![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
..................বিশাল যন্ত্রণার অর্থ হচ্ছে বিশাল শুদ্ধতা ৷৷ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
৹বন ধর্ম৹
বন তিব্বতের স্থানীয় ধর্ম ৷ ৭ম খ্রিষ্টাব্দে তিব্বতে বৌদ্ধ ধর্মের আগমনের আগে এটি সেখানকার প্রধান ধর্ম ছিল ৷ এ ধর্মটি তিব্বতের বৌদ্ধদের প্রভাবিত প্রভাবিত করেছিল কিনা সে বিষয়ে বিতর্ক আছে ৷ এ ধর্মের অনুসারীদের বন-পো (Bon-po)নামে আখ্যায়িত করা হয় ৷ধারনা করা হয় বর্তমানে প্রায় ১ লক্ষ অনুসারী আছে এই ধর্মের ৷
গবেষক ও অনুসারীরা উভয়ই মূল বন এবং আধুনিক বন ধর্মকে পৃথক বলে বিবেচনা করেন ৷ মূল ধর্মের অনুসারীরা চিন্ময়জগৎতত্ত্বে বিশ্বাসী (প্রকৃতিতে ভাল এবং খারাপ উভয় আত্মা বা শক্তিই বিদ্যমান) ৷ বন ধর্মের অর্থ প্রার্থনা ৷
মূল বন ধর্মের প্রকৃতি সম্পর্কে জানা বেশ সমস্যাজনক কারণ এ ধর্মের প্রাথমিক সকল বর্ণনাই করা হয়েছে বৌদ্ধ ধর্মের দর্শনানুযায়ী এবং ধর্মটিকে অধস্তন করা হয়েছে ৷ সপ্তম খ্রিষ্টাব্দে বৌদ্ধ শাসনের আমলে এ ধর্মের উপর নানা নির্যাতন নেমে আসে ৷ কিন্তু ধর্মটি আরও সংগঠিত রূপ নেয় ১১ খ্রিষ্টাব্দে ৷
ঝ্যাং ঝুং
ধর্মটির ২য় পর্যায়ের সূচনা করেন শেনরাব মিওচে (Shenrab Miwoche) ৷ এ পর্যায়কে বলা হয় ইউংড্রাঙ্গ বন (Yungdrung Bon) ৷ প্রচলিত বিশ্বাস মতে মিওচে ১৮ হাজার বছর আগে তিব্বতের কাছে ঝ্যাং ঝুং (Zheng Zhung) নামক পৌরণিক ভূমিতে বাস করতেন ৷ বুদ্ধের ন্যায় মিওচেও মঠসন্ন্যাসী হবার জন্য রাজপুত্রের পরিচয় ত্যাগ করেন ৷ তিনি দিব্যজ্ঞান লাভ করেন এবং অন্যকে শিক্ষা দেন ৷ এভাবে তিনি প্রাচীন চিন্ময়জগৎতত্ত্বে বিশ্বাসী ধর্মকে ইউংড্রাঙ্গ বনে রূপান্তরিত করেন ৷
অন্যদিকে বৌদ্ধ পণ্ডিতেরা মনে করেন শেনরাব লাওৎসের সাথে সম্পর্ক এবং বন হচ্ছে টাওবাদ থেকে উৎসারিত ৷ আধুনিক গবেষকরা বলেন এ ধর্মের ওপর কাশ্মীরের শিব পূজারীদের প্রভাব রয়েছে ৷
বর্তমানে যে বন ধর্ম চর্চা করা হয় তা প্রকৃতপক্ষে তিব্বতের বৌদ্ধ ধর্মেরই একটি রূপ ৷ এর সূচনা হয় ১৪০০ খ্রিষ্টাব্দে যখন বন ধর্মের শিক্ষকরা বৌদ্ধ ধর্মের নানা দিক গ্রহণ করা শুরু করেন ৷ অনেক পার্থক্য থাকলেও বর্তমান অনুসারীরা একে প্রাচীন বন ধর্মের উত্তরাধিকার মনে করেন ৷ অক্সোফোর্ড ডিকশনারি অব ওয়ার্ল্ড রিলিজিয়নে বলা হয়েছে' আধুনিক এবং প্রাচীন বন ধর্মের মধ্যকার সম্পর্ক অত্যন্ত ক্ষীণ৷'
প্রাচীন বন ধর্ম মতে ভাল ও খারাপ এ দুইয়ের সহবস্থানের মাধ্যমেই জগৎ সৃষ্টি হয়েছে ৷ ধর্মের আচার-অনুষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে দেবতাদের পূজা এবং ধ্যান ৷ এদের রয়েছে প্রধান চারজন দেবতা যাঁরা এই পৃথিবীর অধিকর্তা ৷ এদের নেতৃত্বে রয়েছেন একজন দেবী ইয়ুম (Yum) বা মাতা ৷ অন্য তিনজন পুরুষ দেবতা হলো লাহা (Lha) বা সৃষ্টিকর্তা সিপা (Shipa) বা রক্ষাকর্তা এবং টনপা (Tonpa) বা শিক্ষক ৷ এই মর্মে সন্ন্যাস জীবনকে গুরুত্ব দেওয়া হয় ৷ প্রাচীন বন ধর্মের মতো এখনও জ্যোতির্বিদ্যা এবং ঔষধশাস্ত্রের চর্চা করা হয় ৷
বন পুরোহিত
বর্তমানে বন ধর্মের প্রচলন আছে তিব্বতের উত্তর ও পশ্চিমাঞ্চলের দুর্গম কিছু এলাকায় এবং ভারতের হিমাচল প্রদেশের দোলানজিতে ৷ কমিউনিষ্ট শাসন আমলে তিব্বত ও চীনে ৩০০টি বনধর্মীয় মঠ ছিল ৷ সাম্প্রতিক জরিপ মতে বর্তমানে এ সংখ্যা ২৬৪টি ৷
কৃতজ্ঞতাঃ অন্তর্জাল
©somewhere in net ltd.