যাযাবর রাজার ভিতরের কথাগুলি

২৮ শে নভেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১২:২৫

ব্যস্ত শহরে যান্ত্রিক মানুষ হিসেবে আর কতদিন বাচতে হবে আমাকে? আর কতদিন রুটিনবাধা জিবনের দাসত্ব করে যেতে হবে আমার? আজিবন রুটিনের বাইরে চলা আমি জীবনের প্রয়োজনে আজ আবেগবিহিন, বিবেকবিহিন কংক্রিটে মোড়ানো এই রাজধানীতে আজীবন সাজা প্রাপ্ত আসামী হয়ে দিন কাটাচ্ছি। বিরতিহীন ম্যারাথন দৌড়ে লিপ্ত সময়ের সাথে তাল মেলাতে মেলাতে মাঝে মাঝে হাসফাস করে ওঠে আমার ভিতরের আমিটা। সবকিছু বিষাধময় লাগে তখন। মনে হয় ৯টা ৫টার এই জঘন্য জীবনটাকে এই শহরের মুখের উপর ছুড়ে দিয়ে চলে যাই দুরে কোথাও। যেখানে আমাকে ছুতে পারবেনা এই ৯টা ৫টার হাত, আমাকে বাধতে পারবেনা কোনো রুটিন। যেখানে জীবন মানেই এলোমেলো, যা খুশি তাই। যেখানে ইচ্ছেমতো ঘুমানো যাবে সকালে, যেখানে নিশাচর হতে বাধ সাধবেনা কেউ। যেখানে সকাল ৭:৩০ এ এ্যলারর্মের শব্দে হুড় মুড় করে জেগে উঠতে হবেনা কখনো। যেখানে ঘুম থেকে জেগে সিগারেটের ধোয়াতে ধুমায়িত করা যাবে দিন গুলিকে। যেখানে বসে আমি আজীবন লিরিক লিখে যেতে পারবো, কবিতার সাগরে হাবুডুবু খেতে পারবো। কেউ আমক বাধা দেবে না। আমি সেখানে যেতে চাই। আমার আর ভাল লাগেনা এই হিসেবি শহরটাকে। এই শহর এতটুকু ছাড় দেয়না আমাকে। সারা বেলা তাড়িয়ে বেড়ায় সে আমাকে।আমি উদভ্রান্তের মত দৌড়াই তার হাত থেকে বাচতে। এখানকার মানুষগুলো যেন কেমন! এখানে কেউ কারো দিকে চায় না। সবাই যার যার মতো করে চলে। এক একটা যেন ভিন গ্রহের বাসিন্দা। এখানে কেউ এলোমেলো হতে চায়না। পান থেকে চুন খসলে না জানি কি হয়ে গেছে ভেবে মরে যায় সবাই।আমি কিছুতে মানাতে পারছিনা এদের সাথে। যতই দিন বাড়ছে ততই বিষে বিষে নিল হয়ে যাচ্ছি আমি।আমি জানিনা এভাবে কতটা পথ হেটে যেতে হবে আমাকে। হয়তো সমস্ত জীবন। এভাবে হাটতে হাটতে আমার ভিতরের আমিটা হয়তো একদিন মরে যাবে। সেখানে দখল নেবে হয়তো কোনো এক যন্ত্র মন। যার কোনো স্বপ্ন থাকবেনা, যার কোনো আকাংখা থাকবেনা। যে সাংসারিক হিসেব নিকেষ করেই শেষ করে দিন। যার থাকবেনা কোনো সত্বা, যার থাকবেনা নিজের মতো করে কিছু করার ভাবনা। যে হবে খুবই শীতল, খুবই আবেগ ত্যাগী কেউ। যার জীবন হবে খুব ছোট, খুব সংকীর্ণ। যা আমি হতে চাইনা কখনো। তবুও আমাকে তা হতে হবে। তবুও তা আমাকে মেনে নিয়ে বয়ে বেড়াতে হবে প্রানস্পন্দন হীন এক জীবন।যে জীবন হবেনা ফড়ইং এর,যে জীবন হবেনা শালিকের,যে জীবন হবে মৃত লাশের,যে জীবন হবে নমে মাত্র বেচে থাকার।

২ টি +১/-০