নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

Criticism is our fundamental right. The revolution will come only from our pen #save constitution

Titanic

এক সময় আমরা সবাই মানুষ ছিলাম।হঠাৎ করে তখন এক ভণ্ডু খোদার আবিষ্কার হল।শুরু হয়ে গেলে ধর্মের/খোদার দলের দালালী(মানুষের মধ্যে মারামারি হানাহানি)ভণ্ডু খোদার এক বিশেষ দালাল হল ইসলামধর্মের নবী মুহাম্মদ।ধর্মিয় বই নাকি আসমান থেকে এসেছ,আরে বোকার দল তাহলে তদের মালিককে বল আমাকে একটি আইটির বিশেষ বই দিতে।আমি আইটির ব্যবহার ও উন্নত মান দিয়ে তোদের খোদা হওয়ার দাবী করব।তোমরা বল কোরান,বাইবেল, গীতা আরও কত্তকিছু উপর হতে এসেছে।তোমরা কি দেখনা এখন মানুষ উপর(চন্দ্র,মংগল ইত্যাদিতে ভ্রমণ করছে)চোখ খুল মানুষ, চোখ খুল।

Titanic › বিস্তারিত পোস্টঃ

সাম্প্রদায়িকতা

২৯ শে অক্টোবর, ২০২০ রাত ১২:১০



বাঙালির সনাতন ধর্মীয় উৎসব ‘দূর্গা পূজা’ শুরু হওয়ার সাথে সাথে প্রাসঙ্গিকতার কারণে ফেসবুকের নিউজ ফিড ভরে উঠলো বাংলাদেশের সাম্প্রতিক ঘটনাবলীর আলোকে “বাংলাদেশের মানুষের মনোভাব কি সাম্প্রদায়িক নাকি অসাম্প্রদায়িক”, তাদের আচার আচরন নিয়ে ব্যাখ্যা আর বিশ্লেষণে। রোজই সেসব পড়ি আর আমার সেই পুরাতন সমস্যা আবার জেগে উঠে, যার বিশ্লেষণ পড়ি তার কথাই আমার ঠিক বলে মনে হয়।

একদল লিখলো, “ধর্ম যার যার কিন্তু উৎসব সবার” … তাহলে গুগলে প্রতিমা ভাঙা কিংবা মণ্ডপ ভাঙা লিখে সার্চ দিলে, লাইন ধরে যা আসে তা কোন মনোভাবের পরিচয় বহন করে?

অভিনেত্রী মৌ, মিথিলা, নুসরাত ফারিয়া, ক্রিকেটার মুশফিক, লিটন দাশ দুর্গা পূজার মডেলিং করে কিংবা শারদীয়া শুভেচ্ছা জানিয়ে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলোতে চরমভাবে নিগৃহীত হয়েছে। তাদের পোস্ট গুলোতে যারা মন্তব্য করেছে তারা রাজনৈতিক কোন নেতা নয়, ক্যাডার নয়, ওলামা লীগের সদস্য নয়। তারা বাংলাদেশের সাধারণ মানুষ, যারা সামাজিকভাবে দেশে অন্যদের থেকে বেশি সুবিধা ভোগ করে, কারণ ফেসবুকে কমেন্ট করার মতো সঙ্গতি তাদের আছে।

কেউ কেউ অসাম্প্রদায়িক মনোভাবের উদাহরণ টানতে, একজন টুপি পরা ভ্যান চালকের ভ্যান গাড়িতে দুর্গা প্রতিমা নিয়ে যাওয়ার ছবিটিকে বারবার তুলে ধরেছে আবার কেউ কেউ পাজামা পাঞ্জাবিপরা ছোট শিশুটির মন্দিরের দরজায় দাঁড়িয়ে ঠাকুর দেখার ছবিটি টেনেছে। এ-ছবি দুটো যদি অসাম্প্রদায়িকতার প্রমাণ হয়, তাহলে শত শত মণ্ডপ তছনছ করা, প্রতিমা ভাঙার ছবি কিসের সাক্ষ্য বহন করে?

এবার একটু ইতিহাসের দিকে তাকাইঃ

বৃটিশরা ভারতবর্ষ ভাগ করেছিলো ধর্মের ভিত্তিতে।

একটা দেশ গঠনে চারটি উপাদান লাগে বলে আমরা জানি। সেখানে ভৌগোলিক অবস্থান, জাতীয়তা, ভাষা তিনটি মৌলিক উপাদান আমাদের বিপক্ষে থাকা সত্ত্বেও শুধু ধর্মীয় কারণে বাংলাদেশকে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান নাম দিয়ে ২২০৪ কিলোমিটার দূরে পাকিস্তানের লেজুড়ের সাথে জুড়ে দেয়া হয়। খাদ্য অভ্যাস, পোশাক, সংস্কৃতি ইত্যাদির পার্থক্যতো বাইরেই থাকলো। আকাশপথ ছাড়া সরাসরি একই দেশের দু প্রান্তে আসা যাওয়ার আর কোন সুযোগ ছিলো না। অন্য একদেশ মাঝখানে পেরিয়ে পাকিস্তানের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে যেতে হতো।

বৃটিশেরা আমাদের মধ্যে ‘সাম্প্রদায়িকতা’ ঢুকিয়ে দিয়ে গেছে এমন আবোল তাবোল ভাবার কোন সুযোগ বা যুক্তি নেই। বৃটিশেরা দু’শ বছর ভারতবর্ষ শাসন করে জেনে গেছিলো, ভারতীয় উপমহাদেশের মানুষের দুর্বল স্থান কোনটি, কোথায় আমাদের লাগে। আমাদের কাতরতা কোনটি নিয়ে বেশি, কী করলে আজীবন আমাদের মধ্যে পারস্পরিক ঘৃণার চর্চা কখনো শেষ হবে না। তারা উপযুক্ত স্পর্শকাতর স্থানটুকু চিহ্নিত করে ব্যবহার করেছে মাত্র। চিঙ্গারি গরমই ছিলো, শুধু আগুনটুকু ঠুকে দিয়েছে তারা।

সাম্প্রদায়িকতা ভারতবর্ষের মানুষের রক্তে রক্তে। বহু বছরের চর্চা আমাদের। আমাদের ইতিহাস এর সাক্ষী। ১৯৪২ এ বৃটিশ বিরোধী আন্দোলনে বৃটিশ সৈন্যরা যতো ভারতীয় মেরেছিলো তার চেয়ে অনেক বেশি মানুষ দেশভাগের সময় দাঙ্গায় মারা গিয়েছিলো। ১৯৭১ সালে ঝরেছে তিরিশ লক্ষ তাজা প্রাণ। ১৯৭১ সালের যুদ্ধেও ধর্ম প্রধান হাতিয়ার হিসেবে বাঙালির বিরুদ্ধে অবাঙালিরা ব্যবহার করেছিলো।

রবীন্দ্রনাথকে সাক্ষী রাখছি, “আজ আমরা সকলেই এই কথা বলিয়া আক্ষেপ করিতেছি যে, ইংরেজ মুসলমানদিগকে গোপনে হিন্দুর বিরুদ্ধে উত্তেজিত করিয়া দিতেছে। কথাটা যদি সত্যই হয় তবে ইংরেজের বিরুদ্ধে রাগ করিব কেন। দেশের মধ্যে যতগুলি সুযোগ আছে ইংরেজ তাহা নিজের দিকে টানিবে না, ইংরেজকে আমরা এতবড়ো নির্বোধ বলিয়া নিশ্চিন্ত হইয়া থাকিব এমন কী কারণ ঘটিয়াছে।

মুসলমানকে যে হিন্দুর বিরুদ্ধে লাগানো যাইতে পারে এই তথ্যটাই ভাবিয়া দেখিবার বিষয়, কে লাগাইল সেটা তত গুরুতর বিষয় নয়। শনি তো ছিদ্র না পাইলে প্রবেশ করিতে পারে না; অতএব শনির চেয়ে ছিদ্র সম্বন্ধেই সাবধান হইতে হইবে। আমাদের মধ্যে যেখানে পাপ আছে শত্রু সেখানে জোর করিবেই– আজ যদি না করে তো কাল করিবে, এক শত্রু যদি না করে তো অন্য শত্রু করিবে– অতএব শত্রুকে দোষ না দিয়া পাপকেই ধিক্কার দিতে হইবে।

হিন্দু-মুসলমানের সম্বন্ধ লইয়া আমাদের দেশের একটা পাপ আছে; এ পাপ অনেক দিন হইতে চলিয়া আসিতেছে। ইহার যা ফল তাহা না ভোগ করিয়া আমাদের কোনোমতেই নিষ্কৃতি নাই। ”

শুধু ধর্ম কেন? ধোপা-নাপিত পেশা থেকে শুরু করে গায়ের কালো রঙ, চোখের কটা রঙ, নাক চ্যাপ্টা না থ্যাবড়া, বা হাতি কি ডান হাতি, বেঁটে, মোটা, হিজড়া, সমকামী কি নিয়ে ভারতবর্ষের মানুষের মধ্যে সাম্প্রদায়িকতা বা রেসিজম কাজ করে না? সাম্প্রদায়িকতার ভিত্তিতেই ভারতবর্ষ ভেঙে তিন জাতির সৃষ্টি হয়েছে, আমাদের রক্তাক্ত ইতিহাস অন্তত তাই বলে। সেখানে “যা সত্যি নয়, তাই প্রমাণের চেষ্টা” কিছুটা বেদনার, বেশিটা শিশুসুলভ। বরং তারচেয়ে আমরা মেনে নেই, জাতিগতভাবে বংশানুক্রমে আমরা সাম্প্রদায়িক মনোভাব ধারণ করি, লালন করি। সমস্যাটা মেনে নেয়া বা চিহ্নিত করা সমাধানের পথ খোঁজার প্রথম ধাপ। অসুখ ধরা পড়লে চিকিৎসার পন্থা ঠিক করা যায় আর আরোগ্য লাভের পথে আগানো যায়।

২৪/১০/২০১৫

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.