তা থেকে খরচ করে।(সুরা শুরা ৩৮)'
উম্মতী মুহাম্মদ যখন পরামর্শ করে কোন বিষয় মতৈক্য স্থাপন করবে তখন তার বিরোধিতা করা ঠিক না। আর মুসলমানদের ইজমা যে আল্লাহ পাকের কাছেও গ্রহণযোগ্য হবে তা স্বয়ং রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর হাদীস দ্বারা প্রমাণিত। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সহিহ হাদিস-
‘‘আমার উম্মত কখনও ভ্রষ্ট পথে একমত হবে না’। (মুস্তাদরাকে হাকিম (১/২০০-২০১) হাদীস নং- ৩৯৪, ৩৯৬, ৩৯৭, ৩৯৯, ৪০০। আরো দেখুন: আবুদাউদ (৪/৯৮) হাদীস নং- ৪২৫৩; তিরমিজি (৪/৪৬৬) হাদীস নং- ২১৬৭; ইবনে মাজা (২/১৩০৩) হাদীস নং- ৩৯৫০)।
আপ্নারা সবাই ব্যক্তি ভুলের জন্য ইসলামী শরঈ আইনে নিয়ে আন্দাজে মন্তব্য করছেন। এটা ঠিক না। ফিকহবিদ যথেষ্ঠ পড়াশুনা করেই ফতোয়া দেন। তবে তাদের ভুল স্বাভাবিক। কারন দিন শেষ তারা মানুষ। ফিকহবিদ'রা এক মাযহাবের শিক্ষকের কাছে জ্ঞান অর্জন শেষ করার পর অন্য মাযহাবের শিক্ষকের কাছে চলে গেছেন শিক্ষা লাভের জন্য। মাযহাব প্রবর্তক সহ এইসব ফিকহবিদগণ কখনও কোনদিনও শুধুই নিজেদের মাযহাবই ঠিক আর বাকি সব ভ্রান্ত বলে দাবী করেন নি। বরং তারা বারবার তাদের অন্ধ (ত্বাকলীদ) অনুসরণ করতে মানা করে গেছেন। কোন ফতোয়া নিয়ে সন্দেহ হলে আল্লাহর নির্দেশে পবিত্র কুরআনের দিকে ফিরতে বলেছেন।
আল্লাহ আমাদের সবাইকে সিরাতুল মুস্তাকীমের পথে চলার তৌফিক দান করুন।
৩৪| ১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০২১ দুপুর ১২:২০
এ আর ১৫ বলেছেন: নীল আকাশ কমেন্ট ৩৩
ইসলামী চিন্তাবিদের সিদ্ধান্ত এই যেঃ পার্থিব বিষয়গুলি, সে সমস্ত বিষয়াদিতে ইজতিহাদ বা রায়ের আশ্রয় নেয়া যায়। কিন্তু যে বিষয়গুলো ইসলামী শরীয়তের অংশ, সেগুলো পুরোটাই ওয়াহীভিত্তিক সিদ্ধান্ত থেকে নিতে হবে। এবং এটা সবচেয়ে সঠিক অভিমত।
তাহোলে আমরা কিছু সঠিক আভিমতের নমুনা দেখি --
১) “(স্বামীর) বৌ-তালাকে সাক্ষ্য শর্ত নহে” (বি-ই-আ ১ম খণ্ড, ধারা ৩৪৪)।
তার মানে কোন সাক্ষী না রেখে যদি স্বামী তালাক দেয় , তাহোলে তালাক হয়ে যাবে ।
এবারে খুলুন কোরাণ, সুরা ত্বালাক, আয়াত ২ − “তোমরা যখন স্ত্রীদিগকে তালাক দিতে চাও তখন দুইজন সাক্ষী রাখিবে।”
২। যদি দৈহিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে চারজন বয়স্ক মুসলমানের চাক্ষুষ প্রমাণ না থাকে তাহলে সন্তানধারণ করলে মালিকি আইনে কুমারীকে চাবুক ও বিধবাকে পরকীয়ার অপরাধে প্রস্ত রাঘাতে মৃত্যুদণ্ড হয়। কিন্তু হানাফি আইনে তারা বেকসুর খালাস পায় − (বি-ই-আ ১ম খণ্ড, পৃঃ ২৯৯ এবং পেনাল ল’ অব্ ইসলাম পৃঃ ৭১)। আলার আইনে এমন হয় না।
৩। অবিবাহিতদের পরকীয়ার জন্য চাবুকের শাস্তি। সেই পরকীয়াতে কন্যা জন্মালে তাকে সেই পিতা হানাফি আইনে বিয়ে করতে পারবে না কিন্তু শাফি’ আইনে পারবে (প্রিন্সিপল্স্ অব্ ইসলামিক জুরি¯প্র“ডেন্স − ডঃ হাশিম কামালি, পৃঃ ২৯।
৪। বিবাহিতা নারী পরকীয়া করলে হানাফি আইনে আজীবন কারাবাস, কিন্তু হাম্বলি, শাফি’ ও মালিকি আইনে মৃত্যুদণ্ড।
৫। হানাফি আইনে নারী-মুরতাদের আজীবন কারাবাস কিন্তু হাম্বলি, শাফি’ ও মালিকি আইনে মৃত্যুদণ্ড।
৬। সাক্ষী থাকুক বা না থাকুক গোপন বিবাহ মালিকি শারিয়ায় অবৈধ, কিন্তু সাক্ষী থাকলে অন্য মজহাবে বৈধ। সূত্র ঃ বিশ্ব-শারিয়াদলের বর্তমান প্রধান নেতা ডঃ ইউসুফ কারজাভি − Click This Link
(Inquiry and Analyses Series – No. 291)
৭। কোনো অবিবাহিত বা অবিবাহিতা পরকীয়ার শাস্তির পর তওবা করলে অন্যান্য মামলায় শাফি’ আইনে তার সাক্ষ্য নেয়া যাবে, কিন্তু হানাফি আইনে নেয়া যাবে না” (“মুসলিম জুরি¯প্র“ডেন্স অ্যাণ্ড কুরাণিক ল’ অফ ক্রাইম্স্” পৃঃ ১৪৬)।
৮। কেউ অন্যায় অপবাদ দিয়ে শাস্তি পাবার পর তওবার পরে তার সাক্ষ্য গ্রহণযোগ্য (শাফি’-মালিকি-হাম্বলি আইন)। কিন্তু হানাফি আইনে নয় − (বি-ই-আ ৩য় খণ্ড, পৃঃ ৮২৫)।
৯। বোবার সাক্ষ্য স্পষ্ট হলেও হানাফি, শাফি’ ও হাম্বলি আইনে গ্রহণযোগ্য নয়, তবে মালিকি আইনে গ্রহণযোগ্য − (বিধিবদ্ধ ২য় খণ্ড, পৃঃ ২৬৩)।
১০। হানাফি আইনের সাথে অন্যান্য আইনের বহু বিরোধের অন্যতম কারণ হলো ঃ “হানাফি মতে মুহসান হওয়ার জন্য মুসলমান হওয়া অন্যতম শর্ত, কিন্তু অন্যান্য আইনে তা নয়” (বিধিবদ্ধ ৩য় খণ্ড পৃঃ ৩৭০)।
১১। রাষ্ট্রদ্রোহীতার শাস্তি বাকি সব আইনে মৃত্যুদণ্ড কিন্তু হানাফি আইনে আজীবন কারাগার − ডঃ হাশিম কামালি, পৃঃ ৩০।
১২। ইমাম আবু হানিফা প্রস্তাব করেছিলেন মানুষ মাতৃভাষায় নামাজ পড়–ক। পরে শারিয়াপন্থীদের চাপে তিনি এ প্রস্তাব প্রত্যাহার করেন − ডঃ হাশিম কামালি, পৃঃ ১৯।
৩৫| ১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০২১ দুপুর ১:২২
হাসান কালবৈশাখী বলেছেন:
যে ৩০০ বছর হাদিস ছিলো না। সেই ৩০০ বছর ইসলাম কিভাবে চলছে?
যেভাবে চলার কথা সেভাবেই চলেছে।
মানুষ ইসলামের মূল ভিত্তি কলেমা, নামাজ রোজা হজ্ব জাকাত পালন করে ইসলাম টিকিয়ে রেখেছে। এসব ধর্মিয় পার্বন পালন ও চালু রাখতে হাদিসের প্রয়োজন হয় নি। খুনোখুনিও দরকার হয় না, হয়নি।
আর গলকাটা ইসলামিষ্ট গন (পলিটিকাল ইসলামিষ্ট) আগের মতই তান্ডব খুনোখুনি চালিয়ে গেছে।
প্রথমেই ইসলামের মূল স্তম্ভ ৪ খলিফার ৩ খলিফাকেই বিভিন্ন অযুহাতে একে একে কুপিয়ে হত্যা।
কোন বিধর্মিরা মারে নি। মোসলমান পলিটিকাল ইসলামিষ্টরাই।
এরপর নবিজির নাতি হাসানকে বিষপ্রয়গে হত্যা, হোসেনকে পরিবার সহ না খাইয়ে হত্যা। শিরচ্ছেদ হত্যা। নবীর বংশকে বিলুপ্ত করে ছাড়লো এই ধরনের রাজনৈতিক ইসলামিষ্টরা।
এরপর ইসলামের রাজধানী মক্কা মদিনা থেকে কুফায়, কুফা থেকে বসরা, এরপর আবার কুফায়। এরপর অনেকদিন আলেকজান্দ্রিয়া, ইতিমধ্যে কাবাকে ধ্বংশ করে মাটির সাথে মিসিয়ে দেয়া হয়ে গেছে একাধিকবার।
হানাহানিতে বিজয়ী যারা ক্ষমতা কুক্ষিগত নিশ্চিত রাখতে দরকার হল হাদিস।
৩৬| ১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:৩০
পাঠক০০৭ বলেছেন: শরিয়া আইন দিয়ে নারীদের বেশি উপভোগ করা যায়। আমি এই কারনে মোল্লাদের বানানো শরিয়া পছন্দ করি।
৩৭| ১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:০৪
আবদুল মমিন বলেছেন: প্রতিবন্ধীদের পারলামেন্ট ।
১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০২১ সকাল ১১:৫৭
জাদিদ বলেছেন: আমি জানি আপনি প্রতিবন্ধী শব্দটাকে গালি হিসাবে দিয়েছেন। এটা প্রমান করে আপনি মানসিকভাবে কতটা অসুস্থ এবং নিচুস্তরের একজন মানুষ। আপনি তালেবান সমর্থন করবেন না তো কে করবে বলেন?
৩৮| ১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০২১ সকাল ৮:১০
সোহানী বলেছেন: প্রায় ৩৭ টা মন্তব্য কিন্তু কোন নারী ব্লগারের কমেন্ট নেই!!! উত্তরটা কি কারো জানা আছে? যদিও এ নিয়ে আমার নিজস্ব ব্যাখ্যা আছে কিন্তু তা শেয়ার করতে চাই না। কারন ক্যাচাল করার সময় নাই।
জাদিদ ভাই, ধন্যবাদ খুবই গুড়ুত্বপূর্ন ও প্রয়োজনীয় সাথে বলবো সাহসী একটি বিষয় নিয়ে লিখেছেন ও নিজস্ব মতামত দিয়েছেন। ধর্ম নিয়ে সাধারনত আমি লিখি না বা কোন কমেন্ট করা থেকেও বিরত থাকি। তারপর আপনার লিখায় আসলাম কারন আপনার ভাবনাকে আমি সমর্থন করি। বেশী কিছু লিখতে চাই না কারন উপরে প্রচুর লিখালিখি চলছে আর আমার নিজের জ্ঞানের পরিধিও খুব ছোট। তবে অবশ্যই আলোচনা হওয়া উচিত কারন যাদের মাথা এখনো পুরোপুরি অন্ধ হয়নি তাদের চিন্তার দূয়ার খুলবে।
১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০২১ বিকাল ৪:১২
জাদিদ বলেছেন: এটা দুঃখজনক আপু। ধর্ম নিয়ে পড়াশোনা আর অজ্ঞতার কারনে অনেকেই এখানে মন্তব্য করতে চান না।
তবে অনেকেই পড়েছেন, সম্মতি জানিয়েছেন চুপি সারে! কারন ধর্ম নিয়ে লেখাতে সচরাচর কেউ নাক গলাতে চায় না।
অতি অল্পতেই ধর্ম যাবার ভয় থাকে। অথচ জানার আগ্রহ নিয়ে প্রশ্ন করলে, আল্লাহ সম্পর্কে জানতে চাইলে - ঈমান নষ্ট হয় না। 'ঈমান যাবার ভয় দেখানো হয় উদ্দেশ্য প্রণোদিত ভাবে। কারন আল্লাহ হচ্ছেন অন্তরযামী। তিনি গায়েব সম্পর্কে জানেন। তিনি নিশ্চয় আমার অন্তরের ভাষাও জানেন। ফলে আমার অন্তরে ঈমান আছে না কি না, সেটা সবচেয়ে ভালো জানেন আল্লাহ আর আমি। অন্য কেউ না।
নিজের ধর্মকে নিয়ে যদি নিজে আত্মবিশ্বাসী না হতে পারি, তাহলে কেমনে কি?
ধর্ম তো ভয়ের জিনিস না। ভন্ডরাই আল্লাহ সম্পর্কে বান্দাকে ভয় দেখায়। আল্লাহর ভালোবাসা সম্পর্কে বলে কম।
আপনি যাকে ভালোবাসেন, তার অনেক কিছুই আপনি ক্ষমা করে দেন, আল্লাহ তেমনটাই করেন। কিন্তু যদি কেউ ভালোবাসায় প্রতারনা করে, তখন আপনি যা করতে পারেন, আল্লাহও তার চেয়ে বেশি করতে সক্ষম। এটাই ঈশ্বর সম্পর্কে সঠিক মুল্যায়ন।
৩৯| ১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০২১ দুপুর ১২:১৯
ঈশ্বরকণা বলেছেন: থাঙ্কস, আপনার মন্তব্যটা মুছে এখনকার মন্তব্যের সাথে ইনকর্পোরেট করে দেবার জন্য । এখনকার মন্তব্যের পুরোটুকুই আপনার দিক থেকে যুক্তিপূর্ণই হয়েছে খুব বেশি ঝাঁঝালো টোন ছাড়াই । আগের মন্তব্যটার কিছু কিছু জায়গা পড়তে পড়তে মনে হয়েছিল জাদিদ নিকটা প্রথম দেখছি ব্লগে কমেন্ট করতে। খুব উঁচু আর কঠিন টোনটা আপনার ব্লগ প্রকৃতি আর পরিচয়ের সাথে ঠিক যাচ্ছিলো না । সেটা শুধু আমি না কিন্তু বর্ষীয়ান ব্লগার শাহ আজিজেরও চোখে পড়েছে তার মন্তব্য থেকে বুঝলাম । যাক, মন্তব্যের উত্তর দেবার জন্য ধন্যবাদ। আখেনাটেনকে একটু বলেবেন ইচ্ছে করেই উনার মন্তব্যের উত্তর দিলাম না । আসলে দিতে ইচ্ছেও করছে না । এই বিষয়ে আর কথা বলতে ইচ্ছে করছে না ।ভালো থাকুন ।
৪০| ১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০২১ বিকাল ৪:৪৬
নতুন বলেছেন: সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: রসূল (সা) এবং প্রথম ৪ জন খলিফা পূর্ণ আল্লাহর নির্দেশিত বিধানে দেশ শাসন করতেন। ইসলামের সকল বিধান মিলেই শরিয়া, শুধু আইন না। আল্লাহ যা নির্দেশ করেছেন শাসকদের জন্য তার বাইরে বিচার করা হারাম, যদি না সে বাধ্য হয়। ইসলামের অনেক ব্যাপারেই হাদিস, ইজমা ও কিয়াসের সাহায্য নেয়া হয়। এটা বৈধ। ইজমা ও কিয়াসে অনিচ্ছাকৃত ভুল হতে পারে। আপনি এই লিংকটা দেখতে পারেন। The kufr of one who rules according to other than what Allaah revealed । জাল হাদিসের ব্যাপারটা ভিন্ন। জাল হাদিস যে গ্রহণযোগ্য নয় এটা সবাই জানে। সৌদি আরবে মোটামুটি সঠিকভাবে আল্লাহর নির্দেশিত পথে দেশ চালানো হত। তবে বর্তমান জমানায় সেই রকম কোন আদর্শ দেশ পাবেন না। ইসলামী শরিয়ার অস্তিত্ব আছে। এটা হাওয়ার উপর নাই। ইসলামের শুধু আইন না অনেক কিছুতেই ইজমা ও কিয়াসের প্রয়োজন হয়। এটা প্রতিষ্ঠিত জিনিস। আলেমদের সততা ও যোগ্যতা সম্পর্কে আপনি প্রশ্ন করতে পারেন। সেটা ঠিক আছে। ভালো ও সৎ আলেম ও ফকিহকে এই সব ব্যাপারে নিয়োগ করতে হবে।
সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: খোলাফায়ে রাশেদিনের সময় ইজমা এবং কিয়াস হত। কিন্তু তার জন্য কেউ বলতো না যে এটা আল্লাহর আইন না। ইসলামে যোগ্য আলেমদের মানার কথা বলা আছে। এটা ইসলামের একটা বেসিক জিনিস। তাই এগুলি ওনাদের খেয়াল খুশির রায় না। কোরআন, হাদিসের আলোকেই দিয়ে থাকেন। কোন আলেম খেয়াল, খুশির রায় দিলে তাকে আলেম বলা যাবে না। যোগ্য আলেমদেরকে রসুলের ওয়ারিস পর্যন্ত বলা হয়েছে। ইসলামিক রাষ্ট্রে এই রকম বিজ্ঞ আলেমদের সমন্বয়ে গঠিত কমিটির রায়কে মানা বাধ্যতামুলক। কারণ এই অনুমতি আল্লাহ এবং আল্লাহর রসুল (সা) দিয়েছেন। এরকম অনুমতি দেয়া না থাকলে পরবর্তী জমানা এবং বর্তমান জমানার অনেক নতুন বিষয়ে রায় দেয়া যেত না। মামুনুলকে আপনারা কেন উদাহরণ হিসাবে টানেন এটা আমি বুঝি না।
ইশ্বরকনা ভাই<<<<
বাংলাদেশের মতো ছোট একটা দেশ চালাতেও হাজার আইন দরকার হয় । সেগুলো যুগোপযোগী রাখতে এমেনমেন্ডের দরকার হয় । আর ইসলামতো নির্দিষ্ট রাজনৈতিক সীমানা ছাড়ানো আরো বড় একটা বিষয়।ইসলাম অনুশীলনের জন্য কুরআনের ঘোষিত আইনের সাথে সাথে রাসূলের করা ফায়সালা ছাড়াও আরো অনেক আইনই লাগবে । ইসলামিক শরিয়া আইনের সৃষ্টিও সে জন্যই। ইসলামিক ফান্ডামেন্টাল রুলসগুলো শরিয়া আইনে একই থাকবে কিন্তু কম্প্লিমেন্টাল আইনগুলো সময়ে সময়ে পরিবর্তিত বা যোগ বিয়োগ হবে ।এটাতে আশ্চর্যের কিছু নেই । আইনগুলো আল্লাহর মূল নির্দেশনাগুলো আর রাসূলের দেখানো পথ অনুসরণে হচ্ছে কিনা সেটাই প্রধান বিষয় এখানে। কুরআনওতো মানুষের মুখ দিয়েই আল্লাহ মানব জাতির জন্য পাঠিয়েছেন ।মানুষের ভাষাতেই সেগুলো রেকর্ড করা হয়েছে । সে নিয়ে যদি প্রশ্ন না থাকে তাহলে কুরআনের বলা আইনগুলো প্রয়োগ করতে যেয়ে যেই কম্প্লিমেন্টারি আইনগুলোর দরকার সেগুলো নিয়ে অনর্থক যারা প্রশ্ন তুলে তারা সৎ উদ্দেশ্য থেকে সেই প্রশ্নগুলো করে কি না সেটা বোঝা সমস্যা হয়ে গেলো আপনার লেখা থেকে । এখানে ত্রুটি বিচ্যুতির ব্যাপার না খোঁজাই ভালো। কিছু দুর্জন মানুষ নিজের স্বার্থে আইন টুইস্ট করলো সেজন্য শরিয়া আইনের"--- হাজারো ত্রুটি বিচ্যুতি আছে। খোলা মনে জানার আগ্রহ নিয়ে পড়লে যে কেউ এর অসারতা টের পাবে" এই ধরণের মন্তব্য না করাই সমিচীন বলে আমার ধারণা।
নীল আকাশ ভাই <<<<ইসলামী চিন্তাবিদের সিদ্ধান্ত এই যেঃপার্থিব বিষয়গুলি, সে সমস্ত বিষয়াদিতে ইজতিহাদ বা রায়ের আশ্রয় নেয়া যায়। কিন্তু যে বিষয়গুলো ইসলামী শরীয়তের অংশ, সেগুলো পুরোটাই ওয়াহীভিত্তিক সিদ্ধান্ত থেকে নিতে হবে। এবং এটা সবচেয়ে সঠিক অভিমত।কেননা নবী সাল্লালাহু আলাহিস ওয়াসাল্লাম স্পষ্টভাবেই বলেছেন, "যে বিষয়ে কুরআনের কিছু নাযিল হয়নি আমি তো সে ক্ষেত্রে কেবল আমার ইজতিহাদ দ্বারা তোমাদের উভয়ের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত প্রদান করবো"। সুতরাং কুরআন ও সুন্নাহ না পাওয়া পর্যন্ত রায় কিয়াস বা ইজতিহাদের উপর ভিত্তি করে আমল করা যাবে। কিন্তু দলীল পাওয়া মাত্রই সেগুলোর কার্যকারিতা বাতিল বলে গণ্য হবে। যেমন ইমাম শাফেঈ রহিমাহুল্লাহ তার বিখ্যাত গ্রন্থ রিসালাহতে বলেনঃ"যতক্ষণ দলীল অবর্তমান শুধু ততক্ষণই কিয়াস আমলযোগ্য, যেমনভাবে পানির অবর্তমানে মাটি দ্বারা তায়াম্মুম বৈধ"।সুতরাং মত পার্থক্য থাকবেই। কিন্তু মূল বিষয় হলো যারা ইজতিহাদ করছেন তাদের জ্ঞানের সীমা কতটুকু?
উপরের আলোচনা মতে কি আমরা বলতে পারি যে
""সকল আল্লার আইন শরিয়া আইনের অন্তভুক্ত কিন্তু সকল শরিয়া আইনই আল্লার আইন না।"" ???
শরিয়া আইনের ভিক্তি কোরানের উল্লেখিত আইন এবং পরের যেই সমস্যা আসবে তা ইসলামী জ্ঞানীদের সিদ্ধান্তে তৌরি আইন্ো শরিয়া আইনের অন্র্তভুক্ত?
১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০২১ বিকাল ৫:০৪
জাদিদ বলেছেন: আমি ১৩ নাম্বার মন্তব্যে একটা প্রশ্ন করেছি। সবচেয়ে বড় কথা, আপনি যে প্রশ্নগুলো করেছেন এই প্রশ্নগুলোর সঠিক উত্তর ব্যক্তি বিশেষের কাছে খোঁজার চাইতে নিজস্ব গবেষনার মাধ্যমে করাই শ্রেয়। কারন বিভিন্ন কমেন্ট থেকে জেনেছি সৎ উদ্দেশ্যে আপনি যা করবেন, সেটা ভুল হলেও দায়ভার আপনার নিশ্চয় হবে না।
৪১| ১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০২১ বিকাল ৫:১১
নতুন বলেছেন: বেশির ভাগ মানুষ মনে করে শরিয়া আইন আল্লাহের আইন। সেটা ঠিক ধারনা না। আপনার প্রশ্নের সাথে সম্পূর্ন এক মত।
আমাদের দেশে শরিয়া আইনের কমিটিতে অনেকেই থাকবে যারাদের সাথে করোনার স্বপ্নে বিশ্বাস করে, কন্টারকটিক মহাদেশের তলে কি আছে সেটা জানে, মামুনুলের মতন গোপনে মানবিক বিয়েতে বিশ্বাস করে, চাদে মানুষ গিয়ে আজান শুনেছে বলে বিশ্বাস করে।
তাই জ্ঞানবিজ্ঞানে পিছিয়ে থেকে শরিয়া আইনের মতন জিনিস নিয়ে বিশ্বে এগিয়ে যাবে এমন ধারনা পোষন করা এক রকমের বোকামী বলেই আমার কাছে মনে হয়।
১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০২১ বিকাল ৫:১৬
জাদিদ বলেছেন: সেটাই। যে ভদ্রলোকের কথা বললেন আপনি, তাঁকে এই দেশের সেরা আলেম বলে সমাজের একটা বড় অংশ মনে করে। এখন প্রশ্ন উঠা যদি অস্বাভাবিক হয়, তাহলে আমার আর কিছু বলার নাই।
৪২| ১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০২১ বিকাল ৫:৫৮
নতুন বলেছেন: কিছু মানুষ আছে যারা ধর্মের উপরে কোন প্রশ্ন করতে চায় না। তারা মনে করে প্রশ্ন করলেই পাপ, ধর্ম নাশ হয়ে যাবে।
আপনি যাদের কথা বলে উদাহরন দেবেন তখন বলবে এটা সহী ইসলাম না।
তাহলে সহি ইসলাম কোনটা।
দেশের বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমের পোস্টে কমেন্ট পড়লে বোঝা যায় মানুষ কতটা অবুঝ ভাবে তালেবানদের জয়ে আনন্দ প্রকাশ করছে। এবং তাদের সমালোচনা করলে আক্রমন করছে। তারা মনে করছে তালেবানের জয় ইসলামের জয়।
এই বলদে আকবর দের ধর্মের নামে মানুষ মারার জন্য ব্রেনওয়াস্ড করা খুবই সহজ।
এই সমস্যাটার কথা আমাদের আলেম সমাজ কখনোই বুঝতে পারবেনা।
৪৩| ১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০২১ বিকাল ৫:৫৮
সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: আমি আগেই উল্লেখ করেছি যে কিয়াসে ভুল থাকতে পারে। ইজতেহাদি ভুলের ব্যাপারে হাদিস আছে। নীল আকাশ ভাইয়ের মন্তব্যে হাদিসটি পাবেন। কিন্তু আল্লাহতালা বিচারক বা আলেমদের অনিচ্ছাকৃত ভুলকে মাফ করে দিয়েছেন। ভুল প্রমাণিত না হওয়া পর্যন্ত সেটা সঠিক। এটার জন্য কাউকে দোষী করা হবে না। এটাই আল্লাহর বিধান। ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলির অধিকাংশই রসূলের (সা) জমানাতেই ফয়সালা হয়ে গিয়েছিলো। কিয়াসে যে বিষয়গুলি আসে সেগুলি ঐ বিষয়গুলির চেয়ে কম গুরুত্বপূর্ণ। একাধিক মত রসূলের (সা) জমানাতেই গ্রহণযোগ্য ছিল অনেক ক্ষেত্রে। একাধিক মত থাকা মানেই একজন ভুল আরেক জন সঠিক এমন না। ইসলামী রাষ্ট্রের বিচারক কোরআন ও সুন্নাহর জ্ঞান থেকেই রায় দেন। তাই এটা আল্লাহর আইন না বরং মানুষের আইন এই কথা বলা যাবে না। ইসলামী সকল আইনের মূল উৎস কোরআন এবং হাদিস। তাই মানুষের আইন বলা যাবে না। আলেমরা নবীর ওয়ারিস। প্রয়োজনে তাদেরকে কোরআন, হাদিসের আলোকে ফতওয়া দেয়ার অনুমতি দেয়া হয়েছে। তাই একজন বিজ্ঞ আলেমের ফতওয়াকে মানুষের বিধান বলে ছোট করে দেখার সুযোগ নাই। তবে সরকারী আর তরকারি আলেম না হয়ে তাদের প্রকৃত খাঁটি আলেম হতে হবে। ইজমা তাকেই বলে যে ব্যাপারে কোন দ্বিমত নাই। তাই সংজ্ঞা অনুসারে এটাতে ভুল থাকতে পারে না। ইজমা হঠাৎ করে তো হয় না। অনেক যুগ পর্যন্ত যখন আলেমরা কোন বিষয়ে একমত থাকেন তখনই ইজমা প্রতিষ্ঠিত হয়। মুসলমান জনগোষ্ঠী কোন ভুল বিষয়ে একমত হবে না এই কথা আল্লাহর রসূল (সা) বলে গেছেন।
কাঁকরার মাংস হানাফি মাজহাবে হারাম কিন্তু শাফিই মাজহাবে হালাল। এখন কেউ বলতে পারে না যে ইমাম আবু হানিফা ভুল সিদ্ধান্ত দিয়েছেন। বরং উভয় সিদ্ধান্তই সঠিক। যে কোন একটা মানলেই হবে। তার জন্য কেউ গুনাহগার হবে না। এইটাই ইসলামের প্রশস্ততা।
আমার বক্তব্য হোল আল্লাহর আইন বা শরিয়া আইন বলতে শুধু কোরআন আর হাদিসে সরাসরি উল্লেখিত বিধান গুলিকেই বুঝায় না। ইজমা এবং কিয়াসও শরিয়া আইনের অন্তর্ভুক্ত। এটার অনুমতি আল্লাহ ও আল্লাহর রসূল (সা) দিয়েছেন। অর্থাৎ এগুলিকেও আল্লাহর আইনের অংশ হিসাবে ধরা হয়। কিন্তু আপনি বলতে চাচ্ছেন যে আল্লাহর আইন বলতে শুধু কোরআন আর হাদিসে সরাসরি উল্লেখিত বিধানগুলিকে বুঝায়। বাকি ইজমা, কিয়াস আল্লাহর আইনের অংশ না। এখানেই আমার আপত্তি। আল্লাহ ও আল্লাহর রসূল (সা) আলেমদেরকে অনুসরণ করার কথা বলেছেন। অবশ্যই যতক্ষণ তারা কোরআন ও সুন্নাহর আলোকে রায় দিবেন ততক্ষণ। ইজমা আর কিয়াসের প্রশ্ন তখনই আসে যখন কোন বিষয় সম্পর্কে সরাসরিভাবে কোরআন বা হাদিসে কিছু পাওয়া না যায়। এই বিষয়গুলি কম গুরুত্বপূর্ণ, কারণ রসূলের (সা) জমানাতেই মৌলিক বিষয়গুলির ব্যাপারে বিধান দেয়া হয়েছে। এই কারণে পরবর্তী জমানার নতুন বিষয়গুলির ক্ষেত্রে প্রশস্ততা রাখা হয়েছে এবং আলেমদেরকে সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষমতা দেয়া হয়েছে। সবচেয়ে বড় কথা কোন আলেমের ভুল সে ই বের করতে পারে যে তার চেয়েও বড় আলেম। আমি বা আপনি না। শরিয়া একটি বিশেষায়িত বিষয় যে কেউ তার অল্প জ্ঞানে বলতে পারে না যে এই আলেম ভুল বলেছেন। এই বিষয়ে সব চেয়ে বেশী যারা জানে তারাই ফতওয়া দিয়ে থাকেন। ফতওয়া দেয়ার অধিকার সবার থাকে না। সমস্যা হোল বর্তমান জমানায় অনেক ক্ষেত্রে আলেমের নামে অনেক জালেম আছেন যারা অর্থ, ক্ষমতার লোভে ভুল রায় দিয়ে থাকেন। এই ইন্টারনেটের যুগে আমাদের শুধু দেশের না বিশ্বের প্রখ্যাত আলেমদের ফতওয়াগুলি শুনতে হবে এবং প্রকৃত আলেমদেরকে চিনতে হবে।
আপনার আরেকটা প্রশ্ন ছিল যে আলেমরা ভুল করলে কি হবে। আমার উত্তর হোল ভুল করলে ঠিক করে নিতে হবে। অনিচ্ছাকৃত ভুলের জন্য আল্লাহর কাউকে শাস্তি দেবেন না। কিন্তু বিশ্বের শ্রেষ্ঠ আলেমরা যখন ফতওয়া দেন এবং আরও অনেক প্রখ্যাত আলেম যখন সেটাকে সমর্থন করেন সেই ক্ষেত্রে ভুলের সম্ভবনা খুব কম থাকে।
১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০২১ রাত ১২:০৫
জাদিদ বলেছেন: হা হা হা হা। আমার প্রশ্ন গুলোর মনে হয় হ্যাঁ বা না তে জবাব সম্ভব না। হা হা হা। যাইহোক, আপনাকে ধন্যবাদ। আপনার থেকে অনেক কিছু শেখার আছে। বিশেষে করে কিভাবে স্কেপ করতে হয়। এই ব্যাপারে আপনার দক্ষতা প্রবাদ সমতুল্য।
আমি ধর্ম সম্পর্কে আপনাদের তুলনায় খুবই কম জানি, প্রায় জানি না বললেই চলে। ফলে আমার লেখা এত সিরিয়াসভাবে নেয়ার প্রয়োজন নাই। আপনি, নীল আকাশ ভাই, ঈশ্বরকনা আপনারা সবাই অনেক ভালো জানেন, সঠিক জানেন। আমরা যা পড়েছি বা যা জেনেছি, সেইগুলো সামান্য বই টই পড়ে উপলব্ধি। সেইগুলো আমাদের বুঝার ভুল হতেই পারে।
আপনি বলেছেন আলেমরা নবীর ওয়ারিস, ভালো কথা। তবে মজার ব্যাপার হচ্ছে বহু হুজুর ডাঃ জাকির নায়েককে অবশ্য আলেম মনে করেন না। তাঁকে বলে স্বঘোষিত গবেষক। যদি রেফারেন্স চান, আমি দিতে পারব। যাইহোক, যেহেতু হুজুররা জাকির নায়েককে আলেম বলেন নাই, অতএব এই বিষয়ে আর কোন তর্ক নাই। যতদিন পর্যন্ত কেউ তাদেরকে ভুল প্রমানিত না করবে, ততদিন এই ফতোয়াই মানে ডা জাকির আলেম নন বলেই বিবেচিত হবে ধরে নিচ্ছি।
আল্লাহ অবশ্য কোরানে বলেছেন - তোমাদের মধ্যে যারা ঈমান এনেছে এবং যাদেরকে জ্ঞান দান করা হয়েছে আল্লাহ তাদেরকে মর্যাদায় সমুন্নত করবেন। আর তোমরা যা কর আল্লাহ সে সম্পর্কে সম্যক অবহিত।’ (সূরা আল-মুজাদালা, আয়াত: ১১)
২। বান্দাদের মধ্যে কেবল জ্ঞানীরাই আল্লাহকে ভয় করে। নিশ্চয় আল্লাহ মহাপরাক্রমশালী, পরম ক্ষমাশীল।’ (সূরা ফাতির, আয়াত : ২৮)
শুভ রাত!
৪৪| ১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:০৮
নতুন বলেছেন: আমার বক্তব্য হোল আল্লাহর আইন বা শরিয়া আইন বলতে শুধু কোরআন আর হাদিসে সরাসরি উল্লেখিত বিধান গুলিকেই বুঝায় না। ইজমা এবং কিয়াসও শরিয়া আইনের অন্তর্ভুক্ত। এটার অনুমতি আল্লাহ ও আল্লাহর রসূল (সা) দিয়েছেন। অর্থাৎ এগুলিকেও আল্লাহর আইনের অংশ হিসাবে ধরা হয়। কিন্তু আপনি বলতে চাচ্ছেন যে আল্লাহর আইন বলতে শুধু কোরআন আর হাদিসে সরাসরি উল্লেখিত বিধানগুলিকে বুঝায়। বাকি ইজমা, কিয়াস আল্লাহর আইনের অংশ না। এখানেই আমার আপত্তি।
সাচু ভাই এইখানেই তো আমারও আপত্তি।
আপনি কোরানের কথা আল্লাহের কথা বলতে পারেন কিন্তু হাদিসের কথা কি আল্লাহের কথা বলতে পারেন?
এই জন্যই আমি বলেছি যে সকল আল্লাহের আইন শরিয়া আইনের অন্তভুক্ত কিন্তু সকল শরিয়া আইনই আল্লাহের আইন না।
কাঁকরার মাংস হানাফি মাজহাবে হারাম কিন্তু শাফিই মাজহাবে হালাল।
হারাম কাজের সাজা যদি দোজখ হয়ে থাকে তবে আল্লাহ কাকরা খাবার জন্য এক হানাফী অনুসারীকে দোজখে পাঠাবেন আর শাফিই অনুসারীর কিছুই হবে না?
কোরানে উল্লেখিত আইনগুলি আপনি আল্লাহের আইন বলতে পারেন। কিন্তু যেটা কোরানে নাই এবং পরে মানুষেরা আলোচনা করে আইন বানিয়েছে সেটাকে আল্লাহের আইন বলতে পারেন না।
৪৫| ১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:২৩
সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: বর্তমান যুগের বিশ্ব বিখ্যাত আলেমরা যদি আগের যুগের কোন ফতওয়া ভুল প্রমাণ করতে পারেন সেই ক্ষেত্রে সমস্যা নাই। কিন্তু একজন দুইজন আলেম হলে চলবে না, বিশ্বের অনেক প্রখ্যাত ও খাঁটি আলেম যদি তা সমর্থন করেন এবং তা যদি কোরআন ও সুন্নাহ দ্বারা অকাট্যভাবে প্রমাণিত হয় তাহলে এটা সম্ভব। চার ইমামের মধ্যে ইমাম আবু হানিফা এবং আরও দুই একজন ইমাম পরিষ্কারভাবে বলে গেছেন যে যদি তোমরা আমার ফতোয়ার মধ্যে কোরআন বা সুন্নাহ বিরোধী কিছু পাও তাহলে কোরআন আর সুন্নাকেই মানবে আমার ফতওয়া না। অর্থাৎ তারা নিজেরাই স্বীকার করে গেছেন যে তারা ভুলের উরধে না। কিন্তু আমাদের সমস্যা হোল আমরা খাঁটি আলেম চিনতে ভুল করি। আমার একটা পরামর্শ হোল এই ইন্টারনেটের যুগে বিশ্বের যারা বড় বড় আলেম আছেন তাদের ফতোয়া অনুসরণ করেন। আপনি যদি দেশীয় আলেমেরটা মানতে চান তার আগে চেক করে নিবেন বিশ্বের আলেমরা কি বলছে। আমাদের যখন কঠিন কোন রোগ হয় তখন আমরা দেশের শ্রেষ্ঠ কয়েকজন ভালো ডাক্তারকে দেখাই। অনেক ক্ষেত্রে তারাও বিভিন্ন রকমের মত দেন। আমরা তখন আমাদের কাছে যেটা গ্রহণযোগ্য মনে হয় সেটা মানি। বিশ্বের এতো বড় বড় আলেম রেখে কেউ যদি তালেবানের ফতোয়া শোনে, হেলিকপ্টার হুজুরের ফতওয়া শোনে তাহলে আমি সেই ব্যক্তিকেই দোষ দেবো। আরেকটা ব্যাপার হোল ইসলামের উপর পড়াশুনা আমাদের সবার বাড়াতে হবে তবেই আমরা সঠিক ও বেঠিক আলেমের পার্থক্য নির্ণয় করতে পারবো। আরেকটা ব্যাপার হোল ইসলামের আকিদা ও মৌলিক বিষয়ের ক্ষেত্রে এই ধরণের মত বিরোধ নাই বললেই চলে। আমরা অধিকাংশ ক্ষেত্রে কম গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে দলাদলি করি। নামাজে হাত পেতে বাধবো নাকি বুকে বাধবো, আমিন জোরে বলবো না নীরবে বলবো, তারাবির নামাজ ৮ রাকাত না ২০ রাকাত এগুলি আমাদের মারামারির বিষয়। আল্লাহতালা উদার, তিনি সাধারণ বান্দা বা আলেম বান্দার অনিচ্ছাকৃত ভুলের জন্য তাকে শাস্তি দেবেন না। সব কিছু নির্ভর করে নিয়তের উপর।
৪৬| ১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:৩৩
সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: @ নতুন ভাই - আমি হাদিসের কথাকে আল্লাহর কথা বলি নাই। তবে হাদিসে কুদসি নামে এক ধরণের হাদিস আছে যেগুলি আল্লাহর কথা।
ইজমা, কিয়াস কোরআন এবং হাদিসের উপর ভিত্তি করেই হয়ে থাকে। এটা কোন আলেমের নিজস্ব মতামত না। আর যে কোন আলেমই ফতওয়া দিতে পারে না। ইসলামী রাষ্ট্রে ফতওয়া দেয়ার কমিটি থাকে। অনেক প্রখ্যাত আলেমের মতামত নিয়েই ফতওয়া দেয়া হয়ে থাকে। কোরআন, হাদিস বিরোধী ফতওয়া কোন ফতওয়া না। ফতওয়া ভুল হতে পারবে না এমন না। কিন্তু অনিচ্ছাকৃত ভুলের জন্য তাদেরকে আল্লাহ দায়ী করবেন না। শরিয়া আইনের মূল উৎস কোরআন এবং হাদিস। ইজমা ও কিয়াসও শরিয়া আইনের উৎস, তবে এই উৎস কোরআন ও হাদিসে উপর নির্ভরশীল। আপনি নীল আকাশ ভাইয়ের মন্তব্য থেকে বুঝতে পারবেন, যে ক্ষেত্রে কোরআন সুন্নাহ থেকে সরাসরি কোন নির্দেশ না পাওয়া যায় সেই ক্ষেত্রে আলেমরা কোরআন ও সুন্নাহর আলোকে ফতওয়া দিয়ে থাকেন। এটা ইসলামে একটা স্বীকৃত বিষয়। এই ব্যাপারে ইজমা আছে। পৃথিবীর কোন আলেম এটার বিরোধিতা করেন নি। [link|https://islamqa.info/en/answers/112268/sources-of-islamic-legislation|এই লিংকটা দেখতে পারেন।
রসূলের (সা) জমানা থেকেই অনেক ক্ষেত্রে একাধিক মতামতকে সঠিক বলা হয়েছে। এটা ইসলামের প্রশস্ততা। তবে এই একাধিক মতামতগুলি অপেক্ষাকৃত কম গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সংক্রান্ত। মূল ধর্মীয় বিশ্বাস বা ইসলামের মৌলিক কোন বিষয়ের ক্ষেত্রে একাধিক মত নেই। আল্লাহ মানুষের জন্য ইসলামকে সহজ করার চেষ্টা করেছেন। আমরা ছোটখাটো বিষয় নিয়ে ইসলামকে কঠিন করার চেষ্টা করছি। বর্তমান পৃথিবীতে কোন দেশে আদর্শ কোন শরিয়া আইন নাই। এগুলির মধ্যে অনেক ত্রুটি বিচ্ছুতি আছে। এই কারণেই আমরা বিভ্রান্তির মধ্যে পড়ছি। সৌদি আরবে ৯৫% হয়তো সঠিকভাবে মানা হয়ে থাকে। ওখানে রাজাদের স্বার্থ জড়িত, তাই অনেক ক্ষেত্রে শাসকরা এটাকে নিজেদের মত প্রয়োগ করতে চায়।
৪৭| ১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:৫৮
নতুন বলেছেন: সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: @ নতুন ভাই - আমি হাদিসের কথাকে আল্লাহর কথা বলি নাই। তবে হাদিসে কুদসি নামে এক ধরণের হাদিস আছে যেগুলি আল্লাহর কথা
সৌদি আরবে ৯৫% হয়তো সঠিকভাবে মানা হয়ে থাকে। ওখানে রাজাদের স্বার্থ জড়িত, তাই অনেক ক্ষেত্রে শাসকরা এটাকে নিজেদের মত প্রয়োগ করতে চায়।
আমি জানি আপনি বলবেন না কিন্তু যদি আপনি মানুষের আলোচনা করা সিদ্ধান্ত আল্লাহের আইন বলে মানতে বলেন তবে হাদিসের কথা কেউ কোরানের কথা বলার মতন হয়ে যায় সেটা বলেছি।
রাজারা ধর্ম নিজেদের সার্থেই ব্যবহার করে। ইতিহাসে দেখুন মানুষকে নিয়ন্ত্রন এবং মানুষদের দিয়ে কোন কাজ করাতে ধর্মের চেয়ে প্রভাবশালী আর কি আছে বলুন?
সৌদি রাজারা নিজেরা সম্পূর্ণ আধুনিক জীবন জাপন করে। শরিয়া আইন শুধু জনগনের জন্য। দুবাইতে অনেক নামকরা পরিবার বেড়াতে আসে তখন হোটেলে নির্দেশ থাকে যে এলকোহলের বিল রুমে পোস্ট করা যাবেনা। সেটা তারা ক্যাশ পরিশোধ করবেন। এমন অনেক ঘটনা আছে, । কারন শরিয়া আইন তারা নিজেদের জন্য না বরং জনগনের জন্য ব্যবহার বেশি করে।
৪৮| ১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০২১ রাত ১০:১৩
হাসান কালবৈশাখী বলেছেন:
ইসলাম আবির্ভাবের ১৪০০ বছরেও পৃথিবীর কোন দেশে সম্পুর্ন শরিয়া আইন চালু করতে পারেনি।
১০০% জনসংখা মুসলিম হলেও পারেনি।
এজাবৎ পৃথিবীতে কোথাও একটি আদর্শ ইসলামি দেশও গঠিত করা সম্ভব হয় নি। যাদের আদর্শ ফলো করে অন্যান্ন দেশ গঠিত হবে।
ডাকাতদের পলিটিকাল ইসলাম ব্যার্থ। ব্যক্তিগত ইসলাম সফল।
৪৯| ১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০২১ রাত ১১:৪৬
আল ইফরান বলেছেন: জাদিদ ভাই, এখানে অনেকেই অনেক জ্ঞানলব্ধ মন্তব্য-প্রতিমন্তব্য করেছেন।
আমি ব্যক্তিগতভাবে ইসলামি আইনের দক্ষ কেউ নই, পেট চালানোর তাগিদে অল্প-সল্প পড়াশুনা করতে হয়েছে।
সেখান থেকে যদি বলি তাহলে শরিয়া আইন পরিবর্তনযোগ্য আইন যতক্ষন না সেটা কুরআন/হাদীসকে কন্ট্রাডিক্ট না করে।
সবাই একটা বেসিক জায়গা মিস করে গিয়েছেন তা হচ্ছে শরিয়ত এর আভিধানিক অর্থই হচ্ছে 'পানি প্রবাহিত পথ' (ইংরেজিতে পরেছি Watering path হিসেবে, অনুবাদ ভুল হলে নিজ গুনে ক্ষমা করে দিবেন)।
শরিয়া আইন সময়ের সাথে সাথে অভিযোজিত হবে এটাই বরং স্বাভাবিক।
তবে অভিযোজনের জন্য সনদধারী আলেমদের সম্মতির প্রয়োজন হবে, কিন্তু সমস্যা হচ্ছে আমাদের ধর্মে এত বেশি ফেরকা যে সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত খুজে পাওয়া খুব সহজ হবে না। আর যদি শরিয়া আইনের ক্ষেত্রে বাহিরের বিজ্ঞ আলেমদের মতামত গ্রহন করতে যাওয়া হয় তাহলে কালচারাল কনটেক্সট অনেক সময় বর্জন করতে হবে। আমার সীমিত জ্ঞানে এর চাইতে বেশি কিছু বুঝতে পেরে উঠি নি এখনো।
১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০২১ রাত ১২:০৯
জাদিদ বলেছেন: আপনাকে আন্তরিক ধন্যবাদ। আমি অনেকটা এমনটাই বুঝাতে চেয়েছি। শরিয়া অবশ্যই পরিবর্তন যোগ্য। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে ইহাকে অনেকেই পরিবর্তন যোগ্য মনে করে না এবং সেটার অপব্যবহার করে।
শরিয়া আইন সময়ের সাথে সাথে অভিযোজিত হবে এটাই বরং স্বাভাবিক। - এমনটাই ইমাম হানিফা বলে গেছেন। আমি বলতে চেয়েছি, শরিয়া আইনের একটা অংশ কোরান হাদিস থেকে এসেছে, সেটা আল্লাহর আইন আর বাকিটা যেটা ইজমা কিয়াস ও অন্যান্য পদ্ধতিতে সম্পন্ন হয়েছে সেটা মানুষের তৈরী, মানুষ সিদ্ধান্ত নেয়। ফলে যুগের সাথে সাথে ইহার পরিবর্তন ঘটে।
শ্রেফ এটাই আমার বক্তব্য।
৫০| ১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০২১ রাত ১২:৩০
কালো যাদুকর বলেছেন: এত কিছু জানতাম না। তবে যে যে দেশে বসবাস করেন, তকে সেই দেশের আইন মেনেই চলতে হবে-এমন টাই শুনেছি ইসলামে বলে।
বাংলাদেশে বা আমেরিকাতে বসে শরিয়া আইনের কল্পনাও করা যায় না। শুধুই অলোচনার জন্য আলোচনা করে কি লাভ, হয়তো একাডেমিক গেইন হয়।
ধন্যবাদ।
৫১| ১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০২১ সকাল ১১:৪২
সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: আপনি আমার মন্তব্যের ব্যাপারে একটা ভুল জিনিস বলেছেন বলে আমার মনে হচ্ছে। সেটা হোল আপনি বলেছেন যে আমি এড়িয়ে গেছি। আপনি আমাকে দুইটা প্রশ্ন করেছিলেন। আমি দুইটারই উত্তর দিয়েছি। আপনি জিজ্ঞেস করেছিলেন যে আলেমরা ভুল করতে পারে কি না। আমি মন্তব্যের প্রথমেই বলেছি "আমি আগেই উল্লেখ করেছি যে কিয়াসে ভুল থাকতে পারে। ইজতেহাদি ভুলের ব্যাপারে হাদিস আছে।"
আপনার দ্বিতীয় প্রশ্ন ছিল ভুল হলে কি প্রতিকার। প্রশ্নের সারাংশটা এরকমই। আমি বলেছি " আপনার আরেকটা প্রশ্ন ছিল যে আলেমরা ভুল করলে কি হবে। আমার উত্তর হোল ভুল করলে ঠিক করে নিতে হবে। অনিচ্ছাকৃত ভুলের জন্য আল্লাহর কাউকে শাস্তি দেবেন না। কিন্তু বিশ্বের শ্রেষ্ঠ আলেমরা যখন ফতওয়া দেন এবং আরও অনেক প্রখ্যাত আলেম যখন সেটাকে সমর্থন করেন সেই ক্ষেত্রে ভুলের সম্ভবনা খুব কম থাকে।"
আমি পাশ কাটিয়ে যাই নি। আপনার মন্তব্যে আরও কিছু ছিল যেগুলির ব্যাখ্যা আমার লেখাতেই আপনি পাবেন বলে আমি মনে করেছি। আমার মনে হয়েছে আপনি আমার মন্তব্য সম্পর্কে ভুল বলেছেন। আমি আপনার বক্তব্য জানতে চাচ্ছি। নির্দিষ্ট কোন বিষয় যদি বাদ দিয়ে থাকি, আপনি আমাকে আবার প্রশ্ন করতে পারেন। কিন্তু পাশ কাটিয়ে গেছি এই রকম বলাটা ঠিক না।
আরেকটা ব্যাপার হোল শুধুমাত্র কাস্টমস এবং ট্র্যাডিশন সংক্রান্ত ইসলামি বিধান পরিবর্তন হতে পারে যুগের প্রয়োজনে। অন্যান্য কোন বিধান সময়ের সাথে পরিবর্তন হয় না। এই লিঙ্কটা দেখতে পারেন । আপনার সুবিধার জন্য তুলেও দিলাম।
Praise be to Allah.
This principle is expressed by some scholars in the words, “Changing rulings according to changing times is not to be denounced,” as it says in Majallat al-Ahkaam al-‘Adliyyah al-Maaddah, 39; Sharh al-Qawaa’id al-Fiqhiyyah by al-Zarqa, p. 227; and elsewhere.
This is one of the principles that are derived from the principle of al-‘aadah muhakkamah (custom is a source for rulings).
The word “rulings” here refers specifically to rulings that are based on custom and tradition. These are the rulings that may change according to time, place and circumstance.
It says in Durar al-Hukkaam Sharh Majallat al-Ahkaam: “The rulings which may change according to time are the rulings that are based on customs and traditions, because as time changes, the people’s needs change. Based on this, changes also affect customs and traditions, and changes in custom and traditions change the rulings, as we have explained above. This is unlike the rulings that are derived from shar’i evidence and are not based on custom and tradition, which do not change.
For example: the punishment for murder is execution. This shar’i ruling is not based on custom and tradition, and cannot be changed because of changing times. The rulings that can be changed as times change are those that are based on custom and tradition, as we have said.
There follow some examples: In the view of the earlier fuqaha’, if a person wanted to buy a house, it was sufficient for him to see some of the rooms; but according to later fuqaha’, if a person wants to buy a house he has to see each and every room of it. This difference is not based on evidence, rather it stems from changes in customs and traditions regarding the way in which houses are built. That is because in the past, when a house was built the custom was for all its rooms to be the same, so if a person saw some of the rooms he had no need to see the rest. But nowadays the custom is that in one house the rooms vary in size and shape, so when buying a house it is essential to see all the rooms.
From Durar al-Hukkaam, 1/47, by Shaykh ‘Ali Haydar. Similar comments are to be found in Sharh al-Majallah by Saleem Rustam, 1/36.
Al-Zarqa described this principle by saying:
Because sound character is rare nowadays, they said that testimony may be accepted from the best and then the next best, or from the least immoral then the next least immoral…
They said that it is permissible to ask the witnesses to swear an oath, if the opponent insists on that, and if the judge deems it appropriate, because of the corrupt nature of the times.
Sharh al-Qawaa’id al-Fiqhiyyah, p. 229/
Dr. Muhammad al-Zuhayli pointed out that the basic principle in sharee’ah is that rulings are fixed, and that the word “rulings” in this principle is not general in application. He said: “Hence the principle is specific and is an exception, whilst noting the following:
1-The basic rulings that are established in the Qur’aan and Sunnah and which Islam brought in its basic texts – the commands and prohibitions, such as the prohibition on wrongdoing, adultery, riba, drinking alcohol and stealing, the obligation of mutual consent in contracts, of fighting crime and protecting people’s rights – none of these can be changed as times change. Rather they are principles that were brought by sharee’ah to guide all people at all times. All that changes is the means by which they are achieved.
2-The pillars of Islam and basic rulings that no Muslim has any excuse for not knowing cannot be changed. They remain fixed as they were narrated and as they were in the first era of Islam, because they are not open to change.
3-All the rulings on worship are not subject to individual opinion or ijtihaad, and cannot be changed because of different times, places, countries or individuals.
4-Matters of ‘aqeedah are also fixed and cannot be changed or altered, and are not subject to ijtihaad. They have been fixed from the time they were revealed and from the time of the earlier Prophets and Messengers, and will remain so until the Hour begins. They cannot change because of changing times.
End quote. From al-Qawaa’id al-Fiqhiyyah ‘ala al-Madhhab al-Hanafi wa’l-Shaafa’i by Dr. Muhammad al-Zuhayli , p. 319.
Hence it becomes clear that there is no confusion about this principle, and that it does not provide proof for those who want to allow riba or mixing, for example, or who want to abolish the hudood punishments because the times have changed. The matters mentioned are firmly established in clear texts of the Qur’aan and Sunnah, and there is no room for changing or altering them, unless one wants to leave Islam altogether.
And Allaah knows best.
৫২| ১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০২১ সকাল ১১:৫৮
সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: একটা জিনিস মনে রাখবেন ইসলামি আলেম কেউ নিজে বই পড়েই হতে পারে না। তার জন্য স্বীকৃতির দরকার হয়। আগের যুগে এই স্বীকৃতি হতো মুখে মুখে এখন হয় প্রয়োজনীয় ডিগ্রি অর্জনের পাশাপাশি অন্যান্য আলেমদের স্বীকৃতির মাধ্যমে ও তাদের সান্নিধ্য লাভের মাধ্যমে। ইসলামি আলেম হতে হলে তাকে আরবি ভাষায় দক্ষ হতে হয়। কারণ কোরআন, হাদিস ও অন্যান্য অনেক ফিকাহর মুল বইগুলি আরবিতে লেখা। আরবি ভাষায় বিশেষজ্ঞ না হলে সে কোরআনের ব্যাখ্যা সঠিকভাবে দিতে পারবে না। এমন কি সাধারণ কোন আরবি ভাষী লোকও পারবে না। কারণ আরবি ভাষার ব্যাকরণ থাকে জানতে হবে। বিশেষায়িত ডাক্তারদের যেমন অনেক ভাগ আছে, তেমনি ইসলামি জ্ঞানেরও ভাগ আছে। একই সাথে কয়েকটা ইসলামি বিষয়ে জ্ঞান রাখেন এরকম লোক পৃথিবীতে হাতে গোনা আছে। কেউ কোরআনের উপর বিশেষজ্ঞ, যাদের মফাসসিরে কোরআন বলে। যিনি হাদিসে বিশেষজ্ঞ তাকে মোহাদ্দিস বলে। যিনি ফিকাহ শাস্ত্রে বিশেষজ্ঞ তাকে ফাকিহ বলে। এই ডিগ্রিগুলি কেউ একা একা অর্জন করতে পারে না। কেউ যেমন একা একা ডাক্তার হতে পারে না।
জাকির নায়েক সাহেবকে সব প্রখ্যাত আলেমরাই একজন দাই হিসাবে জানেন। উনি আরবি তেমন জানেন না বললেই চলে। তবে উনি মুলত একজন ধর্ম প্রচারক। ধর্ম প্রচারকের কাজ ফতোয়া দেয়া না। কারণ এই বিশেষায়িত জ্ঞান তিনি অর্জন করেননি। কাজেই উনি যতো জ্ঞানই অর্জন করেন না কেন, কিছু দুর্বলতার জন্য ওনাকে কোন আন্তর্জাতিক মাপের আলেমই আলেম বলবেন না। এটাই স্বাভাবিক। বই পড়ে ডাক্তার হওয়া যায় না। যতো বড় পণ্ডিতই সে হোক না কেন। ফতোয়া দেয়ার কারণেই উনি বিতর্কিত হয়েছেন। তবে উনি দাই হিসাবে অত্যন্ত সফল। ওনাকে আমি পছন্দ করি।
৫৩| ১৩ ই সেপ্টেম্বর, ২০২১ বিকাল ৩:১৪
জুল ভার্ন বলেছেন: যথার্থ।
১৩ ই সেপ্টেম্বর, ২০২১ বিকাল ৩:২৩
জাদিদ বলেছেন: ধন্যবাদ ভাইয়া।
৫৪| ০৯ ই এপ্রিল, ২০২২ রাত ৮:৫৫
মহাজাগতিক চিন্তা বলেছেন: শরীয়া আইন আল্লাহর দেওয়া পদ্ধতি অনুসারে তৈরী করা আইন। আল্লাহর দেওয়া পদ্ধতি অনুসরন করে তৈরী করা না হলে কোন আইনকে শরিয়া আইন বলা যাবে না। তালেবান মেয়েদেরকে চাকুরী ও পড়ালেখায় বাধা সৃষ্টি করছে তাদের এ আইন শরিয়তের কোথায় আছে আমার জানা নেই।
©somewhere in net ltd.
১|
০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০২১ রাত ১২:৩০
সুদীপ কুমার বলেছেন: সুন্দর বিশ্লেষণ।