![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি সাদাসিধে, সাধারণ টাইপের মানুষের দলে। তবে রাজনৈতিক অপরিপক্ক্বতা আমার অপছন্দ।
এই মেঘের ডানায় চড়তে ইচ্ছে করেছিলো খুব। সকাল, সন্ধ্যা, রাতে। ঘুমভাঙ্গা পাখির পালকের ছোঁয়ায় যেনো ভোর জেগে উঠে এখানে। অবশ পৃথিবী আস্তে আস্তে স্বস্তি ফিরে পায় অসাড় দেহে। যেনো আজ অশান্ত পৃথিবীর ভেতর বাতাসের শীতল স্রোত ঢুকিয়ে দিয়ে নামিয়ে দেবে ফুঁসে ওঠা সাগরের উচ্চচাপকে।
জানালা দিয়ে তাকিয়ে ভোর দেখছে সাদিয়া। দুদিন পর আর্মিতে জয়েন করবে। তাই সময় থাকতে একটা ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলতে যাচ্ছ সে আজ। বাবার সাথে গিয়ে ফরমালিটিজ পূরণ করে আসতে হবে। রাজ্যের ঘুম যখন তাকে ছেড়ে বেসিনের দিকে রওনা দিলো, ঠিক তখনই শির শির করে উঠলো ঘাড়ের পেছনটা। অজানা এক অনুভূতি কাজ করছে। ব্যাপারটা ভালো ঠেকছে না। মুখটা ফেসিয়াল করলো। দেখতে সুন্দর, চটপটে পাঁচ ফিট ছয় উচ্চতার গড়নের মানুষটা বেসিনের দিকে তাকিয়ে অভয় দিলো নিজেকে। এই মেয়ে ভয় পেতে নেই। পরশু না জয়েন করবে?
ডাইনিং এ বসে নান গোশতের ঘ্রাণে মুখটা লালায় ভরে গেলো। ইশশ মা টা না যে কি! দুদিন মাত্র আছে আর এখন কিনা মুখরোচক যতো খাবার গিলিয়ে ছাড়ছে। ধ্যাৎ, এ মায়া কাটানো যে বড়ো কঠিন। পেপারটা খুলেই বড়ো বড়ো হেডলাইনে লেখা আজকের ফিচারটা পড়লো। "bank robbery increases rapidly, govt. to take strong action" ইশশ এসব কি ঘটছে? এভাবে চলতে থাকলে কিভাবে চলবে দেশটা। সরকারের কি কিছুই করার নেই? কি হবে সামনে?
ভারি কোন প্রসাধনী সে ব্যবহার করে না। আদ্যোপান্ত যে কেউ তাকে দেখলে সুন্দরী ঠাহরই করবে। ঠোঁট সামান্য ভ্যাসলিন ছুঁইয়ে পার্সটা হাতে নিয়ে বাবাকে ডাকলো।
-বাবা?
-এইতো মা। ঘড়িটা পরে নেই?
-জলদি জলদি।
নীচে নেমেই একটা রিকশা ধরে উঠে গেলেন রহিমউল্লাহ ও তাঁর মেয়ে। গড়নে ও উচ্চতায় যে কেউ তাঁকে বয়স চল্লিশেক ধরে নেবে। ওদিকে সাদিয়াকে সতেরোর কচি কিশোরীর মতো লাগছে আজ। ব্যাংক যেতে আরও মিনিট বিশেক। ধরতে গেলে আজ সময় পুরোটা দুপুর পর্যন্ত গড়াবে। হঠাৎ ঘাড়ের পেছনটা কেমন করে উঠলো। আবার সেই শির শির অনুভূতি। কেনো যে এমন হয়।
ব্যাংক পৌঁছে যেটা লক্ষ্য করলো চারিদিকে কেমন একটা ব্যস্ততা নেই নেই ভাব। অথচ এই সময়ে মানুষ ছোটে ব্যাংকমুখো হয়ে। ধাক্কা দিয়ে রিভলভিং ডোর দিয়ে ভেতরে প্রবেশ করতেই গা টা প্রচন্ড কেঁপে উঠলো। ওমা! এসব কি? হঠাৎ এমন লাগছে কেনো? অদ্ভুত সব অদ্ভুত।
-এভ্রিবডি নিস। সবাই মাটিতে শুয়ে পড়ুন। এই ব্যাংক এখন ডাকাতদের কবলে। মুখোশ পড়া একজন বললো।
এটা কি কল্পনা? সাদিয়া ভাবছে।
-অ্যাই পাগলি এমন ঘোড়ার মতো দাঁড়িয়ে আছিস কেনো?
-অ্যাঁ? নিজের হাতে চিমটি কেটে দেখলো। না ডাকাত পড়েনি। তাহলে ওটা কি ছিলো?
কিছুটা হেঁটে একজন রিলেশনশীপ অফিসারের ডেস্কে দুজনই বসলো। সাঁআআ। আবার সেই অনুভূতি। হঠাৎ কল্পনায় ভেসে এলো অফিসারের পাশে থাকা ডেস্কের মেয়েটার পার্স থেকে লাল রুমালটা উঁকি দিচ্ছে। আর ঠিক তখনই অফিসার ঘাড় ঘুরাতে গিয়ে লাল রুমালটা দেখে নাক সিঁটকালেন।
-ম্যাম কি ধরণের অ্যাকাউন্ট চান?
বাস্তবে ফিরে এলো সাদিয়া।
-আপনার লাল রং অপছন্দ? অফিসারের ফরমের দিকে তাকিয়ে বললো।
-আপনি জানলেন কেমনে? অফিসারের মুখ হাঁ হয়ে গেছে।
-আপনাদের সিকিউরিটি রিসোর্স কতটুকু স্ট্রং? কতোজন আছে?
-আ...আপনি এমন করে কথা ব...বলছেন কেনো? কি করে জানলেন আমাদের ব্যাংকের সিকিউরিটির ব্যাপার? তোতলাতে শুরু করেছে অফিসার।
-আমি এসবের কিছুই জানিনা। মনে হচ্ছে আমার ভেতর ফিউচারভিশন পাওয়ার এসে গেছে। সাদিয়া উঠে দাঁড়ালো। ম্যানেজারের সাথে কথা বলতে চাই।
-আমিই ম্যানেজার।
চকিত ঘুরে তাকিয়ে দেখে এক মধ্যবয়স্ক গম্ভীর দর্শন লোক ভারিক্কি চালে তার দিকে এগিয়ে আসছে।
-আমি হঠাৎ করেই ফিউচার দেখতে শুরু করেছি। সাদিয়া অপ্রস্তুতভাবে বললো।
-আই আন্ডারস্ট্যান্ড ম্যাম। লেট'স কাম উইদ ইওর ফাদার অ্যান্ড হ্যাভ আ টি কনভারসেশন। ম্যানেজার ঘুরেই রুমের দিকে হাঁটা দিলেন।
ছিমছাম রুম। একজন ম্যানেজারের রুমে যা থাকার কথা তাই আছে।
-শুরু করুন।
-আমার ধারণা আপনার ব্যাংকে দুবৃর্ত্তরা হানা দেবে।
-এতোক্ষণে ইমার্জেন্সি বাটন টেপা হয়ে গেছে। সাব মিলিশিয়া পুলিশ রওনা হয়ে গেছে।
-কিন্তু আসতে তো বিশ মিনিট লাগবে। আমি যা দেখছি দশ মিনিটে ব্যাংক ডাকাতি শুরু হবে।
-মাই গুডনেস। এখন কি হবে?
-ওয়েট।
ধীরস্থিরভাবে চিন্তা করলো সাদিয়া। কিছু একটা করতে হবে। উঠে দাঁড়ালো। লবিতে চলে এলো। ক্যাশের সামনে এসে চিল্লিয়ে উঠলো।
-এইটাকে সার্ভিস বলে? বুলশীট যত্তোসব। তিন ঘন্টা ধরে অপেক্ষা করছি পাঁচ কোটি টাকা আসতে এতোক্ষণ? এই আ্যাকাউন্ট ক্লোজ করেই ফেলবো।
-হ্যান্ডস আপ। আমরা ডাকাত। এই ব্যাংক লুটতে এসেছি। এই মেয়ে বাদে সবাই শুয়ে পড়ো।
-হু হা হা। তোরা আমার কিছুই করতে পারবি না।
-এই মেয়ে মাথা ঠিক আছে? উল্টাপাল্টা কি বলো-
-এইটা একটা ট্র্যাপ ছিলো রে বলদ।
-কি?
-আমাকে কিডন্যাপ করলে কোর্ট মার্শাল এ পড়তে হবে।
-উরে বাপরে আর্মি!
তারপর ব্যাংক ডাকাত মুক্ত হলো।
এর প্রায় এক ঘন্টা পর যখন রহিম সাহেব ও সাদিয়া বেরিয়ে এলেন ঠিক তখনই আর্মির একটি জিপ এসে থামলো। একজন কঠিন চেহারার লোক এসে পরিচয় দিলো,
-দিস ইজ মেজর তালহা।
-ইয়েস?
-ইউ আর নাও আ্য পার্ট অভ ডিজিএফআই। ক্যান উই প্রসিড?
-ডেফিনিটলি, হোয়াই নট?
মুচকি হেসে দুস্টু হাসি দিলো মিষ্টি মেয়ে।
২১ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:২২
রাগিব নিযাম বলেছেন: ধন্যবাদ :-)
©somewhere in net ltd.
১|
১৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ১২:৪০
ডি মুন বলেছেন: +++
ব্যাংক ডাকাতি না করে ডাকাতদের পালিয়ে যাওয়াটা বেশ নাটকীয় লাগল।
লিখে চলুন নিরন্তর।
শুভকামনা রইলো।