![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মাহিম ক্যাম্পাসের ক্যান্টিনে বসে ছিল। বসে বসে কে কি করছে তা দেখছে। কে কি করে তা দেখতে মাহিমের ভালোই লাগে। অনেক নতুন নতুন কিছু নজরে পড়ে।
সাঈদ এসে তার সামনে বসল। সাঈদকে একটু ব্যস্ত মনে হচ্ছিল আর মনে হচ্ছিল কিছু নিয়ে ভাবছে। মাহিম বলল কি খবর সাঈদ?
সাঈদ উত্তর না দিয়ে বলল আমাকে হেল্প কর দোস্ত। আমি অনেক বড় সমস্যায় রয়েছি, কারো সাথে শেয়ার করতে পারছি না।
মাহিম বলল কি হয়েছে খুলে বল।
সাঈদ বলল, আগে বল কারো কাছে বলবি না। শুধু তুই আর আর আমি ছাড়া কেউ যেন জানতে না পারে।
মাহিম বলল, আচ্ছা ঠিক আছে কারো কাছে বলব না।
কথাটা রাখতে হবে দোস্ত, তা না হলে আমাকে সবাই পাগল বলবে। আসলে কিভাবে বলব বুঝতে পারছিনা।
মাহিম বলল এখানে সমস্যা হলে বাহিরে অন্য কোথাও গিয়ে বসি।
সাঈদ বললে তাহলে তো ভালো হয়, চল। মাঠে গিয়ে কোন এক গাছের নিচে বসি।
সাঈদ শুরু করল, আসলে আমি একটা ভয়ঙ্কর স্বপ্ন দেখি। তন্বীকে নিয়ে।
তন্বীর নাম শুনেই মাহিমের কান লাল হয়ে উঠল। অবাক হয়ে তাকালো সাঈদের দিকে। মনে মনে ভাবল এ আবার তন্বীকে নিয়ে কি স্বপ্ন দেখে। মন চায় একে ধরে থাপড়াতে। তন্বী তাদের সাথেই পড়ে। যে কোন ছেলেই তার প্রেমে পড়তে বাধ্য। মাহিমও পছন্দ করে। কিন্তু কিভাবে বলতে তা বুঝতে পারে না। তাই বলাও হয় না।
সাঈদ বলল, প্রতি রাতেই স্বপ্ন দেখি তন্বী ক্যাম্পাসের সামনে দাঁড়িয়ে থাকে। আমি ওর সামনে যাই। এবং তাকে বলি আমি তোমাকে পছন্দ করি তন্বী। সাথে সাথেই তন্বী আমাকে একটা থাপ্পড় দেয়। এবং আমার ঘুম ভেঙ্গে যায়।
মাহিম মনে মনে খুশি হয়। জিজ্ঞেস করে এতে সমস্যার কি?
সাঈদ বলে ঘুম থেকে জাগার পর ও আমার ব্যাথা থেকে যায়। মনে হয় আমাকে সত্যি কারে তন্বী এসে মেরে যায়। আমি চারদিকে তাকাই। কিন্তু কাউকে দেখি না। গালে জ্বলতে থাকে। চিন্তা করতে করতে ঘুমিয়ে যাই। সকালে উঠে ব্রাশ করতে আয়নার সামনে গিয়ে দেখি আমার গাল লাল হয়ে আছে। এমনকি বুঝা যায় সত্যিকারে কেউ যেন আমাকে থাপ্পড় দিয়েছে।
আমি তারপরও আমার মনের ভুল মনে করছিলাম। মনে করছিলাম সব ঠিক হয়ে যাবে। কিন্তু একদিন আব্বু নাস্তা করার সময় আমাকে জিজ্ঞেস করল সাঈদ তোমার গালে কি হয়েছে? তখনই বুঝতে পারলাম সত্যি ভয়ঙ্কর কিছু ঘটছে আমার।
আমি তো আব্বুকে বলতে পারি না কি ঘটছে।
ঘুমাতে গেলে এখন আমার সমস্যা হয়। কখন এসে তন্বী আমাকে থাপ্পড় দিয়ে যায়। চিন্তা করতে করতে আমি ঘুমিয়ে পড়ি। এবং এক সময় আমি স্বপ্নটি দেখি। এখন আমার কি করা উচিত বল।
মাহিম চিন্তা করল সাঈদ যদি সত্য বলে তাহলে আসলেই চিন্তার বিষয়। আচ্ছা, তোকে কি প্রতিদিন একই গালে থাপ্পড় দেয়?
সাঈদ বল হ্যা, আমার বাম গালে।
মাহিম ভালো করে তাকিয়ে দেখল, আসলেই ঐ খানে কিছুটা লাল হয়ে আছে। তা ছাড়া তন্বী ওকে ডান হাত দিয়ে থাপ্পড় দেয়। তাই বাম গালে এসে পড়ে।
মাহিম চিন্তা করল হয়তো ভুল বসত স্বপ্নের ঘোরে ও নিজেই নিজের গালে থাপ্পড় দেয়। তাই বলল, এক কাজ করতে পারবি?
আমার ধারণা তুই স্বপ্নের ঘোরে নিজের গালে নিজেই থাপ্পড় দিস।
সাঈদ বলল, কিভাবে সম্ভব? আর প্রতিদিন কিভাবে?
মাহিম বলল জানি না, এটা একটা সম্ভাবনা। আরো অনেক কিছুই হতে পারে। তুই আজ ঘুমানের আগে তোর দুই হাত বেঁধে ঘুমাবি। ওকে?
সাঈদের মুখ কালো হয়ে গেলো। এ প্রস্তাব তার পছন্দ হয়নি বুঝা যাচ্ছে। তারপরও বলল আচ্ছা ঠিক আছে। আজ তাহলে উঠি। দেখা যাক কি হয়। যদি কাজ হয় তোকে বুফে খাওয়াবো।
মাহিম মনে মনে একটা গালি দিল, তোর বুফের গুল্লি মারি শালা। তুই তন্বীকে স্বপ্ন দেখিস।
সকালে উঠে মাহিম মেইল চেক করার সময় সাঈদের একটা মেইল পেল। যাতে লেখা “ আমি কাল রাতেও তন্বীর থাপ্পড় খেয়েছি। আমার দুই হাত টাইট করে বাঁধা ছিল যে আমার হাতে দাগ পড়ে গেছে। তারপরও কাল রাতেও স্বপ্ন দেখেছি। তুই তাড়াতাড়ি ইউনিভার্সিটিতে আয়”
মাহিম ইউনিভার্সিটিতে যাওয়ার আগে স্বপ্ন নিয়ে কিছু সার্চ করল গুগলে। অদ্ভুত কিছু তথ্য পেলো। এ ধরনের সমস্যা নতুন না। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে এরকম অনেক ঘটনা রয়েছে। এক লোক স্বপ্ন দেখত যে তার হাতের একটি আঙ্গুল এক ভয়ঙ্কর লোক এসে কেটে দিত। স্বপ্ন দেখে ঐ ভয়ে জেগে যেতো এবং দেখত সত্যি কারে ঐ লোকের একটি আঙ্গুল নেই। পরের দিন একই কাহীনি। বিজ্ঞানীরা ঐ লোককে নিয়ে গবেষণা করল কিন্তু কিছুই বের করতে পারে নি। তবে ধারনা করল যে এটা তার চিন্তা। গভীর চিন্তা। মানুষের শরীর একটা কমপ্লেক্স সিস্টেম। মস্তিষ্ক আরো বেশি কমপ্লেক্স। তারা একটা হাইপোথিসিস দাড় করালো। ঐ লোক অনেক বেশি বিশ্বাস করত যে রাতে কেউ এসে তার হাত কেটে দিবে। এবং এ বিশ্বাসের কারনে তার মস্তিষ্ক থেকে একটা সিগনাল প্রেরন করে। ঐ সিগনালের কারনেই হয়তো তার আঙ্গুল অটোমেটিক ভাবে কাটা যায়। ও হয়তো কোন দিন ভয় পেয়েছে বা এমন কিছু দেখছে। পরে প্রতিদিনই ঘুমানোর আগে ভাবত যে সে যদি ঘুমিয়ে যায় তাহলে কেউ এসে তার আঙ্গুল কেটে দিবে। প্রথম প্রথম হয়তো হয় নি। পরে হয়েছে। প্রকৃতিতে অনেক উদাহরণ রয়েছে এমন। ব্যাঙ্গ এর লেজ খসে পড়াও হয়তো এমন কোন প্রক্রিয়ায় ঘটে।
ঐ লোকটিকে জিজ্ঞেস করে সত্যতা জানা গেল যে সে সত্যিই ঘুমানোর আগে এমন ভাবে। সে একটি হরর মুভি দেখে ভয় পেয়েছিল। পর থেকে তার ঘুমাতে সমস্যা। পরে বিজ্ঞানীরা একটি উপায় বের করল। ঐ লোকের আঙ্গুল গুলোর উপর দিয়ে স্টিলের একটি নল পরিয়ে দিল। এবং ঐ লোকে ভালো করে বুঝিয়ে দিত যে তার আঙ্গুল আর কাটতে পারবে না। কারন এর উপর স্টিল এর আবরণ রয়েছে। এবং এ পদ্ধতি কাজ করেছে। ঐ লোকের বাকী আঙ্গুল গুলো রক্ষা পেয়েছে।
সাঈদ ও হয়তো প্রতিদিন ঘুমানোর আগে তন্বীর কথা ভাবত। এবং তন্বীকে কিভাবে প্রপোজ করবে তা নিয়েও ভাবত। আর ভাবত তন্বী হয়তো তাকে মারবে প্রপোজ করলে। তাই হলো।
মাহিম একটা চিন্তা করল। তন্বীকে সব খুলে বলা উচিত। হয়তো এতে কাজ করবে। সাঈদকে বলল তন্বীকে সব কিছু বলা উচিত। সে হয়তো তোকে হেল্প করবে। সাঈদ বলল, কিছুতেই না। ও আমাকে পাগল ভাববে। মাহিম চিন্তা করল তাহলে অন্য কিছু করা উচিত। চল আমার সাথে।
তন্বীকে ফোন দিয়ে আনাল মাহিম। সাঈদকে বলল তুই সমস্যার সমাধান চাস?
সাঈদ বলল অবশ্যই। মাহিম বলল তাহলে এক কাজ কর, এখন গিয়ে তন্বীকে প্রপোজ করবি। তাহলে তোর ভয় কেটে যাবে। এবং তুই আর এমন স্বপ্নও দেখবি না।
সাঈদ ভয়ে ভয়ে তন্বীর সামনে গেলো। এবং তাকে বলল আই লাভ ইউ তন্বী। তন্বী দেখল তাকে ফোন করে আনালো মাহিম। এবং প্রপোজ করল সাঈদ। এরা ফাইজলামি করে নাতো। তন্বী দেখল দূরে মাহিম দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে হাসছে।
তন্বী সাঈদকে বলল আমার সাথে ফাইজলামি হচ্ছে? সাঈদ বলল। ফাইজলামি কেন? আমি সত্যি সত্যি তোমাকে অনেক অনেক পছন্দ করি। তন্বী তখন সত্যি সত্যি সাঈদকে একটা থাপ্পড় দিয়ে বলল এটা হচ্ছে ফাইজলামির ফল। এবার যাও বলেই তন্বী হাটা ধরল।
আর সাঈদ কিছুই না বুঝে কিছুক্ষন হাবলার মত দাঁড়িয়ে রইল। পরে যখন দেখল মাহিম দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে হাসছে, তখন দৌড়ে গিয়ে মাহিম কে ধরার চেষ্টা করল, মাহিম ও দোঁড় দিল এবং দৌড়ে গিয়ে বাসে উঠে গেলো।
পরের দিন সকালে মাহিমের কল, দোস্ত আজ রাতে আমি স্বপ্ন দেখিনি। তোকে অনেক অনেক থ্যাঙ্কস। মাহিম বলল তাহলে আজ তাহলে বুফে খাওয়া হচ্ছে আমাদের তাই না?
খেয়ে ক্যাম্পাসে ফিরে দু জনের সাথে তন্বীর সাথে দেখা। সাঈদ বলল তার কাজ আছে বলেই পাশ কেটে চলে গেলো। এ মেয়ের সামনেও সে আর পড়তে চায় না, থাপ্পড় ও খেতে চায় না।
মাহিম জিজ্ঞাসা করল কি খবর তন্বী? তন্বী বলল ভালো।
মাহিম বলল তোমাকে একটা কথা বলতে চাচ্ছিলাম কিন্তু গতকালের ঘটনা পুনরাভৃতি হবে চিন্তা করে বলতে পারছি না।
তন্বী বলল, বলে ফেলো।
মাহিম বলল না থাক। অন্য দিন বলা যাবে। কফি খাবে? তাহলে এক সাথে বসে খাওয়া যায়।
তন্বী রাজী হলো। কফি খেতে খেতে তাদের আড্ডা জমে উঠল। দুই জনেরই কথার ঝুলি খুলল। যেন শেষ হতেই চায় না। এ ঝুলি শুধু মাত্র প্রিয় কারো সামনেই খোলা যায়।
১৫ ই জুন, ২০১৩ রাত ৯:২২
?জকির! বলেছেন: তাই নাকি?
ধন্যবাদ জানানোর জন্য
২| ১৫ ই জুন, ২০১৩ রাত ১০:০৩
বটের ফল বলেছেন: চমৎকার। ভালো লেগেছে। আর একটু ভালো লাগলেই প্লাস টা দিতে পারতাম!!!!
আরো অনেক ভালো করার অনেক সুযোগ আছে আপনার যদি আর একটু সিরিয়াস হন। রাগ করলেন কি??
ভালো থাকবেন। শুভকামনা আপনার জন্য।
১৫ ই জুন, ২০১৩ রাত ১০:১১
?জকির! বলেছেন: গতরাতে গরমে ঘুম না আসা থেকে গল্পটি লেখা। তারপরও ভালো লেগেছে শুনে ভালো লাগল
অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
৩| ১৫ ই জুন, ২০১৩ রাত ১০:০৭
আফসিন তৃষা বলেছেন: হুম ভালো
মাহিনও একটা থাপ্পড় খেলে ভালো হত
১৫ ই জুন, ২০১৩ রাত ১০:১৪
?জকির! বলেছেন: মাহিম তন্বীকে কফি খাইয়েছে। যারা কফি খাওয়ায় তাদের মারতে হয় না হয়তো মাহিমকেও মারবে। অন্য কোন দিন, রাগ করে।
মন্তব্য করার জন্য অনেক ধন্যবাদ
৪| ১৫ ই জুন, ২০১৩ রাত ১১:৪৭
আমি মাখন বলেছেন: উরি বাপ! ভালো তো। মাহিনকেও একটা থাপ্পড় খাওয়ানো উচিত ছিল।
১৫ ই জুন, ২০১৩ রাত ১১:৫১
?জকির! বলেছেন: আপনি বলছেন?
তাহলে ঠিক আছে। মাহিমকেও একটা থাপ্পড় আসলেই দেওয়া উচিত ছিল।
৫| ১৬ ই জুন, ২০১৩ রাত ১:০৮
আর.হক বলেছেন: এলাহি কাজ কারবার
১৬ ই জুন, ২০১৩ রাত ১:৪৩
?জকির! বলেছেন:
৬| ১৬ ই জুন, ২০১৩ রাত ১:১০
স্বপ্নবাজ অভি বলেছেন: মাহিনকেও একটা থাপ্পড় খাওয়ানো উচিত ছিল।
১৬ ই জুন, ২০১৩ রাত ১:৪২
?জকির! বলেছেন: সবার দেখি একই চাওয়া
৭| ১৬ ই জুন, ২০১৩ দুপুর ১:৫০
মামুন রশিদ বলেছেন: স্বপ্নে মানুষ পোলাও-বিরিয়ানি খায়, আর সাইদ খায় থাপ্পড়
১৬ ই জুন, ২০১৩ বিকাল ৩:৩১
?জকির! বলেছেন:
©somewhere in net ltd.
১|
১৫ ই জুন, ২০১৩ রাত ৯:১৮
mahbub_rahman বলেছেন: ভালো লাগলো