নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

গল্প ছাড়া আর কিছু না

বলতে চাই না। লিখতে চাই।

রাগিব নিযাম

আমি সাদাসিধে, সাধারণ টাইপের মানুষের দলে। তবে রাজনৈতিক অপরিপক্ক্বতা আমার অপছন্দ।

রাগিব নিযাম › বিস্তারিত পোস্টঃ

ধারাবাহিক উপন্যাস: বাংলাদেশের অতিমানবেরা s02(অধ্যায়-২, পর্ব-১/২/৩)

১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ৮:২৯

পৃথিবীতে অনেক কিছুই ঘটে যা আমাদের চোখে ধরা পড়লে আমরা একে অলৌকিক হিসেবে দাবি করি। আমরা সাধারনত্বের বাইরে গিয়ে অতি অসাধারণ কিছু বিষয়কে সামনাসামনি ঘটতে দেখে ধাক্কা। একে টার্ম অব আনফরচুনেট সিচুয়েশন বলা যায়। পৃথিবীর ইতিহাসে কখনো সংঘবদ্ধ অতিমানবীয় কার্যকলাপ ঘটেছে কিনা তা জানা যায়নি। তবে বাংলাদেশে মেটাহিউম্যান আ্যান্ড কমান্ডো আ্যালায়েন্স প্রজেক্ট বা সংক্ষেপে ম্যাকাপ নামে সংগঠন আছে।

আজকের গল্পটা বরাবরের মতো গতানুগতিক নয়। শহর অঞ্চলে এমন জায়গা নেই। ধুলো ঘেরা রাস্তা আর যেখানে খালের সাথে নদীর সংযোগ সেইখানের গল্প। গ্রামের সাথে মানুষের যে হৃদ্যতা, তারচেয়ে বেশি যেনো বৃক্ষের সাথে।

আমাদের গল্পের মূলনায়কের রয়েছে বৃক্ষপ্রেম।
-গাছের উপর মুতলি ক্যান?
-জে। জে।

ঠাস করে চড় বসিয়ে দিলো আহম্মদউল্লাহ। বেচারা এতো জোরে চড় মেরে নিজেই থতমত খেয়ে গেলো।আল্লাহ গো আল্লাহ এতো শক্তি কইত্তন আহে?

দিন দিন যেনো এই প্রেম আরো বেড়ে চলে তার। পরিপূর্ণ পচিশের এই টগবগে যুবক যেন তার প্রেমকে উসকে দেয়। গাছের সাথে ভালোবাসা দেখে তার গ্রামের মেয়েরা যেনো গাছকেই সতীন ভাবে। আসলেই কি তাই?

হ্যা তাই।


আহম্মদউল্লাহ’র কাছে গাছের মন বুঝার এক অদ্ভুত ক্ষমতা আছে। গাছ কখন খায় কি করে ইত্যাদি। দেখা যায় আজকে একটা গাছের দশ পাতা বেশি ঝরলো। ব্যাস অমনি এক বালতি পানি নিয়ে গোড়ায় ঢেলে দিলো কনকনে শীতের সকালে।
-কিরে বাপ পানি খাসনি এতোদিন? তর পাতা দেখি ঝরঝর কইরা পইড়া গেছে। ল বেশি কইরা পানি গিল। খাইলে ত পাতা পরবো না।

লোকে তারে পাগল ভাবে। এমন গাছ পাগলা খুব কম দেখেছে কেউ জীবনে। একজন তো সেদিন বলেই দিলো- “এইডারে ওঝা দিয়া ঝাড়ায় লওন লাগবো।”
একদিন তো অদ্ভুত কান্ড করে বসলো সে। তার গাছে আম ধরেছে তা নাকি টক। অথচ পাশের বাড়ির রমিজের গাছে সব টসটসে মিষ্টি। ফলাফল, এক গামলা চিনির শরবত গাছের গোড়ায়।

হুম... এমন পাগল দেখেছেন কেউ?

গাছের সাথে পিরিতি তার
রইলো বাকি কিবা আর
দিয়েছে সঁপে তারি সবি
মনে লাগিয়ে বৃক্ষছবি

একদিন...

অদ্ভুত দর্শন এক বৃদ্ধ এলেন সে গাঁয়ে
বসলেন তিনি বটবৃক্ষের ছায়ে
দেখলেন তিনি জড়িয়ে এক যুবক
বৃক্ষকে জড়িয়ে যেনো এক বৃত্তে দুই চুম্বক...

একি!!! আল্লাহর মেহেরবানিতে ভালোবাসা বৃক্ষ আর মানবে। এমন ভালোবাসা যদি আসতো মানবে মানবে?! থাকতো না খুনাখুনি, আহাজারি, ফ্যাসাদ, ফিতনা?!

-কে তুই?! কে রে তুই এমন করে যতন করিস বৃক্ষে, মুসাফির এসে বসে তার ছায়াতলে?!

-আমি আহম্মদউল্লাহ...
-পরওয়ারদিগার তোর উপর রহমত বর্ষণ করুক। তোর যেনো হাজার বছর হায়াত দারাজ করে।

তারপর দিনের পর দিন। রাতের পর রাত। আহম্মদউল্লাহ’র বিশাল এক নার্সারি এখন। আছে ছেচল্লিশ বিঘা জমি। সব হাইওয়ের দুপাশে। যেনো আরেকটু বড় হলেই আকাশটা চিরে ফেলবে। সবচে সুন্দর দৃশ্য তার গাছগুলোর, রাস্তার পাশে সারি সারি দাঁড়িয়ে আছে। মানুষ ঈর্ষান্বিত হয়, পুলকিত হয়। এতো সুন্দর সারিবদ্ধ গাছ কে লাগায়? কার যতনে বৃক্ষ ছায়া দেয় দিনভর? শীত আসলে একরকম, গ্রীষ্ম আসলে এক রকম, বর্ষায় অন্যরকম অপূর্ব। যেনো গাছ কথা বলে। গাছের ভেতর সুর জাগে। বাতাসে মৃদু শোঁ শোঁ সে আওয়াজে কান ভরে যায়, বুক ভরে যায় অনাবিল হাওয়ায়। আহম্মদউল্লাহ কৃষ্ণচূড়া ডালপালা মেলে ফুটে থাকে মাটি অব্দি, গন্ধরাজ ঘ্রাণ ছড়িয়ে সাপ আনে। রক্তজবার লালে চোখ ধাধিয়ে যায়। লিচু গাছ ভারবতী হয়ে নুয়ে পড়ে থোকা থোকা অজস্র লিচুয়। পাকা বেল টুপ করে পড়ে মাটিতে। দস্যি ছেলে নাকে নস্যি নিয়ে যখন যায় ধরতে, দেখে এটা আহম্মদউল্লাহর গাছের। না... নেয়া যাবে না।
একদিন আহম্মদউল্লাহ দেখে হরতাল পড়েছে। সংঘর্ষ, বিক্ষোভের ২০১৩। অদ্ভুতুড়ে পরিস্থিতি। আগের দিন রাতেই ঘটে গেছে অমানবীয় ব্যাপার যা আহম্মদউল্লাহ’র অগোচরে ঘটে গেছে।

অনেকটা অপ্রকৃতস্থভাবেই ঘুম ভাংলো আহম্মদউল্লাহর। কেমন যেনো বিষন্ন আজ সকালটা। কান্না ভেজা রূপ নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে গাছগুলো। কেনো? কেনো এমন হলো?

আজ এই সকালে ঘটতে যাচ্ছে ভয়ংকর কিছু যা তার কল্পনাতীত। যখন মহাসড়ক এসে পড়লো সে এক অদ্ভুত দৃশ্য দেখতে পেলো। পরম প্রিয় কিছু গাছ কেটে ফেলা হয়েছে। গোড়া থেকে কেটে ফেলেছে দুর্বৃত্তরা। রাস্তার বাঁকে বাঁকে ফেলে দিয়ে এই গাছগুলোর ফেলে রাখার দৃশ্য আর সহ্য হলো না আহম্মদউল্লাহর।

তীব্র হুংকার দিয়ে উঠলো সে।

"নাফরমান!"

চিৎকারে বাতাস প্রকম্পিত হতে লাগলো। হরতালে দাঁড়িয়ে থাকা দুর্বৃত্তরা চিৎকার শুনে হাজির হলো সেখানে।

"তোরা গাছ কাটলি ক্যান খবিশের দল?"

-কি কইলি আমরা খবিশ?
-মার শালারে।

কিল ঘুষি সব এসে পড়তে লাগলো বৃক্ষপ্রেমিকের গায়ে।

ঠাং করে একটা বাড়ি পড়লো যেনো তার মাথায়। ধাতব বাড়ি খেয়ে পড়ে গেলো সে। নিথর হয়ে গেলো দেহটা।

-এই এই করলি কি এইডা?
হায় হায় আহম্মদউল্লাহরে মাইরালাইছে। ভাগ ভাগ হজ্ঞলডি। জীবন শ্যাষ।

মাটির নীচে চাপা দিতে বস্তায় দেহটা ভরে নেয়া হলো। সেদিন রাতেই শতবর্ষজীবী এক গাছের নীচে পুঁতে রাখা হলো তাকে।
যে কোনো অপরাধ সেটা মানুষের চোখে যত ছোট হোক না কেনো এটাকে অপরাধই ধরা হয়। হরতালে গাছ উপড়ে ব্লকেড তৈরি করা, টায়ার পোড়ানো আর পেট্রোল বোমা মেরে বাস জ্বালিয়ে দেয়া, মানুষ পোড়ানো এখন সমাজের সবচেয়ে জঘন্য অপরাধ। সরকার হুলিয়া জারি করেছে একজন পেট্রোল বোমাবাজকে ধরিয়ে দিলে লাখ টাকা পুরষ্কার। আহম্মদউল্লাহ নিখোঁজ হয়ে গেছে এই ব্যাপারটা সুখকর নয় এলাকাবাসীর কাছে। তারা সব কিছুর বিনিময়ে আহম্মদউল্লাহকে পেতে চায়। তাই খোজ পড়ে গেছে গ্রামে গ্রামে।

-দশজন নিয়ে অইদিকে যা। রফিক, শামুল তরা বিশজন নিয়া যা পশ্চিম কূলে।

রাত যত বাড়ছে তত যেনো আহম্মদউল্লাহর নিখোঁজ সংবাদ সন্তস্ত্র করে তুলছে সবাইকে। হাইওয়েতে রক্ত দেখে গুমড়ে কেঁদে উঠলো তার ভাই শামুল।
-ভাইজান! ভাইজানের শার্টের টুকরা!

নিমেষেই বেদনার পাথর নেমে এলো সবার বুকে।

"গুপ! গুপ! গড়াস! মড় মড়"!

মাটি কেঁপে উঠলো পায়ের নিচে।

ম্যাকাপ হেডকোয়ারটার।
ভিডিও ফুটেজ থেকে দেখে বোঝার চেষ্টা করছেন শামীম, যন্ত্রমানব এবং রণিন।

"নিউ ম্যাচিং আ্যলার্ট!"

-এইটা কি!
-শেকিং পজিশন ১.৫ মিটার ডিপ ফ্রম সয়েল লেভেল ওয়ান।
-কি এইটা? আমি একটা জিনিস আস্ক করছি?

আহম্মদউল্লাহকে যেখানে গেড়ে রাখা হয়েছে সেখানে একটা হাত মাটি ফুড়ে বেরিয়ে এলো।

মড় মড় মড়।

একটা মানুষ যেনো মাটি ফুড়ে বেড়িয়ে এলো। শেকড়বাকড় গায়ে।

-বৃক্ষমানব!

যে কোনো অপরাধ সেটা মানুষের চোখে যত ছোট হোক না কেনো এটাকে অপরাধই ধরা হয়। হরতালে গাছ উপড়ে ব্লকেড তৈরি করা, টায়ার পোড়ানো আর পেট্রোল বোমা মেরে বাস জ্বালিয়ে দেয়া, মানুষ পোড়ানো এখন সমাজের সবচেয়ে জঘন্য অপরাধ। সরকার হুলিয়া জারি করেছে একজন পেট্রোল বোমাবাজকে ধরিয়ে দিলে লাখ টাকা পুরষ্কার। আহম্মদউল্লাহ নিখোঁজ হয়ে গেছে এই ব্যাপারটা সুখকর নয় এলাকাবাসীর কাছে। তারা সব কিছুর বিনিময়ে আহম্মদউল্লাহকে পেতে চায়। তাই খোজ পড়ে গেছে গ্রামে গ্রামে।

-দশজন নিয়ে অইদিকে যা। রফিক, শামুল তরা বিশজন নিয়া যা পশ্চিম কূলে।

রাত যত বাড়ছে তত যেনো আহম্মদউল্লাহর নিখোঁজ সংবাদ সন্তস্ত্র করে তুলছে সবাইকে। হাইওয়েতে রক্ত দেখে গুমড়ে কেঁদে উঠলো তার ভাই শামুল।
-ভাইজান! ভাইজানের শার্টের টুকরা!

নিমেষেই বেদনার পাথর নেমে এলো সবার বুকে।

"গুপ! গুপ! গড়াস! মড় মড়"!

মাটি কেঁপে উঠলো পায়ের নিচে।

ম্যাকাপ হেডকোয়ারটার।
ভিডিও ফুটেজ থেকে দেখে বোঝার চেষ্টা করছেন শামীম, যন্ত্রমানব এবং রণিন।

"নিউ ম্যাচিং আ্যলার্ট!"

-এইটা কি!
-শেকিং পজিশন ১.৫ মিটার ডিপ ফ্রম সয়েল লেভেল ওয়ান।
-কি এইটা? আমি একটা জিনিস আস্ক করছি?

আহম্মদউল্লাহকে যেখানে গেড়ে রাখা হয়েছে সেখানে একটা হাত মাটি ফুড়ে বেরিয়ে এলো।

মড় মড় মড়।

একটা মানুষ যেনো মাটি ফুড়ে বেড়িয়ে এলো। শেকড়বাকড় গায়ে।

- যে কোনো অপরাধ সেটা মানুষের চোখে যত ছোট হোক না কেনো এটাকে অপরাধই ধরা হয়। হরতালে গাছ উপড়ে ব্লকেড তৈরি করা, টায়ার পোড়ানো আর পেট্রোল বোমা মেরে বাস জ্বালিয়ে দেয়া, মানুষ পোড়ানো এখন সমাজের সবচেয়ে জঘন্য অপরাধ। সরকার হুলিয়া জারি করেছে একজন পেট্রোল বোমাবাজকে ধরিয়ে দিলে লাখ টাকা পুরষ্কার। আহম্মদউল্লাহ নিখোঁজ হয়ে গেছে এই ব্যাপারটা সুখকর নয় এলাকাবাসীর কাছে। তারা সব কিছুর বিনিময়ে আহম্মদউল্লাহকে পেতে চায়। তাই খোজ পড়ে গেছে গ্রামে গ্রামে।

-দশজন নিয়ে অইদিকে যা। রফিক, শামুল তরা বিশজন নিয়া যা পশ্চিম কূলে।

রাত যত বাড়ছে তত যেনো আহম্মদউল্লাহর নিখোঁজ সংবাদ সন্তস্ত্র করে তুলছে সবাইকে। হাইওয়েতে রক্ত দেখে গুমড়ে কেঁদে উঠলো তার ভাই শামুল।
-ভাইজান! ভাইজানের শার্টের টুকরা!

নিমেষেই বেদনার পাথর নেমে এলো সবার বুকে।

"গুপ! গুপ! গড়াস! মড় মড়"!

মাটি কেঁপে উঠলো পায়ের নিচে।

ম্যাকাপ হেডকোয়ারটার।
ভিডিও ফুটেজ থেকে দেখে বোঝার চেষ্টা করছেন শামীম, যন্ত্রমানব এবং রণিন।

"নিউ ম্যাচিং আ্যলার্ট!"

-এইটা কি!
-শেকিং পজিশন ১.৫ মিটার ডিপ ফ্রম সয়েল লেভেল ওয়ান।
-কি এইটা? আমি একটা জিনিস আস্ক করছি?

আহম্মদউল্লাহকে যেখানে গেড়ে রাখা হয়েছে সেখানে একটা হাত মাটি ফুড়ে বেরিয়ে এলো।

মড় মড় মড়।

একটা মানুষ যেনো মাটি ফুড়ে বেড়িয়ে এলো। শেকড়বাকড় গায়ে।

-বৃক্ষমানব!

মন্তব্য ১ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ১২:২১

নিয়ামুল ইসলাম বলেছেন: ভালো

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.