নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

,

বিশাল যন্ত্রণার অর্থ হচ্ছে বিশাল শুদ্ধতা

জাহাঙ্গীর.আলম

..................বিশাল যন্ত্রণার অর্থ হচ্ছে বিশাল শুদ্ধতা ৷৷ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

জাহাঙ্গীর.আলম › বিস্তারিত পোস্টঃ

প্রাচীন ধর্ম ও বিলুপ্তপ্রায় সভ্যতা-২

০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:০৩


এত্রুসকান ধর্ম
ঐতিহাসিকদের মতে, ৬২০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দে রোম শহরে আক্রমণ করে এত্রুসকান নামক অন্য দেশের রাজা ৷ এই এত্রুসকানরা উত্তর ইতালীর ছোট এক শহর শাসন করত ও নিজেদের দক্ষতায় রোম দখল করে রাজত্ব করে প্রায় ১১২ বছর ৷ এদের আমলে রোম অন্যতম ধনী শহরে পরিণত হয় ও ৫০৯ খ্রিঃপূঃ এত্রুসকান শাসনের পতন ঘটে ৷
এদের ধর্মের ভিত্তি হলো মানুষের ভাগ্য দেবতার উদ্দেশ্য দ্বারা নির্ধারিত ৷ তাই সকল প্রাকৃতিক গটনা যেমন বজ্রপাত, উৎসর্গীত প্রাণীর অভ্যন্তরীণ অঙ্গের গঠন বা পাখিদের উড়তে পারা ইত্যাদি দেবতাদের স্বর্গীয় ইচ্ছার অভিব্যক্তিরূপে দেখা হত ৷ এগুলোর মাঝে যে সংকেত নিহিত আছে তা আগার (augur) নামক প্রশিক্ষিত পুরোহিতরা বর্ণনা করত ৷
এত্রুসকান যুগের ম্যুরাল
এত্রুসকান ধর্মে পূর্বাঞ্চলীয় গ্রীক প্রভাব ও অষ্টম শতকের সভ্যতার শিল্পকলা দেখে ধারণা করা হয় যে, এত্রুসকান ধর্ম লিবিয়ায় উৎপত্তি হয়েছে কিংবা ইক্রকিয়া অঞ্চলে গ্রীক প্রভাবের কারণে সৃষ্টি হয়েছে ৷তাই বলা যায় এত্রুসকান ধর্ম ঐ অঞ্চলের নিজস্ব ধর্মীয় বিশ্বাস ৷
এত্রুসকান ধর্ম খ্রিষ্টান ও ইহুদি ধর্মের একটি মিলিত রূপ ৷ কিংবদন্তী অনুযায়ী, একদিন ইক্ররিয়ার মারতা (marta) নদীর কাছে একটা অদ্ভূত ঘটনা ঘটে ৷ সেখানে একটি সদ্য চষা খাঁজ থেকে এক স্বর্গীয় দূতের আবির্ভাব ঘটে ৷ যে শিশুর মতন দেখতে কিন্তু জ্ঞান বুড়ো মানুষের মত ৷ ভীত কৃষকটির ক্রন্দন শুনে, সেখানে ইক্ররিয়ার প্রধান পুরোহিতের আগমন ঘটে ৷ সেই জ্ঞানী শিশুটি তাদের স্বর্গীয় পবিত্র বাণী শুনায় ৷ তারা সেই প্রার্থনা সংগীত ভক্তিসহকারে উপভোগ করে এবং লিপিবদ্ধ করে, যেন এগুলো বংশানুক্রমে সকলে জানতে পারে ৷ প্রার্থনা সমাপ্তির পর পরই এই আশ্চার্য শিশুটি মৃত্যুবরণ করে এবং সেই চষা খাঁজের মাঝে অদৃশ্য হয়ে যায় ৷ শিশুটির নাম ট্যাগেস (Tages), বিশ্বাস করা হয় ট্যাগেস জিনিয়াস(genius)-এর পুত্র এবং সর্বোচ্চ দেবতা তিনিয়ার (tinaia) নাতি (অথবা রোমান বিশ্বাস অনুযায়ী জুপিটার) ৷ এই মতবাদ রোমানদের কাছে ডিসিপ্লিনা এক্রসকা (Disciplina Etrusca) নামে পরিচিত ৷
ডিসিপ্লিনা তিন ধরনের পরিণতি সম্পর্কিত বইয়ের রূপ ৷ এর মাঝে প্রথমটি হলো লিবরি হারুসপিসিনি (Libri haruspicini) ৷ এখানে উৎসর্গিত প্রাণীদের নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে ৷ দ্বিতীয় বইটি হলো লিবরি ফালগিউরেটস (Libri fulgurates)-এখানে বজ্রপাত ও আলো সম্পর্কে ব্যাখা দেওয়া হয়েছে ৷ তৃতীয়টি লিবরি রিচুয়ালস (Libri rituals)- এখানে বিবিধ বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে ৷ লিবরি রিচুয়ালসের আবার তিনটি অংশ ৷ এগুলো হলো লিবরি ফ্যাটালস (Libri fatales), লিবরি অ্যাকরনটিকি (Libri Acherontici), ওসতেনতেরিয়া (Ostentaria) ৷ লিবরি ফ্যাটালসে সকল মানুষের জীবন সীমা ও সময়কে ভাগ করা হয়েছে ৷ লিবরি অ্যাকরনটিকিতে পরকাল এবং পাপ-পঙ্কিলতা হতে পরিত্রানের জন্য আচার-অনুষ্ঠান সম্পর্কে বলা হয়েছে ৷ সর্বশেষ ওসতেনতেরিয়াতে বিভিন্ন চিহ্ন ও পূর্বাভাস বোঝার জন্য নিয়মকানুন এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও দেবতাদের সন্তুষ্টির আচার-অনুষ্ঠান সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে ৷
স্বর্গ এবং পৃথিবীকে উত্তর-দক্ষিণ বরাবর কার্ডো এবং পূর্ব-পশ্চিম বরাবর ডিকিউম্যানাস নামক দুটি অক্ষরেখা দ্বারা চারটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে ৷ সকল ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান এই চারটি স্বর্গীয় ও পার্থিব অংশের উপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে ৷ এই ধর্মে শুধুমাত্র পুরোহিতগণেরই ঈশ্বরের সংকেতের অর্থ বোঝার এবং পাঠোদ্ধার করার ক্ষমতা রয়েছে এবং পৃথিবীর প্রতিটি পবিত্র ও ধর্মনিরপেক্ষ প্রতিশ্রুতির সাথে এটিকে সমন্বয় সাধন করতে হবে ৷ এত্রুসকান বিশ্বাস অনুযায়ী, সকল শুভ ও অশুভ শক্তি মহাকাশে দেবতাদের আবাস অনুযায়ী অপূরণীয়ভাবে ছড়িয়ে আছে ৷ পূর্ব দিক শুভ-ভবিষ্যদ্বানীর অঞ্চলে হিসাবে বিবেচ্য ৷ কারণ সেখানে সর্বোচ্চ দেবতাদের বাস ৷ মানুষ তাই সাধারণত পূর্বাঞ্চলে বসবাস করার চেষ্টা করে ৷ উত্তর-পূর্বাঞ্চল হলো সবচেয়ে মঙ্গলজনক এলাকা ও সৌভাগ্যের অঞ্চল ৷ দক্ষিণ অঞ্চলে থাকেন পৃথিবী ও প্রকৃতির দেবতা ৷ ভয়ঙ্কর ও নির্দয় দেবতাগণ পঞ্চিমে থাকতে পছন্দ করেন ৷ বিশেষ করে উত্তর ও পশ্চিমের মাঝে ৷ তাই এ অঞ্চলটি সবচেয়ে অমঙ্গলজনক ৷
উল্লেখযোগ্য কয়েকজন এত্রুসকান দেবতাগনের নামঃ
আইতা(aita)-মৃতজগতের শাসক
আনি(ani) –শুরুর দেবতা
আপলু(aplu) –আবহাওয়ার দেবতা-বজ্র ও বিদ্যুৎ ঝলক
হোর্তা(horta) –কৃষির দেবতা
লারান(laran) –যুদ্ধের দেবতা
লুসনা(lusna) –চন্দ্রদেবী
মেনর্ভা(menrva) –জ্ঞানের দেবী
নর্তিয়া(nortia)- সৌভাগ্যের দেবতা
তুরান(toran)- ভালবাসার দেবী
টার্মস(turms)-বানিজ্যের দেবতা
দেবতা আইতা
দেবতা লারান
এত্রুসকান যুগের ব্যবহৃত অলংকার
কৃতজ্ঞতাঃ অন্তর্জাল


মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.