নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

[email protected]

"A little knowledge of science makes man an atheist, but an in-depth study of science makes him a believer in God." Francis Bacon.

জেমসবন্ড

।জ্ঞানের প্রতি বিপুল আগ্রহ । সংগ্রাম মুখর আমার জীবন ।

জেমসবন্ড › বিস্তারিত পোস্টঃ

বিভিন্ন ধর্মে একত্ববাদ -১ (হিন্দু বা সনাতন ধর্ম)

০৭ ই জানুয়ারি, ২০০৯ দুপুর ১২:১৬





আর্য ধর্মসমূহের মধ্যে সবচেয়ে বড় ও বেশি জনসংখ্যা বিশিষ্ট ধর্ম হচ্ছে হিন্দু ধর্ম । প্রকৃত পক্ষে "হিন্দু" একটি পারস্য শব্দ এবং হিন্দু শব্দ দ্বারা সিন্ধু উপত্যাকা এলাকার অধিবাসীদের বুঝানো হত । বর্তমানে প্রচলিত অর্থে হিন্দু একটি সাধারণ ধর্মের নাম যার আওতায় অনেক শ্রেনীর ও অনেক বর্ণের বিভিন্ন বিশ্বাস আছে , যাদের অধিকাংশের ধর্মীয় বিশ্বাসের ভিত্তি হচ্ছে বেদ, উপনিষদ এবং ভগবত গীতা ।



হিন্দু ধর্মে ঈশ্বরের সাধারণ ধারণাঃ

হিন্দু ধর্ম সাধারণভাবে বহু ঈশ্বরবাদী ধর্ম হিসেবে পরিচিত ।অধিকাংশ হিন্দুই এ কথার সত্যতা স্বীকার করেন এবং অসংখ্য দেবতার অস্তিত্বের বিশ্বাসের মাধ্যমে এ স্বীকৃতি প্রকাশ প্রকাশ করেন । কোন কোন হিন্দু ত্রয়ী ঈশ্বর তত্ত্বে বিশ্বাস করেন । তবে শিক্ষিত হিন্দু যারা তাদের ধর্মগ্রন্হ ভালোভাবে অধ্যয়ন করেছেন তারা জোর দিয়ে বলেন যে, একজন হিন্দুর উচিত একজনমাত্র ঈশ্বরে বিশ্বাস করা এবং তাঁর উপাসনা করা ।



পবিত্র কুরআন বলে,



"এসো, আমাদের এবং তোমাদের মাঝে একটি সাধারণ বিষয়ে ঐক্যমতে পৌছি । সাধারণ ঐক্যমতের বিষয় এই যে, আমরা আল্লাহ ছাড়া আর কারো ইবাদত করি না । " (৩ঃ৬৪)



এখানে সাধারণ ঐক্যমতের কথা হয়েছে যে, আমরা আল্লাহ (একমাত্র ঈশ্বর/স্রষ্টা) ছাড়া আর কারো ইবাদত করি না ।



ভগবত গীতা

হিন্দুদের সকল ধর্ম গ্রন্হের মধ্যে সবচেয়ে বিখ্যাত ও জনপ্রিয় ভগবতগীতা । গীতার নিম্নলিখিত শ্লোকটি বিবেচনা করে দেখুনঃ



" তারা, যাদের জ্ঞান-বুদ্ধি বস্তুগত আকাংখার দ্বারা বিলুপ্ত হয়েছে, বিভিন্ন উপদেবতার কাছে আত্নমর্পণ করে এবং নিজেদের প্রবৃত্তির দ্বারা চালিত হয়ে উপাসনার বিশেষ নিয়মনীতি অনুসরণ করে । "

এখানে গীতা বস্তবাদী লোকদের সম্পর্কে উল্লেখ করেছে যারা বস্তুবাদী এবং প্রকৃত ঈশ্বর বাদ দিয়ে অন্য উপ-দেবতার উপাসনা করে ।



উপনিষদসমূহঃ

১. "একমেবা দ্বিতীয়াম"

"তিনি এক একক, যাঁর কোন দ্বিতীয় নাই ।" [চান্দোগ্য উপনিষদ ৬ঃ২ঃ১]



২. উপনিষদের নিম্নের শ্লোকটিও দেখুনঃ

"ন-কস্য কাসুজ জানিতা ন কাধিপাহ"

"তাঁর কোন পিতা-মাতা নাই, কোন প্রভুও নাই ।"

[সেভতাসাভাতারা উপনিষদ ৬,৯, দ্বিতীয় ভাগ, পৃষ্ঠা ২৬৩]



৩.উপনিষদের আরো শ্লোক দেখুনঃ

"ন তস্য প্রতিমা আসাতি"

"তার সমতুল্য কেহ নাই"

[সেভতাসাভাতারা উপনিষদ, অধ্যায় ৪ঃ১৯]

"নৈনম উরধভাম ন তিরানকাম ন মাধ্য ন পারিজাগ্রাভাত না তাসি প্রতিমে আস্তি যস্যনামা মাহাদ যাসাহ"

"তার সমতুল্য কেউ নাই, যার নাম মহা গৌরবের ।"

(এস. রাধা কৃষ্ঞান The principal Upanishad, কৃত পৃ.৭৩৬ এবং ৭৩৭)



উপনিষদের উপরোল্লিখিত শ্লোকসমূহ কুরআনের নিম্নোক্ত আয়াতসমুহের সাথে তুলনা করে দেখুন ।

" এবং তার সমকক্ষ আর কেউ নাই ।" [আল-কুরআন-১১২ঃ৪]

"তার সমতুল্য আর কেউ নেই ।" [আল-কুরআন-৪২ঃ১১]



৪. ঈশ্বরকে কোন বিশেষ আকারে কল্পনা করার বিষয়ে উপনিষদের নিম্নোক্ত শ্লোকসমূহে মানুষের অক্ষমতা তুলে ধরা হয়েছেঃ



" না সমুদ্রসে তিস্হাতি রুপম অ্যাস্যা, ন কাকসুসা পাস্যতি কাস ক্যানাইয়াম । হ্রদা হ্নদিস্হাম মানাসা য়া এনাম, এভাম ভিদুর আমর্তাস তে ভবন্তি ।"



"তার আকার বা রুপ দেখা যায় না; কেউ তাকে চোখ দিয়ে দেখতে পারেনা । যারা হৃদয় এবং মন দিয়ে তাকে হৃদয়ে উপলব্ধি করে, তারাই অমর হয় ।" [সেভতাসাভাতারা উপনিষদ, অধ্যায় ৪ঃ২০]



পবিত্র কুরআনে এই রুপ বিষয় নিম্নোক্ত আয়াতে উল্লেখ করা হয়েছেঃ

"কোন দৃষ্টি তাকে দেখতে পারেনা , কিন্তু তাঁর দৃষ্টি সবার উপরে । তিনি সকল উপলব্ধির উপরে, অথচ তিনি সকল জিনিসের বিষয়ে অবগত ।" [আল-কুরআন-৬ঃ১০৩]



বেদঃ



হিন্দু ধর্ম গ্রন্হসমূহের মধ্যে বেদকে সর্বাপক্ষো পবিত্র ধর্মগ্রন্হ বিবেচনা করা হয় । প্রধান বেদ ৪টি । যথা- ঋগ বেদ, যজুর্বেদ, সাম বেদ এবং অথর্ব বেদ ।



১. যর্জুবেদঃ

" ন তস্য প্রতিমা আস্তি"

"তার কোন আকার নাই " [যজুর্বেদ,৩২ঃ৩]



এতে আরো বলা হয়েছে" তিনি অজাত, তাই তিনি আমাদের উপাসনার অধিকারী ।"



"তার কোন আকার নেই, নিশ্চয়ই তার গৌরব বিরাট । তিনি তার ভিতর ধারণ করেন সকল উজ্জ্বল বস্তু । আমার প্রার্থনা তিনি যেন আমার ক্ষতি না করেন । তিনি অজাত, তিনি আমাদের উপাসনার অধিকারী ।" [যর্জুবেদ,by Devi Chand পৃ.৩৭৭]



"তার কোন অংশীদার নেই এবং তিনি পবিত্র ।" [যর্জুবেদ,৪০ঃ৮]



"তিনি উজ্জ্বলতায় সমাসীন । তিনি অমূর্ত নিরাকার, শরীর-বিহিন এক পবিত্র সত্তা, যাকে কোন অশুভ ভেদ করে নাই । তিনি সুদূরদর্শী, প্রজ্ঞাময়, সর্বব্যাপী সয়ম্ভু, যিনি যথার্থভাবে অনন্ত সময়ের জন্য লক্ষ্য সুনির্দিষ্ট করেছেন ।" [যর্জুবেদ-৪০ঃ৮]



" আন্ধাতামা প্রাভিশান্তি ইয়ে অসম্ভূতি মুপাসতে" ।

"তারা অন্ধকারে প্রবেশ করে, যারা প্রাকৃতিক বস্তুসমূহের (আগুন,পানি ইত্যাদি) পূজা করে, তারা মহাঅন্ধকারে প্রবেশ করে যারা সৃষ্টি বস্তু (যেমন-পাথর বা মাটি দ্বারা তৈরী) পূজা করে " [৪০ঃ৯]



২. অথর্ব বেদঃ

"দেব মাহা ওসি"

"ঈশ্বর নিশ্চয়ই মহান " (অথর্ব বেদ-২০/৫৮ঃ৩)



" তুমি যেমন মহান, তেমনই তোমার মহত্ব প্রশংসার দাবীদার; নিশ্চয়ই তুমি মহান হে ঈশ্বর ।" (অথর্ব বেদ, সংহতি ভলিউম-২, উইলিয়াম ডিমাইট হুইটনি, পৃ.৯১০)



পবিত্র কুরআনের সূরা রাদ -এ অনূরূপ অর্থের একটি আয়াত আছেঃ

'তিনিই মহান, তিনিই শ্রেষ্ঠ ।' (আল-কুরআন-১৩ঃ৯)



৩. ঋগ বেদঃ

সকল বেদের মধ্যে ঋগ বেদ প্রাচীনতম । হিন্দু ধর্মাবলম্বীগণ ঋগ বেদকে সবচেয়ে পবিত্র বিবেচনা করেন । ঋগ বেদে উল্লেখ আছে,

"বিজ্ঞ পুরোহিতগণ এক ঈশ্বরকে বহু নামে ডাকেন " [ঋগ বেদ-১ঃ১৬৪ঃ৪৬]



"মা চিদান্যাদভি শাংসাতা "

"হে বন্ধুগণ, সেই একমাত্র ঐশী সত্তা ছাড়া আর কারো উপাসনা করো না ।"

[ঋগ বেদ সংহিতি, ভলিউম-১১, পৃষ্ঠা ১ও ২ । স্বামী সত্য প্রকাশ স্বরস্বতি এবং সত্যকাম বিদ্যালংকার ।]



" জ্ঞানী যোগিরা তাদের হৃদয় ও মন দিয়ে সে সর্বোচ্চ সত্তার ধ্যান করেন যিনি সর্বত্র বিরাজিত, মহান এবং সর্বজ্ঞ । একমাত্র তিনি তাদের কাজ সম্পর্কে অবহিত বিধায় সকল ইন্দ্রিয় অঙ্গ-প্রতঙ্গকে তাদের নিজ নিজ কাজের দায়িত্ব অর্পণ করেন । নিশ্চয়ই , শ্রেষ্ঠ গৌরব সে মহান স্রষ্টার ।" [ঋগ বেদ-৫ঃ৮১]







হিন্দু বেদান্ত সুত্র এর ব্রক্ষা সুত্রাঃ

" একাম ব্রহাম, দ্ভিতিয়া নাস্তে নেহ না নাসতে কিনচান "

"ঈশ্বর, কেবলমাত্র একজন, দ্বিতীয় কেউ নেই; কেউ নেই, কেউ নেই, মোটেই কেউ নেই ।"



চলবে ..............

মন্তব্য ১০ টি রেটিং +৭/-২

মন্তব্য (১০) মন্তব্য লিখুন

১| ০৭ ই জানুয়ারি, ২০০৯ দুপুর ১২:২৩

রূপক  বলেছেন: হুমম..........খুবই ভালো পোষ্ট........রেফারেন্সগুলো দেয়াতে আরো ভালো হয়েছে..........

তবে এই পোষ্ট নিয়ে আবার না নতুন কোন বিতর্ক শুরু হয়......

পোষ্টে +

০৭ ই জানুয়ারি, ২০০৯ দুপুর ১২:২৫

জেমসবন্ড বলেছেন:
পড়ার জন্য ধন্যবাদ । বিতর্কের কি আছে ? স্রষ্টা তো একজনই !

২| ০৭ ই জানুয়ারি, ২০০৯ দুপুর ১২:২৫

শেরজা তপন বলেছেন: গবেষনাধর্মী লেখা। অনেক কিছু জানতে পারলাম নতুন করে।চালিয়ে যান

০৭ ই জানুয়ারি, ২০০৯ দুপুর ১২:২৭

জেমসবন্ড বলেছেন:
পড়ার জন্য ধন্যবাদ । চলবে ।

৩| ০৭ ই জানুয়ারি, ২০০৯ দুপুর ১২:২৯

রূপক  বলেছেন: আসলে বিতর্ক তো কারোই কাম্য নয়............কিন্তু ব্লগের সবচেয়ে বিতর্কিত টপিক গুলোর একটা হচ্ছে ধর্ম............

আসলে আপনার লেখা নিয়ে বিতর্কের কিছু নেই, কিন্তু কিছু অতি উৎসাহী ব্লগার দেখবেন এটা নিয়ে ক্যাওস করছে।

আর সেরকম কিছু না হলে তো অবশ্যই ভালো।

ভালো থাকুন।

৪| ০৭ ই জানুয়ারি, ২০০৯ দুপুর ১২:৩৭

বিপ্লব কান্তি বলেছেন: হিন্দু ধর্ম দর্শন নির্ভর।

আমি ২/১ হিন্দু ধর্মগ্রন্হ পড়ার সুভাগ্য হয়েছে।
এত আধুনিক কথা লেখা আছে ...........

কি বলব ....... আমি বলতে পারব না । এত ক্ষুদ্র ও পাপী ঞ্জান দিয়ে।

০৭ ই জানুয়ারি, ২০০৯ দুপুর ১২:৪৬

জেমসবন্ড বলেছেন:
ব্রাদার,

পড়েন, পড়েন । জানেন , জানেন । বাচতে হলে জানতে হবে ।

নিজেকে ছোট মনে করা বিনয়ী দের লক্ষণ ।

পড়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ ।

৫| ১৪ ই জানুয়ারি, ২০০৯ দুপুর ২:৪০

রাজীব বলেছেন: ডা জাকির নায়েকের কপি করেছেন দেখা যাচ্ছে।

ভালো লেগেছে, চালিয়ে যান।

৬| ০২ রা মার্চ, ২০০৯ বিকাল ৩:৫০

কাকতারু্য়া বলেছেন: ডা জাকির নায়েকের Concept of God in major religion এর অনুবাদ করেছেন। ভাল লাগলো। কিনত্তু সেটা উল্লেখ করলে ভালো করতেন।

৭| ২২ শে জুন, ২০১২ রাত ১১:৫৫

তুষার বর্ষন বলেছেন: ঈশ্বর এক এবং অদ্বিতীয় । এটাই সত্য ... এমন কোন বই পড়ি নাই যাতে একাধিক ঈশ্বরের কথা লেখা আছে ।
হিন্দুরা একই ঈশ্বরের বিভিন্ন রূপের আরাধনা করে । অর্থ্যাত্‍ ঈশ্বর একজনই , তাঁর রূপ অনেক ।
পোষ্টের জন্য ধন্যবাদ ...কয়েকজন হলেও অন্তত জানুক সত্যটা কি

হিন্দরা দু'ভাবে ঈশ্বরের আরাধনা করে সাকার এবং নিরাকার । সাকার অর্থ্যাত্‍ কোন কিছুর মাঝে ঈশ্বরকে কল্পনা করে তার আরাধনা (আরাধনা হচ্ছে ঈশ্বরের ,কোন বস্তুর নয়) এই রীতি সহজ,প্রচলিত এবং নিরাকারভাবে আরাধনা হচ্ছে নামাজের মত , অপেক্ষাকৃত কঠিন ও অপ্রচলিত । গীর্জাতেও কিন্তু যীশুখ্রিষ্ট্রের মূর্তি থাকে , তারা ঐ মূর্তির আরাধনা করে না । তারা যীশুকেই আরাধনা করে...

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.