![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
রঙের দুনিয়ায় আমি এখনও ছাত্র,তবে শখের বশে লেখক, সাংবাদিক, অনুবাদক আবার কখনো আরও অনেক কিছু।
আজ ১৯৩ হিজরি, সফর মাসের তিন তারিখ। ৮০৯ খ্রিস্টাব্দ।
ভূমধ্য সাগরের তীর থেকে শুরু করে লোহিত সাগরের ওপার পর্যন্ত, এদিকে হেজাজের ইয়েমেন থেকে সুদূর পারস্য ও ভারতের সীমানা পর্যন্ত, দজলা ফোরাতের দু পাশে এবং আরব জাহানের সর্বত্র সবার মন সকাল থেকে বিষণœ, আজ দিনভর বাগদাদবাসী আপন স্বজন হারানোর বেদনায় ভরাক্রান্ত।
বাগদাদের মানুষ যেন হাসতেও ভুলে গেছে। সবার চেহারায় দুঃখ ও শোকের কালো ছাপ স্পষ্ট হয়ে আছে। লোকজন নিশ্চুপ। কেউ কেউ একে অন্যের কানে মুখ রেখে ফিসফিস করছে, এখন কী হবে!
দিনের আলোকিত সূর্যও ঢাকা পড়েছে সাধারণ মানুষের শোকের মেঘে। দজলা ফোরাতের পানিপ্রবাহ যেন আচমকাই থেমে গেছে কোনো এক বেদনার আবহে। সবার মনে কৌতুহল, কী হয়েছে! কেন আজ চারপাশে সব আলোরা হারিয়ে গেছে।
বাদশাহ হারুনুর রশিদ ইন্তেকাল করেছেন। সেই থেকে সবার মুখে মুখে শোক সংবাদ, আমাদের খলিফা আর নেই। তাঁর ন্যায় ও ইনসাফের সুবাতাস থেমে গেছে। মানুষের অভিভাবক চলে গেছেন পরপারে। জ্ঞানী ও পণ্ডিতদের সেবক বাদশাহ নিথর হয়ে পড়ে আছেন দরবার হলে।
মৃত্যু পর্যন্ত বাদশাহ হারুনুর রশিদ সুবিশাল সাম্রাজ্য সামাল দিয়েছেন অবিশ্বাস্য সাফল্যের সঙ্গে, খলিফা হিসেবে তিনি ছিলেন জনপ্রিয়তার তুঙ্গে। রাজ্যশাসন ও খেলাফতের প্রতিটি স্তরে আল্লাহর ভয় ও নবীজির আদর্শ মনে রেখেছেন গভীর বিশ্বাসে। প্রজাদেরকে ভালোবেসেছেন হৃদয় থেকে। তাঁর দরবারে ধনী-গরীব ও বড়-ছোট এবং চেনা-অচেনার সবাই এক সমান।
এমন প্রজাপ্রিয় বাদশাহর মৃত্যুতে সবাই যখন শোকাহত, তখন অন্য একটি ভাবনারও সবার মনে মনে উঁকি দিচ্ছিল। সবার ভাবনায় কৌতুহল, কে হচ্ছেন আমাদের পরবর্তী আশ্রয়স্থল। পুরো মুসলিম জাহান অধীর অপেক্ষায়, কার নাম লিখে গেছেন হারুনুর রশিদ ওসিয়তের পাতায়। বাদশাহ হারুনুর রশিদের তিন সন্তান- মামুন, মুতাসিম নাকি আমিন, খেলাফতের মসনদে কে হবেন সমাসীন, তা নিয়ে সাধারণ মানুষ জটিল হিসাব-নিকাশে বেশ ব্যস্ত দেখা যাচ্ছে। সন্ধ্যার পর ঘরে ঘরে মজলিশরুমে পাড়া-পড়শি মিলে কেউ মামুনের পক্ষে মতামত দিচ্ছে, কেউ মুতাসিমের যোগ্যতা তুলে ধরছে, আবার অন্যরা ছোটজনের সাফাই গাইছে-
- আর যাই হোক, মামুনকে দিয়ে খেলাফত চলবে না। তিনি তো খাওয়ারেজদের বৃত্তে ঢুকে পড়েছেন। এমন অনারব খাওয়ারেজদের পক্ষে থাকা মামুন আমাদের খলিফা হবেন, ভাবতেও পারছি না। বাদশাহ হারুনুর রশিদের শ্বশুর পক্ষের নাম ভাঙিয়ে খাওয়ারেজরা বেশ ফায়েদা লুটে নিচ্ছে।
- আর মুসতাসিম! তার মা তো তুর্কি। আমরা তো আরব জননীর সন্তানকে খলিফা হিসেবে দেখতে চাই।
- এজন্যই বলছি, আমিন সবার চেয়ে যোগ্য। বাবাও ছিলেন খাটি আরব, মাও তেমনি আরবীয়।
- আরে ভাই, তোমরা বিবাদে জড়িয়ে পড়লে যে, আমরা তো এখনও কারো হাতে বাইআত হচ্ছি না। সবুর করো, দেখো, কার নাম ঘোষিত হয়। তারপর এসব হিসাব করো।
সব জল্পনা=কল্পনা আর তর্ক-বিতর্কের ইতি ঘটলো। রাত পেরোতেই ভোরের প্রথম সংবাদ চলে এলো। কে হচ্ছেন মুসলিম জাহানের নতুন খলিফা- তার নাম এই মাত্র ঘোষিত হলো।
চলবে...
২| ০৩ রা এপ্রিল, ২০১৪ বিকাল ৫:২৪
জাহাঙ্গীর.আলম বলেছেন: ..অপেক্ষায় রইলাম ৷
©somewhere in net ltd.
১|
০৩ রা এপ্রিল, ২০১৪ রাত ১:৩৫
মুহামমদল হািবব বলেছেন: আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করছি পরের পর্বের জন্য।