নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

জহির_জুয়েল

আমার কিছু জানা নেই।

জহির_জুয়েল › বিস্তারিত পোস্টঃ

কানসাটের সেই দিন

২৩ শে জানুয়ারি, ২০১২ বিকাল ৪:৪১

আজ রক্তাক্ত ২৩ জানুয়ারি। ২০০৬ সালের এই দিনে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের শাসনামলে চাঁপাইনবাবগঞ্জে সাধারণ বিদ্যুতের দাবিতে আন্দোলনরত সাধারণ মানুষের ওপর পুলিশ নির্বিচারে গুলি চালিয়ে সাতজনকে হত্যা এবং দুই শতাধিক নারী-পুরুষকে আহত করে। বিদ্যুৎ চাইতে গিয়ে পুলিশের গুলিতে নাগরিকদের প্রাণ হারানোর ঘটনা বিশ্বে সম্ভবত এটাই প্রথম। ২০০৬ সালের জানুয়ারির শুরুতেই নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহসহ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির প্রতিবাদে কানসাট এলাকায় সাধারণ মানুষ আন্দোলন শুরু করে। ৪ জানুয়ারি আন্দোলনের অংশ হিসেবে পল্লী বিদ্যুতের ১০ টাকা মিটার ভাড়া বাতিল, বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইনে কভার তার ব্যবহার, সর্বনিম্ন চার্জ প্রত্যাহার এবং সার্বক্ষণিক বিদ্যুতের দাবিতে আন্দোলনকারীরা কানসাটে অবস্থিত চাঁপাইনবাবগঞ্জের পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কার্যালয় ঘেরাও করে। এতে পুলিশ বাধা দেয়। ফলে আন্দোলনকারীরা উত্তেজিত হয়ে ওঠে। একপর্যায়ে পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষ বাধে। বেপরোয়া হয়ে ওঠে পুলিশ। পুলিশের গুলিতে নিহত হন কাজল ও নয়ন নামে দুই যুবক। এরপর উত্তেজিত জনতা পল্লী বিদ্যুৎ কার্যালয়ে ব্যাপক ভাঙচুর চালায়। দুই যুবকের নিহত হওয়ার ঘটনায় উত্তাল হয়ে ওঠে কানসাট। এরপর ২২ জানুয়ারি রাতে কানসাট আন্দোলনের নেতা গোলাম রাব্বানীকে পুলিশ গ্রেপ্তার করলে পুরো এলাকা বিস্ফোরণোন্মুখ হয়ে ওঠে। ২৩ জানুয়ারি ভোর থেকেই হাজার হাজার মানুষ বাড়িঘর, ক্ষেত-খামার, দোকানপাট ছেড়ে রাস্তায় নেমে আসে তাদের নেতা গোলাম রাব্বানীর মুক্তির দাবিতে। তারা কানসাটসংলগ্ন চাঁপাইনবাবগঞ্জ-সোনামসজিদ স্থলবন্দর মহাসড়কে গাছ ফেলে অবরোধ সৃষ্টি করে। দুপুরের পর বিপুলসংখ্যক পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে সড়ক অবরোধ সরিয়ে ফেলতে গেলে উত্তেজিত জনতার সঙ্গে পুলিশের ব্যাপক সংঘর্ষ বাধে। একপর্যায়ে পুরো এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। পুলিশের টিয়ার গ্যাস ও রাবার বুলেট উপেক্ষা করে জনতা সড়ক অবরোধ করে রাখে। পুড়িয়ে দেয় পুলিশ সুপারের গাড়িসহ পুলিশের আরো সাতটি গাড়ি। সন্ধ্যার আগে পুলিশের সঙ্গে জনতার সংঘর্ষ ভয়াবহ পর্যায়ে পৌঁছলে পুলিশ আন্দোলনকারীদের লক্ষ্য করে শতাধিক রাউন্ড গুলিবর্ষণ করে। এতে ঘটনাস্থলেই নিহত হন সাতজন। নিহতরা হলেন : ১. আনোয়ার (২৬), ২. আবদুল মান্নান (৩৮), ৩. গরীবুল্লাহ (৩৫), ৪. নাসির (২৮), ৫. দাউদ আলী (২৫), ৬. আনোয়ার হোসেন (১৩) ও ৭. আনারুল (২২)। মানুষের অধিকার আদায়ের লড়াইয়ে যাঁরা আত্মাহুতি দেন, প্রাণদান করেন তাঁরাই তো শহীদ। শহীদদের প্রতি আমাদের সশ্রদ্ধ সালাম। কানসাট স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশের বেদনাবিধুর দুঃসহ স্মৃতি। কানসাটবাসী এই বেদনা বয়ে বেড়াবে আর পাশাপাশি এটাও দৃঢ়তার সঙ্গে উচ্চারণ করবে, সব কিছুর শেষ আছে কিন্তু মানুষের অধিকারের শেষ নেই। জয় হোক মানুষের, জয় হোক শুভবুদ্ধির, জয় হোক মানবতার, জয় হোক অধিকার আদায়ের সংগ্রামের।

আজিজুর রহমান



Click This Link

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.