নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

Criticism is our fundamental right. The revolution will come only from our pen #save constitution

Titanic

এক সময় আমরা সবাই মানুষ ছিলাম।হঠাৎ করে তখন এক ভণ্ডু খোদার আবিষ্কার হল।শুরু হয়ে গেলে ধর্মের/খোদার দলের দালালী(মানুষের মধ্যে মারামারি হানাহানি)ভণ্ডু খোদার এক বিশেষ দালাল হল ইসলামধর্মের নবী মুহাম্মদ।ধর্মিয় বই নাকি আসমান থেকে এসেছ,আরে বোকার দল তাহলে তদের মালিককে বল আমাকে একটি আইটির বিশেষ বই দিতে।আমি আইটির ব্যবহার ও উন্নত মান দিয়ে তোদের খোদা হওয়ার দাবী করব।তোমরা বল কোরান,বাইবেল, গীতা আরও কত্তকিছু উপর হতে এসেছে।তোমরা কি দেখনা এখন মানুষ উপর(চন্দ্র,মংগল ইত্যাদিতে ভ্রমণ করছে)চোখ খুল মানুষ, চোখ খুল।

Titanic › বিস্তারিত পোস্টঃ

বিজ্ঞানমনস্কতা, বিজ্ঞানচর্চা, কুসংস্কার ও বাংলাদেশ রাষ্ট্রের ভুমিকা

০৫ ই নভেম্বর, ২০২০ রাত ১:৩৫


বিজ্ঞানসম্মত প্রামান্যতার পরিবর্তে ছদ্মবিজ্ঞান ও অপবিজ্ঞানের যুক্তিহীন ভ্রান্ত ধারণাকে পোষণ করা, আচারের নামে সেই সব গোঁড়ামিকে লালন করা এবং অন্ধত্বের সাথে অনুসরণ করার নামই কুসংস্কার।
কুসংস্কারের বিরুদ্ধে লড়বার জন্য চাই বিজ্ঞান, ছদ্মবিজ্ঞান ও অপবিজ্ঞানের সম্যক অনুধাবন ও বোধগম্যতা। সংজ্ঞা বিচারেঃ
– বিজ্ঞান হচ্ছে বস্তুজগতের নিয়মকে বুঝবার একটি সমন্বিত মানবিক প্রচেষ্টা। সে লক্ষ্যে ভৌত বিশ্বের যা কিছু পর্যবেক্ষণযোগ্য, পরীক্ষণযোগ্য ও যাচাইযোগ্য, তার সুশৃঙ্খল, নিয়মতান্ত্রিক গবেষণা ও সেই গবেষণালব্ধ জ্ঞানভাণ্ডারের নাম বিজ্ঞান।
– বৈজ্ঞানিক তথ্যগুলোকে যুক্তি ছাড়াই অমূলক ব্যাখ্যা দেয়াটা হচ্ছে অপবিজ্ঞান; অমূলক ধ্যান ধারনাকে বিজ্ঞানের নামে চালিয়ে দেয়া। যেমন জ্যোতিষ শাস্ত্র বা অ্যাসট্রোলজি, সংখ্যাতত্ত্ব বা নিউমেরোলজি বা অশরীরী আত্মা ও প্রেতাত্মা বা ভূত-প্রেত-জ্বিন ইত্যাদি। ঈশ্বর, ভগবান বা আল্লাহ’র ধারনা এই অপবিজ্ঞানকে প্রতিষ্ঠিত করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখে, কারন ঐশী এক সত্ত্বায় আস্থা রাখার প্রবণতাটি ব্যক্তিকে বিজ্ঞানমনস্কতা থেকে দূরে সরিয়ে অলৌকিকত্বের ধারনায় আস্থাশীল করে তোলে।
– নিছক কোন উক্তি, বানী, বা মন্তব্য কে মনের মাধুরীতে ঘুরিয়ে-পেঁচিয়ে বৈজ্ঞানিক তথ্যের সাথে সমন্বিত করার নাম হল ছদ্মবিজ্ঞান। সাধারণত প্রাচীন পুঁথি, পুরাণ, পৌরাণিক গল্প ও প্রচলিত গল্প থেকে বৈজ্ঞানিক নিদর্শন বের করে বিজ্ঞানের আলোকে সেটাকে মুড়ে অলৌকিকত্বের নিদর্শন হিসেবে চালানোটাই হচ্ছে ছদ্মবিজ্ঞান। কুরানে বেগ্যান, ব্যাদে বেগ্যান সেগুলোরই নিদর্শন। অশিক্ষিত সমাজে এই ধারা বেশ সাড়া পায়।
অলৌকিকত্বের জন্মই হয় পরিপূর্ণ তথ্যের অভাবে।
যতক্ষণ পর্যন্ত সেটা আপাত দৃষ্টিতে লৌকিক নিয়মের বিপরীত, ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য উপায়ে ব্যাখ্যা যোগ্য নয় ও বুদ্ধির অগম্য থাকে, ততক্ষণ সেটাতে ঐশী শক্তির সরাসরি তত্ত্বাবধান পরিলক্ষিত হয়; কিন্তু যে মূহুর্তে সেটা পরীক্ষাযোগ্য ও ব্যাখ্যাযোগ্য হয়ে ওঠে, ঐশী শক্তি সেখান থেকে লুপ্ত হয়। অপ্রমানিত অস্তিত্ব বলেই প্রকৃতপক্ষে অলৌকিক ঈশ্বরকে উপলব্ধি করা ধার্মিক বা নিধার্মিক কারো পক্ষেই সম্ভব নয়; ফলে সেটা হয়ে ওঠে বিশ্বাসজনিত ভাবালুতা ও ব্যক্তিগত অনুভূতি। আর বিশ্বাসের কোন যুক্তি কখনই থাকেনা, যুক্তি আর বিশ্বাস চিরকালই পরস্পর বিরোধী, কারন সম্যক অনুধাবন ও বোধগম্যতার জন্য জরুরী যুক্তি। চিন্তার ক্ষমতা মানুষের অন্যতম গুন। আর এই চিন্তাকে সুসংহত ভাবে ভাষায় ব্যক্ত করার বৈজ্ঞানিক ধারা হল যুক্তি; অলৌকিকতার পরিবর্তে বিজ্ঞানমনস্কতা এবং আলোচনায় যুক্তিকেই চূড়ান্ত মানদণ্ড হিসেবে গ্রহণের নীতি হচ্ছে যুক্তিবাদীর সম্যক পরিচয়।
যৌক্তিক চিন্তার বিপরীতে যাদু, ইন্দ্রজাল, মায়াবিদ্যা, গুপ্ত শক্তি, ভোজবাজি, অলৌকিক বা ঐন্দ্রজালিক সমাধান যখন মানুষের জীবনে প্রাধান্য পায়, তখন সেটা প্রগতির বিরুদ্ধাচারন করে, তখন সেটা হয়ে ওঠে যুক্তিকে অগ্রাহ্য করা দিবাস্বপ্ন বা ভাবাবেশ বা আজগুবি কল্পনা বা ফ্যান্টাসি যা চিন্তা ও মননকে বিকশিত করার পরিবর্তে ঠেলে দেয় অন্ধ বিশ্বাসের পথে। ধর্মগুলো ঐন্দ্রজালিক সমাধানে বিশ্বাস করে বলেই ধর্ম হচ্ছে মুলত রুপকথা ও ফ্যান্টাসির জগত; আর সেজন্যই ধর্মে বিশ্বাসও মানব সভ্যতার জন্য নেতিবাচক।
রূপকথা হল সংক্ষিপ্ত কাল্পনিক গদ্য বা পদ্য, যা সাময়িক ভাবে আনন্দদায়ক ও মজার, কিন্তু অলৌকিক ও অতিপ্রাকৃত ক্ষমতা বা সে ধরনের অন্যান্য উপাদানকে ব্যবহার করে বলে অত্যন্ত অভাবনীয় সব বিবরণে পরিপূর্ণ। রূপকথাগুলোতে প্রায়শই বিভিন্ন কাল্পনিক প্রাণী এবং তাদের অবিশ্বাস্য, অবাস্তব ও বিভ্রান্তিকর ঐন্দ্রজালিক সমাধানের বর্ণনা পাওয়া যায়। রূপকথার অপর একটি বৈশিষ্ট্য হচ্ছে এই গল্পগুলো মানুষের মৌখিক যোগাযোগের মাধ্যমে ছড়ায়।
ঈশ্বর ধারনার মতই রূপকথা সদৃশ ধর্মগুলোও দাবি করে নিরবিচ্ছিন্ন দৃঢ় বিশ্বাস। সেটাই আর অস্তিত্বের ভিত্তি, আর সেকারনেই প্রশ্ন বা সংশয় নিয়ে তাদের রয়েছে প্রবল আপত্তি, কখনও অনুভুতির মায়াকান্নায়, কখনও বা সহিংসতায় প্রশ্নকারীর কণ্ঠরোধেই তাদের অস্তিত্ব নির্ভর করে।
বিজ্ঞান মানুষের আস্থা বা বিশ্বাস দাবি করেনা; বিজ্ঞান দাবি করে বোধগম্যতা। বিজ্ঞান দাবি করে বিজ্ঞানমনস্কতা, বিজ্ঞান চর্চা।
বিজ্ঞানচর্চা আর বিজ্ঞানমনস্কতা সমার্থক নয়; যদিও উভয়ই গুরুত্বপূর্ণ এবং অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত। বিজ্ঞানচর্চা হলো শুধুমাত্র প্রাযুক্তিক জ্ঞানের অনুশীলনের মধ্য দিয়ে একটি নির্দিস্ট দক্ষতা অর্জন; পক্ষান্তরে বিজ্ঞানমনস্কতা হলো বুদ্ধিবৃত্তি ও বোধশক্তিতে সংস্কারমুক্ত ভাবে ক্রিটিক্যাল থিঙ্কিং বা সমালোচনামূলক চিন্তাধারায় দক্ষতা অর্জন। ক্রিটিক্যাল থিঙ্কিং এর জন্য প্রয়োজন হয় সচেতনতার, যার চরিত্র স্বতঃপ্রণোদিত, সুশৃঙ্খল, স্বসংশোধনমূলক। সচেতন চর্চার অর্থ হচ্ছে মুলত জ্ঞানার্জন, অভিজ্ঞতা এবং অনুভবের মাধ্যমে বাহ্যিক বা অভ্যন্তরীণ অনুভুতির বিজ্ঞানমনস্ক অনুধাবন, উপলব্ধি ও প্রয়োগ ।
ধর্মাশ্রয়ী বাংলাদেশের প্রতিটি অঞ্চলে আজ প্রচলিত বহুবিধ কুসংস্কার, যার ফলে যুগ যুগ ধরে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেএ অঞ্চলেরই মানবগোষ্ঠী, এবং তা কেবল স্বল্পশিক্ষিতদের মাঝেই নয়, বরং তা গেঁড়ে আছে সমাজের সর্বস্তরেই। জীবনাচারে কুসংস্কার মুক্ত হতে না শিখলে, এই ভুল ধারণাগুলোর মূলোৎপাটন অসম্ভব; অসম্ভব একটি প্রগতিশীল সমাজে পরিনত হওয়া। আমাদের ধর্মপ্রভাবান্বিত পারিবারিক শিক্ষায় এবং ধর্মমোহের সাথে আপোষকামী প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যবস্থায় যুক্তিবাদীতা ও বিজ্ঞানমনস্কতার বিষয়গুলো আজ প্রবল ভাবে অনুপস্থিত ও উপেক্ষিত।
ব্যক্তির ও গোষ্ঠীর চাইতেও রাষ্ট্রের ভুলটা এক্ষেত্রে আরও বড়। কেন এই ২০১৪ সালেও রাষ্ট্রের উদ্যোগে একটি অদ্ভুত, প্রাচীনপন্থী শিক্ষাব্যবস্থা চালু আছে যা মানুষকে মানবিক না করে প্রতিনিয়ত আরও ধর্মমুখী করে তুলছে? কেন এই শিক্ষাব্যবস্থায় অগ্রসর চিন্তাকে উৎসাহিত না করে অতীতমুখিনতা ও রুপকথায় বিশ্বাসকে উৎসাহিত করা হচ্ছে, যখন সমাজ বিকাশে সত্যিকার অর্থে জরুরি হলো যুক্তিবাদী হতে পারা; চিন্তা, চেতনা, মনন ও আচরনে শিক্ষিত, সভ্য, বিনয়ী, সংস্কৃতিবান ও মননশীল হতে পারা; বিজ্ঞান মনস্ক হতে পারা, অসাম্প্রদায়িক হতে পারা।
ধর্মনিরপেক্ষ বাংলাদেশে কেন একটি রাষ্ট্রধর্ম থাকবে? কেন এই রাষ্ট্র ধর্মকে নিয়ে সমালোচনামুলক কোন লেখাকে অপরাধ মনে করবে? কেন ধর্মানুভুতির মত খেলো একটি বিষয়কে রাষ্ট্রের নীতিনির্ধারক মহল গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করবে? কেন রাজনৈতিক দলগুলো ধর্মানুভুতিকে নিজ নিজ স্বার্থে ব্যবহারের সুযোগ পাবে?
রাষ্ট্রের এই দ্বিচারিতার মুখোশ উন্মোচন এবং দ্বৈতনীতির অবসান আশু প্রয়োজন।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.