নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার ঘুরতে ভাল লাগে। ভাল লাগে প্রকৃতি বিজ্ঞান নিয়ে ভাবতে। ভাল লাগে নিজেকে নিজের মধ্যে হারিয়ে ফেলতে।

একটি পেন্সিল

একটি পেন্সিল › বিস্তারিত পোস্টঃ

______ সুপার বাগরা বেশি শক্তিশালী হয়ে উঠছে______

২৫ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সকাল ১১:২৮



আমাদের পরিবেশে অসংখ্য অনুজীব রয়েছে যাদের আমরা খালি চোঁখে দেখতে পাইনা। অনুজীবরা এতই ছোট যে তাদের খালি চোখে দেখাও যায় না। দেখতে হলে মাইক্রোস্কোপের সাহায্য নিতে হয়। বেশ কয়েক ধরনের অনুজীব রয়েছে আমাদের এই প্রকৃতিতে। এরা হল-ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস, শৈবাল, ছত্রাক, প্রিয়ন, ভাইরয়েড, ভাইরন সহ আরো অনেক অনুজীব। এই অনুজীবগুলোর কোন কোনটা আমাদের তথা আমাদের পরিবেশের উপকার করে থাকে, আবার কোন কোনটা করে আমাদের পরিবেশের ক্ষতি। তার মধ্যে ব্যাকটেরিয়া এমন এক প্রকার জীবানু যারা আমাদের ক্ষতির চেয়ে উপকারই বেশি করে। যেমন, ব্যাকটেরিয়া বিভিন্ন জৈব বস্তু পঁচনে সাহায্য করে। একবার চিন্তা করুন তো, আমরা যে পরিমান জৈব বস্তু প্রতিদিন ব্যবহার করি, তা যদি পঁচে মাটি না হত, তাহলে আমাদের পরিবেশের অবস্থা কেমন হত। আর মাটি না থাকলে উদ্ভিদ কোথা থেকে আসত, আর উদ্ভিদ না থাকলে আমরা খাবার কোথায় পেতাম। অর্থাৎ আমাদের জীবন ধারন সম্ভব হত না তখন! সে দিক বিবেচনা করলে, এই সুন্দর আর বৈচিত্র্যময় পৃথিবীতে ব্যাকটেরিয়ার অবদান অনেক বেশি।
তারপরেও অনেক ব্যাকটেরিয়া আছে যারা আমাদের দেহে রোগ সৃষ্টি করে থাকে এবং ঘটে প্রাণহানি। যেমন Mycobacterium tuberculosis আমাদের দেহে যক্ষা বা টি বি রোগের সৃষ্টি করে, Salmonella টাইফয়েড জ্বরের জন্য দ্বায়ী জীবানু। Vibrio cholerae কলেয়া রোগের জন্য দ্বায়ী, Clostradium tetani টেটানাস রোগের জন্য দায়ী। এরকম অসংখ্য ব্যাকটেরিয়া আছে যারা আমাদের দেহে প্রবেশ করে জীবনঘাতী রোগ সৃষ্টি করে থাকে। আমাদের দেহে যখন কোন রোগ সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়া প্রবেশ করে, তখন আমাদের দেহ ওই ব্যাকটেরিয়াগুলোকে মেরে ফেলার জন্য এক ধরনের পদার্থ সৃষ্টি করে যার নাম - Antibody. যখন ওই ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে antibody বেশি তৈরি হয়, তখন ব্যাকটেরিয়ার পরাজয় ঘটে। কিন্তু antibody কম হলে ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধি ঘটতেই থাকে আমাদের দেহে। ফলে আমাদের দেহ হয় ক্ষতিগ্রস্ত। কিছু কিছু স্বাধারন ব্যাকটেরিয়া আছে, যেমন, Shigella, E. coli. এগুলো দ্বারা ডায়েরিয়া রোগ হলে প্রাথমিক চিকিৎসা নিলেই বেশিরভাগ ক্ষেত্রে রোগ সেরে যায়। এতে তেমন কোন ওষুধ না খেলেও চলে। কারন, এসব ব্যাকটেরিয়ার বিরূদ্ধে আমাদের দেহ খুব সহজে Antibody তৈরি করতে পারে। কিন্তু কিছু কিছু ব্যাকটেরিয়া আছে যেগুলো খুব শক্তিশালী। যেমন টিটেনাস রোগের জন্য দায়ী ব্যাকটেরিয়া। এরা আমাদের দেহে প্রবেশ করলে আমাদের দেহ এর বিরুদ্ধে তেমন antibody তৈরি করতে পারেনা। ফলে টিটেনাস ব্যাকটেরিয়ারর বৃদ্ধি ঘটে টিটেনাস রোগের সৃষ্টি হয়। আর তাইতো আমাদের ওষুধের ব্যাবহারের মাধ্যমে এই রোগের চিকিৎসা নিতে হয় আমাদের।
যাইহোক আমরা ব্যাকটেরিয়া ধ্বংসের জন্য অতিরিক্ত মাত্রায় ওষুধ নির্ভর হয়ে যাচ্ছি। দেখা যায়, স্বাধারন ব্যাকটেরিয়া জনিত যে রোগগুলো কোন ওষুধ ব্যাবহার না করেই সেরে যেত, সেখানেও আমরা ওষুধ ব্যাবহার করি। এর ফলে আমাদের শরীর অতিরিক্ত ওষুধ নির্ভর হয়ে উঠছে, আর antibody তৈরিতে অলসতা করছে।
আমরা হয়ত super bug শব্দটার সাথে পরিচিত। সুপার বাগ বলতে বোঝায়, অতি জীবানু বা শক্তিশালী জীবানু। যেমন সুপার ম্যান বলতে আমরা অতিমানব বুঝি যে কিনা অনেক শক্তিশালী, তেমনি। যাইহোক, জীবানু বা ব্যাকটেরিয়াদের হত্যা করার জন্য আমরা প্রতিনিয়ত অনেক শক্তিশালী ওষুধ ব্যবহার করছি। আর ব্যাকটেরিয়ারাও বসে নেই, তারা শক্তিশালী ওশুধের বিরূদ্ধে কাজ করার জন্য নিজেদের দেহ আরো শক্তিশালী করে গড়ে তুলছে। আর যারা এভাবে ওষুধের বিরূদ্ধে নিজেদের শক্তিশালী করে গড়ে তুলছে, তাদেরই বলা হয় সুপার বাগ। যাইহোক, এই জীবানুরা যাতে আমাদের দেহে শক্তিশালী হয়ে বেড়ে না উঠতে পারে, সেজন্য ওষুধ ব্যাবহারের ক্ষেত্রে সচেতন হতে হবে। আর সবচেয়ে বেশি সতর্ক থাকতে হবে, Antibiotic ব্যাবহারের ক্ষেত্রে। Antibiotic নিয়ে আমার একটা লেখা আছে আছে, পড়ে দেখতে পারেন এই লিঙ্কে ক্লিক করে।

জীবনের জন্য ভয়াবহ হয়ে উঠছে Antibiotic. এখন থেকেই সচেতন হতে হবে আমাদের।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.