নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নিভৃতচারী, ঘুরে বেড়াই পথে-প্রান্তরে।।

জমীরউদ্দীন মোল্লা

ওরে ও তরুণ ঈশান! বাজা তোর প্রলয়-বিষাণ। ধ্বংস-নিশান উঠুক প্রাচী-র প্রাচীর ভেদি’॥

জমীরউদ্দীন মোল্লা › বিস্তারিত পোস্টঃ

বলি কি পতি মশাই, সাধারণ ক্ষমা বাদ দিয়ে ধর্ষণ ও খুনকে এবার বৈধতা দেন।

২৮ শে এপ্রিল, ২০২০ দুপুর ১:৪৪


৭ই মার্চের ভাষণ বঙ্গবন্ধু শুরু করেছিলেন এই বলে, আজ দুঃখ ভারাক্রান্ত মন নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হয়েছি……।

আমি নিজেও অনেকটা সেইরকম অভিব্যাক্তি নিয়েই লিখতে বসছি। আমি জানি আমার মত নগন্য কারো লেখা কেউ হয়ত দেখবেই না বা দেখলেও তা পাত্তা দেয়ার মত কিছু ভাববে না। তাও লিখছি কারন আমার মত গাটলেস পিপলদের দুঃখ ভারাক্রান্ত মন হালকা করার আর কোন সহজ উপায় নেই। তাই সোশ্যাল মিডীয়া কিংবা ব্লগে লিখালিখি করেই মন হালকা করি। যে দেশে ম্যাজরিটি পিপল পা চেটে উপরে উঠতে ব্যস্ত সেখানে যে গাটলেস পিপলের আধিক্য থাকবে এটাই স্বাভাবিক।

ভুমিকা বড় করে লাভ নেই, যা বলতে চাচ্ছি তা হল এরুপ যে ক্ষমতাসীনদের ক্ষমা করে দেয়ার এক অদ্ভুত গুন আছে। আমি জোর দাবি জানাই এই যে, তারা(ক্ষমতাসীনরা) যেনে খুন, ধর্ষণ ও দুর্নীতি সহ যাবতীয় পুণ্যের কাজ কে বৈধতা দান করে কোটি কোটি সরল প্রান বাঙ্গালীকে বেশি বেশি নেক আমল(যার যার ধর্ম অনুযায়ী আমল করবে) করতে উদ্বুদ্ধ করেন। আমার মনে হয় শুধু আমিই না আমার মত এরকম বহু সংখ্যক অক্ষম মানুষও এই দাবির পক্ষে অবস্থান করবে।

আপনি মশাই বলতে পারেন ভাই কি অতি সাম্প্রতি পাবনা মানসিক হাসপাতাল থেকে এসেছেন নাকি? আমি বলবো না মশাই আমি ৫৬,৯৮০ বর্গমাইল বিশিষ্ট মানসিক হাঁসপাতালের জন্মসূত্রে স্থায়ী বাসিন্দা। আপনি না হয় আমাকে পাগলে ভেবে পার পেয়ে গেলেন কিন্তু আমার দাবি যে একেবারে অযৌক্তিক না চলেন সেটার কিছু প্রমান দেই।

একবার আমাদের কোন এক মাননীয় মন্ত্রী(নাম বললে চাকুরি পাবো না) বললেন যে, দ্রুত কাজ আদায়ের জন্য টু সাম এক্সটেন্ট স্পিড মানি বৈধ হতে পারে। স্পিড বা স্লো যে মানি ই বলেন তার মোদ্দা কথা হচ্ছে ঘুষ দিয়ে কাউকে মোটিভেট করিয়ে কাজ আদায় করা(যদিও সেই কাজের জন্য সেই ব্যাক্তি অলরেডি পেইড)। মন্ত্রী মহোদয়ের কথা একেবারে অমূলক নয়। পাবলিক কোন সার্ভিস নিতে গেলে শেষমেশ আমরা নিজেরাই বিরক্ত হয়ে স্পিড মানির দারস্থ হই। আসলে কিছু করার ও নাই। ছোট্ট একটা কাজের জন্য আপনি যে পরিমান সময়-শ্রম এবং ভাগ্যে থাকলে কিছু হয়রানি-হেনস্থা জুটবে তার চেয়ে ভালো টু পাইস এক্সট্রা দিয়ে কাজ করিয়ে নেওয়া। তো এখানে ঘুষ নামের পুন্য কাজের যে বৈধতা পাওয়ার ব্যাপারে একটা বড় যুক্তি আছে সেটা তো বুঝা গেলো।

হাজারো পুণ্যের কাজের বৈধতা নিয়ে নাহয় কথা আর একদিন বলবো। আজকে আর একটু বলেই শেষ করছি। কয়েকদিন আগে প্রথম আলো খুলতেই শিরোনামে দেখলাম, রাষ্ট্রপতির ক্ষমায় ফাঁসি থেকে মুক্ত আসলাম ফকির আবার খুনে জড়ালেন। ছোট বেলা থেকেই দৈনিক পত্রিকা পড়ার অভ্যাস। যদিও ইদানিং পত্রিকা পড়তে ইচ্ছা করে না কারন পত্রিকাওয়ালারা এতো বেশি মানুষের পুন্য কাজের কথা ছাপে দেখে নিজেকে তেলাপোকা মনে হয়। ভাবলাম নিজেকে তেলাপোকা ভাবার চেয়ে পত্রিকা না পড়াই ভালো। তো যা বলছিলাম এরকম শিরোনাম আমার পত্রিকা পড়ার জিবনে বহুবার পড়েছি। আর পড়ে পড়ে নিজেই আনন্দে ও আবেগে আপ্লুত হয়েছি। যে মারহাবা ক্ষমার মত মহৎ গুন আমাদের ক্ষমতাসীনদের কাছে আজ ডাল ভাত। যাকে খুশি তাকেই ক্ষমা করে দিচ্ছেন।

গাটলেস হওয়ার দরুন মাঝে মধ্যে ভাবতাম, আচ্ছা ক্ষমতাসীনদের নিকট জন কে কেউ হত্যা করলো। তাহলে সেই হত্যাকারীকে কি ক্ষমতাসীনরা ক্ষমা করবে। যদি ক্ষমাই করে তাহলে ৭১ এর চেতনা নিয়ে যারা ব্যবসায় করে আঙ্গুল ফুলে কলা গাছ তাদের কি হবে! ক্ষমতাসীনরা তাদের ক্ষমা করছে না বলেই চেতনার ব্যবসায় আজকে ফেলে ফুপে উঠেছে। যদি তারা নিজেদের নিকটজনের হত্যাকারীকে ক্ষমা করতে না ই পারে। তাহলে কোন ক্ষমতাবলে তারা অন্যের নিকটজনের হত্যাকারীকে ক্ষমা করে দেন(হত্যাকারীকে ক্ষমার যে ইসলামী বিধান আছে সেটা মনে হয় না এখানে এপ্লিকেবল)? যাইহোক আল্লাহ আমাদের ক্ষমতাসীনদেরকে হয়ত সে ক্ষমতা এবং ক্ষমার মহৎ গুন দিসেন যে তারা যাকে খুশি ক্ষমা করে দিবেন।

এই ভুমিকা টুকু এইজন্য আনলাম যে, দ্বীন দুয়েক আগে গাজীপুরের শ্রীপুরের ঘটনা কম বেশি সবাই জানেন। মা এবং তিন সন্তানকে জবাই করে হত্যা করা হয়েছে। হত্যার আগে মা ও মেয়েকে ধর্ষণ ও করা হয়েছে। আমার মত তেলাপোকারা এইরকম খবর খুব সহজে হজম করতে পারে না। জলজ্যান্ত চারজন মানুষকে গলা কেটে হত্যা! হয়তো কোন গ্রুপ অফ ভালো লোকেরা এসে এসব করে গেসে। পরে জানা গেলো মাত্র কুড়ি বছরের এক নিষ্পাপ নাবালক শিশু এই কান্ড ঘটিয়েছে। যে তার ষোল বছর বয়েসে সাত বছরের এক মেয়েকে ধর্ষণ এবং খুন করে। মহামান্য হাইকোর্ট তার বয়স বিবেচনা করে জামিন দেয়!

ঠিক এই রকম একই কান্ড কয়দিন আগে মাদারীপুরে হয়েছে। এক ১৪/১৫ বছরের মেয়ে বোনের বাড়িতে যাওয়ার জন্য বাড়ী থেকে বের হয়ে অটোতে উঠে। পথিমধ্যে বৃষ্টি শুরু হলে সেই অট চালক সেই মেয়েকে ধর্ষণ ও খুন করে। পরে জানা গেলো এই নিষ্পাপ লোক পূর্বে ও খুন ও ধর্ষণের আসামি।


কি চমৎকার অবস্থা তাই না? আমি জাস্ট দুইটা উদাহরণ দিলাম এখানে আপনি যদি চান এরকম ভূরি ভূরি উদাহারন আমি আপনার সামনে দিতে পারবো। কারন আমার মত তেলাপোকাদের দৌড় পত্রিকা পড়ে ভালো কাজ গুলো দেখে আনন্দে-আবেগে আপ্লুত হওয়া। আর মাঝে মধ্যে দুই চার লিখে নিজেকে সান্ত্বনা দেওয়া।

তো শুরুতে যা বলছিলাম, আমাদের মহৎ ক্ষমতাসীনরা যেন খুন, ধর্ষণ ও দুর্নীতি সহ যাবতীয় পুণ্যের কাজ কে বৈধতা দান করে দোজাহানের অশেষ নেকি হাসিল করে। ছোট্ট একটা দেশে এতো মানুষ তাদের কে দমিয়ে রাখার জন্য এরচেয়ে ভালো উপায় আর হতে পারে না। এসব কাজে বৈধতা দিলে আশা করা যায় ঘরে ঘরে আমার মত তেলাপোকারা এক একজন রথী মহারথী হয়ে উঠে দেশের কল্যানে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে।

আর খুন-ধর্ষণ তো মামুলি ব্যাপারে এসবের বিচার করাটা বড় অন্যায় তাই তো আমাদের মহৎ ক্ষমতাসীনরা রবির মত আপন শক্তিতে জ্বলে উঠে তাদের ক্ষমা করে দেন। এই দেশে শুধু বিচার হবে তাদের, যারা শুধু চেতনায় আঘাত করে। এসব চেতনায় আঘাতকারী নব্য জঙ্গিদের ফাঁসির দাবি জানিয়ে আজকের মত শেষ করছি।

মন্তব্য ১০ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১০) মন্তব্য লিখুন

১| ২৮ শে এপ্রিল, ২০২০ দুপুর ২:২৫

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: বাকরুদ্ধতো হয়েই আছে.... বোবা মানুষের যন্ত্রনার গো গো আওয়াজও ক্ষীন হয়ে আসছে!

অল্প শৌকে কাতর অদীক শোকে পাথর
আজ সব পাথর চোখের দৃষ্টি দিয়ে যেন ভাবলেষহীন তোলাপোকা জীবনই যাপন করে যাচ্ছে!

সরকারের পো ধরাদের কথা ভিন্ন! তারা এতেও উন্নয়নের ছৌঁয়া খুঁজে পাতেই পারেন!

মাৎসানায় সময়ের অন্ধকারে অবরুদ্ধ দেশ, গণতন্ত্র, মানুষ, মানবতা!
জাগো বাহে! কুনঠে সবাই!!!!!!!!!

২৮ শে এপ্রিল, ২০২০ দুপুর ২:৪৮

জমীরউদ্দীন মোল্লা বলেছেন: তেলাপোকার জীবন যাপনেই যেন আমাদের সার্থকতা।

২| ২৮ শে এপ্রিল, ২০২০ বিকাল ৩:৩৪

নতুন বলেছেন: মানুষের নৈতিকতা মরে যাচ্ছে তাই খুনের শিশু ধষ`ন ও হত্যা মামলার আসামীকেও মুক্ত করতে উকিলের অভাব হয় না। :(

২৯ শে এপ্রিল, ২০২০ সকাল ১১:৩৭

জমীরউদ্দীন মোল্লা বলেছেন: নৈতিকতা দিয়ে কি হবে আমাদের তো বড় বড় স্ট্রাকচার হচ্ছে। আমরা উন্নত হচ্ছি।

৩| ২৮ শে এপ্রিল, ২০২০ বিকাল ৪:৪০

রাজীব নুর বলেছেন: আসলে আমাদের সরকার ভাবে তাদের মতো বুদ্ধি দেশের আর কারো নেই। তাই তারা যে কোনো কাজ নিজেদের ইচ্ছা মতো করে। জনগনের সাথে আলাপ করে না।

২৯ শে এপ্রিল, ২০২০ সকাল ১১:৩৬

জমীরউদ্দীন মোল্লা বলেছেন: আমরা জনগন হইলাম তেলাপোকা। তাই আর আলাপ করার দরকার মনে করেন না তারা(ক্ষমতাসীনরা)

৪| ২৮ শে এপ্রিল, ২০২০ বিকাল ৪:৫২

রাশিয়া বলেছেন: ঐশীকে তো বয়েস বিবেচনা করে জামিন দেওয়া হয়নি। যদিও খুন সে নিজে করেনি।

২৯ শে এপ্রিল, ২০২০ সকাল ১১:৩৫

জমীরউদ্দীন মোল্লা বলেছেন: শুধু বয়স কেন, নানা কিছু তারা বিবেচনা করে। কিন্তু আমার কথা হচ্ছে তাদের এই বিবেচনা আদৌ কতটা যুক্তিসঙ্গত আর ভিক্টিম পরিবারের কাছে মানবিক?

৫| ২৮ শে এপ্রিল, ২০২০ রাত ৮:৩০

নেওয়াজ আলি বলেছেন: রাষ্ট আপনার কথা চিন্তা করতে পারে

২৯ শে এপ্রিল, ২০২০ সকাল ১১:৩৪

জমীরউদ্দীন মোল্লা বলেছেন: ক্ষমতাসীনরা রাষ্ট্র চালায় আর তারা নিজেদের কথা চিন্তা করে। আমজনতা নগণ্য বিষয়।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.