![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আপনি ফার্মেসিতে গিয়ে বললেন, আমাকে একপাতা NAPA extra দিন, ফার্মেসীম্যান দিয়ে দিলেন। আবার Amoxicillin ৫০০ মি.গ্রা. চাইলেন, ফার্মেসীম্যান দিয়ে দিলেন আপনাকে। কোন প্রশ্ন করলেন না সে, কোন ডাক্তারি প্রিসক্রিপশন দেখতে চাইলেন না। আপনি চাইলেন, আর সে দিয়ে দিলেন। এরকম ঘটনা আমাদের বাংলাদেশের জন্য খুবই সাধারন একটা ব্যাপার। দুই এক ধরনের ওষুধ ছাড়া আপনি ফার্মেসি বা ওষুধের দোকানে গিয়ে নিজের ইচ্ছে মত যেকোন ধরনের ওষুধ কিনতে পারবেন কোন প্রিসক্রিপসন ছাড়া। দেখা যায়, ডাক্তারি প্রিসক্রিপসন ছাড়া ঘুমের ওষুধ কেউ সহজে দিতে চাইবে না, কিন্তু প্রিসক্রিপশন ছাড়া Paracitamol বা Antibiotic জাতীয় ওষুধ চাইলেন, ফার্মেসীম্যান দিতে বিন্দু মাত্র অনিচ্ছা প্রকাশ করলেন না। বরং মহা স্বস্থিতে তা দিয়ে দিলেন। এর কারন, ঘুমের ওষুধের মাধ্যমে হঠাৎ করে যেকোন ধরনের দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে, কিন্তু প্যারাসিটাম বা এন্টিবায়োটিক জাতীয় ওষুধের ক্ষেত্রে সাথে সাথে এরকম কিছু হওয়ার সম্ভাবনা নেই। এর একারনেই আমাদের দেশে ওষুধের এরকম অবাধ বাণিজ্য। সরকার এ ক্ষেত্রে নজর দেয়ার কোন প্রয়োজনীয়তা অনুভব করে না। অথচ আমরা প্রতিদিনের জীবনে যত ধরনের ওষুধ ব্যবহার করি না কেন, তাদের প্রত্যেকটিতে কোন না কোন দিক দিয়ে পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া রয়েছে। যেমন প্যারাসিটামল জাতীয় ওষুধ বেশি ব্যবহারের ফলে কিডনি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে, ক্যালসিয়াম জাতীয় ওষুধ বেশি সেবনের ফলে শরীরের কোন অংশের হাড়ের অস্বাভাবিক বৃদ্ধি ঘটতে পারে, কিডনিতে পাথর হতে পারে। তাই ওষুধ সেবনের ক্ষেত্রে আমাদের সচেতন হওয়া দরকার। তবে বর্তমানে বিশ্বব্যাপী সবচেয়ে যে বিষয়টা নিয়ে মাথা ঘামানো হচ্ছে, তা হল Antibiotic. ডাক্তাররা অনেক মারাত্বক রোগের চিকিৎসার জন্য এন্টিবায়োটিক ওষুধের উপর ভরসা করে থাকেন। কিন্তু এই এন্টিবায়োটিকের কার্যকারীতা খুব দ্রুত নষ্ট হয়ে যাচ্ছে বলে বিজ্ঞানীরা মনে করছেন। এমনকি, একসময়ের বহুল প্রচলিত এন্টিবায়োটিক ওষুধগুলো এখন কাজ করে না। ডাক্তাররা তাই উচ্চ ক্ষমতার এন্টিবায়োটিক ব্যবহার করছেন, কিন্তু সবার ক্ষেত্রে তা ভাল কাজে দিচ্ছে না। বিজ্ঞানীদের ধারনা, কোন একসময় এন্টিবায়োটিকগুলো মোটেও কাজ করবে না, আর তার ফলে অনেক মানুষের প্রান হারাতে থাকতে হবে বিকল্প চিকিৎসা আবিস্কার হওয়া পর্যন্ত। ইন্টারনেট ঘেটে জানতে পারলাম, The centre for the disease control এর হিসাব অনুযায়ী, এক বা একাধিক এন্টিবায়োটিকের কার্যকারীতা হারানোর কারনে যুক্তরাষ্ট্রে প্রতিবছর প্রায় ২০ লক্ষ মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। সেখানে একই কারনে প্রতিবছর ২৩০০০ এরও বেশি মানুষ মারা যাচ্ছেন। ভারতের অবস্থা আরো ভয়াবহ। পৃথিবীর মোট এন্টিবায়োটিকের ৪০ শতাংশ ভারতীয় উপমহাদেশে উৎপন্ন হয়ে থাকে। আর সেখানে এন্টিবায়োটিকের কার্যকারীতা হারাবার ফলে প্রতিবছর প্রায় ৫৪০০০ জন শিশু মারা যায়। The rand corporation এর একটি গবেষনায় উঠে এসেছে, ২০৫০ সালে প্রায় ১ কোটি মানুষ মারা যাবে শুধু মাত্র এন্টিবায়োটিকের কার্যকারীতা নষ্ট হয়ে যাবার কারনে। আর মৃত্যর এই হার ক্যান্সারকেও ছাড়িয়ে যাবে। আবিষ্কারঃ ১৯২৮ সালে স্যার আলেকজান্ডার ফ্লেমিং Penicilium notutum ছত্রাকের মধ্যে benzylpenicililin[/
sb] নামক এন্টিবায়োটিক আবিস্কার করেন, যার জন্য তিনি ১৯৪৫ সালে চিকিৎসাশাস্ত্রে নোবেল পুরস্কার পেয়েছিলেন। আবিস্কারের পর থেকে এন্টিবায়োটিকের ব্যাপক ব্যাবহার শুরু হয়ে যেতে থাকে পৃথিবী জুড়ে। এবং এর ফলে অনেক মানুষের প্রান রক্ষা পাচ্ছে। এবার আসি এন্টিবায়োটিকের কার্যকারীতা হারানোর কারন প্রসঙ্গেঃ আমাদের যাদের জৈব বিবর্তন সম্পর্কে ধারনা আছে, তারা হয়ত Mutation বা অভিযোজন শব্দটার সাথে পরিচিত। এন্টিবায়োটিকের কার্যকারীতা নষ্ট হওয়ার পেছনে এই মিউটেশনই দায়ী। মিউটেশনের মাধ্যমে রোগজীবাণুরা এমন ভাবে বৃদ্ধিপ্রাপ্ত (বা বিবর্তিত) হয় যে তাদের প্রতি এন্টিবায়োটিকগুল ো কার্যকারীতা হারাতে থাকে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, এই মিউটেশন আসলে কি? আমি এখানে আমার নিজের মত করে আপনাদের বোঝাতে চেষ্টা করি উদাহরনের মাধ্যমে; কেননা এর বৈজ্ঞানিক সংজ্ঞা দিতে গেলে জটিল বলে মনে হতে পারে। ধরুন, আপনার একটা মুরগী আছে। মুরগীটি মোট পঁচিশটা বাচ্চা দিল। বাচ্চাগুলোকে পেলে পুশে বড় করলেন। বড় করার পর সেগুলোকে একটু ভাল করে পর্যবেক্ষন করুন। দেখবেন, কোনটা লাল হয়েছে, কোনটা কালো হয়েছে, কোনটা সাদা হয়েছে আবার কোনটা মিশ্র রঙের হয়েছে। অর্থাৎ প্রত্যেকের গায়ের নকশা আলাদা আলাদা। আবার কোন মুরগী একটু বড়, কোনটা ছোট আবার কোনটা মাঝারী। তেমনি কোন কোন মুরগী থাকে শক্তিশালী, খুব দ্রুত দৌড়াতে পারে, ভাল উড়তে পারে। আবার কোন কোন মুরগী থাকে দুর্বল, না পারে ভাল দৌড়াতে না পারে ভাল উড়তে। এভাবে মুরগীগুলোর মধ্যে বিভিন্ন বৈচিত্র্য দেখা যায়। আর এই প্রানীর মধ্যে এমন বৈচিত্র তৈরি হওয়াকেই বলে প্রানীর মিউটেশন বা অভিযোজন। এখন ধরুন, আপনার এলাকায় হঠাৎ করে মুরগীদের উপর খাটাশের (বনবিড়াল) আক্রমণ শুরু হয়ে গেল। খাটাশগুলো একটার পর একটা মুরগী ধরে ধরে খাচ্ছে প্রতিদিন, কিছুই করতে পারছেন। এখন প্রশ্ন হল, কোন বৈশিষ্ঠের মুরগীরা খাটাশের হাতে আগে ধরা পড়বে? উত্তর খুব সোজা, যারা দুর্বল, ভাল দৌড়াতে আর উড়তে পারেনা তারা। ঠিক তেমনি, কারা সবার শেষে খাটাশের হাতে ধরা পড়বে? এটার উত্তরও একই রকম, যারা ভাল শক্তিশালী, ভাল দৌড়াতে ও উড়তে পারে, তারা। খাটাশে আক্রমন করলে তারা দ্রুত পালিয়ে গিয়ে বাঁচতে পারবে। এখন এখানে আমরা কি দেখতে পেলাম? দেখলাম, আপনার যে মুরগীগুলো তুলনামূলক দুর্বল, তারাই খাটাশের হাতে আগে ধরা পড়ছে আর মারা যাচ্ছে। কিন্তু যারা তুলনামূলক শক্তিশালী তারা ধরাপড়ে সবার শেষে। কেননা তাদের ধরতে খাটাশের দারুন পরিশ্রম করতে হয়। এখন ধরুন আপনার অল্পগুলো, ২৫ টা থেকে মাত্র ৪ টা মুরগী আছে , আর বাকিরা সবাই খাটাশের পেটে চলে গেছে। নিঃসন্দেহে ওই চারটা মুরগী অন্য মুরগীদের তুলনায় শক্তিশালী আর দ্রুন্ত ছিল, তা না হয় তারা আগেই খাটাশের হাতে ধরা পড়ত। এই পরিস্থিতিতে আপনার খুব রাগ হল খাটাশের প্রতি। তাই একটা বন্দুক কিনে এনে খাটাশ নিষিদ্ধ করলেন আপনার এলাকায়। খাটাশরা ভয়ে গেল পালিয়ে, কাউকেতো গুলি করে শেষই করে দিলেন। এখন আপনার স্বপ্ন, আপনি ওই ৪ টি মুরগী দিয়ে আড়ো একশ মুরগী বানাবেন। ধরুন আপনি তা পেরেও বসলেন। এখন ওই ৪ টি মুরগী যেহেতু ছিল শক্তিশালী, তাই জেনেটিক নিয়মে তাদের বাচ্চাকাচ্চারাও হবে শক্তিশালী। আর যেহেতু শক্তি বেশি থাকার কারনে ওই ৪ টি মুরগীকে খাটাশে ধরতে পারেনি, তাই তাদের বাচ্চাদেরও ধরতে কষ্ট হয়ে যাবে। কেননা বাচ্চাগুলোও তাদের মা বাবার মত শক্তি আর দুরন্তপনা নিয়ে বেড়ে উঠেছে। এই অবস্থায় ধরুন আপনার বন্দুকটা চুরি হয়ে গেল যে খবর পৌছে গেল পালিয়ে যাওয়া খাটাশদের কানে। তাই এই সুযোগে খাটাশরা আবার আসল আপনার এলাকায়। হানা দিতে লাগল আপনার মুরগীর উপর। কিন্তু খাটাশরাতো অবাক, কি ব্যাপার মুরগীগুলোকে ধরা যায় না কেন সহজে, আগেতো এমন ছিল না। যা ধরা পড়ে তাতে খাটাশের পেট চলে না। তাই খাটাশেরা মনের দুঃখে এলাকা ছেড়ে পালালো। ---- এই হল আমার গল্প। এখন এই গল্পের মাধ্যমে এন্টিবায়োটিকের কার্যকারীতা হারানোর কারন ব্যাখ্যা করা যাক। মিউটেশনের নিয়ম অনুযায়ী, যখন কতগুলো ব্যাকটেরিয়া আপনার শরীরে জন্মাবে তখন তাদের মধ্যে নানা বৈচিত্র দেখা যাবে; কোন কোন ব্যাকটেরিয়া হবে শক্তিশালী আবার কোনটা দুর্বল। এবার ধরুন, আপনি যে মুরগীগুলো পুশতেন, সেগুলো হল আপনার শরীরের ব্যাকটেরিয়া। আর খাটাশ হল এন্টিবায়োটিক। এখন আপনি যখন আপনার শরীরে এন্টিবায়োটিক প্রবেশ করাচ্ছেন, তারা ব্যাকটেরিয়াগুলোকে ধরে ধরে খেতে শুরু করল। আর মুরগীর মতই তাদের হাতে তুলনামূলক দুর্বল ব্যাকটেরিয়াগুলো আগে ধরা পড়ছে। আর শক্তিশালিদের ধরতে কষ্ট হয়ে যায় তাদের, তাই তারা ধরা পড়ে সবার শেষে। তাদের ধরতে কষ্ট হয়ে যায় এন্টিবায়োটিক নামক খাটাশের। এখন ধরুন শক্তিশালী কিছু ব্যাকটেরিয়া বেঁচে থাকতেই, এন্টিবায়োটিক শরীরে প্রবেশ করানো অর্থাৎ খওয়া বন্ধ করে দিলেন। তাহলে কি ঘটবে, যে ব্যাকটেরিয়াগুলো বেঁচে আছে, তুলনামূলক শক্তিশালী হওয়ায় যারা এন্টিবায়োটিকের হাতে মারা যায়নি, তারা আপনার ওই চারটি মরগীর মতই বংশ বৃদ্ধি করে আপনার শরীরে শক্তিশালী একটা ভিত্তি গড়ে ফেলবে। এখন আপনি আবার এন্টিবায়োটিক খাওয়া শুরু করলেন, কিন্তু সে এন্টিবায়োটিক এখন আর আগের মত কাজ করতে পারেনা। কারন যে ব্যাকটেরিয়াগুলো আপনার শরীরে বংশ বৃদ্ধি করেছে, তারা এখন অনেক শক্তিশালী। তাই তাদের ধ্বংস করার জন্য আরো বেশি শক্তিশালী এন্টিবায়োটিক প্রয়োজন। কিন্তু আপনি সেটা পাবেন কোথায়? বিজ্ঞানীরাত
ো শক্তিশালী এন্টিবায়োটিক তৈরি করতে করতে ক্লান্ত! আর কত! আপনি এন্টিবায়োটিক ঠিক মাত্রায় না নিয়ে ব্যাকটেরিয়া শক্তিশালিনী করে তুলছেন, আর তার বিরুদ্ধে নতুন নতুন এন্টিবায়োটিক আর কত আবিস্কার করবেন বিজ্ঞানীরা! আপনি হয়ত ব্যাকটেরিয়াকে এমন শক্তিশালী করে তুলবেন, যখন কোন এন্টিবায়োটিকের পক্ষে সম্ভব হবেনা তাদের ধ্বংস করা। সেদিন আর বেশি দূরে নয়! সেদিন আর বেশি দূরে নয়! কেননা, মাত্র ৮৮ বছর আগে এন্টিবায়োটিক আবিস্কার হয়েছিল, তার মধ্যে এন্টিবায়োটিক তুলনায় অনেক দুর্বল হয়ে গেছে। পুরোপুরি দুর্বল হতে আর কত দিন লাগতে পারে(!) বড়জোর ৫০ বছর (!!) কিন্তু সে পর্যন্ত আর যেতে হবেনা, কারন শক্তিশালী এন্টিবায়োটিকগুলো খেতে খেতে আমাদের অবস্থা খারাপ হয়ে যাবে। এখনই উন্নয়নশীল আর উন্নত দেশে অনেক মানুষের শরীরে এন্টিবায়োটিক ক্রিয়া করে না বলে আলেকজান্ডার ফ্লেমিং এর সময়ের মত ব্যাকরিয়া জনিত অনেক রোগে আক্রান্ত হয়ে অনেক মানুষ মারা যাচ্ছে। অথচ এন্টিবায়োটিকের ভরসায় সে রোগের চিকিৎসা দু দিন আগেও ছিল পানির মত সহজ। বিজ্ঞানীরা চেষ্টা করছেন, এই অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে এন্টিবায়োটিকের বিকল্প চিকিৎসা আবিস্কারের জন্য। তা হয়ত একদিন ঠিকই সম্ভব হবে, কিন্তু তত দিনে যে বিশাল ক্ষতির মধ্যে দিয়ে আমাদের যেতে হবে, তার সমাধান কে দিবে! আমাদেরই দিতে হবে নাকি! কিভাবে, তা আলোচনা করব তার আগে জেনে নেয়া যাক এন্টিবায়োটিকের কাজের পরিধি। এন্টিবায়োটিকের কাজের পরিধিঃ আমাদের চারপাশের পরিবেশে অনেক ধরনের অনুজীব রয়েছে। এমনকি আমরা আমাদের শরীরে বহু রকমের অনুজীব বহন করছি। তাদের মধ্যে কোন কোন অনুজীব আমাদের শরীরে রোগ সৃষ্টি করে আবার অনেক অনুজীব আমাদের উপকার করে। অনুজীবের মধ্যে রয়েছে- ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস, ছত্রাক, শৈবাল, প্রিয়ন, লাইকেন শহ আরো কিছু অনুজীব। এন্টিবায়োটিক শুধু ব্যাকটেরিয়ার উপরই ক্রিয়া করে থাকে। অনুজীব কি: অনুজীব হল এমন একধরনের জীব যাদের খালি চোখে দেখা যায় না। ব্যাকটেরিয়া, ছত্রাক, শৈবাল সাধারন মাইক্রোস্কোপ দিয়ে দেখা যায়, কিন্তু ভাইরাস দেখা যায় উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন ইলেকট্রন মাইক্রোস্কোপ দিয়ে। এখন এন্টিবায়োটিক নিয়ে একটা প্রশ্ন উঠতে পারে যে, আগের মানুষের ক্ষেত্রে অনেক স্বাধারন রোগ এমনি এমনিই ভাল হয়ে যেত অনেক ক্ষেত্রে। এখন কথায় কথায় এন্টিবায়োটিক লাগে কেন? এটার কারন হল ইমিউনিটি বা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা। আগে মানুষের ইমিউনিটি বা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি ছিল, কিন্তু বর্তমানে অতিরিক্ত ওষুধ নির্ভরতার কারনে আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে গেছে। ফলে আমরা অতি সহজেই বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকি, যার সমাধান হল এন্টিবায়োটিক সহ আরো অনেক ওষুধ। আমাদের শরীরে যখন কোন রোগ জীবাণু প্রবেশ করে, তখন আমাদের শরীর ওই জীবানুর বিরুদ্ধে এক ধরনের এন্টিবডি তৈরি করে যার মাধ্যমে ইমিউনিটি তৈরি হয়। এন্টিবডি পর্যাপ্ত তৈরি না হওয়ার ফলে ওষুধ গ্রহনের প্রয়োজন হয় অনেক ক্ষেত্রে। কিন্তু আমরা এন্টিবায়োটিকের প্রতি নির্ভর করি বলে, আমাদের শরীর কোন রোগের বিরুদ্ধে এন্টিবডি তৈরি করেনা। এখন অদূর ভবিষ্যতে এন্টিবায়োটিক ওষুধ আমাদের জন্য আরো ভয়াবহ রূপ ধারন না করে তার জন্য কি করতে হবে? ১। প্রথমেই এন্টিবায়োটিক ওষুধের কুফল সম্পর্কে সাধারন মানুষের জানাতে হবে, বোঝাতে হবে এন্টিবায়োটিক গ্রহনের ফলে আমাদের শরীরে কি প্রভাব সৃষ্টি করতে পারে। ২। ছোট খাট অসুখ, যেমন সর্দি জ্বর, ঠান্ডা জনিত কাশি হলে এন্টিবায়োটিক গ্রহন থেকে বিরত থাকতে হবে। ৩। ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া কখনই এন্টিবায়োটিক গ্রহন করা যাবেনা। ৪। এন্টিবায়োটিক সেবন করার ক্ষেত্রে সচেতন থাকতে হবে যাতে ওভার ডোজ বা মিস ডোজ না হয়ে যায়। ডাক্তারের পরামর্শ অনু্যায়ী সম্পূর্ন কোর্স সমাপ্ত করতে হবে যদি হঠাৎ করে অসুখ কমে যায় তার পরেও। ৫। যারা ওষুধ ব্যবসার সাথে জড়িত, তারা যেন অতিরিক্ত লাভের আশায় ডাক্তারের সাপোর্ট ছাড়া যেখানে সেখানে এন্টিবায়োটিক বিক্রি না করে, পাশা পাশি তাদেরও এন্টিবায়োটিক এর কুফল সম্পর্কে গভীর ধারনা থাকতে হবে। ৬। সরকারী বা বেসরকারি উদ্যোগে ডাক্তারদেরও সচেতন করতে হবে যাতে অতিরিক্ত লাভের আশায় এন্টিবায়োটিক ওষুধের মাধ্যমে মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তথা সমস্থ মানব জাতীর ভবিষ্যৎকে ক্ষতি না করেন (যদিও অধিকাংশ ডাক্তারই এই বিষয়ে সচেতন)। একজন ডাক্তারকে অবশ্যই মানবিকমূল্যবোধ সম্পন্ন ও যোগ্য হতে হবে। আর সাধারন মানুষদের একজন ভাল, যোগ্য ডাক্তারের কাছেই চিকিৎসার জন্য যেতে হবে। ৭। এন্টিবায়োটিক যাতে দেশের জন্য ক্ষতিকর না হয়, সে ব্যাপারে সরকারের সচেতন হতে হবে। আর বিজ্ঞানীদের এর কুফল সম্পর্কে সরকারী পর্যায়ে অবগত করতে হবে যাতে সরকার এন্টিবায়োটিকের ব্যবহারের ক্ষেত্রে যথাযথ ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে পারে। এভাবে আমরা যদি এন্টিবায়োটিক ব্যাবহারের ক্ষেত্রে সচেতন হয়ে উঠি, তাহলে ২০৫০ সালে পৃথবীতে ১ কোটি মানুষ এন্টিবায়োটিক অকার্যকর (Antibiotic Resistance)[/
sb] হয়ে যাওয়ার কারনে মারা যাবে বলে যে ধারনাটি করছে The Rand Corporation, তা হয়ত অনেকটাই ভুল প্রমান করতে পারব আমরা। তথ্যসূত্রঃ http://www.wikipedia.org
www.ncbi.nlm.nih.gov/pmc/articles/ PMC4637955/
২| ২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৫:২০
একটি পেন্সিল বলেছেন: খুব গুরুত্বপূর্ণ কথা বলেছেন, ধন্যবাদ।
৩| ২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৪:২৭
প্রামানিক বলেছেন: সুন্দর পোষ্ট।
©somewhere in net ltd.
১|
২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৫:১৭
সেলিম৮৩ বলেছেন: চমৎকার লেখা।
জনসচেতনার দরকার। তা না হলে একদিন সাধারণ জ্বরেরও চিকিৎসা সম্ভব হবেনা।