![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
চক্ষে আমার তৃষ্ণা তৃষ্ণা আমার বক্ষ জুড়ে
গোল কাঁচের জারে বন্দী সোনালী শরীর আর রংধনু পাখনাওয়ালা ছোট্ট ছোট্ট প্রাণি। গোল্ডফিস, কমেট, গাপ্পি, ব্ল্যাক এ্যণ্ড হোয়াইট এ্যঞ্জেল, যেব্রা, ফাইটার... কত্ত নাম! বন্দী ওরা -জানেইনা নিজেরা! সারাদিন ফুরফুরে মনে বাবল কাটে। একে অপরের ন্যাজে গুঁতোগুঁতি, ছুটোছুটি, আর এইটুকু অপরিসর জায়গায় গোত্তা খেয়ে সুখী থাকা। একঘেয়েমি কাটাতে কখনো ডুব দিয়ে জারে লাগানো মানি প্ল্যান্টের শিকড়ে মুখটা ঘষে মেজে বেশ ফর্সা হয়ে আসে। এরই মধ্যে চলে হয়ত সঙ্গীকে ইম্প্রেস করার খেলা, কোনো জুটির অভিমান আর কারো নিবিড় প্রেম। দিনের বেলা জানালার কাঁচ চুইয়ে ছুঁয়ে যাওয়া এক দলা কুসুম রোদে গা সেঁকে আড়মোড়া ভাঙ্গে, আর ডিগবাজি খায়। রাত্তিরে ঠিক দশটায় কুড়িয়ে পাওয়া গোল গোল দানা খেয়ে দিব্যি পেট ফুলে ঢোল! তারপর চোখটা মেলেই পাখনা এলিয়ে খানিকটা নিথর হয়ে যাওয়া। খোলা চোখে কোন স্বপ্ন টপ্ন আসেনা... কেবল গোটা কয় বুদবুদ ফাটে গভীর রাতে।
জীবনে দুঃখ-কষ্ট, বিচ্ছেদ-অপমান এত কিছুর বালাই নেই বাবা! ভালই থাকে ওরা বছর ধরে। শুধু মাঝে মাঝে কাঁচের দেয়ালের ওই পাড়ে দেখে এক দৈত্যের ইয়া বড় বড় দুটো চোখ। স্বচ্ছ আর আর্দ্র। পুকুরের মত টুপটুপে জলে ভরে যায় কখনো, বৃষ্টির ফোঁটার মত পড়ে যায় ঝরঝরিয়ে। দেখে তারা খানিক বিরতি নেয়া খেলাধুলা থেকে। জারের দেয়াল ঘেঁষে উম-উম মুখ নাড়িয়ে নিঃশব্দে কিছু গল্প শুনিয়ে যায়। দৈত্যকে ভয় পায়না ওরা। ভালবাসে।
আবার কখনো তুমুল হই হই শুরু হয়, ঝনঝন শব্দে কাঁচ ভাঙে চারপাশে। আর ছোট্ট কাঁচের জারবাসীরা অস্থির হয়ে সাঁতরে বেড়ায়, পানিতে আলোড়ন তুলে দৃষ্টি আকর্ষনের চেষ্টা করে সাধ্যমত। শেষে ভয় পেয়ে জারের নিচে রাখা পাথরের মাঝে মুখ লুকায়। সেদিন আর রাত দশটার ডিনারে ডাক পড়েনা ওদের। সারারাত জেগে শুনে যায় সমুদ্রের গর্জনের মত শোঁ-শোঁ শব্দ। নিকষ কালো অন্ধকার আর দূর্বোধ্য কিছু আর্তনাদ...।
পরদিন স্বচ্ছ আর আর্দ্র চোখ নিয়ে ঠিকই আসে দৈত্যটা। এক মুঠো খাবার দিয়ে নির্নিমেষ তাকিয়ে থাকে। তখন দেয়াল ঘেঁষে এগিয়ে আসে ওরাও। খাবারের আশায় নয়, কাঁচের গায়ে একটু চুমু এঁকে দেয় ওদের প্রিয় দৈত্যের জন্যে। শব্দহীন-ভাষাবিহীন এক ভালবাসার সেতু গড়ে তুলতে চায়।
বিশাল বড় বড় এই প্রাণিগুলোর দুঃখ-যন্ত্রনা ওরা বোঝেনা। তাদের চেয়ে অনেক বড় ঘরে বাস করে, প্রচুর খাবার পেয়েও এত অসুখী কেন এই দৈত্যের দল তাও ওদের অজানা। তবু সুযোগ পেলে ভালবাসা দিয়ে, দু-চার রকম নতুন কসরত দেখিয়ে মন ভাল করে দিতে চায়। সুখী হতে বলে ঠিক ওদের মত!
০৩ রা জানুয়ারি, ২০১৪ বিকাল ৩:৩৩
জাফরিন বলেছেন: গোল্ডফিসের চোখে তো আমরা দৈত্যই , তাই। আমি এখানে ওদের চোখ দিয়ে দেখার চেষ্টা করেছি
আরিব্বাহ!!! এত সুন্দর এ্যকুরিয়াম তোমার!!! এ তো পুরাই কল্পনার রাজ্য! ভীষন ভাল লাগল আপু
আচ্ছা, এই ডেকোরেশন কীটগুলো কোথায় পেয়েছো?
২| ০৩ রা জানুয়ারি, ২০১৪ বিকাল ৩:৩৭
মামুন রশিদ বলেছেন: চমৎকার! হ্যা ঐ ছোট্ট গোল্ডফিসের চোখে আমরা দৈত্যই তো । প্রিয় দৈত্যরাও ওদের ভালোবাসে, ছিটিয়ে দেয় খাবার দানা ।
০৩ রা জানুয়ারি, ২০১৪ বিকাল ৫:১০
জাফরিন বলেছেন: হুম । তবে ওদের মত সুখী নয় দৈত্যরা
৩| ০৩ রা জানুয়ারি, ২০১৪ বিকাল ৩:৪৬
শায়মা বলেছেন: লেখক বলেছেন: গোল্ডফিসের চোখে তো আমরা দৈত্যই , তাই। আমি এখানে ওদের চোখ দিয়ে দেখার চেষ্টা করেছি
আরিব্বাহ!!! এত সুন্দর এ্যকুরিয়াম তোমার!!! এ তো পুরাই কল্পনার রাজ্য! ভীষন ভাল লাগল আপু
আচ্ছা, এই ডেকোরেশন কীটগুলো কোথায় পেয়েছো?
একা একা মারকেটে ঘুরে বেড়ানো আমার অনেক দিনের একটা হবি। আর ঘুরতে ঘুরতেই একদিন আরচিসে পেয়ে গেলাম ছোট্ট এক রত্তি মৎস্যকন্যা। আর তারপর একদিন পেলাম এক নৌকা বেয়ে আসা রাজপু্ত্র। আর চকচকে গ্লাস স্টোন গুলো কালেক্ট করেছিলাম হলমার্ক থেকে।
আর ট্রেজারবক্সটা Ferrero Rocher চকলেট বক্স দিয়ে বানানো মানে তাতে আমি আমার মুকতার মালা ও কিছু গয়নাগাটি দিয়ে সমুদ্রের তলদেশে পড়ে থাকা গুপ্তধন বানিয়েছি। হাহা আপুনি বলেছি আগেই এটা আমার আরেক জগত। ছোটবেলার মত পুতুল খেলাও বলতে পারো। ঘন্টার পর ঘন্টা কেটে যায় আমার যেদিন আমি আমার জলের তলের জগৎ সাজাতে বসি। কয়েক মাস পর পরই বদলে দেই ওদের ঘরবাড়ি সাজগোজ। ছোট ঝিনুক, শামুক কচছপ হতে ওদের দোল খাওয়া দোলনা সবই আছে। তবে আমি কোনোটাই মাছের দোকান থেকে কিনিনি। নানা দোকান হতে ঘুরতে ঘুরতে যখন যেটা মনে হয়ছে ওদের বাড়িতে লাগবে তাই এনেছি।
আপু ক্রিসমাসে ওদেরকে এনে দিয়েছিলাম চকচকে রুপোলি গোলাকার বল।
০৩ রা জানুয়ারি, ২০১৪ বিকাল ৫:০৯
জাফরিন বলেছেন: বাহ! মাছগুলো তো অনেক লাকি এমন আদুরে একটা দৈত্য পেয়ে
খুব ভাল থাকো এমন দারুন সব হবি নিয়ে। নিজেকে সুখী রাখতে পারাটা অনেক মূল্যবান ব্যাপার- তা পুতুল খেলেই হোক বা পোষা প্রাণিদের জন্য মনের মত করে সুন্দর জগৎ সাজিয়েই হোক।
৪| ০৩ রা জানুয়ারি, ২০১৪ বিকাল ৩:৫৯
মোঃ আনারুল ইসলাম বলেছেন: এ্যাকুরিয়ামে মাছ পালাতে কত মজা। দিন রাত যখনই এ্যাকুরিয়ামের পাশে যায় মনে হয় মাছগুলো বলে আমার পরমবন্ধু মনে হয় আমাকে এখনি খেতে দিবে।
০৩ রা জানুয়ারি, ২০১৪ বিকাল ৫:১২
জাফরিন বলেছেন: হাহা! তাই? মাছগুলো তো সুধু দিনে একবার খায়। পাশ দিয়ে গেলেই খাবার চায় নাকি?
৫| ০৩ রা জানুয়ারি, ২০১৪ বিকাল ৪:২১
বটবৃক্ষ~ বলেছেন:
অসম্ভব মায়াবী লিখা আপুনি!! ঃ(
ভাল থেকো!!
০৩ রা জানুয়ারি, ২০১৪ বিকাল ৫:১৩
জাফরিন বলেছেন: ধন্যবাদ বটবৃক্ষ।
বট বৃক্ষের ছায়া যেমন রে
আমার বন্ধুর মায়া তেমন রে...
গান টা মনে পড়ল!
৬| ০৩ রা জানুয়ারি, ২০১৪ বিকাল ৫:১৭
মোঃ আনারুল ইসলাম বলেছেন: ১৮ পিস মাছ আছে। সকাল ৯টায় একবার বিকাল ৫টায় দানার পরিমান ২৫-৩০টি করে দিই।
০৩ রা জানুয়ারি, ২০১৪ বিকাল ৫:৩০
জাফরিন বলেছেন: ওহ। আমার অল্প কয়েকটা মাছ তো, দিনে একবার দিলেই চলে
ধন্যবাদ আপনাকে ।
৭| ০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০১৪ সকাল ১০:১৬
শহুরে আগন্তুক বলেছেন: জাফরিন রেজোয়ানা আপু??
০৬ ই জানুয়ারি, ২০১৪ রাত ১০:৩১
জাফরিন বলেছেন: হ্যাঁ, খালিদ ভাইয়া। জাফরিন রেজওয়ানা আপু
৮| ০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০১৪ দুপুর ১২:০৬
একলা ফড়িং বলেছেন: আমার অনেক সুন্দর ছোট্ট একটা অ্যাকুরিয়াম ছিল। পাশের বাসার পিচ্চি দুষ্টামি করতে গিয়ে ভেঙে ফেলে আর খুব প্রিয় গোল্ড ফিশগুলো মরে গেছিলো তারপর আর মাছ কিনিনি
তবে মাছেরা কিন্তু দৈত্যদের অনেক ভালবাসে! অ্যাকুরিয়ামের আশপাশ দিয়ে হেঁটে গেলেও ওরা ছোটাছুটি শুরু করে দেয়
০৬ ই জানুয়ারি, ২০১৪ রাত ১০:৩৩
জাফরিন বলেছেন: আহারে! পোষা মাছ মারা গেলে কী যে খারাপ লাগে! আমার একবার ঈদের দিনে মাছ মারা গিয়েছিল। কী যে কান্না... ঈদ পুরা মাটি। :'(
ভাল থাকবেন একলা ফড়িং
৯| ০৬ ই জানুয়ারি, ২০১৪ বিকাল ৩:৪৫
হাসান মাহবুব বলেছেন: খুব ভালো লাগলো।
০৬ ই জানুয়ারি, ২০১৪ রাত ১০:৩৬
জাফরিন বলেছেন: থ্যাঙ্কস ভাইয়া। সাথেই থাকুন , কোত্থাও যাবেন না
১০| ০৬ ই জানুয়ারি, ২০১৪ বিকাল ৩:৫৮
অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: খুব সুন্দর !
০৬ ই জানুয়ারি, ২০১৪ রাত ১০:৩৬
জাফরিন বলেছেন: থ্যাঙ্কু
১১| ০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ দুপুর ১:৩৪
প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: পরিস্থিতি অন্যচোখে দেখার আইডিয়াটা সুন্দর একটা গল্পে পর্যবসিত হয়েছে।
০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ দুপুর ১:৩৯
জাফরিন বলেছেন: পুরোনো পোস্টে সুন্দর এক মন্তব্য পেয়ে ভাল লাগল। ধন্যবাদ প্রোফেসর শঙ্কু
©somewhere in net ltd.
১|
০৩ রা জানুয়ারি, ২০১৪ বিকাল ৩:০৪
শায়মা বলেছেন: আপু দৈত্য কেনো???
যাইহোক এই দুনিয়ায় প্রিয় কিছু জিনিসের মাঝে এ্যকুরিয়াম আমার প্রিয় একটি জগত।
এই জগতটাকে আমি মাঝে মাঝেই হা করে দেখি। দুঃখ নেই বেদনা নেই, নেই ক্ষোভ, ক্রোধ, হতাশা। সদা ও সর্বদায় ভেসে বেড়াচ্ছে তারা মনের আনন্দে....
আমার এই জগতটা আমার জলের তলের কল্পরাজ্য আর তাই আমি সাজিয়েছি এ জগত একদম আমার মনের মত করে।
দেখো এখানে আমার লিটিল মারমেইড, রাজপুত্র আর ট্রেজার বক্স আলাদিনের সাথে সুখেই আছে তারা।