নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

পৃথিবী জুড়ে নয়, এইখানে সন্ধ্যা নামছে...

লোকালয়ে মোর আলয়, তবু বাস করি অন্যলোকে

জাফরিন

চক্ষে আমার তৃষ্ণা তৃষ্ণা আমার বক্ষ জুড়ে

জাফরিন › বিস্তারিত পোস্টঃ

আমার কাছে তোমার ঋণ

০৪ ঠা জুন, ২০১৩ বিকাল ৫:৪৭

আমাদের হলে দুটি শিশু পাশাপাশি বড় হচ্ছে। একটি ডাইনিংয়ের সুপারভাইজার বীথি আপুর মেয়ে বৃষ্টি, আরেকজন পরিচ্ছন্নতাকর্মী মৌসুমির ছেলে সিয়াম। দুজনেরই যেহেতু কর্মজীবি মায়ের সন্তান, তাই হলের অন্যান্য কর্মচারি ও ছাত্রীদের আদর যত্নই ওদের ভরসা। এভাবেই তারা মায়ের ব্যস্ততার ক্ষতি পুষিয়ে নিচ্ছে।



সিয়ামের জন্য আমার কখনও কোনও চিন্তা হয়নি। সাবলীলভাবে সবার কোলে কোলে, আদরে, আলিঙ্গনে সুস্থ, স্বাভাবিকভাবে বেড়ে উঠছে ও। কিন্তু কেন জানি বৃষ্টিকে হলের সব পুরুষ কর্মচারিদের কোলে, কাঁধে উঠে খেলতে দেখলে আমার সাবধানী মনটা খুঁত খুঁত করে ওঠে।

দুই মায়ের সাথেই আমার প্রায় গল্প হয়।

একদিন কথায় কথায় মেয়ের মা-কে বলেই ফেললাম, "আপু, কিছু মনে করবেন না..জানি সবাই আপনার ছোট্ট মেয়েটাকে ভীষন স্নেহ করে, কিন্তু পেপারে যা দেখি......একটু সাবধানে রাখবেন।" উনিও বললেন তাঁর সার্বক্ষণিক আতংকের কথা। বিষয়টা উনি আগেই ভেবেছেন। কিন্তু উপায় নেই!

আর ছেলে শিশুর মা-টি-কে এসব কথা বলার কোনও দরকারই হয়নি। সে নির্ভার মনে কাজ করে সারাদিন। হাজার হাজার নারীর মাঝেও তার ছেলে শিশু সম্পূর্ণ নিরাপদ।



এভাবেই শুরু হয় একজন নারীর পথচলা, বেড়ে ওঠা, জীবনযাপনের জন্য প্রতিনিয়ত যুদ্ধ করা....

কত সংগ্রাম করে, প্রতিকুলতা অতিক্রম করে একটি মেয়ে যে সমাজে টিকে থাকে তা বোঝার সাধ্য একজন পুরুষের নেই। তারা (বিকৃত রুচির পুরুষরা) শুধু দেখতে পায় রক্ত-মাংসের এক আর্কষনীয় পুঁটুলি, আর কিছুই না।



ক্ষণিকের পশুত্ববোধের লালসা মেটানোর জন্য যখন তারা নারীকে ছিন্নবিচ্ছিন্ন করে, ক্ষত-বিক্ষত করে, এমনকি হত্যা করতেও দ্বিধা করেনা, তখন তারা এইসাথে ধ্বংস করে সেই মেয়েটির জীবনের প্রতিদিনের একটু একটু বেড়ে ওঠার গল্প, মাবাবার অক্লান্ত পরিশ্রম, ভালবাসা আর সুন্দর জীবনের সম্ভাব্য স্বপ্নটা!



নারীকে প্রতিনিয়ত রক্ত ঝরিয়ে টিকে থাকতে হয়। কথাটা আক্ষরিক অর্থেই প্রযোজ্য। কুমারীত্ব থেকে মাতৃত্ব অর্জন পর্যন্ত, আবার বহু সাধের সন্তানকে জন্মদানকালিন যন্ত্রনা, সবগুলোর পর্যায়ে নারী নিজ দেহের রক্ত ঝরিয়ে তবেই সার্থকভাবে পালন করতে পারে। ধর্ষকদের নারীর রজঃরক্তে স্নান করানোর কথাটা এ কারণেই বলেছিলাম। এটা আমাদের প্রতীকি প্রতিবাদ। তারা একবার দেখুক না, নারীর ভেতরে কী ভীষন স্রোতে বইছে রক্ত নদী....



প্রত্যেক পুরুষ তাই নারীর কাছে রক্তের ঋণে আবদ্ধ! সেই পুরুষ যখন আবারও রক্ত ঝরায় ধর্ষন নামক পাশবিক অত্যাচারের মাধ্যমে তখন তার জবাব রক্তের দ্বারাই দিতে হয়।



আর একটা ধর্ষনকারীকে আমরা ক্ষমা করব না। রক্তাক্ত করে, পাথর ছুঁড়ে, দা দিয়ে কুপিয়ে খুন করতে চাই। দেশে এই আইন চাই।

(ব্যবহৃত সব নাম ছদ্মনাম)

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ০৪ ঠা জুন, ২০১৩ বিকাল ৫:৫৭

যোগী বলেছেন:
ধর্ষনের মত ঘটনার কথা শুনলে নিজের ভেতরে ঘৃনা আর ক্রোধ জন্মের সাথে সাথে একজন পুরুষ হওয়ার দরুন দারুন ভাবে বিব্রতবোধও জন্মায়।

০৪ ঠা জুন, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:০৯

জাফরিন বলেছেন: পুরুষের প্রতি ক্ষোভ নেই। পুরুষের অনেক মহৎ রূপও দেখেছি। ওরা তো পশু ছাড়া কিছুই না।

২| ০৫ ই জুন, ২০১৩ বিকাল ৩:২৫

হাসান মাহবুব বলেছেন: ধর্ষকদের জন্যে কঠিনতম শাস্তি চাই। সকল নারী নিরাপদে থাকুক...

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.