![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
এ সেমিস্টার শুরু হয়েছে হরতাল দিয়ে। রেজিস্ট্রেশন করতে যাবো, হরতাল! রেজিস্ট্রেশন করলাম। ক্লাস শুরু হলো। প্রথম ক্লাস, তাই স্যার ও নেই ছাত্ররাও নেই। দুই একজন গিয়ে ক্লাসে বসে আছি শিক্ষক আসার অপেক্ষায়। স্যার আর আসে নি। পরের ক্লাসেও একই অবস্থা। স্যার নেই। আমরা কয়েক জন গিয়ে বসে আছি।
এর পর থেকে আর ক্লাস করতে যেতে হয় নি। কারণ হরতাল। আর হরতাল হওয়ার কারণে মেকআপ ক্লাস গুলোর তারিখ শুক্রবার বা অন্যান্য দিন পড়ছিল। মাইনোর কোর্স। ক্লাসমিটেরা এক জন একটা বিষয় নিয়েছে। কারো সাথে কারো মিল নেই। তাই অন্য ব্যাচদের সাথে ক্লাস করতে হচ্ছে। তাদের কারো সাথে পরিচয় নেই। তাই কাউকে কল করে যে জিজ্ঞেস করব তার যোগাড় নেই। স্যার ও নতুন। তাই স্যার এর নাম্বার ও নেই। এর পর হরতালে হরতালেই প্রথম মিডটার্ম চলে আসছে। কোন ক্লাস ছাড়াই মিডটার্ম!
মিডটার্ম আর দি নাই। ঐ সাবজেক্টটি ড্রপ দেওয়ার ও হয়তো সুযোগ ছিল না। জিজ্ঞেস করি নি ড্রপ দেওয়া যাবে কিনা। অলসতা করে। একটি সাবজেক্ট না পড়েও টাকা দিতে হবে এবং সেমিস্টার শেষে সাবজেক্ট এর সামনে লেখা থাকবে ইনকমপ্লিট। থাকনা।। ছোট্ট খাট্টো একটা অভিজ্ঞতা। জ্ঞানীরা বলেন, সব ধরনের অভিজ্ঞতার নাকি দরকার আছে।
এটা গেলো একটি বিষয়ের কথা। আরেকটি বিষয়ের ক্লাস করছি সব গুলো। ঠিক মত। প্রথম মিডটার্ম। হরতালের কারনে তারিখ পড়ছে অন্যদিন। গেলাম পরীক্ষা দিতে। গিয়ে শুনলাম স্যার পরীক্ষা নিবে না। অন্য দিন নিবে। অন্য তারিখে গেলাম। একই কথা। পরীক্ষা পরের শুক্রবারে নিবে। আমি জানলাম ২টায় নিবে। ১২টার দিকেই রুম থেকে বের হলাম। যেন বনানী মসজিদে জুমার নামাজ পড়ে নিতে পারি। জুমার নামাজ পড়ে ক্লাসে গেলাম পরীক্ষা দিতে। কেউ নেই। ভয় পেলাম। স্যার পরীক্ষা নিয়ে পেলেছে নাকি। স্যারকে কল দিলাম। হ্যা, সত্যি, সকাল ১০টায় পরীক্ষা নিয়ে পেলছে। স্যারকে জানালাম, স্যার আমি তো জানতাম ২টায় পরীক্ষা... স্যার নিজে থেকেই বলল আর পরীক্ষা নিবে না। পরের পরীক্ষা দিতে। ক্লাস করতে। ক্লাস করি... ১০০ মার্ক এর মধ্যে ২৫ মার্ক এমনিতেই হারিয়ে গেলো।
আরেকটা বিষয়ের ক্লাস ও করলাম পরীক্ষাও দিলাম। মোটামুটি ঠিক মতই হলো সব কিছু।
এরপর সময় হয়েছে দ্বিতীয় মিডটার্মের। শুনে কিছুটা অবাক হই। কোন ক্লাস করিনি। পুরো সপ্তাহ জুড়ে হরতাল অবরোধ থাকে। শুক্রবার শনিবার ক্লাস হয়। কখন হয় জানি না। জানতে ইচ্ছেও করে না। এক ধরনের অলসতা। জানি না হয়তো গ্র্যাজুয়েশনের শেষের দিকে অনেকেরই এমন হয়।
পরীক্ষা দিতে হবে। কি করার। অন্যদের থেকে ক্লাস নোট গুলো কিছু ফটোকপি করে নিলাম। কিছু মোবাইলে ছবি তুলে আনলাম। পরীক্ষার প্রিফারেশন তো নিতে হবে।
কাল পরীক্ষা। পড়তে বসার আগে ফেসবুকে একটু ঢু মারি। শুনি কাল থেকে হরতাল। নোট গুলো বন্ধ করে আবার ফেসবুকিং শুরু করি।
এরপর আবার পরীক্ষার তারিখ পরে। পরীক্ষার আগের দিন নোট নিয়ে বসার পর শুনতে পাই হরতাল। পরীক্ষা হবে না। আবার বই খাতা বন্ধ করি।
সব শেষে আগামীকাল পরীক্ষা হওয়ার কথা ছিল। সারারাত জেগে থাকার কারণে ঘুম থেকে উঠলাম বিকেল তিনটার দিকে। অলসতা করে একটু বেশিই ঘুমিয়েছি। গোসল করে কম্পিউটারের সামনে বসার পর জানতে পারলাম হরতাল এক্সটেন্ড করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত হরতাল।
কয়েক দিন আগে ইউনিভার্সিটিতে দেখে আসলাম ফাইনাল পরীক্ষার রুটিন। ডিসেম্বরের ২৭তারিখ সম্ভবত। প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়। তারা ঠিকই ২৭তারিখ থেকেই পরীক্ষা নিবে। জানুয়ারী থেকে আবার নতুন সেমিস্টার শুরু করবে। তারা জানতে চাইবে না আমরা কি শিখছি।
নিয়ম না মানা এই আমি জীবনের চলার পথের নিয়ম গুলোর ব্যাতিক্রম হলে নিজেকে হারিয়ে ফেলি। আমি জানি অনেকেই আমার মত এমন হারিয়ে ফেলে। এ সেমিস্টারে যে সকল সাবজেক্ট গুলোতে সমস্যা হয়েছে সে গুলো এর পরের সেমিস্টারে নিতে হবে। সমস্যা এটা না। সমস্যা হচ্ছে সময়। সময় অনেক মূল্যবান। চার মাস আবার ঐ একই বিষয় নিয়ে পড়ে থাকতে হবে।
শিক্ষকদের কি বলব। উনারা সব ধরনের চেষ্টা করছেন আমাদের শেখানোর জন্য। চেষ্টার করছেন যেন আমরা শিখতে পারি।। কিন্তু এ ভয়ঙ্করের নিয়মের মাঝে তারা নিরুপায়। তাদের হাত বাঁধা। বার বার মেকআপ ক্লাস দেওয়া, বার বার পরীক্ষার তারিখ পালটানো আর হরতালের মাঝেও তাদের ভার্সিটিতে যাওয়া ছাড়া আর কি করার আছে তাদের?
এ সবের জন্য আমরা কাকে বলব? কাকে বলব এসব বন্ধ করুন। আমাদের শিখতে দিন...
©somewhere in net ltd.
১|
০২ রা ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ৮:৩০
জীবনানন্দদাশের ছায়া বলেছেন: কিছু কিছু বিষয় অবাক হবার মত, পরীক্ষা নেয়ার বিষয়টা বিশেষ করে।
এই সেমিস্টারটা এমনিতেই একটু ছোট, বেশ কিছু ছুটি থাকে বলে। আমি নিজে ঠিকমত ক্লাস নিতে পারিনি। রোজার ঈদের পর যেদিন ক্লাস খুলবে সেদিন বাচ্চারা আসবেনা, আসবে এক সপ্তাহ পর! গেল দুটো ক্লাস আবার ঈদের বন্ধের এক সপ্তাহ আগে ওরা অটো নেবে। গেল আরো দুটো ক্লাস!! হরতাল... ... হরতাল, অবরোধ।
তারপরও চেষ্টা করেছি যতটুকু দেয়া যায়। সেই সাথে ওদের এটাও বলেছি আমি খুবই দুঃখিত এবং লজ্জিত ওদের যতটুকু দেয়া উচিত ছিল ততটুকু দিতে না পারায়।
পরীক্ষা নিতে পারছিনা কারণ অবরোধে যে অবস্থা তাতে কখন কোন অঘটন ঘটে। প্রয়োজনে এক মাস লেট হবে কিন্তু বাচ্চাগুলোর জীবন নিয়েতো আর রিস্ক নেয়া সম্ভব নয়।