নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

Criticism is our fundamental right. The revolution will come only from our pen #save constitution

Titanic

এক সময় আমরা সবাই মানুষ ছিলাম।হঠাৎ করে তখন এক ভণ্ডু খোদার আবিষ্কার হল।শুরু হয়ে গেলে ধর্মের/খোদার দলের দালালী(মানুষের মধ্যে মারামারি হানাহানি)ভণ্ডু খোদার এক বিশেষ দালাল হল ইসলামধর্মের নবী মুহাম্মদ।ধর্মিয় বই নাকি আসমান থেকে এসেছ,আরে বোকার দল তাহলে তদের মালিককে বল আমাকে একটি আইটির বিশেষ বই দিতে।আমি আইটির ব্যবহার ও উন্নত মান দিয়ে তোদের খোদা হওয়ার দাবী করব।তোমরা বল কোরান,বাইবেল, গীতা আরও কত্তকিছু উপর হতে এসেছে।তোমরা কি দেখনা এখন মানুষ উপর(চন্দ্র,মংগল ইত্যাদিতে ভ্রমণ করছে)চোখ খুল মানুষ, চোখ খুল।

Titanic › বিস্তারিত পোস্টঃ

মানুষ কোথায়? সব দেখি হিন্দু আর মুসলমান!

০৫ ই নভেম্বর, ২০২০ ভোর ৫:২৮



সেদিন জাফর ইকবালের একটা কলাম (খুব সম্ভবত সমকালে) পড়লাম যেখানে তিনি লিখেছেন সেই ৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় তার মা যখন একটা বিপদগ্রস্ত হিন্দু পরিবারকে আর্থিক সাহায্য করছিলেন তখন তাদের প্রতিবেশী মহিলা বলেছিলেন, সাহায্য করতে হয় কোন মুসলমানকে করুন, হিন্দুদের করলে কোন সোয়াব পাবেন না…। আমি যতদূর জানি কোন অমুসলমানের জন্য দোয়াও করা যাবে না এইরকম মত আছে ইসলামে। ছোটবেলায় দেখতাম বিটিভিতে দিনের শুরুতেই কোরআন পাঠ হতো, তারপর বাংলা তরজমা ও মোনাজাত। তারপর উদার ইসলামী রাষ্ট্রের” প্রতীক হিসেবে গীতাপাঠ নয়ত ত্রিপিটক পাঠ দেখানো হতো। সেই ছোটবেলায় একটা জিনিস খেয়াল করেছিলাম, কোরআন পাঠের পর যে বাংলা তরজমা হতো তার শেষে জোব্বা পরা মৌলবী শুধু মুসলমানদের জন্য হাত তুলে দোয়া করছেন (কেউ লিঙ্ক চাইলে দেখাতে পারবো না), পক্ষান্তরে গীতা বা ত্রিপিটক পাঠের শেষে বলা হচ্ছে, জগতের সকল প্রাণী সুখি হোক’। জগতের সকল প্রাণীর মধ্যে মুসলমান-খ্রিস্টান-ইহুদীও পড়ছে। হুজুর কিন্তু খুব সেয়ানা, পাছে হিন্দু মূর্তি পূজারী, ইহুদী, খ্রিস্টানের কল্যাণ হয়ে যায় তাই শুধু মুসলমানের জানমালের জন্য ফরিয়াদ জানাচ্ছেন!

যাই হোক, হিন্দুরা যে খুব অসাম্প্রদায়িক এ কথা এখানে বলা হচ্ছে সেরকম মনে করার কোন কারণ নেই। ধার্মীকরা পরস্পরকে কি পরিমাণ ঘৃণা আর বিদ্বেষের চোখে দেখে তার বাস্তব অভিজ্ঞতা আমার আছে। অনেক বছর আগে এক হিন্দু বন্ধুর সঙ্গে তাদের গ্রামের বাড়িতে বেড়াতে গেছি। সন্ধ্যেবেলা সে বাড়িতে কীর্তন হয়। হরে কৃষ্ণ হরে কৃষ্ণ… হরে রাম হরে রাম…। অনুষ্ঠান শেষে প্রসাদ আসে, বাতাসা, ফলমূল, সন্দেস… খেতে দারুণ লাগে। একটা হিন্দু পরিবারে থাকছি খাচ্ছি আমার কোন সমস্যা নেই। তারাও আমি মুসলমান বলে কোন সমস্যা দেখছি না। কিন্তু এক সন্ধ্যাবেলা প্রচন্ড এক ধাক্কা খেলাম। সেদিন সারা রাত পূজা দেখতে বের হবো গ্রাম ঘুরে ঘুরে, যে বাড়িতে উঠেছি সেই বৌদি জোর করে ভাত খেয়ে যেতে বলছিলেন। আমার একদম ইচ্ছা ছিল না। তার জোরাজুরিতে বললাম আচ্ছা দেন এখানেই চট করে খেয়ে নেই…বলেই ভাতের থালাটা বিছানায় রেখে খেতে যাবো, ওমা, বৌদিসহ উপস্থিত আরো দুই-একজন মহিলার চোখগুলো সব বিস্ময়ে গোল হয়ে গেলো! একজন তো জিভে কামড় দিয়ে চেয়ে রইল। আমি আমার জীবনে এতটা অবাক কোনদিন হইনি। ব্যাপারটা বুঝতে পারলাম না কি। চেয়ে রইছি বিব্রতভাবে। কিছু একটা ভয়াবহ অন্যায় করে ফেলেছি বুঝছি কিন্তু কি সেটা বুঝতে পারছি না। শেষে বৌদি বললেন, তুমি শেখের পো?

তখনো বুঝলাম না কি বলছে এই মহিলা। আমার মুখ দেখে এবার বললেন, তুমি মুসলিম?

বললাম, হ্যাঁ!

বৌদির মুখ পাংশু হয়ে গেলো। বললেন, ও!

পুরো ঘর জুড়ে তখন নিরবতা। আমার বন্ধুটি কাচুমাচু মুখে দাঁড়িয়ে আছে। ভয়ে আমার দিকে তাকাতে পারছে না। আমার মেজাজ সে জানে। ইডিয়েটটা আমার পরিচয় গোপন করেছে। সম্ভবত আমার তথাকথিত “মুসলিম” পরিচয় দিলে আমি এখানে গৃহিত হতাম না। পরে জেনেছি বিছানায় বসে ভাত খেতে চেয়েছি জেনে তাদের মনে প্রথম সন্দেহ ঢুকে আমি বিধর্মী। গ্রামদেশে খুব গোঁড়া হিন্দু পরিবারে ভাত-মাছ নিয়ে বিছানায় বসে খাওয়া নাকি এখনো কল্পনা করা যায় না। যাই হোক, আমি নিশ্চিত এই অভিজ্ঞতা আমার জায়গায় অন্য কারুর হলে সে প্রচন্ডভাবে হিন্দু বিদ্বেষী হয়ে উঠতো। কিন্তু আমি তখনই পুরোপুরি নাস্তিক, কোন রকম ধর্মীয় ভাবাবেগ নেই। আমি এটাকে দেখেছি আমাদের হিন্দু-মুসলিম সামগ্রিক চিত্র হিসেবে। এটা কোন বিছিন্ন ঘটনা ছিল না। আমরা আসলে কোনদিনই অসাম্প্রদায়িক ছিলাম না। আমরা একটা প্রচন্ড সাম্প্রদায়িক জাতি। গোটা ভারতীয় উপমহাদেশের মানুষই ঘোর সাম্প্রদায়িক। এদের কাছে পোষা ককুর-বিড়ালের মর্যাদা আছে কিন্তু ভিন্ন সম্প্রদায়ের কোন মর্যদা নেই। আমি এখনো শুনি বহু শিক্ষিত সজ্জন মানুষ এভাবে বলে, লোকটা হিন্দু হলেও খুব ভাল! (দয়া করে কেউ এর স্বপক্ষে কোন লিঙ্ক দেখতে চাইবেন না আশা করি )।

আমি যে অফিসে কাজ করি সেখানে গত রমজান মাসে ক্যান্টিন বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল। হিন্দু স্টাফরা খাবার এনে ক্যান্টিনে বসে খাবে সেটাও কর্তৃপক্ষর সহ্য হয়নি। নোটিশ দিয়ে জানানো হয়েছে, পবিত্র রমজান উপলক্ষ্যে ক্যান্টিন বন্ধ রাখা হলো। হিন্দু কর্মকর্তা, কর্মচারীগণ অফিসের বাইরে গিয়ে যেন লাঞ্চ সারে ইত্যাদি, এইরকমই ছিল তাদের বক্তব্য। এখনো পর্যন্ত আমাদের রাষ্ট্র নিয়ে হাজার অভিযোগ থাকার পরও এসব আমাদের উপর চাপিয়ে দেয়নি। রাষ্ট্র পুরোপুরি ধর্মান্ধ হয়ে যায়নি। কিন্তু তাতে আমাদের ধর্মান্ধ হতে বাঁধা নেই। এরকম হাজার হাজার বেসরকারী প্রতিষ্ঠান, মালিকের ইচ্ছা, উৎসাহী কর্মকর্তাদের নির্দেশে এসব ঘটে চলেছে রোজ। আমার মুসলিম কলিগদের দেখলাম এহেন ইসলামী সিদ্ধান্তে তাদের সহমত জানাতে। স্বাভাবিকভাবে আমার হিন্দু কলিগ বেজায় মন খারাপ করলেন। আমি জানি এখানে হিন্দুরা সংখ্যাগরিষ্ঠ হলে আর এই অফিসে এরকম কোন হিন্দুবান্ধব সিদ্ধান্ত হলে এই কলিগই সেটাকে স্বানন্দে গ্রহণ করতো সহমত জানিয়ে। কারণ আমার এই হিন্দু কলিগ আর আমার মুসলিম কলিগরা একই ছাঁচে গড়া। কেবল বিশ্বাসের পার্থক্যর কারণে একজন ফেঁসে গেছেন। নইলে এরা একই রকম সাম্প্রদায়িক চরিত্রের মানুষ। আর কেনই বা হবে না বলুন। এই সমাজের তো সবাই। একই শিক্ষা, সমাজ, রাষ্ট্র তাদের। এই পরিবেশে সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্প ছাড়া আর কি-ই বা গ্রহণ করার আছে তাদের?

এসব কথা চিন্তা করেই নিজের মধ্যে একটা প্রচন্ড তাগিদ অনুভব করলাম যে, এ খাঁচা ভাঙ্গতে হবে। কিন্তু “এ খাঁচা ভাঙ্গবো আমি কেমন করে?“ মনে করলাম আমি নিজে কিভাবে ভেঙ্গে ছিলাম? তবুও কাজটা কঠিন মনে হলো। সব মানুষ এক রকম না। সবার চিন্তার ক্লাশ এক রকম থাকে না…।

চিন্তা করলাম লোকজনকে শিক্ষিত করে তুলতে হবে। যে দেশের রাস্তার মোড়ে মোড়ে বিশ্ববিদ্যালয় দাঁড়িয়ে আছে সে দেশের মানুষকে শিক্ষিত করে তোলার কথা বলাটা বোধহয় দম্ভই হলো! কিন্তু যারা শিক্ষিত বলতে সর্টিফিকেট ও স্কুল-কলেজের প্রথা মাফিক শিক্ষায় শিক্ষিত বুঝেন না বা মানেন না তারা আমার সঙ্গে একমত হবেন যে আমার ধারনাই সঠিক। সেই লক্ষ্যে আমি আমার পরিচিত গন্ডিতে একটা পরিবর্তন আনার চেষ্টা করলাম।

বললে কেউ বিশ্বাস করবে না, সেই রুশ বিপ্লবের সময়ে বিপ্লবীরা যেমন গোপনে বইপত্র চালাচালি করতো, ইংরেজ আমলে স্বদেশীরা যেমন শরৎচন্দ্রর “পথের দাবী” আদান প্রদান করতো সেরকম করে আমি বইয়ের মলাট ফেলে দিয়ে আগ্রহীদের দিতে লাগলাম। ফলাফল হাতে হাতে পেলাম: “তোমার এই বিশ্বাস নিজের মধ্যেই রেখো, অন্যকে এর মধ্যে টেনো না!”-অগ্রজদের সদুপোদেশ আমার প্রতি। তাদের মতে আমার আদর্শ-বিশ্বাস খুবই ক্ষতিকারক সমাজের জন্য। আমি আমার সমবয়েসী অনেককেই বিদ্রোহী করে তুলেছি। অনেক পরিবারের অশান্তির কারণ আমি! আমি তাই অনেকেরই চক্ষুশূল…।

বছর পাঁচেক আগের কথা এসব। আমাকে নিয়ে এসবই ছিল পরিচিত মহলের মূল্যায়ন। আমার অপরাধ কি ছিল? আমি আমার পরিচিত মহলে বইয়ের ভাইরাস ঢুকিয়ে দিয়েছিলাম। জানার অদম্য কৌতূহ সৃষ্টি করে ছিলাম। অন্ধ বিশ্বাসের বদলে যুক্তিকে একমাত্র পাথেয় করতে শিখিয়েছিলাম। কুসংস্কারের বদলে বিজ্ঞানমনস্ক হতে শিখিয়ে ছিলাম। পাবলিক লাইব্রেরীর সদস্য করে দিয়েছি ধরে ধরে। খুবই সাধারণ এইসব মানুষ হঠাৎ বদলে যাওয়ায় প্রথা প্রিয়, সংস্কার প্রিয়দের চোখে পড়ে যায়। বিনা বাক্য ব্যয়ে এতদিন এই সুবোধ ছেলেরা যা করে এসেছে এখন তারই প্রশ্ন করছে, কি, কেন, কিভাবে? সমাজ তো ক্ষেপে যাবেই!

সত্যি সত্যি ক্ষেপে উঠেছিল আমার উপর অনেক মানুষ। (সত্যি সত্যি যে সমাজ আমার উপর ক্ষেপে গিয়েছিল এরকম কোন লিঙ্ক কিন্তু আমি দেখাতে পারবো না [মন খারাপের ইমো হবে])। যাই হোক, ব্যাপারটা যে সিরিয়াস সে সম্পর্কে আমার ধারনা ছিল না। তাদের ছেলে নামাজ পড়ে না, তাদের ছেলের দেবদেবীতে এখন ভক্তি নেই, নানা রকম উল্টাপাল্টা প্রশ্ন করে। সবচেয়ে বড় কথা তারা অসাম্প্রদায়িক হয়ে উঠেছে! এখানে বলে রাখি এমনিতে আমরা ভদ্রজন অসাম্প্রদায়িকতার কথা খুব বলি কিন্তু বাস্তবে যখন একজন মানুষ অসাম্প্রদায়িক হয়ে উঠে (যে নিজেকে কোন সম্প্রদায়ের মনে করে না) সেটা হজম করার মানসিকতা আছে কতজনের?

যাই হোক এলাকার সমাজপতিদের কাছে আমার নামে বিচার যেতে লাগলো। তারা ক্রুদ্ধ হয়ে জানতে চাইলেন, তুমি আল্লাহ-খোদা মানো না? কি আশ্চর্য, এই ছেলে ধর্ম মানে না! …

আমার অনেক বন্ধুর বাড়ির দরজাই আমার জন্য চিরদিনের জন্য বন্ধ হয়ে গেলো। প্রচলিত ধর্ম ও প্রথাকে যে প্রশ্নবিদ্ধ করে তোলে, এতদিন ধরে চলে আসা সিস্টেমকে যে বাঁধাগ্রস্ত করে তাকে তো এসব পোহাতেই হবে। লোকজনের অবস্থা দেখে অবাক হলাম। যেন ছেলে ধর্মান্তরিত হয়ে যাচ্ছে সেরকমই তাদের উদ্ববেগ। এক বন্ধুর বাবা শপথ করালেন ছেলেকে নামাজ পড়ার। শুনতে যতই অবাস্তব লাগুক, আরেক বন্ধুকে নতুন করে কলেমা পড়ানো হলো। আমার আরেক হিন্দু বন্ধু “ইয়াং বেঙ্গলদের” অনুকরণে প্রকাশ্যে গরুর বিরিয়ানী খেয়েছে বিদ্রোহের অংশ হিসেবে। তাকে বাড়িতে কান্নাকাটি করে গোবর খাওয়ানো হলো। আমি জানতাম এর মধ্যে কিছু “ঘরের ছেলে ঘরে ফিরে যাবে”। হয়েছিলও তাই। তারা শেষ পর্যন্ত ঘরেরই শুধু ফিরে যায়নি উগ্র ধর্মবাদী হয়ে উঠেছিল। বিদ্যাকে গিলে ফেললে হজম হয় না, তাকে আত্মস্থ করতে হয়। শুনেছি ইয়াং বেঙ্গলদের অনেকেই শেষ বয়েসে ধর্মের দিকে ঝুঁকে গিয়েছিলেন। মাইকেল মধুসদন দত্ত ইয়াং বেঙ্গলদের কার্যকলাপ নিয়ে ব্যঙ্গ করে প্রহসন লিখেছিলেন “একেই কি বলে সভ্যতা” নামে। আমার এক বন্ধু সদ্য নাস্তিক হয়ে ঈদে নতুন জামাই নিবে না! ঈদের দিনে বাড়িতে সেমাই খাবে না! মা কাঁদে ছেলের কীর্তিতে। তাকে বললাম, হারামজাদা, আমি আমার মার জন্য ইফতারি কিনে নিয়ে যাই। ঈদে একটা পাঞ্জাবী পেয়েছি মার কাছ থেকে সেটাও পরবো। ধর্মকর্ম করি না বাড়িতে সবাই জানে, তাই ঘাটায় না। খ্রিসমাস দেখেছিস, সারা দুনিয়ার মানুষ জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে উৎসব হিসেবে নিয়ে একটা দিন আনন্দ হৈ-হল্লা করে কাটায়। ঈদকে সেরকম করতে পারিস কিনা সেটা চেষ্টা কর। এগুলো রাতারাতি উঠে যাবে না। বরং এই উৎসবগুলোকে একটা সেক্যুলার চরিত্র দেয়া যায় কিনা সেই চেষ্টা করতে হবে। সে আমার সঙ্গে একমত হতে পারলো না। বরং আমাকেই সে ভন্ড বলে অভিহত করে ফেলল। অথচ আমার সঙ্গে চলেই তার নাস্তিকতার হাতেখড়ি। এই ২০১৩ সালে তার সঙ্গে আমার দেখা। সে এখন সাচ্চা মুসলমান। এই নাস্তিক সরকার যে সাঈদীর মত আলেমকে ফাঁসি দিচ্ছে এটা সে কোন মতেই মেনে নিতে পারছে না। বললাম, নামাজ পড়িস? সে অতান্ত দৃঢ়তা সঙ্গে বলল, নিশ্চয়! যতবার আল্লাহো আকরব বলি ততবার বুকের ভেতরে আল্লাকে অনুভব করি…।

ধর্ম মানুষের মনে ঘৃণা আর আক্রোশ কতটা এনে দিতে পারে টের পেলাম যখন আমি হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লাম। বসন্ত নামের রোগটা দুনিয়া থেকে চিরতরে চলে গেছে শুনেছিলাম। যদিও শীতলা দেবীর পূজা আজো ধুমধাম করে হয়। তো দেবীর যে পুরোপুরি প্রসার এখনো যায়নি বোধহয় সেটা জানান দিতেই আমাকে গিয়ে পাকড়াও করলো। একদিন দুপুরের পর মাথা আর শরীরের ব্যথা অনুভব করতে লাগলাম। একটু জ¦র জ্বর লাগছিল। কর্মক্ষেত্র থেকে বিকেলের আগেই বাড়ি চলে এলাম। শরীর খুব খারাপ লাগছে, শুয়ে পড়লাম। ঘুম থেকে উঠে দেখি পিঠে একটা গোটার মত, চুলকাচ্ছে, আঙ্গুল লেগে গলে গেলো। বুকের কাছেও একটা দেখতে লাগলাম। লোকে ধারনাও করতে পারলো না পক্স যে একালে এতটা ভয়াবহ হতে পারে। সেই ষাট-সত্তর বছর আগের ভয়ংকর রূপে যেন ফিরে এসেছে সে! খাওয়া-দাওয়া বন্ধ হয়ে গেলো। কারণ গলার ভেতরও গোটা উঠেছে। সারা শরীরের গোটা। বেশির ভাগ সময় চেতনা থাকে না। অনেকেই ভাবলো আমি মারা যাচ্ছি। হাত তুলে অনেকেই বলল, শুকুর আলাহামদুরিল্লাহ! আল্লাহ গজব নামছে! আল্লা খোদারে নিয়া আকথা-কুকথা কইলে এইরকমই হইব…।

আল্লাহ বলেন, আবু লাহাব তুমি ধ্বংস হও! আল্লাহ কেন আমাদের মত তুচ্ছ মানুষের সঙ্গে দ্বৈরথে নামেন? চিকিৎসা বিজ্ঞানের উন্নতির ফলে এখন অতিতের ভয়ংকর সব রোগ মামুলি হয়ে পড়েছে। ডায়রিয়া, কলেরায় এক সময় বাংলার গ্রামকে গ্রাম ছাফ হয়ে গেছে। মানুষ মানুষকে অভিশাপ দিতো, তুই ওলাউঠা হয়ে মরবি! এখন কলেরায় টিকা আবিষ্কার হয়েছে। ডায়রিয়ায় পাঁচ টাকা দিয়ে স্যালাইন কিনে চিকিৎসা করা যায়। আল্লাহ হাতে যতগুলো মরান্ত্র ছিল তার বেশির ভাগ মানুষ ভোঁতা করে ফেলছে। কারণ তিনি বলেন, এসব দিয়ে তিনি মানুষকে পরীক্ষা করেন। শাস্তি দেন। যাক এসব কথা। শেষ পর্যন্ত আমি মরলাম না। বেঁচে উঠলাম।
মানুষ জন্ম থেকে সাম্প্রদায়িক হয় না, তাকে বানানো হয়। মুসলমান বাড়ির তরকারী হিন্দু বাড়িতে গেলে সেটা নির্ঘাত ড্রেনে যাবে। মুসলমানের বাড়িও একই কথা খাটে। খাবারের মধ্যে কি লেগে থাকে? আমার এক বন্ধু হিন্দুদের দেয়া কোন খাবার খায় না। তার নাকি বমি আসে। কিরকম একটা গন্ধ পায় সে। হিন্দুদের দোকানের দই-মিষ্টি অবশ্য রাক্ষসের মত খায়। মানুষের ধর্মটা আসলে কি? আমার এই বন্ধুই যখন পতিতালয়ে গেলো তখন তার মুখ থেকেই শোনা গল্পটা বলি। যে মেয়েটাকে ফূর্তি করার জন্য নিয়েছে সে যখন জানলো তার খরিদদার আর তার বাবার নাম একই তখন সে কাজ করতে অস্বীকার করলো। বাবার নামের কাউকে সে কাজ করতে দিবে না। আমার বন্ধুটি জোর করে তার কাছ থেকে শরীর আদায় করে নিলো। হতভাগ্য মেয়েটির শিশুটি তখন চৌকির এক কোণায় খিদের জ্বালায় চিৎকার করে কাঁদছিল। মেয়েটা বিধ্বস্ততা শেষে উঠে বাচ্ছাটাকে দুধ খাওয়ায়।…মানুষের ধর্ম আমার কাছে এইরকমই। সমাজ বিতাড়িত, পাপীষ্ঠ, পতিত এই মেয়েটির ধর্ম আসলে আমার ধর্ম। বিবেক, বিবেকই ধর্ম…। যে বন্ধুটির কথা বললাম, সে রমজানের এক মাস কোন রকম “পাপ কাজ” করে না। যেমন, হিন্দী সিনেমা দেখা, রাতের বেলা মেয়েদের সঙ্গে ফোনে আলাপ, অনলাইনে এডাল্ট সাইটে যাওয়া, এই সময় সে সেভ না করে একমাস দাড়ি রাখে, সবক’টা রোজা রাখে তারাবিসহ… টিপিক্যাল বাঙালি মুসলমান মধ্যবিত্ত ঘরের ছেলেরা যেমন হয় আর কি। আমাকে সে মনে মনে অপছন্দ করে জানি। সে আড়ালে আমাকে “হিন্দুদের দালাল” বলে উল্লেখ করে। তার কারণ আছে অবশ্য, একটা উদারহরণ দেই।

পাড়ায় দূর্গা পূজা হচ্ছে। মুসলমান পাড়ায় হিন্দুর পূজা তাও আবার রমজান মাসে! এই মাসে ইবলিশের মাথায়ও টুপি উঠে। মুসলমান হয়ে উঠে খুবই স্পর্শকাতর। কোন রকম কাফিরী কাজ কারবার সে সহ্য করতে পারে না। এলাকার হিন্দু বড়ভাই যারা পূজাটা করছেন তাদের দেখলাম জুনিয়র থেকে জুনিয়র ছোট ভাইদেরকে পূজাটা ভালভাবে শেষ করার জন্য বিনীত সহযোগীতা চাচ্ছেন। আমার দেখে খারাপই লাগে। সেই বড়ভাই ( বিকাশদা) ভারতে চলে গেছেন কতদিন হয়। সেখানে কি তাকে এভাবে করজোরে পূজা সমাপ্ত করতে কারুর সহযোগিতা চাইতে হয়? দাদা কি সেখানে কঠিন মুসলিম বিদ্বেষী হয়ে গেছেন? খুব সম্ভব হয়েছেন। আগেই বলেছি বেশির ভাগ মানুষ সাম্প্রদায়িক অভিজ্ঞতাকে এভাবেই নেন। যাই হোক, পাড়ার মসজিদ কমিটি থেকে পূজা কমিটিকে বলা হলো, মাগরিবের নামাজের সময় ঢোলঢোক্কর বন্ধ রাখতে হবে (এটাই হিন্দুদের দেবীর আরতির সময়, আচ্ছা ভাবুন মুসলিম সম্প্রদায়কে বলা হচ্ছে মাগরিবের নামাজটা আরতির সময় বন্ধ রাখা হোক!), দশমী করতে হবে বাজনা ছাড়া, যতটা কম আড়ম্বনা ছাড়া, সেটা অবশ্যই সন্ধ্যার আগে কারণ তখন সেটা ইফতারির সময়, নামাজের সময়, নয়তো রাত দশটার পর যেন করে। পূজা কমিটি এক কথায় রাজি।

নবমীর দিন পূজা মন্ডবে গিয়েছি, হিন্দু বন্ধুরা, মুসলিম বন্ধুরা আড্ডা মারছি। দশভূজা দেবী ও তার কন্যা-সন্তানসহ জাঁকজমক ভাবে হাসি হাসি মুখে চেয়ে আছেন, আসলে চেয়ে আছেন কিন্তু কিছু দেখছেন না যেন। সরস্বতী দেবীকে আমার খুব পছন্দ। তার রূপ আর স্টাইলের জন্য। এক মুসলিম বন্ধু ফিসফিস করে দেবী ও দেবী কন্যাদের নারীত্বেও চিহ্নগুলোকে নিয়ে আদিরসাক্তক মন্তব্য করতে লাগলো। আমার সেই বন্ধুটি আলোচনায় যোগ দিয়ে বলল, দোস্ত দেখ, এই চুতমারানী মাগীগুলির নিচ দিয়া (আসলে লেখার অযোগ্য একটা শব্দ ছিল সেটা) বাঁশ গাঁইত্থা খাড়া কইরা রাখছে, এই গুলির নাকি কত ক্ষমতা! অহন গিয়া লাত্থি মাইরা আয়, দেখ অরা নিজেরা নিজেগো বাঁচাইতে পারে কিনা…। মুসলিমরা সবাই একমত হলো। আমি বললাম, কাবাঘরও তো কতবার ভাঙ্গলো। বন্যায় একবার, একবার আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেলো। হজরে আশওয়াদ যেইটারে হজে গিয়া চুমা খাও, চুরি গেলো কাবা ঘর থিকা, কই আল্লায় তো রক্ষা করতে পারলো না তার ঘর আর তার ইজ্জত! …

বলুন, এরপরও ওরা আমাকে দালাল বলবে না কি বলবে?

তাহলে হিন্দুরা কি আমাকে বন্ধু মনে করে? আমার ইসলাম বিরোধী কথাগুলোর যেগুলো তাদের পক্ষে যায় তখন আমি তাদের কাছের মানুষ। কিন্তু যখন আমি বলি রামচন্দ্র হচ্ছে একটা গল্পের চরিত্র, তার ঐতিহাসিক কোন ভিত্তি নেই। অযোধ্যার মাটি খুঁড়ে ফ্যালা ফ্যালা করে ফেললেও তার কোন প্রত্ত্বতাত্ত্বিক প্রমাণ পাওয়া যাবে না…। উচিৎ কথায় মানুষ বেজার, গরম ভাতে বিড়াল বেজার। আমি হিন্দু-মুসলিম দুটোর শত্রু। এটা আরো বেড়ে গেলো যখন কথিত মা কালির আর্বিভাবে আমি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিলাম।

১৫-১৬ বছরের এক যুবতী মেয়ের উপর হঠাৎ মা কালি ভর করেছেন দয়া করে। ক্ষণে ক্ষণে মায়ের আবির্ভাবে যুবতীর ভাবসমাধি হয়। মুখ দিয়ে গেঁজলা বের হয়। তখন মেয়েটি যা বলে সব ফলে যায়। আশির্বাদ দিলে লেগে যায়! সন্ধ্যার পর মূর্খ হিন্দু নারী-পুরুষরা ভিড় করতে লাগলো এই হিস্টরিয়া রোগী মেয়েটির কাছে অথবা অভিনয় করে প্রতারণা করা মেয়েটার কাছে। তবে প্রতারণা করার সম্ভবনাই যথেষ্ট কারণ সে আমার চ্যালেঞ্জে রাজি হয়নি। আমার কলেজ জীবনে পড়া প্রবীর ঘোষের কথা মনে পড়ে গিয়েছিল। আমি মেয়েটিকে বলেছিলাম, আমার পকেটে একটা একশো টাকার নোট আছে, মা জননী যদি কষ্ট করে নোটের নাম্বারটা হুবহু বলে দিতে পারেন, কথা দিচ্ছি নাস্তিকতা তো ছেড়েই দিবো, ইসলাম ছেড়ে হিন্দু হয়ে যাবো! সে আমার চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করেনি কিন্তু তার বদলে ব্রাহ্মাস্ত্র প্রয়োগ করেছে। অভিশম্পাত করলো, এই বেয়াদপীর ফল ভাল হবে না দেখিস!

হিন্দুরা সত্যিই আমার এই বেয়াদপীকে ভালভাবে নেয়নি। চোখ-মুখ কুঁচকে সেটা তারা প্রকাশ্যেই বুঝিয়ে দিয়েছে। আড়ালে সবাই বলেছে, এই মুসলমানটা কেন আমাদের এইখানে আসে! আমাদের ধর্মকর্ম নিয়ে সে কেন মাথা ঘামায়…।

এই ঘটনায় আরো একটা অভিজ্ঞতা যেটা আমার হলো সেটা চমৎকৃত। ধর্মবর্ণ নির্বিশেষে অলৌকিত্বে যে আমাদের বংশ পরম্পরায় কুসংস্কার আছে তা ধর্ম চেতনাকেও হার মানায়। যে মেয়েটির উপর কথিত কালির আবির্ভাব হয়েছে সে থাকতো এক মুসলমান বাড়িঅলার বাড়িতে ভাড়া। প্রায় মন্দির হয়ে পড়ায় বাড়িঅলা যখন এদের বাসা ছেড়ে উঠে যেতে বললেন তখন আড়ালে বলা হলো, মাকে এভাবে অপমান করে তাড়ালে ঝাঁড়ে নিবর্ংশ হয়ে মরতে হবে। মায়ের রোষ তো জানে না…। চট্টগ্রামের কি এক পীরের মুরিদ এই বাড়িঅলা এই কথা লোকমুখে শুনে দমে গেলো। যত যাই হোক, কার মধ্যে কি আছে কে জানে, যদি সত্যি সত্যি নিবর্ংশ হয়ে মরতে হয়! বাড়িঅলা চরম অস্বস্তিতে পড়ে চুপ করে গেলেন। দেখলাম চুপি চুপি অনেক মুসলমান বাড়ি থেকে নানা রকম মানত করে লোক মারফত টাকা-পয়সা পাঠানো হচ্ছে এই মা কালির মন্দিরে! এক বছরের মধ্যে ভাল দেখে একটা জায়গা বেছে পাকা মন্দির করে এই স্বঘোষিত মা কালি” এখান থেকে উঠে চলে যান। শুনেছি তার প্রসার এখনো ভাল। রোজ দুই-আড়াইশো ভক্ত এসে জুটে। মানুষের নানারকম দুঃখ-কষ্ট আর অভাবঅনটনের জীবন। মায়ের কাছে এসে সমাধান চান। বলে, মা রক্ষা করো, আর যে পারছি না!…

এই অসহায় মানুষগুলিকে আমি গালি দিতে পারি না। রাগ করে থাকতে পারি না বেশিক্ষণ। এই দরিদ্র, বিপুল জনসংখ্যার একটা দেশে, যেখানে সম্পদের তুলনায় চাহিদা ব্যাপক, আছে অশিক্ষা আর কুশিক্ষা, তারা তো প্রতিদিনের জীবনের কাছে হেরে গিয়ে এইরকম আল্লা আর মা জননীর কাছেই দিন শেষে ধরনা দিবেই। দুর্দশাগ্রস্ত মানুষকে কি বলা যাবে, যাও, তোমার আল্লার কাছে যাও, তিনি সব পারেন! কিংবা আল্লা ভগবানই তো খাওযায় পরায় তার কাছেই যাও…। অসহায় মানুষ খড়কুটো ধরে বাঁচতে চায়। তাই এই মানুষগুলোই যখন “নাস্তিক ব্লগারের” ফাসি চায়-আমি তাদের প্রতিপক্ষ হয়ে যাই না। যারা রোজ আমাকে ফেইসবুকের ইনবক্সে গালাগালি করে তারাও এই সমাজ ব্যবস্থার শিকার। আমি খুব পরিস্কারভাবে বলি ও লিখি ইসলামী জংঙ্গিবাদের আতুরঘর খোদ ইসলাম! তাতে আমি ইসলাম বিদ্বেষী কিন্তু আমি মুসলিম বিদ্বেষী নই তাই ফারাবী ও নাফিসের জন্য আমার মনে কোন অন্ধ ক্রোধ নেই কারণ আমি জানি তারা এই ইসলাম দ্বারা শিকার হয়েছেন মাত্র। এইমাত্র যে কিশোরটি শিবিরে যোগ দিতে মনোস্থির করলো আমার লেখালেখি তার জন্য। আমার যোগ্যতা ও ক্ষমতা সীমিত আমি জানি। কিন্তু ব্লগে যারা স্বনামধন্য লেখক আমার বিশ্বাস তারা এজন্যই আয়ু পুড়িয়ে লিখে যাচ্ছেন। রাজনৈতিক ইসলাম মাথাচাড়া দিয়ে না উঠলে হয়ত এসব নিয়ে আমাদের লিখতে হতো না। এমন একটা সময় এখন আমাদের সামনে যখন “সুধাংশু তুই পালা”র মত লেখা লিখতে হয়। বডার্র পার হয়ে যে হিন্দু পরিবারটি চিরদিনের জন্য দেশ ছেড়ে চলে যাচ্ছে তাদেরকে আটকান। অভয় দিন। প্রতিটি মুক্তমনা, নাস্তিক নিজেকে প্রশ্ন করুক কেন সে ব্লগে-ফেইসবুকে লিখতে এসেছে? নাস্তিকতা কি ধর্ম যে সেটা প্রচার করতে হবে? সারা দুনিয়ার মানুষ নাস্তিক হয়ে যাবে এরকম যারা বিশ্বাস করে তাদের চিন্তা ভাবনার মধ্যে বিড়াট ভুল আছে।আমরা শুধু তাদের ভাবনার খোরাক জুগিয়ে দিবো।তাদের একটা বিড়াট অংশ প্রচলিত বিশ্বাস ও সংস্কার থেকে বেরিয়ে আসবে না ঠিকই, তবে তাদের ধর্মীয় অনুভূতিগুলো ভোতা হয়ে যাবে।“সুধাংশুকে” তখন আর পালাতে হবে না। আয়েশাদের পাশে আরতীরাও তখন নিশ্চিন্তে বাস করতে পারবে।সেই সুদিনের প্রত্যাশায় আমরা নাস্তিক-মুক্তমনারা লিখি কারণ লেখার চাইতে অন্য কোন যুদ্ধ শুধু রক্তই ঝরাবে ।কারুর রক্ত তো চাইতে আসিনি…।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.