![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
এই মুর্হুতে আমার বন্ধুর সংখ্যা কত জানেন? জানেন না, তাইতো? আমার বন্ধু ভাগ্য খারাপ বলে মাত্র আড়াই হাজার বন্ধু নিয়েই সুখে থাকার চেষ্টা করছি। আর আমার ভাতিজা পড়ে ক্লাস টেনে ওর বন্ধুভাগ্য ভালো স্কয়ার। মানে যে ভালর শেষ নেই। ওর বন্ধু সাড়ে চৌদ্দ হাজার। কি বিশ্বাস করলেন না?। না করলে নাই। যারা ফেসবুক ব্যবহার করেন তারা নিশ্চয়ই বিশ্বাস করবেন যে এত্তো বন্ধু থাকতেই পারে।
আমার ভাতিজার চেহারায় হালকা একটু মেয়েলী ভাব আছে তাই ও কাউকে বন্ধু হবার আমন্ত্রণ পাঠালে আর বিমুখ হতে হয় না। তাছাড়া ভাতিজার নাম শুনে মাঝে মাঝে আমিই বুঝিনা সে ছেলে না মেয়ে। যা হোক। ওবামার দেশ থেকে শুরু করে ঘানা, রুয়াণ্ডা, উগাণ্ডা এমন কোন দেশ নেই যে দেশে ওর বন্ধ নাই। আর এই বঙ্গ মুল্লুকে সবাই যেন ওর বন্ধু হওয়ার জন্য মুখিয়ে আছে। আমি কোন কাজে বাইরে গেলেই হুসনে তাজমীদ মানে আমার ভাইয়ের দশম শ্রেণী পড়–য়া পুত্র যে কিছুক্ষণ কম্পিউটারে বসার সুযোগ পায় ততক্ষণ তাকে কেবল বন্ধুত্ব কনফার্ম করতে হয়। ভাবখানা এমন যে হুসনে তামজিদ, হুসনি মোবারকের খালাত ভাই, তাকে বন্ধু বানাতে পারলে বাঙালির মিশর মরক্কো নয়তো আমেরিকা-আন্দামান যাওয়ার টিকিট কনফার্ম। সবাই ওর জন্য এত্তো পাগল কেন তা আজও উদ্ধার করতে পারি নি।
ফেসবুকের ওর বন্ধুদের তালিকায় এমন ব্যক্তি আছেন যারা আমারই বন্ধ,ু শিক্ষক নয়তো সহকর্মী। কিন্তু তাদের অনেকেই আমাকে এখনও ঝুলিয়ে রেখেছেন-কনফার্ম করেননি (অনেকেই বলে আমার চেহারা না কি ছবিতে জিঙ্গালু জঙ্গলার মত লাগে, বাচ্চারা ভয় পায় তাই কেউ বন্ধু হতে চায় না, অথবা আমার মুখে মধু নাই)। ক’দিন আগে আমার এক কলিগ আমাকে বলেছে সে নাকি ইদানিং এমন একজনের সাথে চ্যাট করেন যে কি না ঐশ্বরীয়ার চাইতেও উচ্চমার্গের জিনিস। মেয়েটা না কি তাকে ভালও বাসতে শুরু করেছে। আমি আর আগ্রহী হলাম না আলাপ বাড়াতে।
ইদানিং ভাতিজা একখান মোবাইল ব্যবহার করছে যেখানে ফেসবুকের অপশন আছে। ব্যস আর পায়কে। হুসনে তামজিদ ২৪ঘন্টা অনলাইনে-চ্যাটিংরুমে। আমি এত্তসব আগে জানতাম না। জানলাম এই কয়েকদিন আগে। বন্ধুর সংখ্যা কম এই লজ্জা ঢাকতে সেদিন দুপুরে ভাবলাম জানা-অজানা সবাইকে রিকোয়েস্ট পাঠাবো। বাংলা আর ইংরেজির সকল বর্ণ দিয়েই নাম সার্চ করবো। যা থাকে কপালে। এমন করেই আমি খুঁজে পাই হুসনে তামজিদকে। দিলাম রিকোয়েস্ট পাঠিয়ে কিন্তু কাজ হলো না কয়েক দিনেও। ওই দুপুরে শ’পাঁচেক অনুরোধের মধ্যে গ্রহণ হয়েছে বড়জোর ২০খান। মনটা খারাপ না হয়ে যাওয়া স্বাভাবিক। আর তাই ভাতিজার সাথে দুঃখ ভাগ করার চেষ্টা করছিলাম একরাতে বারান্দায় বসে। সে তখনই আমাকে বললো এই তাহলে অবস্থা তুমিও আমার প্রেমে পড়ছ না!। রাগে তো আমার কান গরম বলে কি শয়তানের ভাতিজা। মিচকি হাসি দিয়ে সে বলে গাব্বু (হুসনের মতে-গাব্বু না কি আব্বুর প্রতিশব্দ) তুমি আমাকেও পাঠিয়েছ রিকোয়েস্ট ঠিক আছে গ্রহণ করলাম। বলেই মোবাইলে কি যেন চাপাচাপি করলো। দেখি সে আমার ফ্রেইণ্ড তালিকায় যুক্ত। ব্যস আমি ওর ফ্রেইণ্ড তালিকায় গিয়ে তো মাথা চক্কর দেয় আর কি। সাড়ে চৌদ্দ হাজার? জিজ্ঞেস করলাম কিভাবে এটা সম্ভব হলো সে বললো হয়ে গেলো আর কি, বলেই আবার সেই মিচকি হাসি। হুসনের ছবি দেখতে গিয়ে দেখি, হায় হায়রে করেছে কি শয়তানের ঠ্যাং। আমার বউ, শ্যালিকা, ভাবি আর চাচি খালার এহেন পোশাক নাই যা পড়ে সে ছবি তুলে প্রোফাইলে যুক্ত করে নাই। দেখলাম সে বিকিনির মতোও কি যেন পড়ে পোজ দিয়ে ছবি তুলেছে। সেইসব ছবিতে যে কত্ত হাজার মন্তব্য ছি আমার আর দেখার আগ্রহ নাই। রাগে দুঃখে ভাতিজাকে ফ্্েরইণ্ড লিস্ট থেকে বাদ দেয়ার চিন্তা করেও দিলাম না ভাবলাম দেখিনা শয়তানটা আর কি করতে পারে। আমি যা পারি নাই ওতো তাই করে দেখাচ্ছে। খারাপ কি আমারই তো ভাতিজা। আমি এখন সেই দিনের প্রতীক্ষায় আছি যেদিন দেখবো আর বন্ধুর সংখ্যা বাংলাদেশের জনসংখ্যার সমান। অবশ্য এর জন্য খুব বেশি দিন অপেক্ষাও করতে হবে না কারণ জন্মনিয়ন্ত্রণ নিয়ে দেশে দেশে আন্দোলন চললেও বন্ধু নিয়ন্ত্রণের কোন উদ্যোগই নেই।
হঁৎংর৩১@মসধরষ.পড়স
©somewhere in net ltd.