নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

,

বিশাল যন্ত্রণার অর্থ হচ্ছে বিশাল শুদ্ধতা

জাহাঙ্গীর.আলম

..................বিশাল যন্ত্রণার অর্থ হচ্ছে বিশাল শুদ্ধতা ৷৷ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

জাহাঙ্গীর.আলম › বিস্তারিত পোস্টঃ

প্রাচীন ধর্ম ও বিলুপ্তপ্রায় সভ্যতা-৩

০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ বিকাল ৫:৩৪



এসেনাসদের ধর্ম

১৯৪৭ সালে প্যালেস্টাইনের মৃত সাগর বা ডেড সীতে খুজে পাওয়া যায় ইহুদি জাতির এক বিশেষ গোষ্ঠী এসেনাসদের সভ্যতাকে ৷ জর্ডান নদীর কিছদূরের জেরিকো শহর থেকে তেরো কিলোমিটার দূরে একটি গুহা খুজে পাওয়া যায় ৷

আবিস্কৃত গুহা

এই গুহাতে পাওয়া যায় কয়েকটি অতি প্রাচীন দীর্ঘ পটচিত্রের মতো গোটানো এবং লিলেন কাপড়ের মোড়া পুঁথি বা স্ক্রোল ৷ এই স্ক্রোলগুলোকে মানব সভ্যতার অনন্য দলিল হিসাবে বিবেচনা করা হয়৷ রেডিওকার্বন পদ্ধতিতে জানা যায় এই স্ক্রোলগুলো প্রাচীনতম হিব্রু ওল্ড টেস্টামেন্টের থেকেও প্রাচীনতম এবং যিশুর জন্মের বহু পূর্বেই লিখিত ৷ পুঁথিগুলো থেকে জানা যায় কুমরানের এই সভ্যতার অস্তিত্ব ছিল খ্রিস্টপূর্ব দ্বিতীয় শতকে ৷

উদ্ধারকৃত স্ক্রল

এ সময় গ্রিক ধর্মের অনুপ্রবেশ ঘটে এ অঞ্চলে ৷ জনাথন ম্যাকাবিন ইহুদিদের প্রধান পুরোহিতের দায়িত্ব নিলে গ্রিক-ইহুদি দ্বন্দ্ব-সংঘর্ষের অবসান হয় ৷ এমন সময় গোঁড়া ইহুদিদের মধ্যে এসেনাস নামের এক গোষ্ঠীর উদ্ভব হয় ৷ সেলুসিড আধিপত্যের সময়ে এরা ধর্মীয় অত্যাচার এড়াতে মরু অঞ্চলে আশ্রয় নেয় ৷ খ্রিষ্টপূর্ব আনুমানিক ১৫০ শতকে এসেনাসদের হাতেই কুমরান জনপদ গড়ে উঠে ৷

এসেনাসরা ছিল অত্যন্ত ধর্মভীরু ৷ কেবলমাত্র ইজরাইলরাই কুমরান মঠবাসী হতে পারতেন ৷ শাস্ত্রপাঠই ছিল কুমরানবাসীর প্রধান কাজ ৷ এজন্যে তারা সকলে সমবেত হত রোজ রাত্রিকালে গঠন শেষে হত সমবেত প্রার্থনা ৷ গবেষকরা এমনও মনে করেন যে বাৎসরিক অন্তত একবার একটি সাধারণ সম্মেলন হত ৷ বেশ বড় আকারের একটি প্রার্থনাসংগীত আবিস্কৃত হয়েছে গুহা থেকে যা হিব্রু বাইবেলে পাওয়া যায় না ৷ এতে মানুষের দুর্বলতার কথা ও ঈশ্বরের শক্তির কথা ভারি সুললিতভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে ৷

এসেনাসদের সৌর ক্যালেন্ডার

কুমরানবাসীদের ধর্মবিশ্বাস সনাতন জুডাইজমের থেকে খুব বেশি ভিন্ন ছিল না ৷ কুমরান মঠবাসীরা বাইবেলের টীকার নির্দেশ মতো অত্যন্ত গোঁড়াভাবে সৌর ক্যালেন্ডার মেনে চলত ৷ কুমরানে বিবাহের নিয়ম ছিল বেশ কঠিন ৷ এদের ধর্মবিশ্বাসের মূল ছিল মানুষের দুষ্কর্মের জন্য ঈশ্বরের কোপ ঝরে পড়তে পারে অবিশ্বস্ত ইজরাইলবাসীর উপর এবং শেষ বিচারের দিনে যারা ধর্মপ্রাণ মানুষ তারাই কেবল বেঁচে যাবে ৷ তাদের আরো বিশ্বাস ছিল যে চল্লিশ বছর ধরে আলোকপুত্রদের ( মুষ্টিমেয় বিশ্বস্ত কজন ) এবং আঁধারপু্রদের ( অন্যান্য সব ইহুদি বা গোষ্ঠীর বাইরের মানুষেরা ) মধ্যে তুমুল যুদ্ধ হবে ৷ পার্থিব যুদ্ধের সাথে সমানতালে যুদ্ধ চলবে স্বর্গ দৈব ও আসুরিক শক্তির ভেতর ৷ শেষ পর্যন্ত ঈশ্বরের হস্তক্ষেপে পবিত্র এসেনাস গোষ্ঠীর বিজয় কল্পনা করা হত ৷

মৃত সাগরের গুহার ভিতর থেকে পাওয়া কিছু কিছু পুঁথির মধ্যে পুঁথিকাররা লিখে গেছেন এক ত্রাণকর্তা এসে নবউষার সন্ধান দিবেন ৷ কোথাও কোথাও দুই ব তিন মিশাইয়া বা ঈশ্বর প্রেরিত ত্রাণকর্তার উল্লেখ আছে ৷



এসেনাসদের মঠের ব্রহ্মচারী হওয়ার নিয়ম-কানুন ছিল দারুণ কড়া ৷ সর্বাগ্রে দেখা হত ব্রহ্মচারী হওয়ার আগ্রহী ব্যক্তির নৈতিক মান কতটা উন্নত ৷ উন্নত মানের হলে তাকে মোসেজের নিয়মানুযায়ী শপথ নিতে হত গোষ্ঠীর আদর্শ অক্ষরে অক্ষরে মেনে চলার ৷ ব্রহ্মাচর্যের সময় ছিল মোট তিন বছর-তার পরই সে পূর্ণ মঠবাসীর সম্মান ও স্বীকৃতি পেত ৷ ৬৮ খ্রিস্টাব্দে রোমান যোদ্ধাদের দ্বারা এ জনপদ ধ্বংস হয় ৷ এসেনাসরা অসীম দৃঢ়তায় রোমানদের অত্যাচারের মোকাবেলা করতে করতে ক্রমশ পৃথিবী থেকে বিলীন হয়ে যায় কিন্তু নিজেদের ধর্ম বিশ্বাস বিসর্জন দিয়ে বশ্যতা স্বীকার করেনি ৷

কৃতজ্ঞতাঃ অন্তর্জাল

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.