নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ভরসার গান

তরুণ নামের জয়মুকুট শুধু তাহার, বিপুল যাহার আশা, অটল যাহার সাধনা

মানব ও মানবতা

রঙের দুনিয়ায় আমি এখনও ছাত্র,তবে শখের বশে লেখক, সাংবাদিক, অনুবাদক আবার কখনো আরও অনেক কিছু।

মানব ও মানবতা › বিস্তারিত পোস্টঃ

রাশেদ মিয়ার জীবন

২০ শে মার্চ, ২০১৩ রাত ১০:৪১

ধারাবাহিক গ্রাম্যজীবন





পুকুরের ঘাটে বসে পান চিবাচ্ছেন রাশেদ মিয়া। নামে তাকে যুবক মনে হলেও বয়স পঞ্চাশছোয়া। দীর্ঘদিন বৈদেশে ছিলেন। আরবদেশে। পয়সাপাতি কামাই করে চলে এসেছেন। মুখে বলেন, চলে এসেছি, আর কতো! কিন্তু পাড়ার আব্দুর রহিম বলেছেন, তাকে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। আসার আগে জেলের রুটি খেজুরও নাকি কপালে জুটেছিল।



রাশেদ মিয়ার প্রসঙ্গ উঠলে আব্দুর রহিম জেলের বর্ণনাও শুনিয়ে দেন, ‘ঐটা তো ঢঢঢঢঢাকার জেলখানা না যে ভাত বববববাইরা দিব, রুটির সাথে খখখেজুর চাবাইতে হয়।’ রাশেদ মিয়ার সাথে এ নিয়ে কয়েকবার বহছ হয়েছে আব্দুর রহিমের। লোকটা সাধু মনে হলেও তোতলা। সত্য কথা বললেও লোকে বেশিক্ষণ শুনতে চায় না। ভভভাই, শশশশোনেন আমার কককথাটা....’। গ্রামের মানুষ বেকার হইলেও তোতলামিয়ার কথা শোনার মতো সময় নেই। এরা এত বোকা না।



আজকের পত্রিকায় পড়ার মতো কোন খবর খুঁজে পাচ্ছেন না তিনি। তার ছেলে ঢাকায় থাকে। নাম শাহেদ। রাশেদ মিয়ার ইচ্ছা ছিল, লোকে তার ছেলেকে ডাকবে শাহেদ বিন রাশেদ বলে। সে আশা তার পূরণ হয়নি। গ্রামের মানুষ শাহেদ নামটাই ঠিকমতো বলে না। ওরা ডাকে, শাহদ। এই শাহদ তার বাবাকে জোর করে পেপার পড়তে বলেছে। বাজারের পেপারওয়ালাকে সে বলে দিয়েছে, যেইটায় বিজ্ঞাপন কম, ঐরকম একটা পেপার আব্বারে প্রতিদিন দিয়া আসবা। তোমার সাইকেলের হাওয়া ভরতে টাকা লাগলে নিব। পেপার দেয়া যেন বাদ না যায়।



পেপার দিয়েই থামেনি। সপ্তাহ শেষে বাড়ীতে ফিরে সে বাবার সাথে খেতে বসে। তারপর শুরু করে লম্বা গপ। আব্বা! দেশের পরিস্থিতি কি বুঝলেন সারা সপ্তাহ! শোনান দেখি!’ রাশেদ মিয়ার তখন মনে হয়, চাকরির জন্য ইন্টারভিউ হচ্ছে। শাহেদকে ধমক দেয়া যায় না। একটাই মাত্র ছেলে তার। বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই রাশেদ মিয়ার বিবিসাব বারবার মনে করিয়ে দেন, পেপার দেইখা রাখছেন তো। জিগাইলে পুতেরে উত্তর দিয়েন। হা কইরা থাইকেন না। বাপ হইয়া পুতের উত্তর দিতে পারেন না, এইটা কেমন কথা!!



স্ত্রীর এসব শুনেও চুপ থাকেন রাশেদ মিয়া। কথা কম বলার অভ্যাস তার। অনেকদিন বিদেশে ছিলেন। তাও আরবদেশে। তিনি খুব ভাল আরবীও জানেন না। যা জানেন, টুকটাক ঠেকার কাম চালানোর জন্য। তার আশেপাশে খুব বাংলাদেশী ছিল না। এক ছিল ঐ আব্দুর রহিম, তিনি থাকতেন একটু দূরে। তার সাথে দেখা হতো খালি শুক্রবার। সারা সপ্তাহ তিনি চুপ করে থাকতেন। বাংলা কথাবলার মতো কেউ নাই। কার সাথে বকবক করবেন। দীর্ঘদিনের এ চুপ থাকা তার অভ্যাস হয়ে গেছে। এখনও তিনি কম কথা বলেন। একসময়ের রাগী রাশেদ মিয়ার দেশে ফেরার পর এমন ঠান্ডা মেজাজ দেখে স্ত্রী খুব খুশি।



স্ত্রীর ধারণা, গঞ্জের হাটের পীর সাহেবের তাবিজ কাজ দিছে। স্বামী কথা কম বলেন। এই মুখের কথা কমিয়ে আনার জন্য দান সদকার কোনোটাই বাদ রাখেননি তিনি। ঘরের মুরগি, ক্ষেতের লাউ, গাই-গাভিনের প্রথম দুধ, স্বামীর পাঠানো আরবী খেজুর- আর অনেক পদের তোহফা নিয়ে তিনি পীরের কাছ থেকে তাবিজ আনতে যেতেন। একটাই মান্নত, স্বামীসাহেব যেন কথা কম বলেন, রাগ না করেন। মেজাজটা যেন ঠান্ডা থাকে। আল্লাহ মালিক তার পেয়ারা বান্দা পীরহুজুরের কথা শুনেছেন। এ নিয়ে স্ত্রীর ভক্তি আরও বেড়ে গেছে। সময়মতো তিনি হাজার টাকার তোহফা পাঠাবেন বলে মনস্থির করে রেখেছেন।



চলবে...

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২০ শে মার্চ, ২০১৩ রাত ১০:৫৪

পরিবেশ বন্ধু বলেছেন: অদ্ভুদ চলবে
ভাল লাগা +

২০ শে মার্চ, ২০১৩ রাত ১১:১২

মানব ও মানবতা বলেছেন: এভাবে লিখলে কি একটা উপন্যাস রওয়ানা হতে পারে সামনের দিকে? আমার কোন অভিজ্ঞতা নেই। চেষ্টা করবো চালিয়ে নিতে। পরামর্শ দিবেন আপনারা। ভাল লাগার জন্য অশেষ ধন্যবাদ।

২| ২১ শে মার্চ, ২০১৩ রাত ১২:৩২

পরিবেশ বন্ধু বলেছেন: অবশ্যই , প্রথমে বিষয় বস্তু নির্বাচন করে , অনুভুতি যা তা
ছোট ছোট স্টেপ নিয়ে এক একটি ধারাবাহিক পর্বে
মুল বা কেন্রিয় চরিত্র টিক রেখে লিখতে থাকুন , এর মধ্য সামাজিক
সংগতি অসংগতি , সুখ দুঃখের , প্রেম বিরহের লৌকিক কথা
আঞ্চলিক ঠানে লিখতে পারেন ।
আবার সহজ বোধ্য কিছু রূপক শব্দ প্রয়োগ করে সাহিত্যর উজ্জলতা
বাড়াতে পারেন ।
মনে রাখবেন , বাস্তব চরিত্র নির্বাচনই এক বা একাধিক , সামাজিক
উপন্যাসের প্রধান রস বোধ ।
শুরুটা মন্দ হয়নি
লিখতে থাকুন একদিন সফলতা আসবেই
শুভকামনা ।

৩| ২১ শে মার্চ, ২০১৩ রাত ১০:৫২

জাহাঙ্গীর জান বলেছেন: অন্নেক এত ভাবে জানা কিন্তু কিঠন সুন্দর হয়েছে

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.