![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
রঙের দুনিয়ায় আমি এখনও ছাত্র,তবে শখের বশে লেখক, সাংবাদিক, অনুবাদক আবার কখনো আরও অনেক কিছু।
সাংবাদিকতা দিয়েই তার কর্মজীবনের হাতেখড়ি। তার লেখা প্রবন্ধ-নিবন্ধ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শিক্ষিত সমাজের জনমত গঠন ও পরিবর্তনে প্রভাব বিস্তার করত। সাংবাদিকতার অবসরে সাহিত্যচর্চায় তিনি ছোটগল্পও লিখতেন। পাঠকদের কাছে সেগুলোও বেশ সমাদৃত। তার ভক্ত পাঠকরা সেগুলো প্রকাশের অপেক্ষায় থাকত। সাহিত্য ও সাংবাদিকতায় এমন নাম ও যশ এবং সুনাম-সুখ্যাতি নিয়েই তিনি এগিয়ে যাচ্ছিলেন। কর্মজীবনে প্রবেশের পর মাত্র অল্প কয়েকদিনেই তিনি আমেরিকার পত্র-পত্রিকায় ব্যাপকভাবে সমাদৃত হন। তিনি ‘ইউনিয়নভিল রিপাবলিকান’ পত্রিকার সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। মিসৌরী শহর থেকে প্রকাশিত ‘সেন্ট জোসেফ গেজেটে’র নগর সম্পাদক হিসেবেও তাকে প্রস্তাব দেয়া হয়েছিল। তিনি ‘মিসৌরি মর্নিং জার্নাল’-এ সহযোগী সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। পরবর্তীতে তিনি সেন্ট লুইসে ‘মিসৌরি রিপাবলিকান’-এ সিটি এডিটর হিসেবে যোগ দেন। এ পত্রিকাটি ছিল তৎকালের মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সর্ববৃহৎ দৈনিক পত্রিকা।
যার কথা বলা হচ্ছে, তার নাম আলেকজান্ডার রাসেল ওয়েব। ১৮৪৬ সালের ৯ নভেম্বর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে হাডসনে একটি সুশিক্ষিত ও অভিজাত পরিবারে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। নিজ শহরের বিভিন্ন স্কুল-কলেজে পড়াশোনা শেষ করে তিনি সাংবাদিকতা পেশায় যোগ দেন। প্রচন্ড ব্যস্ত কর্মজীবনের অবসরে তিনি বিভিন্ন ধর্মের মূল ও উৎস নিয়ে পড়াশোনা করতেন। ইসলাম, ইহুদী এবং খৃষ্টবাদ সম্পর্কে তিনি ব্যাপক পড়াশোনা শুরু করলেন। বৌদ্ধ, কনফুসিয়াসসহ অন্যান্য মতবাদও তার পড়াশোনার বিস্তৃতি থেকে বাদ পড়েনি।
সাহিত্য, সাংবাদিকতা এবং দর্শন ও ধর্মতত্ত্বের গবেষণার মধ্যেই তিনি তার সময় পার করছিলেন। তার ব্যক্তিত্ব এবং কর্মদক্ষতার সুনাম ছড়িয়ে পড়েছিল মার্কিন মুলুকের সর্বত্র। ১৮৮৭ সালের সেপ্টেম্বর মাসে আমেরিকার তৎকালীন প্রেসিডেন্ট গ্রোভার ক্লিভল্যান্ড তাকে ফিলিপাইনের রাজধানী ম্যানিলায় অবস্থিত মার্কিন দূতাবাসে বাণিজ্য প্রতিনিধি হিসেবে নিয়োগ দেন।
ম্যানিলায় দূত হিসেবে দায়িত্ব পালনের সময় প্রথমবারের মতো তিনি মুসলমানদেরকে সরাসরি দেখার সুযোগ পান। মুসলমানদের ইসলামঘনিষ্ঠ জীবনাচার এবং দৈনন্দিন অভ্যাসগুলো দেখে তিনি মুগ্ধ হন। মার্কিন রাষ্ট্রদূত হিসেবে গুরুদায়িত্ব পালনের পাশাপাশি তিনি অবসরে মুসলমানদের গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ শুরু করলেন। তার অতীত পড়াশোনা এবং বর্তমান মুসলমানদের ব্যবহার দেখে তিনি ধীরে ধীরে নিশ্চিত হলেন, ধর্ম হিসেবে এর অপার্থিব রূপ এবং গভীর চরিত্র অসাধারণ।
মানবসৌভাগ্যের নিশ্চয়তায় ইসলামের দিকনির্দেশনা দেখে তিনি বিমুগ্ধ।
এভাবে মাত্র এক বছরের মধ্যে তিনি পাল্টে গেলেন। ১৮৮৮ সালে তিনি তার ইসলাম গ্রহণের কথা ঘোষণা করলেন। নিজের পূর্বনামের সাথে যোগ করলেন ইসলামের নবী মুহাম্মাদ সা. এর পবিত্র নাম। তার নতুন পরিচয় লেখা হলো মুহাম্মদ আলেকজান্ডার নামে।
নিজের এক লেখায় তিনি তার ইসলাম গ্রহণের ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে লিখেছেন, ‘েলাকেরা আমাকে গভীরভাবে জিজ্ঞেস করে, খ্রিষ্টান মুলুকে আমার জন্ম, খ্রিষ্টানদের রক্ষণশীল পরিবেশে আমার বেড়ে ওঠা, আমার রক্তে মাংসে মিশে ছিল খ্রিষ্টবাদ, কিন্তু তারপরও কীভাবে ইসলাম আমার ভেতর জায়গা করে নিল?’
আমি তাদের কৌতুহলী জিজ্ঞাসার জবাবে খুব সাধারণভাবেই বলি, ‘আমি অনেক ধর্মগ্রন্থ পড়েছি, অনেক মতবাদের শেকড় নিয়ে ভেবেছি, গবেষণা করেছি ধর্মপ্রচারকদের মূল মর্মবাণী নিয়ে। কিন্তু মানুষের আত্মিক চাহিদা পূরণে ইসলাম যেভাবে সাড়া দিয়েছে, তেমনটি আর কোনো ধর্ম কিংবা মতবাদে কোথাও পাইনি। কারো অন্ধ অনুসরণ কিংবা অনুকরণে আমি ইসলাম গ্রহণ করিনি। এটি কোনো ভ্রান্তি কিংবা চিন্তা-গবেষণায় ত্র“টি নয়, বরং সত্য ও সুন্দরের সন্ধানে সুদীর্ঘ সময়ের গভীর অধ্যয়ন ও গবেষণার সঠিক ফলাফল।’
বলা হয়ে থাকে, মুহাম্মাদ আলেকজান্ডার আমেরিকার সমাজে ব্যাপকভাবে প্রথম ইসলাম প্রচারকারী। ১৮৯২ সালে তিনি তার চাকরি থেকে ইস্তফা দেন এবং ইসলামের বিধি-বিধান ও আরও গভীর জ্ঞান অর্জনের উদ্দেশ্যে হিন্দুস্তানে চলে আসেন। ভারতের বিভিন্ন মুসলিম মনিষিদের সাহচর্যে তিনি ব্যাপকভাবে ইসলাম সম্পর্কে জানাশোনা লাভ করেন।
কিছুদিন পর তিনি আমেরিকায় চলে যান এবং সেখানে ইসলাম প্রচারের মহান কাজে নিজেকে নিয়োজিত করেন। নিউইয়র্কে তিনি একটি অফিস খুলেন এবং সেখান থেকে ১৮৯৩ সালের মে মাসে একটি ম্যাগাজিন প্রকাশ করেন। মুসলিম বিশ্ব নামে ম্যাগাজিনটির মাধ্যমে তিনি ইসলামের নির্দেশনা ও চেতনা আমেরিকার সমাজে ছড়িয়ে দেন। ধীরে ধীরে তিনি নিউইয়র্কে মসজিদ ও ইসলামী পাঠাগার প্রতিষ্ঠা করেন। পরবর্তী বছরে তিনি তার অফিস থেকে আরও বেশ কয়েকটি ইসলামী বইপত্র প্রকাশ করেন। সেসবের মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি হল- সংক্ষিপ্ত মুহাম্মদী দ্বীন, ইসলামের পাঁচ ভিত্তি, বহুবিবাহ, ইত্যাদী।
তৎকালের মুসলিম সাম্রাজ্য তথা উসমানী খেলাফতের পক্ষ থেকে তাকে নিউইয়র্কে কনসাল নিয়োগ দেয়া হয়। নিজের পরিচিতি এবং প্রভাব-প্রতিপত্তি কাজে লাগিয়ে অক্লান্ত পরিশ্রমের মাধ্যমে তিনি আমেরিকার ক্রমবর্ধমান সমাজে ইসলামের প্রচার ও বাণী তুলে ধরেন। সেখানকার ইসলামবিদ্বেষী পাদ্রীদের তুমুল বিরোধিতা মোকাবেলা করে সমাজের গুণী লোকদের বেশ কয়েকজন প্রভাবশালীকে ইসলামের ছায়াতলে নিয়ে আসেন। তারই অনুপ্রেরণায় মুসলমান হওয়া অনেকেই পরবর্তীতে নিউইয়র্কে ইসলামী সমাজ তৈরীতে ব্যাপক অবদান রেখেছিলেন।
১৯১৬ সালের ১লা অক্টোবর নিউজার্সিতে প্রায় সত্তÍ বছর বয়সে মুহাম্মাদ আলেকজান্ডার ইন্তেকাল করেন।
২১ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১১:২৩
মানব ও মানবতা বলেছেন: পড়ার জন্য ধন্যবাদ।
২| ২২ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১২:২৭
বশর সিদ্দিকী বলেছেন: আল্লাহ তাকে উত্তম প্রতিদান করুন।
৩| ২২ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ২:৫৮
হৃদয় রিয়াজ বলেছেন: প্রিয়তে নিলাম। কাল সকালে পড়ব। আশা রাখি নতুন কিছু জানা যাবে।
২২ শে অক্টোবর, ২০১৩ বিকাল ৫:৩২
মানব ও মানবতা বলেছেন: ধন্যবাদ। খুশী হলাম।
৪| ২২ শে অক্টোবর, ২০১৩ ভোর ৬:১৬
বাংলাদেশী দালাল বলেছেন:
খুবই ভালো লাগলো। শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ ভাই।
Click This Link
২২ শে অক্টোবর, ২০১৩ বিকাল ৫:৩২
মানব ও মানবতা বলেছেন: পড়েছেন বলে আমারও ভালো লাগলো।
৫| ২২ শে অক্টোবর, ২০১৩ সকাল ৯:৪৬
তানজিব বলেছেন: প্রিয়তে
২২ শে অক্টোবর, ২০১৩ বিকাল ৫:৩১
মানব ও মানবতা বলেছেন: আপনার আগ্রহ দেখে আমিও প্রীত হলাম।
©somewhere in net ltd.
১|
২১ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১১:২০
পরিবেশ বন্ধু বলেছেন: তার সম্পর্কে অনেক কিছু জানা হল , বেশ চমক পদ তার জীবন কাহিনী