![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মৌলিক লেখার সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত ©হাফিজুর রহমান এখানকার কোনো মৌলিক লেখা বিনা অনুমতিতে অন্য কোথাও প্রকাশ, ছাপানো বা অনুলিপি করা অগ্রহণযোগ্য। বিবাগীমন। কবি হওয়ার ইচ্ছে ছিলো, হওয়া হলো না। তবুও হাঁটছি পথ, যদি বা দেখা পাই সেই পাতালপুরী, লাল নীল পুঁটিমাছ...
ব্লগে অনেক অনর্থক তর্কাতর্কি দেখে মাঝে মাঝে অবাক লাগে। আরো খারাপ লাগে যখন কিছু অমানুষ ও মানবতাহীন ধর্মান্ধদের জন্য অনেকেই ইসলামের কুৎসারটনা করে। মুসলিম জনগোষ্ঠির এই দূর্গতির জন্য অবশ্য তারা নিজেরাই দায়ী। বিজ্ঞানীরা এখনো মন ও আত্মার ভালো ব্যাখ্যা দিতে পারেনি। আত্মা হলো বিস্ময়কর একটা ধাঁধাঁ। যা দিয়ে স্রষ্টাকে বোঝা যায়। মুসলমানরা সেই আত্মাটাই খু্ইয়ে বসেছে। তারা হয়ে উঠছে বস্তুবাদীদের চেয়েও বস্তুবাদী। সুতরাং পরাজয় তো হবেই।
আত্মশুদ্ধির জন্য যে জ্ঞান সেটা হলো তাসাউফ। ইসলামের ফরয জ্ঞানকে বড়দাগে তিন ভাগে ভাগ করা যায়- ১. ঈমান সম্পর্কিত, ২. ফিকাহ ( বাহ্যিক আমল সম্পর্কিত) ৩. তাসাউফ (আত্মিক আমল সম্পর্কিত)। তাসাউফ আলাদা হলেও এটি আসলে বাকী দুটির প্রান।
একটা উদাহরন দিলে এর বিস্তৃতি বোঝা যাবে। হযরত আলী (রাঃ) একবার জিহাদের ময়দানে শত্রুকে কাবু করে ফেলেন। ইসলামের নিয়ম অনুযায়ী ইসলামের দাওয়াত দিলো। শত্রু হঠাৎ তার মুখে থুথু দেয়। হযরত আলী(রাঃ) তখন তাকে ছেড়ে দেয়। শত্রু তো অবাক। বলে, তুমি আমাকে ছেড়ে দিলে কেন? আলী(রাঃ) তখন বলে, আমি আল্লাহর জন্য যুদ্ধ করছিলাম। তুমি থুথু দেয়ায় আমার মধ্যে ব্যক্তিগত বিরোধ তৈরী হয়েছে। কাজেই এটা আর জিহাদের মধ্যে থাকলো না। শত্রু তখনই ইসলাম কবুল করলো।
আমি জানি এর মধ্যেই পাঠক দুই ভাগে ভাগ হয়ে গেছে। তবে কেউ আবার তথাকথিত জিহাদী হয়ে মানুষ খুন করতে ঝাঁপিয়ে পরবেন না। সর্বোত্তম জিহাদ হচ্ছে আত্মশুদ্ধি। সেটা করলে কাজে লাগবে। ইসলামে যুদ্ধের যে জিহাদ সেটার প্রেক্ষাপট আলাদা। বোমা মেরে ইসলামের বারোটা বাজানো ছাড়া কিছু হয়েছে বলে সুস্থ মানুষরা মনে করে না।
তাসাউফের মুল কথা হলো আত্মশুদ্ধি। আমরা যে যাই করি না কেন তার শুরু হলো মনে। সুতরাং মনকে শুদ্ধ করতে পারলে কাজও শুদ্ধ হবে। মানুষের দোষও আছে, গুনও আছে। দোষের মধ্যে যেমন অহংকার, হিংসা, সীমাতিরিক্ত রাগ, লোক দেখানো ধার্মিকতা ইত্যাদি। আবার গুনের মধ্যে তওবাহ (গুনাহ থেকে বিরত থাকার প্রতিজ্ঞা), সবর, শোকর, এখলাস (বিশুদ্ধ নিয়ত), আল্লাহর ভয়, বেহেশতের আশা, সর্বদা আল্লাহর স্মরন, মোরাকাবা (সৃষ্টিরহস্য নিয়ে চিন্তা), মোসাহাবা (আত্মবিশ্লেষন)।
তাসাউফের জ্ঞান ও আমল প্রত্যেক মুসলিমের জন্য ফরয। প্রতিটি আইটেমের চারটা জিনিস না জানা পর্যন্ত জ্ঞানপূর্ন হয় না- ১. শরীয়তের ভাষায় সংজ্ঞা ২. উৎস বা কারন ৩. দোষ বা গুনটি আছে কিনা বোঝার উপায় ৪. উন্নতি বা শুদ্ধির উপায়।
অহংকারের অনেক ধাপ। সর্বনিম্ন ধাপ হলো মানুষের সাথে অহংকার। তারপর হলো নবীরাসুলের সাথে, সর্বোচ্চ হলো আল্লাহতায়ালার সাথে।
এবার আসি অহংকার কিভাবে কিভাবে উৎপত্তি হয়। এক নম্বরেই হলো জ্ঞান। এরপরে ধনসম্পদ, ভালো চেহারা, লোকবল। আসলে আমরা সবাই ই যেহেতু সাধারন মানুষ, আর বেশী বলার দরকার নাই।
এবার আসি চিকিৎসায়। দুইভাবে হতে পারে - জ্ঞানগত, আমলগত। যেমন জ্ঞানের অহংকার দূর করার জ্ঞানগত চিকিৎসা হলো ফিকির করা আমি নিজেকে যে এত জ্ঞানী ভাবছি, আরো তো অনেক জ্ঞানী আছেন। তারচেয়েও বড় কথা হলো সব বিষয়ের জ্ঞানী হওয়া এক জন মানুষের পক্ষে সম্ভব না। আর ইসলাম যেহেতু আখেরাতমুখী, জ্ঞানানুসারে আমল না করলে তো বেশী শাস্তি পেতে হবে। এইভাবে চিন্তাফিকির করলে আস্তে আস্তে অহংকার কমে আসবে। তবে জ্ঞানের অহংকার দূর করার সবচেয়ে ভালো উপায় হলো আরো জ্ঞানী মানুষের সাহচর্যে যাওয়া। এই কারনেই আল্লাহ হযরত মুসা(আঃ) কে হযরত খিজির (আঃ) র সাথে যাওয়ার ব্যবস্হা করেছিলেন।
এই জামানায় আল্লাহতায়ালা মানবজাতির জন্য ইসলামকে ধর্ম হিসেবে মনোনীত করেছেন, সেখানে দ্বিধাদ্বন্ধের অবকাশ ইসলামে নেই। কিন্তু তাই বলে সাম্প্রদায়িকতার স্থান আবার নেই। কুরআন হাদীসের কোথাও সেটা নেই। এটা ইসলামের সঠিক শিক্ষা প্রচারিত না থাকার ফসল।
আবারো তাসাউফের মাধ্যমেই বিষয়টাকে একটু খোলসা করি। যেমন একজন মুসলমানের সাথে অন্যধর্মের এক লোকের দেখা হলো। মুসলমান লোকটির কোনভাবেই অহংকার করার অধিকার নেই যে অন্যলোকটা তার চেয়ে খারাপ। এখানে অহংকার দমন করার উপায় হলো এই চিন্তা করা যে, আল্লাহ চাহে ত এই লোকটা ইসলাম গ্রহন করতে পারে এবং পাপ করার আগেই মৃত্যুবরন করতে পারে। সুতরাং এই লোকটার অবস্থা আমার চেয়ে ভালো।
এই হলো আসল ইসলাম। নামাজ রোজার সাথে বাইরের জিনিসমাত্র। সেটাও ফরয। কিন্তু পূর্নতা ও সৌন্দর্য হলো এখানে। আত্মশুদ্ধির সাথে নামাজ রোজা করা হলে সেটার মর্যাদা রক্ষা হয়। না হলে নামযও পড়বে, ঘুষও খাবে। তখন ইসলাম নিয়ে লোকজন তো হাসবেই। আর ইসলাম না বুঝে নিজেকে শুদ্ধ না করে বোমা মেরে আর মানুষ খুন করে যে ইসলাম, সেটা শয়তানের ধোঁকাখাওয়া মানুষদের ইসলাম।
তাসাউফ সম্পর্কে আরো জানার জন্য পড়ুন - হযরত ইমাম গাজ্জালী (রঃ) র 'আরবাঈনে'র বাংলা অনুবাদ 'তবলীগে দ্বীন' (এটা তবলীগ জামাতের বই না), কিমিয়ায়ে সায়াদাদ। দ্বিতীয়টা বেশি উচ্চমার্গীয়। সহজভাবে আস্তে আস্তে এগুনোই ভালো।
পাঠকবর্গ, আস্তিকতা নাস্তিকতার তর্ক না তুললেই ভালো হয়। একটি পূর্ণ জীবন দেয়া হয়েছে একেকজনকে। তাই বাকবিতন্ডার চাইতে নিজের জিজ্ঞাসাগুলোকে নিজের কাছে সৎ থেকে জানার উদ্দেশ্যে গবেষনা করুন। উত্তর পেয়ে যাবেন।
১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১০ সন্ধ্যা ৭:৪০
হাফিজুর রহমান বলেছেন: সেটাই সত্যি... তবুও মনে হয় মাঝে মাঝে শেয়ার করাও দরকার।
২| ১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১০ সন্ধ্যা ৭:৫১
কিরিটি রায় বলেছেন: এই হলো আসল ইসলাম। নামাজ রোজা বাইরের জিনিসমাত্র। সেটাও ফরয। কিন্তু পূর্নতা ও সৌন্দর্য হলো এখানে। ইসলাম না বুঝে নিজেকে শুদ্ধ না করে বোমা মেরে আর মানুষ খুন করে যে ইসলাম, সেটা শয়তানের ধোঁকাখাওয়া মানুষদের ইসলাম।
+++++++++++++++++++++++++++
১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১০ রাত ৮:০৮
হাফিজুর রহমান বলেছেন: ঘরপোড়া গরু সিঁদুরে মেঘ দেখলে ভয় পায়...
ভালোকথা যে ভালোভাবে নিতে পারার মত লোকও আছে, সেটা বুঝতে পারছি।
শুভেচ্ছা রইলো।
৩| ২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১০ দুপুর ১২:২৮
রৌদ্রজ্জ্বল বলেছেন: অনেক সুন্দর করে লিখেছেন, আশাকরি সবারই আত্মউপলব্ধি হবে।
প্রিয়তে নিলাম।
২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১০ সন্ধ্যা ৬:২৯
হাফিজুর রহমান বলেছেন: ভালো লাগলো জেনে খুবই ভালো লাগলো।
আসলে আমাদের সমাজে ইসলামের পূর্নাঙ্গ চিত্র নাই। আল্লাহ সবাইকে ইসলামের সৌন্দর্য বোঝার আর সৃষ্টির অনিষ্টতা থেকে বাঁচার তাওফিক দিন।
©somewhere in net ltd.
১|
১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১০ সন্ধ্যা ৭:৩৫
সোনারবাংলা বলেছেন: আসুন প্রথমে নিজেকে শুদ্ধ করি তারপর না হয় চিরুনী অভিযান পরিচালনা করি।