নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি অতি সাধারণ একজন মানুষ। প্রবলভাবে আশাবাদী। স্বপ্ন দেখি শান্তিময় সমৃদ্ধ পৃথিবীর।

জহিরুল ইসলাম সেতু

আলোর দিশারী

জহিরুল ইসলাম সেতু › বিস্তারিত পোস্টঃ

এখনো স্বপ্ন দেখি মুক্তযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত বাংলাদেশের

০৫ ই মার্চ, ২০১৮ দুপুর ২:০৮

আমাদের এ ভূখন্ডটা যেমন সুন্দর তেমনি ঊর্বর। তাই সেই আদিযুগ থেকেই এর প্রতি অনেকের আকর্ষণ ছিল দূর্নিবার। অনার্য, দ্রাবিড়, আর্য বহু জাতি এখানে এসে বসতি স্থাপন করেছে। মৌর্য, গুপ্ত, মুঘল, বৃটিশরা এখানে ব্যবসা-বাণিজ্য শাসন-শোষণ করে গেছে। ফল-ফসলে প্রাণ-প্রাচুর্যে ভরপুর এ অঞ্চলের প্রতি ভাল-মন্দ সকলেরই আগ্রহ ছিল প্রবল। অনেকেই সম্পদ লুটেছে, সুযোগ বুঝে বৃটিশরা লুটে নিয়েছেও অনেক। আর তাই এরা বিদায় নেবার শেষ মূহুর্তে পুরো ভারতবর্ষের পিঠে ছুরি মেরে গেছে। যার ক্ষত সহস্র বছরেও মুছবে কিনা জানি না। হাজার হাজার বছর ধরে বিভিন্ন ধর্ম মতের মানুষের সহাবস্থান ও সম্প্রীতি বজায় থাকলেও ধূর্ত বৃটিশ ধর্মের দোহাই তুলে সরল হিন্দু-মুসলিমের মাঝে বিভেদের সূত্রপাত করে খণ্ড বিখণ্ড করলো। কেবল ভূমিই না, খণ্ডিত করলো মানুষের ঐক্য ও সম্প্রীতিকেও। বৃটিশদের উস্কানী, জিন্নাহ-নেহেরুর ক্ষমতার লোভে টুকরো হলো সুবিশাল ভারতবর্ষ। ধর্মকে ভিত্তি করে এমন বিভক্তি সভ্যতার ইতিহাসে কখনো কোথাও ঘটেছে কিনা জানা নেই। সেই থেকে যে ধর্মের দোহাইয়ে রাজনীতি শুরু হলো, তার চরম ভুক্তভোগী তো আমরাই। পাকিস্তানিরা আমদের শোষণ করেছে কেবল এই ধর্মের ছুঁতো দেখিয়ে।


মুক্তিযুদ্ধে অন্যতম চেতনা ছিল অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ। রাষ্ট্র থাকবে ধর্মনিরেপেক্ষ। এমনই তো কথা ছিল। বঙ্গবন্ধুকে নির্মম হত্যাকান্ডের পর আবার পালটে গেল সব। দেশকে পেছনে ফিরিয়ে নিল তৎকালীন ক্ষমতাসীন গোষ্ঠী। স্বাধীনতার সুফল পাওয়ার সুযোগ পেল না দেশবাসী। যুদ্ধাপরাধীদের পুনর্বাসন করে জিয়া শুরু করলো ধর্মের রাজনীতি, এরশাদ এসে উদ্ভট লেবাস চাপালো রাষ্ট্রধর্ম নামে। রাজাকারদের ক্রমাগত পুনরুত্থানে দেশ ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকারে পরিণত হলো। মুক্তযুদ্ধের সকল চেতনা বিলুপ্ত ও বিকৃত করে ওরা রাজাকারদের নিয়ে একাত্তুর পূর্ব অবস্থায় ফিরে গেল আবার। মুসলিম লীগ, জামায়াত, জেএমবি তথা বাংলাভাই, আনসাউরল্লাহ থেকে শুরু করে হেফাজত। নামে বেনামে আবার উত্থান সে ধর্ম ব্যবসায়ী দলের। এদশের রাজনীতিকে জঘন্য ভাবে কলুষিত করেছে এদের দুর্বৃত্তিপরায়ন কার্যক্রম। খালেদা জিয়ার প্রশ্রয় ও নতুন করে পুনার্বাসন আরো এক ধাপ এগিয়ে নিয়েছে ওদের। বিএনপির কাঁধে বন্দুক রেখে পরগাছা জামায়াতই ক্রমশঃ গ্রাস করছে বিএনপিকে। অনেক কিছুই নিয়ন্ত্রণ করছে ওরা। সেখানে মুক্তিযোদ্ধারা অবহেলিত, অবহেলিত প্রগতিশীল চিন্তার মানুষজন। ফ্রাংকেস্টাইনের দৈত্যের মতো এরা গ্রাস করেছে বিএনপিকে।
আওয়ামী লীগ সরকার শাসনে ফিরে আসায় স্বাধীনতার পক্ষের সকলেই স্বস্তি বোধ করেছিল। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় ফিরে আসবে দেশ। বঙ্গবন্ধু হত্যা ও যুদ্ধাপরাধীদের বিচার কার্যে মানুষ আশ্বস্ত হয়েছিল। দেশ আবার অসাম্প্রদায়িক হবে, দুর্নীতিমুক্ত হবে, সুশিক্ষার আলোকে সামনে এগিয়ে যাবে। ন্যায় বিচার, নাগরিক অধিকার পূণঃপ্রতিষ্ঠা লাভ করবে। কিন্তু কী হলো ? আর হচ্ছেটাই বা কী? একদল রাজাকারদের পাশে নিয়ে ক্ষমতার লোভে অন্ধ, আরেক দল হেফাজতীদের কোলে নিয়ে ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার জন্য বিড়াল আদরে মত্ত।
আওয়ামী লীগ যতো কূশলী খেলাই খেলুক, হেফাজতের বিষদাঁত কখনোই দুর্বল নয়। কোলে বসেই ছোবল দিয়ে বিষে নীল করার সুযোগ খুঁজবে এরা। আমরা আর কোন পনেরো আগষ্ট চাই না। একটা পনেরো আগষ্ট মানেই ভয়াবহ নৃশংসতা, দেশ ও জাতিকে পেছনের দিকে ঠেলে দেওয়া। কে চায় আফগান পরিস্থিতি, কিংবা সিরিয়ার ভয়াবহতা?
হতাশায় নিমজ্জিত না হয়েও এখনো স্বপ্ন দেখি বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত স্বপ্ন সফল করবেন। শক্ত হাতে এদেশ থেকে দুর্নীতি বিতারণ করবেন। কুশিক্ষা দূর করে বিজ্ঞানভিত্তিক আধুনিক ও একমুখী শিক্ষাব্যবস্থা চালু করবেন। অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ে তুলবেন।। তার জন্য সবার আগে প্রয়োজন ধর্ম ভিত্তিক সকল রাজনীতি নিষিদ্ধ করা। ধর্ম আর রাজনীতি দুই জিনিস। যারা ধর্মকে রাজনীতির সাথে মেশায়, দুরভিসন্ধি তাদের রন্ধ্রে রন্ধ্রে। এজন্য আর ভুল বুঝায় সাধারণ মানুষকে। এই কথাটা আমরা মনে রাখি, ধর্ম মানুষের ব্যাক্তিগত বিশ্বাস ও অধিকার। এ বিশ্বাসকে সম্মান জানিয়ে, পরমত সহিষ্ণু হয়েই আমরা অসাম্প্রদায়িক রাজনীতি করতে পারি, গড়তে পারি সুন্দর একটা বাংলাদেশ।

মন্তব্য ৮ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ০৫ ই মার্চ, ২০১৮ দুপুর ২:৪৬

খাঁজা বাবা বলেছেন: পড়ে ভাল লাগল
মুক্তি যুদ্ধের গুলি প্রথম কোথায় উল্লেখ করা হয়?

০৯ ই এপ্রিল, ২০১৮ সকাল ৮:১৩

জহিরুল ইসলাম সেতু বলেছেন: পড়ার জন্য ধন্যবাদ খাঁজা বাবা।
আপনার প্রশ্নটা বুঝিনি।

২| ০৫ ই মার্চ, ২০১৮ বিকাল ৫:০৯

রাজীব নুর বলেছেন: আমরা একটি মৌলবাদী রাষ্ট্রের সদস্য?
এই দেশ ধর্মীয় উগ্রবাদী হুজুরদের দেশ?

০৯ ই এপ্রিল, ২০১৮ সকাল ৮:২০

জহিরুল ইসলাম সেতু বলেছেন: পাকিস্তান আমলে মৌলবাদী রাষ্ট্র ছিল। আবার ৭৫এর পর পট পরিবর্তনের পরিক্রমায় সেদিকেই ধাবিত হয়েছে। দুর্ভাগ্য বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাও এ আবর্ত থেকে এখনো দেশকে উদ্ধার করতে পারেন নি, অথবা তিনিও বেরিয়ে আসতে পারেননি।
মুক্তিযুদ্ধের সত্যিকারের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হতে পারলে হয়তো ধর্মনিরপেক্ষ সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশকে প্রতিষ্ঠা সম্ভব।

৩| ০৫ ই মার্চ, ২০১৮ রাত ১০:০১

নাঈমুর রহমান আকাশ বলেছেন:
ইসলামের মূল লক্ষ্য ছিলো সব ধর্মের মানুষের সমান অধিকার দেয়া। পাকিস্তান তা করেনি। আজকের বাংলাদেশের একশ্রেণীর ধর্মব্যবসায়ী আমাদের ধর্মীয় সম্প্রীতি নষ্টের পায়তারা করছে প্রতিনিয়ত।
ঈমান এতো ঠুনকো জিনিস নয় যে সুপ্রিম কো্টের একটা মুর্তির জন্য সেটা নষ্ট হয়ে যাবে। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের সময়েও একদল ধর্মীয় অনুভূতির ফায়দা তুলেছিল। আমরা কবে জাগবো?

০৯ ই এপ্রিল, ২০১৮ সকাল ৮:২৫

জহিরুল ইসলাম সেতু বলেছেন: ধর্ম হওয়া উচিৎ নিজস্ব বিশ্বাসে, কারোর উপর জোর করে চাপিয়ে দেওয়ার বিষয় নয়। কিন্তু এদেশের ইতিহাসে বরাবরই দেখে আসছি এ নিয়ে রাজনীতি করে ফায়দা লুটে আসছে এক শ্রেণির মানুষ। সাধারণ মানুষের ধর্মবিশ্বাসকে পুঁজি করে এরা রাজনীতি করে। পাকিস্তান আমলে তৎকালীন শাসকদের সহায়তায় করেছিল, এখনো তা করে যাচ্ছে।

৪| ১১ ই এপ্রিল, ২০১৮ সকাল ৯:৩৮

খাঁজা বাবা বলেছেন: আমি বলতে চাচ্ছিলাম, মুক্তিযুদ্ধের চেতনাগুলি প্রথম কোথায় এবং কে কবে উত্থাপন করে?

১৫ ই এপ্রিল, ২০১৮ রাত ২:৪৭

জহিরুল ইসলাম সেতু বলেছেন: স্বাধীন বাংলাদেশের কর্ণধার বংগবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তাঁর অমীয় ভাষণ গুলোতেই তা বিধৃত করেছেন। সেই চেতনায়ই রচিত হয়েছিল ১৯৭২ সালের সংবিধান।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.