নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ভরসার গান

তরুণ নামের জয়মুকুট শুধু তাহার, বিপুল যাহার আশা, অটল যাহার সাধনা

মানব ও মানবতা

রঙের দুনিয়ায় আমি এখনও ছাত্র,তবে শখের বশে লেখক, সাংবাদিক, অনুবাদক আবার কখনো আরও অনেক কিছু।

মানব ও মানবতা › বিস্তারিত পোস্টঃ

কওমি আলেমরা সমাজের বোঝা- কিন্তু কেন এবং কীভাবে?

৩০ শে মে, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৫৪

একজন ডাক্তার হওয়ার জন্য মেডিকেলের একজন ছাত্রের কতোটুকু ডাক্তারি জ্ঞান প্রয়োজন? যাতে সে একটি সফল অস্ত্রোপচার করতে পারে? একজন প্রকৌশলী হওয়ার জন্য একজন প্রকৌশলের ছাত্রের বিল্ডিং বানানোর কতোটুকু জ্ঞান প্রয়োজন? কিংবা একজন বিজ্ঞানী হওয়ার জন্য কতোটা বিজ্ঞান অধ্যয়ন প্রয়োজন?



একজন কওমিপড়ুয়া আলেমকে কেনো ইংরেজির তোতাপাখি হতে হবে? কেনো তার কাছে অর্থনীতি, সমাজবিজ্ঞান, ভূগোল, আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ব্যাপারে অজ্ঞতার প্রশ্ন তোলা হবে? তার কাজ ধর্ম নিয়ে কথা বলা। ধর্মের বিষয়াদি মানুষকে জানানো, মানুষকে মানানো। আপনি তো কখনো একজন ডাক্তারের কাছে দালান বানানোর জন্য যান না। কিংবা ইঞ্জিনিয়ারের কাছে যান না দাঁত দেখাতে। তাহলে একজন আলেমকে কেনো অর্থ উৎপাদন করে দেশের অর্থনীতির অন্যতম অনুঘটক ভাবছেন?



ডাক্তারের কাছে জিজ্ঞেস করুন যক্ষ্মার রোগলক্ষণগুলো কী কী। সে আপনাকে পাঁচ মিনিটে সব ক্লিয়ারলি বলে দেবে। ইঞ্জিনিয়ারের কাছে এই জ্ঞান পাবেন না। তার কাছে জিজ্ঞেস করুন পাঁচতলা বাড়ি বানাতে কয় টন রড লাগবে, সে হুট হাট হিসাব করে আপনাকে বলে দেবে। তার জ্ঞান পাবেন না পদার্থবিদের কাছে। সবার জ্ঞানের পরিধি আলাদা। তেমনি একজন আলেমের কাছে কেবল ধর্ম নিয়েই জিজ্ঞেস করুন, তিনি আপনার ধর্মবিষয়ক সকল সমস্যা সমাধান দেবেন। তাকে জিজ্ঞেস করুন, কুরআন কীভাবে পড়বেন, অজু কীভাবে করবেন, কখন নামাজ পড়া যায় না, রোজা কখন ভাঙা যাবে, হজ কখন করতে হবে, জাকাত কাকে কীভাবে দেবেন, ব্যবসায় কোনটা হারাম কোনটা হালাল, চাকরিতে কোনটা ন্যায় কোনটা অন্যায়... এইসব ধর্মীয় বিষয়। যদি সে এসব প্রশ্নের উত্তর দিতে না পারে তবেই তাকে আপনি সমাজের বোঝা ভাবতে পারেন। যেমন ইঞ্জিনিয়ারের ভুলের কারণে রানা প্লাজা যদি ভেঙে পড়ে কিংবা হাতুড়ে ডাক্তারের চিকিৎসায় যদি রোগী মারা যায়।



আপনি যদি মনে করেন, না, আমার জীবনে ধর্মের কোনো প্রয়োজন নেই, আমি কোনো ধর্ম মানবো না। তাহলে হয়তো আলেমদের প্রয়োজনীয়তা না হতে পারে। কিন্তু সমাজের ৯০% মানুষ যখন ধর্ম মানতে ইচ্ছুক, ইসলামের বিষয়াদি মানতে ইচ্ছুক সেখানে আলেমদের প্রয়োজনীয়তা, ধর্মবিদের প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। এ কারণে বাংলাদেশে আরো বেশি করে কওমি মাদরাসা প্রতিষ্ঠার একান্ত প্রয়োজন।



অনেকেই বলছেন, কওমি শিক্ষার ৯০% সমাজের কোনো কাজে লাগে না। কতো বোকা চিন্তা আমাদের! একজন ডাক্তার আট বছর অধ্যয়ন করে আপনাকে পাঁচ মিনিটে কেবল যক্ষ্মারোগের লক্ষণগুলো বলেছে। তাই কি আপনি ধরে নেবেন, তার আর যতো ডাক্তারি জ্ঞান আছে সব বেকার? ইঞ্জিনিয়ারের রডের হিসাব আপনি জেনে গেলেই কি ইঞ্জিনিয়ারের প্রয়োজনীয়তা এই সমাজে আর হবে না? আপনার জন্য ধর্মের ১০% কাজে লাগছে, আরেকজনের জন্য হয়তো ধর্মের অন্য ১০% কাজে লাগছে। ধর্মের পুরো স্ট্রাকচারটি তো আপনার একসঙ্গে এমনকি সারাজীবনে প্রযোজ্য নাও হতে পারে। কিন্তু তা সামাজের অন্য অনেকেরই কাজে লাগছে। সুতরাং ধর্মকে এভাবে পার্সেন্টিজ হিসেবে হিসাব করাটা স্রেফ একটা বোকামি।



অনেকেই বলছেন, কওমি আলেমরা সমাজের বোঝা হয়ে দাঁড়ায়। কেউ কি আমাকে একজন আলেম দেখাতে পারবেন যে বেকার হয়ে ঘরে বসে আছে? কওমি আলেমদের এটা সবচেয়ে বড় সফলতা, তারা শিক্ষা শেষে কখনোই বেকার থাকে না। এটা সবাই নিজের আশপাশে একবার তাকালেই সত্য অনুধাবন করতে পারবেন। যে কোনো কাজেই হোক তারা লেগে যাচ্ছে। আর যাই হোক, সমাজের বোঝা আলেমদের বলা যাবে না।

আরেকটি বিষয়, সমাজ বা রাষ্ট্রের উন্নতিতে তারা কী অবদান রাখছে? প্রথম কথা হলো, একজন ধর্মবিদের কাজ কি সমাজের অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি বাড়ানো?



দ্বিতীয় কথা হচ্ছে, আমাদের মনে যে সুদ, ঘুষ, দুর্নীতি, দুঃশাসন, অন্যায়ের প্রতি ঘৃণা-ভয় কাজ করে- সেটা কোথা থেকে উদ্গত হচ্ছে? এসব অন্যায়ের প্রতি ঘৃণা আমরা কোথা থেকে শিখছি? আমাদের ধর্মই তো আমাদের ভেতরে এই বোধ তৈরি করে দিচ্ছে। নারীকে নির্যাতন করা যাবে না, অনৈতিক সম্পর্কে জড়ানো যাবে না, নারীকে অর্ধাঙ্গী ভাবতে হবে- এই ধরনের সামাজিক বিষয়গুলো তো কুরআনই আমাদের শেখাচ্ছে। তাহলে এই যে কুরআন প্রতিনিয়ত আমাদের মানবমন উন্নত করছে এটা কি আমাদের সমাজে প্রভাব ফেলছে না? আমাদের সামাজিক প্রক্রিয়াগুলো উন্নত করছে না? যে মানুষটি ব্যবসায় দুর্নীতি করেন তিনি যদি কুরআন মানতেন তাহলে কি তিনি দুর্নীতি করতেন? তিনি দুর্নীতি না করলে স্বাভাবিকভাবেই আমাদের অর্থনীতিতে সুনীতির সুফল আসতো। রাজনীতিবিদরা যদি ইসলামিক শিষ্টাচার শিক্ষাগ্রহণ করতেন তাহলে কি আমাদের সমাজে এতো অস্থিরতা লেগে থাকতো?



সুতরাং উন্নতির ধারায় তারা খুব ভালোভাবেই নিজেদের কাজ করে যাচ্ছে। ডলার দিয়েই কেবল দেশের উন্নতি হয় না, আরো অনেক কিছুরই উন্নয়ন প্রয়োজন, আমাদের উচিত কওমি মাদরাসার কাছে এসে এই সমাজের সেসব বিষয়ে শিক্ষা নেয়া উচিত।

................................................

লিখেছেনঃ সালাহউদ্দীন জাহাঙ্গীর

মন্তব্য ১৬ টি রেটিং +৯/-০

মন্তব্য (১৬) মন্তব্য লিখুন

১| ৩০ শে মে, ২০১৩ রাত ৮:০৬

কসমিক- ট্রাভেলার বলেছেন:
ডলার দিয়েই কেবল দেশের উন্নতি হয় না, আরো অনেক কিছুরই উন্নয়ন প্রয়োজন,



দক্ষতা ও সততা দুটোই প্রয়োজন



সহমত

২| ৩০ শে মে, ২০১৩ রাত ৮:০৭

শিব্বির আহমেদ বলেছেন: প্রথম ভাল লাগা আর সরাসরি প্রিয়তে ।
সময়োপযোগী লেখা ।

৩| ৩০ শে মে, ২০১৩ রাত ৮:০৭

হাসান বৈদ্য বলেছেন: একমত

৪| ৩০ শে মে, ২০১৩ রাত ৮:১১

আহেমদ ইউসুফ বলেছেন: এত সুন্দর ও সময়োপযোগী পোস্টের জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। অপ্রিয় সত্য প্রকাশে হোন আরও দুরন্ত ও নির্ভয় এ আশাবাদ ব্যক্ত করছি। ধন্যবাদ ভালো থাকবেন।

৫| ৩০ শে মে, ২০১৩ রাত ৮:১১

নুহান আহমেদ বলেছেন: আপনাকে ধন্যবাদ, এমন সুন্দর করে গুছিয়ে লেখার জন্য। আসলে আমাদের সবাইকে এ ব্যাপারে একটু গভীর চিন্তা ভাবনা করার দরকার আছে। সরকারী পৃষ্ঠপোষকতা পেলে এখানে ও আধুনিকতার ছোয়া লাগানো সম্ভব।

৬| ৩০ শে মে, ২০১৩ রাত ৮:৩৯

রোকন রাইয়ান বলেছেন: আহেমদ ইউসুফ বলেছেন: এত সুন্দর ও সময়োপযোগী পোস্টের জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। অপ্রিয় সত্য প্রকাশে হোন আরও দুরন্ত ও নির্ভয় এ আশাবাদ ব্যক্ত করছি। ধন্যবাদ ভালো থাকবেন।

৭| ৩০ শে মে, ২০১৩ রাত ৮:৪৬

মেলবোর্ন বলেছেন: শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ

৮| ৩০ শে মে, ২০১৩ রাত ৯:৪০

খাটাস বলেছেন: যিনি লিখেছেন তার প্রতি অনেক শ্রদ্ধা। আমার নিজের ও কিছু শিক্ষা হল। যথার্থ বলেছেন, ডাক্তার রোগী মারলে, ইঞ্জিনিয়ার তার পেশায় ভুল করলে তাদের বোঝা বলা যেতে পারে, শাস্তি হতে পারে। আর আলেমরা যদি মিত্থাচার করে, ধর্মের নিতি বহির্ভূত কাজ করেন, তখন তাদের শাস্তি হতে পারে। যা কিছু রাজাকারদের ক্ষেত্রে দেখা যায়। আবার কিছু ধর্মীয় নেতা গোছের আলেম ও ধর্ম কে ব্যাবহার করছেন। এর জন্য পুরো আলেম সমাজ কে বোঝা বলা মানে আমাদের নিজেদের শিক্ষা কে অপমান করা। ধন্যবাদ শেয়ারের জন্য ভাই।

৯| ৩১ শে মে, ২০১৩ রাত ২:৪৬

মানজুর মজুমদার বলেছেন: ভাই খুবই ভালো লাগল। প্রিয়তে।

১০| ৩১ শে মে, ২০১৩ রাত ২:৪৯

ধুসর কাব্য বলেছেন: অনেক ভালো লিখেছেন।

১১| ৩১ শে মে, ২০১৩ সকাল ১০:৩৩

শিক্ষানবিস বলেছেন: দেশে বেশী করে কওমী মাদরাসা প্রতিষ্ঠা ও পৃষ্ঠপোষকতা প্রয়োজন। এ লক্ষ্যে সকল দেশ-প্রেমিক নাগরিককে এগিয়ে আসতে হবে।
কারণ :
এক. কওমী মাদরাসা হল সাম্রাজ্যবাদীর শক্তির সবচেয়ে বড় আতঙ্ক।

দুই. কওমী মাদরাসা এ দেশের সুবিধা-বঞ্চিত জনগণকে শিক্ষিত করার এক মহান মিশনে কাজ করছে।

তিন. দেশ রক্ষায় যদি হাসি-মুখে প্রাণ দেয়ার সময় আসে, তাহলে দেখা যাবে কওমীওয়ালারাই সবার আগে অবস্থান নিয়েছে।

চার. কওমী মাদরাসার শিক্ষকেরা নিজেরা না খেয়ে, নাম-মাত্র বেতন নিয়ে মাদরাসার টাকা দিয়ে দরিদ্র ছাত্রদের জন্য খাবার, থাকার ব্যবস্থা ও বই-খাতা কিনে দেন। তাদের জন্য নিজেদের সবকিছু ত্যাগ করেন। এমন দৃষ্টান্ত সুশীল সমাজে কোথাও মিলবে না। সুশীল সমাজ হল ভোগবাদি ধ্যানে উম্মাদ আর কওমীরা হল আদর্শ ও ত্যাগের দীক্ষায় উদ্দীপ্ত।

পাচ. কওমী মাদরাসা কেরানী সাপ্লাই দেয় না। কিন্তু ত্যাগী, আদর্শবাদী, মানবতাবাদী নীতি-নৈতিকতা সমৃদ্ধ জাতি গঠনে বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখছে।

ছয়. ইসলামের সঠিক ও নির্ভেজাল চরিত্র প্রসারে কওমী মাদরাসার কোন বিকল্প নেই।

১২| ০৫ ই জুন, ২০১৩ সকাল ১১:৫৬

রোদের ফোঁটা বলেছেন: সহমত।

১৩| ০১ লা জুলাই, ২০১৩ সকাল ৯:২৯

একজন ঘূণপোকা বলেছেন: সেলুট



++++++++

১৪| ২৬ শে অক্টোবর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:১৪

মনসুর-উল-হাকিম বলেছেন: মাশাআল্লাহ, সুন্দর লিখেছেন। আলহামদুলিল্লাহ, জাজাকাল্লাহু খাইরান। শুভেচ্ছান্তে ধন্যবাদ।
মহান আল্লাহ আমাদর সবাইকে হেদায়েত দিয়ে দুনিয়া ও আখেরাতে নেক কামিয়াবী দান করুন, আমীন।

১৫| ২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ বিকাল ৩:৫৭

সাধারণ মুসলমান বলেছেন: কওমি আলেমরা অর্থনীতিতেও ভুমিকা রাখেন ৷ তাদের বক্তব্য আর সঙ্গ কোটি মানুষের মানসিকতায় যে আন্তরিকতা ও সততা বিস্তারিত করে তা চুরি আর ফাকিবাজিহীন কাজের মাধ্যমে অর্থনীতিতে কত যোগ করে হিসাব করলে ধারনাতীত অঙ্কই বেরিয়ে আসবে ৷ অসৎ লোকেরাই ওদের পছন্দ করেনা ৷

১৬| ২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ বিকাল ৪:৩৯

মিতক্ষরা বলেছেন: সাধারন ছাত্ররা ডাক্তার ইন্জিনিয়ার হয় উচ্চ মাধ্যমিকের পরে। একটি শিশু কওমী মাদ্রাসায় পড়ে বলে সাধারন শিক্ষা পাবে না, সেটা হতে পারে না। সাধারন শিক্ষা অর্জন শিশুর অধিকার। শিক্ষার মাধ্যম ভেদে তা কম বেশী হতে পারে। হয়ত সাধারন শিক্ষায় ইংরেজী অংক বিজ্ঞানের উপর জোর বেশী দেয়া হবে, কওমী শিক্ষা ব্যবস্থায় এসব বিষয়ের উপরে কম জোর দেয়া হবে। কিন্তু কওমী শিক্ষা ব্যবস্থায় সাধারন বিষয় একেবারে না থাকাটা সমর্থন করলাম না। কওমী কর্তৃপক্ষ আশ্চর্য জনক ভাবে সাধারন শিক্ষাকে তাদের কারিকুলামে নিতে চায় না। অথচ আমি নিজে আমার সন্তানদের প্রতিটা মুহুর্ত পড়া এবং জানার উপরে জোর দেই। কওমীদের মূল ক্ষেত্র কোরান হাদীস - এটা মেনে নিচ্ছি। কিন্তু এর বাইরে অন্যান্য বিষয় কেন তারা পড়বে না। ৮ ঘন্টার ক্লাসে পাচ ঘন্টা কোরান হাদীস পড়লে বাকী তিন ঘন্টা তো অন্যান্য বিষয় পড়তে হবে।

এছাড়া কওমী মাদ্রাসা থেকে পাশ করা ছাত্ররা পরবর্তী পেশা কি নেবে সেটাও পরিষ্কার হওয়া প্রয়োজন। ডাক্তার ইন্জিনিয়ারদের সাথে এখানে কওমীদের তফাৎ। কারন পবিত্র কোরানকে জীবিকার মাধ্যম হিসেবে নেয়াটা চরমভাবে নিরুৎসাহিত করেছে ইসলাম।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.