নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

Criticism is our fundamental right. The revolution will come only from our pen #save constitution

Titanic

এক সময় আমরা সবাই মানুষ ছিলাম।হঠাৎ করে তখন এক ভণ্ডু খোদার আবিষ্কার হল।শুরু হয়ে গেলে ধর্মের/খোদার দলের দালালী(মানুষের মধ্যে মারামারি হানাহানি)ভণ্ডু খোদার এক বিশেষ দালাল হল ইসলামধর্মের নবী মুহাম্মদ।ধর্মিয় বই নাকি আসমান থেকে এসেছ,আরে বোকার দল তাহলে তদের মালিককে বল আমাকে একটি আইটির বিশেষ বই দিতে।আমি আইটির ব্যবহার ও উন্নত মান দিয়ে তোদের খোদা হওয়ার দাবী করব।তোমরা বল কোরান,বাইবেল, গীতা আরও কত্তকিছু উপর হতে এসেছে।তোমরা কি দেখনা এখন মানুষ উপর(চন্দ্র,মংগল ইত্যাদিতে ভ্রমণ করছে)চোখ খুল মানুষ, চোখ খুল।

Titanic › বিস্তারিত পোস্টঃ

হিন্দু ধর্মঃ কুসংস্কার ও কূপমণ্ডূকতার এক অফুরন্ত ভান্ডার

২৫ শে অক্টোবর, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:৫২

পৃথিবীতে প্রচলিত সবধর্মগুলোই মানুষের অন্ধবিশ্বাস, দূর্বলতা, অজানার প্রতি ভয়, দারিদ্র্য, অজ্ঞানতা, অশিক্ষা, কুশিক্ষার উপর ভর করে টিকে ছিলো বা আছে। তবে শুধুমাত্র কুসংস্কার, অন্ধভক্তি বা কূপমণ্ডূকতার উপর নির্ভর করে টিকে থাকার জন্য যদি কোনো শিরোপা থেকে থাকে তবে তা অতি অবশ্যই হিন্দুধর্মের প্রাপ্য। পৃথিবীতে যতগুলো ধর্ম আজ পর্যন্ত এসেছে তার সবগুলোই পাল্লা দিয়ে নারীবিদ্বেষী, কঠিন পুরুষতান্ত্রিক চরিত্র ধারণ করেছিলো। তবে এক্ষেত্রেও হিন্দুধর্মের জূড়িমেলা ভার। ইসলাম ধর্ম বাদে কালের বিবর্তনে প্রায় সব ধর্মই এখন অনেকটা নিরামিষ রূপ ধারণ করেছে । কিন্তু হিন্দু ধর্ম যেনো আরো বেশি সংস্কারাচ্ছন্ন বা উদ্ভট হবার সংকল্প করেছে।

এখানে একটা প্রশ্ন আসা স্বাভাবিক যেখানে সারাবিশ্ব আজ ইসলাম ধর্মের ভয়ংকর চেহারার সাথে বোঝাপড়া করতে ব্যস্ত; কিম্বা বাংলাদেশসহ বিশ্বের প্রায় সব মুসলমান অধ্যুষিত দেশে যেখানে সংখ্যালঘুরা তীব্র নির্যাতন, নিপীড়ণে অস্তিত্ত্ব সংকটে ভুগছেন, সেখানে হঠাৎ করে হিন্দুধর্মকে খাঁড়ার নিচে টেনে আনবার দরকার কি? এর উত্তরে বলা যায় হিন্দু পরিবারে জন্মগ্রহণ করবার কারণে এতবেশি এসব কুসংস্কার, অজ্ঞানতা, অন্ধবিশ্বাস আর কূপমণ্ডূকতার সম্মুখীন হতে হয়েছে যে যারপরনাই তিতিবিরক্ত হয়ে এই লেখাটির প্রস্তাবনা করতে হল।

হিন্দুধর্মের এসব বালখিল্য সংস্কার, রীতিনীতির কথা বলতে গেলে আসলে তা কয়েকটি মহাকাব্যের সমান হয়ে যাবে। এই ধর্মের প্রায় পুরোটাই এসব দিয়ে ভর্তি। যেমন আমরা যদি কূমারী পূজার কথা ধরি যা বাংলাদেশে মূলত দূর্গাপূজার অষ্টমী কিম্বা নবমীতিথিতে পালন করা হয়। এই প্রথাটি একটি চরম নারীবিদ্বেষী ও পুরুষতান্ত্রিক থিমের উপর দাঁড়িয়ে আছে। এই পূজায় একজন প্রাক ঋতুমতী মেয়েশিশুকে যোগাড় করা হয় ও তার পূজা করা হয়। প্রাক ঋতুমতী কেন? কারণ ঋতুস্রাব হয়ে গেলে সেই মেয়ে বা নারী আর নিষ্পাপ বা পবিত্র থাকে না। তা সে পরবর্তী জীবনে যত ভালো কাজই করুক না কেন। আর প্রায় একশভাগ ক্ষেত্রেই সেই মেয়েটি ব্রাহ্মণ পরিবারের হয়ে থাকে। কারণ কে না জানে যে তারা সৃষ্টি হয়েছে ব্রহ্মার মাথা থেকে। তাই তাদের সাথেই স্রষ্টার একেবারে ডাইরেক্ট হটলাইন। সবচেয়ে হতাশার বিষয় হচ্ছে এই হাস্যকর ও আধুনিক সভ্যজগতের সাথে চুড়ান্ত বেমানান প্রথাটি নিয়ে বিপুলসংখ্যক হিন্দুধর্মাবলম্বীদের আদিখ্যেতা বা আদেখলাপনা একেবারেই মাত্রাছাড়া বা সীমাহীন।

শুধু তাই নয় মেয়েদের মাসিক বা ঋতুস্রাব হয় দেখে ভারতের অনেক মন্দিরে মহিলাদের প্রবেশই নিষেধ। মজার বিষয় হল এই নিয়ে অনেক আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত মহিলারা আবার আদালতে মামলা করেছেন তাদের প্রবেশাধিকার ফিরে পাবার জন্য। যেন এতে জিতলেই নারী স্বাধীনতার বিরাট অগ্রগতি সাধিত হবে। ধর্ম যে কিভাবে নারীসমাজের মাথায় কাঁঠাল ভেঙ্গে খেতে পারে এটা তার একটা বড় প্রমাণ। ব্যাপারটি অনেকটাই হিজাব পড়া মেয়েদের কাছ থেকে নারীস্বাধীনতার সবক নেবার মতই। অবশ্য এটা হিন্দু মুসলমান দুই ধর্মের ক্ষেত্রেই দেখা যায় যে মেয়েরাই এর পক্ষে সবচেয়ে বড় অন্ধ সমর্থক হয়।

তবে হিন্দুধর্ম একটি ব্যাপারে অন্য সবাইকে একেবারে টেক্কা দিয়ে থাকে। সেটি হচ্ছে ধর্মের মাধ্যমে শ্রেণীস্বার্থ বা আর্থসামাজিক অবস্থানকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেয়া। হিন্দুধর্মের জাতিভেদ পৃথিবীর সমগ্র ধর্মসমূহের মধ্যে একেবারে ইউনিক। মানুষকে তার জন্মের দ্বারা শ্রেণিবিভেদ করা ও এর মাধ্যমে কোটারী স্বার্থ ও স্বজনপ্রিয়তার অনানুষ্ঠানিক কিন্তু দৃঢ় রুপ দেয়ার একমাত্র উদাহরণ হিন্দুধর্ম। দূর্ভাগ্যজনকভাবে পৃথিবী অনেক এগিয়ে গেলেও হিন্দুধর্মাবলম্বীরা এখনো এর হাত থেকে মুক্তি পায়নি। বরং প্রায়ই দেখা যায় যে বিজ্ঞানে উচ্চশিক্ষিত ব্যক্তিরাও এই জাতভেদের বাইরে গিয়ে চিন্তা করতে পারেনা। এমনকি উন্নত বিশ্বে বসবাস করেও তারা এই অন্ধবিশ্বাসের হাত থেকে মুক্ত নয়। এর সবচেয়ে বড় উদাহরণ পত্রিকার পাতায় হিন্দু পাত্রপাত্রী চাই বিজ্ঞাপনগুলো। সবচেয়ে অবাক লাগে বিশ্বের সেরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়ার পরও বিশ্বের হিন্দু সমাজের এক বড় অংশই এসবে বিশ্বাস করে। ভারতে ত জাতের বাইরে প্রেম বা বিয়ে করার জন্য অনার কিলিংইয়ের শিকার হবার সংখ্যা একেবারে আতংক জাগানোর মত। এমনকি নিম্নবর্ণের ছেলে হয়ে তথাকথিত উচ্চবর্ণের মেয়েকে বিয়ে বা নিদেনপক্ষে প্রেম করার অপরাধে সেই ছেলের বংশকে একেবারে ঝাড়েবংশে নির্মূল করে দেয়ারও অনেক দৃষ্টান্ত আছে।

জাতপাতের নামে ভারতবর্ষের এক বিরাটসংখ্যক জনগণকে যেভাবে চিরন্তন শাসন, শোষণ, নিপীড়ন, লাঞ্ছণা বৈষম্যের ভেতর নিমজ্জিত করে রাখা হয়েছে আধুনিক মানবসভ্যতার ইতিহাসে তা একমাত্র আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের দাসব্যবস্থার সাথে তুলনীয়। তবে এই দাসব্যবস্থার হাত থেকে আমরা মুক্ত হলেও ভারত এখানে ব্যতিক্রম। কারণ ভারতে তা করা হচ্ছে ধর্মের মোড়কে, তাই এই জঘণ্য প্রথার হাত থেকে মুক্তির আশাও সুদূরপরাহত। ভারতে এই নিম্নবর্ণের মানুষেরা সংখ্যাগুরু ধর্মের অংশ হলেও প্রায় প্রতিক্ষেত্রেই তারা অন্য ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের থেকে অনেক বেশি বৈষম্যের শিকার হন। ব্যাপারটি অনেকটা প্রাতিষ্ঠানিকরূপ লাভ করেছে বলা যায়। যদিও তাদের জন্য প্রায় সবকিছুতেই আসন সংরক্ষ্ণের ব্যাবস্থা আছে। কিন্তু কার্যক্ষেত্রে দেখা যায় এই সংরক্ষিত আসনের প্রায় বেশিরভাগই ফাঁকা থেকে যায়। যেমন কিছুদিন ধরেই ভারতের উত্তরপ্রদেশের শাহারানপুরে উচ্চবর্ণের ঠাকুরদের নিম্নবর্ণের দলিতদের উপর দীর্ঘদিন ধরে চালিয়ে যাওয়া অত্যাচার নির্যাতনের বিরুদ্ধে আন্দোলন চলে আসছিল। সেখানেও দেখা যায় এই আন্দোলন প্রশমিত করার জন্য প্রশাসন যে ব্যবস্থা নিয়েছে তাতে দলিতরাই বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। হতাহত এবং গ্রেফতারকৃতদের প্রায় সবাই দলিত সম্প্রদায়ভুক্ত।

বলাই বাহুল্য হিন্দুধর্মের বালখিল্য বা চরম হাস্যকর রীতিনীতির কথা বলতে গেলে শেষ হবে না। যদিও হাস্যকর বলছি এগুলো প্রকারান্তরে সমাজ বা রাষ্ট্রের জন্য ভীষণ ক্ষতিকর বা ভয়ংকর হয়ে দাঁড়ায়। কারণ এর প্রতি মানুষের অন্ধ আনুগত্য। যেমন এই একবিংশ শতকে এই রকেট সায়েন্সের যুগে দাঁড়িয়ে হনুমান বা গণেশকে দেবতা হিসেবে পূজা করা এর অন্যতম উদাহরণ। এও দেখা গেছে যে ভারতে রকেট উৎক্ষেপণের আগে গণেশ বা অন্য দেবতাদের পূজা দেয়া হয়েছে। একটি নতুন ফাইটার বিমান কমিশনের আগে পূজা দেবার দৃশ্যত ইন্টারনেটে বহুল প্রচলিত। এছাড়া গণেশের ঘাড়ে হাতির মাথা বসানোকে দুনিয়ার প্রথম প্লাস্টিক সার্জারী হিসেবে দাবী করা লোকে সংখ্যাও এই ধর্মে একেবারে কম নেই। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীই এর মধ্যে একজন। দেবরাজ ইন্দ্রের বজ্রকে মিসাইলের আদিরূপ ভাবা কিংবা কুবেরের পুষ্পক রথকে বিমানের পূর্বসূরী হিসেবে ভাবার মানুষও এই ধর্মে অগুনতি। সম্প্রতি ভারতের এক ন্যাশনাল সাইন্স কনফারেন্সে এই তথাকথিত বেদিক সাইন্সের উপর এক বিশাল প্রবন্ধও উপস্থাপন করা হয়েছে। সবচেয়ে হতাশার ব্যাপার হচ্ছে বিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখায় সর্বোচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত বিপুলসংখ্যক মানুষ এতে দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করেন। তবে সম্ভবত এই ধর্মের মধ্যে বিজ্ঞান আবিষ্কারের বিষয়টি তারা মুসলমানদের কাছ থেকে ধার নিয়েছেন। শুধু একটু দেরী হল এই যা!

এসব মধ্যযুগীয় ধ্যানধারণার বিরুদ্ধে যে সংস্কারে্র চেষ্টা একেবারে হয়নি তাও নয়। এক্ষেত্রে উনবিংশ শতকের সংস্কারক রাজা রামমোহন রায় কিংবা ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের কথা বলা যায়। কিন্তু তারা যদি এখন জন্ম নিতেন তাহলে কতটুকু কি পারতেন সেব্যাপারে আমি ঘোর সন্দিহান। এই বিজেপি আরএসএস এর বাড়বাড়ন্তের যুগে তাদের যে দেশদ্রোহী তকমা খেতাব পেতে হত না, তা নিশ্চিত করে বলা যায় না। উপরন্তু বিধবাবিবাহ আইন চালু হলেও হিন্দুসমাজে বিধবাবিবাহ এখনও একটি ট্যাবু হিসেবেই রয়ে গেছে। শহুরে শিক্ষিত সম্প্রদায়ের মধ্যে এর সামান্য কিছু প্রচলন থাকলেও গ্রামীণ হিন্দুসমাজে এর প্রায় একদমই কোনো অস্তিত্ত্ব নেই। এমনকি বিধবাবিবাহের ক্ষেত্রে অনেক সময় এই বিবাহে ইচ্ছুক ছেলে খুঁজে পাওয়াই দায় হয়ে ওঠে। আর রাজা রামমোহন রায় ত হিন্দু ধর্মে কুসংস্কারের ব্যপ্তি দেখে এর আমূল সংস্কারের চেষ্টা বাদ দিয়ে প্রায় আলাদা একটি ধর্মমতই চালু করেছিলেন। যদিও সেই ব্রাম্মধর্মও কালের বিবর্তনে হিন্দুধর্মে লীন হয়ে গেছে। এর কুসংস্কারের শক্তি এতই ব্যাপক ও সর্বগ্রাসী। এখানে বাবাসাহেব ভীমরাও আম্বেদকারের কথাও উল্লেখ করা যায়। তিনি অবশ্য বিংশ শতকের লোক ও ভারতের সংবিধানের প্রণেতা। তিনি দলিত পরিবারে জন্মগ্রহণ করে এই জাতিভেদের ভয়াল ও কদর্য রূপ দেখে এর সংস্কারের চিন্তাভাবনা করেছিলেন। পরে অবশ্য সবছেড়েছুড়ে শেষ বয়সে বৌদ্ধ ধর্মে দীক্ষিত হয়েছিলেন।

পরিশেষে শেষ করছি একটি উদাহরণ দিয়ে। বাংলাদেশে বর্তমানে যে হিন্দু আইন প্রচলিত আছে তা প্রায় মধ্যযুগ থেকেই অপরিবর্তিত অবস্থায় আছে। এতে নারীর কোনো অধিকারের কথাই বলা হয়নি। অবশ্য এতে হিন্দু উচ্চশিক্ষিত থেকে অশিক্ষিত নারীদের কোনোই মাথাব্যাথা নেই। তারা শাখা সিঁদুর পরে এয়োস্ত্রীর পরিচয় পেলেই ধন্য ধন্য করেন। যাইহোক এই আইনটির পর্যালোচনার ব্যাপারে কয়েকবছর আগে বেশ কথাবার্তা হচ্ছিল। কিন্তু দেখা গেল যে এর বিরুদ্ধে সবচেয়ে জোরালো প্রতিবাদ এসেছিলো হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের ভেতর থেকেই। এর একটা বড় অংশই ছিল আবার তথাকথিত হিন্দু ধর্মীয়গুরু নামধারী। আরও তাজ্জব ব্যাপার হচ্ছে এই প্রতিবাদকারীদের মধ্যে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক নারীও ছিলেন। তাই আপাতত হা হতোস্মী করা ছাড়া আর কোনো উপায় নেই।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.