![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
এক সময় আমরা সবাই মানুষ ছিলাম।হঠাৎ করে তখন এক ভণ্ডু খোদার আবিষ্কার হল।শুরু হয়ে গেলে ধর্মের/খোদার দলের দালালী(মানুষের মধ্যে মারামারি হানাহানি)ভণ্ডু খোদার এক বিশেষ দালাল হল ইসলামধর্মের নবী মুহাম্মদ।ধর্মিয় বই নাকি আসমান থেকে এসেছ,আরে বোকার দল তাহলে তদের মালিককে বল আমাকে একটি আইটির বিশেষ বই দিতে।আমি আইটির ব্যবহার ও উন্নত মান দিয়ে তোদের খোদা হওয়ার দাবী করব।তোমরা বল কোরান,বাইবেল, গীতা আরও কত্তকিছু উপর হতে এসেছে।তোমরা কি দেখনা এখন মানুষ উপর(চন্দ্র,মংগল ইত্যাদিতে ভ্রমণ করছে)চোখ খুল মানুষ, চোখ খুল।
অন্ধকারের রঙ কী? কালো? আমিও তাই জানতাম। অন্ধকার মানে আলোর অনুপস্থিতি, অন্ধকার মানে নিকষ কালো। কিন্তু ইদানীং আমার মনে হচ্ছে আমরা ভুল জানতাম, অথবা আমাদের এ অঞ্চলের প্রেক্ষাপটে কথাটা ভুল। এখানে আঁধারের রঙ কালো নয়, এখানে আঁধারের রঙ লাল। গাড় টকটকে লাল। এখানে আঁধার কোন বিমূর্ত ধারণা নয়,এখানে আঁধার লাল রঙের তরল পদার্থ। এ অঞ্চলটিতে আলো খুব কমই এসেছে,তবে এত আধার আসেনি আগে। এ অঞ্চলে এর আগেও এসেছে কালো অন্ধকার, কিন্তু লাল রঙের অন্ধকারের সাথে এত ঘনিষ্ট সম্পর্ক আগে কখনও সৃষ্টি হয়নি। প্রথমে লাল রঙের আঁধারকে ভেবেছিলাম আলো। ভেবেছিলাম এই লাল,কালো অন্ধকারকে ধুয়ে মুছে আলোকিত করবে পূর্বদিগন্তে নতুন সূর্যের মত। কিন্তু না, আমরা এখন বুঝতে পারছি এখানে অন্ধকারের রঙই হল লাল। দেশের সব থেকে আধুনিক, মানবিক ও বিজ্ঞানমনস্ক মানুষগুলোর রক্তের মত লাল।
মগজ পঁচে গেলে শরীর ঠিক থাকবে- এমনটা ভাবা বাতুলতা। মগজ পঁচে গেছে, অথবা পঁচিয়ে ফেলা হচ্ছে। তাই দেশ নামের সমগ্র শরীরটিতেই দেখা যাচ্ছে নানা রকম দুরারোগ্য ব্যধির উপসর্গ। অসুস্থ মানুষের অসুস্থ অনুভূতি প্রবল হয়। এখানেও হয়েছে। এখানেও সকলের একটি অনুভূতি অত্যন্ত প্রবল হয়ে দেখা দিয়েছে। প্রধাণমন্ত্রি থেকে রাস্তার ভিক্ষুক সকলেরই এই অনুভূতি অত্যন্ত তীব্র এখন। অনুভূতিটির নাম ‘ধর্মানুভূতি’। অন্য সকল অনুভূতির থেকে এই অনুভূতিই এখন প্রবল, অল্প স্পর্শতে কিংবা স্পর্শ না পেলেও হঠাৎই কাতর হয়ে ওঠে এই অনুভূতি। প্রধানমন্ত্রী আঘাত প্রাপ্ত হন, আমলা আঘাত প্রাপ্ত হন, রিকশাওয়ালা আঘাত প্রাপ্ত হন, গুলিস্তান মোড়ের লুলা ভিক্ষুক আঘাতপ্রাপ্ত হন , এমনকি এই অনুভূতির আঘাতে আঘাতপ্রাপ্ত হয় ধর্ষক, খুনী এবং স্বয়ং ইবলিস শয়তান। বিচিত্র অনুভূতি আঘাত প্রাপ্ত হয় অতি সহজেই। স্পর্শ করলেই এ কাতর হয়, অনেক সময় হয় স্পর্শ না করলেও।
এদেশের প্রতিটি মানুষ অত্যন্ত ধার্মিক। এদেশের ধার্মিকরা শৌচকর্ম থেকে শুরু করে যৌনকর্ম, ভাত খাওয়া থেকে শুরু করে ঘুষ খাওয়া- প্রতিটি কাজের আগে ও পরেই ব্যাপক ধর্মকর্ম করে। বিসমিল্লা,ইনশাল্লা,আলহামদুলিল্লাতে মুখরিত করে প্রতিটি দিনের প্রতিটি কার্যক্রম। এরা প্রচুর নামায পড়ে,মসজিদে যায়গা হয়না,তাই রাস্তা বন্ধ করে নামায পড়ে। ধর্ম পালন করলে যদি ‘রহমত’ বর্ষিত হত তাহলে এদেশ এখন হত জান্নাতুল ফেরদৌস। কিন্তু এদেশ এখন পরিণত হয়েছে হাবিয়া দোযখে। মুসলমানদের পৌরাণিক কাহিনী কুরানে যে ইবলিসের কথা বলা হয়েছে সেও ছিল অত্যাধিক সৎ, এদেশের ধার্মিকদের থেকে। বিচিত্র এই ধর্ম ও সেই অনুভূতিকে রক্ষা করতে হয় ভয়াবহ সব ‘অপশক্তি’র থেকে। ভয়াবহ সেই অপশক্তি গুলো হল- ব্লগ,ফেসবুক,প্রগতিশীল চিন্তা চেতনা,লেখালেখি কিংবা সেতার। এই ভয়াবহ অপশক্তির চর্চাকারীদের তাই থামিয়ে দিতে বদ্ধপরিকর অত্যাধিক ধার্মিকরা। অত্যাধিক ধার্মিকদের থেকে ‘একটু কম ধার্মিক’রা নিজেরা সেই কাজটি করতে না পারলেও অত্যন্ত খুশি হয় অত্যাধিকদের এই কর্মকান্ডে। অরগাজমের থেকেও বেশি সুখের সেই অনুভূতি।
এদেশে এত অন্ধকার আগে কখনও এসেছিল কি? এত বোরখা বেড়েছে চারদিকে,তার সাথে বেড়েছে ধর্ষন। এত ‘ধর্মপ্রাণ মুসল্লি’ বেড়েছে মসজিদগুলোতে,সেই সাথে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে দুর্নীতি। এত ধার্মিক সৃষ্টি হয়েছে এখানে,সেই সাথে সৃষ্টি হয়েছে অজ্ঞতা-কুসংস্কার। নিকৃষ্টদের রাজত্বে উৎকৃষ্টরা প্রাণ হারানোর আশংকায় দিন যাপন করছেন,রাত অতিবাহিত করছেন। মানসিক যন্ত্রণা নিয়ে প্রতিটি মুহূর্তে বেঁচে থাকার চেষ্টা করছেন মানুষ গুলো। একরাশ উৎকন্ঠা আর ভয় নিয়ে বেঁচে আছে তাদের প্রিয় মানুষ আর পরিবারের সদস্যরা। আর আমাদের নির্বোধ মন্ত্রীরা করে চলেছেন অপলাপ। বলছেন তারা কিভাবে আঘাতপ্রাপ্ত হচ্ছেন। গলা এবং মাথায় চাপাতির কোপের থেকেও ভয়াবহ সেই আঘাত। নির্বোধ জনগণের মন্ত্রীরাও যে নির্বোধ হবেন এই স্বাভাবিক। নিকৃষ্ট জনগণের নেতাও হবেন নিকৃষ্ট। নিকৃষ্ট না হলে টিকে থাকতে পারবেন না তিনি নেতা হিসেবে।তাই নেতা হওয়ার স্বার্থে, টিকে থাকার স্বার্থেই তাঁকে হতে হবে নিকৃষ্টতম।
আবুল মনসুর আহমেদ নামে আওয়ামিলীগের একজন স্বনামধন্য নেতা ছিলেন। ১৯৫৪ সালের যুক্তফ্রন্ট নির্বাচনের ২১ দফার রচয়িতা ছিলেন তিনি,পরে হয়েছিলেন মন্ত্রী। আওয়ামিলীগের এই নেতা ছিলেন ‘পর্ন লেখক’। গল্পের ছলে পর্ন লিখতেন তিনি। হুযুরে কেবলা, ধর্মরাজ্য, নায়েবে নবী, লীডরে কওম, আহলে সুন্নত সহ আরও অসংখ্য গল্পে তিনি পর্ন লিখেছেন। প্রধানমন্ত্রী হয়তো নিজ দলের একসময়ের এই ডাকসাইটে নেতার পর্ন লেখকের লেখার সাথে পরিচিত নন। তাই তিনি একালের পর্ন লেখকদের অভিসম্পাত করেছেন। প্রধানমন্ত্রী প্রায়শই আরও অনেক প্রতিষ্ঠিত পর্ন লেখকদের সুনাম করেন,হয়তো তিনি পরিচিত নন তাদের লেখার সাথে। যেমন বেগম রোকেয়া,কাজী নজরুল ইসলাম,লালন। বিরোধীদলে থাকাকালীন সময়ে দেশের বিখ্যাত পর্ন লেখক হুমায়ুন আজাদকে দেখতে পায়ে হেটে হাসপাতালে গিয়েছিলেন তিনি। জানলে হয়তো যেতেন না। অথবা হয়তো প্রধানমন্ত্রী হলেই নির্বোধদের সাথে গলা মিলিয়ে নির্বোধের মত কথা বলতে হয়।
আচ্ছা আপনাদের মধ্যে কেউ কি এখনও স্বপ্ন দেখেন? কেউ কি জানেন উত্তরণের উপায়? কতটুকু পতন হলে বলা যাবে এটাই পতনের শেষ সীমা? দেশ পাকিস্তান,আফগানিস্তান বা সিরিয়া হলে? আমাদের যাত্রা যে সেদিকেই। বাকি সব কিছু অর্থহীন। আমরা এখন বন্ধ্যা হয়ে গেছি। আমাদের মস্তিষ্ক বন্ধ্যা হয়ে গেছে। আমরা এখন কিছু লিখিনা,লিখলেও সেগুলো একরাশ হতাশার উপাখ্যান ছাড়া আর কিছু হয়না। কার জন্য লিখব? কাদের জন্য লিখব? প্রতিনিয়ত মৃত্যুভয় আর মানসিক যন্ত্রণা আমাদের আষ্ট্র-পৃষ্টে বেঁধে ফেলেছে। জ্ঞান বিজ্ঞান আর মানবিকতার আলো এভাবেই নিভে যাচ্ছে। অন্ধকার গ্রাস করে নিচ্ছে আমাদের কিংবা নিয়েছে ইতিমধ্যেই। এই অন্ধকারের রঙ লাল। গাড় টকটকে লাল। এবং আমাদেরই রক্তে ধীরে ধীরে গাঢ় হচ্ছে এই লাল অন্ধকার।
এখানে আঁধারের রঙ লাল
এখানে স্বপ্নের রঙ কালো,
এখন উন্মাদের রক্তকেলির কাল-
এখানে চাপাতির কোপে রক্তাক্ত জ্ঞানের আলো।
©somewhere in net ltd.