![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
"আচ্ছা, মহাবিশ্ব কিভাবে সৃষ্টি হয়েছিলো?"
"বিগ ব্যাং থেকে।"
"আমি জিজ্ঞেস করেছি 'কিভাবে' সৃষ্টি হয়েছে?"
"আমি কি করে জানবো, আমি দেখেছি নাকি!"
"খামোখা প্যাচায়ো না তো, বলো, শুনি।"
"তুমি নিজেই তো জানো, আমাকে কেনো বিরক্ত করছো!"
"বলো, বলতেছি।"
"মনে করো, তুমি একটা নতুন মহাবিশ্ব তৈরি করতে চাও। কি করবা তুমি?"
"সবকিছুকে একটা বিন্দুর মতো ছোটো জায়গায় বন্দী করে ফেলতে হবে আর তারপর ঐ বিন্দুটাতে একটা বড় বিস্ফোরণ ঘটাবো।"
"ট্রাডিশনাল চিন্তা থেকে বের হতে পারলে না যদিও কিন্তু সমস্যা নাই! তুমি যা বলেছ সেদিকেই আগাই তাহলে। মহাবিশ্বে যা কিছু আছে এবং যা কিছু ভবিষ্যতে থাকবে তার সবকিছুকেই একটা খুবই ছোটো বিন্দুতে
একীভূত করে ফেলতে হবে। আমরা যে জিনিসটাকে বিন্দু বলতে চাচ্ছি তা আসলে একটি প্রোটনের এক বিলিয়ন ভাগের এক ভাগ।"
"এই অতি ক্ষুদ্রাকার বিন্দুটিকেই আমরা সিঙ্গুলারিটি বলি, না?"
"হ্যাঁ, এটাকেই আমরা সিঙ্গুলারিটি বলতেছি; এর কোনো মাত্রা বা dimension নাই। "
"আচ্ছা, তারপর?"
"তারপর আর কি! বিগ ব্যাং এর জন্য তৈরি হও। এই মহাবিস্ফোরণের সময় তুমি নিশ্চই নিজেকে নিরাপদ কোথাও সরিয়ে নিতে চাইবে। কিন্তু সমস্যা হলো, সিঙ্গুলারিটির বাইরে আর অন্য 'কোথাও' এর অস্তিত্ব নাই।
সিঙ্গুলারিটিতেই সবকিছু আছে, সিঙ্গুলারিটির বাইরে খা-খা বিরাণ, কিচ্ছু নাই। বিগ ব্যাং এর পরে যখন মহাবিশ্ব বিস্তৃত হতে শুরু করবে তখন তা অন্য কোনো খালি জায়গা ধরে বিস্তৃত হবে না। মহাবিশ্ব বিস্তৃত হয়ে হয়েই
space বা জায়গা তৈরি করবে।"
"এখানে একটা সমস্যা আছে। যদি সিঙ্গুলারিটির আশেপাশে কিছুই না থাকে তাহলে সিঙ্গুলারিটি কোথায় আছে? ঝুলে আছে? হেলান দিয়ে আছে কোথাও? ভাসতেছে?"
"যদিও এটা কল্পনা করা খুবই দুষ্কর কিন্তু সিঙ্গুলারিটির আশেপাশে কিছুই নাই। কোনো space নাই, অন্ধকার নাই। সিঙ্গুলারিটিকে ধরে রাখার মতো অথবা সিঙ্গুলারিটির ধারন করার মতো কোনো place নেই।
সিঙ্গুলারিটিতে সময়ের অস্ত্বিত্ব থাকে না। এর কোনো ইতিহাস নাই তাই উদ্ভূত হওয়ার মতো কোনো অতীতও নাই। তুমি তো জানোই, সময়ের শুরু বিগ ব্যাং থেকেই।"
"অর্থাৎ বলতে চাচ্ছ, একেবারে 'absolute nothing' থেকেই আমাদের মহাবিশ্ব সৃষ্টি হয়েছে?"
"বিষয়টা মোটামোটি তা-ই। তবে 'absolute nothing' থেকে হয়তো আমরা বলতে পারি না। সিঙ্গুলারিটি তো ছিলোই। হয়তো সিঙ্গুলারিটিতে 'time and space' ও হয়তো ছিলো, যেগুলো 'beyond
conception' অর্থাৎ আমাদের পৃথিবীর নিয়ম দিয়ে তা ব্যাখ্যা করা যায় না।"
"আচ্ছা, এই থিওরি আরেকদিন শুনবো। কিভাবে হয়েছিলো তাহলে সেই বিগ ব্যাং?"
"অনেকে মনে করেন বিগ ব্যাং অনন্তকাল ধরে চলে আসা একটি প্রক্রিয়ার অংশ। মহাবিশ্ব অনেকবারই প্রসারিত হয়েছে আবার সংকুচিত হয়ে আগের অবস্থায় ফিরে এসেছে। এই সংকোচন-প্রসারণশীল ব্যবস্থা চালু
রাখার জন্য প্রতিবার সম্প্রসারনের আগে এবং সংকোচনের পর একটা মহাবিস্ফোরনের প্রয়োজন হয়। আমাদের আলোচিত বিগ ব্যাং সেই অসংখ্য মহাবিস্ফোরনের একটি।"
"কিন্তু মুখ দেখেই বোঝা যাচ্ছে, তুমি তা মনে করো না।"
"আমার মনে করা আর না করা দিয়ে কি আসে যায়!"
"আমি শুনতে চাই, বলো!"
"একদল বিজ্ঞানী মনে করেন, সিঙুলারিটি কোনো ধরনের শক্তি বা বৈশিষ্টের আধার ছিলো, যা এর মধ্যে অস্তিতিশীলতের উদ্ভভ ঘটায়। এই অস্থিতিশীলতাই(instability) সিঙুলারিটি ভেংগে দিয়ে আমাদের এই
সদা-সম্প্রসারনশীল মহাবিশ্বের অবতারনা করে।"
"আমাদের মহাবিশ্বের নিয়ম বা সূত্রগুলো কি তখন থেকেই কার্যকর হওয়া শুরু হয়েছিলো?"
"বিগ ব্যাং এর প্রথম সেকেন্ডেই গ্র্যাভিটি বা অভিকর্ষ সহ বাকী সব শক্তি যা মহাবিশ্বকে চালায় তাদের সৃষ্টি হয়েছিলো। এক সেকেন্ডের মধ্যেই মহাবিশ্বের আয়তন কোটি-কোটি মেইল ছাড়িয়েছিলো। এই মুহূর্তে মহাবিশ্বের
তাপমাত্রা প্রচুর, প্রায় ১০ বিলিয়ন ডিগ্রি সেলসিয়াস। এই তাপমাত্রা নিউক্লিয়ার রিএকশন হওয়ার জন্য যথেষ্ট থেকেও বেশি। রিএয়াকশনের মাধ্যমে তখন হাইড্রোজেন, হিলিয়াম এবং খুবই অল্প পরিমানে লিথিয়াম তৈরি
হয়। তিন মিনিটের মধ্যেই এই মহাবিশ্বে এখন যা আছে এবং ভবিষ্যতে যা থাকবে তার প্রায় ৯৮ শতাংশ তৈরি হয়ে গিয়েছিলো।"
"জোশ! তাহলে আমাদের এই এতো সুন্দর পৃথিবী, এতো রহস্যে ঘেরা মহাবিশ্ব এই সবকিছুর নিয়তি সেই কোটি কোটি বছর আগের বিস্ফোরণের সময়ই ঠিক হয়ে গিয়েছিলো!"
"They say 13.7 billion years ago! তবে এখানে নিয়তি টেনে আনা হয়তো ঠিক হবে না। নিয়তি ভিন্ন জিনিস!"
"আচ্ছা ঠিক আছে। সরি!"
"বিগ ব্যাং থেকে কিন্তু অনেকে প্যারালাল ইউনিভার্স এর ধারনাটাও ব্যাখা করে থাকেন!"
"কিভাবে?"
"ধীরে বাছাধন, ধীরে! ক্লাস আছে এখন, যেতে হবে"
"ওকে, বাই!"
১৮ ই অক্টোবর, ২০১৬ সকাল ৮:৪৬
শাকিল আহমেদ সুমন বলেছেন: ধন্যবাদ! :-)
©somewhere in net ltd.
১|
১৭ ই অক্টোবর, ২০১৬ রাত ১১:৫৩
অন্তু নীল বলেছেন: ভালো লাগল।