নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

,

বিশাল যন্ত্রণার অর্থ হচ্ছে বিশাল শুদ্ধতা

জাহাঙ্গীর.আলম

..................বিশাল যন্ত্রণার অর্থ হচ্ছে বিশাল শুদ্ধতা ৷৷ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

জাহাঙ্গীর.আলম › বিস্তারিত পোস্টঃ

তানিয়া মালিয়ারচকের গল্পঃ ক্ষুধার দানো

১৭ ই আগস্ট, ২০১৪ বিকাল ৫:১৭



আমার গলায় বেশ ব্যথা লাগছিল ৷ কথা বলতেই পারছিলাম না ৷ সত্যি বলতে কি আমার বলার মত কিছুই ছিল না ৷ অনেক চিন্তা করলাম কিন্তু বিশেষ কিছু কারণে আমার নিজস্ব কোন মতামত ছিল না ৷ অনুমানও করতে পারলাম না আমার কী হলো আর জানলামও না পরিচিতজনদের কী হলো ৷ আমি শুধু একটা ব্যাপারই বুঝলাম আমি বেশি আবেগী ৷ না বললেই নয়, আমি বেশ কাঁদি ৷ এটাই খুব স্বাভাবিক ৷ আরো বেশিও কাঁদতে পারি ৷ যখন কোন কষ্টের কাহিনী শুনি তখন নিজে থেকেই কান্নার জল গড়িয়ে পড়ে ৷ সারা দিন আর রাতজুড়ে কাঁদি আমি ৷ যখন কাঁদি তখন বেশ স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি ৷ বেশ হালকা ৷



ভালবাসার গল্পগুলো শুনতে আমার বেশ ভাল লাগে ৷ আবেগী গল্প ৷ যখন দু’জন একে অপরকে ভালবাসে আর তখনই ভিতর থেকেই পরস্পরকে পাবার তীব্র আকাঙ্ক্ষা জাগ্রত হয় ৷ কিন্তু আমার ভাল লাগে দু’জন প্রেমিক-প্রেমিকা সারাজীবন ধরে আলাদা থাকা আর তাদের মৃত্যুও হয় পৃথকভাবে ৷ যদিও একে অপরকে কখনই ভুলেনা ৷ তাদের থাকে আলাদা স্বামী বা স্ত্রী কিন্তু ভুলে যায় না জীবনের সেরা ভালবাসার কথা ৷ যেমন কোন লোক হয়ত তার জীবনসঙ্গীর হাতের উপর মরে (যে হয়ত তাকে ভালবাসে ) তখন সেই প্রেমিকা বোধহয় জানালার ওপাশে দাড়িয়ে থাকে ৷ নয়ত গোরস্থানের পাশে ৷ সবার সাথে নয় তবু পাশেই থাকে তাকে শেষবারের মত দেখার জন্য ৷ দেখেছো, আমি এখন কাঁদছি যদিও এটি স্বাভাবিক ৷ আমাকে থামিও না ৷



আমারটা থেকেও অন্যের ভালবাসার গল্পগুলো আমায় বেশ আবেগময় করে তুলে কারণ হয়ত আমি কাউকে গভীর ভাবে ভালবাসিনি ৷ সম্ভবতঃ এখনও আমি বেশ দ্বিধান্বিত ৷ তা জানি না কেন ৷ কিন্তু আমার গল্পটা হৃদয়ে দাগ কাটে না ৷ সেটা বুঝে আসে না আমার ৷ সেটি আবার নির্ভর করে কিভাবে বলা হলো ৷ কারণ হয়ত আপনি গল্পটি একভাবে বললেন তা সবাইকে কাঁদালো ৷ আবার সেটি অন্যভাবে বললে সবাই তা নিয়ে হাসতে থাকবে, আসলে গল্প কিন্তু একটাই ৷



আমার দাদিমা সবসময় আমায় এমন ভাবে আমাকে গল্প শোনাত যেন যাতে আমার কান্না পেত ৷ সেও কাঁদতো, আসলে আমরা দু’জনই কাঁদতাম ৷ আর তখনই আমি প্রথম বুঝেছিলাম যে, গল্প শোনে কান্নায় কতটা মধুর ৷



আমার দাদিমা ছিল সপ্রতিভা গল্প বলায় ৷ মাঝে মাঝে তার শরীরের চামড়ায় কি যেন অসহ্য বেদনা হতো ৷ ফলে একবার বলেই ফেলল তার পেছনের ইতিহাস ৷ সবটুকুই তার বেশ মনে ছিল ৷ অবশ্য আমিও সব জানতে কান্নাকাটি করেছিলাম ৷ তারপর দাদিমা আমায় বললঃ

‘বার্চ গাছের তক্তা চেনো ?’

‘না চিনি না ৷ কি সেটা ?’

‘তুমিও চিনবে যখন তোমাকে কেউ বার্চ গাছের বাকল দিয়ে মারবে ৷ তারা আমায় মেরেছিল একবার আর এর বেদনার স্মৃতি বহন করে চলেছি সারা জীবনভর ৷’

‘আচ্ছা এর স্বাদ কি রকম ?’

‘লবণের মত ৷ সাথে খানিকটা তিতার স্বাদও আছে ৷ যখন তক্তার আঘাত পড়বে তখন একটু তিতার স্বাদই লাগবে তখন ৷’



দাদিমাকে তার সৎমায়ের ছোট বাচ্চাকে দেখাশোনা করতে হতো ৷ একবার সেই বাচ্চাটি শেলফের উপর থেকে মেঝেতে পড়ে গেল ৷ আর সৎমায়ের মারের ভয়ে দাদিমা পাশের বনে চলে গেল ৷ তার সৎমা সবসময়ই চাবুকের আঘাতে কষ্ট দিতো তাকে ৷ বাচ্চাটিকে মেঝেতে রেখেই পালিয়ে আসল দাদিমা ৷ উনি ভেবেছিলেন বাচ্চাটি মারা গেছে কিন্তু কিছুই হয়নি তার ৷ মৃত্যুমুখবর্তী ঘোরগ্রস্থ কোন শিশুকে কোলে তুলে নেওয়া আসলে বেশ কষ্টসাধ্য ৷ জীবনের সামনে এগিয়ে যেতে তা বেশ অবহনযোগ্য ভারও ছিল ৷ বিড়ালের মতো চুঁপটি করে বসে থাকলো সন্ধ্যা পর্যন্ত বাপের বাড়ির কাছের বনে ৷ পেছন থেকে বোঝার চেষ্টা করল বাড়িতে কী ঘটছে ৷ তার সৎমা কিন্তু জানতো সে কোথায় লুকিয়ে আছে ৷ গোঁধুলি ঘনিয়ে আসলে সে আঙিনায় বেড়িয়ে এসে নাম ধরে চিৎকার করতে লাগলো ৷



‘বাড়িতে এসো আমি তোমাকে মারবো না ৷ বড্ডো দেরি হয়ে গেছে, তুমি সারাদিন কিছুই খাওনি ৷ বাছা, ফিরে এসো বাড়িতে ৷ তোমাকে আজ শবজির কিছু মজাদার খাবার দিবো ৷ এসো - ভয় পেওনা ৷’

দাদিমা তাকে বিশ্বাস করল ৷ সত্যিকারের ক্ষুধার্ত ছিল বলেই পিছনের জঙ্গল থেকে সৎমায়ের কাছে ফিরে আসল ৷ সেই বাচ্চাকাল থেকেই দাদিমার পেটে খিদে থাকত ৷ এমনকি তার শেষ সময়ও সে ক্ষুধার্তই ছিল ৷ হেঁটে সৎমায়ের কাছে এসে বললঃ

‘শবজি কোথায় ?’

‘ভিতরে যাও ৷ বাড়িতে আছে ৷’

ভিতরে গেল দাদিমা ৷ এরি মধ্যে তার সৎমা গাছের বাকলের তক্তা নিয়ে প্রস্তুত ৷ দাদিমাকে ঝাপটে ধরলো ৷ সাথে সাথে তার পায়ে, পিঠে, মুখে আঘাত আসতেই লাগলো ৷ চিৎকার করতে লাগল দিদা ৷

‘নচ্ছার মাগি তুই ৷ আমার বাচ্চাকে মেরে ফেলতে চেয়েছিলি ? তাইতো শেলফ থেকে মেঝেতে ফেলে দিয়েছিলি ৷’



এমন করে মারতেই থাকলো যতক্ষণ না কাজ থেকে দাদিমার বাবা ফিরে আসলো ৷ তাকে টেনে কেড়ে নিল সৎমায়ের কাছ থেকে ৷ যদিও আমার দাদিমা নড়াচড়া, এমনকি কথাও বলতে পারছিলো না ৷ রক্তে ভেসে যাচ্ছিলো সারা শরীর ৷ এরপরই তার বাবা সৎমাকে পেটাতে লাগলেন ৷ না, ঐ গাছের তক্তার জায়গায় হাতের ঘুঁসিতেই শুরু করলেন ৷



সৎমা প্রচণ্ড ঘৃণা করতো দাদিমাকে ৷ প্রায়ই তাকে খেতে দিতো সাবানের আজলা, একবার তো ইঁদুরের বিষও দিলো ৷ আমি একটুও মিথ্যা বলছি না, সব সত্যি ৷ নির্জলা সত্যি কথা ৷ যদিও তুমি হয়ত বিশ্বাসই করবে না আসলে এমনটা হয়ে ছিল কিনা ৷



বাড়ি থেকে পালিয়ে গেল ছয় বছর বয়সে ৷ পরে তাকে বোর্ডিং স্কুলে যেতে বাধ্য করা হলো ৷

সাত বছর বয়সে বোর্ডিং স্কুল থেকে পালালো কারণ সে আতঙ্কে ছিল মৃত্যুর ৷ সেখানে সে শিখেছিল, নতুন তরকারি রান্না করা শুধু পানিতে দুটো শিমের বিঁচি ৷

বয়স আটে দাদিমা থাকতে লাগল নভোহরাড-ভলিনস্ক ( ইউক্রেনের একটি স্থান) বাজারে আর খেতে লাগল ফেলে দেওয়া উচ্ছিষ্ট আলুবোখারা ৷

তারপর কাজ পেল খামারের গরু চরানোর ৷ এরপর এক লোকের খামারে কাজ করত যে প্রতিশ্রুতি দিয়ে ছিল এক বছরের কাজের বিনিময়ে শীতে গরম কাপড়ের দেওয়ার ৷ দুই বছরের অতিরিক্ত কাজের মূল্য হিসেবে সে পেল একটা বাঁছুর ৷ মালিকের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে এক তাতারের সহযাত্রী হয়ে বাঁছুর নিয়ে জিইতমির শহরে (ইউক্রেনে অবস্থিত) গেলেন ৷ সপ্তাহান্তে বাঁছুরটি মারা গেলে সেটার চামড়া ছিলে ও মাংস বেচে দুটো তারপোলিন কাপড়ের জুতো পেল ৷ যদিও সে দুটোই বা-পায়ের ৷



তোমাকে বললাম কত সুন্দরভাবে যদিও দশ বছর লেগেছিল দাদিমার আমাকে সবটা বলতে ৷ দশ বছর ধরে সব সূক্ষ্ম ও বিস্তৃতভাবে বর্ণনা করেছিল গল্পগুলো ৷ অন্তর দিয়ে তার জীবনটা আমি জানি ৷ সে জন্য হয়ত আমার নিজের দিকে নজরও দিতে পারি নাই ৷ সে সময়ে মনে হতো আমার জন্য নয়, দাদিমার জন্যই বেঁচে থাকা ৷ তাই তো তার দরকার ছিল কোন একজনকে সব বলার, যাতে সে সবাইকে সব কাহিনী বলতে পারবে ৷ আমার চোখে প্রায় নিখুঁত ছিল সে ৷ সে আমাকে বঞ্চিত করেছিল নিজের কাহিনীতে বেঁচে থাকতে ৷ সে কোন সুযোগই দেয় নাই আমাকে কোন ‘একজন’ হয়ে উঠতে ৷ এমনকি একজন স্বাধীন সত্ত্বাধিকারী হিসেবেও নয় ৷



আর সবচেয়ে নিকৃষ্ট দিক ছিল দাদিমা কাউকেই ভালবাসেননি ৷ সম্ভবত সারা জীবনভর ক্ষুধার্ত ছিল সে ৷ কিন্তু আদতে কাউকে পছন্দ ছিল না তার ৷ কোন পুরুষ মানুষকে, তার সন্তানদেরকে সর্বোপরি আমাকেও নয় ৷ কাউকেই নয় এমনকি নিজেকেও নয় ৷ যদিও আমি সবসময় ভদ্রভাবে তার শ্রোতা ছিলাম ৷ এখন তার অতিতের দিকে তাকালে আমার মনে হয়, ছোটবেলার দিনগুলো থেকেই ক্ষুধার দানো তার মাঝে বসত গেঁড়েছিল ৷ আমি জানি না এমন কিছু কি আছে নাকি ? কিন্তু সেটাও আমার ধারণা ৷



যখন হঠাৎ করে, যদি বাড়িতে কিছুই না থাকে খাবার মতন দাদিমা রাগান্বিত হয়ে উঠতেন ৷ মাঝে মাঝে আমাকেও মারতেন ৷ তখন তার চোখগুলো ফুঁসে উঠতো, কুৎসিত আর আগুনের ফুঁলকির মত লাগতো ৷ মনে হতো রুটির দলার জায়গায় কারো গলা চিবিয়ে খেয়ে ফেলবেন ৷ সে খুঁতখুঁত করে টেবিলে ছড়ানো রুটির টুকরাগুলো জড়ো করতে লাগতেন ৷ পরে বাধ্য করলেন আমাকে সেগুলো খেতে ৷ প্রচুর পরিমাণে রান্না করতেন তিনি, যার পুরোটাই ছিল চর্বিযুক্ত ৷ পরিমাণে এতই চর্বি ছিল যে, আমি তার জন্য তরকারিই দেখতেই পেতাম না ৷ লার্ড (শূকরের চর্বি) ছিল তার পছন্দের খাবার ৷ শেলফে আধা লিটার বৌয়মে লার্ডগুলো জমিয়ে রাখতো ৷ অগণিত বৌয়ম ছিল শেলফের তাকে তাকে ৷ আরও ছিল অসংখ্য শিমের বিঁচি ভর্তি বৌয়ম ৷ সেই সু-প্রাচীন শেলফের তাকে ছিল অনেক সংরক্ষিত অংশবিশেষ যার কোনটার বয়স আমার চেয়েও অধিক ছিল ৷



সংরক্ষণের ভীতি দাদিমার জীবন নিয়ন্ত্রণ করতো ৷ যখন গরমের সময় দীর্ঘ সময় ধরে বৃষ্টি নামতো তখন দাদিমা বাগানে বসে থাকতো ৷ আর আওড়াতে থাকতো ‘এখন কি হবে আলু, শিমের বীঁচি, গাজর ও যবগুলোর ? হে ঈশ্বর, এবার কি হবে ! না খেয়ে সবাই মারা যাব !’

আমার বেশ মনে আছে একবার দাদিমার ক্ষুধার দানোটা আমার মাঝেও বসত নেয় ৷



আমি অবশ্য কখনও খাবার-দাবারের ব্যাপারে অত্যুৎসাহী ছিলাম না ৷ যখন যা পেতাম তাই খেয়ে ফেলতাম ৷ অল্প আর বেশি খুব একটা আগ্রহ ছাড়াই ৷ কিন্তু একবার কি যেন হলো ৷ অনেক টানা ঘুম দিলাম সেই দুপুর বেলা পর্যন্ত ৷ বেশ একটা দুঃসহ্য স্বপ্ন দেখছিলাম তার থেকে নিস্তারও বেশ কঠিন ছিল ৷ আমি এতই ক্লান্ত ছিলাম যে বিছানা থেকে উঠে গরমকালীন রান্নাঘরে যেতে পারছিলাম না ৷ সেখানে দাদিমা বেশ সুস্বাদু বোর্চ (গাজর দিয়ে তৈরি স্যুপ) রান্না করছিল ৷ তখন আমি গরম বোর্চের সুললিত ঘ্রাণ ভেসে আসছিল আমার নাকে ৷ কিন্তু আমি নড়তেও পারছিলাম না ৷ এতই ক্ষুধার্ত ছিলাম যে একটু পাশ ফিরতে পারলাম না ৷ আমার মনে হল পেটের ভিতর খাড়া, সুগভীর একটা গর্ত তৈরি হয়ে গেল ৷ গোটা পেটটাই হয়ে গেল পুরো আমি আর আমি হয়ে গেলাম পুরো পেট জুড়ে ৷ বিছানার ধারের পুরো ওয়ালক্লথটা বা আমার জুতোর ফিতেগুলো সব খেয়ে ফেলতে ইচ্ছা হল ৷ এরকমটা আগে বা পরে কখনই আমার বোধ হয়নি ৷ পিঁশাচের মত হেলেদুলে রান্নাঘরের দিকে যেতে লাগলাম পায়জামার রশি হাতে ধরে ৷ এমনকি কোন সম্ভাষণও দাদিমাকে দিলাম না ৷ বসে পড়লাম খাবার টেবিলে আর পুরোটাই বুঝতে পারল দাদি ৷ একবাটি বোর্চের স্যুপ আমাকে দিল আর আমি গোগ্রাসে গিলতে লাগলাম ৷ আসলেই খাচ্ছিলাম না শুধু গিলতে লাগলাম ৷ দাদিমা পুরো সময় ধরে আমাকে দেখছিল আর মজা লুটছিল ৷ তার মনে হল যেন তার মতই হয়ে গেলাম এই আমি - যোগ্য উত্তরসূরি ৷ যেন তার ক্ষুধার দানোর অংশীদারিত্বের মানস সন্তান ৷ তাই তো আমি খুব বেশি আবেগী ৷ সেটা আমাদের দুজনের জন্যই ৷



শেষের দিকে দাদিমা মারা যাওয়ার আগে দাদিমা আমাকে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ করেছিলেন তার বিছানায় ঘুমাতে ৷ তারপর থেকে তার বিছানায় তার সাথে আমি ঘুমাতে লাগলাম ৷ সে বিছানায় দাদির মৃত্যু হয়েছিল কিন্তু মৃত্যুর ব্যাপারে সে কখনও উদ্ধিগ্ন ছিল না ৷ সেসময় আমি তাকে এটাও বলেছিলাম তার সাথে ঘুমানো কষ্টকর ৷ কারণ আমি দুঃস্বপ্ন দেখে ভয় পাই ৷ যদিও আমার কথাগুলো তার অনুভূতিতে সাড়াও ফেলতে পারল না ৷ আমিও ক্রমাগত প্রতিদিন দুঃস্বপ্ন দেখতে থাকলাম ৷



বার বছর বয়সে আমার উপলব্দিতে আসল যতদ্রুত সম্ভব আমায় দাদিকে ছেড়ে যতদূর চলে যাওয়া উচিৎ ৷

মনে পড়ে একবার অগাস্ট মাসের ঘরমের দিন ৷ দু’জনে মিলে বাগান থেকে শিমের বিঁচি উঠাচ্ছিলাম ৷ দাদিমা তার পরের গল্প আমাকে শোনাচ্ছিল ৷ তার জন্য শিম থেকে বিঁচিগুলো বেছে বেছে বড় একটা পাত্রে জমাচ্ছিলাম ৷ সেখান থেকে বড় ব্যাগ করে উঠানের এককোণে জমিয়ে রাখছিলাম ৷ জানি না কি হয়েছিল দাদিমা স্বীকারোক্তি করতে লাগলেন ৷ সত্যি জানি না কিভাবে হল ৷ মনে হয় আমি কিছু বলেছিলাম জীবন সম্পর্কে কথার ছলে ৷ স্বর্গ, নরক ও আত্মা নিয়ে ৷ আর এগুলো নিয়ে আমার কথা বলতে ভাল লাগতো ৷



পরে দাদিমা হঠাৎ বলে উঠলঃ আমি আত্মায় বিশ্বাস করি না ৷ এমনকি কিছুতেই আমার বিশ্বাস নেই ৷ যে কেউ মরে আর তার হাড়গুলো মিশে যায় আর এটাই সব ৷ জীবিত সময়কাল অতঃপর শেষ ৷ তার বাইরে কিছু নেই ৷



আমি বললাম, ‘দাদিমা, এভাবে ভাবা আসলে সঠিক নয় ৷ তুমি কি ভয় পাওনা তুমি মারা যাবে আর তোমার হাড়গুলো মিশে যাবে. তাই সব ?’

‘সেখানে ভয় পাওয়ার কি আছে ? এভাবেই সব ঘটে থাকে ৷’

‘তাহলে কেন এই বেঁচে থাকা ? যদি এরপরই কিছু না থাকে !’

‘তারপর কি আসলে কিছু নেই ? এই তুমি ! তুমি আমার জীবনের সব মনে রাখবে, আমি যা যা সব তোমাকে বলেছি ৷ সবটা হবে অমর ৷’



আমি বুঝতে পারলাম যে, আমাকে পালাতে হবে ৷ শিমের বিঁচি ছাড়ানো বাদ দিয়ে দৌঁড়ে চলে আসলাম ৷ দাদিমা কাছ থেকে পালিয়ে আসলাম আর নিজের জীবনে প্রর্ত্যাবর্তন ৷ কারণ আমি হতে চাইনি তার অমরত্ব ৷ চেয়েছি নিজস্ব আমিকে ৷ যদিও অনেকক্ষেত্রে তা নির্ভুল নয় ৷ আর চেয়েছি নিজের জীবনের উপর কর্তৃত্ব ও অমরত্বকে ৷ আমি চাইনি তার অবিশ্বাসের ভোক্তভোগী হতে ৷ যখন পালিয়ে আসি এগুলো আমার মাথায় ভিড়ছিল ৷



এখন বয়স ত্রিশ বছর আমার ৷ দাদিমা মারা গেছেন বহু বছর আগে ৷ তার শেষযাত্রাতেও আমি যাইনি ৷ কিন্তু আমি পারিনি নিজেকে বাঁচাতে ৷ মনে হয় পালিয়েছিলাম দেরি করে ৷ আমার নিজের কোন গল্প নেই - সবই তার ৷ অন্যদেরকে আমি তার গল্পই বলি ৷ অচেতনভাবে আমার ইচ্ছার প্রতিকূলে ৷ মাঝে মাঝে আমার ভেতরে এসে বসে থাকে আর ক্রমাগত পীড়া দেয় গল্পগুলো বলতে ৷ আর যখন তাদেরকে কথাগুলো বলে ফেলি আমার সত্যিকারের আনন্দ হয় ৷ এবং কেঁদে ফেলি ও আনন্দিত হই ৷ তাই তো আপনার কাছে অনুরোধ একটু শুনুন আমার কথা ৷ খানিকটা সময় দিন ৷ চলে যাবেন না! এক মিনিট কি সময় হবে না ? যুদ্ধের সময় দাদিমা সামরিক হাসপাতালের মেস হলে কাজ করতেন ৷ কিভাবে যেন কাপড় কাঁচার সময় সেই বড় চৌবাচ্চায় তিনি ঘুমিয়ে পড়লেন…………. ৷



*__**__**__**__**__**__**__**__**__**__**__**





ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি লেখিকার অনুমতি ব্যাতিত লেখা অনুবাদের প্রচেষ্টায় ৷

মন্তব্য ৩২ টি রেটিং +৮/-০

মন্তব্য (৩২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৭ ই আগস্ট, ২০১৪ বিকাল ৫:২৯

জাহাঙ্গীর.আলম বলেছেন:
ইউক্রেনের লেখিকা তানিয়া মালিয়ারচক এর কাজ মূলত চেখভের মত চরিত্রগুলোর মনস্তাত্বিক বিশ্লেষণ যাদু বাস্তবতার আদলে ৷ বর্ণনায় বেশির ভাগ কাজে প্রাধান্য থাকে তার জীবন আর বেড়ে ওঠা স্থানীয় কার্পাথিয়ান পর্বতমালার রহস্যময়ী অংশকে কেন্দ্র করে ৷

তানিয়া মালিয়ারচকের জন্ম ১৯৮৩ সালে ৷ ইউক্রেনের এ সময়ের প্রতিভাবান তরুণ গল্পকার ৷ তার প্রথম উপন্যাস Adolpho’s Endspiel, or a Rose for Liza, আত্মপ্রকাশ পায় ২০০৪ সালে ৷ পরে আরো From Above Looking Down: A Book of Fears (২০০৬), How I Became a Saint (২০০৬), To Speak (২০০৭), Bestiary of Words (২০০৯), and Divine Comedy (২০০৯) নামে ছোট গল্পের সঙ্কলন বের হয় ৷ বর্তমান সময়ে অস্ট্রিয়ার ভিয়েনায় একজন রাইটার-ইন-রেসিডেন্স হিসেবে আছেন ৷

মূল রচনাটির নাম “Bis holodu”, যা গল্পগ্রন্থ Hovoryty (2007; To speak) থেকে নেওয়া ৷ ইংরেজি ভাষান্তর মাইকেল এম নেইডান ৷


তানিয়া মালিয়ারচকের সর্বশেষ উপন্যাস- বায়োগ্রাফি রেনডম ওয়োন্ডার্সের প্রচ্ছদ ৷

১৮ ই আগস্ট, ২০১৪ রাত ১০:১৬

জাহাঙ্গীর.আলম বলেছেন:
কয়দিনের সময়ের ফারাকে রইলাম ৷ পাঠককে যারপর নাই অগ্রিম কৃতজ্ঞতা ৷

২| ১৭ ই আগস্ট, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:৩২

মামুন রশিদ বলেছেন: ঘোরগ্রস্ত হয়ে পড়লাম । অসাধারণ গল্প । চমৎকার অনুবাদ ।

১৮ ই আগস্ট, ২০১৪ রাত ১০:১৪

জাহাঙ্গীর.আলম বলেছেন:
প্রাণবন্ত মন্তব্য ও পাঠে ধন্যবাদ জানাই আপনাকে ৷

৩| ১৭ ই আগস্ট, ২০১৪ রাত ১০:৩৪

মাসুম আহমদ ১৪ বলেছেন: এক দমে পড়লাম। দারুণ লাগলো দাদীমা'র গপ!

১৮ ই আগস্ট, ২০১৪ রাত ১০:১৩

জাহাঙ্গীর.আলম বলেছেন:
বেশ ভাল লাগল আপনার মন্তব্যে ৷

ভাল থাকবেন মাসুম ভাই ৷

৪| ১৭ ই আগস্ট, ২০১৪ রাত ১১:৩৫

কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:


খুবই উন্নতমানের অনুবাদ হয়েছে। মনে হয়নি অনুবাদ।

++++++ এমন আরও চাই।

১৮ ই আগস্ট, ২০১৪ রাত ১০:১২

জাহাঙ্গীর.আলম বলেছেন:

পাঠ করছেন আবার উৎসাহব্যঞ্জক মন্তব্য দানে অনেক ধন্যবাদ রইল আপনাকে ৷

৫| ১৮ ই আগস্ট, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:৫০

জুলিয়ান সিদ্দিকী বলেছেন: সাধু সাধু ! চমৎকার কাজ। রাতেরবেলা আরেকবার পড়বো। :)

তবে কোনো কোনো বাক্য বিন্যাসে ত্রুটি রয়ে গেছে, আবার মধ্যবর্তি বক্তব্য মিসিং মনে হয়েছে।

যেমন-

যখন কোন কষ্টের কাহিনী শুনি তখন নিজে থেকেই কান্নার জল গড়িয়ে পড়ে

এখানে বলা যেতো না কি যে, কোনো কষ্টের কাহিনী শুনলেই আমার কান্না পায়।

অন্যের ভালবাসার গল্পগুলো আমায় বেশ আবেগময় করে তুলে যেটা আমায় করে না কারণ হয়ত আমি কাউকে গভীর ভাবে ভালবাসিনি ৷

অন্যের ভালবাসার গল্পগুলো আমায় বেশ আবেগময় করে[ তুলে যেটা আমায় করে না{ তুললেও নিজের ভালোবাসার ব্যাপারে বা নিজের ক্ষেত্রে তেমন একটা বুঝতে পারি না।} কারণ হয়ত আমি কাউকে গভীর ভাবে ভালবাসিনি ৷]

দাদিমাকে তার সৎমায়ের ছোট বাচ্চাকে দেখাশোনা করতে হতো ৷

এখানে খানিকটা অস্পষ্টতা আবার বক্তব্যের তারল্য ঘটেছে যেন। যদি বলা হতো > দাদিমা তার সৎভাই/বোনকে দেখাশুনা করতে হতো।
অথবা
সৎভাই/বোনকে দেখাশুনার দায়িত্ব ছিল দাদিমার।

এমন ব্যাপারগুলো খেয়াল রাখলে আরো প্রাঞ্জলতা আসবে। যেহেতু আমার মনে হয় ইংরেজিতে আপনার যতটা দক্ষতা বাংলা সিন্টেক্সে অমনোযোগ ভালো রকমই আছে। এতে আবার কিছু মনে করবেন না যেন। খুব কাছের মানুষ মনে করি বলেই বলতে সাহস পাই।

ভালো থাকুন আর চলতে থাকুক এই চর্চা।

১৮ ই আগস্ট, ২০১৪ রাত ১০:১০

জাহাঙ্গীর.আলম বলেছেন:
পাঠে ও মন্তব্যে অশেষ কৃতজ্ঞতা জানবেন ৷

ব্লগে লেখা উপস্থাপনের অন্যতম কারণ কিন্তু আলোচনা থেকে শিখা যা এক বিশাল প্লাটফর্ম ৷ সাথে নানান দৃষ্টিকোণ থেকে দেখা যা নিজ চোখে বা পাঠে ঘাটতি থাকবে ৷ এডিট করার সম্ভাবণা সবসময়ই থাকছে ৷ আসলে যেকোন লেখা অনুবাদের ক্ষেত্রে আমার কাছে উক্ত লেখকের শুধু একটি নয় সম্ভব হলে আরো কিছু পাঠ হয় প্রাপ্তি সাপেক্ষে ৷ ফলে লেখকের মেরিট বা তার লেখার ধরণ বা স্টাইল বোঝার চেষ্টা চলে অনেকভাবেই কিছুদিন ৷ দক্ষিণ ও পূর্ব ইউরোপ ও প্রাক্তণ রাশিয়ার ইদানিং কালের কিছু লেখা পড়ার ইচ্ছা ছিল দীর্ঘদিন যাবৎ ৷ কারণ সেই আদি ফরমেট থেকে এখন কি কি নিরীক্ষা হচ্ছে জানার আগ্রহ সেজন্যই অনেক লেখা পড়া হচ্ছে প্রায়শঃ ৷ এই জাদু বাস্তবতা ও অস্তিত্ববাদী গল্পে কথক কিন্তু কাউকে বা কোন দর্শককে গল্প শোনাচ্ছেন যা আবার উত্তমপুরুষে নয় একবার নিজ ভাষ্যে আবার দাদিমার ভাষ্যে ৷ সেটাই অন্যতম বৈশিষ্ট্য এ লেখার ৷ অনেকটা রূপকথা স্টাইল মনে হলেও অনেক গভীরতা আছে মনে হয় লেখাটিতে ৷ এই স্টাইলকেই ধরার চেষ্টা কিন্তু ইংরেজির কাছাকাছি নয় অনেকটাই মূল ভাষাকে ভাবানুবাদের প্রচেষ্টা ৷ মূল ভাষার আঙ্গিককে ফোঁটাতে চেয়েছি ব্যর্থতা সে জন্য হয়ত ৷ একেবারে বাংলায় আনলে হয়ত লেখকের স্টাইল ধরতে পারতাম না ৷ সেজন্য বলে অনুবাদে যা বাদ পড়ে তাই মূল বা নিখাদ রস ৷ পাঠকের জন্যই বাক্যগুলো বড় না করে কিঞ্চিৎ ছোট ছোট করার প্রয়াস ছিল ৷ যদিও কিছু অভাব রয়ে গেছে ৷ অনেক লেখা অনেকদিন ড্রাফটে ছিল ছাড়ার আগ মুহূর্তে শেষবারের দেখার কমতি ছিল নিজের সময়াভাবে ৷ সেটা আসলে সঠিক নয় ৷ আপনার মন্তব্যকৃত লাইনসহ আবারো পাঠ ও সংশোধন করার প্রচেষ্টা থাকবে ৷ বাংলা বাক্য বিন্যাসের জন্যই হয়ত বড় লেখা বা মৌলিক লেখা হচ্ছে না নিজের অক্ষমতায় ৷ প্রতিনিয়ত শিখছি আপনাদের মত সবার লেখা পাঠে ৷ থিম থাকলেও গুছিয়ে লেখা বেশ কষ্টসাধ্য হচ্ছে ৷

আবারো পাঠ প্রতিক্রিয়ায় ধন্যবাদ জানবেন ৷ ভাল থাকবেন প্রতিক্ষণ ৷

৬| ১৯ শে আগস্ট, ২০১৪ রাত ১২:২৮

পার্থ তালুকদার বলেছেন: খুবই ভাল লাগল । একটু অন্যরকম অনুভুতি টের পেয়েছি ।

২০ শে আগস্ট, ২০১৪ দুপুর ১:১৯

জাহাঙ্গীর.আলম বলেছেন:
পাঠে ও মন্তব্যে ধন্যবাদ রইল ৷

'অন্যরকম অনুভুতি' এই বোধ টুকু ফোঁটানোর প্রচেষ্টা ছিল ৷


ভাল থাকবেন ৷

৭| ১৯ শে আগস্ট, ২০১৪ রাত ১২:৩৯

আপেক্ষিক বলেছেন: অনুবাদ ভাল লেগেছে । দাদিমার সাথে তার সময়ে হারিয়ে গেলাম যেন। শুভকামনা। :)

২০ শে আগস্ট, ২০১৪ দুপুর ১:২২

জাহাঙ্গীর.আলম বলেছেন:
স্বাগত ৷


পাঠে ও মন্তব্যে কৃতজ্ঞতা জানবেন ৷ ভাল থাকুন ৷

৮| ১৯ শে আগস্ট, ২০১৪ দুপুর ২:৫৮

হাসান মাহবুব বলেছেন: গল্পে ভালো লাগা রইলো। তবে অনুবাদ পুরোপুরি সাবলীল লাগে নি সব জায়গায়।

২১ শে আগস্ট, ২০১৪ দুপুর ১২:০৫

জাহাঙ্গীর.আলম বলেছেন:
যথেষ্ট সময় দেওয়া হয়নি ৷ হয়ত তাড়াহুড়োও ছিল ৷ সেজন্য আবার কিছুটা এডিট করা হল ৷ অনেক কিছু শিখার বাকি ব্লগিং মিথস্ক্রিয়া সেজন্য উপভোগ্য ৷ পাঠে ও মন্তব্যে আবারো অনেক কৃতজ্ঞতা জানবেন ৷

ভাল থাকুন ৷

৯| ২০ শে আগস্ট, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:৪৯

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: অসাধারণ গল্প। আরও কয়েকবার এডিট করলে আরও অনেক সাবলীল হবে বলে আমার বিশ্বাস।

দাদিমা মারা যাওয়ার আগে দাদিমা আমাকে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ করেছিলেন তার বিছানায় ঘুমাতে ৷ তারপর থেকে তার বিছানায় আমি ঘুমাতে লাগলাম ৷
দাদিমা মারা গেলেন। কিন্তু এর পরের প্যারায় আবার তাদেরকে শিমের বীচি তুলতে দেখা গেলো। এখানে একটু পরিমার্জনের দরকার আছে কিনা ভেবে দেখুন।


***

ভালবাসার গল্পগুলো শুনতে আমার বেশ ভাল লাগে ৷ আবেগী গল্প ৷ যখন দু’জন একে অপরকে ভালবাসে আর তখনই ভিতর থেকেই পরস্পরকে পাবার তীব্র আকাঙ্ক্ষা জাগ্রত হয়৷


এর পরের প্যারায় দেখিঃ


অন্যের ভালবাসার গল্পগুলো আমায় বেশ আবেগময় করে তুলে না ৷ কারণ হয়ত আমি কাউকে গভীর ভাবে ভালবাসিনি৷


এখানে কি কথাগুলো পালটে গেলো না? আবার দেখতে পারেন।

**

অনেক ভালো লাগলো। শুভকামনা।


২১ শে আগস্ট, ২০১৪ দুপুর ১২:০৫

জাহাঙ্গীর.আলম বলেছেন:
কিছু জায়গায় সম্পাদনা করা হল ৷ পেছনে আরো সময় দেওয়া দরকার ছিল ৷ কিছু দ্যোদনা মূল গল্পে ছিল তা রেখে আবার মূল লেখকের শৈলীকে ধরে রাখতে চেয়েছি নিজেকে উহ্য রেখে ৷ আদতে তাঁরই গল্প বা কৃতিত্ব ৷ মন্তব্যে অনেক কৃতজ্ঞতা জানবেন ৷

ভাল থাকবেন ৷

১০| ২৩ শে আগস্ট, ২০১৪ বিকাল ৪:০১

শেখ আমিনুল ইসলাম বলেছেন: অনুবাদ গল্প পেলে খুব আগ্রহ নিয়ে পড়ি আমি। তাই একটু সময় নিয়ে পড়লাম। অনেক চমতকার অনুবাদ করেছেন। শুভেচ্ছা।

২৪ শে আগস্ট, ২০১৪ সকাল ১১:৫০

জাহাঙ্গীর.আলম বলেছেন:
স্বাগত গুণী ৷


পাঠে ও মন্তব্যে ধন্যবাদ রইল ৷

আরো খানিকটা সম্পাদনার হয়ত দরকার ৷

১১| ২৪ শে আগস্ট, ২০১৪ সকাল ১১:৫৭

বৃতি বলেছেন: ভালো লাগলো গল্প ও এর অনুবাদ। শুভেচ্ছা জানবেন।

২৫ শে আগস্ট, ২০১৪ সকাল ৮:১৪

জাহাঙ্গীর.আলম বলেছেন:
পাঠ ও মন্তব্যে অনেক কৃতজ্ঞতা রইল ৷

ভাল থাকবেন ৷

১২| ২৫ শে আগস্ট, ২০১৪ রাত ১১:১৯

প্রবাসী পাঠক বলেছেন: অসাধারণ একটি গল্প। অনুবাদ ভালো হয়েছে।

অনেক অনেক ধন্যবাদ জাহাঙ্গীর ভাই এমন চমৎকার একটি গল্প এবং লেখকের সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়ার জন্য।

৩১ শে আগস্ট, ২০১৪ সকাল ১০:১০

জাহাঙ্গীর.আলম বলেছেন:

গল্পটা অসাধারণ হলেও আমার লেখায় কিছুটা অপূর্ণতা আছে ৷ আবার পরিমার্জন করার ইচ্ছা আছে প্রবাসী ভাই ৷

ভাল থাকবেন ৷

১৩| ০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৫:২৬

ডি মুন বলেছেন: যখন দু’জন একে অপরকে ভালবাসে আর তখনই ভিতর থেকেই পরস্পরকে পাবার তীব্র আকাঙ্ক্ষা জাগ্রত হয় ৷ কিন্তু আমার ভাল লাগে দু’জন প্রেমিক-প্রেমিকা সারাজীবন ধরে আলাদা থাকা আর তাদের মৃত্যুও হয় পৃথকভাবে ৷ যদিও একে অপরকে কখনই ভুলেনা ৷

আমি বললাম, ‘দাদিমা, এভাবে ভাবা আসলে সঠিক নয় ৷ তুমি কি ভয় পাওনা তুমি মারা যাবে আর তোমার হাড়গুলো মিশে যাবে. তাই সব ?’
‘সেখানে ভয় পাওয়ার কি আছে ? এভাবেই সব ঘটে থাকে ৷’
‘তাহলে কেন এই বেঁচে থাকা ? যদি এরপরই কিছু না থাকে !’


সেই চিরকালীন দ্বন্দ্ব। যে সত্য কখনো জানা যায় না। বিশ্বাস আর অবিশ্বাসের দোলাচলে কেটে যায় মানব জীবন।


গল্পটা চমৎকার। অনুবাদ ভালো হয়েছে। অনেক পরামর্শ এরই মধ্যে চলে এসেছে বলে আমি আর কিছুই লিখছি না।

শুধু জানিয়ে রাখি। আপনার অনুবাদ প্রচেষ্টা প্রশংসা পাবার যোগ্য। অব্যাহত থাকুক এই উদ্যোগ। শুভকামনা রইলো।

০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ সকাল ১০:২৫

জাহাঙ্গীর.আলম বলেছেন:

খানিকটা পরিমার্জন করা হয়েছে আরো কিছু করা হবে আশা করি ৷

পাঠে ও মন্তব্যে অনেক কৃতজ্ঞতা জানবেন ৷ মঙ্গল হোক ৷

১৪| ০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:২২

শ্রাবণধারা বলেছেন: অতি চমৎকার গল্প এবং বেশ ভাল অনুবাদ।

ব্লগে খুব বেশী অনুবাদ গল্প দেখতে পাই না। বিশেয করে একেবারে নতুন যারা লেখালেখি করছেন, তাদের লেখা একদম পড়াই হয়নি বলতে গেলে।

আপনার এই প্রচেষ্টার জন্য অনেক অনেক সাধুবাদ আর শুভকামনা।

১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ১২:০৯

জাহাঙ্গীর.আলম বলেছেন:
স্বাগত ৷

প্রচেষ্টা থাকবে সাধ্য ও সামর্থ সাপেক্ষে ৷ মন্তব্যে অনেক ধন্যবাদ ৷

১৫| ০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৩:২১

প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: চমৎকার কাজ।

তানিয়া মালিয়ারচকের উপন্যাস হাতে পেলেও শেষ করা হয়নি। তার গল্প পড়ে ভাল লাগল অনেক। লেখক সম্পর্কে সংক্ষেপে একটা পরিচিতি দিয়ে পাঠকের জন্য উপকার হয়েছে, আগ্রহীরা পড়তে পারবেন আরও।

লেখায় মনস্তাত্ত্বিক বিশ্লেষণ কম, ছোটগল্প বলেই হয়ত। শেষটা ভাল লেগেছে। একটা ধোঁয়াশে সমাপ্তি।

অনেক শুভেচ্ছা রইল প্রিয় জাহাঙ্গীর। আরও অনুবাদ পাব- এই আশায় রইলাম।

১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ১২:২৩

জাহাঙ্গীর.আলম বলেছেন:

পাঠে ও মন্তব্যে কৃতজ্ঞতা রইল ৷

ইদানংকালের সোভিয়েত পরবর্তী নতুনদের লেখার প্রতি আগ্রহ অনেকদিনের ৷

তবে আমার মনে হয় লেখিকার বা কথকের ভাষ্যে নিজের কোন কথা নেই পুরোটাই আদতে দাদিমার কথাই ৷ এই ম্যাজিকাল স্মৃতির রূপান্তরটাই মনস্তাত্বিক একটা স্টেপ যা মূলত যুগ যুগ ধরে বহমান থাকবে ৷ এখানেই দাদিমা স্বার্থক ৷ শেষটাও কিন্তু সেই দাদিমাই ৷

সামর্থ ও জীবনের ফাকে থাকবে প্রচেষ্টা সতত ৷ বাকিটা মহাকাল স্বাক্ষী ৷


প্রথম খসড়া থেকে কিছু পরিমার্জন এসেছে পরে আরো করার ইচ্ছা আছে ৷

শুভকামনায়....

১৬| ২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৪:৫৪

অন্ধবিন্দু বলেছেন:
জাহাঙ্গীর আলম,

লেখিকা জানলে খুশিই হতেন। তাঁর গদ্য রচনায় যে মিষ্টি নরম কোমল একটা টোন রয়েছে আপনি যথাযথই ছুঁতে পেরেছেন। পাঠে তৃপ্তি পেলুম। ব্যাকরণ প্রকরণে আরও মনোযগী হওয়া চাই যদি লেখালেখিকে সত্যিকার অর্থেই হাতিয়ারের কাঠামো দিতে চান। তবে ব্লগ পর্যন্ত সীমাবদ্ধ রাখতে চাইলে অতো সাবধানতার প্রয়োজনে নেই, ইচ্ছেখাতা বলে কথা ....

ভালো থাকবেন।

২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৪ দুপুর ২:০৪

জাহাঙ্গীর.আলম বলেছেন:
যথার্থ বলেছেন ৷ সময়াভাবে কিঞ্চিৎ বাক্য বিচ্যুতি ঘটেছে ৷ আবারো সংশোধনে প্রচেষ্টা থাকবে ৷ ব্লগে এডিট বিশাল সুবিধা ৷

আর সময়ই বলবে কতটা পথ দেখা যায় ৷

ইচ্ছেখাতা আবার বাষ্পখাতা না হয়ে উড়ে যাক ৷

ব্লগের পুরোনো এক লেখা পড়ে দেখতে পারেন ৷ একরামুল হক শামীমের ব্লগের সাহিত্য ও ব্লগ সাহিত্য Click This Link

ফেলনা নয় কিছুই ৷ ভাল থাকুন ৷

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.