| নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মানব ও মানবতা
রঙের দুনিয়ায় আমি এখনও ছাত্র,তবে শখের বশে লেখক, সাংবাদিক, অনুবাদক আবার কখনো আরও অনেক কিছু।
কবি নজরুলের খুব অন্তরঙ্গ বন্ধুদের একজন শাহরিয়ার। তার সাথে নজরুলের আড্ডা চলে দিন-রাত। শাহরিয়ার একদিন কবিকে জিজ্ঞেস করলেন, রবীন্দ্রনাথ যেদিন নোবেল পেলেন সেদিন আপনার অনুভূতি কী?
নজরুল বললেন, আমি তখন বালক। রবীন্দ্রনাথের জন্য নোবেল বিরাট কোন পুরস্কার নয়। তিনি এর চেয়েও অনেক বড়।
শাহরিয়ারের প্রশ্ন- আপনি কোনদিন নোবেল পুরস্কার পাবেন?
কবির মুখ গম্ভীর। নির্বিকার গলায় তিনি শাহরিয়ারকে বলছেন, আমি চলে যাবার পর কিছু পুরস্কার আমার ভাগ্যে জুটবে। নোবেল বা অন্যান্য আন্তর্জাতিক সাহিত্য পুরস্কার আমার জন্য নয়। তবে শাহরিয়ার! মৃত্যুর আগেরদিন পর্যন্ত এবং মৃত্যুর পরও আমি একটি পুরস্কারের আশায় বসে আছি। সেটির জন্যই পথ চেয়ে বসে আছি।
শাহরিয়ার চঞ্চল হয়ে উঠলেন। কী সেই পুরস্কার কবি!
নজরুলের কণ্ঠে আবেগ ভরে আসছে। শাহরিয়ার! সেই পুরস্কার- নবীর হাতের শিরনী। আমি পেতে চাই নবীর হাতে আবে কাওসারের পানি।
শাহরিয়ার নির্বাক হয়ে গেলেন। তিনি তাকিয়ে আছেন কবির চেহারায়। কবির দু চোখ ভিজে আসছে কান্নায়, ভালোবাসায়। চারপাশের পরিবেশ মিশে আছে বিষন্নতায়।
কবি নজরুল ভালোবাসতেন জালালুদ্দীন রুমীর কবিতা। তার লেখা মসনবী। কবি পড়েছেন বারবার। কবির আরেকজন বন্ধু জুলফিকার হায়দার। তাকে তিনি হাইদার বলে ডাকেন।
একদিন তাকে বললেন, হাইদার! তোমার ম্যাকেনজি ম্যাকিনজান কোম্পানীকে একটু বলে দেখো না ওরা যেন আমাকে একবারের জন্য তুরস্কে পাঠায়। তুমি জানো, আমার মন পড়ে থাকে তুরস্কের কোনিয়ায়। ওখানে শুয়ে আছেন মাওলানা রুমী। তার লেখা মসনবী আমি বারবার পড়েছি। আমি কিছুদিনের জন্য তার পায়ের কাছে গিয়ে পড়ে থাকতে চাই। তোমরা অনেকেই হয়তো জানো না! হাইদার! একেকটি নাত লেখার সময় আমি চারদিক থেকে ফুলের সুবাস পাই। আমার মনে হয়, এ সুবাস রুমীর বাগানের সুবাস।’
আরেকদিন। জুলফিকার কবির বাসায় গিয়ে হাজির। কবির সামনে তখন একটি জায়নামাজ। জুলফিকার হয়তো একটু অবাক হলেন। নজরুল সেদিনও বিষন্ন। গম্ভীর। তিনি জুলফিকারকে বসতে বললেন। তারপর নিজের আনমনে কথা বলতে শুরু করলেন, হাইদার! এই যে জায়নামাজটি দেখছো, এটি আমার এক ভক্ত দিয়ে গেছে। মানিকগঞ্জ থেকে এসেছিল সে। বলেছিল, যখন মন খারাপ হবে, এই জায়নামাজে আপনি বসে থাকবেন। এতেই হবে। হাইদার! আমি এতে দু রাকাত নামাজ পড়ি। তাতেই আমার বুক ভেসে যায়। দু রাকাতে দু ঘন্টা কেমন করে চলে যায়! টের পাওয়া যায় না। আল্লাহর দেখা পাইনি। পাব কিনা, তাও জানি না। চিলেকোঠার ঘরে উনি উপস্থিত। জায়নামাজ পাতলে আমি কেমন যেন দিশেহারা হয়ে পড়ি। আমার এত দুঃখ! এর ভাগ কে নিবে? হে আল্লাহ! আমি যে দোষ করেছি, তা একমাত্র তুমি জানো। আমার সব দোষ তুমি জানো। কিন্তু কাউকে ঠকাইনি! ঠকেছি শুধু নিজে।
নির্বাক হওয়ার আগপর্যন্ত এমনই ভাবুক প্রকৃতির হয়ে কি এক অজানা রহস্যের সন্ধানে বিভোর হয়ে ডুবে থাকতেন একসময়ের বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম।
প্রিয়কবির জীবন থেকে বেছে নেয়া কিছু অজানা গল্প নিয়ে আমার আগের পর্বগুলো-
হিন্দু মুসলমানের কাছে কতভাবে অপমানিত হয়েছেন কবি! কী করতেন তিনি তখন??
কবি নজরুলের সরলতা-রসিকতার ছোট ছোট ঘটনা
ভদ্রতা দেখাতে গিয়ে ফেঁসে গেলেন কবি!!
কবি নজরুলের গান-গজলের শিল্পীরা!!
ঘর-সংসারে কবি নজরুলের অসহায় যন্ত্রণার দিনগুলো
মায়ের সাথে অভিমান করে জীবন কাটিয়ে দিলেন কবি নজরুল।
কবি নজরুলের অজানা ও বিচিত্র জীবনগল্প নিয়ে আরও ১১ টি পর্ব
২|
১৩ ই এপ্রিল, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৪৫
বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: মসজিদেরই পাশে আমার কবর দিও ভাই
যেন গোরে থেকেও মুয়াজ্জিনের আজান শুনতে পাই....
আহ.. কি ধ্যান। কি সুগভির কামনা। আর আল্লাহ পাক উনার কামনাকে পূর্ণ করেছেন।
নিশ্চয়ই তিনি একজন রাসুল প্রেমিক হিসেবে রাসূল সা: এর কাছ থেকে তিনার কাংখিত বন্তু লাভ করবেন। আমিন।
কিন্তু নজরুল চর্চা হারিয়ে যাচ্ছে প্রায়!!!!!
আমাদের আত্মার সন্ধানে, সথ্যের সন্ধানেই নজরুর চর্চা আরও নিয়মিত করা উচিত।
৩|
১৩ ই এপ্রিল, ২০১৩ রাত ৮:৫৫
মাজহারুল হুসাইন বলেছেন: বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: মসজিদেরই পাশে আমার কবর দিও ভাই
যেন গোরে থেকেও মুয়াজ্জিনের আজান শুনতে পাই....
আহ.. কি ধ্যান। কি সুগভির কামনা। আর আল্লাহ পাক উনার কামনাকে পূর্ণ করেছেন।
নিশ্চয়ই তিনি একজন রাসুল প্রেমিক হিসেবে রাসূল সা: এর কাছ থেকে তিনার কাংখিত বন্তু লাভ করবেন। আমিন।
কিন্তু নজরুল চর্চা হারিয়ে যাচ্ছে প্রায়!!!!!
আমাদের আত্মার সন্ধানে, সথ্যের সন্ধানেই নজরুর চর্চা আরও নিয়মিত করা উচিত।
©somewhere in net ltd.
১|
১৩ ই এপ্রিল, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:২৬
মহসিন আহমেদ বলেছেন: +++++