নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আলোর দিশারী
ছোটবেলায় অজস্র প্রশ্ন ছিল মনে। বেশিরভাগ প্রশ্নগুলো করতাম আমার বাবার কাছে। যথেষ্ট ধৈর্য্য নিয়ে তিনি ওসব প্রশ্নের জবাব দিতেন। কখনো বিরক্ত হতেন না। আকাশ কি? দূরে যে আকাশ নেমে এসেছে সেটা কোথায়? আকাশ কেন নীল? নীল আকাশের উপরে আর কি আছে? ধানগাছ আরো বড় হয় না কেন? পাটগাছ তো লম্বা হয়, তাহলে ধানগাছ কেন ....... । এমনি নানা প্রশ্নের তোড়ে অনেককেই বিরক্ত করেছি বিভিন্ন সময়। কিছু দার্শনিক প্রশ্নও ভাসতো মনে।
শৈশবে আমার গ্রামে বিদ্যুৎ ছিল না, ব্যাটারীতে রেডিও বাজতো। কান খাড়া করে রেডিও শুনতাম। বাক্সটির ফাঁক ফোঁকর দিয়ে উঁকি দিয়ে দেখার চেষ্টা করতাম, এই যে সুন্দর করে কথা বলে, গান গায়, সেই মানুষদের। দেখতে তো পেতাম না কিছুই। এসব নিয়েও কম প্রশ্ন করিনি। এই মানুষরা রেডিওর ভিতরে কিভাবে থাকে, কি খায়? কিভাবে এতো জোরে কথা বলে? কল্পনায় তাদের একটা জগত দেখতাম। রেডিওতে কিছু বিজ্ঞাপনের মাঝে “রাজা কনডম”এর বিজ্ঞাপন দিতো নিয়মিত। বাবাকে জিজ্ঞেস করলাম, রাজা কনডম কি? তিনি শুধু এর জবাবটা দেননি। বলেছিলেন, বড় হয়ে বুঝবি। জবাব না পেলেও এ প্রশ্নটা আর কাউকে করিনি, কিন্তু মনের মধ্যে ঘুরপাক খেয়েছে বহুদিন। বড় হয়ে যখন বুঝলাম, বিব্রত লেগেছে আমার বাবাকে এই প্রশ্নটা করার জন্য।
আজকাল পত্রপত্রিকার পাতায় প্রায়শঃই ধর্ষণের খবর আসে। আমি এই খবরগুলো এড়িয়ে চলি। নিজেকে খুব অসহায় লাগে ওসব খবর দেখলে। খবর প্রকাশই শেষ, সচরাচর ধর্ষকের বিচার হয় না। প্রশাসনিক উন্নাসিকতায় বা রহস্যজনক কারণে বিচার চাপা পড়ে যায়। চাপা পড়ে যায় খবরের আপডেট। ইয়াসমিনকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়, তার জন্য তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেত্রী অনেক সোচ্চার হয়ে রাজপথে আন্দোলন গড়ে তুলেছিলেন। তাঁর ক্ষমতাসীন আমলে তনুসহ কত মেয়েকে যে ধর্ষণ করে হত্যা করা হয়েছে, ওসব বিষয়গুলো দেখার মত তাঁর সময় নেই, নাকি আগ্রহ নেই জানি না। নাকি অন্তরালে আরো কোন কারণ আছে, এ বিষয়ে আমার কোন প্রশ্নও নেই।
আমার জানামতে ১/১১র পর দুইটা বছর পত্রিকায় ছিনতাই, চাঁদাবাজি, ইভটিজিং বা ধর্ষণের মতো কোন খবর ছিল না। রাত বারোটায় কোন মেয়ে রাস্তায় দেখলেও ধর্ষণ তো দুরের কথা, কেউ ইভটিজিংএর সাহস পেতো না। নারীর শাসনামলেও আজ দেশে নারীরা কেন নিরাপদ নয়, আমি এই প্রশ্নও করি না। কে কখন বিব্রত হয়!
আমি এখন বাবা। আমার বড় ছেলের বয়স দশ বছর। ছোটবেলা থেকেই সেও আমাকে অনেক প্রশ্ন করে। যতোটা পারি, জবাব দেই। আজকাল সে পত্রিকা পড়ে। ছোটদের পাতা, পাজল এসবের দিকেই তার আগ্রহ। কিন্তু পত্রিকার পাতা খুললেই তো অনেক খবরের মধ্যে খুন, ধর্ষণের খবরও আসে। ধর্ষণের হেডলাইন দেখে আমি বিব্রত হয়ে পড়ি, কখন আবার প্রশ্ন করে বসে, বাবা ধর্ষণ কি?
কোন পিতা কি এই প্রশ্নের জবাব জানেন, সন্তানকে দেবার জন্য?
০৭ ই জুন, ২০১৮ রাত ১:১১
জহিরুল ইসলাম সেতু বলেছেন: আপনাকে ধন্যবাদ শহীদ আম্মার।
আজকাল প্রশ্ন করতেও ভয় হয়, কখন আবার ৫৭ ধারা বা বন্দুকযুদ্ধে জীবনখানা বরবাদ হয়!
তবু আপনাকে কানে কানে বলি, এমন শিক্ষামন্ত্রীও সরকার টাকা দিয়ে পোষে!!!
যেখানে মাদক শুধু নিয়ন্ত্রণ নয়, মাদকমুক্ত করে দেশকে যুবসমাজকে সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নিবে, সেখানে মাদকে দেশ সয়লাব করে, পাঠ্যপুস্তকে মাদকের কুফল শেখানো হয়!
সর্প হয়ে দংশন করে ওঝা হয়ে ঝাড়া হচ্ছে আরকি।
২| ০৭ ই জুন, ২০১৮ রাত ১:৩৩
চাঁদগাজী বলেছেন:
সময়ের সাথে সব বদলে যায়, আপনি সঠিক ব্যাপারটা ব্যাখ্যা করুন
০৭ ই জুন, ২০১৮ রাত ১:৪৫
জহিরুল ইসলাম সেতু বলেছেন: আমার মাথায় প্রশ্ন ঘুরে। দুঃসহ পরিস্থিতে প্রশ্ন করতে পারি না, জবাবও পাই না।
একটা প্রশ্নই তো করলাম আপনাদের কাছে।
সঠিক ব্যাপার কোনটা? আপনিই ব্যাখ্যা করে দেন চাঁদগাজী ভাই। বাধিত হবো।
৩| ০৭ ই জুন, ২০১৮ রাত ১:৫৫
বিচার মানি তালগাছ আমার বলেছেন: আজকাল আর পিতাদের বিব্রত হতে হয় না বা হবে না। কারণ, প্রতি ক্লাসেই ২/৩ টা ইঁচড়ে পাকা ছেলে/মেয়ে থেকে যায়, যারা এসব আগেই পরিস্কার করে বুঝিয়ে দেয় অন্যদের...
০৭ ই জুন, ২০১৮ রাত ২:০৩
জহিরুল ইসলাম সেতু বলেছেন: ইঁচড়ে পাকাদের কথা নিয়ে আমার মতোই বোকা ছেলেটা আবার কি প্রশ্ন করে বসে, নতুন শঙ্কায় ফেললেন তালগাছ ভাই!!!
৪| ০৭ ই জুন, ২০১৮ রাত ২:১৩
বিচার মানি তালগাছ আমার বলেছেন: আমার বাসায়ও পত্রিকা নেয়া হত অনেক আগ থেকেই। বাসায় তারকালোকও কেনা হত আম্মার জন্য। আমি আবার লেখালেখিও করতাম ছোট থেকে। স্বাভাবিকভাবেই শিশু কিশোরদের ম্যাগাজিন, ক্রীড়ালোক, ক্রীড়াজগত সহ অন্য ম্যাগাজিনও কিনতে হত। স্কুল জীবনে ম্যাগাজিন কিনতে গিয়ে দেখতাম অপরাধ জগত, অপরাধ বিচিত্রা সহ অনেক নিষিদ্ধ ম্যাগাজিন যেখানে নগ্ন ছবি থাকত প্রচ্ছদে। কোন খেয়ালে জানি না আমি বাসায় গিয়ে আম্মাকে একদিন বলেছিলাম কিছু ম্যাগাজিন দেখি ল্যাংটা মহিলাদের ছবি থাকে! আম্মা মানা করেছিলেন ওসব দেখতে! কনডম/ধর্ষণ নিয়ে বাবা-মা কে বিব্রত না করলেও এই ম্যাগাজিন নিয়ে মা-কে বিব্রত করাটাই মনে হয় আমার একমাত্র উদাহরণ!
০৭ ই জুন, ২০১৮ রাত ২:১৮
জহিরুল ইসলাম সেতু বলেছেন: হাহ হা হা
বিব্রতকর ভোগান্তিতে তাহলে অনেক মা বাবাই কমবেশি পড়েন।
৫| ০৭ ই জুন, ২০১৮ সকাল ৯:০৯
রাজীব নুর বলেছেন: সহজ সরল ভাষায় খুব সুন্দর করে লিখেছেন।
আপনার ছেলের জন্য শুভকামনা।
০৭ ই জুন, ২০১৮ রাত ১১:০৩
জহিরুল ইসলাম সেতু বলেছেন: আপনারা পড়লে আমার লেখা সার্থক হয় রাজীব নুর ভাই। শুভকামনার জন্য আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। ভাল থাকবেন সতত।
৬| ০৭ ই জুন, ২০১৮ সকাল ৯:১৪
লাবণ্য ২ বলেছেন: চমৎকার লিখেছেন।
০৭ ই জুন, ২০১৮ রাত ১১:০৬
জহিরুল ইসলাম সেতু বলেছেন: আমি ইন্সপায়ারঃ), বোন লাবণ্য ২
শুভেচ্ছা জানবেন
৭| ০৭ ই জুন, ২০১৮ সকাল ৯:৫১
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন: প্রাঞ্জল ভাষায় সাবলীল বর্ণনা। খুব ভালো লাগলো। আপনার ছেলের জন্য শুভ কামনা।
০৭ ই জুন, ২০১৮ রাত ১১:০৮
জহিরুল ইসলাম সেতু বলেছেন: অশেষ কৃতজ্ঞতা জানাই ভাই মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন। আপনাদের সকলের জন্য আমারো শুভকামনা রইল।
৮| ০৮ ই জুন, ২০১৮ রাত ১০:০২
মোস্তফা সোহেল বলেছেন: প্রশ্ন মানুষকে বিব্রত অবস্থায় ফেলে দেয়।
লেখটি পড়ে খুব ভাল লাগল।
০৯ ই জুন, ২০১৮ রাত ১২:১৭
জহিরুল ইসলাম সেতু বলেছেন: জী মোস্তফা সোহেল ভাই। প্রশ্ন অনেক সময় বিব্রতকর অবস্থায় ফেলে। আমার বাবাও আমার প্রশ্নে বিব্রত হয়েছিলেন, আমিও শঙ্কায় আছি পুত্র কখন অমন প্রশ্ন করে বসে।
লেখাটি আপনার ভাল লাগায় আমি আনন্দিত। ভাল থাকবেন।
৯| ০৮ ই জুন, ২০১৮ রাত ১০:২৪
আহমেদ জী এস বলেছেন: জহিরুল ইসলাম সেতু ,
ভালো লেখা ।
আজকাল সন্তানদের প্রশ্নের কোন জবাব কোন বাবা-মায়ের কাছেই নেই !
০৯ ই জুন, ২০১৮ রাত ১২:২১
জহিরুল ইসলাম সেতু বলেছেন: আপনার মন্তব্যও ভাল, আহমেদ জী এস ভাই।
অনেক প্রশ্নের জবাব মা-বাবার কাছে থাকে না, তবু তৈরি থাকতে হয়। সন্তানদের উৎসুক জিজ্ঞাসার জবাবের জন্য, সন্তানই তো কাছের বন্ধু।
©somewhere in net ltd.
১| ০৭ ই জুন, ২০১৮ রাত ১:০০
শহীদ আম্মার বলেছেন:
আপনাকে আরেকটা বিব্রতের কাহিনী শুনায়।
আমাদের বর্তমান সরকার মাদকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করেছে। অথচ এই সরকারের শিক্ষামন্ত্রী নাহিদ সাহেব জাতিকে একটা মাদকবান্ধব শিক্ষাব্যবস্থা উপহার দিয়েছেন। এর ফল হলো আমি একজন প্রাইভেট টিউটর হিসাবে ষষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্র মুখ থেকে গাঁজা-ফেনসিডিল কি জিনিস সে প্রশ্নটা শুনতে হয়েছে। মাদকমুক্ত জীবন গড়ার জন্য ছেলেদের ছোটকাল থেকেই বিভিন্ন রকমের মাদকের পরিচয় তুলে ধরা হচ্ছে!!!! কেমন বিকারগ্রস্ত মানুষের পাল্লায় পড়েছে দেশ।